Views:
A+
A-
দুই. নফল সদকা যা বাধ্যতামূলক নয় তবে অনেক সাওয়াবের কাজ।
এই দ্বিতীয় প্রকারের দান নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে সৎপথে ব্যয় করা। যেমন: মসজিদ, মাদরাসা, গরীব, এতীম, কাঙ্গাল, ভিক্ষুকদের মাঝে সাধ্যমত দান করা। আত্মীয়, অনাত্মীয়, মুসাফির, বিপন্ন ও ঋণগ্রস্তকে সাহায্য করা ইত্যাদি। এ জাতীয় দানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পূর্বোক্ত দানের ন্যায় সময়ের কোন বাধ্যবধকতা নেই । স্থান, কাল, পাত্র ও প্রয়োজনভেদে কম বেশী করা যেতে পারে। দানের রকমও পরিবর্তন হতে পারে। মোট কথা অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার দান কারীর থাকে। তাছাড়া দিবারাত্রির যে কোনো সময়, যে কোনো স্থানে, এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে এই দান করার সুযোগ রয়েছে। সুতরাং দাতা তার ইচ্ছা ও সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোনো সময় নেক পথে দান করে উপকৃত হতে পারেন।
সদকার গুরুত্ব ও ফযিলত
আল্লাহ তাআলা সব মানুষকে ধনী ও
সম্পদশালী বানিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। আসলে বিত্তশালীরা
বিত্তহীনদের সাথে কেমন আচরণ করে আল্লাহ তাআলা
তা দেখতে চান।
বাস্তবার আলোকে বলতে হয় আজ বিশ্বের মুসলিমরা
আল্লাহর কোনো বিধানই যথার্থভাবে পালন করছে
না। মুসলিম সমাজ যদি জাকাত, সদকা প্রদানে মহান আল্লাহর নির্দেশ পালন করত তবে সারা
বিশ্বের মুসলিম সমাজ আজকের মত দারিদ্র্যের যাতাকলে পিষ্ট হত না।
صدقةُ-সদাকাতুন, আরবি শব্দ। যার
বাংলা অর্থ হচ্ছে: দান। আর এই দান প্রধানত: দুই প্রকার,
এক. ওয়াজিব যা বাস্তবায়ন করা অপরিহার্য ও
বাধ্যতামূলক।
যেমন,
যেমন,
(ক) নিসাবের মালিক (শরিয়ত নির্ধারিত নির্দিষ্ট
পরিমাণ মালের মালিক) হলে প্রতি বছর অর্থের জাকাত ও শস্যাদির ওশর প্রদান করা।
(খ) সামর্থ্য থাকলে প্রতি বছর কোরবানী করা। আর এই
শ্রেণীর দানগুলো সাধারণত: একটা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই প্রদান করতে হয়। যথা সঞ্চিত
অর্থের উপর যখন এব বছর পূর্ণ হবে তখন তাতে
জাকাত ফরজ হবে। এবং তা থেকে নির্ধারিত হারে জাকাত দিতে হবে। আর উৎপাদিত শস্যাদি
মাড়াই শেষে যখন ঘরে উঠবে, তখন তা থেকে ওশর বের করতে হবে। উল্লেখ্য,
শস্যাদির ক্ষেত্রে বছর পূর্ণ হওয়া শর্ত নয়। তাই এই ওশর প্রদান শস্য মাড়াই করার
সংখ্যা ভেদে বছরে একাধিকবারও হতে পারে। যেমন ইরি ধানের মৌসুম শেষে যদি আমন ধানও নিসাব পরিমাণ হয়, তবে তা
থেকেও একই বছরে পুনরায় ওশর দেয়া অপরিহার্য। এ ক্ষেত্রে ইরি ধানের ওশর দেয়া হয়েছে
বলে আমনের ওশর দেয়া থেকে বিরত থাকা চলবে
না। অন্যথায় ওশর অনাদায়ের শাস্তি বরণ ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। লক্ষণীয় যে এ জাতীয়
বাধ্যতামূলক দান, সকলের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য নয়। কেবল বিত্তশালী ও ধনীদের
ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ।
(গ) রমজানে রোজার ফিৎরা প্রদান করা
(ঘ) নজর বা মানত পূর্ণ করা।
এ দুই প্রকার দানও বাধ্যতামূলক। তবে এ জাতীয় দান
কেবলমাত্র বিত্তশালীই নয় বরং ধনী দরিদ্র সকলের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। এবং এগুলোও
পূর্বোক্ত দানের ন্যায় একটা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রদান করতে হয়। ফিৎরা সর্বোচ্চ
ঈদুল ফিতরের নামাজের পূর্বে এবং মানত তার সময় সীমার মধ্যেই পূর্ণ করা জরুরি। অন্যথায়
তা যথাযথভাবে আদায় বলে গণ্য হবে না। তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা
প্রয়োজন।
দুই. নফল সদকা যা বাধ্যতামূলক নয় তবে অনেক সাওয়াবের কাজ।
এই দ্বিতীয় প্রকারের দান নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে সৎপথে ব্যয় করা। যেমন: মসজিদ, মাদরাসা, গরীব, এতীম, কাঙ্গাল, ভিক্ষুকদের মাঝে সাধ্যমত দান করা। আত্মীয়, অনাত্মীয়, মুসাফির, বিপন্ন ও ঋণগ্রস্তকে সাহায্য করা ইত্যাদি। এ জাতীয় দানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পূর্বোক্ত দানের ন্যায় সময়ের কোন বাধ্যবধকতা নেই । স্থান, কাল, পাত্র ও প্রয়োজনভেদে কম বেশী করা যেতে পারে। দানের রকমও পরিবর্তন হতে পারে। মোট কথা অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার দান কারীর থাকে। তাছাড়া দিবারাত্রির যে কোনো সময়, যে কোনো স্থানে, এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে এই দান করার সুযোগ রয়েছে। সুতরাং দাতা তার ইচ্ছা ও সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোনো সময় নেক পথে দান করে উপকৃত হতে পারেন।
সেই সাথে সকলকে স্মরণ রাখতে হবে যে, সর্ব প্রকার
দানই কেবলমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে হতে হবে, অন্য কোনো
উদ্দেশ্যে নয়। অন্যথায় সব দানই বিফলে যাবে এবং তার জন্য চরম মূল্য দিতে হবে। তখন
শত আফসোস করেও কোনো লাভ হবে না।
স্মরণযোগ্য যে, বৈধ উপার্জন থেকে নেকনিয়তে
প্রদত্ত সর্বপ্রকার দান-খয়রাতই নি:সন্দেহে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম
মাধ্যম। তাই দান-খয়রাত কবুল হবার বিপরীত সবচিন্তা-চেতনা ও ধ্যান ধারণা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার জন্য আপ্রাণ চেস্টা করা
প্রতিটি দ্বীনদার ও সচেতন মুসলমানের পবিত্র দায়িত্ব। আর এ লক্ষ্য অর্জনে
আল্লাহ আমাদেরকে সম্মুখপানে অগ্রসর হওয়ার
তাওফীক দান করুন আমীন।
জাকাত বা ওশর প্রসঙ্গ
زكاة (জাকাত)- এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে বৃদ্ধি ও পবিত্র
হওয়া।
শরিয়তের পরিভাষায় এর অর্থ হচ্ছে, শরিয়তের নির্দেশ
অনুযায়ী নিজ সম্পদের একটা নির্ধারিত অংশ গরীব প্রাপকদের মাঝে বন্টন করা এবং তার
লাভালাভ হতে নিজেকে সম্পূর্ণ মুক্ত রাখা।
عُشْرٌ
(ওশর)- এর অর্থ হচ্ছে, উৎপন্ন শস্যের এক দশমাংশ
উল্লেখিত নিয়মে বন্টন করা। অর্থাৎ বৃষ্টির পানিতে ও বিনা সিঞ্চনে উৎপাদিত শস্যের
দশ ভাগের এক ভাগ বা বিশ মণে দুই মণ, আর সিঞ্চনের মাধ্যমে উৎপাদিত হলে বিশ মণে এক
মণ বর্ণিত নিয়মানুসারে বন্টন করে দেয়া।
উল্লেখ্য যে, হিজরী ২য় সনে রোজা ফরজ হওয়ার
পূর্বে মদিনায় জাকাত বিস্তারিত বিবরণসহ ফরজ
হয়।
বলাবাহুল্য, জাকাত প্রদানের মাধ্যমে মাল বৃদ্ধি পায়
ও পবিত্র হয়। পাশাপাশি কৃপণতার কলুষ-কালিমা হতে জাকাতদাতা প্রবিত্রতা লাভে ধন্য
হয়। বস্তুত: জাকাত হচ্ছে ইসলামের ৩য় স্তম্ভ।
যেমন হাদীসে বলা হয়েছে:
عَنْ ابْنِ عُمَرَ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ: «بُنِيَ الْإِسْلَامُ عَلَى خَمْسٍ: شَهَادَةِ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا
اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ، وَإِقَامِ الصَّلَاةِ، وَإِيتَاءِ
الزَّكَاةِ، وَالْحَجِّ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ»؛ صحيح البخاري - (ج 1 / ص 11)
অর্থ: আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের
উপর স্থাপিত।
এক. আল্লাহ ব্যতীত কোনো সত্য ইলাহ নেই এবং
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তার রাসূল এ সাক্ষ্য দেয়া।
দুই. নামাজ কায়েম করা।
তিন. জাকাত প্রদান করা।
চার. হজ্জ সম্পাদন করা।
পাচ. রমজানের রোজা রাখা। (বুখারি, মুসলিম)
লক্ষ্যণীয় যে, উক্ত হাদিসে জাকাতকে আল্লাহর নবী
৩য় স্তম্ভ বলে ঘোষণা করেছেন। তাই জাকাতের গুরুত্ব অপরিসীম। এর উপকারিতা বর্ণনা করে
শেষ করার মত নয়। প্রায় জায়গাতেই নামাজের পাশাপাশি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জাকাত
প্রদানের নির্দেশ দিয়ে নামাজের মতই গুরুত্ব আরোপ করেছেন। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে,
নামাজ কায়েম করা ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকলের জন্য বাধ্যতামূলক। আর জাকাত আদায় করা
কেবল ধনীদের জন্য ফরজ। এছাড়া নামাজের হুকুম দৈনিক পাঁচ বার পালনীয়। আর জাকাত প্রতি বছর মাত্র একবার আদায় করা কর্তব্য। বস্তুত: নামাজ হচ্ছে ইবাদতে বদনি বা শারীরিক
এবাদত, যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয়। আর জাকাত
হচ্ছে, ইবাদতে মালী বা আর্থিক ইবাদত। যা সাধারণত: অর্থ ও সম্পদ ব্যয় ও দানের
মাধ্যমে আদায় করতে হয়।
জাকাত প্রদানের নির্দেশ অবশ্য প্রতিপালনীয় হওয়ার
ব্যাপারে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কোরআনুল কারিমে অনেক আয়াত নাযিল করেছেন। বিশেষত:
নামাজের নির্দেশের পরপরই জাকাতের নির্দেশ দিয়েছেন। তাই জাকাতের গুরুত্বকে কোনোক্রমেই
খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আবশ্যিক বা বাধ্যতামূলক
দানসমূহের মধ্যে জাকাতই হচ্ছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাপকদের অভাব পূরণে প্রধানতম
সহায়ক দান। তাই এখানে জাকাতের গুরুত্ব ও ফজিলত, এবং জাকাত আদায় না করার পরিণতি
সম্পর্কে সামান্য আলোচনা করা হবে।
নামাজের পাশাপাশি জাকাত আদায়ের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَأَقِيمُوا
الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَمَا تُقَدِّمُوا لِأَنْفُسِكُمْ مِنْ خَيْرٍ
تَجِدُوهُ عِنْدَ اللهِ
অর্থ: আর তোমরা নামাজ কায়েম কর ও জাকাত
দাও। এবং নিজেদের জন্য তোমরা যে সৎকর্ম অগ্রে প্রেরণ করবে তাই তোমরা আল্লাহর নিকট
পাবে। [সূরা বাকারা: ১১০]
জাকাত আদায়ের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা তার নবীকে বলেন:
خُذْ
مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِمْ بِهَا
অর্থ: তুমি তাদের সম্পদ হতে সাদাকাহ
অর্থাৎ জাকাত গ্রহণ কর। যা দ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র করবে। [ সূরা তাওবা: ১০৩]
জাকাত ও ওশর গ্রহণ এবং উত্তম বস্তু ব্যয়ের নির্দেশ দিয়ে
আল্লাহ অন্যত্র বলেন।
يَا
أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا أَنْفِقُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّا
أَخْرَجْنَا لَكُمْ مِنَ الْأَرْضِ وَلَا تَيَمَّمُوا الْخَبِيثَ مِنْهُ
تُنْفِقُونَ وَلَسْتُمْ بِآخِذِيهِ إِلَّا أَنْ تُغْمِضُوا فِيهِ وَاعْلَمُوا
أَنَّ اللهَ غَنِيٌّ حَمِيدٌ ﴿267﴾
অর্থ: হে
ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের উপার্জন থেকে এবং আমি যা তোমদের জন্য ভূমি হতে উৎপন্ন
করেছি তা থেকে উৎকৃষ্ট বস্তু ব্যয় কর এবং তা থেকে নিকৃষ্ট জিনিস ব্যয় করতে মনস্থ
করো না,কেননা তা তোমরা কখনো গ্রহণ করবে না, তবে যদি তোমরা চোখ বন্ধ করে নিয়ে নাও।
জেনে রেখো, আল্লাহ অভাব মুক্ত, প্রশংসিত। [ সূরা বাকারা: ২৬৭]
জাকাত ফরজ হওয়া সম্বন্ধে মহা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন:
ثُمَامَةُ
بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَنَسٍ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُ كَتَبَ لَهُ هَذَا الْكِتَابَ لَمَّا وَجَّهَهُ إِلَى الْبَحْرَيْنِ:
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ هَذِهِ فَرِيضَةُ الصَّدَقَةِ الَّتِي فَرَضَ
رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْمُسْلِمِينَ وَالَّتِي
أَمَرَ اللهُ بِهَا رَسُولَهُ فَمَنْ سُئِلَهَا مِنْ الْمُسْلِمِينَ عَلَى
وَجْهِهَا فَلْيُعْطِهَا وَمَنْ سُئِلَ فَوْقَهَا فَلَا يُعْطِ.
صحيح البخاري - (ج 5 / ص
292)
অর্থ: আনাস রাদিয়াল্লাহ হতে
বর্ণিত, তাকে যখন খলীফা আবু বকর বাহরাইনের শাসনকর্তা নিযুক্ত করে পাঠাচ্ছিলেন,
তখন তাকে এ নির্দেশনামাটি লিখে দিয়েছিলেন। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। এটা ফরজ
সাদকা বা জাকাত যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানদের প্রতি ফরজ
করে দিয়েছেন এবং যার নির্দেশ আল্লাহ তার
রাসূলকে দিয়েছেন। যে কোনো মুসলমানের নিকট এটা নির্দিষ্ট নিয়মে চাওয়া হবে,
সে যেন তা দিয়ে দেয়। আর যার নিকট এর অধিক চাওয়া হবে সে যেন না দেয়। ........বুখারি।
একই বিষয়ে অপর হাদিসে আল্লাহর নবী বলেন:
عَنْ
ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِمُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ حِينَ بَعَثَهُ إِلَى الْيَمَنِ: «إِنَّكَ
سَتَأْتِي قَوْمًا أَهْلَ كِتَابٍ فَإِذَا جِئْتَهُمْ فَادْعُهُمْ إِلَى أَنْ
يَشْهَدُوا أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ فَإِنْ
هُمْ أَطَاعُوا لَكَ بِذَلِكَ فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّ اللهَ قَدْ فَرَضَ عَلَيْهِمْ
خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لَكَ بِذَلِكَ
فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّ اللهَ قَدْ فَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً تُؤْخَذُ مِنْ
أَغْنِيَائِهِمْ فَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لَكَ
بِذَلِكَ فَإِيَّاكَ وَكَرَائِمَ أَمْوَالِهِمْ وَاتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ
فَإِنَّهُ لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ اللهِ حِجَابٌ»؛ صحيح البخاري - (ج 5 / ص 356)
অর্থ: ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুয়ায বিন জাবালকে ইয়েমেনের
উদ্দেশ্যে পাঠানোর সময় বললেন: তুমি আহলে কিতাবদের নিকট যাচ্ছ। প্রথমে তাদেরকে এই
সাক্ষ্য দিতে আহবান জানাবে- আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই আর মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল। যদি তারা তোমার এ কথা মেনে নেয়,
তবে তাদেরকে বলবে যে, আল্লাহ তাআলা তাদের উপর দিনে ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ
করেছেন। অত:পর তারা যদি এটাও মেনে নেয়, তখন তাদেরকে বলবে যে, আল্লাহ তাদের উপর
সাদাকা বা জাকাত ফরজ করেছেন, যা তাদের ধনীদের নিকট হতে গ্রহণ করে তাদের দরিদ্রদের মধ্যে বন্টন করা
হবে। যদি তারা তোমার এ কথা মেনে নেয়, তবে
সাবধান! জাকাত গ্রহণের সময় তুমি বেছে বেছে
তাদের শুধু উত্তম জিনিসসমূহ নিবে না। আর বেঁচে থাকবে মাযলুমের বদ দুআ হতে। কেননা
মাযলুমের বদ দুআ এবং আল্লাহর মধ্যে কোন আড়াল নেই। বুখারি।
বাধ্যতামূলক দান সমূহের মধ্যে জাকাত
বা ওশর প্রদানের হুকুম যে অবশ্য পালনীয়, তার প্রমাণে আল্লাহর পবিত্র কালাম কোরআন
মাজিদের পাশাপাশি উপরের দুটি হাদীসও বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। যাতে বিদালোকের ন্যায়
সুস্পষ্টভাবে জাকাতের ফরজিয়াত বিবৃত
হয়েছে। ফলে জাকাত ফরজ হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই।
লেখক : কামাল উদ্দিন মোল্লা
সম্পাদনা : ইকবাল হোছাইন মাছুম
সূত্র : ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন