Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

See Our Articles In Different Styles... Grid View List View

সোমবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮

সেরা 9 টা ইসলামিক Android 📲 Apps 📲 যা অাপনার জীবনটাই পরিবর্তন করে দিবে!!!

Views:

A+ A-




সেরা 9 টা ইসলামিক Android 📲 Apps 📲 যা আপনার জীবনটাই পরিবর্তন করে দিবে!!!


ইসলাম ধর্মেকে সঠিক ভাবে জানতে ও শিখতে এবং আমল করতে সাহায্য করবে---



জীবনটাই পরিবর্তন করে দিবে!!!💝💝







আল কোরআনের জন্য



1.★🔹 Al Quran (Tafsir & by Word) : বাংলা অর্থসহ আল কোরআনের সবচেয়ে সমৃদ্ধ অ্যাপ, সার্চ, বুকমার্ক, শব্দে শব্দে আল কোরআন, তাফসির



অ্যাপ রিভিউ : আল কুরআন তাফসীর ও শব্দার্থসহ
Al Quran (Tafsir & by Word)
.


* একাধিক বাংলা অনুবাদ (5 টি) এবং বাংলা তাফসির আহসানুল বায়ান


* সর্বমোট 52+ অনুবাদ

* তাফসীর ইবনে কাসির

* প্রতিটা শব্দের অর্থ

* বাংলা এবং ইংরেজিতে শব্দে শব্দে অনুবাদ (প্রতিটি শব্দের অর্থ, ব্যাকরণ, মূল এবং ক্রিয়ার রূপগুলো)

* সাথে শব্দটি কোন parts of speech তাও জানা যায় (প্রতিটা শব্দের বিশ্লেষণ)

* পছন্দমতো ৩০ জন ক্বারীর তিলাওয়াত ডাউনলোড করে শোনার সুবিধা আছে

* পুরো কুরআনে ইংরেজি বা বাংলায় সার্চ করার সুবিধা

* সুবিধামত পছন্দের আয়াতগুলো বুকমার্ক করে রাখার সুবিধা

* ট্যাগিং সুবিধা

Read More---

বৃহস্পতিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

শিয়া আকিদার অসারতা (২য় পর্ব)

Views:

A+ A-

শিয়া আকিদার অসারতা (২য় পর্ব)


১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন।



তাদের ভ্রান্ত আকিদার পঞ্চম বিষয়
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং হাসান, হোসাইন ও আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমকে অপমান করা
মুহাম্মদ বাকের আল-মজলিসী ফারসি ভাষায় উল্লেখ করেন, যার আরবি (বাংলা) অনুবাদ হল:
“নু‘মানী ইমাম মুহাম্মদ বাকের আ. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: যখন ইমাম মাহদী আত্মপ্রকাশ করবে, তখন তাকে ফেরেশতাদের দ্বারা পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হবে এবং তার নিকট সর্বপ্রথম যিনি বায়‘আত (আনুগত্যের শপথ) গ্রহণ করবেন, তিনি হলেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম; অতঃপর আলী আ.। আবার শাইখ তুসী ও নু‘মানী ইমাম রেজা আ. থেকে বর্ণনা করেন, ইমাম মাহদী আত্মপ্রকাশের অন্যতম নিদর্শন হল, তিনি অচিরেই বিবস্ত্র অবস্থায় সূর্যের গোলকের সামনে আত্মপ্রকাশ করবেন[65]

সুতরাং লক্ষ্য কর হে আমার ভাই! আল্লাহ তোমার প্রতি রহম করুন, কিভাবে তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং আমিরুল মুমেনীন আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে অপমান করছে; আবার মিথ্যা দাবি করছে যে, তারা উভয়ে অচিরেই মাহদী’র নিকট বায়‘আত (আনুগত্যের শপথ) গ্রহণ করবেন। অতঃপর তারা মাহদী’র উপরও মিথ্যারোপ করে যে, সে নাকি অচিরেই বিবস্ত্র অবস্থায় দিগম্বর হয়ে আত্মপ্রকাশ করবে। এটা কোন ধর্ম? (আল্লাহ তাদেরকে লাঞ্ছিত করুন)
অতঃপর শিয়াগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মিথ্যার সম্পর্ক জুড়ে দিয়েছে এইভাবে যে, তিনি বলেছেন:
“যে ব্যক্তি একবার মুত‘আ বিয়ে করবে, তার মর্যাদা হবে হোসাইনের মর্যাদার সমান; আর যে ব্যক্তি দুইবার মুত‘আ বিয়ে করবে, তার মর্যাদা হবে হাসানের মর্যাদার সমান; আর যে ব্যক্তি তিনবার মুত‘আ বিয়ে করবে, তার মর্যাদা হবে আলী ইবন আবি তালিবের মর্যাদার সমান এবং যে ব্যক্তি চারবার মুত‘আ বিয়ে করবে, তার মর্যাদা হবে আমার মর্যাদার সমান।”[66]
Read More---

শিয়া আকিদার অসারতা (১ম পর্ব)

Views:

A+ A-

শিয়া আকিদার অসারতা (১ম পর্ব)




بسم الله الرحمن الرحيم
ভূমিকা
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য; আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর নিকট সাহায্য ও ক্ষমা প্রার্থনা করি; তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করি; তাঁর উপর ভরসা করি; আর আমাদের নফসের জন্য ক্ষতিকর এমন সকল খারাপি এবং আমাদের সকল প্রকার মন্দ আমল থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। সুতরাং আল্লাহ যাকে পথ প্রদর্শন করেন, তাকে পথভ্রষ্ট করার কেউ নেই; আর যাকে তিনি পথহারা করেন, তাকে পথ প্রদর্শনকারীও কেউ নেই। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমাদের নেতা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল, যাকে তিনি সত্যসহকারে কিয়ামতকে সামনে রেখে সুসংবাদ দাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারীরূপে পাঠিয়েছেন। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে, সে সঠিক পথ পাবে; আর যে ব্যক্তি তাঁদের অবাধ্য হবে, সে তার নিজেরই ক্ষতি করবে এবং সে আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
অতঃপর...

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাঁর পবিত্র কিতাবে বলেন:
﴿ لُعِنَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ مِنۢ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ عَلَىٰ لِسَانِ دَاوُۥدَ وَعِيسَى ٱبۡنِ مَرۡيَمَۚ ذَٰلِكَ بِمَا عَصَواْ وَّكَانُواْ يَعۡتَدُونَ ٧٨ كَانُواْ لَا يَتَنَاهَوۡنَ عَن مُّنكَرٖ فَعَلُوهُۚ لَبِئۡسَ مَا كَانُواْ يَفۡعَلُونَ ٧٩ ﴾ [سورة المائدة: 78-79]
বনী ইরাঈলের মধ্যে যারা কুফরী করেছিল, তারা দাঊদ ও ঈসা ইবন মারইয়াম কর্তৃক অভিশপ্ত হয়েছিল—এটা এই জন্য যে, তারা ছিল অবাধ্য ও সীমালংঘনকারী। তারা যেসব গর্হিত কাজ করত, তা থেকে তারা একে অন্যকে বারণ করত না। তারা যা করত, তা কতই না নিকৃষ্ট।” — (সূরা আল-মায়িদা: ৭৮-৭৯)
সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِ» (رواه مسلم في صحيحه).
“তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন অশ্লীল কাজ দেখে, সে যেন তা হাত দ্বারা প্রতিরোধ করে; আর যদি তাতে সে অক্ষম হয়, তবে সে যেন তার মুখ দ্বারা তার প্রতিবাদ করে; আর সে যদি তাতেও অক্ষম হয়, তবে সে যেন তার অন্তর দ্বারা তা প্রতিরোধের পরিকল্পনা করে; আর তা হচ্ছে ঈমানের দুর্বলতা”। — (মুসলিম, ঈমান, বাব নং- ২২, হাদিস নং- ১৮৬)
Read More---

মুহাররম মাসের সুন্নাত ও বিদ‘আত

Views:

A+ A-
মুহররম মাসঃ সুন্নাত ও বিদআত


মুহররম মাসঃ সুন্নাত ও বিদআত

মুহররম মাসের ফযীলত

১) প্রখ্যাত সাহাবী আবু বাকরা রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন: আল্লাহ তাআলা আসমান সমূহ এবং যমিন সৃষ্টির দিন যে আকৃতিতে সময়কে সৃষ্টি করেছিলেন সেটা আবার তার নিজস্ব কৃতিতে ফিরে এসেছে। বরং এবং বারো মাসে এক বছর। তম্মধ্যে চারটি মাস অতি সম্মানিত। তিনটি মাস ধারাবাহিক। সেগুলো হল: যুল কা’দাহ (যিলকদ), যুল হিজ্জা (যিলহজ্জ) এবং মুহাররম এবং আরেকটি হল মুযার সমপ্রদায়ের রজব মাস যা জুমাদাল ঊলা এবং শাবানের মধ্যেখানে রয়েছে। (বুখারী ও মুসলিম)
২) আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: রামাযানের পর সর্বোত্তম রোযা হল আল্লাহর মাস মুহাররামের রোযা। আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হল রাতের নামায।” (মুসলিম)
৩) আয়েশা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, “জাহেলী যুগে কুরায়শগণ আশুরার রোযা পালন করত। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় এসে নিজে আশুরারা রোযা রাখলেন এবং সাহাবীদেরকেও রোযা রাখার নির্দেশ দিলেন। কিন্তু‘ যখন রামাযানের রোযা ফরয হল তখন তা পরিত্যাগ করা হল। যার ইচ্ছা রাখত যার ইচ্ছা রাখতনা।” (বুখারী)
৪) ইব্‌ন আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনা আগমণ করার পর দেখলেন, সেখানকার ইহুদীরা আশুরার দিন রোযা পালন করছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন: তোমরা কিসের রোযা রাখ? তারা বলল: এটি একটি কল্যাণময় দিন। এ দিন বনী ইসরাঈলকে আল্লাহ তাআলা তাদের শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। তাই মুসা (আঃ) এ দিন রোযা পালন করেছিলেন। (বিধায় আমরাও মূসা আ. এর অনুসরণে এ দিনটিতে রোযা পালন করি)।
Read More---

কি ঘটেছিল কারবালায়? কারা হুসাইন (রা:) কে হত্যা করেছে?

Views:

A+ A-

কি ঘটেছিল কারবালায়? কারা হুসাইন (রা:) কে হত্যা করেছে?




কি ঘটেছিল কারবালায়? কারা হুসাইন (রা:) কে হত্যা করেছে?
(কারবালার ঘটনা সম্পর্কে একটি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ-যা অনেক ভুল ধারণা ভেঙ্গে দিবে ইনশাআল্লাহ)

এই প্রবন্ধে যে সকল বিষয় আলোচিত হয়েছে সেগুলো হল:
১) ভূমিকা
২) কারবালার প্রান্তরে রাসূলের দৌহিত্র হুসাইন (রা:) নিহত হওয়ার প্রকৃত ঘটনা।
৩) ফুরাত নদীর পানি পান করা থেকে বিরত রাখার কিচ্ছা।
৪) কারবালার প্রান্তরে হুসাইনের সাথে আরও যারা নিহত হয়েছেন।
৫) কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে সমস্ত ধারণা ঠিক নয়।
৬) হুসাইন (রা.) বের হওয়া ন্যায় সংগত ছিল কি?
৭) কারবালার ঘটনাকে আমরা কিভাবে মূল্যায়ন করব?
৮) মৃত ব্যক্তির উপর বিলাপ করার ক্ষেত্রে শিয়া মাজহাবের মতামত।
৯) আশুরার দিনে আমাদের করণীয় কী?
১০) শিয়াদের বর্ণনায় আশুরার রোজা।
১১) আশুরার দিনে মাতম করার ভিত্তি কোথায়?
১২) হুসাইন (রা.) হত্যায় ইয়াজিদ কতটুকু দায়ী?
১৩) তাহলে কে হুসাইন (রা:)কে হত্যা করল?
১৪) হুসাইন (রা.) হত্যাকারী নির্ধারণে ইবনে উমর (রা:)এর অভিমত।
১৫) হুসাইন (রা.) এর ভাষণই প্রমাণ করে যে ইয়াজিদ তাঁর হত্যার জন্য সরাসরি দায়ী নয়।
১৬) আলী বিন হুসাইন (রা.) তাঁর পিতা হুসাইনকে হত্যার জন্য কুফা বাসীদেরকে দায়ী করেছেন?
১৭) হুসাইন রা. এর মাথা কোথায় গিয়েছিল?
১৮) যেমন কর্ম তেমন ফল।
 ১৯) ইয়াজিদ সম্পর্কে একজন মুসলিমের ধারণা কেমন হওয়া উচিত।
২০) উপসংহার।


১) ভূমিকা:
প্রশংসা মাত্রই আল্লাহর জন্য, যিনি বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাঁর পরিবার এবং সকল সাহাবীর উপর।
সৌভাগ্যবান শহীদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দৌহিত্র সায়্যেদ হেসাইন বিন আলী (রা:)এর কারবালার প্রান্তরে শহীদ হওয়াকে কেন্দ্র করে অনেক ঘটনাই প্রসিদ্ধ রয়েছে। আমাদের বাংলাদেশের অনেক মুসলিমের মধ্যে এ বিষয়ে বিরাট বিভ্রান্তি রয়েছে। দেশের রাষ্ট্র প্রতি, প্রধান মন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতাগণ, ইসলামী বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ এ দিন উপলক্ষে জাতির সামনে প্রতিবছর বিশেষ বাণী তুলে ধরেন। রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে থাকে। এ দিন আমাদের দেশে সরকারী ছুটি থাকে। তাদের সকলের কথা ঘুরে ফিরে একটাই। স্বৈরাচারী, জালেম, নিষ্ঠুর ও নরপশু ইয়াজিদের হাতে এ দিনে রাসূলের দৌহিত্র ইমাম হুসাইন নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন। এ জন্য এটি একটি পবিত্র দিন। বিশেষ একটি সম্প্রদায় এ দিন উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। বিষাদসিন্ধু নামক একটি উপন্যাস পড়ে বা এর কিছু বানোয়াট ও কাল্পনিক কাহিনী শুনে সুন্নি মুসলিমগণও এ বিষয়ে ধুম্রজালে আটকা পড়েছেন।
Read More---

মুহররম মাসে শিয়া সম্প্রদায়ের মাতম বিষয়ক বিদ’আত

Views:

A+ A-

মুহররম মাসে শিয়া সম্প্রদায়ের মাতম বিষয়ক বিদ’আত



মুহররম মাসে শিয়া সম্প্রদায়ের মাতম বিষয়ক বিদ’আত

( পর্ব : ১)


মুহররম মাসে রাফিযী[১] সম্প্রদায়ের শোক প্রকাশে বিদয়াতি কাণ্ড

মুহররম মাসের দশম দিবস, যে দিবস আশুরা নামে পরিচিত, আল্লাহ তা-আলা হুসাইন বিন আলী বিন আবুতালিব - রাদিয়াল্লাহু আনহুমা- কে শহীদের মর্যাদা দান করেছিলেন. এটা হয়েছিল হিজরি ৬১ সনে . শহীদ হওয়া ছিল আল্লাহর পক্ষ হতে তার উঁচু সম্মান ও মর্যাদার বিষয়, কারণ তিনি এবং তার ভাই হাসান জান্নাতি যুবকদের নেতা. সুউচ্চ মাকাম- সম্মান অর্জিত হয় পরীক্ষা দ্বারা. নবী ―সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ―প্রশ্ন করা হয়েছিল―
أي الناس أشد بلاء؟ فقال : الأنبياء ثم الصالحون ثم الأمثل فالأمثل، يبتلى الرجل على حسب دينه، فإن كان في دينه صلابة زيد في بلائه، وإن كان في دينه رقة خفف عنه، ولا يزال البلاء بالمؤمن حتى يمشي على الأرض وليس عليه خطيئة.( رواه أحمد:১৪০০)
সবচে' বেশি পরীক্ষা কোন মানুষের? বললেন― ' নবীগণের, তারপর সৎকর্মশীলদের, তারপর যারা উৎকৃষ্ট তাদের এবং এভাবেই. ব্যক্তিকে তার ধর্মের উপর দৃঢ়তানুযায়ী পরীক্ষা করা হয়, যদি সে তার ধর্মে অবিচল থাকে তার পরীক্ষা কঠিন হয়, আর যদি সে ধর্মের বিষয়ে নমনীয় হয় পরীক্ষা ও হয় তুলনামূলক সহজ, আর মুমিনের উপর পরীক্ষা, নির্যাতন চলতেই থাকবে এরই মাঝে এমন এক সময় আসবে, সে জমিনে বিচরণ করছে, অথচ তার আমলনামাতে একটিও গুনাহ নেই.'

হাসান-হুসাইন ―রাদিয়াল্লাহু আনহুমা― এর মর্যাদা ও সুউচ্চ মাকাম যা আল্লাহ তা-আলার নিকট পূর্ব থেকেই নির্ধারিত ছিল, তাদের পূর্বসূরিদের ন্যায় ইতিপূর্বে তারা কোন পরীক্ষার সম্মুখীন হন নি। তাদের জন্ম গৌরবময় ইসলামে হয়েছে, লালিত হয়েছেন মহিমান্বিত ইসলামের শীতল ছায়াতলে, মুসলিমগণ তাদের সম্মান করতেন, মর্যাদা দিতেন, প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তেকাল করেছেন, তখনও তাদের ভালো-মন্দ পার্থক্যের বুঝটুকু পূর্ণতা লাভ করেনি, তো এ পরীক্ষা তাদের ওপর আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ, যাতে তারা তাদের পূর্বসূরিদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন. যেমন তাদের থেকে শ্রেষ্ঠ, আলী বিন আবুতালিব পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিলেন, যে তাঁকে শাহাদাত বরণ করতে হয়েছিল।
হুসাইন এর হত্যাকাণ্ড জনগণের মাঝে গোলযোগের ও বিদ্রোহের জন্ম দিয়েছিল, যেমন উসমান বিন আফ্‌ফানের হত্যাকাণ্ড মহা বিপদ ও ফিতনা ছড়িয়েছিল যা আজকে মুসলিম উম্মাহর বিভক্তির বড় কারণ.
আব্দুর রহমান বিন মুলজিম যখন আমিরুল মুমিনীন আলী বিন আবুতালেব ―রাদিয়াল্লাহু আনহু― কে হত্যা করল, এবং সাহাবা আজমাঈন তার সুযোগ্য সন্তান হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেন. যার শানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন―
إن ابني هذا سيد، وسيصلح الله به بين فئتين عظيمتين من المسلمين. ( رواه البخاري:২৫০৫)
'আমার এ দৌহিত্র সাইয়্যেদ- নেতা. অচিরেই আল্লাহ তা-আলা এর মাধ্যমে মুসলমানের বৃহৎ দুটি দলে আপোশ করাবেন.' 
তিনি অভিভাবক রূপে অবতরণ করলেন এবং আল্লাহ তাকে দিয়ে বৃহৎ দুটি দলে আপোশ করিয়ে দিলেন. অত:পর তিনি ইন্তেকাল করলেন, কতিপয় দল হুসাইন ―রাদিয়াল্লাহু আনহুর― নিকট পত্র লিখলেন, যদি তিনি খেলাফতের দায়িত্ব কবুল করেন তাহলে তারা তাকে সাহায্য সহযোগিতা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিলেন, এ লোক গুলো আসলে ভালো লোক ছিল না. বরং যখন তার চাঁচাত ভাইকে তাদের কাছে প্রেরণ করলেন, তারা অঙ্গীকার ভঙ্গকরল, চুক্তিলঙ্গন করল. তাঁর বিরুদ্ধে শত্রুকে সহায়তা করল তাঁকে নিধন করতে, এবং তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে.
প্রকৃত বুদ্ধিমান যারা হুসাঈন রাদিয়াল্লাহু আনহুকে ভালোবাসতেন, যেমন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর প্রমুখ, তাঁকে আকারে- ইঙ্গিতে বলেছিলেন ও, তিনি যেন তাদের কাছে না যান এবং তাদের সহযোগিতা গ্রহণ না করেন, তারা মনে করতেন তাদের নিকট তার যাওয়াটা মঙ্গল ও সুখকর হবে না, বাস্তবেও তারা যা বলেছিলেন তাই হয়েছে, বস্তুত আল্লাহর নির্ধারিত নিয়তি এমনি ছিল.
Read More---

আশুরা করনীয় ও বর্জনীয়

Views:

A+ A-





সূচীপত্র




১-অভিমত

২-দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকা

৩-আশুরার বৈশিষ্ট্য ও তার সওমের ফজীলত

৪-আশুরার সওমের ইতিবৃত্ত ও তার বিধান

৫-আশুরার সওম পালনে ইহুদীদের বিরোধীতা করার নির্দেশ

৬- কিভাবে পালন করবেন আশুরার সওম

৭-শরীয়তের মানদন্ডে আশুরার প্রচলিত আমলসমূহ

৮- আশুরা সম্পর্কে প্রচলিত ভুল আকীদাহ
Read More---

মুহররম ও আশুরার ফজিলত

Views:

A+ A-
মুহররম ও আশুরার ফজিলত


মুহররম ও আশুরার ফজিলত

الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على نبينا محمد خاتم الأنبياء وسيد المرسلين وعلى آله وصحبه أجمعين وبعد: 

মুহররম, একটি মহান বরকতময় মাস। হিজরি সনের প্রথম মাস । এটি ‘আশহুরে হুরুম’ তথা হারামকৃত মাস চতুষ্টয়ের অন্যতম। আশহুরে হুরুম সম্বদ্ধে আল্লাহ তাআলা বলেন, 
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ ﴿36﴾[التوبة:36].
নিশ্চয় মাসসমূহের গণনা আল্লাহর কাছে বার মাস আল্লাহর কিতাবে, (সেদিন থেকে) যেদিন তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্য থেকে চারটি সম্মানিত, এটাই প্রতিষ্ঠিত দীন। সুতরাং তোমরা এ মাসসমূহে নিজদের উপর কোন জুলুম করো না।{সূরা তাওবা:৩৬} 
সাহাবি আবু বাকরাহ রা. নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, নবীজী বলেন, 
{السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ: ثَلاثَةٌ مُتَوَالِيَاتٌ ذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ، وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِي بَيْنَ جُمَادَى وَشَعْبَانَ } [رواه البخاري 2958]
বছর হলো বারোটি মাসের সমষ্টি, তার মধ্যে চারটি অতি সম্মানিত। তিনটি পর পর লাগোয়া জিলকদ, জিলহজ ও মুহররম আর (চতুর্থটি হলো) জুমাদাস সানি ও শাবানের মধ্যবর্তী রজব। {বোখারি:২৯৫৮}
মুহররমকে মুহররম বলে অভিহিত করা হয়েছে কারণ এটি অতি সম্মানিত। 

আল্লাহর বাণী ﴿فَلا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ﴾ {তোমরা এতে নিজেদের উপর কোনো জুলুম করো না।} অর্থাৎ, এই সম্মানিত মাস সমূহে তোমরা কোনো অন্যায় করো না। কারণ এ সময়ে সংঘটিত অন্যায় ও অপরাধের পাপ অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি ও মারাত্মক।
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা “ ﴿فَلا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ﴾ {তোমরা এতে নিজেদের উপর কোনো জুলুম করো না।}’’ এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, এই বারো মাসের কোনোটিতেই তোমরা অন্যায় অপরাধে জড়িত হয়ো না। অত:পর তাহতে চারটি মাসকে বিশেষভাবে নির্দিষ্ট করেছেন। তাদেরকে মহা সম্মানে সম্মানিত করেছেন। এসবের মাঝে সংঘটিত অপরাধকে অতি মারাত্মক অপরাধ বলে গণ্য করেছেন। আর তাতে সম্পাদিত নেক আমলকে বেশি সাওয়াব যোগ্য নেক আমল বলে সাব্যস্ত করেছেন।
Read More---

মুহররম মাসঃ সুন্নাত ও বিদআত

Views:

A+ A-



মুহররম মাসের ফযীলত



১) প্রখ্যাত সাহাবী আবু বাকরা রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন: আল্লাহ তাআলা আসমান সমূহ এবং যমিন সৃষ্টির দিন যে আকৃতিতে সময়কে সৃষ্টি করেছিলেন সেটা আবার তার নিজস্ব কৃতিতে ফিরে এসেছে। বরং এবং বারো মাসে এক বছর। তম্মধ্যে চারটি মাস অতি সম্মানিত। তিনটি মাস ধারাবাহিক। সেগুলো হল: যুল কা’দাহ (যিলকদ), যুল হিজ্জা (যিলহজ্জ) এবং মুহাররম এবং আরেকটি হল মুযার সমপ্রদায়ের রজব মাস যা জুমাদাল ঊলা এবং শাবানের মধ্যেখানে রয়েছে। (বুখারী ও মুসলিম)

২) আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: রামাযানের পর সর্বোত্তম রোযা হল আল্লাহর মাস মুহাররামের রোযা। আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হল রাতের নামায।” (মুসলিম)


৩) আয়েশা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, “জাহেলী যুগে কুরায়শগণ আশুরার রোযা পালন করত। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় এসে নিজে আশুরারা রোযা রাখলেন এবং সাহাবীদেরকেও রোযা রাখার নির্দেশ দিলেন। কিন্তু‘ যখন রামাযানের রোযা ফরয হল তখন তা পরিত্যাগ করা হল। যার ইচ্ছা রাখত যার ইচ্ছা রাখতনা।” (বুখারী)

৪) ইব্ন আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনা আগমণ করার পর দেখলেন, সেখানকার ইহুদীরা আশুরার দিন রোযা পালন করছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন: তোমরা কিসের রোযা রাখ? তারা বলল: এটি একটি কল্যাণময় দিন। এ দিন বনী ইসরাঈলকে আল্লাহ তাআলা তাদের শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। তাই মুসা (আঃ) এ দিন রোযা পালন করেছিলেন। (বিধায় আমরাও মূসা আ. এর অনুসরণে এ দিনটিতে রোযা পালন করি)।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: আমি তোমাদের চেয়ে মুসাকে অনুসরণ করার বেশি হকদার।” অতঃপর তিনি এ দিন রোযা রাখলেন এবং সাহাবীদেরকে রোযা রাখার নির্দেশ দিলেন।” (বুখারী-মুসলিম)

৫) আবু মূসা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: ইহুদীরা আশুরার দিনকে ঈদ মনে করত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, অতঃএব তোমরা এ দিন রোযা রাখ।” (বুখারী-মুসলিম)

৬) হুমাইদ বিন আব্দুর রহমান হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি মুআবিয়া রা. কে হজ্জের বছর আশুরার দিন মিম্বরের উঠে বক্তব্য দিতে শুনেছি। তিনি বলছেন, হে মদীনাবাসী, তোমাদের আলেমগণ কোথায়? আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আজ আশুরার দিন। আল্লাহ এ দিন রোযা রাখা ফরয করেন নি। কিন’ আমি রোযা রেখেছি। অতঃএব, তোমাদের কেউ চাইলে রোযা রাখতে পারে, নাও রাখতে পারে। (বুখারী ও মুসলিম)

৭) ইব্ন আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে এই আশুরার দিনের উপর অগ্রাধিকার দিয়ে এত গুরুত্বসহকারে অন্য কোন দিন রোযা পালন করতে দেখি নি। (অর্থাৎ রামাযান মাস ছাড়া) (বুখারী)
Read More---

কি ঘটেছিল কারবালায়? কারা হুসাইন রাদিয়াল্লাহ আনহুকে হত্যা করেছে?

Views:

A+ A-
কি ঘটেছিল কারবালায়? কারা হুসাইন রাদিয়াল্লাহ আনহুকে হত্যা করেছে?


কি ঘটেছিল কারবালায়? কারা হুসাইন রাদিয়াল্লাহ আনহুকে হত্যা করেছে?


(কারবালার ঘটনা সম্পর্কে একটি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ-যা অনেক ভুল ধারণা ভেঙ্গে দিবে ইনশাআল্লাহ)

এই প্রবন্ধে যে সকল বিষয় আলোচিত হয়েছে সেগুলো হল:
১) ভূমিকা
২) কারবালার প্রান্তরে রাসূলের দৌহিত্র হুসাইন (রা:) নিহত হওয়ার প্রকৃত ঘটনা।
৩) ফুরাত নদীর পানি পান করা থেকে বিরত রাখার কিচ্ছা।
৪) কারবালার প্রান্তরে হুসাইনের সাথে আরও যারা নিহত হয়েছেন।
৫) কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে সমস্ত ধারণা ঠিক নয়।
৬) হুসাইন (রা.) বের হওয়া ন্যায় সংগত ছিল কি?
৭) কারবালার ঘটনাকে আমরা কিভাবে মূল্যায়ন করব?
৮) মৃত ব্যক্তির উপর বিলাপ করার ক্ষেত্রে শিয়া মাজহাবের মতামত।
৯) আশুরার দিনে আমাদের করণীয় কী?
১০) শিয়াদের বর্ণনায় আশুরার রোজা।
১১) আশুরার দিনে মাতম করার ভিত্তি কোথায়?
১২) হুসাইন (রা.) হত্যায় ইয়াজিদ কতটুকু দায়ী?
১৩) তাহলে কে হুসাইন (রা:)কে হত্যা করল?
১৪) হুসাইন (রা.) হত্যাকারী নির্ধারণে ইবনে উমর (রা:)এর অভিমত।
১৫) হুসাইন (রা.) এর ভাষণই প্রমাণ করে যে ইয়াজিদ তাঁর হত্যার জন্য সরাসরি দায়ী নয়।
১৬) আলী বিন হুসাইন (রা.) তাঁর পিতা হুসাইনকে হত্যার জন্য কুফা বাসীদেরকে দায়ী করেছেন?
১৭) হুসাইন রা. এর মাথা কোথায় গিয়েছিল?
১৮) যেমন কর্ম তেমন ফল।
 ১৯) ইয়াজিদ সম্পর্কে একজন মুসলিমের ধারণা কেমন হওয়া উচিত।
২০) উপসংহার।


১) ভূমিকা:
প্রশংসা মাত্রই আল্লাহর জন্য, যিনি বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাঁর পরিবার এবং সকল সাহাবীর উপর।
সৌভাগ্যবান শহীদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দৌহিত্র সায়্যেদ হেসাইন বিন আলী (রা:)এর কারবালার প্রান্তরে শহীদ হওয়াকে কেন্দ্র করে অনেক ঘটনাই প্রসিদ্ধ রয়েছে। আমাদের বাংলাদেশের অনেক মুসলিমের মধ্যে এ বিষয়ে বিরাট বিভ্রান্তি রয়েছে। দেশের রাষ্ট্র প্রতি, প্রধান মন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতাগণ, ইসলামী বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ এ দিন উপলক্ষে জাতির সামনে প্রতিবছর বিশেষ বাণী তুলে ধরেন। রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে থাকে। এ দিন আমাদের দেশে সরকারী ছুটি থাকে। তাদের সকলের কথা ঘুরে ফিরে একটাই। স্বৈরাচারী, জালেম, নিষ্ঠুর ও নরপশু ইয়াজিদের হাতে এ দিনে রাসূলের দৌহিত্র ইমাম হুসাইন নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন। এ জন্য এটি একটি পবিত্র দিন। বিশেষ একটি সম্প্রদায় এ দিন উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। বিষাদসিন্ধু নামক একটি উপন্যাস পড়ে বা এর কিছু বানোয়াট ও কাল্পনিক কাহিনী শুনে সুন্নি মুসলিমগণও এ বিষয়ে ধুম্রজালে আটকা পড়েছেন।
জাতির ভুল-ভ্রান্তি সংশোধনের জন্য আজ আমি এ বিষয়ে সঠিক ও গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য প্রকাশ করার কাজে অগ্রসর হতে বাধ্য হলাম। মূল বিষয়ে যাওয়ার আগে সংক্ষিপ্ত আকারে একটি ভূমিকা পেশ করতে চাই। মন দিয়ে ভূমিকাটি পড়লে মূল বিষয় বুঝতে সহজ হবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি আরও বিশ্বাস করি যে, আমার লেখাটি পড়ে এ বিষয়ে অনেকের আকীদাহ সংশোধন হবে। আর যারা বিষয়টি নিয়ে সংশয়ে আছেন, তাদেরও সংশয় কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ।
ইমাম ইবনে কাছীর (র:) বলেন: প্রতিটি মুসলিমের উচিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দৌহিত্র সায়্যেদ হেসাইন বিন আলী (রা:)এর কারবালার প্রান্তরে শহীদ হওয়ার ঘটনায় ব্যথিত হওয়া ও সমবেদনা প্রকাশ করা। তিনি ছিলেন মুসলিম জাতির নেতা ও ইমামদের অন্যতম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সর্বশ্রেষ্ঠ কন্যা ফাতেমার পুত্র ইমাম হুসাইন (রা:) একজন বিজ্ঞ সাহাবী ছিলেন। তিনি ছিলেন একধারে এবাদত গুজার, দানবীর এবং অত্যন্ত সাহসী বীর। হাসান ও হুসাইনের ফজিলতে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে একাধিক সহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। অন্তর দিয়ে তাদেরকে ভালবাসা ঈমানের অন্যতম আলামত এবং নবী পরিবারের কোন সদস্যকে ঘৃণা করা ও গালি দেয়া মুনাফেকির সুস্পষ্ট লক্ষণ। যাদের অন্তর ব্যাধিগ্রস্ত কেবল তারাই ইমাম হুসাইন বা নবী পরিবারের পবিত্র সদস্যদেরকে ঘৃণা করতে পারে।

Read More---

আশুরা : আনন্দ না শোক দিবস?

Views:

A+ A-
আশুরা : আনন্দ না শোক দিবস?

আশুরা : আনন্দ না শোক দিবস?

আমাদের সম্মুখে উপস্থিত পবিত্র মাস মুহাররম। এ মাসে এমন একটি দিবস রয়েছে যাকে মানুষ বিভিন্নভাবে উদযাপন করে। সেটি হলো আশুরা দিবস। এদিন দুটি ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে যে কারণে এ দিবসের আমলে ভিন্নতা দেখা যায়। 

প্রথম ঘটনা :

গোত্রসহ মুসা আলাইহিস সালামের পরিত্রাণ ও সদলবলে ফেরাউনের পতন :
ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহ. আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহুমার উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনা করেন, 
لَمَّا قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَدِينَةَ وَجَدَ اليَهُودَ يَصُومُونَ عَاشُورَاءَ، فَسُئِلُوا عَنْ ذَلِكَ، فَقَالُوا: هَذَا اليَوْمُ الَّذِي أَظْفَرَ اللَّهُ فِيهِ مُوسَى، وَبَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَى فِرْعَوْنَ، وَنَحْنُ نَصُومُهُ تَعْظِيمًا لَهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «نَحْنُ أَوْلَى بِمُوسَى مِنْكُمْ، ثُمَّ أَمَرَ بِصَوْمِهِ»
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় আগমন করে দেখলেন স্থানীয় ইহুদীরা আশুরা দিবসে রোযা পালন করছে। ফলে তাদেরকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলো। তারা উত্তর দিল এ এমন এক দিবস যাতে আল্লাহ তা‘আলা মুসা আলাইহিস সালামকে বিজয়ী করেছিলেন এবং বানী ইসরাঈলকে ফেরাউনের ওপর আধিপত্য দান করেছেন। এ দিনে সম্মানার্থে আমরা সিয়াম পালন করি। এতদশ্রবণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, ‘তাহলে তো এ দিন রোযা রাখার ব্যাপারে আমরাই অধিক হকদার। অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দিবসে রোযা রোযা পালনের নির্দেশ দেন। (বুখারী : ৩৯৪৩; মুসলিম : ১১৩০)

দ্বিতীয় ঘটনা : 

নবী দৌহিত্র হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহুর শাহাদাত বরণ: 
ইরাকের কারবালা প্রান্তরে মর্মবিদারক এ ঘটনাটি ঘটেছিল ৬১ হিজরির পবিত্র জুমাবারে।[আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া : ১১/৫৬৯] এটি ছিল উম্মতের ওপর নেমে আসা সবচে বড় বিপদগুলোর একটি।
আল্লামা ইবনু তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘হুসাইনের রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু শাহাদতের ঘটনাটি মহা বিপদগুলোর একটি। কারণ, হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু এবং তাঁর আগে উসমান রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু-এর শহীদ হওয়ার ঘটনার মধ্য দিয়েই পরবর্তীতে উম্মতের ওপর নেমে এসেছে অনেক মহা দুর্যোগ। আর তাঁদের শহীদ করেছে আল্লাহর নিকৃষ্ট বান্দারা। [মাজমু‘ ফাতাওয়া ৩/৪১১]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দিন রোযা রাখতে বলেছেন, মুসা আলাইহিস সালামের মুক্তি ও ফেরাউনের ভরাডুবির শুকরিয়া হিসেবে। এ রোযার সঙ্গে হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহুর শাহাদতের কোনো সম্পর্ক নেই। এ দিবস সম্পর্কে শুদ্ধ-অশুদ্ধ অনেক হাদীস বর্ণনা করা হয়। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে এর মাহাত্ম্য রোযা পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আর আশুরার ব্যাপারে এটিই মধ্যমপন্থী এবং সঠিকতম দৃষ্টিভঙ্গি। [দেখুন, লাতায়েফে মাআরেফ : ১০২-১১৩]

• আশুরার ব্যাপারে দুটি শ্রেণী বিভ্রান্তিতে রয়েছে : 

প্রথম দল : নাসেবিয়া, এরা আশুরা দিবসে আনন্দ-উৎসব পালন করে। আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের কিছু লোকও আছে, যারা এ ব্যাপারে ভুলের শিকার। তারা এ দিনে গোসল করা, মেহেদি ও সুরমা লাগানো ইত্যাদি আনন্দ প্রকাশক কাজ করে। এমন করার উদ্দেশ্য, যারা এ দিনটিকে শোক দিবস হিসেবে পালন করে তাদের বিরুদ্ধাচারণ করা। কিন্তু এটাতো ভ্রান্তির বদলে ভ্রান্তির চর্চা এবং বিদআতকে প্রতিরোধ করা বিদআতের মাধ্যমে। যেমনটি বলেছেন ইবনু তাইমিয়া রহ.। [মাজমু‘ ফাতাওয়া : ৪/৫১৩] 

দ্বিতীয় দল : শিয়াদের কয়েকটি দল এ দিনকে শোক দিবস হিসেবে পালন করে। এদিন তারা গণ্ডাদেশ জখম করে, বুকের কাপড় ছিঁড়ে ফেলে এবং জাহিলী সব কথাবার্তা বলে। এরা এমন অবস্থায়ও উপনীত হয় যে, নিজে নিজেকে ক্ষত-বিক্ষত করে। কেউ কেউ তরবারী দিয়ে মাথায় আঘাত করে রক্ত বয়ে দেয়। তাদের দাবী, এভাবে তারা হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহুকে হারানোর বেদনা প্রকাশ করে। এরা নিজেদের তাঁর একান্ত ভক্ত ও অনুসারী বলেও দাবী করে। মিডিয়াগুলোও এমনভাবে প্রচার করে যেন তারাই একমাত্র আহলে বাইত বা রাসূল-পরিবারের ভক্ত। যারা তাদের মতো কাজ করে না তারা আহলে বাইত-এর ভক্ত নয়। এটা একদম নির্জলা মিথ্যাচার। 
কারণ, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতই তো আহলে বাইতকে সর্বাধিক ভালোবাসে। কিন্তু তারা ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে শরীয়ত লঙ্ঘন করে না। নিজেরা নিজেদের আহত ও বিক্ষত করার আসল কারণ- রাফেজিরা যা প্রকাশ করে না তা হলো, তারাই তো হুসাইনকে রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু অসম্মান করেছিল যখন তিনি কুফার ভূমিতে তাদের কাছে এসেছিলেন। [আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া : ১১/৫৩০-৫৩২]
শুধু তাই নয় তারা এর আগে হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহুর চাচাতো ভাই মুসলিম ইবন আকিলকেও অপমান করেছিল। এমনকি ইবন জিয়াদ তাঁকে হত্যা করতে সক্ষম হয়। [প্রাগুক্ত : ১১/৪৮৪-৪৮৮]
সুতরাং তাঁদের সঙ্গে অসম্মান ও বেয়াদবিপূর্ণ আচরণ করার অনুশোচনাতেই তারা মূলত এসব অসংলগ্ন আচরণ করে থাকে। 

• হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহুর শাহাদত সম্পর্কে সঠিক অবস্থান : 

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহুর শাহাদতের ঘটনাকে উম্মতের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বড় বিপদগুলোর একটি গণ্য করে। এজন্য মুসলিমগণ হৃদয়ে গভীর শোক ও অশেষ বেদনা অনুভব করে। কিন্তু তারা শুধু এমন কাজই করেন শরীয়ত যা শিক্ষা দিয়েছে। আর শরীয়তে শোকের সময় ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রজিঊন’ পড়তে শিক্ষা দেয়া হয়েছে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,
﴿ ٱلَّذِينَ إِذَآ أَصَٰبَتۡهُم مُّصِيبَةٞ قَالُوٓاْ إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّآ إِلَيۡهِ رَٰجِعُونَ ١٥٦ أُوْلَٰٓئِكَ عَلَيۡهِمۡ صَلَوَٰتٞ مِّن رَّبِّهِمۡ وَرَحۡمَةٞۖ وَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُهۡتَدُونَ ١٥٧ ﴾ [البقرة: ١٥٦،  ١٥٧]  
‘আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা, তাদেরকে যখন বিপদ আক্রান্ত করে তখন বলে, (‘ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রজিঊন’) নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। তাদের ওপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও রহমত এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত। {সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৫৫-১৫৭} 

মুসলিম শরীফে বর্ণিত হয়েছে, উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি ইরশাদ করেন, 
«مَا مِنْ عَبْدٍ تُصِيبُهُ مُصِيبَةٌ، فَيَقُولُ: {إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ} [البقرة: 156] ، اللهُمَّ أْجُرْنِي فِي مُصِيبَتِي، وَأَخْلِفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا، إِلَّا أَجَرَهُ اللهُ فِي مُصِيبَتِهِ، وَأَخْلَفَ لَهُ خَيْرًا مِنْهَا»
‘যে কোনো বান্দা কোনো বিপদের সম্মুখীন হয় অতপর সে বলে, ‘‘নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী”। {বাকারা, আয়াত : ১৫৬} হে আল্লাহ আমাকে আমার বিপদের বদলা দিন এবং এর চেয়ে উত্তম দান করুন।’ আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই তার বিপদের বদলা দেবেন এবং তাকে হারানো জিনিসের চেয়ে উত্তম জিনিস দান করবেন। [মুসলিম : ৯১৮]

ইবনু তাইমিয়া রহ. বলেন, এ ব্যাপারে উদ্ধৃত সবচেয়ে সুন্দর হাদীস বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমদ রহ. এবং ইবনু মাজা রহ.। তাঁরা বলেন, ফাতেমা বিনতে হুসাইন তাঁর পিতা হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, 
«مَنْ أُصِيبَ بِمُصِيبَةٍ، فَذَكَرَ مُصِيبَتَهُ، فَأَحْدَثَ اسْتِرْجَاعًا، وَإِنْ تَقَادَمَ عَهْدُهَا، كَتَبَ اللَّهُ لَهُ مِنَ الْأَجْرِ مِثْلَهُ يَوْمَ أُصِيبَ»
‘যদি কোনো মুসলিম বিপদে আক্রান্ত হয়। তারপর পরবর্তীতে সে বিপদ স্মরণ হলে সে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রজিঊন’ পড়ে, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য সে পরিমাণ পুণ্য লিখেন যে পরিমাণ লিখা হয়েছে বিপদে আক্রান্ত হবার দিন।’ [মুসনাদ আহমাদ : ১৭৩৪; ইবনু মাজা : ১৫৯৮; শায়খ আলবানী হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন। দেখুন, সিলসিলা যাঈফা : ১০/৫৪।] 
তাঁরা এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন হুসাইন তনয়া ফাতেমা থেকে যিনি ওই মর্মান্তিক ঘটনায় শাহাদত বরণ করেছেন। অথচ হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহুর শাহাদাতের ঘটনা যে যুগে যুগে স্মরণ করা হবে তা কিন্তু অনুমান করা হয়েছিল। অথচ কী তার উদারতা যে তিনি নিজেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে এ সুন্নাত পৌঁছে দিয়েছেন, যাতে যখনই তাঁর এ বিপদের কথা স্মরণ করা হবে তখনই ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রজিঊন’ বলে মুসলমানরা সে দিনের মতো নেকি পেতে পারেন যেদিন এ বিপদ নেমে এসেছিল। [মাজমু‘ ফাতাওয়া : ৪/৫১১-৫১২]

• গালে ছুরি চালানো, বুকে চাপড়ানো এবং নিজেকে ক্ষত-আহত করার যে রেওয়াজ ইদানীং চালু হয়েছে, হলফ করে বলা যায় সেটা হারাম এবং তা শরীয়ত কর্তৃক অনুমোদিত ভালোবাসার মধ্যে পড়ে না। 

ইবন রজব রহ. বলেন, ‘আর হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহুর শাহাদাতের কারণে এ দিনটিকে শোক দিবস হিসেবে গ্রহণ করা- যেমনটি করেছে রাফেজিরা, সে লোকদের কাজ যারা দুনিয়ার পেছনে তাদের চেষ্টা অপচয় করেছে অথচ ভাবে যে, তারা ভাল কাজ করেছে। আল্লাহ তা‘আলা তো নবী-রাসূলদের মৃত্যুর দিনকেই শোক দিবস হিসেবে পালন করার নির্দেশ দেননি তাহলে তাদের চেয়ে মর্যাদায় কম যিনি তাঁর শাহাদতের দিনকে শোক দিবস হিসেবে পালন করা হবে কিভাবে? [লাতায়েফে মাআরেফ : ১১৩]
তদুপরি খোদ হুসাইন তনয় আলী এবং তাঁর ছেলে মুহাম্মদ কিংবা তাঁর ছেলে জাফর অথবা তাঁর পুত্র মূসা (রাদিআল্লাহু তা‘আলা আনহুম) বা অন্য কোনো হেদায়াতপ্রাপ্ত ইমাম এভাবে গাল কাটা, বুক ফাড়া বা চিৎকার করার মতো অতি আবেগ কখনো প্রকাশ করেছেন বলে জানা যায় নি। এরকম করলে তাঁর পিতা আমীরুল মুমিনীন আলী রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহুই তো এর সর্বোত্তম হকদার ছিলেন। ৪০ হিজরীর ১৭ রমযান পবিত্র জুমাবারে ফজর সালাত পড়তে যাওয়ার সময় তাঁকে শহীদ করা হয়। রাফেজিরা তাঁর এ শাহাদাতের দিনকে শোকের দিন হিসেবে পালন করে না! 

• গালে আঘাত করা, বুকের কাপড় ছিঁড়ে ফেলা কিংবা নিজে নিজেকে কষ্ট দেয়া অবৈধ, হারাম। 

ইমাম বুখারী এবং মুসলিম রহ. আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 
«لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَطَمَ الخُدُودَ، وَشَقَّ الجُيُوبَ، وَدَعَا بِدَعْوَى الجَاهِلِيَّةِ»
‘সে আমাদের উম্মতভুক্ত নয় যে গালে আঘাত করে, বুকের কাপড় ছেঁড়ে এবং জাহেলী কথাবার্তা বলে। [বুখারী : ১২৯৪, মুসলিম : ১০৩]

বুখারী ও মুসলিম রহ. আবূ মূসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, 
أَنَا بَرِيءٌ مِمَّا بَرِئَ مِنْهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، «فَإِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَرِئَ مِنَ الصَّالِقَةِ، وَالْحَالِقَةِ، وَالشَّاقَّةِ»
‘আমি তাদের থেকে মুক্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদের থেকে মুক্ত। আর সাল্লাল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (শোকে) মাথা মুণ্ডনকারিণী, বিলাপকারিণী এবং বুক বিদীর্ণকারিণী থেকে মুক্ত। [বুখারী : ১২৩৪, মুসলিম : ১০৪] 

তেমনি আবূ মালেক আশআরী রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা ‘আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 
« أَرْبَعٌ فِي أُمَّتِي مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ، لَا يَتْرُكُونَهُنَّ: الْفَخْرُ فِي الْأَحْسَابِ، وَالطَّعْنُ فِي الْأَنْسَابِ، وَالْاسْتِسْقَاءُ بِالنُّجُومِ، وَالنِّيَاحَةُ » وَقَالَ: «النَّائِحَةُ إِذَا لَمْ تَتُبْ قَبْلَ مَوْتِهَا، تُقَامُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَعَلَيْهَا سِرْبَالٌ مِنْ قَطِرَانٍ، وَدِرْعٌ مِنْ جَرَبٍ»
‘আমার উম্মত জাহেলী যুগের চারটি স্বভাব সহজে ছাড়তে পারবে না। বংশ নিয়ে গর্ব, বংশ তুলে গালি দেয়া, তারকা দেখে বৃষ্টি চাওয়া এবং মৃত ব্যক্তির ওপর বিলাপ করা। তিনি বলেন, বিলাপকারিণী যদি মৃত্যুর আগে তওবা না করে তাহলে কেয়ামতের দিন তাকে এমনভাবে উঠানো হবে যে, তার সর্বাঙ্গ খোস-পাঁচড়া ও আলকাতরায় ভরা থাকবে। [মুসলিম : ৯৩৪]

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘এমনিতেই এসব কাজের নিন্দায় অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে, তার সঙ্গে যদি মুসলমানের ওপর জুলুম করা, তাদের অভিশাপ দেয়া ও গাল-মন্দ করা এবং তাদের মাঝে অনৈক্য ও ধর্মহীনতার বীজ বপনকারীদের সাহায্য করার মতো অপরাধ যোগ এতে হয় তাহলে তা কত বড় গুনার কাজ বলে গণ্য হবে তা তো বলাই বাহুল্য। 

হে আল্লাহ, আপনি স্বীয় হাবিবের সঙ্গী ও পরিবারবর্গের ওপর সন্তুষ্ট হোন এবং তাদেরকেও সন্তুষ্ট করে দিন। করুণাময়, আপনি আমাদেরকে সেসব লোকের মাঝে অন্তর্ভুক্ত করুন যারা তাঁদের সম্মান করেছেন। আমাদের হাশর করুন আপনি তাঁদের সঙ্গে। 


লেখক : আলী হাসান তৈয়ব
সম্পাদনা : ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী 
সূত্র : ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ, সৌদিআরব
Read More---