Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

See Our Articles In Different Styles... Grid View List View

শনিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৮

ইত্তেবায়ে রাসূল

Views:

A+ A-
ইত্তেবায়ে রাসূল



ﺇِﻥَّ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟﻠﻪِ ، ﻧَﺤْﻤَﺪُﻩُ ﻭَﻧَﺴْﺘَﻌِﻴْﻨُﻪُ ﻭَﻧَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻩُ ، ﻭَﻧَﻌُـﻮْﺫُ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﻣِﻦْ ﺷُﺮُﻭْﺭِ ﺃَﻧْﻔُﺴِﻨَﺎ ، ﻭَﻣِﻦْ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺕِ ﺃَﻋْﻤَﺎﻟِﻨَﺎ ، ﻣَﻦْ ﻳَّﻬْﺪِﻩِ ﺍﻟﻠﻪُ ﻓَﻼَ ﻣُﻀِﻞَّ ﻟَﻪُ ، ﻭَﻣَﻦْ ﻳُّﻀْﻠِﻞِ ﺍﻟﻠﻪُ ﻓَﻼَ ﻫَﺎﺩِﻱَ ﻟَﻪُ ، ﻭَﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥْ ﻻَّ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻻَ ﺷَﺮِﻳْﻚَ ﻟَﻪُ ، ﻭَﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﻋَﺒْﺪُﻩُ ﻭَﺭَﺳُﻮْﻟُﻪُ


নিশ্চয়ই যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য। আমরা তারই প্রশংসা করি, তার কাছে সাহায্য চাই, তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি। আল্লাহর নিকট আমরা আমাদের প্রবৃত্তির অনিষ্টতা ও আমাদের কর্মসমূহের খারাবী থেকে আশ্রয় কামনা করি। আল্লাহ যাকে হেদায়েত দেন, তাকে গোমরাহ করার কেউ নাই। আর যাকে গোমরাহ করেন তাকে হেদায়েত দেয়ার কেউ নাই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্যিকার ইলাহ নেই, তিনি একক, তার কোন শরিক নাই। আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। সালাত ও সালাম নাযিল হোক তার উপর, তার পরিবার-পরিজন ও তার সাহাবীদের উপর এবং যারা কিয়ামত অবধি এহসানের সাথে তাদের অনুসরণ করেন তাদের উপর।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন স্বীয় বান্দাদের প্রতি অধিক দয়ালু ও ক্ষমাশীল। তিনি তার বান্দাদের যে কোন উপায়ে ক্ষমা করতে ও তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করতে পছন্দ করেন।
আমরা সরল পথে চলতে চাই, হক জানতে চাই। অথচ সুপথ পেতে হলে রব হিসেবে আল্লাহকে মানতে হবে, তাগূতকে বর্জন করতে হবে; জীবনাদর্শ হিসেবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণ করতে হবে এবং তাকে অনুকরণীয় আদর্শ হিসেবে মানতে হবে। রাসূলের জীবনেই আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ রয়েছে। জীবনের সকল ক্ষেত্র থেকে বাতিল আদর্শ পরিত্যাগ করতে হবে। অন্ধ-
অনুকরণ, অন্ধ-বিশ্বাস ও বিদআত- কুসংস্কার বর্জন করে ইত্তেবায়ে রাসূল অর্থাৎ রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও হেদায়াতপ্রাপ্ত খলিফাদের অনুসরণ করতে হবে।





তাই আসুন আমরা কুরআন এবং সহীহ ও হাসান হাদিসকেই আমাদের জীবনের চলার পথের একমাত্র পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করি। সহীহ হাদিস ছাড়া রাসূলের সূন্নাহ প্রমাণ করা যায় না। জঈফ হাদিস রাসূলের সূন্নাহর ব্যাপারে কিছু অনুমান-ধারণার সৃষ্টি করে মাত্র। সুতরাং সহীহ হাদিসের বিপরীতে দুর্বল হাদিসকে গ্রহণ না করি। সহীহ হাদিসের উপর আমল করা ছেড়ে দিয়ে দুর্বল হাদিসের পিছনে ছুটাছুটি না করি। যে ক্ষেত্রে সহীহ বা হাসান হাদিস পাওয়া যাবে সে ক্ষেত্রে সহীহ হাদিসকে বাদ দিয়ে দুর্বল হাদিসের উপর আমল করা কোন অজুহাতে গ্রহণ যোগ্য নয়। কারণ, দুর্বল হাদিস দ্বারা শুধু অনুমান বা ধারণায় লাভ হয়। আল্লাহ তা’আলা বলেন,



﴿ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﭐﺟۡﺘَﻨِﺒُﻮﺍْ ﻛَﺜِﻴﺮٗﺍ ﻣِّﻦَ ﭐﻟﻈَّﻦِّ ﺇِﻥَّ ﺑَﻌۡﺾَ ﭐﻟﻈَّﻦِّ ﺇِﺛۡﻢٞۖ ﴾ ‏[ ﺍﻟﺤﺠﺮﺍﺕ : ١٢ ‏]



“হে মুমিনগণ! তোমরা অধিকাংশ অনুমান হতে দূরে থাক; কারণ অনুমান কোন কোন ক্ষেত্রে পাপ”। [1]



কোন হাদিসটি দুর্বল আর কোন হাদিসটি সহীহ আমাদের পূর্ববর্তী বিদ্বানরা বিশদ ভাবে আলোচনা করে গিয়েছেন। তাদের ব্যাপারে সারা পৃথিবীর আহলে ইলমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তাদের প্রতি কারো কোন প্রশ্ন নাই। তাই হাদিস যাচাইয়ের জন্য মুহাদ্দিস, ফকীহ, ইমামদের গ্রন্থ পড়তে হবে। বইয়ের শেষে নির্ভরযোগ্য মুহাদ্দিস, ফকীহ, ইমামদের গ্রন্থ ও তাদের তালিকা দেয়া আছে। হাদিস যাচাই করা ও বিশুদ্ধ ইলম অর্জন করা আমাদের সবারই দায়িত্ব ও কর্তব্য। সত্য উদঘাটন করা ছাড়া আপনি কখনোই দায়িত্ব মুক্ত হতে পারেন না। আল্লাহ তা’আলা বলেনÑ


﴿ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮٓﺍْ ﺇِﻥ ﺟَﺎٓﺀَﻛُﻢۡ ﻓَﺎﺳِﻖُۢ ﺑِﻨَﺒَﺈٖ ﻓَﺘَﺒَﻴَّﻨُﻮٓﺍْ ﺃَﻥ ﺗُﺼِﻴﺒُﻮﺍْ ﻗَﻮۡﻣَۢﺎ ﺑِﺠَﻬَٰﻠَﺔٖ ﻓَﺘُﺼۡﺒِﺤُﻮﺍْ ﻋَﻠَﻰٰ ﻣَﺎ ﻓَﻌَﻠۡﺘُﻢۡ ﻧَٰﺪِﻣِﻴﻦَ ٦
﴾ ‏[ ﺍﻟﺤﺠﺮﺍﺕ : ٦ ‏]


“হে মুমনিগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে তবে তোমরা পরীক্ষা করে
দেখবে যাতে অজ্ঞতা বশত: তোমরা কোন সম্প্রদায়রে ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃত কর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও”। [2]
এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা যে কোন সংবাদকে গ্রহণ করার পূর্বে তা যাচাই বাচাই করার নির্দেশ দেন। সুতরাং, ইসলামী শরিয়তের বিধান হল, যে কোন সংবাদ যাচাই করা ছাড়া তার উপর আমল করা যাবে না এবং তা গ্রহণ করা যাবে না। আমল করতে হলে আগে তা সঠিক কিনা তা যাচাই করতে হবে। হাদিসটি কোন পর্যায়ের হাদিস তা জানা থাকা জরুরী। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় হল, বর্তমানে আমরা শোনার উপররই নির্ভর করে থাকি। জ্ঞান অর্জন করা বা জানার আমরা একেবারেই উদাসীন।


যদি বলি এ আমলটি আপনি কোথায় পেলেন তখন বলবে আমি অমুক আলেমকে বা পীর সাহেবকে বলতে শুনেছি তাই আমল করছি।



অথচ এ বিষয়ে হাদিসে কোন দিক নির্দেশনা আছে কিনা তা জানার কোন প্রয়োজনই আজ আমাদের মধ্যে অনুভূত হয় না। আমাদের এ দুর্বলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্বার্থান্বেষী আলেম, পেট পূজারীরা ইসলামের মধ্যে তাদের মনগড়া অসংখ্য বিদআত ও কুসংস্কার প্রবর্তন করেছেন। অসংখ্য বানোয়াট হাদিস ও মিথ্যা কথা মানুষের মধ্যে চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের থেকে আমাদের অবশ্যই সাবধান হতে হবে। আবু হুরাইরা রা. হাদিস বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,


‏« ﻳَﻜُﻮﻥُ ﻓِﻲ ﺁﺧِﺮِ ﺍﻟﺰَّﻣَﺎﻥِ ﺩَﺟَّﺎﻟُﻮﻥَ ﻛَﺬَّﺍﺑُﻮﻥَ، ﻳَﺄْﺗُﻮﻧَﻜُﻢْ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺄَﺣَﺎﺩِﻳﺚِ ﺑِﻤَﺎ ﻟَﻢْ ﺗَﺴْﻤَﻌُﻮﺍ ﺃَﻧْﺘُﻢْ، ﻭَﻟَﺎ ﺁﺑَﺎﺅُﻛُﻢْ، ﻓَﺈِﻳَّﺎﻛُﻢْ ﻭَﺇِﻳَّﺎﻫُﻢْ، ﻟَﺎ ﻳُﻀِﻠُّﻮﻧَﻜُﻢْ، ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻔْﺘِﻨُﻮﻧَﻚُ ﻡْ ‏»


“শেষ জামানায় এমন সব দজ্জাল ও মিথ্যুকদের আর্বিভাব হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব হাদিস নিয়ে আসবে, যা তোমরা ইতিপূর্বে কখনো শোননি এবং তোমাদের পূর্ব পুরুষরাও কখনো শুনেনি। তোমরা তাদের থেকে সতর্ক থাকবে, যাতে তারা তোমাদের পথভ্রষ্ট করতে না পারে এবং তোমাদের বিপদে ফেলতে না পারে”।
[3]



সুতরাং, গোমরাহি ও পথভ্রষ্টটা থেকে
বাঁচার একমাত্র উপায় হল, আল্লাহর রাসূলের ইত্তেবা করা এবং বিশুদ্ধ ও হাসান হাদিসের উপর আমল করা। এ বইটি আমরা ইত্তেবায়ে রাসূল কাকে বলে এবং ইত্তেবায়ে রাসূলের গুরুত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করছি, যাতে আমরা তদনুযায়ী আমাদের জীবন পরিচালনা করতে পারি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমীন



সংকলক
জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের
ইত্তেবার অর্থ:

আভিধানিক অর্থে ইত্তেবা অর্থ হল;



কারো পদচিহ্ন দেখে দেখে চলা। এ শব্দটি অনুসরণ, অনুকরণ, মান্যকরণ, আদর্শ জ্ঞান করণ ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়।



শরিয়তের পরিভাষায় ইত্তেবা:


দ্বীনের সকল বিষয় তথা ‘আক্বিদা-বিশ্বাস, কথা, কাজ, গ্রহণ- বর্জন সহ সর্বক্ষেত্রে রাসূলের পরিপূর্ণ অনুসরণ করাকে ইত্তেবা বলে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে কাজটি যেভাবে করেছেন সেটি ঠিক সেভাবে করাই হল রাসূলের ইত্তেবা বা অনুসরণ। রাসূলের ইত্তেবা ছাড়া কোন ইবাদত শুদ্ধ হয় না। এ কারণেই ইবাদতের ক্ষেত্রে রাসূলের ইত্তেবার কোন বিকল্প নাই। আর রাসূলের ইত্তেবা সম্পর্কে এবং আল্লাহর রাসূল কোন কাজ কিভাবে করেছেন সে সম্পর্কে
জানতে হলে হাদিস বা সূন্নাহ অধ্যয়ন ছাড়া আর কোন পথ নাই। কেবল হাদিস বা সূন্নাহের অধ্যয়নের মাধ্যমে রাসূলের ইত্তেবা সম্পর্কে জানা যাবে।


আল কুরআনে ইত্তেবার গুরুত্ব:



পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’আলা রাসূলের অনুকরণ ও অনুসরণ করার নির্দেশ দেন। কারণ, আল্লাহর রাসূল হল আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের প্রতি দূত। তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে আল্লাহর বাণী মানুষের নিকট পৌঁছে দেন। রাসূলের মাধ্যমেই আল্লাহর আদেশ নিষেধ বাস্তবায়িত হয় এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভে ধন্য হয়। তাই আল্লাহ মানুষকে তার প্রেরিত রাসূলের অনুকরণ করার নির্দেশ দেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন,


﴿ﻭَﺃَﻥَّ ﻫَٰﺬَﺍ ﺻِﺮَٰﻃِﻲ ﻣُﺴۡﺘَﻘِﻴﻤٗﺎ ﻓَﭑﺗَّﺒِﻌُﻮﻩُۖ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺘَّﺒِﻌُﻮﺍْ ﭐﻟﺴُّﺒُﻞَ ﻓَﺘَﻔَﺮَّﻕَ ﺑِﻜُﻢۡ ﻋَﻦ ﺳَﺒِﻴﻠِﻪِۦۚ ﺫَٰﻟِﻜُﻢۡ ﻭَﺻَّﻯٰﻜُﻢ ﺑِﻪِۦ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢۡ ﺗَﺘَّﻘُﻮﻥَ ١٥٣
﴾ ‏[ ﺍﻻﻧﻌﺎﻡ : ١٥٣ ‏]


“আর এটি তো আমার সোজা পথ। সুতরাং তোমরা তার অনুসরণ কর এবং অন্যান্য পথ অনুসরণ করো না, তাহলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে। এ গুলো তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর”। [4]


ইমাম কুরতবী রহ. বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াত যাতে আল্লাহ তা’আলা স্বীয় রাসূলের ইত্তেবা করার আদেশ দিয়েছেন এবং তার পথের ইত্তেবা ছাড়া অন্য সব পথ পরিহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর আয়াতে সীরাতে মুস্তাকীম-এর অর্থ হল, আল্লাহর পথ যে পথের প্রতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষকে আহ্বান করেছেন। আর তা হল রাসূলের ইত্তেবা ও তার সুন্নাতের অনুসরণ।
[5]


আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন,




﴿ﻓَﻠۡﻴَﺤۡﺬَﺭِ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﺨَﺎﻟِﻔُﻮﻥَ ﻋَﻦۡ ﺃَﻣۡﺮِﻩِۦٓ ﺃَﻥ ﺗُﺼِﻴﺒَﻬُﻢۡ ﻓِﺘۡﻨَﺔٌ ﺃَﻭۡ ﻳُﺼِﻴﺒَﻬُﻢۡ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٌ ٦٣ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﻮﺭ : ٦٣ ‏]



“অতএব যারা তার নির্দেশের বিরোধিতা করে, তারা যেন তাদের উপর বিপর্যয় নেমে আসা অথবা যন্ত্রণাদায়ক্আযাব পৌঁছার ভয় করে”।
ইমামুল লুগাহ আল্লামা রাগেব আল ইসফাহানী রহ. বলেন, মুখালাফা অর্থ হল, কথা, কাজ ও কর্মে কোন ভাইয়ের বিরোধিতা করা এবং সে যে পথ চলা আরম্ভ করে তার বিপরীত পথে চলতে শুরু করা। [6]



আল্লামা ইবনুল আরাবী রহ. যুবাইর ইবনে বুকার হতে একটি ঘটনা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, মালেক ইবনে আনাস রা. এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আবু আব্দুল্লাহ আমি কোথা থেকে ইহরাম বাঁধব? তিনি বললেন, জুল হুলাইফা হতে- যেখান থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম বেঁধেছেন। তখন লোকটি বলল, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মসজিদ থেকে এহরাম বাঁধতে চাই। তিনি বললেন, না, তুমি তা করো না। লোকটি বলল, আমি মসজিদের পাশে রাসূলের কবরের নিকট থেকে এহরাম বাঁধব। তিনি বললেন, না তুমি তা করো না, আমি ভয় করছি তুমি কোন ফিতনায় আক্রান্ত হবে। লোকটি বলল, কিসের ফিতনা। তখন তিনি বললেন, এর চেয়ে বড় ফিতনা আর কি হতে পারে যে, তুমি মনে করছ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অধিক ফযিলত লাভ করবে, যা তিনি লাভ করতে পারেননি। আল্লাহ বলেন,


﴿ﻓَﻠۡﻴَﺤۡﺬَﺭِ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﺨَﺎﻟِﻔُﻮﻥَ ﻋَﻦۡ ﺃَﻣۡﺮِﻩِۦٓ ﺃَﻥ ﺗُﺼِﻴﺒَﻬُﻢۡ ﻓِﺘۡﻨَﺔٌ ﺃَﻭۡ ﻳُﺼِﻴﺒَﻬُﻢۡ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٌ ٦٣ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﻮﺭ : ٦٣ ‏]



“অতএব যারা তার নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা যেন তাদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসা অথবা যন্ত্রণাদায়ক আযাব পৌঁছার ভয় করে”। [7]
ইমাম মালেক রহ. আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, যে ব্যক্তি এ উম্মতের দীনের মধ্যে নতুন কিছু আবিষ্কার করে, যা ইতিপূর্বে দীনের মধ্যে ছিল না, তাহলে সে যেন এ কথা দাবী করল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীনের বিষয়ে খিয়ানত করেছেন। কারণ, আল্লাহ তা’আলা বলেন,


﴿ﭐﻟۡﻴَﻮۡﻡَ ﺃَﻛۡﻤَﻠۡﺖُ ﻟَﻜُﻢۡ ﺩِﻳﻨَﻜُﻢۡ ﻭَﺃَﺗۡﻤَﻤۡﺖُ ﻋَﻠَﻴۡﻜُﻢۡ ﻧِﻌۡﻤَﺘِﻲ ﻭَﺭَﺿِﻴﺖُ ﻟَﻜُﻢُ ﭐﻟۡﺈِﺳۡﻠَٰﻢَ ﺩِﻳﻨٗﺎۚ ٣﴾ ‏[ ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ : ٣ ‏]


“আজ তোমাদের জন্য দীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম ইসলামকে”। [8] আয়াতে আল্লাহ তা’আলা জানিয়ে দেন, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যুর পূর্বেই দীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা তার দীনকে পূর্ণতা দান করার পর দীনের মধ্যে কোন কিছু বাড়ানোর কোন অবকাশ নাই। যদি কেউ দ্বীনের মধ্যে কোন কিছু বাড়ান বা কমান তার অর্থ হল আল্লাহ দীনকে পূর্ণতা দান করেননি দীনকে অসম্পূর্ণ ছেড়ে দিয়েছেন এবং অবশিষ্ট কাজের জন্য কোন মাখলুককে দায়িত্ব বা অধিকার দিয়েছেন।
[9]

ইত্তেবায়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গুরুত্ব


কোন ইবাদত শুদ্ধ হওয়ার জন্য বা ইবাদতটি ইবাদত হিসেবে বিবেচিত হওয়ার জন্য শর্ত হল, তার মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইত্তেবা পাওয়া যেতে হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবাদতটি যেভাবে করেছেন সেভাবে আদায় করতে হবে এবং তার মধ্যে কোন প্রকার বিকৃতি বা কমবেশ করা চলবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি প্রসিদ্ধ হাদিসে এ বিষয়টি আরও স্পষ্ট করেন। হাদিস দ্বয়ে তিনি ইবাদত যেভাবে করেছেন সেভাবে করার নির্দেশ দেন।


প্রথম হাদিস:



রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,


ﺻﻠﻮﺍ ﻛﻤﺎ ﺭﺃﻳﺘﻤﻮﻧﻲ ﺃﺻﻠﻲ



এটি পূর্ণ হাদিসের একটি অংশ মাত্র।


পুরো হাদিসটি ইমাম বুখারি রহ. স্বীয় কিতাব সহীহ আল বুখারিতে আবু কালাবাহ হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, মালেক বিন হুয়াইরাস রা. হাদিস বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,


‏( ﺃﺗﻴﻨﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﻭﻧﺤﻦ ﺷﺒﺒﺔ ﻣﺘﻘﺎﺭﺑﻮﻥ ﻓﺄﻗﻤﻨﺎ ﻋﻨﺪﻩ ﻋﺸﺮﻳﻦ ﻳﻮﻣﺎً ﻭﻟﻴﻠﺔ ﻭﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﺭﺣﻴﻤﺎً ﺭﻓﻴﻘﺎً ﻓﻠﻤﺎ ﻇﻦ ﺃﻧﺎ ﻗﺪ ﺍﺷﺘﻬﻴﻨﺎ ﺃﻫﻠﻨﺎ ﺃﻭ ﻗﺪ ﺍﺷﺘﻘﻨﺎ ﺳﺄﻟﻨﺎ ﻋﻤﻦ ﺗﺮﻛﻨﺎ ﺑﻌﺪﻧﺎ ﻓﺄﺧﺒﺮﻧﺎﻩ . ﻗﺎﻝ : ﺍﺭﺟﻌﻮﺍ ﺇﻟﻰ ﺃﻫﻠﻴﻜﻢ ﻓﺄﻗﻴﻤﻮﺍ ﻓﻴﻬﻢ ﻭﻋﻠﻤﻮﻫﻢ ﻭﻣﺮﻭﻫﻢ ﻭﺫﻛﺮ ﺃﺷﻴﺎﺀ ﺃﺣﻔﻈﻬﺎ ﺃﻭ ﻻ ﺃﺣﻔﻈﻬﺎ ﻭﺻﻠﻮﺍ ﻛﻤﺎ ﺭﺃﻳﺘﻤﻮﻧﻲ ﺃﺻﻠﻲ ﻓﺈﺫﺍ ﺣﻀﺮﺕ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻓﻠﻴﺆﺫﻥ ﻟﻜﻢ ﺃﺣﺪﻛﻢ ﻭﻟﻴﺆﻣﻜﻢ ﺃﻛﺒﺮﻛﻢ ‏) .



“আমরা একে অপরের কাছাকাছি ও সম পর্যায়ের কতক লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে এসে বিশ দিন অবস্থান করি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু ও মেহেরবান। তারপর যখন তিনি অনুভব করলেন আমরা আমাদের পরিবারের নিকট যেতে চাই তখন তিনি আমাদের জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা আমাদের বাড়ীতে কাদের রেখে আসছি? আমরা তাদের বিষয়গুলো বললে, তিনি আমাদের বলেন, তোমরা তোমাদের বাড়িতে ফিরে যাও, তাদের মধ্যে তোমরা অবস্থান কর, তাদের তোমরা দীন শেখাও, ভালো কাজের আদেশ দাও। বর্ণনাকারী বলেন, এ ছাড়াও আরও কিছু বিষয় আদেশ করেন তার সবগুলো আমার স্মরণ নাই। আর তোমরা সালাত আদায় কর, যেভাবে তুমি আমাকে সালাত আদায় করতে দেখছ। যখন সালাতের সময় হয়, তোমাদের মধ্য হতে একজন আযান দেবে, আর তোমাদের মধ্যে বয়স্ক ব্যক্তি ইমামতি করবে”। [10]


বিশুদ্ধ হাদিসটি উপরে উল্লেখিত মূলনীতি-ইবাদতের ক্ষেত্রে আসল হল রাসূলের ইত্তেবা- কে আরও স্পষ্ট করেন। অর্থাৎ, সালাত আদায়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পুরোপুরি ইত্তেবা করতে হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে সালাত আদায় করেছেন, সেভাবে সালাত আদায় করতে হবে। তার মধ্যে কোন প্রকার কমবেশ করা যাবে না।


দ্বিতীয় হাদিস: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী-তিনি বলেন, ‏( ﺧﺬﻭﺍ ﻋﻨﻲ ﻣﻨﺎﺳﻜﻜﻢ ‏) “তোমরা আমার থেকে হজের আহকামগুলো শিখে নাও”।
মুসলিম, আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনু মাযা।
হজ বিষয়ে উল্লেখিত হাদিসটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ও মৌলিক-যেমনি ভাবে সালাত বিষয়ে উপরের হাদিসটি গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক। উল্লেখিত দুটি হাদিসই প্রমাণ করে ইবাদতের ক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সূন্নাত ও পদ্ধতিই হল মূল বিবেচ্য ও অনুকরণীয়। তিনি যে ইবাদত যেভাবে করেছেন ঠিক সে ইবাদত সেভাবেই করতে হবে। তাতে কোন প্রকার কমবেশ করার কোন সুযোগ নাই।



ছয়টি বিষয়ে ইত্তেবা জরুরি
মোট কথা, যে কোন ইবাদতে রাসূলের ইত্তেবা জরুরী। মনগড়া কোন ইবাদত আল্লাহর নিকট গ্রহণ যোগ্য নয়। আমলের ক্ষেত্রে ইত্তেবা সহীহ হওয়া ও আমলটি শরীয়ত অনুযায়ী হওয়ার জন্য ছয়টি বিষয়ে এক ও অভিন্ন হতে হবে।


এক- ইবাদতের কারণটি শরিয়ত অনুযায়ী ও অনুমোদিত হতে হবে।
সুতরাং, যদি কোন মানুষ এমন একটি কারণ দেখিয়ে ইবাদত করে যে কারণটি শরিয়ত অনুমোদন করেনি তা অবশ্যই প্রত্যাখ্যাত হবে। যেমন, কিছু মানুষ রজব মাসের সাতাশ তারিখ রাতে সালাত আদায় ও ইবাদত বন্দেগী করে থাকে। তাদের যুক্তি হল, এ রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মিরাজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং পাঁচ ওয়াক্ত সালাত এ রাতেই ফরয করা হয়েছে। সুতরাং, এ রাতে সালাত আদায় করা সাওয়াবের কাজ ও পূন্যময়।
কিন্তু এখানে যে কারণটি উল্লেখ করা হয়েছে, তা শরিয়তের দলীল দ্বারা প্রমাণিত নয়। কারণ, এ কারণটি দেখিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে বা তার কোন সাহাবী এ রাতে সালাত আদায় ও ইবাদত বন্দেগী করেনি। তাই এ রাতে সালাত আদায় ও ইবাদত বন্দেগী করা বিদআত। সুতরাং, ইবাদতের কারণটি শরীয়তের মুয়াফেক হওয়া খুবই গুরুত্ব পূর্ণ। যদি কারণটি শরিয়ত অনুমোদিত কিনা তা জানা যায়, তবে অনেক বিদআত থেকে বাঁচা যাবে। কারণ, আমরা এ ধরনের অনেক ইবাদতকে শরীয়ত মনে করি। কিন্তু বাস্তবে তা শরিয়ত নয় বরং বিদআত।


দুই: ইবাদতের ধরনটি শরিয়ত অনুমোদিত হতে হবে।
যদি কোন ব্যক্তি কোন একটি ইবাদত আল্লাহর জন্য করে থাকে কিন্তু তার ধরনটি শরিয়ত অনুমোদন করেনি। তাহলে সে ইবাদত গ্রহণযোগ্য হবে না। যেমন, এক ব্যক্তি ঘোড়া কুরবানি করল, এ লোকের কুরবানি সহীহ হবে না। কারণ, লোকটি কুরবানির পশুর ধরনের মধ্যে শরিয়তের বিরোধিতা করছে। কারণ, শরিয়ত কুরবানি করার জন্য চতুষ্পদ জন্তু হতে কেবল গরু, ছাগল উটকেই নির্ধারিত করেছেন।


তিন- পরিমাণ:
পরিমাণ শরিয়ত অনুমোদিত হবে। যদি কোন মানুষ পরিমাণ বাড়ায় বা কমায় তাহলে তার ইবাদত শুদ্ধ হবে না। যেমন, যদি কোন মানুষ জোহরের সালাত চার রাকাতের জায়গায় পাঁচ রাকাত আদায় করে, তাহলে তার সালাত শুদ্ধ হবে না। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহরের সালাত কখনো পাঁচ রাকাত আদায় করেননি।


চার- পদ্ধতি:
পদ্ধতি শরিয়ত অনুমোদিত হতে হবে। যেমন, যদি কোন ব্যক্তি ওজু করার সময় হাত দোয়ার পূর্বে পা দুয়ে ফেলে তাহলে সেও সূন্নাতের বিরোধিতা করল। তার ওজু ঠিক হবে না। কারণ, লোকটি ওজু করার পদ্ধতিতে ভুল করেছেন এবং শরিয়তের বিরোধিতা করেছে।


পাঁচ- সময়:
সময়টি শরিয়ত অনুযায়ী হতে হবে। যদি কোন ইবাদত শরিয়ত নির্ধারিত সময়ে না করে নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে করে তাহলে তা ইবাদত বলে গণ্য হবে না এবং ইবাদত সঠিক হবে না। যেমন, কোন ব্যক্তি জিল হজ মাসের প্রথমে কুরবানি করে ফেলল বা ঈদের সালাতের পূর্বে কুরবানি করল, তাহলে তার কুরবানি সহীহ হবে না। বরং এটি গোস্ত খাওয়ার জন্য জবেহ করা হবে। অনুরূপ যদি কেউ রমযান মাসে কুরবানি করে তাহলে তার কুরবানি শুদ্ধ হবে না। সুতরাং, ইবাদত শুদ্ধ হওয়ার জন্য নির্ধারিত সময়টি শরিয়ত সম্মত হতে হবে।



ছয়- স্থান:
ইবাদতের স্থানটি শরিয়ত অনুমোদিত হবে। যদি স্থানটি শরিয়ত সম্মত না হয়, তবে ইবাদত হিসেবে পরিগণিত হবে না। যেমন- শরিয়ত অনুযায়ী ইতিকাফ করার স্থান হল, মসজিদ। যদি কোন ব্যক্তি মসজিদের বাইরে ইতেকাফ করে তার ইতেকাফ করা শুদ্ধ হবে না। যদি কোন নারী বলে আমি স্বীয় ঘরে সালাতের স্থানে ইতেকাফ করব, তাহলে তার ইতেকাফ শুদ্ধ হবে না। কারণ, ইতেকাফের স্থান হল, মসজিদ। অনুরূপভাবে কোন ব্যক্তি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করতে গিয়ে দেখে সেখানে অনেক ভিড় তখন সে সেখান থেকে ফিরে মহল্লার মসজিদে তাওয়াফ করা আরম্ভ করল তার তাওয়াফ শুদ্ধ হবে না। কারণ তাওয়াফ করার স্থান হল, মসজিদ। আল্লাহ তা’আলা তার স্বীয় বন্ধু ইব্রাহীম আলাইহিস সালামকে বলেন,


﴿ ﺃَﻥ ﻃَﻬِّﺮَﺍ ﺑَﻴۡﺘِﻲَ ﻟِﻠﻄَّﺎٓﺋِﻔِﻴﻦَ ﻭَﭐﻟۡﻌَٰﻜِﻔِﻴﻦَ ﻭَﭐﻟﺮُّﻛَّﻊِ ﭐﻟﺴُّﺠُﻮﺩِ ١٢٥
﴾ ‏[ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : ١٢٥ ‏]



“তোমরা ইতেকাফ কারী, তাওয়াফকারী ও রুকু- সেজদাকারীদের জন্য আল্লাহর ঘরকে পবিত্র কর”। [সূরা বাকারা, আয়াত: ১২৫]



নবী আকরাম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইত্তেবা তথা অনুসরণ ইসলামের অন্যতম মূল ভিত্তি। এ প্রসঙ্গে কুরআন ও হাদিসে প্রচুর উদ্ধৃতি বিদ্যমান। সবগুলো এ সংক্ষিপ্ত বইতে উল্লেখ করা সম্ভব নয়। যেমন: আল্লাহ তা’আলা বলেন:


﴿ ﻭَﻣَﺎٓ ﺀَﺍﺗَﻯٰﻜُﻢُ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝُ ﻓَﺨُﺬُﻭﻩُ ﻭَﻣَﺎ ﻧَﻬَﻯٰﻜُﻢۡ ﻋَﻨۡﻪُ ﻓَﭑﻧﺘَﻬُﻮﺍْۚ ﻭَﭐﺗَّﻘُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَۖ ﺇِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﺷَﺪِﻳﺪُ ﭐﻟۡﻌِﻘَﺎﺏِ ٧ ﴾ ‏[ ﺍﻟﺤﺸﺮ : ٧ ‏]

“রাসূল তোমাদের যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক”। [11]


আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন:



﴿ ﻣَّﻦ ﻳُﻄِﻊِ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝَ ﻓَﻘَﺪۡ ﺃَﻃَﺎﻉَ ﭐﻟﻠَّﻪَۖ ﻭَﻣَﻦ ﺗَﻮَﻟَّﻰٰ ﻓَﻤَﺎٓ ﺃَﺭۡﺳَﻠۡﻨَٰﻚَ ﻋَﻠَﻴۡﻬِﻢۡ ﺣَﻔِﻴﻈٗﺎ ٨٠ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ : ٨٠ ‏]


“যে রাসূলের আনুগত্য করল, সে প্রকারান্তরে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হল, আমি আপনাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে প্রেরণ করিনি”। [12]


ﻋَﻦِ ﺍﻟْﻌَﺒَّﺎﺱِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟْﻤُﻄَّﻠِﺐِ، ﺃَﻧَّﻪُ ﺳَﻤِﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : ‏« ﺫَﺍﻕَ ﻃَﻌْﻢَ ﺍﻟْﺈِﻳﻤَﺎﻥِ ﻣَﻦْ ﺭَﺿِﻲَ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﺭَﺑًّﺎ، ﻭَﺑِﺎﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡِ ﺩِﻳﻨًﺎ، ﻭَﺑِﻤُﺤَﻤَّﺪٍ ﺭَﺳُﻮﻟًﺎ ‏»


রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “সে ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পেয়েছে, যে রব হিসেবে আল্লাহকে,
দ্বীন হিসেবে ইসলামকে এবং রাসূল হিসেবে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নিয়েছে”। [13]




অপর একটি হাদিস আনাস বিন মালেক রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,


ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲِ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : " ﺛَﻼَﺙٌ ﻣَﻦْ ﻛُﻦَّ ﻓِﻴﻪِ ﻭَﺟَﺪَ ﺣَﻼَﻭَﺓَ ﺍﻹِﻳﻤَﺎﻥِ : ﺃَﻥْ ﻳَﻜُﻮﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ ﺃَﺣَﺐَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻣِﻤَّﺎ ﺳِﻮَﺍﻫُﻤَﺎ، ﻭَﺃَﻥْ ﻳُﺤِﺐَّ ﺍﻟﻤَﺮْﺀَ ﻻَ ﻳُﺤِﺒُّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻠَّﻪِ، ﻭَﺃَﻥْ ﻳَﻜْﺮَﻩَ ﺃَﻥْ ﻳَﻌُﻮﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻜُﻔْﺮِ ﻛَﻤَﺎ ﻳَﻜْﺮَﻩُ ﺃَﻥْ ﻳُﻘْﺬَﻑَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ "



“তিনটি জিনিষ যার মধ্যে পাওয়া যাবে, সে ঈমানের সাধ গ্রহণ করবে। এক- আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল তার নিকট দুনিয়ার সব কিছু হতে প্রিয় হওয়া। দুই- কোন মানুষকে একমাত্র আল্লাহর জন্য ভালোবাসা। তিন- ঈমান আনার পর কুফরিতে ফিরে যাওয়াতে এমন অপছন্দ করবে, যেমন আগুনে নিক্ষেপ করাকে অপছন্দ করে”। [14]
সুন্নাহ বা হাদিস যার মাধ্যমে রাসূলের ইত্তেবা করা হয় তার গুরত্ব



সুন্নাহ শব্দের অর্থ চলার পথ, কর্মের নীতি ও পদ্ধতি। যে পন্থা ও রীতি মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবলম্বন করতেন তাই সুন্নাহ। কুরআনে রাসূলের সর্বোত্তম আদর্শ বলতে সুন্নাহকেই বুঝানো হয়েছে। হাদিসের অপর নাম সুন্নাহ। হাদিস অর্থ কথা, বাণী, সংবাদ, খবর, প্রাচীন ও পুরাতনের বিপরীত। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কথা, কাজ ও সমর্থনকে হাদিস বলে।


১. সুন্নাহ হল এক প্রকার ওয়াহী:


ওয়াহী দুই প্রকার: এক- ওয়াহী মাতলু দুই- ওয়াহী গাইরে মাতলু। ওয়াহী মাতলু হল, কুরআন মাজীদ। আর ওয়াহী গায়রে মাতলু হল, সুন্নাহ বা হাদিস। সূন্নাহ বা হাদিস ও আল্লাহ তা’আলার পক্ষ হতে প্রেরিত ওহী।


আল্লাহ তা’আলা বলেন-



﴿ ﻭَﻣَﺎ ﻳَﻨﻄِﻖُ ﻋَﻦِ ﭐﻟۡﻬَﻮَﻯٰٓ ٣ ﺇِﻥۡ ﻫُﻮَ ﺇِﻟَّﺎ ﻭَﺣۡﻲٞ ﻳُﻮﺣَﻰٰ ٤
﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺠﻢ : ٣، ٤ ‏]


“আর সে মনগড়া কথাও বলে না । তাতো ওয়াহী যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়”।[15]



হাসান বিন আত্বিয়া বলেন, জিবরীল (আঃ) যেরূপ কুরআন নিয়ে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট অবতীর্ণ হতেন তেমনি হাদিস নিয়েও অবতীর্ণ হতেন। অতঃপর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে কুরআনের ন্যায় হাদিসও শিক্ষা দিতেন।



২. সুন্নাহ হল কুরআনের ব্যাখ্যা:


সূন্নাহ হল কুরআনের ব্যাখ্যা। সূন্নাহ বাদ দিয়ে কুরআনের উপর আমল করা বা কুরান বুঝা সম্ভব নয়। যেমন, সালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা ইত্যাদি আদেশ কুরআনে দেয়া হয়েছে কিন্তু সালাত কীভাবে আদায় করতে হবে এবং যাকাত কি পরিমাণ আদায় করতে হবে, কোন কোন সম্পদের যাকাত দিতে হবে এবং কোন সম্পদের যাকাত দিতে হবে না। তা বিস্তারিত আলোচনা করা হয়নি। এ সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হাদিসেই করা হয়েছে।


﴿ ﺑِﭑﻟۡﺒَﻴِّﻨَٰﺖِ ﻭَﭐﻟﺰُّﺑُﺮِۗ ﻭَﺃَﻧﺰَﻟۡﻨَﺎٓ ﺇِﻟَﻴۡﻚَ ﭐﻟﺬِّﻛۡﺮَ ﻟِﺘُﺒَﻴِّﻦَ ﻟِﻠﻨَّﺎﺱِ ﻣَﺎ ﻧُﺰِّﻝَ ﺇِﻟَﻴۡﻬِﻢۡ ﻭَﻟَﻌَﻠَّﻬُﻢۡ ﻳَﺘَﻔَﻜَّﺮُﻭﻥَ ٤٤ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺤﻞ : ٤٤ ‏]


“(তাদের প্রেরণ করেছি) স্পষ্ট প্রমাণাদি ও কিতাবসমূহ এবং তোমার প্রতি নাযিল করেছি কুরআন, যাতে তুমি মানুষের জন্য স্পষ্ট করে দিতে পার, যা তাদের প্রতি নাযিল হয়েছে। আর যাতে তারা চিন্তা করে”। [16]


﴿ ﻭَﻣَﺎٓ ﺃَﻧﺰَﻟۡﻨَﺎ ﻋَﻠَﻴۡﻚَ ﭐﻟۡﻜِﺘَٰﺐَ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﺘُﺒَﻴِّﻦَ ﻟَﻬُﻢُ ﭐﻟَّﺬِﻱ ﭐﺧۡﺘَﻠَﻔُﻮﺍْ ﻓِﻴﻪِ ﻭَﻫُﺪٗﻯ ﻭَﺭَﺣۡﻤَﺔٗ ﻟِّﻘَﻮۡﻡٖ ﻳُﺆۡﻣِﻨُﻮﻥَ ٦٤ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺤﻞ : ٦٤ ‏]


“আর আমি তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছি, শুধু এ জন্য যে, যে বিষয়ে তারা বিতর্ক করছে, তা তাদের জন্য তুমি স্পষ্ট করে দেবে এবং (এটি), হেদায়েত ও রহমত সেই কওমের জন্য যারা ঈমান আনে”। [17]


﴿ ﻭَﻣَﺎٓ ﺀَﺍﺗَﻯٰﻜُﻢُ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝُ ﻓَﺨُﺬُﻭﻩُ ﻭَﻣَﺎ ﻧَﻬَﻯٰﻜُﻢۡ ﻋَﻨۡﻪُ ﻓَﭑﻧﺘَﻬُﻮﺍْۚ ﻭَﭐﺗَّﻘُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَۖ ﺇِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﺷَﺪِﻳﺪُ ﭐﻟۡﻌِﻘَﺎﺏِ ٧ ﴾ ‏[ ﺍﻟﺤﺸﺮ : ٧ ‏]


“রাসূল তোমাদের যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক”। [18]


﴿ ﻭَﻣَﺎٓ ﺃَﺭۡﺳَﻠۡﻨَﺎ ﻣِﻦ ﺭَّﺳُﻮﻝٍ ﺇِﻟَّﺎ ﺑِﻠِﺴَﺎﻥِ ﻗَﻮۡﻣِﻪِۦ ﻟِﻴُﺒَﻴِّﻦَ ﻟَﻬُﻢۡۖ ﻓَﻴُﻀِﻞُّ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻦ ﻳَﺸَﺎٓﺀُ ﻭَﻳَﻬۡﺪِﻱ ﻣَﻦ ﻳَﺸَﺎٓﺀُۚ ﻭَﻫُﻮَ ﭐﻟۡﻌَﺰِﻳﺰُ ﭐﻟۡﺤَﻜِﻴﻢُ ٤
﴾ ‏[ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ : ٤ ‏]


“আর আমি প্রত্যেক রাসূলকে তার কওমের ভাষাতেই পাঠিয়েছি, যাতে সে তাদের নিকট বর্ণনা দেয়, সুতরাং, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সঠিক পথ দেখান। আর তিনি পরাক্রমশালী,
প্রজ্ঞাময়”। [19]



আল্লাহ প্রত্যেক রাসূলের উপর তার নিজ ভাষায় কিতাব নাযিল করেছেন যাতে রাসূলগণ ব্যাখ্যা করে জনগণকে ভালভাবে বুঝাতে পারেন। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনের ব্যাখ্যা করে বুঝিয়েছেন যা হাদিসের মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা সংরক্ষণ করেছেন। যদিও হাদিসের মধ্যে রাসূলের নামে অনেক কথাই বিদ্যমান। কিন্তু সম্মানিত মুহাদ্দিস ইমামগণ কোনটি রাসূলের কথা আর কোনটি রাসূলের কথা নয়,
তা পৃথক করেছেন। জঈফ ও জাল বা মিথ্যা হাদিস অবশ্যই বর্জন করতে হবে যা রাসূলের নামে মিথ্যুকরা চালিয়ে দিয়েছে। আমরা কেবল সহীহ ও হাসান হাদিসই গ্রহণ করব। যদি কখনো কোন জঈফ হাদিস উল্লেখ করতে হয়, তবে স্পষ্ট করে দিতে হবে।


ﻭَﻋَﻦ ﻣَﺎﻟﻚ ﺑﻦ ﺃﻧﺲ ﻣُﺮْﺳَﻠًﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : " ﺗَﺮَﻛْﺖُ ﻓِﻴﻜُﻢْ ﺃَﻣْﺮَﻳْﻦِ ﻟَﻦْ ﺗَﻀِﻠُّﻮﺍ ﻣَﺎ ﺗَﻤَﺴَّﻜْﺘُﻢْ ﺑِﻬِﻤَﺎ : ﻛِﺘَﺎﺏَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺳُﻨَّﺔَ ﺭَﺳُﻮﻟِﻪِ . ﺭَﻭَﺍﻩُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤُﻮَﻃَّﺄ


মালিক ইবনু আনাস (রহঃ) হতে মুরসালরূপে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: “আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ তোমরা সে দু’টি জিনিস আঁকড়ে থাকবে, পথভ্রষ্ট হবে না: আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের হাদিস”। [20]


৩. সুন্নাহ বা হাদিস হল হিকমাহ (প্রজ্ঞা)

আল্লাহ তা’আলা তা’আলা কুরআনে সূন্নাহকে হিকমাহ বলে আখ্যায়িত করেছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন,

﴿ ﻭَﺃَﻧﺰَﻝَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴۡﻚَ ﭐﻟۡﻜِﺘَٰﺐَ ﻭَﭐﻟۡﺤِﻜۡﻤَﺔَ ﻭَﻋَﻠَّﻤَﻚَ ﻣَﺎ ﻟَﻢۡ ﺗَﻜُﻦ ﺗَﻌۡﻠَﻢُۚ ١١٣ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ : ١١٣ ‏]

“এবং আল্লাহ তোমার প্রতি গ্রন্থ ও হিকমাহ (হাদিস) অবতীর্ণ করেছেন এবং তুমি যা জানতে না, তিনি তাই তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন”। [21]


আয়াতে আল্লাহ তা’আলা যেমনিভাবে কুরআন নাযিল করার কথা বলেন, অনুরূপভাবে হিকমাহ অর্থাৎ সূন্নাহ নাযিল করার কথাও বলেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, সূন্নাহও আল্লাহর পক্ষ হতে নাযিলকৃত অহী। সুতরাং কুরআন যেমন আল্লাহর ওহী অনুরূপভাবে সূন্নাহও আল্লাহর ওহী। আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন,

﴿ ﻟَﻘَﺪۡ ﻣَﻦَّ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﭐﻟۡﻤُﺆۡﻣِﻨِﻴﻦَ ﺇِﺫۡ ﺑَﻌَﺚَ ﻓِﻴﻬِﻢۡ ﺭَﺳُﻮﻟٗﺎ ﻣِّﻦۡ ﺃَﻧﻔُﺴِﻬِﻢۡ ﻳَﺘۡﻠُﻮﺍْ ﻋَﻠَﻴۡﻬِﻢۡ ﺀَﺍﻳَٰﺘِﻪِۦ ﻭَﻳُﺰَﻛِّﻴﻬِﻢۡ ﻭَﻳُﻌَﻠِّﻤُﻬُﻢُ ﭐﻟۡﻜِﺘَٰﺐَ ﻭَﭐﻟۡﺤِﻜۡﻤَﺔَ ١٦٤ ﴾ ‏[ ﺍﻝ ﻋﻤﺮﺍﻥ : ١٦٤ ‏]

“নিশ্চয় আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি অত্যন্ত অনুকম্পা প্রদর্শন করেছেন যখন তাদের নিকট তাদের নিজস্ব একজনকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন, সে তাদেরকে আল্লাহর আয়াত পড়ে শোনাচ্ছে, তাদেরকে পরিশোধন করছে, তাদেরকে কিতাব ও হিকমাহ (হাদিস) শিক্ষা দিচ্ছে”। [22]

আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন,

﴿ ﻭَﭐﺫۡﻛُﺮۡﻥَ ﻣَﺎ ﻳُﺘۡﻠَﻰٰ ﻓِﻲ ﺑُﻴُﻮﺗِﻜُﻦَّ ﻣِﻦۡ ﺀَﺍﻳَٰﺖِ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﻭَﭐﻟۡﺤِﻜۡﻤَﺔِۚ ﺇِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻄِﻴﻔًﺎ ﺧَﺒِﻴﺮًﺍ ٣٤ ﴾ ‏[ ﺍﻻﺣﺰﺍﺏ : ٣٤ ‏]

“আল্লাহর আয়াত ও হিকমাহ (হাদিস) এর কথা যা তোমাদের গৃহে পঠিত হয়, তা তোমরা স্মরণ রাখবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি সূক্ষ্মèদর্শী ও সর্ব বিষয়ে অবহিত”। [23]



অনেক বিদ্বানরা বলেছেন, হিকমাহ হল সুন্নাহ বা হাদিস। কেননা কুরআন ছাড়া রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর স্ত্রীদের গৃহে যা পাঠ করা হত, তা ছিল রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সুন্নাহ। এ জন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন:

" ﺃَﻟَﺎ ﺇِﻧِّﻲْ ﺃُﻭْﺗِﻴْﺖُ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏَ ﻭَﻣِﺜْﻠَﻪُ ﻣَﻌَﻪُ "


সাবধান! আমাকে কিতাব (কুরআন) ও তার সঙ্গে অনুরূপ কিতাব (হাদিস) দেওয়া হয়েছে। [24]




৪. সুন্নাহর বাইরে যে আমল করা হয়, তা পরিত্যাজ্য।

ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ :
‏« ﻣَﻦْ ﺃَﺣْﺪَﺙَ ﻓِﻲ ﺃَﻣْﺮِﻧَﺎ ﻫَﺬَﺍ ﻣَﺎ ﻟَﻴْﺲَ ﻣِﻨْﻪُ ﻓَﻬُﻮَ ﺭﺩ ‏»


“আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাদের এ দ্বীনে নতুন কিছু উদ্ভাবন করেছে যা এতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত”। [25]



ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲِ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺟَﺎﺀَ ﺛَﻠَﺎﺛَﺔ ﺭَﻫْﻂ ﺇِﻟَﻰ ﺑﻴُﻮﺕ ﺃَﺯْﻭَﺍﺝِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺴْﺄَﻟُﻮﻥَ ﻋَﻦْ ﻋِﺒَﺎﺩَﺓِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃﺧﺒﺮﻭﺍ ﻛَﺄَﻧَّﻬُﻢْ ﺗﻘﺎﻟﻮﻫﺎ ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ ﻭَﺃَﻳْﻦَ ﻧَﺤْﻦُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺪْ ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﺄَﺧَّﺮَ ﻗَﺎﻝَ ﺃﺣﺪﻫﻢ ﺃﻣﺎ ﺃَﻧﺎ ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﺃُﺻَﻠِّﻲ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞ ﺃﺑﺪﺍ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺁﺧﺮ ﺃَﻧﺎ ﺃَﺻﻮﻡ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮ ﻭَﻟَﺎ ﺃﻓﻄﺮ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺁﺧﺮ ﺃَﻧَﺎ ﺃَﻋْﺘَﺰِﻝُ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻓَﻠَﺎ ﺃَﺗَﺰَﻭَّﺝُ ﺃَﺑَﺪًﺍ ﻓَﺠَﺎﺀَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ‏« ﺃَﻧْﺘُﻢُ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻗُﻠْﺘُﻢْ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﺃَﻣَﺎ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧِّﻲ ﻟَﺄَﺧْﺸَﺎﻛُﻢْ ﻟِﻠَّﻪِ ﻭَﺃَﺗْﻘَﺎﻛُﻢْ ﻟَﻪُ ﻟَﻜِﻨِّﻲ ﺃَﺻُﻮﻡُ ﻭَﺃُﻓْﻄِﺮُ ﻭَﺃُﺻَﻠِّﻲ ﻭَﺃَﺭْﻗُﺪُ ﻭَﺃَﺗَﺰَﻭَّﺝُ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻓَﻤَﻦْ ﺭَﻏِﺐَ ﻋَﻦْ ﺳُﻨَّﺘِﻲ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﻣﻨﻲ ‏»



আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিন ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর স্ত্রীদের নিকট তার ইবাদতের অবস্থা জানার জন্য আসেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ইবাদতের খবর শুনে তারা যেন তার ইবাদতকে কম মনে করলেন। তারা পরস্পর আলাপ করলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর তুলনায় আমরা কী? আল্লাহ তা’আলা তার আগের-পিছের সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। তাদের একজন বললেন, আমি সারা রাত সালাত আদায় করবো। দ্বিতীয়জন বললেন, আমি দিনে সিয়াম পালন করবো, আর কখনো তা ত্যাগ করবো না। তৃতীয় জন বললেন, আমি নারী থেকে দূরে থাকব, কখনো বিয়ে করবো না। তাদের এই পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার সময় রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এসে পড়লেন এবং বললেন, “তোমরা কি এ ধরনের কথাবার্তা বলেছিলে? খবরদার! আমি আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশী ভয় করি, তোমাদের চেয়ে বেশী তাকওয়া অবলম্বন করি। কিন্তু এরপরও আমি কোন দিন সিয়াম পালন করি আবার কোন দিন সিয়াম পালন ছেড়ে দিই। রাতে সালাত আদায় করি আবার ঘুমও যাই। নারীদেরকে বিয়েও করি। এটাই আমার পথ।
তাই যে ব্যক্তি আমার পথ ছেড়ে দিয়েছে সে আমার ( উম্মতের মধ্যে) গণ্য হবে না”। [26]
সুতরাং ভাল কাজ বিশুদ্ধ নিয়তে করলেও কোনই লাভ হবে না যতক্ষণ না রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সুন্নাত অনুযায়ী হয়। আর জেনে রাখা ভাল



যে, সহীহ ও হাসান হাদিস ছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত প্রমাণিত হয় না।


৫. সুন্নাহ ছাড়া আমল হল বিদআত, আর বিদআত হল ভ্রষ্টতা, আর ভ্রষ্টতা হল জাহান্নামের পথ।


ﺇِﻥَّ ﺃَﺣْﺴَﻦَ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚِ ﻛِﺘَﺎﺏُ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﺃَﺣْﺴَﻦَ ﺍﻟﻬَﺪْﻱِ ﻫَﺪْﻱُ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻭَﺷَﺮَّ ﺍﻷُﻣُﻮﺭِ ﻣُﺤْﺪَﺛَﺎﺗُﻬَﺎ


আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, “সর্বোত্তম বাণী আল্লাহর কিতাব, আর সর্বোত্তম পথ নির্দেশনা হল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর পথ নির্দেশনা। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হল নতুনভাবে উদ্ভাবিত পন্থাসমূহ”। [27]


ﻭَﻋَﻦْ ﺟَﺎﺑِﺮٍ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ :
‏« ﺃَﻣَّﺎ ﺑَﻌْﺪُ ﻓَﺈِﻥَّ ﺧَﻴْﺮَ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ ﻛِﺘَﺎﺏُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺧَﻴْﺮَ ﺍﻟْﻬَﺪْﻱِ ﻫَﺪْﻱُ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﺷَﺮَّ ﺍﻟْﺄُﻣُﻮﺭِ ﻣُﺤْﺪَﺛَﺎﺗُﻬَﺎ ﻭَﻛُﻞَّ ﺑِﺪْﻋَﺔٍ ﺿَﻠَﺎﻟَﺔٌ ‏» . ﺭَﻭَﺍﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ



জাবির (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, “রাসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন: অতঃপর অবশ্য অবশ্যই সর্বোত্তম বাণী হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার কিতাব। আর সর্বোচ্চ পথ হচ্ছে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর পথ। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট হল দ্বীনে নতুন জিনিস সৃষ্টি করা। এরূপ সব নতুন জিনিসই গুমরাহী (পথভ্রষ্ট)”। [28]


ﻭَﺷَﺮُّ ﺍﻟْﺄُﻣُﻮﺭِ ﻣُﺤْﺪَﺛَﺎﺗُﻬَﺎ، ﻭَﻛُﻞُّ ﻣُﺤْﺪَﺛَﺔٍ ﺑِﺪْﻋَﺔٌ ﻭَﻛُﻞُّ ﺑِﺪْﻋَﺔٍ ﺿَﻠَﺎﻟَﺔٌ، ﻭَﻛُﻞُّ ﺿَﻠَﺎﻟَﺔٍ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ



জাবির (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট হল দ্বীনে নতুন জিনিস সৃষ্টি করা। এরূপ সব নতুন জিনিসই বিদআত। এরূপ সব বিদআত-ই-গুমরাহী (পথভ্রষ্ট)। এরূপ সব গুমরাহী (পথভ্রষ্ট) হবে জাহান্নামের আগুনে অবস্থিতির কারণ। [29]



৬. সুন্নাহ হল নাজাতের অসীলা, মুক্তির পথ।


সুন্নাহর অনুসরণ করার মধ্যেই নাজাত ও মুক্তি। সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করা ছাড়া নাজাত বা মুক্তি লাভ করা সম্ভব নয়।


ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺳِﻨَﺎﻥٍ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻓُﻠَﻴْﺢٌ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻫِﻼَﻝُ ﺑْﻦُ ﻋَﻠِﻲٍّ، ﻋَﻦْ ﻋَﻄَﺎﺀِ ﺑْﻦِ ﻳَﺴَﺎﺭٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﻛُﻞُّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦْ ﺃَﺑَﻰ ‏» ، ﻗَﺎﻟُﻮﺍ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﻣَﻦْ ﻳَﺄْﺑَﻰ؟ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﻣَﻦْ ﺃَﻃَﺎﻋَﻨِﻲ ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ ، ﻭَﻣَﻦْ ﻋَﺼَﺎﻧِﻲ ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﺑَﻰ ‏»


আবূ হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: “আমার সকল উম্মাত জান্নাতে প্রবেশ করবে, কিন্তু যে অস্বীকার করবে সে ব্যতীত। জিজ্ঞেস করা হল, কে অস্বীকার করবে? তিনি বললেন, যারা আমার অনুসরণ করবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে আমার অবাধ্য হবে সে-ই ( জান্নাতে প্রবেশ করতে) অস্বীকার করল”। [30]


আল্লাহ তা’আলা বলেন,


﴿ ﺗِﻠۡﻚَ ﺣُﺪُﻭﺩُ ﭐﻟﻠَّﻪِۚ ﻭَﻣَﻦ ﻳُﻄِﻊِ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُۥ ﻳُﺪۡﺧِﻠۡﻪُ ﺟَﻨَّٰﺖٖ ﺗَﺠۡﺮِﻱ ﻣِﻦ ﺗَﺤۡﺘِﻬَﺎ ﭐﻟۡﺄَﻧۡﻬَٰﺮُ ﺧَٰﻠِﺪِﻳﻦَ ﻓِﻴﻬَﺎۚ ﻭَﺫَٰﻟِﻚَ ﭐﻟۡﻔَﻮۡﺯُ ﭐﻟۡﻌَﻈِﻴﻢُ ١٣
﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ : ١٣ ‏]



“এসব আল্লাহর নির্ধারিত সীমা এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তার রাসূলের হুকুম অনুযায়ী চলবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে
প্রবেশ করাবেন, যার পাদদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত, তারা তাতে চিরকাল থাকবে এবং এটা বিরাট সাফল্য”। [31]



আয়াতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুসরণ করাকে মহা সাফল্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন,


﴿ﻭَﻣَﻦ ﻳُﻄِﻊِ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝَ ﻓَﺄُﻭْﻟَٰٓﺌِﻚَ ﻣَﻊَ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺃَﻧۡﻌَﻢَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴۡﻬِﻢ ﻣِّﻦَ ﭐﻟﻨَّﺒِﻴِّۧﻦَ ﻭَﭐﻟﺼِّﺪِّﻳﻘِﻴﻦَ ﻭَﭐﻟﺸُّﻬَﺪَﺍٓﺀِ ﻭَﭐﻟﺼَّٰﻠِﺤِﻴﻦَۚ ﻭَﺣَﺴُﻦَ ﺃُﻭْﻟَٰٓﺌِﻚَ ﺭَﻓِﻴﻘٗﺎ ٦٩ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ : ٦٩ ‏]


যারা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করে,


তারা নবী, সিদ্দিক, শহীদ এবং নেককার লোকদের সঙ্গী হবে, যাদের প্রতি আল্লাহ নিয়ামত দান করেছেন, তারা কতই না উত্তম সঙ্গী! [32]



﴿ ﻭَﺃَﻃِﻴﻌُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝَ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢۡ ﺗُﺮۡﺣَﻤُﻮﻥَ ١٣٢ ﴾ ‏[ ﺍﻝ ﻋﻤﺮﺍﻥ : ١٣٢ ‏]



“আল্লাহর ও রাসূলের হুকুম মান্য কর,
যাতে তোমরা কৃপা প্রাপ্ত হতে পার”। [33]


﴿ ﭐﻟَّﺬِﻱ ﻳُﺆۡﻣِﻦُ ﺑِﭑﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻛَﻠِﻤَٰﺘِﻪِۦ ﻭَﭐﺗَّﺒِﻌُﻮﻩُ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢۡ ﺗَﻬۡﺘَﺪُﻭﻥَ ١٥٨ ﴾ ‏[ ﺍﻻﻋﺮﺍﻑ : ١٥٧ ‏]


“যে আল্লাহ ও তার বাণীতে ঈমান আনে এবং তোমরা তার (রাসূলের) অনুসরণ কর,


যাতে তোমরা সঠিক পথ পেতে পার”। [34]



﴿ ﻭَﻣَﻦ ﻳُﻄِﻊِ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُۥ ﻭَﻳَﺨۡﺶَ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﻳَﺘَّﻘۡﻪِ ﻓَﺄُﻭْﻟَٰٓﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﭐﻟۡﻔَﺎٓﺋِﺰُﻭﻥَ ٥٢ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﻮﺭ : ٥٢ ‏]


“যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তার অবাধ্যতা পরিহার করে চলে তারাই কৃত কার্য”। [35]


﴿ ﻗُﻞۡ ﺃَﻃِﻴﻌُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺃَﻃِﻴﻌُﻮﺍْ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝَۖ ﻓَﺈِﻥ ﺗَﻮَﻟَّﻮۡﺍْ ﻓَﺈِﻧَّﻤَﺎ ﻋَﻠَﻴۡﻪِ ﻣَﺎ ﺣُﻤِّﻞَ ﻭَﻋَﻠَﻴۡﻜُﻢ ﻣَّﺎ ﺣُﻤِّﻠۡﺘُﻢۡۖ ﻭَﺇِﻥ ﺗُﻄِﻴﻌُﻮﻩُ ﺗَﻬۡﺘَﺪُﻭﺍْۚ ﻭَﻣَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝِ ﺇِﻟَّﺎ ﭐﻟۡﺒَﻠَٰﻎُ ﭐﻟۡﻤُﺒِﻴﻦُ ٥٤ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﻮﺭ : ٥٤ ‏]


বল, আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর। অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তার উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য সে দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরাই দায়ী; এবং তোমরা তার আনুগত্য করলে সৎপথ পাবে, আর রাসূলের কাজ তো কেবল স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া। [36]


﴿ ﻭَﻣَﻦ ﻳُﻄِﻊِ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُۥ ﻓَﻘَﺪۡ ﻓَﺎﺯَ ﻓَﻮۡﺯًﺍ ﻋَﻈِﻴﻤًﺎ ٧١
﴾ ‏[ ﺍﻻﺣﺰﺍﺏ : ٧١ ‏]


যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করে সে সাফল্য লাভ করে-মহা সাফল্য। [37]


﴿ ﻭَﻣَﻦ ﻳُﻄِﻊِ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُۥ ﻳُﺪۡﺧِﻠۡﻪُ ﺟَﻨَّٰﺖٖ ﺗَﺠۡﺮِﻱ ﻣِﻦ ﺗَﺤۡﺘِﻬَﺎ ﭐﻟۡﺄَﻧۡﻬَٰﺮُ ﺧَٰﻠِﺪِﻳﻦَ ﻓِﻴﻬَﺎۚ ﻭَﺫَٰﻟِﻚَ ﭐﻟۡﻔَﻮۡﺯُ ﭐﻟۡﻌَﻈِﻴﻢُ ١٣ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ : ١٣ ‏]


আর যে কেউই আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে দাখিল করাবেন, যার নীচ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত। আর যে কেউ পিঠ ফিরিয়ে নিবে,
তিনি তাকে ভয়াবহ শাস্তি দিবেন। [38]


৭. রাসূলের ফায়সালার সামনে মু’মিনের আর কোন এখতিয়ার বা স্বাধীনতা থাকে না। বরং শুনলাম ও মানলাম বলা।


﴿ ﻓَﻠَﺎ ﻭَﺭَﺑِّﻚَ ﻟَﺎ ﻳُﺆۡﻣِﻨُﻮﻥَ ﺣَﺘَّﻰٰ ﻳُﺤَﻜِّﻤُﻮﻙَ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺷَﺠَﺮَ ﺑَﻴۡﻨَﻬُﻢۡ ﺛُﻢَّ ﻟَﺎ ﻳَﺠِﺪُﻭﺍْ ﻓِﻲٓ ﺃَﻧﻔُﺴِﻬِﻢۡ ﺣَﺮَﺟٗﺎ ﻣِّﻤَّﺎ ﻗَﻀَﻴۡﺖَ ﻭَﻳُﺴَﻠِّﻤُﻮﺍْ ﺗَﺴۡﻠِﻴﻤٗﺎ ٦٥
﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ : ٦٥ ‏]



“কিন্তু না, তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা মু’মিন হবে না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের বিবাদ-বিসম্বাদের মীমাংসার ভার তোমার উপর ন্যস্ত না করে, অতঃপর তোমার ফয়সালার ব্যাপারে তাদের মনে কিছু মাত্র কুণ্ঠাবোধ না থাকে, আর তারা তার সামনে নিজেদেরকে পূর্ণরূপে সমর্পণ করে”। [39]


﴿ ﻭَﺃَﻃِﻴﻌُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُۥٓ ﺇِﻥ ﻛُﻨﺘُﻢ ﻣُّﺆۡﻣِﻨِﻴﻦَ ١ ﴾ ‏[ ﺍﻻﻧﻔﺎﻝ : ١ ‏]


“তোমরা যদি মু’মিন হয়ে থাক তবে তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য কর”। [40]


﴿ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻗَﻮۡﻝَ ﭐﻟۡﻤُﺆۡﻣِﻨِﻴﻦَ ﺇِﺫَﺍ ﺩُﻋُﻮٓﺍْ ﺇِﻟَﻰ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟِﻪِۦ ﻟِﻴَﺤۡﻜُﻢَ ﺑَﻴۡﻨَﻬُﻢۡ ﺃَﻥ ﻳَﻘُﻮﻟُﻮﺍْ ﺳَﻤِﻌۡﻨَﺎ ﻭَﺃَﻃَﻌۡﻨَﺎۚ ﻭَﺃُﻭْﻟَٰٓﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﭐﻟۡﻤُﻔۡﻠِﺤُﻮﻥَ ٥١ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﻮﺭ : ٥١ ‏]


“মু’মিনদেরকে যখন তাদের মাঝে ফায়সালা করার জন্য আল্লাহ ও তার রাসূলের দিকে ডাকা হয়, তখন মু’মিনদের জওয়াব তো এই হয় যে, তারা বলে, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম, আর তারাই সফলকাম”। [41]



﴿ ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮٓﺍْ ﺃَﻃِﻴﻌُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُۥ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻮَﻟَّﻮۡﺍْ ﻋَﻨۡﻪُ ﻭَﺃَﻧﺘُﻢۡ ﺗَﺴۡﻤَﻌُﻮﻥَ ٢٠ ﴾ ‏[ ﺍﻻﻧﻔﺎﻝ : ٢٠ ‏]


“ওহে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য কর এবং আদেশ শোনার পর তা অমান্য কর না”। [42]


﴿ ﻭَﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻟِﻤُﺆۡﻣِﻦٖ ﻭَﻟَﺎ ﻣُﺆۡﻣِﻨَﺔٍ ﺇِﺫَﺍ ﻗَﻀَﻰ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟُﻪُۥٓ ﺃَﻣۡﺮًﺍ ﺃَﻥ ﻳَﻜُﻮﻥَ ﻟَﻬُﻢُ ﭐﻟۡﺨِﻴَﺮَﺓُ ﻣِﻦۡ ﺃَﻣۡﺮِﻫِﻢۡۗ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﻌۡﺺِ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُۥ ﻓَﻘَﺪۡ ﺿَﻞَّ ﺿَﻠَٰﻠٗﺎ ﻣُّﺒِﻴﻨٗﺎ ٣٦ ﴾ ‏[ ﺍﻻﺣﺰﺍﺏ : ٣٦ ‏]


“আল্লাহ ও তার রাসূল কোন নির্দেশ দিলে কোন মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন নারী উক্ত নির্দেশের ভিন্নতা করার কোন অধিকার রাখে না। যে আল্লাহ ও তার রাসূলকে অমান্য করে সে গুমরাহ হয় সুস্পষ্ট গুমরাহীতে”। [43]


৮. রাসূলের অনুসরণই আল্লাহর আনুগত্য:


﴿ ﻣَّﻦ ﻳُﻄِﻊِ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝَ ﻓَﻘَﺪۡ ﺃَﻃَﺎﻉَ ﭐﻟﻠَّﻪَۖ ﻭَﻣَﻦ ﺗَﻮَﻟَّﻰٰ ﻓَﻤَﺎٓ ﺃَﺭۡﺳَﻠۡﻨَٰﻚَ ﻋَﻠَﻴۡﻬِﻢۡ ﺣَﻔِﻴﻈٗﺎ ٨٠ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ : ٨٠ ‏]


“যে রাসূলের হুকুম মানল, সে তো আল্লাহরই হুকুম মানল, কেউ মুখ ফিরিয়ে নিলে আমি তোমাকে তাদের প্রতি পাহারাদার করে পাঠাইনি”। [44]


রাসূল সা. বলেন,


ﻣَﻦْ ﺃَﻃَﺎﻋَﻨِﻲ ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﻃَﺎﻉَ ﺍﻟﻠَّﻪَ، ﻭَﻣَﻦْ ﻋَﺼَﺎﻧِﻲ ﻓَﻘَﺪْ ﻋَﺼَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪَ


“যে ব্যক্তি আমার অনুসরণ করল, সে আল্লাহরই অনুসরণ করল, আর যে ব্যক্তি আমার নাফরমানী করল, সে তো আল্লাহর নাফরমানী করল”। [45]


৯. মু’মিন জীবনের আদর্শ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম):


একজন মুমিনের জন্য রাসূল সা. এর জীবনীর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। আল্লাহর রাসূলই হল একজন মুমীনের অনুকরনীয় আদর্শ।


﴿ ﻟَّﻘَﺪۡ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻜُﻢۡ ﻓِﻲ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﺃُﺳۡﻮَﺓٌ ﺣَﺴَﻨَﺔٞ ﻟِّﻤَﻦ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺮۡﺟُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﭐﻟۡﻴَﻮۡﻡَ ﭐﻟۡﺄٓﺧِﺮَ ﻭَﺫَﻛَﺮَ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻛَﺜِﻴﺮٗﺍ ٢١ ﴾ ‏[ ﺍﻻﺣﺰﺍﺏ : ٢١ ‏]


“তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের আশা রাখে আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে”। [46]


﴿ ﻭَﺇِﻧَّﻚَ ﻟَﻌَﻠَﻰٰ ﺧُﻠُﻖٍ ﻋَﻈِﻴﻢٖ ٤ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻘﻠﻢ : ٤ ‏]

“তুমি অবশ্যই মহান চরিত্রে অধিষ্ঠিত”।
[47]


১০. আল্লাহর ভালবাসা পাওয়ার মাধ্যম রাসূলের অনুসরণ:
আল্লাহকে ভালোবাসতে হলে, রাসূলের ইত্তেবার কোন বিকল্প নাই। রাসূলের ইত্তেবার মাধ্যমেই আল্লাহর ভালোবাসা লাভ হয়। আল্লাহ তা’আলা বলেন,


﴿ ﻗُﻞۡ ﺇِﻥ ﻛُﻨﺘُﻢۡ ﺗُﺤِﺒُّﻮﻥَ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻓَﭑﺗَّﺒِﻌُﻮﻧِﻲ ﻳُﺤۡﺒِﺒۡﻜُﻢُ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻭَﻳَﻐۡﻔِﺮۡ ﻟَﻜُﻢۡ ﺫُﻧُﻮﺑَﻜُﻢۡۚ ﻭَﭐﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭٞ ﺭَّﺣِﻴﻢٞ ٣١ ﴾ ‏[ ﺍﻝ ﻋﻤﺮﺍﻥ : ٣١ ‏]


“বলে দাও,‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাসো তবে আমার অনুসরণ কর আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের গুনাসমূহ ক্ষমা করবেন, বস্তুত, আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”। [48]



১১. কুরআন ও সুন্নাহই সকল সমস্যার সমাধান:
একজন মুমীনের জন্য কুরআন ও সূন্নাহই হল সব সমস্যার সমাধানের মূল।


﴿ ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮٓﺍْ ﺃَﻃِﻴﻌُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺃَﻃِﻴﻌُﻮﺍْ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝَ ﻭَﺃُﻭْﻟِﻲ ﭐﻟۡﺄَﻣۡﺮِ ﻣِﻨﻜُﻢۡۖ ﻓَﺈِﻥ ﺗَﻨَٰﺰَﻋۡﺘُﻢۡ ﻓِﻲ ﺷَﻲۡﺀٖ ﻓَﺮُﺩُّﻭﻩُ ﺇِﻟَﻰ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﻭَﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝِ ﺇِﻥ ﻛُﻨﺘُﻢۡ ﺗُﺆۡﻣِﻨُﻮﻥَ ﺑِﭑﻟﻠَّﻪِ ﻭَﭐﻟۡﻴَﻮۡﻡِ ﭐﻟۡﺄٓﺧِﺮِۚ ﺫَٰﻟِﻚَ ﺧَﻴۡﺮٞ ﻭَﺃَﺣۡﺴَﻦُ ﺗَﺄۡﻭِﻳﻠًﺎ ٥٩ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ : ٥٩ ‏]



“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর অনুগত হও এবং রাসূলের অনুগত হও এবং তোমাদের মধ্যকার কর্তৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গেরও ; তবে যদি কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটে, তাহলে সেই বিষয়কে আল্লাহ এবং রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও যদি তোমরা আল্লাহ এবং আখিরাতে ঈমান আন ; এটাই উত্তম এবং সুন্দরতম মর্মকথা”। [49]



﴿ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺄۡﺗُﻮﻧَﻚَ ﺑِﻤَﺜَﻞٍ ﺇِﻟَّﺎ ﺟِﺌۡﻨَٰﻚَ ﺑِﭑﻟۡﺤَﻖِّ ﻭَﺃَﺣۡﺴَﻦَ ﺗَﻔۡﺴِﻴﺮًﺍ ٣٣
﴾ ‏[ ﺍﻟﻔﺮﻗﺎﻥ : ٣٣ ‏]


“তোমার কাছে তারা এমন কোন সমস্যাই নিয়ে আসে না যার সঠিক সমাধান ও সুন্দর ব্যাখ্যা আমি তোমাকে দান করিনি”। [50]


﴿ ﻭَﺃَﻃِﻴﻌُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُۥ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻨَٰﺰَﻋُﻮﺍْ ﻓَﺘَﻔۡﺸَﻠُﻮﺍْ ﻭَﺗَﺬۡﻫَﺐَ ﺭِﻳﺤُﻜُﻢۡۖ ﻭَﭐﺻۡﺒِﺮُﻭٓﺍْۚ ﺇِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻣَﻊَ ﭐﻟﺼَّٰﺒِﺮِﻳﻦَ ٤٦ ﴾ ‏[ ﺍﻻﻧﻔﺎﻝ : ٤٦ ‏]


“আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য কর,
পরস্পরে ঝগড়া বিবাদ কর না, তা করলে তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলবে, তোমাদের শক্তি-ক্ষমতা বিলুপ্ত হবে। আর ধৈর্য ধারণ করবে, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন”।
[51]



১২. সহীহ হাদিস যখন আহ্বান করবে, তখন সকলকে সেই আহ্বানে সাড়া দেওয়া জরুরী। সহীহ হাদিসের বিপরীতে কোন দূর্বল হাদিস বা যুক্তির পিছলে আমল করা যাবে না।


﴿ ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﭐﺳۡﺘَﺠِﻴﺒُﻮﺍْ ﻟِﻠَّﻪِ ﻭَﻟِﻠﺮَّﺳُﻮﻝِ ﺇِﺫَﺍ ﺩَﻋَﺎﻛُﻢۡ ﻟِﻤَﺎ ﻳُﺤۡﻴِﻴﻜُﻢۡۖ ٢٤ ﴾ ‏[ ﺍﻻﻧﻔﺎﻝ : ٢٤ ‏]


“হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দাও; যখন সে তোমাদেরকে আহ্বান করে তার প্রতি, যা তোমাদেরকে প্রাণবন্ত করে”। [52]


ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : " ﻟَﺎ ﺃُﻟْﻔِﻴَﻦَّ ﺃَﺣَﺪَﻛُﻢْ ﻣُﺘَّﻜِﺌًﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺃَﺭِﻳﻜَﺘِﻪِ، ﻳَﺄْﺗِﻴﻪِ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮُ ﻣِﻤَّﺎ ﺃَﻣَﺮْﺕُ ﺑِﻪِ، ﺃَﻭْ ﻧَﻬَﻴْﺖُ ﻋَﻨْﻪُ، ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ : ﻟَﺎ ﺃَﺩْﺭِﻱ، ﻣَﺎ ﻭَﺟَﺪْﻧَﺎ ﻓِﻲ ﻛِﺘَﺎﺏِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﺗَّﺒَﻌْﻨَﺎﻩُ "


রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- “আমি যেন তোমাদের মাঝে কাউকে এমন না পাই, সে তার খাটের উপর ঠেস দিয়ে বসে থাকবে। আর আমি যা আদেশ দিয়েছি অথবা যা থেকে নিষেধ করেছি, তা তার কাছে পৌছলে সে তখন বলবে: এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না, আমরা আল্লাহর কিতাবে যা পেয়েছি, তারই অনুসরণ করি”। [53]


﴿ ﻟَّﺎ ﺗَﺠۡﻌَﻠُﻮﺍْ ﺩُﻋَﺎٓﺀَ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝِ ﺑَﻴۡﻨَﻜُﻢۡ ﻛَﺪُﻋَﺎٓﺀِ ﺑَﻌۡﻀِﻜُﻢ ﺑَﻌۡﻀٗﺎۚ ﻗَﺪۡ ﻳَﻌۡﻠَﻢُ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺘَﺴَﻠَّﻠُﻮﻥَ ﻣِﻨﻜُﻢۡ ﻟِﻮَﺍﺫٗﺍۚ ﻓَﻠۡﻴَﺤۡﺬَﺭِ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﺨَﺎﻟِﻔُﻮﻥَ ﻋَﻦۡ ﺃَﻣۡﺮِﻩِۦٓ ﺃَﻥ ﺗُﺼِﻴﺒَﻬُﻢۡ ﻓِﺘۡﻨَﺔٌ ﺃَﻭۡ ﻳُﺼِﻴﺒَﻬُﻢۡ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٌ ٦٣
﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﻮﺭ : ٦٣ ‏]



“রাসূলের ডাককে তোমরা তোমাদের একের প্রতি অন্যের ডাকের মত গণ্য করো না। আল্লাহ তাদেরকে জানেন যারা তোমাদের মধ্যে চুপিসারে সরে পড়ে। কাজেই যারা তার আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা সতর্ক হোক যে, তাদের উপর পরীক্ষা নেমে আসবে কিংবা তাদের উপর নেমে আসবে ভয়াবহ শাস্তি”। [54]
সালাত ছেড়ে রাসূলের ডাকে সাড়া দান।



১৩. আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি সর্বোচ্চ ভালবাসা ঈমানী কর্তব্য:


দুনিয়ার সব কিছু হইতে আল্লাহর রাসূলকে
সর্বোচ্চ ভালো বাসতে হবে। সকল কিছুর উপর রাসূলের ভালোবাসাকে প্রাধ্যান্য দিতে হবে।



ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ﻻَ ﻳُﺆْﻣِﻦُ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ، ﺣَﺘَّﻰ ﺃَﻛُﻮﻥَ ﺃَﺣَﺐَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻣِﻦْ ﻭَﺍﻟِﺪِﻩِ ﻭَﻭَﻟَﺪِﻩِ ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺃَﺟْﻤَﻌِﻴﻦَ ‏»


আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন:
“তোমাদের মধ্যে কেউ মু’মিন হতে পারবে না , যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা, তার সন্তানাদি এবং সকল মানুষ হতে বেশী প্রিয় না হবো”। [55]


ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺳُﻠَﻴْﻤَﺎﻥُ ﺑْﻦُ ﺣَﺮْﺏٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺷُﻌْﺒَﺔُ، ﻋَﻦْ ﻗَﺘَﺎﺩَﺓَ، ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲِ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : " ﺛَﻼَﺙٌ ﻣَﻦْ ﻛُﻦَّ ﻓِﻴﻪِ ﻭَﺟَﺪَ ﺣَﻼَﻭَﺓَ ﺍﻹِﻳﻤَﺎﻥِ : ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ ﺃَﺣَﺐَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻣِﻤَّﺎ ﺳِﻮَﺍﻫُﻤَﺎ، ﻭَﻣَﻦْ ﺃَﺣَﺐَّ ﻋَﺒْﺪًﺍ ﻻَ ﻳُﺤِﺒُّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ، ﻭَﻣَﻦْ ﻳَﻜْﺮَﻩُ ﺃَﻥْ ﻳَﻌُﻮﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻜُﻔْﺮِ، ﺑَﻌْﺪَ ﺇِﺫْ ﺃَﻧْﻘَﺬَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ، ﻣِﻨْﻪُ ﻛَﻤَﺎ ﻳَﻜْﺮَﻩُ ﺃَﻥْ ﻳُﻠْﻘَﻰ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ "


আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: যে ব্যক্তির মধ্যে তিনটি জিনিস পাওয়া যাবে, সে ঈমানের সঠিক স্বাদ আস্বাদন করেছে। প্রথমত: তার মধ্যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালবাসা দুনিয়ার সকল জিনিস অপেক্ষা বেশী হবে। দ্বিতীয়ত: যে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালবাসে। তৃতীয়ত: যে ব্যক্তি কুফরির অন্ধকার হতে বের হয়ে ঈমান ও ইসলামের আলো গ্রহণ করার পর আবার কুফরির অন্ধকারে ফিরে যাওয়াকে এত খারাপ মনে করে যেমন মনে করে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে।



﴿ ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﻟَﺎ ﺗُﻘَﺪِّﻣُﻮﺍْ ﺑَﻴۡﻦَ ﻳَﺪَﻱِ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟِﻪِۦۖ ﻭَﭐﺗَّﻘُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَۚ ﺇِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﺳَﻤِﻴﻊٌ ﻋَﻠِﻴﻢٞ ١ ﴾ ‏[ ﺍﻟﺤﺠﺮﺍﺕ : ١ ‏]


“ওহে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের আগে বেড়ে যেয়ো না , আল্লাহকে ভয় কর, আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ”। [56]



১৪. মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সুন্নাহ শাশ্বত ও চিরন্তন। তাঁর শরীয়ত পূর্বের সমস্ত শরীয়তকে রহিত বা বাতিল করেছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত তা রহিত থাকবে।

ﻓﻘﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : " ﻭﺍﻟﺬﻱ ﻧﻔﺲ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻴﺪﻩ ﻟﻮ ﺑﺪﺍ ﻟﻜﻢ ﻣﻮﺳﻰ ﻓﺎﺗﺒﻌﺘﻤﻮﻩ ﻭﺗﺮﻛﺘﻤﻮﻧﻲ ﻟﻀﻠﻠﺘﻢ ﻋﻦ ﺳﻮﺍﺀ ﺍﻟﺴﺒﻴﻞ ﻭﻟﻮ ﻛﺎﻥ ﺣﻴﺎ ﻭﺃﺩﺭﻙ ﻧﺒﻮﺗﻲ ﻻﺗﺒﻌﻨﻲ ‏) ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺪﺍﺭﻣﻲ



রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- “আল্লাহর কসম, যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন। যদি মুসা আ: তোমাদের মাঝে প্রকাশ পেতেন তাহলে তোমরা তার আনুগত্য করতে আর আমাকে ত্যাগ করতে,ফলে তোমরা সহজ -সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে যেতে। অথচ মুসা আ: যদি এখন জীবিত থাকতেন ও আমার নবুওতের কাল পেতেন তাহলে তিনি নিশ্চিত আমার আনুগত্য করতেন”। [57]


﴿ ﻳَٰٓﺄَﻫۡﻞَ ﭐﻟۡﻜِﺘَٰﺐِ ﻟِﻢَ ﺗَﻠۡﺒِﺴُﻮﻥَ ﭐﻟۡﺤَﻖَّ ﺑِﭑﻟۡﺒَٰﻄِﻞِ ﻭَﺗَﻜۡﺘُﻤُﻮﻥَ ﭐﻟۡﺤَﻖَّ ﻭَﺃَﻧﺘُﻢۡ ﺗَﻌۡﻠَﻤُﻮﻥَ ٧١ ﴾ ‏[ ﺍﻝ ﻋﻤﺮﺍﻥ : ٧١ ‏]



“হে আহলে কিতাবগণ, কেন তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে সংমিশ্রণ করছ এবং সত্যকে গোপন করছ, অথচ তোমরা তা জান”।
[58]


মুসলিম হওয়ার পর খ্রিষ্টান হল কিন্তু কবর তার মৃতদেহ গ্রহণ করল না। সুতরাং পূর্বের সমস্ত ধর্ম বাতিল বা অগ্রহণযোগ্য বা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।


ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻧَﺼْﺮَﺍﻧِﻴًّﺎ ﻓَﺄَﺳْﻠَﻢَ، ﻭَﻗَﺮَﺃَ ﺍﻟﺒَﻘَﺮَﺓَ ﻭَﺁﻝَ ﻋِﻤْﺮَﺍﻥَ، ﻓَﻜَﺎﻥَ ﻳَﻜْﺘُﺐُ ﻟِﻠﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻌَﺎﺩَ ﻧَﺼْﺮَﺍﻧِﻴًّﺎ، ﻓَﻜَﺎﻥَ ﻳَﻘُﻮﻝُ : ﻣَﺎ ﻳَﺪْﺭِﻱ ﻣُﺤَﻤَّﺪٌ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﺎ ﻛَﺘَﺒْﺖُ ﻟَﻪُ ﻓَﺄَﻣَﺎﺗَﻪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻓَﺪَﻓَﻨُﻮﻩُ، ﻓَﺄَﺻْﺒَﺢَ ﻭَﻗَﺪْ ﻟَﻔَﻈَﺘْﻪُ ﺍﻷَﺭْﺽُ، ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ : ﻫَﺬَﺍ ﻓِﻌْﻞُ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﺃَﺻْﺤَﺎﺑِﻪِ ﻟَﻤَّﺎ ﻫَﺮَﺏَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ، ﻧَﺒَﺸُﻮﺍ ﻋَﻦْ ﺻَﺎﺣِﺒِﻨَﺎ ﻓَﺄَﻟْﻘَﻮْﻩُ، ﻓَﺤَﻔَﺮُﻭﺍ ﻟَﻪُ ﻓَﺄَﻋْﻤَﻘُﻮﺍ، ﻓَﺄَﺻْﺒَﺢَ ﻭَﻗَﺪْ ﻟَﻔَﻈَﺘْﻪُ ﺍﻷَﺭْﺽُ، ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ : ﻫَﺬَﺍ ﻓِﻌْﻞُ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﺃَﺻْﺤَﺎﺑِﻪِ، ﻧَﺒَﺸُﻮﺍ ﻋَﻦْ ﺻَﺎﺣِﺒِﻨَﺎ ﻟَﻤَّﺎ ﻫَﺮَﺏَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻓَﺄَﻟْﻘَﻮْﻩُ، ﻓَﺤَﻔَﺮُﻭﺍ ﻟَﻪُ ﻭَﺃَﻋْﻤَﻘُﻮﺍ ﻟَﻪُ ﻓِﻲ ﺍﻷَﺭْﺽِ ﻣَﺎ ﺍﺳْﺘَﻄَﺎﻋُﻮﺍ، ﻓَﺄَﺻْﺒَﺢَ ﻭَﻗَﺪْ ﻟَﻔَﻈَﺘْﻪُ ﺍﻷَﺭْﺽُ، ﻓَﻌَﻠِﻤُﻮﺍ : ﺃَﻧَّﻪُ ﻟَﻴْﺲَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ، ﻓَﺄَﻟْﻘَﻮْﻩُ "


আনাস হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, “এক খ্রিষ্টান মুসলিম হল এবং সূরা বাকারা ও আল ইমরান শিখে নিলো। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য অহী লিখত। অতঃপর সে আবার খ্রিষ্টান হয়ে গেল। সে বলতে লাগল, আমি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যা লিখে দিতাম তার চেয়ে বেশী কিছু তিনি জানেন না। (নাউজুবিল্লাহ) কিছুদিন পর আল্লাহ তাকে মৃত্যু দিলেন। খ্রিষ্টানরা তাকে দাফন করল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি তাকে বাইরে নিক্ষেপ করে দিয়েছে। এটা দেখে খ্রিষ্টানরা বলতে লাগল-এটা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার সাহাবীদেরই কাজ। যেহেতু আমাদের এ সাথী তাদের হতে পালিয়ে এসেছিল। এ জন্যই তারা আমাদের সাথীকে কবর হতে উঠিয়ে বাহিরে ফেলে দিয়েছে। তাই যতদূর পারা যায় গভীর করে কবর খুঁড়ে তাকে আবার দাফন করল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি আবার তাকে বাইরে নিক্ষেপ করে দিয়েছে। এবারও তারা বলতে লাগল, এটা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার সাহাবীদেরই কাজ। তাদের নিকট হতে পালিয়ে আসার কারণে তারা আমাদের সাথীকে কবর হতে উঠিয়ে বাহিরে ফেলে দিয়েছে। এবার আরও গভীর করে কবর খনন করে দাফন করল। পরদিন ভোরে দেখা গেল, কবরের মাটি আবার তাকে বাইরে নিক্ষেপ করে দিয়েছে। তখন তারাও বুঝল, এটা মানুষের কাজ নয়। কাজেই তারা লাশটি ফেলে রাখল”।



আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন না।



﴿ ﭐﻟۡﻴَﻮۡﻡَ ﺃَﻛۡﻤَﻠۡﺖُ ﻟَﻜُﻢۡ ﺩِﻳﻨَﻜُﻢۡ ﻭَﺃَﺗۡﻤَﻤۡﺖُ ﻋَﻠَﻴۡﻜُﻢۡ ﻧِﻌۡﻤَﺘِﻲ ﻭَﺭَﺿِﻴﺖُ ﻟَﻜُﻢُ ﭐﻟۡﺈِﺳۡﻠَٰﻢَ ﺩِﻳﻨٗﺎۚ ٣ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ : ٣ ‏]


“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে কবুল করে নিলাম”। [59]


﴿ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﺒۡﺘَﻎِ ﻏَﻴۡﺮَ ﭐﻟۡﺈِﺳۡﻠَٰﻢِ ﺩِﻳﻨٗﺎ ﻓَﻠَﻦ ﻳُﻘۡﺒَﻞَ ﻣِﻨۡﻪُ ﻭَﻫُﻮَ ﻓِﻲ ﭐﻟۡﺄٓﺧِﺮَﺓِ ﻣِﻦَ ﭐﻟۡﺨَٰﺴِﺮِﻳﻦَ ٨٥ ﴾ ‏[ ﺍﻝ ﻋﻤﺮﺍﻥ : ٨٥ ‏]


আর যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন গ্রহণ করতে চাইবে কক্ষনো তার সেই দ্বীন কবুল করা হবে না এবং আখিরাতে সে ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। [60]



১৫. মৃত সুন্নাত জীবিত করার মর্যাদা:


যখন কোন সূন্নাত বিলুপ্ত হয়ে যায়, তার উপর মানুষকে উদ্ভুদ্ধ করা এবং তার উপর আমল করার ফযীলত অনেক। রাসূল সা. বলেন,


ﻣَﻦْ ﺃَﺣْﻴَﺎ ﺳُﻨَّﺔً ﻣِﻦْ ﺳُﻨَّﺘِﻲ، ﻓَﻌَﻤِﻞَ ﺑِﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ، ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻪُ ﻣِﺜْﻞُ ﺃَﺟْﺮِ ﻣَﻦْ ﻋَﻤِﻞَ ﺑِﻬَﺎ، ﻟَﺎ ﻳَﻨْﻘُﺺُ ﻣِﻦْ ﺃُﺟُﻮﺭِﻫِﻢْ ﺷَﻴْﺌًﺎ، ﻭَﻣَﻦْ ﺍﺑْﺘَﺪَﻉَ ﺑِﺪْﻋَﺔً، ﻓَﻌُﻤِﻞَ ﺑِﻬَﺎ، ﻛَﺎﻥَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﻭْﺯَﺍﺭُ ﻣَﻦْ ﻋَﻤِﻞَ ﺑِﻬَﺎ، ﻟَﺎ ﻳَﻨْﻘُﺺُ ﻣِﻦْ ﺃَﻭْﺯَﺍﺭِ ﻣَﻦْ ﻋَﻤِﻞَ ﺑِﻬَﺎ ﺷَﻴْﺌًﺎ


“যে ব্যক্তি আমার একটি (মৃত) সুন্নাত জীবিত করে এবং লোকেরা তদনুযায়ী আমল করে, সেও আমল কারীর অনুরূপ পুরস্কার পাবে। এতে আমলকারীর পুরস্কার কিছুমাত্র কম হবে না। অপরদিকে যে ব্যক্তি কোন বিদআতের উদ্ভাবন করে এবং সে অনুযায়ী আমল করা হয়, তার উপর আমলকারীর পাপের বোঝার অনুরূপ বোঝা বর্তাবে। এতে আমলকারীর পাপের পরিমাণ কিছুই কমানো হবে না”। [61]


১৬. যারা আল্লাহ ও রাসূল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে, তারা মু‘মিন নন। বরং তারা মুনাফিক, যালিম, কাফির।


আল্লাহ তা’আলা তাদের সম্পর্কে বলেন,


﴿ ﻭَﻳَﻘُﻮﻟُﻮﻥَ ﺀَﺍﻣَﻨَّﺎ ﺑِﭑﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺑِﭑﻟﺮَّﺳُﻮﻝِ ﻭَﺃَﻃَﻌۡﻨَﺎ ﺛُﻢَّ ﻳَﺘَﻮَﻟَّﻰٰ ﻓَﺮِﻳﻖٞ ﻣِّﻨۡﻬُﻢ ﻣِّﻦۢ ﺑَﻌۡﺪِ ﺫَٰﻟِﻚَۚ ﻭَﻣَﺎٓ ﺃُﻭْﻟَٰٓﺌِﻚَ ﺑِﭑﻟۡﻤُﺆۡﻣِﻨِﻴﻦَ ٤٧ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﻮﺭ : ٤٧ ‏]


“তারা বলে- আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলাম আর রাসূলের প্রতিও আর আমরা মেনে নিলাম। কিন্তু এরপরও তাদের মধ্যকার একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়, তারা মু’মিন নয়”।
[62]


﴿ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺩُﻋُﻮٓﺍْ ﺇِﻟَﻰ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟِﻪِۦ ﻟِﻴَﺤۡﻜُﻢَ ﺑَﻴۡﻨَﻬُﻢۡ ﺇِﺫَﺍ ﻓَﺮِﻳﻖٞ ﻣِّﻨۡﻬُﻢ ﻣُّﻌۡﺮِﺿُﻮﻥَ ٤٨ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﻮﺭ : ٤٨ ‏]


“তাদেরকে যখন তাদের মাঝে ফায়সালা করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ ও তার রাসূলের পানে আহ্বান করা হয়, তখন তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়”। [63] আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন,


﴿ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻗِﻴﻞَ ﻟَﻬُﻢۡ ﺗَﻌَﺎﻟَﻮۡﺍْ ﺇِﻟَﻰٰ ﻣَﺎٓ ﺃَﻧﺰَﻝَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺇِﻟَﻰ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝِ ﺭَﺃَﻳۡﺖَ ﭐﻟۡﻤُﻨَٰﻔِﻘِﻴﻦَ ﻳَﺼُﺪُّﻭﻥَ ﻋَﻨﻚَ ﺻُﺪُﻭﺩٗﺍ ٦١ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ : ٦١ ‏]


“যখন তাদেরকে বলা হয়-তোমরা আল্লাহর অবতীর্ণ হুকুমের এবং রাসূলের দিকে এসো,তখন তুমি ঐ মুনাফিকদের দেখবে,


তারা তোমার কাছ থেকে ঘৃণা ভরে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে”। [64]


﴿ﻛَﻴۡﻒَ ﻳَﻬۡﺪِﻱ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻗَﻮۡﻣٗﺎ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍْ ﺑَﻌۡﺪَ ﺇِﻳﻤَٰﻨِﻬِﻢۡ ﻭَﺷَﻬِﺪُﻭٓﺍْ ﺃَﻥَّ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝَ ﺣَﻖّٞ ﻭَﺟَﺎٓﺀَﻫُﻢُ ﭐﻟۡﺒَﻴِّﻨَٰﺖُۚ ﻭَﭐﻟﻠَّﻪُ ﻟَﺎ ﻳَﻬۡﺪِﻱ ﭐﻟۡﻘَﻮۡﻡَ ﭐﻟﻈَّٰﻠِﻤِﻴﻦَ ٨٦ ﴾ ‏[ ﺍﻝ ﻋﻤﺮﺍﻥ : ٨٦ ‏]


“আল্লাহ কীরূপে সেই সম্প্রদায়কে সুপথ দেখাবেন যারা ঈমান আনার পর, এ রাসূলকে সত্য বলে স্বীকার করার পর এবং তাদের নিকট সুস্পষ্ট দলীল আসার পর কুফরি করে?


বস্তুত: আল্লাহ যালিম কওমকে পথ দেখান না”। [65]


﴿ ﻗُﻞۡ ﺃَﻃِﻴﻌُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝَۖ ﻓَﺈِﻥ ﺗَﻮَﻟَّﻮۡﺍْ ﻓَﺈِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻟَﺎ ﻳُﺤِﺐُّ ﭐﻟۡﻜَٰﻔِﺮِﻳﻦَ ٣٢ ﴾ ‏[ ﺍﻝ ﻋﻤﺮﺍﻥ : ٣٢ ‏]


“বল, ‘তোমরা আল্লাহর ও রাসূলের আজ্ঞাবহ হও’। অতঃপর যদি তারা না মানে,
তবে জেনে রেখ, আল্লাহ কাফিরদেরকে ভালবাসেন না”। [66]



১৭. যারা আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অমান্য করবে তারা জাহান্নামী।
তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন,


﴿ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﻌۡﺺِ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُۥ ﻭَﻳَﺘَﻌَﺪَّ ﺣُﺪُﻭﺩَﻩُۥ ﻳُﺪۡﺧِﻠۡﻪُ ﻧَﺎﺭًﺍ ﺧَٰﻠِﺪٗﺍ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻭَﻟَﻪُۥ ﻋَﺬَﺍﺏٞ ﻣُّﻬِﻴﻦٞ ١٤ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ : ١٤ ‏]

“আর যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তার রাসূলের নাফরমানী করবে এবং তার নির্ধারিত সীমালঙ্ঘন করবে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামে দাখিল করাবেন, সে তাতে চিরকাল থাকবে এবং সে অবমাননাকর শাস্তি ভোগ করবে”। [67] আল্লাহ তা’আলা তাদের বিষয়ে বলেন,



﴿ ﻭَﻣَﻦ ﻳُﺸَﺎﻗِﻖِ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝَ ﻣِﻦۢ ﺑَﻌۡﺪِ ﻣَﺎ ﺗَﺒَﻴَّﻦَ ﻟَﻪُ ﭐﻟۡﻬُﺪَﻯٰ ﻭَﻳَﺘَّﺒِﻊۡ ﻏَﻴۡﺮَ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﭐﻟۡﻤُﺆۡﻣِﻨِﻴﻦَ ﻧُﻮَﻟِّﻪِۦ ﻣَﺎ ﺗَﻮَﻟَّﻰٰ ﻭَﻧُﺼۡﻠِﻪِۦ ﺟَﻬَﻨَّﻢَۖ ﻭَﺳَﺎٓﺀَﺕۡ ﻣَﺼِﻴﺮًﺍ ١١٥ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ : ١١٥ ‏]


“যে ব্যক্তি সত্য পথ প্রকাশিত হওয়ার পরও রাসূলের বিরোধিতা করে এবং মু’মিনদের পথ বাদ দিয়ে ভিন্ন পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে সে পথেই ফিরাব যে পথে সে ফিরে যায়, আর তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করব, কত মন্দই না সে আবাস”! [68] আল্লাহ তা’আলা বলেন,


﴿ﺇِﻟَّﺎ ﺑَﻠَٰﻐٗﺎ ﻣِّﻦَ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺭِﺳَٰﻠَٰﺘِﻪِۦۚ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﻌۡﺺِ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُۥ ﻓَﺈِﻥَّ ﻟَﻪُۥ ﻧَﺎﺭَ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ ﺧَٰﻠِﺪِﻳﻦَ ﻓِﻴﻬَﺎٓ ﺃَﺑَﺪًﺍ ٢٣ ﴾ ‏[ ﺍﻟﺠﻦ : ٢٣ ‏]



“আল্লাহর বাণী পৌঁছানো ও তার পয়গাম প্রচার করাই আমার কাজ। যে কেউ আল্লাহ ও তার রাসূলকে অমান্য করে, তার জন্য আছে জাহান্নামের আগুন; তাতে তারা চিরকাল থাকবে”। [69]


﴿ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﺬَّﺑُﻮﺍْ ﺑِﭑﻟۡﻜِﺘَٰﺐِ ﻭَﺑِﻤَﺎٓ ﺃَﺭۡﺳَﻠۡﻨَﺎ ﺑِﻪِۦ ﺭُﺳُﻠَﻨَﺎۖ ﻓَﺴَﻮۡﻑَ ﻳَﻌۡﻠَﻤُﻮﻥَ ٧٠ ﺇِﺫِ ﭐﻟۡﺄَﻏۡﻠَٰﻞُ ﻓِﻲٓ ﺃَﻋۡﻨَٰﻘِﻬِﻢۡ ﻭَﭐﻟﺴَّﻠَٰﺴِﻞُ ﻳُﺴۡﺤَﺒُﻮﻥَ ٧١ ﻓِﻲ ﭐﻟۡﺤَﻤِﻴﻢِ ﺛُﻢَّ ﻓِﻲ ﭐﻟﻨَّﺎﺭِ ﻳُﺴۡﺠَﺮُﻭﻥَ ٧٢ ﴾ ‏[ ﻏﺎﻓﺮ : ٧٠، ٧٢ ‏]



“যারা কিতাবকে আর আমি আমার রাসূলদেরকে যা দিয়ে পাঠিয়েছি তাকে অস্বীকার করে, তারা শীঘ্রই জানতে পারবে। যখন তাদের গলায় থাকবে বেড়ি আর শিকল; তাদের টেনে নিয়ে যাওয়া হবে -
ফুটন্ত পানিতে, অতঃপর তাদেরকে আগুনে দগ্ধ করা হবে”। [70]


১৮. যারা আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আনুগত্য পরিহার করবে তাদের সমস্ত আমল নষ্ট হয়ে যাবে।
আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের আনুগত্য ছাড়া কোন আমল কাজে আসবে না।


আল্লাহ তা’আলা বলেন,

﴿ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮٓﺍْ ﺃَﻃِﻴﻌُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺃَﻃِﻴﻌُﻮﺍْ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝَ ﻭَﻟَﺎ ﺗُﺒۡﻄِﻠُﻮٓﺍْ ﺃَﻋۡﻤَٰﻠَﻜُﻢۡ ٣٣﴾ ‏[ ﻣﺤﻤﺪ : ٣٣ ‏]

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর আর রাসূলের আনুগত্য কর আর তোমাদের আমলগুলোকে নষ্ট করে দিও না”।
[71]


১৯. আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের পথ অবলম্বন করুন। রাসূলের পথ বাদ দিয়ে শয়তানের পথে চলার পর অনুশোচনা, কোন কাজে আসবে না। সুতরাং সময় থাকতে তওবা করে কুরআন ও সহীহ হাদিসের দিকে আসুন।
আল্লাহ তা’আলা বলেন,


﴿ ﻭَﻳَﻮۡﻡَ ﻳَﻌَﺾُّ ﭐﻟﻈَّﺎﻟِﻢُ ﻋَﻠَﻰٰ ﻳَﺪَﻳۡﻪِ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﻳَٰﻠَﻴۡﺘَﻨِﻲ ﭐﺗَّﺨَﺬۡﺕُ ﻣَﻊَ ﭐﻟﺮَّﺳُﻮﻝِ ﺳَﺒِﻴﻠٗﺎ ٢٧ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻔﺮﻗﺎﻥ : ٢٧ ‏]

“যালিম সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি রাসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম”। [72]


﴿ ﻳَٰﻮَﻳۡﻠَﺘَﻰٰ ﻟَﻴۡﺘَﻨِﻲ ﻟَﻢۡ ﺃَﺗَّﺨِﺬۡ ﻓُﻠَﺎﻧًﺎ ﺧَﻠِﻴﻠٗﺎ ٢٨ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻔﺮﻗﺎﻥ : ٢٨ ‏]


“হায় আমার দুর্ভাগ্য, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম”। [73]


﴿ ﻟَّﻘَﺪۡ ﺃَﺿَﻠَّﻨِﻲ ﻋَﻦِ ﭐﻟﺬِّﻛۡﺮِ ﺑَﻌۡﺪَ ﺇِﺫۡ ﺟَﺎٓﺀَﻧِﻲۗ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﭐﻟﺸَّﻴۡﻄَٰﻦُ ﻟِﻠۡﺈِﻧﺴَٰﻦِ ﺧَﺬُﻭﻟٗﺎ ٢٩ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻔﺮﻗﺎﻥ : ٢٩ ‏]


“আমার কাছে উপদেশ আসার পর সে আমাকে তা থেকে বিভ্রান্ত করেছিল। আর
শয়তান মানুষকে বিপদকালে ধোঁকা দেয়”।
[74]



২০. রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ যেরূপ হওয়া উচিত:



ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ : ‏« ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺑَﻌَﺚَ ﺇِﻟَﻴْﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﻟَﺎ ﻧَﻌْﻠَﻢُ ﺷَﻴْﺌًﺎ، ﻓَﺈِﻧَّﻤَﺎ ﻧَﻔْﻌَﻞُ ﻛَﻤَﺎ ﺭَﺃَﻳْﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻔْﻌَﻞُ


সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা.


বলেন: “আল্লাহ তা’আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমাদের নিকট প্রেরণ করেছেন, আমরা কিছুই জানতাম না। আমরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যে রূপ করতে দেখি, আমরাও সেরূপ করি”। [75]



ﻛَﺎﻥَ ﺍﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ : ﺇِﺫَﺍ ﺳَﻤِﻊَ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺣَﺪِﻳﺜًﺎ ﻟَﻢْ ﻳَﻌْﺪُﻩُ، ﻭَﻟَﻢْ ﻳُﻘَﺼِّﺮْ ﺩُﻭﻧَﻪُ ‏»



ইবনে উমার রা. যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোন হাদিস শুনতেন, তাতে তিনি কোন কিছু বাড়াতেন না এবং তা থেকে কিছু কমাতেন না। [76]


ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﻗَﺎﻝَ : ﺍﺗَّﺨَﺬَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺧَﺎﺗَﻤًﺎ ﻣِﻦْ ﺫَﻫَﺐٍ، ﻓَﺎﺗَّﺨَﺬَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﺧَﻮَﺍﺗِﻴﻢَ ﻣِﻦْ ﺫَﻫَﺐٍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ‏« ﺇِﻧِّﻲ ﺍﺗَّﺨَﺬْﺕُ ﺧَﺎﺗَﻤًﺎ ﻣِﻦْ ﺫَﻫَﺐٍ ‏» ﻓَﻨَﺒَﺬَﻩُ، ﻭَﻗَﺎﻝَ : ‏« ﺇِﻧِّﻲ ﻟَﻦْ ﺃَﻟْﺒَﺴَﻪُ ﺃَﺑَﺪًﺍ ‏» ، ﻓَﻨَﺒَﺬَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﺧَﻮَﺍﺗِﻴﻤَﻬُﻢْ



ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি সোনার আংটি পরতেন। তখন লোকেরাও সোনার আংটি পড়তে লাগল। এরপর (একদিন) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আমি সোনার আংটি পরছিলাম-তারপর তিনি তা ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন: আমি আর কোন দিনই তা পরব না। ফলে লোকেরাও তাদের আংটিগুলো ছুঁড়ে ফেলল”। [77]


ﻋَﻦْ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ : ﺃَﻧَّﻪُ ﺟَﺎﺀَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺤَﺠَﺮِ ﺍﻷَﺳْﻮَﺩِ ﻓَﻘَﺒَّﻠَﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ‏« ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺃَﻧَّﻚَ ﺣَﺠَﺮٌ، ﻻَ ﺗَﻀُﺮُّ ﻭَﻻَ ﺗَﻨْﻔَﻊُ، ﻭَﻟَﻮْﻻَ ﺃَﻧِّﻲ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳُﻘَﺒِّﻠُﻚَ ﻣَﺎ ﻗَﺒَّﻠْﺘُﻚَ ‏»
.


উমার রা. হতে বর্ণিত যে, তিনি হাজরে আসওয়াদের কাছে এসে তা চুম্বন করে বললেন, “আমি অবশ্যই জানি যে, তুমি একখানা পাথর মাত্র, তুমি কারও কল্যাণ বা অকল্যাণ করতে পার না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তোমায় চুম্বন করতে না দেখলে কখনো আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না”। [78]


২১. হাদিস অমান্য কারীর সঙ্গে সম্পর্ক কিরূপ হওয়া চাই:


ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻣُﻐَﻔَّﻞٍ، ﺃَﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﺟَﺎﻟِﺴًﺎ ﺇِﻟَﻰ ﺟَﻨْﺒِﻪِ ﺍﺑْﻦُ ﺃَﺥٍ ﻟَﻪُ، ﻓَﺨَﺬَﻑَ، ﻓَﻨَﻬَﺎﻩُ، ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺇِﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻧَﻬَﻰ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﻭَﻗَﺎﻝَ : ‏« ﺇِﻧَّﻬَﺎ ﻟَﺎ ﺗَﺼِﻴﺪُ ﺻَﻴْﺪًﺍ، ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻨْﻜِﻲ ﻋَﺪُﻭًّﺍ، ﻭَﺇِﻧَّﻬَﺎ ﺗَﻜْﺴِﺮُ ﺍﻟﺴِّﻦَّ، ﻭَﺗَﻔْﻘَﺄُ ﺍﻟْﻌَﻴْﻦَ ‏» ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﻌَﺎﺩَ ﺍﺑْﻦُ ﺃَﺧِﻴﻪِ ﻳﺨﺬﻑَ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃُﺣَﺪِّﺛُﻚَ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻧَﻬَﻰ ﻋَﻨْﻬَﺎ، ﺛُﻢَّ ﻋُﺪْﺕَ ﺗَﺨْﺬِﻑُ، ﻟَﺎ ﺃُﻛَﻠِّﻤُﻚَ ﺃَﺑَﺪًﺍ


আবদুল্লাহ ইবনে মুগাফ্ফাল রা. থেকে বর্ণিত। একদা তার কাছে তার এক ভাতিজা বসা ছিল। সে তখন কংকর নিক্ষেপ করছিল। তিনি তাকে তা থেকে নিষেধ করলেন এবং বললেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কাজ থেকে নিষেধ করছেন। তিনি আরও বললেন: এতে না শিকার করা হয়,
আর না শত্রু পরাভূত হয়, বরং তা দাঁত ভেঙ্গে দেয় অথবা চক্ষু নষ্ট করে দেয়। রাবী বলেন,



তার ভাইপো পুনরায় পাথর নিক্ষেপ করলে তিনি [ইবনে মুগাফ্ফাল রা.] বলেন: আমি তোমাকে হাদিস শুনাচ্ছি যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ করতে নিষেধ করেছেন। অথচ এরপরও তুমি কংকর নিক্ষেপ করছ? আমি তোমার সাথে আর কখনও কথা বলব না। [79]



ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ، ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﻟَﺎ ﺗَﻤْﻨَﻌُﻮﺍ ﺇِﻣَﺎﺀَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺃَﻥْ ﻳُﺼَﻠِّﻴﻦَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ‏» ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦٌ ﻟَﻪُ : ﺇِﻧَّﺎ ﻟَﻨَﻤْﻨَﻌُﻬُﻦَّ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻓَﻐَﻀِﺐَ ﻏَﻀَﺒًﺎ ﺷَﺪِﻳﺪًﺍ، ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺃُﺣَﺪِّﺛُﻚَ ﻋَﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻭﺗﻘﻮﻝُ : ﺇِﻧَّﺎ ﻟَﻨَﻤْﻨَﻌُﻬُﻦَّ؟


ইবনে উমার থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-তোমরা আল্লাহর বান্দীদের (মহিলাদের) মসজিদে সালাত আদায় করতে মানা করো না। তখন ইবনে উমারের এক পুত্র বললেন: আমরা অবশ্যই তাদের নিষেধ করব। রাবী বলেন: এতে তিনি (ইবনে উমার) ভয়ানক রাগান্বিত হয়ে বললেন: আমি তোমার নিকট রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিস বর্ণনা করছি, অথচ তুমি বলছ যে, আমরা অবশ্যই তাদের নিষেধ করব [80] ?



২২. হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন জরুরী। কারণ মিথ্যা হাদিস বর্ণনাকারী জাহান্নামী।


তাই সহীহ ও হাসান হাদিস ছাড়া জাল বা জঈফ হাদিস আমল করার জন্য বর্ণনা করা যাবে না। তবে বর্জন করার জন্য জঈফ ও জাল হাদিস জানা দরকার। জঈফ হাদিস রাসূলের সূন্নাহর ব্যাপারে কিছু অনুমান-ধারণার সৃষ্টি করে মাত্র। “হে মু’মিনগণ! তোমরা অধিকাংশ অনুমান হতে দূরে থাক ;


কারণ অনুমান কোন কোন ক্ষেত্রে পাপ”।আর জাল বা মিথ্যা হাদিস যা স্পষ্ট রাসূলের কথা নয়। সুতরাং হাদিস যাচাই করতে হবে। তাক্বলিদ করা চলবে না (বিনা দলিল-প্রমাণে কারও কথা মেনে নেওয়া)।


ﻛَﻔَﻰ ﺑِﺎﻟْﻤَﺮْﺀِ ﻛَﺬِﺑًﺎ ﺃَﻥْ ﻳُﺤَﺪِّﺙَ ﺑِﻜُﻞِّ ﻣَﺎ ﺳَﻤِﻊَ


“কোন ব্যক্তি মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে তাই বলে বেড়ায়”। [81]



﴿ ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮٓﺍْ ﺇِﻥ ﺟَﺎٓﺀَﻛُﻢۡ ﻓَﺎﺳِﻖُۢ ﺑِﻨَﺒَﺈٖ ﻓَﺘَﺒَﻴَّﻨُﻮٓﺍْ ﺃَﻥ ﺗُﺼِﻴﺒُﻮﺍْ ﻗَﻮۡﻣَۢﺎ ﺑِﺠَﻬَٰﻠَﺔٖ ﻓَﺘُﺼۡﺒِﺤُﻮﺍْ ﻋَﻠَﻰٰ ﻣَﺎ ﻓَﻌَﻠۡﺘُﻢۡ ﻧَٰﺪِﻣِﻴﻦَ ٦
﴾ ‏[ ﺍﻟﺤﺠﺮﺍﺕ : ٦ ‏]



“মুমনিগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন
করবে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে,



যাতে অজ্ঞতাবশত: তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতি সাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও”। [82]



ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﻋَﻠِﻴًّﺎ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ‏« ﻻَ ﺗَﻜْﺬِﺑُﻮﺍ ﻋَﻠَﻲَّ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻣَﻦْ ﻛَﺬَﺏَ ﻋَﻠَﻲَّ ﻓَﻠْﻴَﻠِﺞِ ﺍﻟﻨَّﺎﺭَ ‏»


আলী রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- তোমরা আমার উপর মিথ্যারোপ
করো না। কারণ যে আমার উপর মিথ্যারোপ করে সে জাহান্নামে যাবে। [83]



ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﺍﻟﺰُّﺑَﻴْﺮِ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﻠْﺖُ ﻟِﻠﺰُّﺑَﻴْﺮِ : ﺇِﻧِّﻲ ﻻَ ﺃَﺳْﻤَﻌُﻚَ ﺗُﺤَﺪِّﺙُ ﻋَﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﻤَﺎ ﻳُﺤَﺪِّﺙُ ﻓُﻼَﻥٌ ﻭَﻓُﻼَﻥٌ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﻣَﺎ ﺇِﻧِّﻲ ﻟَﻢْ ﺃُﻓَﺎﺭِﻗْﻪُ، ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺳَﻤِﻌْﺘُﻪُ ﻳَﻘُﻮﻝُ : ‏« ﻣَﻦْ ﻛَﺬَﺏَ ﻋَﻠَﻲَّ ﻓَﻠْﻴَﺘَﺒَﻮَّﺃْ ﻣَﻘْﻌَﺪَﻩُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ‏»



আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়র রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার পিতা যুবায়রকে বললাম: আমি তো আপনাকে অমুক অমুকের মতো আল্লাহর রাসূলের হাদিস বর্ণনা করতে শুনি না। তিনি বললেন: জেনে রেখ আমি তার (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে দূরে থাকিনি, কিন্তু আমি তাকে বলতে শুনেছি,
যে আমার উপর মিথ্যারোপ করে সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয়।
[84]



ﻗَﺎﻝَ ﺃَﻧَﺲٌ : ﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﻴَﻤْﻨَﻌُﻨِﻲ ﺃَﻥْ ﺃُﺣَﺪِّﺛَﻜُﻢْ ﺣَﺪِﻳﺜًﺎ ﻛَﺜِﻴﺮًﺍ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﻣَﻦْ ﺗَﻌَﻤَّﺪَ ﻋَﻠَﻲَّ ﻛَﺬِﺑًﺎ، ﻓَﻠْﻴَﺘَﺒَﻮَّﺃْ ﻣَﻘْﻌَﺪَﻩُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ‏»


আনাস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: এ কথাটি তোমাদের নিকট বহু হাদিস বর্ণনা করতে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায় যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ইচ্ছাকৃত ভাবে আমার উপর মিথ্যারোপ করে সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয় [85] ।’


ﻋَﻦْ ﺳَﻠَﻤَﺔَ، ﻗَﺎﻝَ : ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻘُﻮﻝُ :
‏« ﻣَﻦْ ﻳَﻘُﻞْ ﻋَﻠَﻲَّ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺃَﻗُﻞْ ﻓَﻠْﻴَﺘَﺒَﻮَّﺃْ ﻣَﻘْﻌَﺪَﻩُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ‏»



সালামাহ ইবনে আকওয়া রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি আমার উপর এমন কথা আরোপ করে যা আমি বলিনি, সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয়’। [86] ’



২৩. মত বিরোধপূর্ণ পরিবেশে সুন্নাত ও হিদায়েত প্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদিনের আদর্শের উপর অবিচল থাকা অপরিহার্য। আর বিদআত পরিত্যাগ করতে হবে।


ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺑِﺘَﻘْﻮَﻯ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻭَﺍﻟﺴَّﻤْﻊِ ﻭَﺍﻟﻄَّﺎﻋَﺔِ، ﻭَﺇِﻥْ ﻋَﺒْﺪًﺍ ﺣَﺒَﺸِﻴًّﺎ، ﻭَﺳَﺘَﺮَﻭْﻥَ ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺪِﻱ ﺍﺧْﺘِﻠَﺎﻓًﺎ ﺷَﺪِﻳﺪًﺍ، ﻓَﻌَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺑِﺴُﻨَّﺘِﻲ، ﻭَﺳُﻨَّﺔِ ﺍﻟْﺨُﻠَﻔَﺎﺀِ ﺍﻟﺮَّﺍﺷِﺪِﻳﻦَ ﺍﻟْﻤَﻬْﺪِﻳِّﻴﻦَ، ﻋَﻀُّﻮﺍ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺑِﺎﻟﻨَّﻮَﺍﺟِﺬِ، ﻭَﺇِﻳَّﺎﻛُﻢْ ﻭَﺍﻟْﺄُﻣُﻮﺭَ ﺍﻟْﻤُﺤْﺪَﺛَﺎﺕِ، ﻓَﺈِﻥَّ ﻛُﻞَّ ﺑِﺪْﻋَﺔٍ ﺿَﻠَﺎﻟَﺔٌ



তোমরা আল্লাহকে ভয় করবে আর শুনবে ও মানবে, যদিও তোমাদের নেতা হাবশী গোলাম হয়। আমার পরে অচিরেই তোমরা কঠিন মতবিরোধ দেখতে পাবে। তখন তোমাদের উপর আমার সুন্নাত ও হিদায়েত প্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদিনের আদর্শের উপর অবিচল থাকা অপরিহার্য। তোমরা তা শক্তভাবে আঁকড়িয়ে ধরে থাকবে। সাবধান ! তোমরা বিদআত পরিহার করবে। কেননা প্রত্যেক বিদআতই গোমরাহি-পথভ্রষ্ট। [87]


২৪. যুগে যুগে ইত্তেবায়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা সুন্নাতের অনুসরণে যারা অগ্রবর্তী। যারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত বা আল জামায়াতের অনুসারী। যে জামায়াত আঁকড়ে ধরার জন্য আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন, আমাদেরকে তাদের অন্তর্ভূক্ত হবে। সুতরাং যারা কুরআন হাদিসের অনুসরণকে বাদ দিয়ে যুক্তির পিছনে ছুটে বেড়ায় তাদের পথ পরিহার করতে হবে। আমাদেরকে আহলুর রায় থেকে বের হয়ে আসতে হবে এবং কুরআন ও সহীহ হাদিসের অনুসারী হতে হবে।


ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ، ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ :
ﺗَﻔَﺮَّﻗَﺖِ ﺍﻟﻴَﻬُﻮﺩُ ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺣْﺪَﻯ ﻭَﺳَﺒْﻌِﻴﻦَ ﺃَﻭْ ﺍﺛْﻨَﺘَﻴْﻦِ ﻭَﺳَﺒْﻌِﻴﻦَ ﻓِﺮْﻗَﺔً، ﻭَﺍﻟﻨَّﺼَﺎﺭَﻯ ﻣِﺜْﻞَ ﺫَﻟِﻚَ، ﻭَﺗَﻔْﺘَﺮِﻕُ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺛَﻼَﺙٍ ﻭَﺳَﺒْﻌِﻴﻦَ ﻓِﺮْﻗَﺔً .


আবু হুরাইর রা. হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

ইয়াহুদী জাতি ৭১ বা ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছিল। নাসারাও তাই। আর আমার উম্মাত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। [88]


ﻋَﻦْ ﻋَﻮْﻑِ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ‏« ﺍﻓْﺘَﺮَﻗَﺖِ ﺍﻟْﻴَﻬُﻮﺩُ ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺣْﺪَﻯ ﻭَﺳَﺒْﻌِﻴﻦَ ﻓِﺮْﻗَﺔً، ﻓَﻮَﺍﺣِﺪَﺓٌ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ، ﻭَﺳَﺒْﻌُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ، ﻭَﺍﻓْﺘَﺮَﻗَﺖِ ﺍﻟﻨَّﺼَﺎﺭَﻯ ﻋَﻠَﻰ ﺛِﻨْﺘَﻴْﻦِ ﻭَﺳَﺒْﻌِﻴﻦَ ﻓِﺮْﻗَﺔً، ﻓَﺈِﺣْﺪَﻯ ﻭَﺳَﺒْﻌُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ، ﻭَﻭَﺍﺣِﺪَﺓٌ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ، ﻭَﺍﻟَّﺬِﻱ ﻧَﻔْﺲُ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺑِﻴَﺪِﻩِ ﻟَﺘَﻔْﺘَﺮِﻗَﻦَّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺛَﻠَﺎﺙٍ ﻭَﺳَﺒْﻌِﻴﻦَ ﻓِﺮْﻗَﺔً، ﻭَﺍﺣِﺪَﺓٌ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ، ﻭَﺛِﻨْﺘَﺎﻥِ ﻭَﺳَﺒْﻌُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ‏» ، ﻗِﻴﻞَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻣَﻦْ ﻫُﻢْ؟ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﺍﻟْﺠَﻤَﺎﻋَﺔُ ‏»


আওফ ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-ইয়াহুদী জাতি ৭১ দলে বিভক্ত হয়েছিল। একদল জান্নাতী আর ৭০ দল জাহান্নামী। খ্রিস্টানরা ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছিল। ৭১ দল জাহান্নামী আর একদল জান্নাতী। সেই মহান সত্তার শপথ,
যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, অবশ্যই আমার উম্মাত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। একটি দল হবে জান্নাতী। আর ৭২টি দল হবে জাহান্নামী। বলা হল, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কারা জান্নাতী ?


তিনি বললেন: আল জামায়াত (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীদের জামায়াত)। [89]


ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲِ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : " ﺇِﻥَّ ﺑَﻨِﻲ ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴﻞَ ﺍﻓْﺘَﺮَﻗَﺖْ ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺣْﺪَﻯ ﻭَﺳَﺒْﻌِﻴﻦَ ﻓِﺮْﻗَﺔً، ﻭَﺇِﻥَّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﺳَﺘَﻔْﺘَﺮِﻕُ ﻋَﻠَﻰ ﺛِﻨْﺘَﻴْﻦِ ﻭَﺳَﺒْﻌِﻴﻦَ ﻓِﺮْﻗَﺔً، ﻛُﻠُّﻬَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ، ﺇِﻟَّﺎ ﻭَﺍﺣِﺪَﺓً ﻭَﻫِﻲَ : ﺍﻟْﺠَﻤَﺎﻋَﺔُ "
আনাস ইবনে মালিক থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-বনী ইসরাঈল ৭১ দলে বিভক্ত হয়েছিল। আমার উম্মাত ৭২ দলে বিভক্ত হবে। একটি দল ব্যতীত সবাই হবে জাহান্নামী। আর তা হচ্ছে আল জামায়াত।
[90]



ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ﻟَﻴَﺄْﺗِﻴَﻦَّ ﻋَﻠَﻰ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣَﺎ ﺃَﺗَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﺑﻨﻲ ﺇﺳﺮﺍﺋﻴﻞ ﺣَﺬْﻭَ ﺍﻟﻨَّﻌْﻞِ ﺑِﺎﻟﻨَّﻌْﻞِ، ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻣَﻦْ ﺃَﺗَﻰ ﺃُﻣَّﻪُ ﻋَﻼَﻧِﻴَﺔً ﻟَﻜَﺎﻥَ ﻓِﻲ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣَﻦْ ﻳَﺼْﻨَﻊُ ﺫَﻟِﻚَ، ﻭَﺇِﻥَّ ﺑﻨﻲ ﺇﺳﺮﺍﺋﻴﻞ ﺗَﻔَﺮَّﻗَﺖْ ﻋَﻠَﻰ ﺛِﻨْﺘَﻴْﻦِ ﻭَﺳَﺒْﻌِﻴﻦَ ﻣِﻠَّﺔً، ﻭَﺗَﻔْﺘَﺮِﻕُ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺛَﻼَﺙٍ ﻭَﺳَﺒْﻌِﻴﻦَ ﻣِﻠَّﺔً، ﻛُﻠُّﻬُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﺇِﻻَّ ﻣِﻠَّﺔً ﻭَﺍﺣِﺪَﺓً، ﻗَﺎﻟُﻮﺍ : ﻭَﻣَﻦْ ﻫِﻲَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﺃَﻧَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺃَﺻْﺤَﺎﺑِﻲ .



আব্দুল্লাহ ইবনে উমার থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “বনূ ইসরাঈলের যে অবস্থা এসেছিল অবশ্যই আমার উম্মাতের মধ্যে অনুরূপ অবস্থা আসবে। এমনকি তাদের কেউ যদি প্রকাশ্যে তার মায়ের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে থাকে তবে আমার উম্মাতেরও কেউ তাতে লিপ্ত হবে। বনী ইসরাঈল ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছিল। আমার উম্মাত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। একটি দল ব্যতীত সবাই হবে জাহান্নামী। বলা হল একটি দল (যারা জান্নাতী) কারা ? তিনি বললেন: আমি এবং আমার সাহাবীরা আজকের দিনে যার উপর (প্রতিষ্ঠিত)”। [91]


যুগে ইত্তেবায়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা সুন্নাতের অনুসরণে যারা অগ্রবর্তী তাদের তালিকা নিম্নে দেয়া হল।
সাহাবী-



১. আবুবকর সিদ্দিক ১৩ হি
২. ওমর ইবনুল খাত্তাব ২৩ হি/ বর্ণিত হাদিস ৫৩৯
৩. ওসমান বিন আফ্ফান ৩৫ হি
৪. আলী ইবনু আবী তালিব ৪০ হি/ বর্ণিত হাদিস ৫৮৬
৫. আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ৩২ হি/ বর্ণিত হাদিস ৮৪৮
৬. আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ৬৮ হি / বর্ণিত হাদিস ২৬৬০-তাফসীরে ইবনে আব্বাস
৭. আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর ৭৩ হি / বর্ণিত হাদিস ১৬৩০
৮. আয়েশা বিনতে আবু বকর ৫৮ / বর্ণিত হাদিস ২২১০
৯. যায়দ ইবনে সাবিত ৪৫হি
১০. আবূ মুসা আশ’আরী ৪৪ হি
১১. মুয়ায বিন জাবাল ১৭ হি/ বর্ণিত হাদিস ১৫৭
১২. উবাই ইবনু কা’ব ৩২ হি/ বর্ণিত হাদিস ৬৪
১৩. আবু হুরাইরা ৫৮ হি / বর্ণিত হাদিস ৫৩৭৪
১৪. আব্দুল্লাহ ইবনুয যুবায়ের ১-৭৩ হি
১৫. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ ৭৪ হি / বর্ণিত হাদিস ১৫৪০
১৬. আনাস ইবনু মালেক ৯১হি/ বর্ণিত হাদিস ২২৮৬
১৭. আবু সাঈদ খুদরী ৭৪ বর্ণিত হাদিস ১১৭০
১৮. আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস হি ৬৫/বর্ণিত হাদিস ৭০০
তাবেঈ-
১৯. সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব ১৫হি -৯৪ হি/৭১৩ সন
২০. ওরওয়াহ বিন যুবায়ের ইবনুল আওয়াম ২২-৯৪ হি
২১. সুলায়মান বিন ইয়াসার ৯৪ হি
২২. সাঈদ ইবন যুবায়ের ৯৫ হি
২৩. কাসিম বিন মুহাম্মদ বিন আবুবকর সিদ্দিক ১০১ হি
২৪. ইকরামা ১০৫ হি
২৫. তাউস ইবন কাইসান ১০৬ হি
২৬. সালিম বিন আবদুল¬াহ বিন ওমর ১০৬ হি
২৭. আতা বিন আবী রিবাহ ১১৪ হি
২৮. মুহাম্মদ বিন মুসলিম ওরফে ইবনু শিহাব যুহরী ৫৮-১২৪ হি
২৯. মুজাহিদ বিন জাবার ১১৪ হি
৩০. হাসান বিন ইয়াসার ওরফে হাসান বসরী ২১-১১০ হি
৩১. মুহাম্মদ ইবনু সীরীন ৩৩-১১০ হি /৭২৯ সন
তাবে-তাবেঈ-
৩২. নুমান বিন সাবিত ওরফে ইমাম আবু হানিফা ৮০-১৫০ হি
৩৩. সুফিয়ান বিন সাঈদ ওরফে ইমাম সুফিয়ান ছাওরি ৯৭-১৬১ হি
৩৪. মালিক ইবনু আনাস ৯৩-১৭৯ হি: আল-মুয়াত্তা
৩৫. আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক ১৮১ হি: আয-যুহদ
৩৬. নাফে বিন ওমর আল জামহী ১৭৯ হি
৩৭. আব্দুর রহমান বিন আমর ওরফে ইমাম আওযাঈ ৮৮-১৫৭ হি
মুহাদ্দিস ও ফকীহ ইমামগণ-
৩৮. শাফেয়ী, মুহাম্মদ বিন ইদরীস ১৫০-২০৪ হি: আল-উম্ম, আর-রিসালা, আল মুসনাদ
৩৯. আব্দুর রাজ্জাক সানআনী ২১১ হি: আল মুসান্নাফ
৪০. ইবনু আবী শাইবা, আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ ২৩৫ হি: আল মুসান্নাফ
৪১. ইসহাক ইবনে ইব্রাহিম ওরফে ইমাম ইসহাক্ব বিন রাহওয়াই ১৬৬-২৩৮ হি: আস-সুনান
৪২. আহমদ ইবনু হাম্বাল ১৬৪-২৪১ হি: আল-মুসনাদ/ শরাহু ফাতহুর রব্বানী
৪৩. আবদ ইবনু হুমাইদ ২৪৯ হি: আল-মুসনাদ
৪৪. দারিমী, আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দুর রাহমান ১৮১-২৫৫ হি: আস-সুনান
৪৫. বুখারী, মুহাম্মদ ইবনু ইসমাঈল ১৯৪-২৫৬ হি: আস-সহীহ, শারহু ফাতহুল বারী
৪৬. মুসলিম ইবনু হাজ্জাজ ২০৪-২৬১ হি: আস-সহীহ, শারহু আলমিনহাজ্জ
৪৭. আবু দাউদ, সুলাইমান ইবনু আশ’আস ২০২-২৭৫ হি: আস-সুনান
৪৮. ইবনু মাজাহ, মুহাম্মদ ইবনু ইয়াজিদ ২০৯-২৭৩ হি: আস-সুনান
৪৯. তিরমিযী, মুহাম্মদ ইবনু ঈসা ২৭৯ হি: জামি তিরমিযী/আস-সুনান, কিতাবুশ শামাইল
৫০. ইবনু আবীদ দুনিয়া ২৮১ হি: কিতাবুত সামত ও আদাবুল লিসান, মাওসূআতু ইবনু আবীদ দুনিয়া
৫১. বায্যার, আবুবকর আহমদ ইবনু আমর ২৯২ হি: আল-মুসনাদ
৫২. নাসাঈ, আহমদ ইবনু শু’আইব ৩০৩ হি: আস-সুনান, আস-সুনানুল কুবরা
৫৩. আবু ইয়ালা আল-মাউসিলী ৩০৭ হি: আল-মুসনাদ
৫৪. ইবনু খুযাইমা, আবুবকর মুহাম্মদ ইবনু ইসহাক ৩১১ হি: আস-সহীহ
৫৫. ইবনু হিব্বান, মুহাম্মদ ইবনু হিব্বান ৩৫৪ হি: আস-সহীহ
৫৬. তাবারানী, সুলাইমান ইবনু আহমদ ৩৬০ হি: আল মুজামুল কাবীর, আল মুজামুল আউসাত, আল মুজামুস সগীর
৫৭. আলী ইবনু উমার আদ্-দারাকুতনী ৩৮৫ হি: আস-সুনান
৫৮. হাকিম নাইসাপুরী, মুহাম্মদ ইবনু আব্দুল্লাহ ৩২১-৪০৫ হি: আল মুসতাদরাক
৫৯. ইবনু হাযম, আলী ইবনু আহমদ ৪৫৬ হি: আল মুহাল্লা
৬০. বাইহাকী, আহমদ ইবনুল হুসাইন ৪৫৮ হি: আস-সুনানুল কুবরা, শুআবূল ঈমান
৬১. ইবনুল জাউযী, আবুল ফারাজ আব্দুর রাহমান ইবনু আলী ৫৯৭ হি: আল-মাউযুআত,
আয-যুয়াফা ওয়াল মাতরূকুন
৬২. কুরতুবি, আবু আব্দুল¬াহ মুহাম্মদ বিন আহমদ ৬৭১ হি: আল-জামেলি আহকামুল কুরআন
৬৩. নব্বী, ইয়াহইয়া ইবনু শারাফ ৬৩১-৬৭৬হি: আল মিনহাজ্জ ফি শারহু সহীহ মুসলিম, রিয়াদুস সালেহীন, জামিউস সুন্নাহ,
আল মাজমূ শারহুল মাহযাব আন্ নভবী ২০ খন্ড
৬৪. ইমাম ইবনু তাইমিয়া, আহমদ ইবনু আব্দুল হালীম ৬৬১-৭২৮ হি: মাজমূ’উ ফাতাওয়া ,
মিনহাজুস্সুন্নাহ
৬৫. ইমাম যাহাবী, মুহাম্মদ ইবনু আহমাদ ৬৭৩-৭৪৮ হি: মীযানুল ইতিদাল, সিয়ারু আলামিন নুবালা, তাযকিরাতুল হুফফায
৬৬. ইমাম ইবনূল কাইয়্যেম, মুহাম্মদ বিন আবু বকর ৬৯১-৭৫১হি: যাদুল মা‘আদ
৬৭. ইমাম ইবনু কাসীর ইসমাঈল ইবনু উমার ৭০১-৭৭৪ হি: তাফসীর আল-কুরআন আল-আযীম
৬৮. হাফিজ ইবনু হাজার আসকালানী,
আহমদ ইবনু আলী ৭৭৩-৮৫২ হি: লিসানুল মিযান, ফাতহুল বারী ফী শারহিল বুখারী,
তাকরীবুত তাহযীব, তাহযীবুত তাহযীব,
তালখীসুল হাবীর, বুলুগুল মারাম-শারহু সুবুলুস সালাম
৬৯. শাওকানী, মুহাম্মাদ ইবনু আলী ১১৭২-১২৫৫ হি: আল ফাওয়ায়েদ আল মাজমুয়া ফিল আহাদিসিল মাওযুয়াহ, নাইলুল আওতার,
তাফসীরে ফাতহুল কাদীর
৭০. আলবানি, মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দিন ১৯১৪-১৯৯৯ সন: সিলসিলাতুল আহাদীসিস যাঈফাহ, সিলসিলাতুল আহাদীসিস সাহীহাহ, ইরওয়াউল গালীল, তামামুল মিন্নাহ
৭১. মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন ১৩৪৭-১৪২১ হি: মাজমূআ ফাতাওয়া ওয়া রাসায়েল ২৬ খন্ড, শারহু মুমতা‘আ আলা যাদুল মুসতাক্বনি ১৫ খন্ড, আল কাওলুল মুফিদ আলা কিতাবিত তাওহীদ, শারহু আক্বীদাতুল ওয়াসিতিয়া
সুন্নাতের অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলী:
হাদীস গ্রন্থ:
১. বুখারী, মুহাম্মদ ইবনু ইসমাঈল: আস-সহীহ
২. ফাতহুল বারী ফী শারহিল বুখারী
৩. মুসলিম ইবনু হাজ্জাজ: আস-সহীহ
৪. আল মিনহাজ্জ ফি শারহু সহীহ মুসলিম
৫. আবু দাউদ: আস-সুনান
৬. আবু দাউদ: শারহু আওনুল মাবুদ
৭. ইবনু মাজাহ: আস-সুনান
৮. তিরমিযী: জামি তিরমিযী-আস-সুনান
৯. তিরমিযী: শারহু তুওফাতুল আহওয়াযী
১০. নাসাঈ: আস-সুনান,
১১. ইবনু খুযাইমা: আস-সহীহ
১২. ইবনু হিব্বান: আস-সহীহ
১৩. হাকিম নাইসাপুরী: আল মুসতাদরাক
১৪. বাইহাকী: আস-সুনানুল কুবরা
১৫. রিয়াদুস সালেহীন
১৬. তালখীসুল হাবীর
১৭. বুলুগুল মারাম
১৮. সুবুলুস সালাম
১৯. মাযমাউয যাওয়ায়েদ-হাইসামী ৭৩৫-৮০৭ হি
২০. ইরওয়াউল গালীল -আলবানি
২১. সিলসিলাতুল আহাদীসিস যাঈফাহ- আলবানি
২২. সিলসিলাতুল আহাদীসিস সাহীহাহ- আলবানি
ফিকহী গ্রন্থ:
২৩. আল মুহাল্লা -ইবনু হাযম ৪৫৬ হি
২৪. আল-মুগনী -ইবনে কুদামা
২৫. আল মাজমু -নব্বী, ইয়াহইয়া ইবনু শারাফ -২০খন্ড
২৬. মাজমূ’উ ফাতাওয়া -ইমাম ইবনু তাইমিয়া -৩৭ খন্ড
২৭. যাদুল মা‘আদ- ইমাম ইবনূল কাইয়্যেম -৫খন্ড
২৮. নাইলুল আওতার -শাওকানী
২৯. মাজমূআ ফাতাওয়া বিন বায-শাইখ আবদুল আযীয বিন বায
৩০. মাজমূআ ফাতাওয়া ওয়া রাসায়েল ২৬ খন্ড - মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন
৩১. আশ-শারহু মুমতা‘আ আলা যাদুল মুসতাক্বনি ১৫ খন্ড- মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন
৩২. ফিকহুস সুন্নাহ -সাইদ সাবিক (তাহক্বীক তামামুল মিন্নাহ-আলবানী)
৩৩. সহীহ ফিকহুস সুন্নাহ- আবু মালিক কামাল বিন সাইদ সালিম-৪ খন্ড
৩৪. আল ফিকহ আলাল মাজাহিবিল আর-বাআ
৩৫. বিদাআতুল মুজতাহিদ-ইবনে রুশদ
৩৬. ফাতাওয়া ইসলামিয়া
৩৭. ফাতাওয়া লাজনা আদ দায়েমা
৩৮. আল মাওসুআতু ফীকহীয়া কুয়েতীয়া-৪৫ খন্ড
আক্বীদা:
৩৯. শারহু আক্বীদাতুল ওয়াসীতিয়া - ইবনে ওসাইমিন
৪০. আল কাওলুল মুফিদ আলা শারহু কিতাবিত তাওহীদ- ইবনে ওসাইমিন
তাফসীরুল কুরআন:
৪১. আল-জামে লি আহকামুল কুরআন-কুরতুবি ৬৭১ হি
৪২. তাফসীর আল-কুরআন আল-আযীম-ইমাম ইবনু কাসীর ইসমাঈল ইবনু উমার ৭০১-৭৭৪ হি
৪৩. তাফসীরে ফাতহুল কাদীর -শাওকানী ১১৭২-১২৫৫ হি
হাদীসের রাবীদের জীবনী-রিজাল শাস্ত্র: সহীহ ,হাসান, যঈফ, জাল নির্ণয়
৪৪. মীযানুল ইতিদাল-ইমাম যাহাবী,
মুহাম্মদ ইবনু আহমাদ ৬৭৩-৭৪৮ হি:
৪৫. লিসানুল মিযান-হাফিজ ইবনু হাজার আসকালানী ৭৭৩-৮৫২ হি
৪৬. তাকরীবুত তাহযীব-হাফিজ ইবনু হাজার আসকালানী
৪৭. তাহযীবুত তাহযীব-হাফিজ ইবনু হাজার আসকালানী
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনী:
৪৮. আর রাহীকুল মাখতূম -সফিউর রহমান মুবারকপুরী
আরবী অভিধান:
৪৯. আলকামুসুল মুহীত্ব-আল ফিরোযাবাদী ৭২৯-৮১৭ হি
৫০. লিসানুল আরব -ইবনু মানযুর ৬৩০-৭১১ হি
[1] সূরা হুজরাত, আয়াত: ১২
[2] সূরা হুজরাত, আয়াত: ৬
[3] মুসলিম, হাদিস: ৭
[4] সূরা আনআম, আয়াত: ১৫৩
[5] তাফসীরে কুরতবী, ১৩৭/৭
[6] আল মুফরাদাত ফি গরীবিল কুরআন, পৃ: ১৫৬
[7] সূরা নূর আয়াত: ৬৩
[8] সূরা মায়েদাহ, আয়াত: ৩
[9] আল মাওসুয়াতুল ফিকহিয়্যাহ: ২৩/৮
[10] বুখারি, হাদিস: ২৫২
[11] সূরা হাশর, আয়াত: ৩
[12] সূরা নিসা, আয়াত: ৮০
[13] মুসলিম: ৩৪
[14] বুখারি: ১৬
[15] সূরা নজম, আয়াত: ৩, ৪
[16] সূরা নাহাল, আয়াত: ৪৪
[17] সূরা নাহাল, আয়াত: ৬৪
[18] সূরা হাসর, আয়াত: ৭
[19] সূরা ইব্রাহীম, আয়াত: ৪
[20] মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হাদিস: ৩৩৩৮
[21] সূরা নিসা, আয়াত: ১১৩
[22] আলে ইমরান, আয়াত: ১৬৪
[23] আহযাব: ৩৪
[24] আহমদ হাদিস: ১৭১৭৪ আবু দাউদ হাদিস:
৪৬০৪
[25] বুখারি, হাদিস: ২৪৭৯, মুসলিম, হাদিস:
১৭১৮
[26] বুখারি, হাদিস: ৫০৬৩
[27] বুখারি, হাদিস: ৬০৯৮, আহমদ হাদিস:
১৪৪৩১
[28] মুসলিম, হাদিস: ৮৬৭
[29] নাসায়ী, হাদিস: ১৫৭৮
[30] বুখারি, হাদিস: ৭২৮০
[31] নিসা, আয়াত: ১৩
[32] নিসা, আয়াত: ৬৯
[33] আলে ইমরান, আয়াত: ১৩২
[34] সূরা আরাফ, আয়াত: ১৫৭
[35] সূরা নূর, আয়াত: ৫২
[36] সূরা নূর, আয়াত: ৫৪
[37] সূরা আহযাব, আয়াত: ৭১
[38] সূরা নিসা, আয়াত: ১৩
[39] সূরা নিসা, আয়াত: ৬৫
[40] সূরা আনফাল, আয়াত: ১
[41] সূরা নূর, আয়াত: ৫১
[42] সূরা আনফাল, আয়াত: ২০
[43] সূরা আহযাব, আয়াত: ৩৬
[44] নিসা, আয়াত: ৮০
[45] বুখারি, হাদিস: ২৯৫৭
[46] সূরা আহযাব, আয়াত: ২১
[47] সূরা কলম, আয়াত: ৪
[48] সূরা আল ইমরান, আয়াত: ৩১
[49] সূরা নিসা, আয়াত: ৫৯
[50] সূরা ফরকান, আয়াত: ৩৩
[51] সূরা আনফাল, আয়াত: ৪৬
[52] সূরা আনফাল, আয়াত: ২৪
[53] আহমদ, হাদিস: ২৩৮৭৬; আবুদ দাউদ, হাদিস: ৪৬০৫; ইবনু মাযা, হাদিস: ১৩; তিরমিযি, হাদিস: ২৬৬৩
[54] সূরা নূর, আয়াত: ৬৩
[55] বুখারি, হাদিস: ১৬
[56] সূরা হুজরাত, আয়াত: ১
[57] দারমী হাদিসি: ৪৪৯
[58] সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৭১
[59] সূরা মায়েদা, আয়াত: ৩
[60] সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫
[61] ইবনু মাযাহ, হাদিস: ২০৯
[62] সূরা নূর, আয়াত: ৪৭
[63] সূরা নূর, আয়াত: ৪৭
[64] সূরা নিসা, আয়াত: ৬১
[65] আলে ইসরান, আয়াত: ৮৬
[66] আলে ইসরান, আয়াত: ৩২
[67] সূরা নিসা, আয়াত: ১৪
[68] সূরা নিসা, আয়াত: ১১৫
[69] সূরা জিন, আয়াত: ২৩
[70] সূরা গাফের, আয়াত: ৭০-৭২
[71] সূরা মুহাম্মদ, আয়াত: ৩৩
[72] সূরা ফুরকান, আয়াত: ২৮
[73] সূরা ফুরকান, আয়াত: ২৮
[74] সূরা ফুরকান, আয়াত: ২৯
[75] ইবনু মাযা, হাদিস: ১০৬৬ আলবানী রহ. হাদিসটিকে সহীহ লি গাইরিহি বলে আখ্যায়িত করেন।
[76] ইবনু মাযা, হাদিস: ৪ আলবানী রহ. হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন।
[77] বুখারি, হাদিস নং ৭২৯৮
[78] বুখারি, হাদিস: ১৫৯৭
[79] মুসলিম, হাদিস: ১৯৫৪
[80] ইবনু মাযা, হাদিস: ১৬ হাদিসটি সহীহ
[81] মুসলিম, হাদিস: ১০
[82] সূরা হুজরাত, আয়াত: ৬
[83] সহীহ আল বুখারি, হাদিস: ১০৬
[84] বুখারি, হাদিস: ১০৭
[85] বুখারি, হাদিস: ১০৮; মুসলিম, হাদিস: ২
[86] বুখারি, হাদিস: ১০৯
[87] ইবনু মাযাহ, হাদিস: ৪২
[88] তিরমিযি, হাদিস: ২৬৪০; ইবনু মাযাহ, হাদিস: ৩৯৯১
[89] ইবনু মাযাহ, হাদিস: ৩৯৯২
[90] ইবনু মাযাহ, হাদিস: ৩৯৯৩
[91] তিরমিযি, হাদিস: ২৬৪১
_________________________________________________________________________________



লেখক: জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের
সম্পাদনা: ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
সূত্র: ইসলামহাউজ



আরও পড়ুনঃ সুন্নাহের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
আরও পড়ুনঃ ইসলামে সুন্নাহ’র অবস্থান
আরও পড়ুনঃ নবীর সুন্নতকে আঁকড়ে ধরা ও তার প্রভাব
আরও পড়ুনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহর উপর আমলের আবশ্যকতা আর তার অস্বীকারকারীর কাফের হওয়া
আরও পড়ুনঃ হাদীসের মর্যাদা ও হাদীস অমান্য করার পরিণতি
ডাউনলোড করুনঃ বইঃ সুন্নাতে রাসূল (সা:) ও চার ইমামের অবস্থান - ফ্রি ডাউনলোড



পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন