অনুবাদকের কথা
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য যিনি আমাদেরকে হেদায়েতের পথে চলার তাওফীক দিয়েছেন, তাঁর মেহেরবানী ব্যতীত হেদায়াত পাওয়া এবং তার উপর টিকে থাকা একটিও সম্ভব নয়। সালাত ও সালাম রাসূল সা. এর প্রতি যিনি আমাদেরকে জান্নাতের পথের সন্ধান দিয়েছেন। ইসলামের পাঁচটি রোকনের মধ্যে দ্বিতীয় রোকন হচ্ছে নামায। নামায পরিত্যাগকারী ইসলামের গন্ডী থেকে বেরিয়ে যায়, তাই নামায নিয়মিত আদায় করা প্রত্যেক ঈমানদার ব্যক্তির উপর ফরয। পুরষদের ক্ষেত্রে জামা‘আতের সাথে নামায পড়া ওয়াজিব, এ বিষয়টি ভালভাবে বুঝার জন্য এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয় গুলো একত্রিত করে অসংখ্য দলীল প্রমাণের ভিত্তিতে একটি চমৎকার বই রচনা করেছেন সৌদী আরবের বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন অসংখ্য পুস্তকের লেখক ড: সায়ীদ ইবন আলী ইবন ওয়াহাফ আল-ক্বাহতানী, বাংলা ভাষা ভাষী মুসলিম ভাই-বোনদের জন্য বইটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে মনে করে বইটি অনুবাদের কাজে হাত দিয়েছি, অনুবাদের কাজ সম্পন্ন করে আপনাদের হাতে বইটি তুলে দিতে পেরে সবার আগে মহান আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করছি, বইয়ের কলেবর অনেক বড় হয়ে যাবে এই আশংকায় পার্শ্ব টীকা সব অনুবাদ করা হয়নি, কেবলমাত্র গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্ব টীকাগুলোই অনুবাদ করা হয়েছে, বইটি পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বইটি আপনাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নানাভাবে যাদের সহযোগিতা পেয়েছি আল্লাহ তা‘আলা তাদের সবাইকে উত্তম প্রতিদান দান করুন, পরিশেষে মানুষ ভুলের উর্ধে নয় আমি তাদেরই একজন, তাই পুস্তিকাটি পড়ে আপনাদের নজরে যেকোন ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে এবং আমাদেরকে জানালে আমরা তা সাদরে গ্রহণ করে পরবর্তী সংস্করণে সংশোধনের চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। অবশেষে মহান রবের কাছে এই কামনা করছি যে, তিনি যেন লেখক, অনুবাদক, পাঠক সবাইকে তাঁর জান্নাতের জন্য কবুল করে নেন, আমীন, আমাদের প্রিয় নবীর উপর আল্লাহ তা‘আলা অফুরন্ত সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন এবং তাঁর পরিবার বর্গের প্রতি এবং তার সকল সাহাবাদের প্রতি।
১২/৮/১৪২৬ হিঃ
মোহাম্মদ বায়েজীদ
২৬/৯/২০০৫ খৃঃ
রিয়াদ, সৌদী আরব
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
ভূমিকা
নিশ্চয় প্রশংসা সব আল্লাহরই জন্য, আমরা তাঁরই প্রশংসা করি এবং তাঁর কাছেই সাহায্য চাই এবং তাঁর কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা করি, আমাদের নিজেদের পক্ষ হতে সকল অনিষ্ট হতে, আমাদের পাপ কাজ হতে তাঁর কাছে আশ্রয় চাই, যাকে আল্লাহ তা‘আলা পথ দেখান তাকে কেহ গোমরা করতে পারে না আর যাকে তিনি পথ ভ্রষ্ট করেন তাকে কেহ হেদায়াত দিতে পারে না, আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য মাবুদ নাই, তিনি একক তার কোন শরীক নাই, আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ তার বান্দাহ ও রাসূল, আল্লাহ তা‘আলা তার উপর সালাত ও অপরিসিম শান্তি বর্ষন করুন এবং তার পরিবার পরিজনের প্রতি ও তার সাথীদের প্রতি এবং ক্বেয়ামাত পর্যন্ত যারা উত্তমভাবে তাদের অনুসরন করবেন তাদের প্রতি।
অতঃপর:-এটি হল জামা‘আতে নামায আদায় সংক্রান্ত একটি ছোট্ট পুস্তিকা; যাতে আমি বর্ণনা করেছি: জামা‘আতে নামাযের অর্থ, উহার হুকুম, উহার উপকারিতাসমূহ, উহার ফযীলত, উহার দিকে পথচলার ফযীলত, উহার দিকে পথ চলার আদবসমূহ, দুইজন দ্বারা উহা সম্পাদন হওয়া, এক রাকাআত পেলেই জামা‘আত পাওয়া, ইমামের সাথে প্রথম জামা‘আত ছুটে যাওয়া ব্যক্তির জন্য দ্বিতীয় জামা‘আত শরীয়ত সম্মত, যে ব্যক্তি নামায পড়ে ফেলেছে সে যদি জামা‘আত পায় তবে তাদের সাথে পুনরায় নফল হিসাবে আদায় করবে, মাসবুক ব্যক্তি ইমামকে যে অবস্থায় পাবে সে অবস্থায়ই নামাযে প্রবেশ করবে কিন্তু রুকু না পেলে উহা রাকাআত হিসাবে গণ্য হবে না, বাকী নামায ইমাম সালাম ফিরালে তখন আদায় করবে। প্রত্যেক মাসআলা আমি দলীল সহ উল্লেখ করেছি, আমি আমাদের শায়েখ সম্মানিত ইমাম আব্দুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায (রাহ:) এর অনেক আলোচনা এবং বিভিন্ন মাসআলার ক্ষেত্রে তার অগ্রাধিকার প্রদান হতে অনেক উপকার লাভ করেছি, আল্লাহ তা‘আলা শান্তিময় জান্নাতে তাকে সুউচ্চ মর্যাদা দান করুন, আল্লাহ তা‘আলার কাছে কামনা করছি তিনি যেন এইকাজটুকু কবুল করেন, বরকতময় করেন, শুধুমাত্র তার জন্য একনিষ্ঠ করেন এবং আমাকে এর দ্বারা দুনিয়ার জীবনে ও মৃত্যুর পরে কল্যাণ দান করেন এবং যার কাছেই এটা পৌঁছবে তাকেও কল্যাণ দান করেন, নিশ্চয়ই তিনি উত্তম দানশীল, প্রত্যাশার মহান স্থল, তিনিই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনিই উত্তম ব্যবস্থাপক, মহান আল্লাহ তাআ’লা ব্যতীত কারও কোন শক্তি ও ক্ষমতা নাই, আল্লাহ তা‘আলা সালাত ও সালাম এবং বরকত দান করুন তার বান্দাহ ও রাসূল এবং তার সৃষ্টিকুলের মধ্যে সর্বোত্তম সৃষ্টি আমাদের নবী ও ইমাম এবং আমাদের আদর্শ মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহর সা. প্রতি এবং তাঁর পরিবারের উপর ও তাঁর সাহাবাদের উপর এবং যারা কেয়ামাত পর্যন্ত উত্তমভাবে তাদের অনুসরণ করবে তাদের উপর।
লেখক
২৭/২/১৪২১হি: