Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

See Our Articles In Different Styles... Grid View List View

শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০২২

দৃষ্টি সংযত রাখার মাহাত্ম্য ও মর্যাদা

Views:

A+ A-

 দৃষ্টি সংজ্ঞাযত মাহাত্ম্য ও মর্যাদা সংজ্ঞাযত মাহাত্ম্য ও মর্যাদা


শুরু করছি প্রশ্নের উত্তরে করুণাময়, আরও দয়ালু


চাক’ সুবাহনাহু ওয়া তা'আলা লেখক,
" ( হে বে নারী আপনি   মু'মিন  বলুন , তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখুন এবং  তাদের   পরীক্ষাস্থলের হিফাত        করবে মন্তব্য তাদের জন্য আরো ভালো। সে সম্পর্কে অবশ্যই  তারা  সম্যক অবহিত ।         
(সূরা আন-নূর; ২৪ : ৩০)
তাই, আন্তরিকতা ও আত্মিক উন্নয়নকে দৃষ্টি সংযত এবং উদাহরণের স্থান হিফায় প্রতিদান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কারণ বিরোধিতা করা থেকে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি সংযোজন করার ফলে পাসওয়ার্ডটি গুরুত্বপূর্ণভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত মূল্যবান।
প্রথম: তথ্যের মধুরতা আস্বাদন করা
যে ব্যক্তি পাওয়া ব্যক্তি’র ভয়ে দৃষ্টিভঙ্গি, তার কাছে তথ্যের সুমিষ্ট মধুর এবং তা থেকে আনন্দ, এলাকাবাসী পাওয়া আনন্দ চেয়ে বেশি মনোহর। কবে, “কেউ যদি নেতা’র সন্তুষ্টির কোনো কিছু পরিত্যাগ করে, তবে আমার দ্বারা আরও উত্তম প্রতিস্থাপন করেন।
প্রযোজ্য ব্যক্তিকে সুন্দর করে প্রলুব্ধকারী এবং অবলোকন দেখতে ভালোবাসে। আর দেখতে হৃদয়ের দিশারী। হৃদয় তার দিশারীকে দেখে কি আছে, তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব দিয়ে বলে, 'যাও! দেখো, প্রশ্ন কী আছে।' দেখতে যখন সুন্দর দৃশ্য কোনের খবর দেয়, হৃদয়ে তখন তা। হৃদয় এবং ফ্রি এই অভ্যন্তরীণ দোলাচল দ্বিবর অনাত্মিক করে থাকে। যেমনটি বলা হয়েছে:
দেখতেকে যেদিন দিশারী খেলা করা হবে
তোমার আফ্রিকা লক্ষ্যবস্তু তোমায় তরান,
এমন কিছু ছিল না নিয়ন্ত্রণ,
আংশিকও নয়, নয়ও;
আমার জন্য উত্তম ছিল ধৈর্যধারণ।
 আপনার দৃষ্টিভঙ্গি যখন কিছু দেখায় এবং নিরীক্ষণ করা হয় তখন থেকে, হৃদয়ও তখন চেষ্টা আর অনুসন্ধানের মতো নিরঙ্কুর কাজ থেকে বিশ্রাম পায়।

যে ব্যক্তি নিজের দৃষ্টিকে অবাধে বিচরণের সুযোগ দেবেন, তিনি প্রতিনিয়ত নিজেকে অবিরাম ক্ষতি এবং নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণার মাঝে আবিষ্কার করবেন। কারণ দৃষ্টিপাত থেকেই ভালোবাসার (মুহাব্বাহ্‌) জন্ম হয়, যার সূচনা হয় চোখ যা দেখেছে তার প্রতি মোহাবিষ্ট ও নির্ভরশীল হয়ে পড়ার মাধ্যমে। এই ভালোবাসা ক্রমেই আকুল আকাঙ্ক্ষায় (সাবাবাহ্‌) পরিণত হয়, যার দ্বারা হৃদয় তার কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি বা বস্তুর প্রতি অসংশোধনীয় মাত্রায় মোহাবিষ্ট এবং নির্ভরশীল হয়ে যায়। এর মাত্রা বেড়ে ‘আসক্তি’র (গারামাহ্‌) রূপ নেয়। এই আসক্তি এমন এক শক্তি যা আসক্ত ব্যক্তির পেছনে তেমনিভাবে লেগে থাকে, যেভাবে কোনো পাওয়াদার ঋণ পরিশোধের জন্য ঋণীর পেছনে লেগে থাকে। এই আসক্তি আরও বাড়তে থাকে এবং ‘প্রেমাসক্তি’র (ইশ্‌ক) রূপ নেয় যা সকল প্রকার সীমা ছাড়িয়ে যায়। সবশেষে এর মাত্রা বেড়ে ‘প্রেমোন্মাদনা’র (শাগাফা) জন্ম হয় যা হৃদয়ের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশকেও বেষ্টন করে ফেলে। এই প্রেমোন্মাদনা ক্রমেই ‘আনুগত্যের ভালোবাসা’য় (তাতাইয়্যুমা) রূপ নেয়। তাতাইয়্যুমা’র অর্থই হলো ইবাদত। যখন বলা হয়, ‘তাইয়্যামা আল্লাহ্‌’, তখন তার অর্থ দাঁড়ায়, ‘সে আল্লাহ্‌র ইবাদত করেছে।’
এভাবেই হৃদয় এমন কিছুর উপাসনা করা শুরু করে, যার উপাসনা করা সমীচীন নয়। আর এসব কিছুর পেছনে একমাত্র কারণ একটি নিষিদ্ধ দৃষ্টিপাত। যে হৃদয় পূর্বে ছিল মনিব, তা এখন শিকলাবদ্ধ; যা ছিল মুক্ত ও স্বাধীন, তা এখন কারারুদ্ধ। এই হৃদয় চোখের দ্বারা নির্যাতিত এবং চোখের আছে অভিযোগ করলে, চোখ এখন বলে : ‘আমি তোমার দিশারী এবং আজ্ঞাবাহক। প্রথমে তুমিই আমাকে পাঠিয়েছিলে।’ এখানে যাকিছু বলা হলো, তার সবই এমন সব হৃদয়ের জন্যই সত্য, যেসব হৃদয় আল্লাহ্‌র প্রতি ভালোবাসা ও একনিষ্ঠতাকে পরিত্যাগ করেছে। কারণ ভালোবাসার জন্য হৃদয়ের এমনকিছু চায়, যার প্রতি হৃদয় নিজেকে নিবেদিত রাখতে পারে। সে কারণেই, হৃদয় যখন শুধুমাত্র আল্লাহ্‌কে ভালোবাসে না এবং শুধু তাঁকেই উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করে না, তখন নিশ্চিতভাবে সে অন্যকিছুর উপাসনায় লিপ্ত থাকে। আল্লাহ্‌ ইউসুফ (আ) সম্পর্কে বলেন :
এভাবেই যাতে আমি তার থেকে অনিষ্ট  অশ্লীলতা দুর করে দেই। নিশ্চয়ই সে আমার নিষ্ঠাবান বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত
(সূরা ইউসূফ; ১২ : ২৪)
আযীযের স্ত্রী একজন বিবাহতা নারী হওয়া সত্ত্বেও তার হৃদয়ে প্রেমাসক্তি প্রবেশ করেছিল। কারণ সে ছিল মুশরিকা। অন্যদিকে, ইউসুফ (আ) যুবক, অবিবাহিত এবং চাকর হওয়া সত্ত্বেও সেই অপকর্ম থেকে তাঁকে রক্ষা করা হয়েছিল। কারণ তিনি ছিলেন আল্লাহ্‌র একনিষ্ঠ গোলাম।

দ্বিতীয়ত : আলোকিত হৃদয়, স্বচ্ছ উপলব্ধিবোধ এবং তীক্ষ্ণ অন্তর্দৃষ্টি

ইবনু সুজা‘আ আল-কিরমানি বলেছেন, “যে ব্যক্তি নিজের বাহ্যিক অবয়বকে সুন্নাহ্‌র আদলে এবং অভ্যন্তরীণ সত্ত্বাকে সর্বদা আল্লাহ্‌র চিন্তা-গবেষণা এবং তাঁর সচেতনতার আলোকে গড়ে তোলে, নিজের আত্মাকে প্রবৃত্তির অনুসরণ করা থেকে এবং নিষিদ্ধ বস্তু থেকে দৃষ্টিকে সংযত রাখে, সর্বদা হালাল রুজি ভক্ষণ করে, সেইব্যক্তির উপলব্ধি এবং অন্তর্দৃষ্টি কখনোই ভুল হবে না।”
আল্লাহ্‌ লূতের (আ) সম্প্রদায়কে কীভাবে শাস্তি দিয়েছিলেন, সে কথা উল্লেখ করে বলেছেন :
“নিশ্চয়ই এতে ‘মুতাওয়াস্‌সিমীন’দের (স্বচ্ছ উপলব্ধিবোধ এবং তীক্ষ্ণ অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন) জন্য রয়েছে নিদর্শনমালা
(সূরা আল হিজ্‌র; ১৫:৭৫)
মুতাওয়াস্‌সিমীন হলেন তারাই যারা স্বচ্ছ উপলব্ধিবোধ এবং তীক্ষ্ণ অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন। তারা হারাম বস্তুর প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না এবং অশ্লীল কর্ম সম্পাদন করা থেকে বিরত থাকেন।
দৃষ্টি সংযত করা সম্পর্কিত আয়াতের পরবর্তী আয়াতেই আল্লাহ্‌ বলেছেন:
আল্লাহ্‌ আসমানসমুহ  যমীনের নূ।...” (সূরা আন-নূর; ২৪:৩৫)
এর কারণ হলো, কর্ম যেমন, কর্মের প্রতিদানও তেমন হয়। অতএব, যে কেউ আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির জন্য নিষিদ্ধ বস্তু থেকে দৃষ্টিকে সংযত রাখবে, আল্লাহ্‌, আযযা ওয়া জাল্লা, সেইব্যক্তির জন্য নিষিদ্ধ বস্তুকে অনুরূপ অথচ তার চেয়ে অধিক উত্তম বস্তু দ্বারা প্রতিস্থাপন করবেন। তাই বান্দা যেহেতু তার চোখের আলোকে নিষিদ্ধ বস্তুর উপর পড়তে দেয়নি, আল্লাহ্‌ সেই বান্দার দৃষ্টি এবং অন্তরের আলোকে অনুগ্রহ দান করেন। ফলে ব্যক্তি সেইসব বিষয় বুঝতে এবং উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন, দৃষ্টি সংযত না করলে যেগুলো বুঝা এবং উপলব্ধি করা তার জন্য সম্ভব হতো না।
ব্যক্তি নিজের মধ্যে এই বিষয়টি আক্ষরিক অর্থেই উপলব্ধি করতে পারেন। কারণ হৃদয় একটা আয়নার মতো এবং পাশবিক প্রবৃত্তিগুলো সেই আয়নার উপর মরিচার মতো। এই আয়না যখন সচ্ছ এবং পরিষ্কার থাকে, তখন তাতে বাস্তবতার (হাকাইক) আক্ষরিক প্রতিফলন ঘটে। কিন্তু যদি তাতে মরিচা পড়ে থাকে, তাহলে তাতে সুষম প্রতিফলন তৈরি হয় না। ফলে হৃদয়ে অনুমান এবং সন্দেহ নির্ভর জ্ঞান ও অভিব্যক্তির উন্মেষ ঘটবে।

তৃতীয়ত : হৃদয় হবে শক্তিশালী, দৃঢ় এবং সাহসী

দৃষ্টির আলোর জন্য আল্লাহ্‌ যেভাবে চোখকে সুস্পষ্ট প্রমাণের সহায়ক শক্তি দিয়েছেন, হৃদয়ের দৃঢ়তার জন্যও তিনি হৃদয়কে সহায়ক শক্তি দান করবেন। এভাবে হৃদয়ে দুধরণের উপাদনের সমন্বয় ঘটবে। ফলে হৃদয় থেকে শয়তান বিতাড়িত হবে। হাদীসে উল্লেখ আছে, “কেউ যদি নিজের পাশবিক প্রবৃত্তির বিরোধিতা করে, ভয়ে শয়তান তার ছায়া থেকেও পালিয়ে বেড়ায়।”
একারণেই যে ব্যক্তি নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, সে নিজের মাঝে গ্লানিময় আত্মাকে খুঁজে পায় — যে আত্মা দুর্বল, শক্তিহীন, ঘৃণার যোগ্য। বস্তুত, যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌কে মান্য করেন, আল্লাহ্‌ তার জন্য উচ্চমর্যাদা নির্ধারণ করেন। আর তাঁকে অমান্যকারীর জন্য আল্লাহ্‌ লাঞ্ছনা নির্ধারণ করেন:
“আর তোমরা দুর্বল হয়ো না এবং দুঃখিত  হয়ো নাআর তোমরা বিজয়ী হবে, যদি মু’মিন হয়ে থাকো
(সূরা আল–ইমরান; ৩:১৩৯)
“কেউ যদি সম্মান চায় (তবে তা যেন আল্লাহ্‌র কাছেই চায়), কেননা সকল সম্মান আল্লাহ্‌রই।”
(সূরা ফাতির; ৩৫:১০)
অন্য, ব্যক্তি যে ব্যক্তি‌‌‌‌‌‌র (আয়্‌্‌যা ওয়া জাল্লা অবাধ্যতা এবং পাপ কর্মের চেয়ে বেশি প্রাধান্য, বাধ্যতামূলক সেই বিরুদ্ধাচরণকারী লাঞ্ছিত করবেন। সালাফদের লেখক, “সম্মানের খোঁজে মানুষ রাজাদের দ্বারে যায়। ব্যক্ত আমাদেরঃ অনুগত্য ছাড়া কোনো সম্মান নেই। কারণ যাদের গ্রহণ করে আনুগত্য, তারা নিজেদেরকে তাদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে। আর যারা গ্রহণ করেন তাদের রব এবং পোষক হিসেবে, কখনো কখনোই আলোচনা অমানিত করেন না। একটি দো'আকুনুতে এ কথা বলা হয়েছে: “যাকে আপনি বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেন, সে অপমানিত হয় না আর যাকে আপনি হিসেবে গ্রহণ করেন, সে সম্মানিত হয় না৷

ভাষা  :  হামিদা মুবাশ্বেরা | শেষা  :  আব্‌দ আল-আহাদ ( : শায়েখ ইবনুল কায়িম,  আল-মুন্‌তাকা মিন ইক্‌‌হাসাতুল শাফ্‌হন ফী মাস্যায়িদ আশ-শয়তান , পৃষ্ঠা ১০২-১০৫।  পরিমার্জন : আলি হাসান।)  



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন