Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

See Our Articles In Different Styles... Grid View List View

শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩

ব্যাধি ও মহামারী রোগ হতে পরিত্রাণের দুর্গ

Views:

A+ A-

 ব্যাধি ও মহামারী রোগ হতে পরিত্রাণের দুর্গ



بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْمِ
অনন্ত করুণাময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে

اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِيْ عَلَّمَ الْإنْسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ، وَالصَّلاَةُ وَالسَّلاَمُ عَلَى خَاتَمِ الْأَنْبِيَاءِ وَالْمُرْسَلِيْنَ، وَعَلَى آله وَأَصْحَابِهِ، وَأَتْبَاعِهِ، أَمَّا بَعْدُ:
অর্থ: সকল প্রশংসা সব জগতের সত্য প্রভু আল্লাহর জন্যযিনি মানব জাতিকে তাদের অজানা জ্ঞান দান করেছেন এবং শেষ নাবী ও রাসূলতাঁর পরিবার-পরিজনসাহাবীগণ বা সহচারীগণ ও তাঁর অনুসরণকারীগণের জন্য অতিশয় সম্মান ও শান্তি নির্ধারিত হোক।

অতঃপর ঘৃণিত ব্যাধি বা মহামারী রোগ থেকে মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষার কতকগুলি উপাদান রয়েছে উক্ত উপাদানগুলির মধ্যে থেকে একটি উপাদান হলো সর্বশক্তিমান সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করা ও তাঁর স্মরণে মগ্ন থাকা। তাই নিম্নে কতকগুলি দোয়া ও জিকির উস্থাপন করা হলো:



1- আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: “যে ব্যক্তি সকালে তিনবার এবং সন্ধায় তিনবার এই দোয়াটি পাঠ করবে,  কোনো বস্তুই তার কিছু ক্ষতি করতে পারবে না” দোয়াটি হলো:
"بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلاَ فِي السّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ."
উচ্চারণ: বিসমিল্লা-হিল্লাযী লা ইয়াদ্বুররু মা'আসমিহী শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিস সামা-ই, ওয়াহুওয়াস সামী'উল 'আলীম।
অর্থ: “সেই আল্লাহর নামে, যার নামের সাথে আসমান ও জমিনে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। আর তিনি সর্বশ্রোতামহাজ্ঞানী
[সুনান ইবনু মাজাহ, হাদীস নং 3869, আল্লামা মুহাম্মাদ নাসেরুদ্দীন আল্ আলবাণী এই হাদীসটিকে সহীহ সঠিক বলেছেন।]
তবে অন্য এক বর্ণনায় এসেছে: আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: যে ব্যক্তি সকালে তিনবার এবং সন্ধায় তিনবার উক্ত দোয়াটি পাঠ করবে, সে ব্যক্তিকে কোনো আকস্মিক অমঙ্গল স্পর্শ করতে পারবে না    
[সুনান আবু দাউদহাদীস নং 5088, আল্লামা মুহাম্মাদ নাসেরুদ্দীন আল্ আলবাণী এই হাদীসটিকে সহীহ সঠিক বলেছেন।]


2 - আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] একজন সাহাবীকে বলেছেন: তুমি যদি সকালে তিনবার এবং সন্ধায় তিনবার সূরা ইখলাসসূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করতে পারো, তাহলে তুমি সমস্ত প্রকারের অমঙ্গল হতে নিরাপদ থাকতে পারবে । [সহীহ জামে, হাদীস নং 4406]   
[সুনান আবু দাউদহাদীস নং 5082, আল্লামা মুহাম্মাদ নাসেরুদ্দীন আল্ আলবাণী এই হাদীসটিকে হাসান (সুন্দর) বলেছেন।]
সূরা ইখলাসসূরা ফালাক ও সূরা নাস নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
সূরা ইখলাস হলো:
(قُلْ هُوَ اللَّـهُ أَحَدٌ، اللَّـهُ الصَّمَدُ، لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ، وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ)،
سورة الإخلاص، الآيات .1-4
ভাবার্থের অনুবাদ: “হে আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ! তুমি বলে দাও: তিনিই আল্লাহএক ও অদ্বিতীয়। তিনি কারো মুখাপেক্ষী ননসকলই তাঁর মুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেওয়া হয়নি। আর তাঁর কোনো সমকক্ষও নেই”। (সূরা আল ইখলাস, আয়াত নং 1-4)
সূরা ফালাক হলো:
(قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ، مِن شَرِّ مَا خَلَقَ، وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ، وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ، وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ). سورة الفلق، الآيات 5-1.
ভাবার্থের অনুবাদ: “হে আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ! তুমি বলো: আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার প্রতিপালকের, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট হতে। আর অনিষ্ট থেকে রাতের অন্ধকারেরযখন তা গভীর হয়। আর অনিষ্ট থেকে সমস্ত নারীদেরযারা গিরায় ফুঁক দেয়। আর অনিষ্ট থেকে হিংসুকেরযখন সে হিংসা করে” (সূরা আল ফালাক, আয়াত নং  1-5)
সূরা নাস হলো: 
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ، مَلِكِ النَّاسِ، إِلَهَ النَّاسِ، مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ، الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ، مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ). سورة النَّاسِ، الآيات6-1.

ভাবার্থের অনুবাদ: হে আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ! তুমি বলো: আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের প্রতিপালক, মানুষের অধিপতি এবং মানুষের প্রকৃত উপাস্যের নিকটে আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জিনের মধ্যে থেকে এবং মানুষের মধ্যে থেকে” (সূরা নাস, আয়াত নং 1-6)


3- আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: “কোনো ব্যক্তি যখন বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বলে:
"بِسْمِ اللَّهِ، تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ، لَاَ حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ".
উচ্চারণ: বিসমিল্লা-হি, তাওয়াক্কালতু ‘আলাল্লা-হি, লা- হাওলা ওয়ালা- কুওয়াতা ইল্লা- বিল্লাহ।
অর্থ: “আল্লাহর নামে বের হচ্ছি আল্লাহর উপর ভরসা করেছি। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার কোনো উপায় নেই এবং সৎকাজ করারও কোনো শক্তি নেই”।
তখন তাকে বলা হয়: তুমি সুপথগামী হতে পেরেছোবিপদমুক্ত হতে পেরেছো এবং সংরক্ষিত হতে পেরেছো। এবং তার কাছ হতে শয়তান দূরে সরে যায় এবং অন্য এক শয়তান সেই শয়তানকে বলেতুমি সেই ব্যক্তিকে কী করে বিপথগামী করতে পারবেযাকে সুপথগামী করা হয়েছেবিপদমুক্ত করা হয়েছে এবং সংরক্ষিত করা হয়েছে”। [সহীহ জামে, হাদীস নং 6419] 
[সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং 5095 এবং জামে তিরমিযীহাদীস নং 3426, তবে হাদীসের শব্দগুলি সুনান আবু দাউদ থেকে নেওয়া হয়েছে। ইমাম তিরমিযী এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ (সুন্দর সঠিক) বলেছেন। আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী এই হাদীসটিকে সহীহ (সঠিক) বলেছেন] 


4- কোনো স্থানে অবতরণ করলে কী পাঠ করতে হয় তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
عَنْ خَوْلَةَ بِنْتِ حَكِيْمٍ اَلسُّلَمِيَّةِ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا تقول سَمِعَتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُوْلُ: "من نَزَلَ مَنْزِلا ثم قال: أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ؛ لم يَضُرُّهُ شَيْءٌ، حَتَّى يَرْتَحِلَ مِنْ منزله ذلك".
(صحيح مسلم، رقم الحديث 54- (2708)، ).  
অর্থ: খাওলা বিনতে হাকীম আস্সুলামীইয়া [রাদিয়াল্লাহু আনহা] থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন: আমি আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে বলতে শুনেছি: আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেন: “তোমাদের মধ্যে থেকে কোনো ব্যক্তি যখন কোনো স্থানে অবতরণ করবে এবং এই দোয়াটি পাঠ করবে:
"أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ".
উচ্চারণ: আ'ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্ তা-ম্মা-তি মিন শাররি মা- খালাক্ব।
অর্থ: “আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণীসমূহের দ্বারা মহান আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করছিতাঁর সৃষ্টি জগতের সমস্ত অমঙ্গল হতে” 
তাহলে সেখান থেকে প্রস্থান করা পর্যন্ত সেখানে তার কোনো প্রকার ক্ষতি সাধন হবে না”। [সহীহ মুসলিমহাদীস নং 54 -(2708)]



5- আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: “যে ব্যক্তি কোনো মানুষকে কোনো বিপদে দেখার পর বলবে:
"الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي عَافَانِي مِمَّا ابْتَلاَكَ بِهِ، وَفَضَّلَنِي عَلَى كَثِيرٍ مِمَّنْ خَلَقَ تَفْضِيلاً".
(অর্থ: “সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আপনাকে যে পরীক্ষায় ফেলেছেন সে পরিক্ষা থেকে আমাকে নিরাপদ রেখেছেন এবং তাঁর সৃষ্টি জগতের অনেকের উপর আমাকে অধিক মর্যাদা দান করেছেন” 
সে ব্যক্তিকে উক্ত বিপদটি স্পর্শ করবে না”। [সহীহ জামে, হাদীস নং 6248] । 
[জামে তিরমিযীহাদীস নং 3432, ইমাম তিরমিযী এই হাদীসটিকে হাসান গারীব বলেছেন। আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী এই হাদীসটিকে সহীহ (সঠিক) বলেছেন] 


6- ঘৃণিত ব্যাধি বা মহামারী রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য কী পাঠ করতে হয় তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ: "اَللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ، وَالْجُنُونِ، وَالْجُذَامِ، وَمِنْ سَيِّئِ الأَسْقَامِ".
(سنن أبي داود، رقم الحديث 1554، واللفظ له، وَسنن النسائي، رقم الحديث 5493، وصححه الألباني).
অর্থ: আনাস [রাদিয়াল্লাহু আনহু] থেকে বর্ণিততিনি বলেননিশ্চয় আল্লাহর  রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এই দোয়াটি পাঠ করতেন:
"اَللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ، وَالْجُنُونِ، وَالْجُذَامِ، وَمِنْ سَيِّئِ الأَسْقَامِ".
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আ'ঊযুবিকা মিনাল বারাসি ওয়াল জুনূনি ওয়াল জুযা-মি ওয়ামিন সাইয়্যিইল আসক্বা-ম।
অর্থ: হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি আপনার নিকটে ধবল, বাতুলতা বা উম্মত্ততাকুষ্ঠরোগ এবং সকল প্রকারের ঘৃণিত ব্যাধি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি
[সুনান আবু দাউদহাদীস নং 1554 এবং সুনান নাসায়ীহাদীস নং 5493। তবে হাদীসের শব্দগুলি সুনান নাসায়ী থেকে নেওয়া হয়েছে আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী হাদীসটিকে সহীহ (সঠিক) বলেছেন] 


7- আব্দুল্লাহ ইবনে ওমার [রাদিয়াল্লাহু আনহু] থেকে বর্ণিত: আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামনিম্নের দোয়টি পাঠ করতেন:
"اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ زَوَالِ نِعْمَتِكَ، وَتَحَوُّلِ عَافِيَتِكَ، وَفُجَاءَةِ نِقْمَتِكَ، وَجَمِيعِ سَخَطِكَ".
অর্থ:  হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই আপনার নিয়ামতে বিলুপ্তিআপনার অনুকম্পার পরিবর্তনআকস্মিক শাস্তি এবং আপনার সমস্ত ক্রোধ হতে  [সহীহ মুসলিমহাদীস নং 96 - (2739)] ।  


8- আবু হুরাইরা [রাদিয়াল্লাহু আনহু] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেন: “মানুষ যত রকমের দোয়া করেছে, তার মধ্যে এই দোয়টির মতো আর অন্য কোনো উত্তম দোয়া নেই”  দোয়টি হলো:
"اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْمُعَافَاةَ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ".
অর্থ: “হে আল্লাহ! আপনার কাছে আমি দুনিয়া ও আখেরাতের নিরাপত্তা ও সুস্থতা কামনা করছি” [সহীহ জামে, হাদীস নং 5703] ।  
 [সুনান ইবনু মাজাহ, হাদীস নং 3851, আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী হাদীসটিকে সহীহ (সঠিক) বলেছেন] 


9- আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: আল্লাহর নাবী ইউনুস আলাইহিসসালাম যখন মাছের পেটে ছিলেন, তখন এই দোয়টি পাঠ করেছিলেন:   
"لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظّالِمِينَ".
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনায যা-লিমীন।
অর্থ: হে আল্লাহ আপনি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেইআপনার পবিত্রতা ঘোষণা করি, নিশ্চয় আমি অপরাধীদের অন্তর্ভুক্ত
তাই মুসলিম ব্যক্তি যখন এই দোয়টির সাথে অন্য কোনো দোয়া করবে, তখন মহান আল্লাহ তার দোয়া কবুল করবেন”। [সহীহুত্তারগীব, হাদীস নং 1644] ।    
 [জামে তিরমিযীহাদীস নং 3505, আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী এই হাদীসটিকে সহীহ (সঠিক) বলেছেন] 
আল্লামা ইবনু কাইয়েম রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন: দুনিয়ার সমস্ত বিপদ তাওহীদেরই দ্বারা দূর করা যায়। তাই দুঃখকষ্ট দূর করার দোয়া হলো তাওহীদের দ্বারা আল্লাহর নাবী ইউনুস আলাইহিসসালাম এর দোয়া। বিপন্ন ব্যক্তি যখন এর মাধ্যমে দোয়া করবে, তখন মহান আল্লাহ তার বিপদ ও দুঃখকষ্ট দূর করে দিবেন।
আলফাওয়ায়িদ (66 )


10- আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]  বলেছেন:
"تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ جَهْدِ الْبَلاَءِ، وَدَرَكِ الشَّقَاءِ، وَسُوءِ الْقَضَاءِ، وَشَمَاتَةِ الأَعْدَاءِ".
অর্থ: তোমরা ভয়াবহ বিপদহতভাগ্যের অতল গহবরমন্দ তাকদীর এবং দুশমনের আনন্দ প্রকাশ থেকে মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রর্থনা করো”
[সহীহ বুখারীহাদীস নং 6616 এবং সহীহ মুসলিমহাদীস নং 53-(2707)তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে।]
তাই আমরা বলবো:   
"اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوذُ بِكَ مِنْ جَهْدِ الْبَلاَءِ، وَدَرَكِ الشَّقَاءِ، وَسُوءِ الْقَضَاءِ، وَشَمَاتَةِ الأَعْدَاءِ".
অর্থ: হে আল্লাহ আমি ভয়াবহ বিপদহতভাগ্যের অতল গহবরমন্দ তাকদীর এবং দুশমনের আনন্দ প্রকাশ থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রর্থনা করছি”


11- আব্দুর রহমান বিন আবু বাকরা হতে বর্ণিত, তিনি তার পিতাকে বলেছেন: হে আমার পিতা! আমি আপনার কাছ থেকে শুনতে পাই: আপনি প্রত্যেক দিন সকালে এবং সন্ধ্যায় এই দোয়াটি তিনবার করে পাঠ করেন:   
"اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِي، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي سَمْعِي، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَصَرِي، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ".
"اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكُفْرِ، وَالفَقْرِ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ".
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে নিরাপত্তা দিন আমার শরীরে। হে আল্লাহ! আমাকে নিরাপত্তা দিন আমার শ্রবণশক্তিতে। হে আল্লাহ! আমাকে নিরাপত্তা দিন আমার দৃষ্টিশক্তিতে। আপনি ছাড়া কোনো প্রকৃত উপাস্য নেই। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই কুফরি ও দারিদ্র্য থেকে। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে। আপনি ছাড়া আর কোনো প্রকৃত উপাস্য নেই।   
তখন তিনি বললেন: আমি আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর কাছ থেকে শুনেছি তিনি এই দোয়াটি পাঠ করতের। তাই আমি উনার নিয়ম মোতাবেক এই দোয়াটি পাঠ করতে ভালোবাসি। সুতরাং আমি সকালে এবং সন্ধ্যায় এই দোয়াটি তিনবার করে পাঠ করি।  
[সুনান আবু দাউদহাদীস নং 5090, আল্লামা মুহাম্মাদ নাসেরুদ্দীন আল্ আলবাণী এই হাদীসটিকে হাসানুল ইসনাদ বলেছেন।]


12- আব্দুল্লাহ বিন ওমার [রাদিয়াল্লাহু আনহুমাথেকে বর্ণিত। তিনি বলেন:  আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সকালে এবং সন্ধ্যায় এই দোয়াটি পাঠ করতেন:  
"اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَفِي دِينِي وَدُنْيَايَ وَأَهْلِي، وَمَالِي، اللَّهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِي، وَآمِنْ رَوْعَاتِي، اللَّهُمَّ احْفَظْنِي مِنْ بَينِ يَدَيَّ، وَمِنْ خَلْفِي، وَعَنْ يَمِينِي، وَعَنْ شِمَالِي، وَمِنْ فَوْقِي، وَأَعُوذُ بِعَظَمَتِكَ أَنْ أُغْتَالَ مِنْ تَحْتِي".
অর্থ: “হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট দুনিয়া ও পরকালের নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট ক্ষমা এবং নিরাপত্তা চাচ্ছি আমার দীনদুনিয়াপরিবার ও অর্থ-সম্পদের। হে আল্লাহ! আপনি আমার গোপন পাপসমূহকে ঢেকে রাখুনআমার উদ্বিগ্নতাকে রূপান্তরিত করুন নিরাপত্তায়। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে রক্ষা করুন আমার সামনের দিক থেকেআমার পিছনের দিক থেকেআমার ডান দিক থেকেআমার বাম দিক থেকে এবং আমার উপরের দিক থেকে। আর আপনার মহত্ত্বের মাধ্যমে আশ্রয় চাই আমার নিচ থেকে হঠাৎ আক্রান্ত হওয়া থেকে
[সহীহুল কলিমিত্তাইয়িব 27] 
[সুনান আবু দাউদহাদীস নং 5074 এবং সুনান ইবন মাজাহহাদীস নং 3871। তবে হাদীসের শব্দগুলি সুনান আবু দাউদ থেকে নেওয়া হয়েছে আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী এই হাদীসটিকে সহীহ (সঠিক) বলেছেন] 


13- আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
"مَن صَلَّى الصُّبحَ فَهُوَ فِي ذِمَّةِ اللَّهِ".  
অর্থ:  “যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ পড়বেসে ব্যক্তি আল্লাহর জামানত লাভ করতে পারবে”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 261 -(657)] 
আল্লামা নওয়াভী রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন: الذمة এর অর্থ বলা হয়েছে: জামিন ও নিরাপত্তা।
( শারহু মুসলিম)


14- আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]  বলেছেন: “যে ব্যক্তি রাতের বেলা সূরা বাকারার শেষ দুইটি আয়াত পড়বেতার জন্য তা যথেষ্ট হবে”
[সহীহ বুখারী, হাদীস নং 5009 এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 255- (807), তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে] 
আল্লামা নওয়াভী বলেছেন: এর অর্থ বলা হয়েছে: তাহাজ্জুদের নামাজের পরিবর্তে এই দুইটি আয়াত পাঠ করা যথেষ্ট হবে। এবং এটাও বলা হয়েছে যে, শয়তানের অমঙ্গল থেকে বা সকল প্রকারের রোগ থেকে সংরক্ষিত হওয়ার জন্য এই দুইটি আয়াত পাঠ করা যথেষ্ট হবে। অথবা উল্লিখিত সমস্ত বিষয় অর্জন করার জন্য এই দুইটি আয়াত পাঠ করাই যথেষ্ট হবে। ( শারহু মুসলিম)
উল্লিখিত দুইটি আয়াত হলো নিম্নরূপ:
(آمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَا اُنْزِلَ إلَيْهِ مِنْ رَّبِّه وَالْمُؤْمِنُوْنَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهُ وَملائكَتِه وَكُتُبِه وَرُسُلِه، لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أحَدٍ مِّنْ رُّسُلِه، وَقَالُوْا سَمِعْنَا وَاَطَعْنَا، غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَاِلَيْكَ الْمَصِيْرُ، لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إلَّا وُسْعَهَا، لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ، رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا، إنْ نَّسِيْنَا، أوْ أخْطَاْنَا، رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا، إصْرًا كَمَا حَمَلْتَه، عَلَي الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِنَا، رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِه، وَاعْفُ عَنَّا، وَاغْفِرْ لَنَا، وَارْحَمْنَا، أنْتَ مَوْلانَا فَانْــصُرْنَا عَلَي الْقَوْمِ الْكافِرِيْنَ )، سورة البقرة، الآية  285-286  .
অর্থ:  বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ তার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা তার কাছে অবতীর্ণ করা হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছেন এবং মুমিনগণও। প্রত্যেকেই ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতিতাঁর ফিরিশতাগণতাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি। আমরা তাঁর রাসূলগণের কারও মধ্যে তারতম্য করি না। আর তারা বলে, আমরা শুনেছি ও মেনে নিয়েছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল। আল্লাহ কারো উপর এমন কোন দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না যা তার সাধ্যাতীত। সে যা ভালো উপার্জন করে তার প্রতিফল তারইআর সে যা মন্দ উপার্জন করে তার প্রতিফল তার উপরই বর্তায়। হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমরা বিস্মৃত হই অথবা ভুল করি, তবে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পূর্ববর্তীগণের উপর যেমন বোঝা চাপিয়ে দিয়েছিলেন আমাদের উপর তেমন বোঝা চাপিয়ে দিবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে এমন কিছু বহন করাবেন না, যার সামর্থ আমাদের নেই। আর আপনি আমাদের পাপ মোচন করুনআমাদেরকে ক্ষমা করুনআমাদের প্রতি দয়া করুনআপনিই আমাদের অভিভাবক। অতএব, অমুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন। (সূরা আল বাকারা, আয়াত নং 285-286)

15- আবু হুরাইরা [রাদিয়াল্লাহু আনহু] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: শয়তান তাঁকে বলেছিলো: তুমি যখন রাতে নিজের বিছানায় যাবে, তখন আয়াতুল কুরসী সম্পূর্ণ পাঠ করবে:
 (اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ)
অর্থ: আল্লাহ এমন এক সত্তা যেতিনি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীবসর্বসত্তার ধারক”
আবু হুরাইরা [রাদিয়াল্লাহু আনহু] বলেছেন: তার পর শয়তান আমাকে বলেছিলো: তুমি যখন রাতে নিজের বিছানায় যাওয়ার সময় আয়াতুল কুরসী সম্পূর্ণ পাঠ করবে, তখন রাত্রে সব সময় তোমার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সংরক্ষণকারী থাকবে এবং রাত্রে সকাল হওয়া পর্যন্ত কোনো সময় তোমার নিকটে শয়তান আসতে পারবে না
সাহাবীগণ সদাসর্বদা মঙ্গল অর্জনের প্রতি অধিক আগ্রহী ও যত্নবান ছিলেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছিলেন: “জেনে রাখো: শয়তান তোমাকে এই বিষয়ে সত্য কথা বলেছে, যদিও সে মহা মিথ্যুক”। [সহীহুত্তারগীব 610] 
[সহীহ বুখারী, হাদীস নং 2311 এর অংশবিশেষ] 
উল্লিখিত সম্পূর্ণ আয়াতুল কুরসী হলো নিম্নরূপ:
 (اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ، لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ، مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ، وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا، وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ). سورة البقرة، الآية 255.
অর্থ: আল্লাহ এমন এক সত্তা যেতিনি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীবসর্বসত্তার ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে নানিদ্রাও নয়। আসমানসমূহে যা রয়েছে ও জমিনে যা রয়েছে সবই তাঁর। তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে কেউ সুপারিশ করতে পারবে না। তাদের সামনে ও পিছনে যা কিছু আছে তা তিনি জানেন। আর যা তিনি ইচ্ছা করেন তা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কোনো কিছুকেই তারা পরিবেষ্টন করতে পারে না। তাঁর কুরসী আসমানসমূহ ও জমিনকে পরিব্যাপ্ত করে আছেআর এই দুইটির রক্ষণাবেক্ষণ তাঁর জন্য কোনো সময় বোঝা হয় না। আর তিনি সুউচ্চ সুমহান সূরা আল-বাকারা, আয়াত নং 255


 16- আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে সমস্ত বিপদ এসেছে আর যে সমস্ত বিপদ এখনও আসেনি, সে সমস্ত বিপদ থেকে সংরক্ষিত হওয়ার জন্য দোয়ার মাধ্যমে উপকৃত হওয়া যায়। আর নিশ্চয় বিপদ অবতীর্ণ হওয়ার অবস্থায় দোয়া তাকে বাধা দেয় এবং তারা উভয়ে কিয়ামত পর্যন্ত ধাক্কাধাক্কি ও ঠেলাঠেলি করতে থাকে  [সহীহ জামে, হাদীস নং 7739]
হাদীসটিকে হাসান বলা হয়েছে। আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী এই হাদীসটিকে দুর্বল এবং অন্যত্রে হাসান (সুন্দর) বলেছেন]
ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে আলাদাভাবে বর্ণনা করেছেন।  
[জামে তিরমিযীহাদীস নং 3548, ইমাম তিরমিযী এই হাদীসটির দুর্বল হওয়ার কারণ উল্লেখ করেছেন। আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী এই হাদীসটিকে হাসান (সুন্দর) বলেছেন] 


17-  আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:   

"عَلَيْكُمْ بِقِيَامِ اللَّيْلِ؛ فَإِنَّهُ دَأْبُ الصَّالِحِينَ قَبْلَكُمْ، وَإِنَّ قِيَامَ اللَّيْلِ قُرْبَةٌ إِلَى اللَّهِ وَمَنْهَاةٌ عَنِ الإِثْمِ، وَتَكْفِيرٌ لِلسَّيِّئَاتِ، وَمَطْرَدَةٌ لِلدَّاءِ عَنِ الْجَسَدِ"‏.

অর্থ: “তোমরা রাতের তাহাজ্জুদের নামাজ প্রতিষ্ঠিত করো। কেননা এই নামাজ হলো তোমাদের পূর্ববর্তী সৎকর্মপরায়ণদের নিয়ম ও আচরণ।   রাতের তাহাজ্জুদের নামাজ হলো আল্লাহর নৈকট্যলাভ করার মাধ্যম, পাপ থেকে বাঁচার উপায়, মন্দ কাজের কাফফারা এবং শারীরিক রোগের প্রতিরোধক”। [সহীহ জামে, হাদীস নং 4079] 
 হাদীসটিকে সহীহ (সঠিক) বলা হয়েছে।
 [জামে তিরমিযীহাদীস নং 3549, ইমাম তিরমিযী এই হাদীসটির দুর্বল হওয়ার কারণ উল্লেখ করেছেন। আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী এই হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন] 


18- আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
"صنائعُ المعروفِ تقي مصارعَ السوءِ والآفاتِ والهلكاتِ، وأهلُ المعروفِ في الدنيا همْ أهلُ المعروفِ في الآخرةِ".
অর্থ: “ভাল কাজ সম্পাদন করা খারাপ মৃত্যুবরণবিপদ-আপদ ও ধ্বংস থেকে রক্ষা করে। আর দুনিয়াতে সৎ কর্মকারীরাই পরকালে কল্যাণময় জীবন লাভ করতে পারে”। [সহীহ জামে, হাদীস নং 3795]
দুরারুস্সানীয়াতে হাদীসটিকে সহীহ (সঠিক) বলা হয়েছে।


19- আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেন:
"غَطُّوا الإناءَ، وأَوْكُوا السِّقاءَ؛ فإنَّ في السَّنَةِ لَيْلَةً يَنْزِلُ فيها وباءٌ، لا يَمُرُّ بإناءٍ ليسَ عليه غِطاءٌ، أوْ سِقاءٍ ليسَ عليه وِكاءٌ، إلَّا نَزَلَ فيه مِن ذلكَ الوَباءِ".
অর্থ: “তোমরা খাদ্যদ্রব্যের এবং পানীয় দ্রব্যের বাসনগুলি আবৃত করে রাখবে এবং জল বহনের থলির মুখ বেঁধে রাখবে। এর কারণ হলো এই যে,  প্রতি বছরে এমন একটি রাত্রি আছেযে রাত্রিতে মহামারী রোগ অবতীর্ণ হয়। তাই সেই রাত্রিতে কোনো খোলা পাত্র এবং বন্ধকহীন জল বহনের থলির উপর দিয়ে সেই মহামারী রোগ অতিবাহিত হলেতাতে সেই মহামারী রোগ অবতীর্ণ হয়ে যায়”  [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 99 - (2014]


20। আব্দুল্লাহ বিন আমের বিন রাবীয়া থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: নিশ্চয় ওমার বিন খাত্তাব [রাদিয়াল্লাহু আনহু] শাম দেশ অভিমুখে যাত্রা করেছিলেন। তাই যখন তিনি তাবুকের নিকটে সার্গ নামক স্থানে উপস্থিত হন, তখন তাঁর কাছে খবর আসে যে, শাম দেশে মহামারী রোগ ছড়িয়ে পড়েছে তাই আব্দুর রহমান বিন আওফ [রাদিয়াল্লাহু আনহুওমার বিন খাত্তাব [রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলেছিলেন: নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
"إِذَا سَمِعْتُمْ بِهِ بِأَرْضٍ فَلاَ تَقْدَمُوا عَلَيْهِ، وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ بِهَا فَلاَ تَخْرُجُوا فِرَارًا مِنْهُ".   
অর্থ: “যখন তোমরা কোনো এলাকায় মহামারী রোগ ছড়িয়ে পড়ার খবর শুনতে পাবে, তখন তোমরা সেই এলাকায় যাবে না। আর যখন কোনো এলাকায় তোমরা থাকা অবস্থায় মহামারী রোগ ছড়িয়ে পড়বে, তখন তোমরা সেই এলাকা হতে অন্য এলাকায় পলায়ন করার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়বে না”
অতঃপর ওমার [রাদিয়াল্লাহু আনহুশাম দেশ অভিমুখে যাত্রা করা স্থগিত করলেন এবং তাবুকের নিকটে সার্গ নামক স্থান থেকে ফিরে গেলেন।
[সহীহ বুখারীহাদীস নং 6973 এবং সহীহ মুসলিমহাদীস নং 98-(2219)তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে]


প্রস্তুতকরণ:
ইসলামিক সেন্টার রাবওয়া, রিয়াদ
অনুবাদ, সম্পাদন ও নিরীক্ষণ:
ডক্টর মুহাম্মাদ মর্তুজা পিতা আয়েশ মুহাম্মাদ
আল ইমাম মুহাম্মাদ বিন সাঊদ ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় রিয়াদসৌদি আরব থেকে অনার্সমাস্টার্স এবং (পিএইচডি) ডক্টরেট ডিগ্রি প্রাপ্ত
সূত্র: ইসলামহাউজ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন