Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

See Our Articles In Different Styles... Grid View List View

মঙ্গলবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৮

পহেলা বৈশাখ: ইতিহাস ও বিধি-বিধান

Views:

A+ A-
পহেলা বৈশাখ: ইতিহাস ও বিধি-বিধান






এপ্রিল মাসে আমরা বাংলাদেশীরা একটি উৎসব করে থাকি, তা হলো ১৪ই এপ্রিল।



অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ পালন করা। আমাদের দেশে প্রচলিত বঙ্গাব্দ বা বাংলা সন মূলত ইসলামী হিজরী সনেরই একটি রূপ। ভারতে ইসলামী শাসনামলে হিজরী পঞ্জিকা অনুসারেই সকল কাজকর্ম পরিচালিত হতো। মূল হিজরী পঞ্জিকা চান্দ্র মাসের উপর নির্ভরশীল। চান্দ্র বৎসর সৌর বৎসরর চেয়ে ১১/১২ দিন কম হয়। কারণ সৌর বৎসর ৩৬৫ দিন, আর চান্দ্র বৎসর ৩৫৪ দিন। একারণে চান্দ্র বৎসরে ঋতুগুলি ঠিক থাকে না। আর চাষাবাদ ও এজাতীয় অনেক কাজ ঋতুনির্ভর। এজন্য ভারতের মোগল সম্রাট আকবারের সময়ে প্রচলিত হিজরী চান্দ্র পঞ্জিকাকে সৌর পঞ্জিকায় রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সম্রাট আকবার তার দরবারের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিদ আমির ফতুল্লাহ শিরাজীকে হিজরী চান্দ্র বর্ষপঞ্জীকে সৌর বর্ষপঞ্জীতে রূপান্তরিত করার দায়িত্ব প্রদান করেন। ৯৯২ হিজরী মোতাবেক ১৫৮৪ খৃস্টাব্দে সম্রাট আকবার এ হিজরী সৌর বর্ষপঞ্জীর প্রচলন করেন। তবে তিনি ঊনত্রিশ বছর পূর্বে তার সিংহাসন আরোহনের বছর থেকে এ পঞ্জিকা প্রচলনের নির্দেশ দেন। এজন্য ৯৬৩ হিজরী সাল থেকে বঙ্গাব্দ গণনা শুরু হয়। ইতোপূর্বে বঙ্গে প্রচলিত শকাব্দ বা শক বর্ষপঞ্চির প্রথম মাস ছিল চৈত্র মাস। কিন্তু ৯৬৩ হিজরী সালের মুহাররাম মাস ছিল বাংলা বৈশাখ মাস, এজন্য বৈশাখ মাসকেই বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস এবং ১লা বৈশাখকে নববর্ষ ধরা হয়। তাহলে বাংলা সন মূলত হিজরী সন। রাসূলুল্লাহ সা.-এর হিজরত থেকেই এ পঞ্জিকার শুরু। ১৪১৫ বঙ্গাব্দ অর্থ রাসূলুল্লাহ সা.-এর হিজরতের পর ১৪১৫ বৎসর।



 ৯৬২ চান্দ্র বৎসর ও পরবর্তী ৪৫৩ বৎসর সৌর বৎসর। সৌর বৎসর চান্দ্র বৎসরের চেয়ে ১১/১২ দিন বেশি এবং প্রতি ৩০ বৎসরে চান্দ্র বৎসর এক বৎসর বেড়ে যায়। এজন্য ১৪৩৩ হিজরী সাল মোতাবেক বাংলা ১৩১৮-১৯ সাল হয়। মোগল সময় থেকেই পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কিছু অনুষ্ঠান করা হতো। প্রজারা চৈত্রমাসের শেষ পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করতেন এবং পহেলা বৈশাখে জমিদারগণ প্রজাদের মিষ্টিমুখ করাতেন এবং কিছু আনন্দ উৎসব করা হতো। এছাড়া বাংলার সকল ব্যবসায়ী ও দোকানদার পহেলা বৈশাখে ‘হালখাতা’ করতেন। পহেলা বৈশাখ এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এটি মূলত: রাষ্ট্রিয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক বিভিন্ন নিয়ম-কানুনকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে কাজ-কর্ম পরিচালনার জন্য নির্ধারিত ছিল। এ ধরনের কিছু সংঘটিত হওয়া মূলত ইসলামে নিষিদ্ধ বলার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। কিন্তু বর্তমানে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে এমন কিছু কর্মকান্ড করা হচ্ছে যা কখনোই পূর্ববর্তী সময়ে বাঙালীরা করেন নি; বরং এর অধিকাংশই বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে প্রচণ্ডভাবে সাংঘর্ষিক। পহেলা বৈশাখের নামে বা নববর্ষ উদযাপনের নামে যুবক-যুবতী, কিশোর-কিশোরীদেরকে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আজ থেকে কয়েক বছর আগেও এদেশের মানুষেরা যা জানত না এখন নববর্ষের নামে তা আমাদের সংস্কৃতির অংশ বানানো হচ্ছে। বাংলার প্রাচীন মানুষেরা ছিলেন দ্রাবিড় বা সম্মানিত রাসূল নূহ আলাইহিস সালাম-এর বড় ছেলে সামের বংশধর। খৃস্টপূর্ব ১৫০০ সালের দিকে ইয়াফিসের সন্তানদের একটি গ্রুপ আর্য নামে ভারতে আগমন করে। ক্রমান্বয়ে তারা ভারত দখল করে ও আর্য ধর্ম ও কৃষ্টিই পরবর্তীতে ‘‘হিন্দু’’ ধর্ম নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। ভারতের দ্রাবিড় ও অর্নায ধর্ম ও সভ্যতাকে সর্বদা হাইজ্যাক করেছে আর্যগণ। এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো ‘‘বাঙালী’’ সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে হাইজ্যাক করা। আর্যগণ বাংলাভাষা ও বাঙালীদের ঘৃণা করতেন। বেদে ও পুরাণে বাংলাভাষাকে পক্ষীর ভাষা ও বাঙালীদেরকে দস্যু, দাসের ভাষা ইত্যাদি বলা হয়েছে। মুসলিম সুলতানগণের আগমনের পরে তারা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। বাঙালী সংস্কৃতি বলতে বাংলার প্রাচীন লোকজ সংস্কৃতি ও মুসলিম সংস্কৃতির সংমিশ্রণ বুঝানো হতো। কিন্তু ক্রমান্বয়ে আর্যগণ ‘‘বাঙালীত্ব’’ বলতে হিন্দুত্ব বলে মনে করেন ও দাবি করেন। ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদিগণ Hindutva অর্থাৎ ভারতীয়ত্ব বা ‘‘হিন্দুত্ব’’ হিন্দু ধর্মত্ব বলে দাবি করেন এবং ভারতের সকল ধর্মের মানুষদের হিন্দু ধর্মের কৃষ্টি ও সভ্যতা গ্রহণ বাধ্যতামূলক বলে দাবি করেন। তেমনিভাবে বাংলায় আর্য পণ্ডিতগণ বাঙালীত্ব বলতে হিন্দুত্ব ও বাঙালী জাতীয়তাবাদ বলতে হিন্দু জাতীয়তাবাদ এবং বাঙালী সংস্কৃতি বলতে হিন্দু সংস্কৃতি বলে মনে করেন। এজন্যই তারা মুসলিমদের বাঙালী বলে স্বীকার করেন না। শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত গল্পে আমরা দেখেছি যে বাঙালী বলতে শুধু বাঙালী হিন্দুদের বুঝানো হয়েছে এবং মুসলিমদেরকে তাদের বিপরীতে দেখানো হয়েছে। এ মানসিকতা এখনো একইভাবে বিদ্যমান। পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমদেরকে ‘‘বাঙালী’’ পরিচয় দিলে বা জাতিতে ‘‘বাঙালী’’ লিখলে ঘোর আপত্তি করা হয়। এ মানসিকতার ভিত্তিতেই ‘‘পহেলা বৈশাখে’’ বাঙালী সংস্কৃতির নামে পৌত্তলিক বা অশ্লীল কৃষ্টি ও সংস্কৃতি আমাদের মধ্যে প্রচার করা হচ্ছে। এক সময় বাংলা বর্ষপঞ্জি এদেশের মানুষের জীবনের অংশ ছিল। তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য কৃষি ও কর্ম এ পঞ্জিকা অনুসারেই চলত। এজন্য পহেলা বৈশাখ হালখাতা বা অনুরূপ কিছু অনুষ্ঠান ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু বর্তমানে আমাদের জীবনের কোথাও বঙ্গাব্দের কোনো প্রভাব নেই। কাগজে কলমে যাই লেখা হোক, প্রকৃতপক্ষে আমরা নির্ভর করছি খৃস্টীয় পঞ্জিকার উপর। যে বাংলা বর্ষপঞ্জি আমরা বছরের ৩৬৪ দিন ভুলে থাকি, সে বর্ষপঞ্জির প্রথম দিনে আমরা সবাই ‘‘বাঙালী’’ সাজার চেষ্টা করে এ নিয়ে ব্যাপক হইচই করি। আর এ সুযোগে দেশীয় ও বিদেশী বেনিয়াগণ ও আধিপত্যবাদীগণ তাদের ব্যবসা বা আধিপত্য প্রসারের জন্য এ দিনটিকে কেন্দ্র করে বেহায়াপনা, অশ্লীলতা ও অনৈতিকতার প্রচার করে। পাশ্চাত্য সভ্যতার অনেক ভাল দিক আছে। কর্মস্পৃহা, মানবাধিকার, আইনের শাসন ইত্যাদি অনেক গুণ তাদের মধ্যে বিদ্যমান। পাশাপাশি তাদের কিছু দোষ আছে যা তাদের সভ্যতার ভাল দিকগুলি ধ্বংস করে দিচ্ছে। এ দোষগুলির অন্যতম হলো মাদকতা ও অশ্লীলতা। আমরা বাংলাদেশের মানুষের পাশ্চাত্যের কোনো ভালগুণ আমাদের সমাজে প্রসার করতে পারি নি বা চাই নি। তবে তাদের অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও মাদকতার ধ্বংসাত্মক দিকগুলি আমরা খুব আগ্রহের সাথে গ্রহণ করতে ও প্রসার করতে চাচ্ছি। এজন্য খৃস্টীয় ক্যালেন্ডারের শেষ দিনে ও প্রথম দিনে থার্টিফার্স্ট নাইট ও নিউ-ইয়ারস ডে বা নববর্ষ উপলক্ষ্যে আমাদের বেহায়পনার শেষ থাকে না। পক্ষান্তরে, আমাদের দেশজ সংস্কৃতির অনেক ভাল দিক আছে। সামাজিক শিষ্টাচার, সৌহার্দ্য, জনকল্যাণ, মানবপ্রেম ইত্যাদি সকল মূল্যবোধ আমরা সমাজ থেকে তুলে দিচ্ছি। পক্ষান্তরে দেশীয় সংস্কৃতির নামে অশ্লীলতার প্রসার ঘটানো হচ্ছে। বেপর্দা, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা, মাদকতা ও অপরাধ একসূত্রে বাধা। যুবক-যুবতীদেরকে অবাধ মেলামেশা ও বেহায়াপনার সুযোগ দিবেন, অথচ তারা অশ্লীলতা, ব্যভিচার, এইডস, মাদকতা ও অপরাধের মধ্যে যাবে না, এরূপ চিন্তা করার কোনো সুযোগ নেই। অন্যান্য অপরাধের সাথে অশ্লীতার পার্থক্য হলো কোনো একটি উপলক্ষ্যে একবার এর মধ্যে নিপতিত হলে সাধারণভাবে কিশোর-কিশোরী ও যুবক-যুবতীরা আর এ থেকে বেরোতে পারে না। বরং ক্রমান্বয়ে আরো বেশি পাপ ও অপরাধের মধ্যে নিপতিত হতে থাকে। কাজেই নিজে এবং নিজের সন্তান ও পরিজনকে সকল অশ্লীলতা থেকে রক্ষা করুন।





আল্লাহ বলেছেন:

﴿ ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﻗُﻮٓﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢۡ ﻭَﺃَﻫۡﻠِﻴﻜُﻢۡ ﻧَﺎﺭٗﺍ ﻭَﻗُﻮﺩُﻫَﺎ ﭐﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﭐﻟۡﺤِﺠَﺎﺭَﺓُ ﻋَﻠَﻴۡﻬَﺎ ﻣَﻠَٰٓﺌِﻜَﺔٌ ﻏِﻠَﺎﻅٞ ﺷِﺪَﺍﺩٞ ﻟَّﺎ ﻳَﻌۡﺼُﻮﻥَ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻣَﺂ ﺃَﻣَﺮَﻫُﻢۡ ﻭَﻳَﻔۡﻌَﻠُﻮﻥَ ﻣَﺎ ﻳُﺆۡﻣَﺮُﻭﻥَ ٦ ﴾ ‏[ ﺍﻟﺘﺤﺮﻳﻢ : ٦ ‏] 


 ‘‘তোমরা নিজেরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর। যার ইন্দন হবে মানুষ ও পাথর; যার উপর নিয়োজিত রয়েছেন কঠোর হৃদয় সম্পন্ন ফিরিশতাগণ, তারা আল্লাহ যা নির্দেশ করেন তা বাস্তবায়নে অবাধ্য হোন না, আর তাদের যা নির্দেশ প্রদান করা হয়, তা-ই তামিল করে’’ । [সূরা আত-তাহরীম: ৬]


রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন,


‏« ﻛُﻠُّﻜُﻢْ ﺭَﺍﻉٍ، ﻭَﻛُﻠُّﻜُﻢ ْ ﻣَﺴْﺌُﻮﻝٌ ﻋَﻦْ ﺭَﻋِﻴَّﺘِﻪِ، ﺍﻹِﻣَﺎﻡُ ﺭَﺍﻉٍ ﻭَﻣَﺴْﺌُﻮﻝٌ ﻋَﻦْ ﺭَﻋِﻴَّﺘِﻪِ، ﻭَﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺭَﺍﻉٍ ﻓِﻲ ﺃَﻫْﻠِﻪِ ﻭَﻫُﻮَ ﻣَﺴْﺌُﻮﻝٌ ﻋَﻦْ ﺭَﻋِﻴَّﺘِﻪِ، ﻭَﺍﻟﻤَﺮْﺃَﺓُ ﺭَﺍﻋِﻴَﺔٌ ﻓِﻲ ﺑَﻴْﺖِ ﺯَﻭْﺟِﻬَﺎ ﻭَﻣَﺴْﺌُﻮﻟَﺔٌ ﻋَﻦْ ﺭَﻋِﻴَّﺘِﻬَﺎ، ﻭَﺍﻟﺨَﺎﺩِﻡُ ﺭَﺍﻉٍ ﻓِﻲ ﻣَﺎﻝِ ﺳَﻴِّﺪِﻩِ ﻭَﻣَﺴْﺌُﻮﻝٌ ﻋَﻦْ ﺭَﻋِﻴَّﺘِﻪِ ‏»



 ‘‘তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার দায়িত্বাধীনদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে, রাষ্ট্রনেতা তার প্রজাদের সম্পর্কে দায়িত্বশীল আর তাকে তাদের পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন পুরুষ লোক তার পরিবারের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, তাকে তাদের পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন মহিলা তার স্বামীর ঘরের সার্বিক ব্যাপারে দায়িত্বশীলা, তাকে সেটার পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন পরিচারক তার মালিকের সম্পদের সংরক্ষক, আর তাকে সেটার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।” (বুখারী : ৮৯৩; মুসলিম: ১৮২৯)


 প্রিয় পাঠক ! পহেলা বৈশাখ বা অন্য কোনো উপলক্ষ্যে ছেলেমেয়েদেরকে বেপর্দা ও বেহায়পনার সুযোগ দিবেন না। তাদেরকে বুঝান ও নিয়ন্ত্রণ করুন। আপনি মসজিদে নামায আদায় করছেন আর আপনার ছেলেমেয়ে পহেলা বৈশাখের নামে বেহায়াভাবে মিছিল বা উৎসব করে বেড়াচ্ছে। আপনার ছেলেমেয়ের পাপের জন্য আপনার আমলনামায় গোনাহ জমা হচ্ছে। শুধু তাই নয়। অন্য পাপ আর অশ্লীলতার পার্থক্য হলো, যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-সন্তানদের বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার সুযোগ দেয় তাকে ‘‘দাইউস’’ বলা হয় এবং


রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারংবার বলেছেন যে,


» ﺛﻼﺛﺔ ﻗﺪ ﺣﺮﻡ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻬﻢ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻣﺪﻣﻦ ﺍﻟﺨﻤﺮ ﻭﺍﻟﻌﺎﻕ ﻭﺍﻟﺪﻳﻮﺙ ﺍﻟﺬﻱ ﻳﻘﺮ ﻓﻲ ﺃﻫﻠﻪ ﺍﻟﺨﺒﺚ « 


 “তিন ব্যক্তি আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাত হারাম করেছেন, মাদকাসক্ত, পিতা-মাতার অবাধ্য এবং দাইউস, যে তার পরিবারের মধ্যে ব্যভিচারকে প্রশ্রয় দেয়”। (মুসনাদে আহমাদ: ২/৬৯)


নিজেকে এবং নিজের পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করার পাশাপাশি মুমিনের দায়িত্ব হলো সমাজের মানুষদেরকে সাধ্যমত ন্যায়ের পথে ও অন্যায়ের বর্জনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। কাজেই পহেলা বৈশাখ ও অন্য যে কোনো উপলক্ষ্যে ছেলেমেয়েদের অবাধ মেলামেশা ও বেহায়াপনার ক্ষতি, অন্যায় ও পাপের বিষয়ে সবাইকে সাধ্যমত সচেতন করুন। যদি আপনি তা করেন তবে কেউ আপনার কথা শুনুক অথবা না শুনুক আপনি আল্লাহর কাছে অফুরন্ত সাওয়াব লাভ করবেন। আর যদি আপনি তা না করেন তবে এ পাপের গযব আপনাকেও স্পর্শ করবে। কুরআন ও হাদীসে বিষয়টি বারংবার বলা হয়েছে। ব্যবসায়িক, প্রশাসনিক, রাজনৈতিক বা সামাজিক কোনো স্বার্থে অনেক মুসলিম পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে ছেলেমেয়েদের অবাধ মেলামেশা ও বেহায়াপনার পথ খুলে দেওয়ার জন্য মিছিল, মেলা ইত্যাদির পক্ষে অবস্থান নেন। আপনার দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য এরচেয়ে ভয়ঙ্কর আর কিছুই হতে পারে না।



অশ্লীলতা প্রসারের ভয়ঙ্কর পাপ ছাড়াও ভয়ঙ্কর শাস্তির কথা শুনুন:


﴿ ﺇِﻥَّ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﺤِﺒُّﻮﻥَ ﺃَﻥ ﺗَﺸِﻴﻊَ ﭐﻟۡﻔَٰﺤِﺸَﺔُ ﻓِﻲ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﻟَﻬُﻢۡ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٞ ﻓِﻲ ﭐﻟﺪُّﻧۡﻴَﺎ ﻭَﭐﻟۡﺄٓﺧِﺮَﺓِۚ ﻭَﭐﻟﻠَّﻪُ ﻳَﻌۡﻠَﻢُ ﻭَﺃَﻧﺘُﻢۡ ﻟَﺎ ﺗَﻌۡﻠَﻤُﻮﻥَ ١٩ ﴾ ‏[ ﺍﻟﻨﻮﺭ : ١٩ ‏]



 ‘‘যারা চায় যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রচার ঘটুক তাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।’’ (সূরা ২৪ নূর: ১৯ আয়াত) 


সাবধান হোন! সতর্ক হোন! আপনি কি আল্লাহর সাথে পাল্লা দিবেন? আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমে আপনি কি জয়ী হবেন? কখন কিভাবে আপনার ও আপনার পরিবারের জীবনে ‘‘যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি’’ নেমে আসবে তা আপনি বুঝতেও পারবেন না। আপনার রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়িক বা অন্য কোনো স্বার্থ উদ্ধারের জন্য অন্য পথ দেখুন। অন্য বিকল্প চিন্তা করুন। তবে কখনোই অশ্লীলতা প্রসার ঘটে এরূপ কোনো বিষয়কে আপনার স্বার্থ উদ্ধারের বাহন বানাবেন না। মহান আল্লাহ আমাদেরকে হেফাযত করুন। আমীন!! আ.স.ম শো‘আইব আহমাদ



  সম্পাদনা : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া


  সূত্র : ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ,সৌদিআরব পহেলা বৈশাখ: ইতিহাস ও বিধি-বিধান   

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন