Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

See Our Articles In Different Styles... Grid View List View

শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০২২

অন্তরের আমল: ইখলাস

Views:

A+ A-

অন্তরের আমল: ইখলাস






ভূমিকা
الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على أشرف الأنبياء والمرسلين، نبينا محمد وعلى آله وصحبهأجمعين.
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সমগ্র সৃষ্টিকুলের রব আর সালাত ও সালাম নাযিল হোক সমস্ত নবী ও রাসূলদের সরদার আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর এবং তার পরিবার-পরিজন ও তার সমস্ত সাহাবীদের উপর। 
আল্লাহ তা‘আলা আমাকে অন্তরের আমলসমূহ বিষয় সম্বলিত একটি ইলমী প্রশিক্ষণ কোর্স প্রদানের সুযোগ দেন, যাতে মোট বারোটি ক্লাস ছিল। আর আমার সাথে ‘যাদ গ্রপের’ ইলমী বিভাগটি ছিল। তারা আলোচনাগুলোকে বর্তমানে বই আকারে প্রকাশ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্তরের আমলসমূহের প্রথম আমল হল ইখলাস, যা ইবাদতের মগজ ও রুহ এবং আমল কবুল হওয়া বা না হওয়ার মানদণ্ড। আর ইখলাস অন্তরের আমলসমূহের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও সর্বোচ্চ চূড়া ও আমলসমূহের প্রধান ভিত্তি। আর এটিই হল, সমস্ত নবী ও রাসূলদের দাওয়াতের চাবিকাঠি 

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, 
﴿وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَآءَ ﴾ [البينة: ٥]  
আর তাদেরকে কেবল এই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যেতারা যেন আল্লাহর ইবাদাত করে তারই জন্য দীনকে একনিষ্ঠ করে। [সূরা আল-বায়্যিনাহআয়াত: ৫]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন, 
﴿أَلَا لِلَّهِ ٱلدِّينُ ٱلۡخَالِصُ ٣﴾ [الزمر: ٣]  
“জেনে রাখ, খালেস দ্বীন তো আল্লাহরই”। [সূরা আয-যুমার: ৩]
আর আল্লাহ্‌র দরবারে আমাদের কামনা তিনি যেন আমাদের আমলগুলো কবুল করেন, আমাদের নিয়্যতসমূহে ইখলাস তথা নিষ্ঠা প্রদান করেন এবং আমাদের অন্তরসমূহ সংশোধন করে দেন। নিশ্চয় তিনি শ্রবণকারী  দো‘আ কবুলকারী। 

মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জেদ
Read More---

আল্লাহর নৈকট্য লাভের অনন্য উপায়: তাওবা

Views:

A+ A-

আল্লাহর নৈকট্য লাভের অনন্য উপায়: তাওবা





ভূমিকা
  إِنَّ الْحَمْدُ للهِ ، نَحْمَدُهُ وَنَسْتَعِيْنُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ ، وَنَعُـوْذُ بِاللهِ مِنْ شُرُوْرِ أَنْفُسِنَا ، وَمِنْ سَيِّئَاتِ أَعْمَالِنَا ، مَنْ يَّهْدِهِ اللهُ فَلاَ مُضِلَّ لَهُ ، وَمَنْ يُّضْلِلِ اللهُ فَلاَ هَادِيَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنْ لاَّ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ 
নিশ্চয় যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য আমরা তারই প্রশংসা করি, তার কাছে সাহায্য চাই, তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি। আল্লাহর নিকট আমরা আমাদের প্রবৃত্তির অনিষ্ট ও আমাদের কর্মসমূহের খারাবী থেকে আশ্রয় কামনা করি। আল্লাহ যাকে হেদায়েত দেন, তাকে গোমরাহ করার কেউ নাই। আর যাকে গোমরাহ করেন তাকে হেদায়েত দেয়ার কেউ নাই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্যিকার ইলাহ নেই, তিনি একক, তার কোন শরিক নাই। আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। সালাত ও সালাম নাযিল হোক তার উপর, তার পরিবার-পরিজন ও তার সাহাবীদের উপর এবং যারা কিয়ামত পর্যন্ত ‌ইহসানের সাথে তাদের অনুসরণ করেন তাদের উপর।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন স্বীয় বান্দাদের প্রতি অধিক দয়ালু ও ক্ষমাশীল। তিনি তার বান্দাদের যে কোন উপায়ে ক্ষমা করতে ও তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করতে পছন্দ করেন। আল্লাহ তা’আলা মানুষের ছোট গুনাহ কেবল নেক আমল করা দ্বারাই ক্ষমা করে দেন। কিন্তু কবীরা গুনাহ তাওবা ছাড়া ক্ষমা করা হয় না। তাই কবীরা গুনাহ হতে ক্ষমা পাওয়ার জন্য তাওবা করা জরুরি। আমরা মনে করি মুখে শুধু ‘আসতাগফিরুল্লাহ’ বলার নামই তাওবা। বাস্তবে তা কিন্তু তাওবা নয়। বাস্তবে তাওবা কাকে বলে, তাওবা কবুল হওয়ার শর্ত, তাওবার প্রতিবন্ধকতা, তাওবা করার প্রদ্ধতি, তাওবা কবুল হওয়ার আলামত ইত্যাদি বিষয়গুলো এ বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে। 
আল্লাহর নিকট কামনা তিনি যেন আমাদের আমলকে কবুল করেন এবং আল্লাহর নিকট খালেস তাওবা করার তাওফীক দেন। আমীন।

তাওবা
তাওবার গুরুত্ব
আল্লাহ তাআলার দরবারে বান্দার তাওবা অধিক পছন্দনীয়। কোন মানুষ অপরাধ করার পর যখন আল্লাহ তাআলার নিকট তাওবা করে এবং তার দ্বারা সংঘটিতগুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাকে অত্যধিক পছন্দ করেন, তার তাওবা কবুল করেন এবং তাওবার মাধ্যমে বান্দাকে পবিত্র করেন। আল্লাহ তাআলা নিজেই মুমিনদেরকে তাওবা করার নির্দেশ দিয়ে বলেন- 
Read More---

এক তালিবে ইল্‌ম নারীদেরকে ইল্‌ম শিক্ষা দিতে গিয়ে নিজে তাদের একজনের সাথে বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন

Views:

A+ A-

এক তালিবে ইল্‌ম নারীদেরকে ইল্‌ম শিক্ষা দিতে গিয়ে নিজে তাদের একজনের সাথে বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন






এক তালিবে ইল্‌ম নারীদেরকে ইল্‌ম শিক্ষা দিতে গিয়ে নিজে তাদের একজনের সাথে বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন

প্রশ্নঃ আমাদের দেশে একজন তালিবে ইল্‌ম আছে। তাঁর ইল্‌ম ভাল। তিনি আমাদেরকে ইলম অর্জন, তাকওয়া, সুন্নাহর অনুসরণ ও আলেমদের সাথে আদব মেনে চলার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করেন। আমরা তাঁকে হকপন্থী সালাফী হিসেবে জানি। তিনি আমাদেরকে দ্বীনের খুঁটিনাটি যা কিছু শিক্ষা দেন আমরা তাঁকে অনুসরণ করে চলি। কুরআনে কারীম ও রাসূল (সাঃ) এর হাদিস শিক্ষাদানের জন্য তিনি সনদপ্রাপ্ত। যদিওবা আমরা উনার তাকলীদ করি, কিন্তু তিনি আমাদেরকে তাকলীদ না-করার প্রতি উৎসাহিত করেন। তিনি ফতোয়ার ক্ষেত্রে অথবা নারী হিসেবে আমাদের সাথে আচার আচরণের ক্ষেত্রে আল্লাহ্‌কে ভয় করেন বলে আমি মনে করি। আমি তার জ্ঞান প্রচারের ক্ষেত্রে কিছু ভূমিকা রেখে থাকি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো একজন মহিলা আমাকে অবহিত করেছেন (আমার কাছে তাকে সত্যবাদী মনে হয়) যে, এই নারীর সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক আছে। সেটা সম্পূর্ণ গোপনে। আমি আবারও বলছি সম্পূর্ণ গোপনে। মহিলাটি জানাচ্ছেন যে, তিনি এ সম্পর্ককে বিয়ের মাধ্যমে শরিয়তসম্মত রূপ দেয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু নিজস্ব কিছু পরিস্থিতির কারণে তিনি সেটা পারছেন না। পরিতাপের বিষয় হলো- তা সত্ত্বেও তিনি এ মহিলার সাথে কথাবার্তা বন্ধ করেননি। তিনি বলছেন যে, তিনি পরিবেশ তৈরী করার চেষ্টা করছেন। এমতাবস্থায়, আমরা কি তার কাছ থেকে ইলেম অর্জনে বিরত থাকব? তার দরসে বসা থেকে বিরত থাকব? শয়তান আমাকে ধাঁধায় ফেলে দিচ্ছে, আমাকে বলছে- এই আলেম যা বলে তিনি নিজে সে অনুযায়ী আমল করেন না। তার প্রতিটি কথার মধ্যে শয়তান আমাকে সন্দেহে ফেলে দিচ্ছে। নাকি আমরা বলব- মানুষ মাত্রই গুনাহগার। হতে পারে এই গুনার কাছে তিনি হেরে গেছেন। আমাদের সাথে আচার ব্যবহারে তিনি আল্লাহ্‌কে ভয় করেন এটাই তো আমরা জানি। আর এ বিষয়টি একেবারে একটা গোপন বিষয়। গুটিকতক মানুষ ছাড়া এ বিষয়টি কেউ জানে না। আমি যে, এ বিষয়টি জানি তিনি তা জানেন না। নবী ছাড়া তো নিষ্পাপ কেউ নেই।

জবাব:

আলহামদুলিল্লাহ্‌ (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য)।

এ কথা সত্য যে, সকল গুনাহ থেকে মুক্ত এমন একজন মানুষও পাওয়া যাবে না। প্রত্যেক মানুষের গুনাহ রয়েছে। যে গুণার বিষয়টা শুধু সে ব্যক্তি জানে এবং তার রবব জানে। এটাই বনী আদমের প্রকৃত অবস্থা। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, 
যে সত্ত্বার হাতে রয়েছে আমার প্রাণ যদি তোমরা গুনাহ না করতে তাহলে আল্লাহ তোমাদের বদলে এমন এক কওমকে নিয়ে আসতেন যারা গুনাহ করত, আবার আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইত, তখন আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দিতেন। [সহীহ মুসলিম, ২৭৪৯]
Read More---

হস্ত মৈথুন

Views:

A+ A-

 হস্ত মৈথুন



হস্ত মৈথুন

প্রশ্ন: আমার জানামতে হস্ত মৈথুন কবিরা গুনাহ। কিন্তু একজন বলল যে, যদি এমন হয় যে হস্ত মৈথুন না করলে এর চেয়ে বড় কোনও পাপ হবে, যেমন জিনা হবে তবে হস্ত মৈথুন জায়েজ। দয়া করে এর বিস্তারিত আমাকে জানালে উপকৃত থাকব।

উত্তর:

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

হানাফী, শাফেঈ, মালেকী এবং হাম্বালী মাজহাবের অধিকাংশ আলেমের মতে হস্তমৈথুন করা হারাম। 
তাদের দলীল হচ্ছে আল্লাহ তাআলার বাণীঃ
وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ (5) إِلَّا عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ (6) فَمَنِ ابْتَغَى وَرَاءَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْعَادُونَ (
মুমিনগণ তাদের নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। নিজেদের স্ত্রীদের ও অধিকারভুক্ত বাঁদীদের ছাড়া, এদের কাছে (হেফাজত না করলে) তারা তিরস্কৃত হবে না। তবে যারা এর বাইরে আরও কিছু চাইবে তারাই হবে সীমালংঘনকারী।
Read More---

মানুষের সাথে কথা বলার দিকনির্দেশনা

Views:

A+ A-

 মানুষের সাথে কথা বলার দিকনির্দেশনা


মানুষের সাথে কথা বলার দিকনির্দেশনা

মানুষের সাথে একজন মুসলিম কীভাবে কথা বলবেন সে বিষয়ে ইসলাম কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম পদ্ধতি প্রণয়ন করে দিয়েছে। সর্বাবস্থায় একজন মুসলিমকে অটুট বিশ্বাস নিয়ে মনে রাখতে হবে যে, তার মুখ দিয়ে উচ্চারিত প্রতিটি শব্দের জন্য তাকে জবাবদিহি করতে হবে। তিনি যদি উত্তম কিছু বলেন, তিনি পুরস্কৃত হবেন। আর তিনি যদি মন্দ কিছু বলেন, তবে সেই মন্দ কথার জন্য তাকে অবধারিতভাবেই শাস্তি ভোগ করতে হবে। 
আল্লাহ্‌ (সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা) বলেছেন :
“মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার সাথেই রয়েছে।” [সূরা কাফ : ১৮]

রাসূল (সা) আমাদেরকে সতর্ক করে বলেছেন যে, মুখের কথা খুবই বিপদজনক। 
ইমাম আত-তিরমিযি এবং ইবনু মাজাহ কর্তৃক সংকলিত এবং সহীহ সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসে আল্লাহ্‌র রাসূল বলেছেন,
“বান্দা অনেক সময় এমন কথা বলে যাতে সে গুরুত্ব দেয় না অথচ সেই কথা আল্লাহ্‌কে সন্তুষ্ট করে। ফলে আল্লাহ্‌ তা‘আলা এর দ্বারা তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। পক্ষান্তরে, বান্দা অনেক সময় এমন কথাও বলে যাতে সে গুরুত্ব দেয় না অথচ সেই কথা আল্লাহ্‌কে অসন্তু করে। ফলে সেই কথাই তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করে।” [বুখারী; অধ্যায় : ৮, খণ্ড : ৭৬, হাদীস : ৪৮৫]

কাজেই মুখের কথা বিপদের কারণ হতে পারে। আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রাসূলের (সা) নির্দেশনা অনুযায়ী ইসলামের সীমারেখার মধ্যে থেকে আমাদেরকে কথা বলা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

মুখের কথা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নীচে কিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হলো :

১। কথা বলার উদ্দেশ্য হতে হবে উত্তম এবং কল্যাণকর। 
যদি উত্তম কথা বলার উদ্দেশ্য বজায় রাখতে না পারেন, তবে চুপ থাকাই আপনার জন্য উত্তম এবং চুপ থাকাটাও একটি উত্তম কাজ। 
বুখারী এবং মুসলিম কর্তৃক সংকলিত একটি হাদীসে রাসূল (সা) বলেছেন, 
“যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ এবং কিয়ামত দিবসে বিশ্বাস রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে, নয়তো চুপ থাকে।” [বুখারী; খণ্ড : ৮, অধ্যায় : ৭৬, হাদীস : ৪৮২]

২। কথাবার্তায় সত্যবাদী হোন এবং মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকুন। 
কারন মু’মিন ব্যক্তি সর্বদায় সত্যবাদী যিনি কৌতুক করেও মিথ্যা বলেন না। 
বুখারী এবং মুসলিমের অন্য একটি হাদীসে রাসূল (সা) বলেছেন, 
“তোমরা অবশ্যই সত্য কথা বলবে। কারন সত্য সদ্‌গুণের দিকে এবং সদ্‌গুণ জান্নাতের পথে চালিত করে। যে সর্বদা সত্য কথা বলে এবং সত্যকে গুরুত্ব দেয়, আল্লাহ্‌র নিকট তার নাম সত্যবাদীদের খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়। মিথ্যা থেকে দূরে থাকো। কারন মিথ্যা পাপের দিকে এবং পাপ জাহান্নামের আগুনের দিকে চালিত করে। যে অনবরত মিথ্যা বলে এবং মিথ্যা বলা ইচ্ছা রাখে, আল্লাহ্‌র নিকট তার নাম মিথ্যাবাদীদের খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়।” [মুসলিম; খণ্ড : ৩২, হাদীস : ৬৩০৯]

৩। কথাবার্তার মাধ্যমে আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধাচরণ করা যাবে না — তা ক্রীড়াচ্ছলেই হোক অথবা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই হোক। 
কারন আল্লাহ্‌ অবাধ্য মন্দভাষীকে ঘৃণা করেন। আল্লাহ্‌ পছন্দ করেন এমন প্রতিটি শব্দের মাধ্যমেই কুফ্‌রী করা হয়। যেমন : অশ্লীল ও অশিষ্ট শব্দ ব্যবহার করা, মানুষকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা ইত্যাদি। 
এ সম্পর্কে সহীহ সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসে নবী (সা) আমাদেরকে সতর্ক করে বলেছেন, 
“মু’মিনগণ কখনো অভিযোগ করে না, অন্যের প্রতি খারাপ ভাষা ব্যবহার করে না, আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধাচরণ করে না এবং নোংরা ভাষায় গালমন্দ করে না।” 
অন্য একটি সহীহ হাদীসে রয়েছে, 
“মুসলিমের জন্য গালিগালাজ করাই হলো কুফ্‌র।” 
জীবিত কোনো মানুষকে গালিগালাজ করা যেমন নিষিদ্ধ, মৃত ব্যক্তিকে গালিগালাজ করাও তেমনিভাবে নিষিদ্ধ। 
“মৃত ব্যক্তিদের গালমন্দ করবে না; তারা তাদের প্রতিদান পেয়ে গেছে।” 
অন্য একটি হাদীসে রাসূল (সা) নির্দেশ দিয়েছেন, 
“মৃতদের ভালো কাজগুলো নিয়ে আলোচনা করো।”

৪। কথা বলার সময় গীবত তথা পরচর্চা থেকে বেঁচে থাকুন। 
গীবত হলো কোনো মুসলিমের অসাক্ষাতে তার সম্পর্কে অন্যকারও কাছে এমন কিছু বলা যা শুনলে সে কষ্ট পায়। অতএব, পরচর্চা করবেন না। নামীমাহ থেকেও বেঁচে থাকুন। নামীমাহ হলো লোকজনের মধ্যে এমন তথ্য ছড়ানো যা তাদের মধ্যে পারস্পরিক ঘৃণার সৃষ্টি করে। 
সহীহ সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসে রাসূল (সা) বলেছেন, 
“যে ব্যক্তি গুজব ছড়ায় সে কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” 
যারা নামীমাহ চর্চা করে তাদেরকে গোপনে নিষেধ করুন এবং সেগুলো শোনা থেকেও দূরে থাকুন। অন্যথায়, শুধু শোনার জন্যও আপনি সেই পাপের অংশীদার হবেন।
Read More---

পুরুষের মাঝে কর্মরত নারীর প্রতি আহ্বান

Views:

A+ A-

পুরুষের মাঝে কর্মরত নারীর প্রতি আহ্বান




পুরুষের মাঝে কর্মরত নারীর প্রতি আহ্বান

বোন! তুমি কি পুরুষের সঙ্গে কাজ করছ?
বোন! আমি মর্মাহত, আমি ব্যথিত এবং খুবই দুঃখিত আমি। না, আমার কোন কারণে নয়, শুধু তোমার জন্য এবং শুধু তোমার কল্যাণের কথা চিন্তা করেই। তুমি কাজ করছ! তাও আবার পুরুষের সঙ্গে এবং তাদের মাঝে থেকেই। কারণ, এটা তোমার দীনদারি খতম করে দিবে, তোমার চরিত্রের ওপর কলঙ্কের ছাপ এঁটে দিবে। এটা আমার মায়াকান্না নয়, আমার কথাগুলো তুমি নাক ছিট্কে ফেল দিও না এবং মনে কর না আমি খুব বাড়াবাড়ি করছি, বরং আমার কাছে এর প্রমাণ রয়েছে। আছে এর যুক্তি সংগত কারণ। মনে রেখো, ইসলামের সম্পর্ক ছাড়া তোমার সঙ্গে আমার আর কোন সম্পর্কই নেই। এবং এর সঙ্গে আমার কোন ইহজাগতিক স্বার্থও সংশ্লিষ্ট নয়। বরং এর দ্বারা আমার সময় ও শ্রম ব্যয় হচ্ছে, মেধার ক্ষয় হচ্ছে। আশা করছি আমার এ কথাগুলোর মূল্য তুমি দিবে। আমি যা বলছি তুমি তা বারবার চিন্তা করবে। তবে অবশ্যই তুমি আমাকে তোমার একান্ত হিতাকাঙ্ক্ষী জ্ঞান করবে।

জেনে রখো, পুরুষের সঙ্গে যে কোন সহাবস্থানে নারী সঙ্কুচিত ও নির্যাতিত থাকে। যদি না তার সঙ্গে তার মাহরাম থাকে। কারণ, পুরুষরা সাধারণত নারীর দিকে প্রবৃত্তি ও কামভাব নিয়েই তাকায়। এর বিপরীত যে বলবে সে মিথ্যুক। কারণ, আল্লাহ তাআলা পুরুষের মধ্যে নারীর প্রতি মোহের সৃষ্টি করেছেন এবং নারীর মধ্যে দিয়েছেন পুরুষের প্রতি গভীর আগ্রহ। অধিকন্তু নারীর মধ্যে রয়েছে দুর্বলতা ও কোমলতা। ফলে নারী-পুরুষের সহাবস্থানে শয়তান স্নায়ুতন্ত্র ও অনুভূতিগুলোকে প্ররোচিত করার মোক্ষম সময় মনে করে। সাধারণত এসব ক্ষেত্রে নারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত বেশী হয়। কারণ, সৃষ্টিগতভাবে নারীরা পুরুষের থেকে ভিন্ন। সহাবস্থানের ফলে নারীরা যে ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়, পুরুষরা সে ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয় না। যেমন নারীদের অনেক সময় গর্ভ সঞ্চার হয়, কখনো গর্ভপাত করতে গিয়ে মৃত্যু মুখে পতিত হয় নারী। এসব কারণেই শরিয়ত নারী-পুরুষের সহাবস্থান নিষিদ্ধ করেছে। আমি এখানে নারী-পুরুষ সহাবস্থান নিষিদ্ধ করার কিছু দলিল উল্লেখ করছি। 
আল্লাহ তাআলা বলেন,
{قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ  {النور:30.
মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টি সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে। (নুর : ৩০)
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা পুরুষের দৃষ্টি অবনত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। যেহেতু নারী-পুরুষ পাশাপাশি কর্মরত থাকলে দৃষ্টি অবনত রাখা সম্ভব নয়, তাই শরিয়ত তাদের সহাবস্থান নিষিদ্ধ করেছে।
নারীর পুরোটাই সতর বা পর্দার বস্তু। তার দিকে দৃষ্টি দেয়া হারাম।
রাসূল সা. বলেন, 
হে আলী, বারবার নজর দিবে না, প্রথম নজর তোমার কিন্তু দ্বিতীয় নজর তোমার নয়। (তিরমিজি) 
অর্থাৎ হঠাৎ প্রথম যে দৃষ্টি নারীর প্রতি পড়ে যায় তাতে কোন গুনা নেই, কিন্তু দ্বিতীয়বার স্বেচ্ছায় দৃষ্টি দেয়া গুনা বা অপরাধ।
হাদিসে এসেছে যে, 
চোখের যেনা দৃষ্টি দেয়া, কানের যেনা শ্রবণ করা, মুখের যেনা কথা বলা, হাতের যেনা স্পর্শ করা, পায়ের যেনা পথ চলা। (মুসলিম)
চোখের যেনা দৃষ্টি। এর মাধ্যমে ব্যক্তি নারীর সৌন্দর্য ও রূপ উপভোগ করে। পরবর্তীতে তার সঙ্গে অন্তরের ঘনিষ্ঠতা সৃষ্টি হয়। আর এ পথ ধরেই শুরু হয় অশ্লীলতা। এতে সন্দেহ নেই যে, নারী-পুরুষের সহাবস্থানে দৃষ্টি হেফাজত করা কোন ক্রমেই সম্ভব নয়।
রাসূল সা. বলেছেন, 
আমার মৃত্যুর পর পুরুষের জন্য নারীই সব চেয়ে ক্ষতিকর ফিতনা। (বুখারি) 
সে হিসেবে উভয়ের একত্রে জব করা বা কর্মরত থাকা কোন অবস্থাতেই নিরাপদ নয়। 
রাসুল সা. যখন মসজিদ নিমার্ণ করেন, তখন নারীদের জন্য আলাদা দরজা তৈরি করেন এবং তিনি বলেন, আমরা কি এ দরজাটি নারীদের জন্য রেখে দিতে পারি না? (আবুদাউদ) 
Read More---

আয়েশা রাদিআল্লাহু ‘আনহার ফজিলত

Views:

A+ A-

আয়েশা রাদিআল্লাহু ‘আনহার ফজিলত






ভূমিকা :
উম্মুল মুমেনিন আয়েশা রাদিআল্লাহু ‘আনহার মর্যাদা বলার অপেক্ষা রাখে না, ইসলাম ধর্মে তিনি এক অপরিহার্য ব্যক্তিত্ব, তার সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসের বাণী উল্লেখ করাই যথেষ্ট। বিশেষ করে যার ব্যাপারে কুরআন নাযিল হয়েছে, যার বিষয়টি কিয়ামত পর্যন্ত তিলাওয়াত করা হবে, তার বিষয়ে নতুন কিছু লেখার সাধ্য আমাদের লিখনির নেই। কারণ, আল্লাহর ফয়সালার পর কোন ফয়সালা নেই, আল্লাহর বাণীর পর কোন বাণী নেই। তবুও হতভাগা কিছু লোক তার ব্যাপারে অপবাদ আর কুৎসা রটনা করে নিজেদের আখেরাত বরবাদ করছে।

জন্ম :

সিদ্দিকা বিনতে সিদ্দিক, উম্মে আব্দুল্লাহ আয়েশা বিনতে আবু বকর ইব্ন আবু কুহাফা ইব্ন উসমান। মাতা : উম্মে রুমান ব্নিতে আমের ইব্ন ‘উআইমির আল-কিনানি। নবুওতের চতুর্থ অথবা পঞ্চম বছর ইসলামের মধ্যে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ফর্শা ও খুব সুন্দর, এ জন্য তাকে হুমায়রা বলা হতো।

বিয়ে ও হিজরত :

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে যখন তার পিতা মদিনায় হিজরত করেন, তখন পিতা আবু বকর আব্দুল্লাহ ইব্ন উরাইকিতকে তাকে নিয়ে আসার জন্য দুইটি অথবা তিনটি উটসহ প্রেরণ করেন, অতঃপর তিনি বোন আসমা, মা উম্মে রুমান ও ভাইসহ তার সাথে মদিনায় হিজরত করেন।
হিজরতের কয়েক মাস আগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে বিয়ের আক্দ সম্পন্ন করেন যখন তার ছয় বছর। হিজরতের দ্বিতীয় বছর তাকে উঠিয়ে নেন যখন তার নয় বছর। বিয়ের পূর্বে তার আকৃতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। জিবরিল আলাইহিস সালাম তার কাছে এসে আয়েশার ছবি পেশ করে বলেন :
"هذه زوجتك في الدنيا والآخرة" رواه الترمذي وأصله في الصحيحين .
“এ হচ্ছে তোমার দুনিয়া ও আখেরাতের স্ত্রী”। তিরমিযি হাদিসটি বর্ণনা করেছেন, তবে বুখারি ও মুসলিমে এর মূল বিষয় উল্লেখ রয়েছে। 
তাকে ব্যতীত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন কুমারী নারী বিয়ে করেননি। এটা তার এক বিরল সম্মান, যা অন্য কোন স্ত্রীর ছিল না। এ কারণে তিনি জীবন ভর গর্ব করেছেন। তিনি একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেন :
" يا رسول الله ، أرأيت لو نزلتَ وادياً وفيه شجرةٌ قد أُكِل منها ، ووجدتَ شجراً لم يُؤكل منها ، في أيها كنت ترتع بعيرك ؟ " قال : ( في التي لم يرتع منها ) ، وهي تعني أنه لم يتزوج بكراً غيرها ، رواه البخاري ،
“হে আল্লাহর রাসূল, আপনি যদি কোন উপত্যকায় অবতরণ করেন, যাতে রয়েছে অনেক গাছ, যা থেকে উট খেয়েছে, আর একটি গাছ দেখেন যা কোন পশু ভক্ষণ করেনি, আপনার উট আপনি কোথায় চরাবেন, বলুন ? তিনি বললেন : “যে গাছে কোন পশু মুখ দেয়নি”। এর দ্বারা তার উদ্দেশ্য ছিল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ব্যতীত কোন কুমারী নারী বিয়ে করেননি। (বুখারি) 
তিনি আরো বলেন :
لقد أعطيت تسعاً ما أعطيتها امرأة إلا مريم بنت عمران، لقد نزل جبريل بصورتي في راحته حتى أمر رسول الله صلى الله عليه وسلم أن يتزوجني، ولقد تزوجني بكراً وما تزوج بكراً غيري، ولقد قبض ورأسه لفي حجري، ولقد قبرته في بيتي، ولقد حفت الملائكة بيتي، وإن كان الوحي لينزل عليه وهو في أهله فيتفرقون عنه وإن كان لينزل عليه وإني لمعه في لحافه، وإني لابنة خليفته وصديقه، ولقد نزل عذري من السماء، ولقد خلقت طيبة وعند طيب، ولقد وعدت مغفرة ورزقاً كريماً. رواه أبو يعلى
“আমাকে নয়টি বৈশিষ্ট দেয়া হয়েছে, যা মারইয়াম বিনতে ইমরান ব্যতীত কোন নারীকে দেয়া হয়নি। আমার ছবি নিয়ে জিবরিল অবতরণ করেন, অতঃপর আমাকে বিয়ে করার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নির্দেশ দেন। তিনি শুধু আমাকেই কুমারী বিয়ে করেছেন, আমি ব্যতীত তিনি কোন কুমারী বিয়ে করেননি। যখন তার রূহ কব্জা করা হয়, তখন তার মাথা আমার কোলে ছিল। তাকে আমার ঘরেই কবর দিয়েছে। ফেরেশতারা আমার ঘর ঘিরে রেখেছিল। ফেরেশতারা যদি তার কাছে অহী নিয়ে আসত, আর তিনি তার স্ত্রীর সাথে থাকতেন তারা দূরে সরে যেত, যদিও ফেরেশতারা তখনও তার নিকট আসত, যখন আমি তার সাথে তার লেপের ভেতর থাকতাম। আমি তার খলীফা ও একনিষ্ঠ বন্ধুর মেয়ে। আমার পবিত্রতা আসমান থেকে নাযিল হয়েছে। আমি পবিত্র অবস্থায় পবিত্র ব্যক্তির নিকট জন্ম গ্রহণ করেছি। আমাকে আল্লাহর মাগফেরাত ও সম্মানিত রিযকের ওয়াদা করা হয়েছে”। {আবু ইয়ালা}
Read More---

মুসলিম নারী এবং সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য (১ম পর্ব)

Views:

A+ A-

মুসলিম নারী এবং সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য (১ম পর্ব )




بسم الله الرحمن الرحيم
ভূমিকা
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য; আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর নিকট সাহায্য ও ক্ষমা প্রার্থনা করি; তাঁর নিকট তাওবা করি; আর আমাদের নফসের জন্য ক্ষতিকর এমন সকল খারাপি এবং আমাদের সকল প্রকার মন্দ আমল থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। আল্লাহ যাকে পথ প্রদর্শন করেন, তাকে পথভ্রষ্ট করার কেউ নেই; আর যাকে তিনি পথহারা করেন, তাকে পথ প্রদর্শনকারীও কেউ নেই। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই, তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল।

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِۦ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسۡلِمُونَ ١٠٢﴾ [ سورة آل عمران: 102 ]
“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় কর এবং তোমরা আত্মসমর্পনকারী না হয়ে কোন অবস্থাতেই মৃত্যুবরণ করো না।” - ( সূরা আলে ইমরান: ১০২ );

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُواْ رَبَّكُمُ ٱلَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفۡسٖ وَٰحِدَةٖ وَخَلَقَ مِنۡهَا زَوۡجَهَا وَبَثَّ مِنۡهُمَا رِجَالٗا كَثِيرٗا وَنِسَآءٗۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ ٱلَّذِي تَسَآءَلُونَ بِهِۦ وَٱلۡأَرۡحَامَۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَيۡكُمۡ رَقِيبٗا ١﴾ [ سورة النساء: 1 ]          
“হে মানব! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার স্ত্রী সৃষ্টি করেন; আর যিনি তাদের দুইজন থেকে বহু নর-নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন; আর আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর নামে তোমরা একে অপরের নিকট নিজ নিজ হক দাবি করে থাক এবং আত্মীয়তার বন্ধন সম্পর্কে সতর্ক থাক। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের উপর তীক্ষ্ন দৃষ্টি রাখেন। - ( সূরা আন-নিসা: ১ );
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَقُولُواْ قَوۡلٗا سَدِيدٗا ٧٠ يُصۡلِحۡ لَكُمۡ أَعۡمَٰلَكُمۡ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۗ وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدۡ فَازَ فَوۡزًا عَظِيمًا ٧١ ﴾ [ سورة الأحزاب: 70  71 ]         
“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল; তাহলে তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম ত্রুটিমুক্ত করবেন এবং তোমাদের পাপ ক্ষমা করবেন। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, তারা অবশ্যই মহাসাফল্য অর্জন করবে।” - ( সূরা আল-আহযাব: ৭০  ৭১ )
Read More---

সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২২

মুসলিম নারী এবং সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য (২য় পর্ব)

Views:

A+ A-

মুসলিম নারী এবং সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য (২য় পর্ব)


১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

তৃতীয় ক্ষেত্র: সমাজ ও জাতি কেন্দ্রিক একজন নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য

নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্যের পরিধি সমাজ ও পুরো জাতিকে অন্তর্ভুক্ত করে। আর সে কর্তব্য হচ্ছে, তাদের মাঝে আল্লাহর দিকে আহ্বান, সৎকাজের আদেশ, অসৎকাজে নিষেধ, কল্যাণ কামনা ও সংস্কার করার মত কাজের আঞ্জাম দেয়া

আর এখানে আমি সাধারণভাবে এই দাওয়াতের গুরুত্ব, তার আবশ্যকতা ও ফলাফল, অতঃপর বিশেষকরে নারীর সাথে সংশ্লিষ্ট শরীআতের কিছু দলীল-প্রমাণাদি উল্লেখ করছি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ وَمَنۡ أَحۡسَنُ قَوۡلٗا مِّمَّن دَعَآ إِلَى ٱللَّهِ وَعَمِلَ صَٰلِحٗا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ ٱلۡمُسۡلِمِينَ ٣٣ وَلَا تَسۡتَوِي ٱلۡحَسَنَةُ وَلَا ٱلسَّيِّئَةُۚ ٱدۡفَعۡ بِٱلَّتِي هِيَ أَحۡسَنُ فَإِذَا ٱلَّذِي بَيۡنَكَ وَبَيۡنَهُۥ عَدَٰوَةٞ كَأَنَّهُۥ وَلِيٌّ حَمِيمٞ ٣٤  ﴾ [ سُورَةُ فُصِّلَتۡ: 33 - 34 ]
“কথায় কে উত্তম ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা, যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহ্বান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, ‘আমি তো অনুগতদের অন্তর্ভুক্ত।’ ভাল ও মন্দ সমান হতে পারে না। মন্দ প্রতিহত কর উৎকৃষ্ট দ্বারা; ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে, সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত।” - ( সূরা ফুসসিলাত: ৩৩ - ৩৪ )

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿وَلۡتَكُن مِّنكُمۡ أُمَّةٞ يَدۡعُونَ إِلَى ٱلۡخَيۡرِ وَيَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِۚ وَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ١٠٤﴾ [سُورَةُ آلِ عِمۡرَانَ: 104 ]                                                                                                                                                      
তোমাদের মধ্যে এমন এক দল থাকা উচিত যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎকাজের নিষেধ করবে; এরাই সফলকাম।” - ( সূরা আলে ইমরান: ১০৪ )
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿ ٱدۡعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِٱلۡحِكۡمَةِ وَٱلۡمَوۡعِظَةِ ٱلۡحَسَنَةِۖ وَجَٰدِلۡهُم بِٱلَّتِي هِيَ أَحۡسَنُۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعۡلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِۦ وَهُوَ أَعۡلَمُ بِٱلۡمُهۡتَدِينَ ١٢٥  ﴾ سُورَةُ النَّحۡلِ: 125 ]                                                                  
“তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহ্বান কর হিকমত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে তর্ক করবে উত্তম পন্থায়। তোমার প্রতিপালক সেই ব্যক্তি সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত, যে ব্যক্তি তাঁর পথ ছেড়ে বিপথগামী হয় এবং কারা সৎপথে আছে, তাও তিনি সবিশেষ অবহিত।” - (সূরা আন-নাহল: ১২৫)।
Read More---

শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২২

সালাত ত্যাগকারীর বিধান

Views:

A+ A-


সালাত ত্যাগকারীর বিধান




প্রশ্ন ১: আমার বড় ভাই তিনি সালাত পড়েন না, এ কারণে আমি কি তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখব, না সম্পর্ক ছিন্ন করবো? প্রকাশ থাকে যে, তিনি আমার সৎ ভাই (বিমাতার ছেলে)।

উত্তর ১:
যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত পরিত্যাগ করে, যদি সে সালাত ওয়াজিব হওয়ার (অপরিহার্যতার) বিষয়টি স্বীকার করে, তবে ওলামাদের -দু'টি মতের সবচেয়ে সহীহ- মত অনুযায়ী সে বড় কুফরী করবে। আর যদি সালাত ওয়াজিব হওয়ার বিষয়টি অস্বীকারকারী-অবিশ্বাসী হয়, তা হলে ওলামাদের সর্বসম্মত মতে সে কাফের হয়ে যাবে। এ সম্পর্কে নাবী কারীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এরশাদ হলো :
رَأْسُ الْأَمْرِ الْإِسْلاَمُ؛ وَعَمُوْدُهُ الصَّلاَةُ؛ وَذُرْوَةُ سَنَامِهِ الْجِهَادُ ِفيْ سَبِيْلِ اللَّهِ
"কর্মের মূল হচ্ছে ইসলাম, তার স্তম্ভ হচ্ছে সালাত এবং তার সর্বোচ্চ চূড়া হচ্ছে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ বা সংগ্রাম করা।" [হাদীসটি ইমাম আহমাদ, তিরমিযী এবং ইবনে মাজাহ সহীহ সূত্রে বর্ণনা করেছেন]
নাবী কারীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আরো এরশাদ হলো,
(( بَيْنَ الرَّجُلِ وَالْكُفْرِ وَالشِّرْكِ تَرْكُ الصَّلاَةِ ))
"ব্যক্তি এবং শিরক ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত ছেড়ে দেয়া।" [মুসলিম]
নাবী কারীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো এরশাদ করেন :
(( اَلْعَهْدُ الَّذِيْ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمُ الصَّلاَةُ فَمَنْ تَرَكَهَا فَقَدْ كَفَرَ ))
"আমাদের এবং তাদের (কাফেরদের) মধ্যে যে প্রতিশ্রুতি, তা হলো সালাত। অতএব যে সালাত ছেড়ে দিল সে কুফরী করল।" [হাদীসটি ইমাম আহমাদ এবং আহলে সুনান সহীহ সূত্রে বর্ণনা করেছেন]
সালাত ত্যাগ করা কুফরী, এর কারণ হলো যে, যে ব্যক্তি সালাত ওয়াজিব হওয়া অস্বীকার করে সে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল, আহলে ইলম ও ঈমান এর সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের মিথ্যা প্রতিপন্নকারী। যে ব্যক্তি অলসতা করে সালাত ছেড়ে দিল তার থেকে উক্ত ব্যক্তির কুফরী খুবই মারাত্বক। উভয় অবস্থাতেই মুসলিম শাসকগণের প্রতি অপরিহার্য হলো যে, তারা সালাত ত্যাগকারীদেরকে তাওবাকরার নির্দেশ দিবে, যদি তওবাহ না করে,তা হলে এ'বিষয়ে বর্ণিত দলীলের ভিত্তিতে তাদেরকে হত্যা করার নির্দেশ প্রদান করবে।
অতএব সালাত ত্যাগকারীকে বর্জন করা এবং তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা ওয়াজিব এবং সালাত ত্যাগ করা থেকে আল্লাহর কাছে তওবাহ না করা পর্যন্ত তার দা'ওয়াত গ্রহণ করা যাবে না। সাথে সাথে তাকে ন্যায়ের পথে আহ্বান ও নসিহত প্রদান করা ওয়াজিব এবং দুনিয়া ও আখেরাতে সালাত ত্যাগ করার কারণে যে শাস্তি তার প্রতি নির্ধারিত আছে তা থেকে সাবধান করতে হবে। এর ফলে হয়তো বা সে তাওবা করতে পারে এবং আল্লাহ পাক তার তওবাহ কবুলও করতে পারেন।
ফাতওয়া প্রদানে : মাননীয় শাইখ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায, (রাহেমাহুল্লাহ) "ফাতাওয়া ওলামাইল বালাদিল হারাম" নামক কিতাব থেকে সংগৃহীত। পৃ - ১৪৫
Read More---

সমকামী এবং সে এর এলাজ প্রার্থী

Views:

A+ A-

সমকামী এবং সে এর এলাজ প্রার্থী




প্রশ্ন- আমি মুসলমান। আমার বয়স ষোল। আমি সবসময় নামাজ পড়ি ও রোজা রাখি। আমি আমার জীবনে সৎ ও ভদ্র। তবে সমস্যা হল আমি সমকামী। শুরুতে আমি আমার পিতাকে নিয়ে ভাবতাম। আমার মনে হয় জেনিটিক কারণে আমি সমকামী হয়েছি। আমি খারাপ চিত্র দেখি। তবে আমি এ থেকে নিষ্কৃতি পেতে চাই। আমি জীবনে কখনো যৌনকর্মে লিপ্ত হই নি। আমি সত্যি সত্যিই আল্লাহকে ভয় করি। আমি তাঁকে সবসময়ই ডাকি যাতে তিনি আমাকে সাহায্য করেন। 
আপনার কাছে আমার আকুল আবেদন আপনি আমাকে বাস্তব কিছু পরামর্শ দেবেন যাতে আমি এই দুর্যোগ থেকে রেহাই পেতে পারি।

উত্তর- 
আলহামদুলিল্লাহ
দুয়া করি আল্লাহ তোমাকে এই মারাত্মক ব্যাধি থেকে অতি দ্রুত আরোগ্য দান করুন। তোমার হৃদয়কে সকল পঙ্কিলতা থেকে পবিত্র করুন। নিশ্চয় আল্লাহ এ-বিষয়ে ক্ষমতাবান। 
এধরনের বিশাল পাপে জড়িত হওয়ার শাস্তি যে শুধু পরকালেই হবে তা নয়, বরং দুনিয়ার জীবনেও এ শাস্তির অংশবিশেষ ভোগ করতে হয়। যদি সার্বক্ষণিক আফসোস ও যন্ত্রণা হৃদয়কে ভারাক্রান্ত করে রাখে তাহলে এটাই তো শাস্তি হিসেবে যথেষ্ট। এর সাথে যদি মারাত্মক রোগ-ব্যাধি সংযোগ হয়, যেগুলোর ব্যাপারে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা একমত যে তা সমকামীদের হয়ে থাকে, তাহলে তো আর কথাই নেই। প্রশ্ন নং ১০০৫০ থেকে এব্যাপারে আরো দিকনির্দেশনা নেবে বলে আশা রাখি। 

আর তোমার রোগের চিকিৎসা নিম্নবর্ণিতভাবে হতে পারে:

এক: তোমাকে হৃদয় থেকে সত্যিকার অর্থে তাওবা করতে হবে। আল্লাহর দিকে ফিরে যেতে হবে। অতীতে যা করেছ তার জন্য লজ্জিত হতে হবে। বেশি-বেশি দুয়া করতে হবে এবং কায়মনোবাক্যে আকুতি করতে হবে আল্লাহ যেন তোমাকে ক্ষমা করে দেন। তিনি যেন তোমাকে এই বিষয় থেকে নিষ্কৃতি পেতে সহায়তা করেন। নিশ্চয় আল্লাহ আরাধ্যদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মেহেরবান এবং দুয়া কবুলে অধিক নিকটবর্তী। আল্লাহ তাআলা বলেন, 
(বল, হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজদের উপর বাড়াবাড়ি করেছে, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সকল গুনাহ মাফ করে দেন। নিশ্চয় তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু।) [ সূরা আয-যুমার:৫৩] 
Read More---