Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

See Our Articles In Different Styles... Grid View List View

বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৩

সবরের (ধৈর্যের) বিবরণ

Views:

A+ A-

সবরের (ধৈর্যের) বিবরণ



আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱصۡبِرُواْ وَصَابِرُواْ ﴾ [ال عمران: ٢٠٠]  
অর্থাৎ “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা ধৈর্য ধারণ কর এবং ধৈর্য ধারণে প্রতিযোগিতা কর।” (সূরা আলে ইমরান ২০০ আয়াত)
তিনি আরও বলেন,
﴿وَلَنَبۡلُوَنَّكُم بِشَيۡءٖ مِّنَ ٱلۡخَوۡفِ وَٱلۡجُوعِ وَنَقۡصٖ مِّنَ ٱلۡأَمۡوَٰلِ وَٱلۡأَنفُسِ وَٱلثَّمَرَٰتِۗ وَبَشِّرِ ٱلصَّٰبِرِينَ ١٥٥﴾ [البقرة: ١٥٥]  
অর্থাৎ “নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে কিছু ভয় ও ক্ষুধা দ্বারা এবং কিছু ধনপ্রাণ এবং ফলের (ফসলের) নোকসান দ্বারা পরীক্ষা করবআর তুমি ধৈর্যশীলদেরকে সুসংবাদ দাও।” (সূরা বাকারাহ ১৫৫ আয়াত)
তিনি আরও বলেন
﴿ إِنَّمَا يُوَفَّى ٱلصَّٰبِرُونَ أَجۡرَهُم بِغَيۡرِ حِسَابٖ﴾ [الزمر: ١٠]  
অর্থাৎ “ধৈর্যশীলদেরকে তো অপরিমিত পুরস্কার দেওয়া হবে।” (সূরা যুমার ১০ আয়াত)
তিনি অন্যত্র বলেন
﴿ وَلَمَن صَبَرَ وَغَفَرَ إِنَّ ذَٰلِكَ لَمِنۡ عَزۡمِ ٱلۡأُمُورِ ٤٣ ﴾ [الشورا: ٤٣]  
অর্থাৎ “অবশ্যই যে ধৈর্য ধারণ করে এবং ক্ষমা করেনিশ্চয় তা দৃঢ়-সংকল্পের কাজ।” (সূরা শুরা ৪৩ আয়াত)
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱسۡتَعِينُواْ بِٱلصَّبۡرِ وَٱلصَّلَوٰةِۚ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلصَّٰبِرِينَ ١٥٣ ﴾ [البقرة: ١٥٣]  
অর্থাৎ “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে থাকেন।” (সূরা বাকারাহ ১৫৩ আয়াত)
 তিনি আরো বলেন
﴿ وَلَنَبۡلُوَنَّكُمۡ حَتَّىٰ نَعۡلَمَ ٱلۡمُجَٰهِدِينَ مِنكُمۡ وَٱلصَّٰبِرِينَ وَنَبۡلُوَاْ أَخۡبَارَكُمۡ ٣١ ﴾ [محمد: ٣١]  
 অর্থাৎ “আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যতক্ষণ না আমি তোমাদের মধ্যে মুজাহিদ ও ধৈর্যশীলদেরকে জেনে নিই এবং আমি তোমাদের অবস্থা পরীক্ষা করি।” (সূরা মুহাম্মাদ ৩১ আয়াত)

আয়াতসমূহে ধৈর্যের আদেশ এবং তার মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে তার সংখ্যা অনেক ও প্রসিদ্ধ।

1/26 وَعَنْ أَبِي مَالِكٍ الحَارِثِ بنِ عَاصِمٍ الأشعريِّ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رسولُ الله ﷺ: «الطُّهُورُ شَطْرُ الإِيمان، والحَمدُ لله تَمْلأُ الميزَانَ، وَسُبْحَانَ الله والحَمدُ لله تَملآن - أَوْ تَمْلأُ - مَا بَينَ السَّماوَاتِ وَالأَرْضِ، والصَّلاةُ نُورٌ، والصَّدقةُ بُرهَانٌ، والصَّبْرُ ضِياءٌ، والقُرْآنُ حُجةٌ لَكَ أَوْ عَلَيْكَ. كُلُّ النَّاسِ يَغْدُو فَبَائعٌ نَفسَهُ فَمُعْتِقُهَا أَوْ مُوبِقُها». رواه مسلم
১/২৬। আবূ মালিক হারিস ইবনে ‘আসেম আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতআল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘পবিত্রতা অর্ধেক ঈমান। আর আলহামদু লিল্লাহ’ (কিয়ামতে নেকীর) দাঁড়িপাল্লাকে ভরে দেবে এবং সুবহানাল্লাহ’ ও আলহামদু লিল্লাহ’ আসমান ও যমীনের মধ্যস্থিত শূন্যতা পূর্ণ করে দেয়। নামায হচ্ছে জ্যোতি। সাদকাহ হচ্ছে প্রমাণ। ধৈর্য হল আলো। আর কুরআন তোমার স্বপক্ষে অথবা বিপক্ষে দলীল। প্রত্যেক ব্যক্তি সকাল সকাল সবকর্মে বের হয় এবং তার আত্মার ব্যবসা করে। অতঃপর সে তাকে (শাস্তি থেকে) মুক্ত করে অথবা তাকে (আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত করে) বিনাশ করে।’’[1]
2/27 وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ سَعدِ بنِ مَالِكِ بنِ سِنَانٍ الخُدرِي رَضِيَ الله عَنهُمَا : أَنَّ نَاساً مِنَ الأَنْصَارِ سَألُوا رسولَ الله ﷺ فَأعْطَاهُمْ، ثُمَّ سَألوهُ فَأعْطَاهُمْ، حَتَّى نَفِدَ مَا عِندَهُ، فَقَالَ لَهُمْ حِينَ أنْفْقَ كُلَّ شَيءٍ بِيَدِهِ: «مَا يَكُنْ عِنْدي مِنْ خَيْرٍ فَلَنْ أدَّخِرَهُ عَنْكُمْ، وَمَنْ يَسْتَعْفِفْ يُعِفهُ اللهُ، وَمَنْ يَسْتَغْنِ يُغْنِهِ اللهُ، وَمَنْ يَتَصَبَّرْ يُصَبِّرْهُ اللهُ . وَمَا أُعْطِيَ أَحَدٌ عَطَاءً خَيْراً وَأوْسَعَ مِنَ الصَّبْر». مُتَّفَقٌ عليه

২/২৭। আবূ সায়ীদ সাদ ইবনে মালিক ইবনে সিনান খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে কিছু আনসারী আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে কিছু চাইলেন। তিনি তাদেরকে দিলেন। পুনরায় তারা দাবী করল। ফলে তিনি (আবার) তাদেরকে দিলেন। এমনকি যা কিছু তাঁর কাছে ছিল তা সব নিঃশেষ হয়ে গেল। অতঃপর যখন তিনি সমস্ত জিনিস নিজ হাতে দান করে দিলেনতখন তিনি বললেন, ‘‘আমার কাছে যা কিছু (মাল) আসে তা আমি তোমাদেরকে না দিয়ে কখনই জমা করে রাখব না। (কিন্তু তোমরা একটি কথা মনে রাখবেযে ব্যক্তি চাওয়া থেকে পবিত্র থাকার চেষ্টা করবেআল্লাহ তাকে পবিত্র রাখবেন। আর যে ব্যক্তি (চাওয়া থেকে) অমুখাপেক্ষিতা অবলম্বন করবেআল্লাহ তাকে অমুখাপেক্ষী করবেন। যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করার চেষ্টা করবে আল্লাহ তাকে ধৈর্য ধারণের ক্ষমতা প্রদান করবেন। আর কোন ব্যক্তিকে এমন কোন দান দেওয়া হয়নিযা ধৈর্য অপেক্ষা উত্তম ও বিস্তর হতে পারে।[2]
3/28 وَعَنْ أَبِي يَحيَى صُهَيبِ بنِ سِنَانٍ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُولُ الله ﷺ: « عَجَباً لأََمْرِ المُؤمنِ إنَّ أمْرَهُ كُلَّهُ لَهُ خيرٌ ولَيسَ ذلِكَ لأَحَدٍ إلاَّ للمُؤْمِن : إنْ أَصَابَتْهُ سَرَّاءُ شَكَرَ فَكانَ خَيراً لَهُ، وإنْ أصَابَتْهُ ضرَاءُ صَبَرَ فَكانَ خَيْراً لَهُ». رواه مسلم
৩/২৮। আবূ ইয়াহয়া সুহাইব ইবনে সিনান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘মুমিনের ব্যাপারটাই আশ্চর্যজনক। তার প্রতিটি কাজে তার জন্য মঙ্গল রয়েছে। এটা মুমিন ব্যতীত অন্য কারো জন্য নয়। সুতরাং তার সুখ এলে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। ফলে এটা তার জন্য মঙ্গলময় হয়। আর দুঃখ পৌঁছলে সে ধৈর্য ধারণ করে। ফলে এটাও তার জন্য মঙ্গলময় হয়।’’[3]
4/29 وعن أنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ : لَمَّا ثَقُلَ النَّبيُّ ﷺ جَعلَ يَتَغَشَّاهُ الكَرْبُ، فَقَالَتْ فَاطِمَةُ رَضِيَ الله عَنهَا : وَاكَربَ أَبَتَاهُ . فقَالَ: «لَيْسَ عَلٰى أَبيكِ كَرْبٌ بَعْدَ اليَوْمِ»فَلَمَّا مَاتَ، قَالَتْ : يَا أَبَتَاهُ، أَجَابَ رَبّاً دَعَاهُ ! يَا أَبتَاهُ، جَنَّةُ الفِردَوسِ مَأْوَاهُ ! يَا أَبَتَاهُ، إِلَى جبْريلَ نَنْعَاهُ ! فَلَمَّا دُفِنَ قَالَتْ فَاطِمَةُ رَضي الله عنها : أَطَابَتْ أنْفُسُكُمْ أنْ تَحْثُوا عَلَى رَسُول الله ﷺ التُّرَابَ ؟! رواه البخاري
৪/২৯। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতযখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশী অসুস্থ হয়ে পড়লেন এবং তাকে কষ্ট ঘিরে ফেললতখন (তাঁর কন্যা) ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বললেন, ‘হায়! আব্বাজানের কষ্ট!’ তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা শুনে বললেন, ‘‘আজকের দিনের পর তোমার পিতার কোনো কষ্ট হবে না।’’ অতঃপর যখন তিনি মারা গেলেনতখন ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বললেন, ‘হায় আব্বাজান! প্রভু যখন তাঁকে আহ্বান করলেনতখন তিনি তাঁর ডাকে সাড়া দিলেন। হায় আব্বাজান! জান্নাতুল ফিরদাউস তাঁর বাসস্থান। হায় আব্বাজান! আমরা জিবরীলকে আপনার মৃত্যু-সংবাদ দেব।’ অতঃপর যখন তাঁকে সমাধিস্থ করা হলতখন ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা (সাহাবাদেরকে) বললেন, ‘আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর মাটি ফেলতে কি তোমাদেরকে ভাল লাগল?[4] 
5/30 وعَنْ أَبِي زَيدٍ أُسَامَةَ بنِ زيدِ بنِ حارثةَ مَوْلَى رسولِ الله ﷺ وحِبِّه وابنِ حبِّه رَضِيَ اللهُ عنهما، قَالَ: أرْسَلَتْ بنْتُ النَّبيِّ ﷺ إنَّ ابْني قَد احْتُضِرَ فَاشْهَدنَا، فَأَرْسَلَ يُقْرئُ السَّلامَ، ويقُولُ: «إنَّ للهِ مَا أخَذَ وَلَهُ مَا أعطَى وَكُلُّ شَيءٍ عِندَهُ بِأجَلٍ مُسَمًّى فَلتَصْبِرْ وَلْتَحْتَسِبْ»فَأَرسَلَتْ إِلَيْهِ تُقْسِمُ عَلَيهِ لَيَأتِينَّهَا. فَقَامَ وَمَعَهُ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ، وَمُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ، وَأُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ، وَزَيْدُ بْنُ ثَابتٍ، وَرِجَالٌ رضي الله عنهم، فَرُفعَ إِلَى رَسُولِ الله ﷺ الصَّبيُّ، فَأقْعَدَهُ في حِجْرِهِ وَنَفْسُهُ تَقَعْقَعُ، فَفَاضَتْ عَينَاهُ فَقالَ سَعدٌ : يَا رسولَ الله، مَا هَذَا ؟ فَقالَ: «هٰذِهِ رَحمَةٌ جَعَلَها اللهُ تَعَالَى في قُلُوبِ عِبَادِهِ». وفي رواية: «فِي قُلُوبِ مَنْ شَاءَ مِنْ عِبَادِهِ، وَإِنَّما يَرْحَمُ اللهُ مِنْ عِبادِهِ الرُّحَماءَ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৫/৩০। আবূ যায়েদ উসামাহ ইবনে যাইদ ইবনে হারেসাহ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্বাধীনকৃত দাস এবং তাঁর প্রিয়পাত্র তথা প্রিয়পাত্রের পুত্র থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা তাঁর নিকট সংবাদ পাঠালেন যে, ‘আমার ছেলের মর মর অবস্থাতাই আপনি আমাদের এখানে আসুন।’ ‘তিনি সালাম দিয়ে সংবাদ পাঠালেন যে, ‘‘আল্লাহ তাআলা যা নিয়েছেনতা তাঁরই এবং যা দিয়েছেন তাও তাঁরই। আর তাঁর কাছে প্রতিটি জিনিসের এক নির্দিষ্ট সময় আছে।” অতএব সে যেন ধৈর্য ধারণ করে এবং সওয়াবের আশা রাখে।’ রাসূল  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা পুনরায় কসম দিয়ে বলে পাঠালেন যেতিনি যেন অবশ্যই আসেন। ফলে তিনি সাদ ইবনে ‘উবাদাহমু‘আয ইবনে জাবালউবাই ইবনে কা‘বযাইদ ইবনে সাবেত রাদিয়াল্লাহু আনহু এবং আরো কিছু লোকের সঙ্গে সেখানে গেলেন। শিশুটিকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তুলে দেওয়া হল। তিনি তাকে নিজ কোলে বসালেন। সে সময় তার প্রাণ ধুক্ধুক্ করছিল। (তার এই অবস্থা দেখে) তাঁর চক্ষুদ্বয় থেকে অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগল। সা‘দ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! একি?’ তিনি বললেন, ‘‘এ হচ্ছে দয়াযা আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের অন্তরে রেখে দিয়েছেন।’’ অন্য একটি বর্ণনায় আছে, ‘‘যে সব বান্দার অন্তরে তিনি চান তাদের অন্তরে রেখে দিয়েছেন। আর আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে কেবল মাত্র দয়ালুদের প্রতিই দয়া করেন।’’[5]
6/31 وَعَن صُهَيبٍ رضي الله عنه : أنَّ رَسُولَ الله ﷺ، قَالَ: «كَانَ مَلِكٌ فيمَنْ كَانَ قَبلَكمْ وَكَانَ لَهُ سَاحِرٌ فَلَمَّا كَبِرَ قَالَ للمَلِكِ : إنِّي قَدْ كَبِرْتُ فَابْعَثْ إلَيَّ غُلاماً أُعَلِّمْهُ السِّحْرَ ؛ فَبَعثَ إِلَيْهِ غُلاماً يُعَلِّمُهُ، وَكانَ في طرِيقِهِ إِذَا سَلَكَ رَاهِبٌ، فَقَعدَ إِلَيْه وسَمِعَ كَلامَهُ فَأعْجَبَهُ، وَكانَ إِذَا أتَى السَّاحِرَ، مَرَّ بالرَّاهبِ وَقَعَدَ إِلَيْه، فَإذَا أَتَى السَّاحِرَ ضَرَبَهُ، فَشَكَا ذلِكَ إِلَى الرَّاهِب، فَقَالَ : إِذَا خَشيتَ السَّاحِرَ، فَقُلْ : حَبَسَنِي أَهْلِي، وَإذَا خَشِيتَ أهلَكَ، فَقُلْ : حَبَسَنِي السَّاحِرُ فَبَيْنَما هُوَ عَلَى ذلِكَ إِذْ أَتَى عَلَى دَابَّةٍ عَظِيمَةٍ قَدْ حَبَسَتِ النَّاسَ، فَقَالَ : اليَوْمَ أعْلَمُ السَّاحرُ أفْضَلُ أم الرَّاهبُ أفْضَلُ ؟ فَأخَذَ حَجَراً، فَقَالَ :  اَللهم إنْ كَانَ أمْرُ الرَّاهِبِ أَحَبَّ إِلَيْكَ مِنْ أمْرِ السَّاحِرِ فَاقْتُلْ هذِهِ الدّابَّةَ حَتَّى يَمضِيَ النَّاسُ، فَرَمَاهَا فَقَتَلَها ومَضَى النَّاسُ، فَأتَى الرَّاهبَ فَأَخبَرَهُ . فَقَالَ لَهُ الرَّاهبُ : أَيْ بُنَيَّ أَنْتَ اليَومَ أفْضَل منِّي قَدْ بَلَغَ مِنْ أَمْرِكَ مَا أَرَى، وَإنَّكَ سَتُبْتَلَى، فَإن ابْتُلِيتَ فَلاَ تَدُلَّ عَلَيَّ ؛ وَكانَ الغُلامُ يُبْرىءُ الأكْمَهَ وَالأَبْرصَ، ويداوي النَّاسَ مِنْ سَائِرِ الأَدْوَاء . فَسَمِعَ جَليسٌ لِلملِكِ كَانَ قَدْ عَمِيَ، فأتاه بَهَدَايا كَثيرَةٍ، فَقَالَ : مَا ها هُنَا لَكَ أَجْمعُ إنْ أنتَ شَفَيتَنِي، فَقَالَ : إنّي لا أشْفِي أحَداً إِنَّمَا يَشفِي اللهُ تَعَالَى، فَإنْ آمَنْتَ بالله تَعَالَى دَعَوتُ اللهَ فَشفَاكَ، فَآمَنَ بالله تَعَالَى فَشفَاهُ اللهُ تَعَالٰى، فَأَتَى المَلِكَ فَجَلسَ إِلَيْهِ كَما كَانَ يَجلِسُ، فَقَالَ لَهُ المَلِكُ : مَنْ رَدّ عَلَيْكَ بَصَرَكَ ؟ قَالَ : رَبِّي، قَالَ : وَلَكَ رَبٌّ غَيري ؟ قَالَ : رَبِّي وَرَبُّكَ اللهُ، فَأَخَذَهُ فَلَمْ يَزَلْ يُعَذِّبُهُ حَتَّى دَلَّ عَلَى الغُلامِ، فَجيء بالغُلاَمِ، فَقَالَ لَهُ المَلِكُ : أيْ بُنَيَّ، قَدْ بَلَغَ مِنْ سِحْرِكَ مَا تُبْرِئُ الأَكْمَهَ وَالأَبْرَصَ وتَفْعَلُ وتَفْعَلُ ! فَقَالَ : إنِّي لا أَشْفي أحَداً، إِنَّمَا يَشفِي الله تَعَالَى . فَأَخَذَهُ فَلَمْ يَزَلْ يُعَذِّبُهُ حَتَّى دَلَّ عَلَى الرَّاهبِ ؛ فَجِيء بالرَّاهبِ فَقيلَ لَهُ : ارجِعْ عَنْ دِينكَ، فَأَبَى، فَدَعَا بِالمِنْشَارِ فَوُضِعَ المِنْشَارُ في مَفْرق رَأسِهِ، فَشَقَّهُ حَتَّى وَقَعَ شِقَّاهُ، ثُمَّ جِيءَ بِجَليسِ المَلِكِ فقيل لَهُ : ارْجِعْ عَنْ دِينِكَ، فَأَبَى، فَوضِعَ المِنْشَارُ في مَفْرِق رَأسِهِ، فَشَقَّهُ بِهِ حَتَّى وَقَعَ شِقَّاهُ، ثُمَّ جِيءَ بالغُلاَمِ فقيلَ لَهُ: ارْجِعْ عَنْ دِينكَ، فَأَبَى، فَدَفَعَهُ إِلَى نَفَرٍ مِنْ أصْحَابهِ، فَقَالَ : اذْهَبُوا بِهِ إِلَى جَبَلِ كَذَا وَكَذَا فَاصْعَدُوا بِهِ الجَبَل، فَإِذَا بَلَغْتُمْ ذِرْوَتَهُ فَإِنْ رَجَعَ عَنْ دِينِهِ وَإلاَّ فَاطْرَحُوهُ . فَذَهَبُوا بِهِ فَصَعِدُوا بِهِ الجَبَلَ، فَقَالَ :  اَللهم أكْفنيهمْ بِمَا شِئْتَ، فَرَجَفَ بهِمُ الجَبلُ فَسَقَطُوا، وَجاءَ يَمشي إِلَى المَلِكِ، فَقَالَ لَهُ المَلِكُ : مَا فَعَلَ أصْحَابُكَ ؟ فَقَالَ : كَفَانِيهمُ الله تَعَالَى، فَدَفَعَهُ إِلَى نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِهِ فَقَالَ: اذْهَبُوا بِهِ فاحْمِلُوهُ في قُرْقُورٍ وتَوَسَّطُوا بِهِ البَحْرَ، فَإنْ رَجعَ عَنْ دِينِهِ وإِلاَّ فَاقْذِفُوهُ . فَذَهَبُوا بِهِ، فَقَالَ :  اَللهم أكْفِنيهمْ بمَا شِئْتَ، فانْكَفَأَتْ بِهمُ السَّفينةُ فَغَرِقُوا، وَجَاء يَمْشي إِلَى المَلِكِ . فَقَالَ لَهُ المَلِكُ : مَا فعلَ أصْحَابُكَ ؟ فَقَالَ : كَفَانِيهمُ الله تَعَالَى . فَقَالَ لِلمَلِكِ : إنَّكَ لَسْتَ بِقَاتِلِي حَتَّى تَفْعَلَ مَا آمُرُكَ بِهِ . قَالَ : مَا هُوَ ؟ قَالَ : تَجْمَعُ النَّاسَ في صَعيدٍ وَاحدٍ وتَصْلُبُني عَلَى جِذْعٍ، ثُمَّ خُذْ سَهْماً مِنْ كِنَانَتي، ثُمَّ ضَعِ السَّهْمَ في كَبدِ القَوْسِ ثُمَّ قُلْ : بسْم الله ربِّ الغُلاَمِ، ثُمَّ ارْمِني، فَإنَّكَ إِذَا فَعَلْتَ ذلِكَ قَتَلتَني، فَجَمَعَ النَّاسَ في صَعيدٍ واحدٍ، وَصَلَبَهُ عَلَى جِذْعٍ، ثُمَّ أَخَذَ سَهْماً مِنْ كِنَانَتِهِ، ثُمَّ وَضَعَ السَّهْمَ في كَبِدِ القَوْسِ، ثُمَّ قَالَ : بِسمِ اللهِ رَبِّ الغُلامِ، ثُمَّ رَمَاهُ فَوقَعَ في صُدْغِهِ، فَوَضَعَ يَدَهُ في صُدْغِهِ فَمَاتَ، فَقَالَ النَّاسُ : آمَنَّا بِرَبِّ الغُلامِ، فَأُتِيَ المَلِكُ فقيلَ لَهُ : أَرَأَيْتَ مَا كُنْتَ تَحْذَرُ قَدْ والله نَزَلَ بكَ حَذَرُكَ . قَدْ آمَنَ النَّاسُ . فَأَمَرَ بِالأُخْدُودِ بأفْواهِ السِّكَكِ فَخُدَّتْ وأُضْرِمَ فيهَا النِّيرانُ وَقَالَ : مَنْ لَمْ يَرْجعْ عَنْ دِينهِ فَأقْحموهُ فيهَا، أَوْ قيلَ لَهُ: اقتَحِمْ فَفَعَلُوا حَتَّى جَاءت امْرَأةٌ وَمَعَهَا صَبيٌّ لَهَا، فَتَقَاعَسَتْ أنْ تَقَعَ فيهَا، فَقَالَ لَهَا الغُلامُ : يَا أُمَّهْ اصْبِري فَإِنَّكِ عَلَى الحَقِّ!». رواه مسلم
৬/৩১। সুহাইব রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমাদের পূর্ব যুগে একজন বাদশাহ ছিল এবং তাঁর (উপদেষ্টা) এক জাদুকর ছিল। জাদুকর বার্ধক্যে উপনীত হলে বাদশাহকে বলল যে, ‘আমি বৃদ্ধ হয়ে গেলাম তাই আপনি আমার নিকট একটি বালক পাঠিয়ে দিনযাতে আমি তাকে জাদু-বিদ্যা শিক্ষা দিতে পারি।’ ফলে বাদশাহ তার কাছে একটি বালক পাঠাতে আরম্ভ করলযাকে সে জাদু শিক্ষা দিত। তার যাতায়াত পথে এক পাদ্রী বাস করত। যখনই বালকটি জাদুকরের কাছে যেততখনই পাদ্রীর নিকটে কিছুক্ষণের জন্য বসততাঁর কথা তাকে ভাল লাগত। ফলে সে যখনই জাদুকরের নিকট যেততখনই যাওয়ার সময় সে পাদ্রীর কাছে বসত। যখন সে পাদ্রীর কাছে আসত জাদুকর তাকে (তার বিলম্বের কারণে) মারত। ফলে সে পাদ্রীর নিকটে এর অভিযোগ করল। পাদ্রী বলল, ‘যখন তোমার ভয় হবে যে, জাদুকর তোমাকে মারধর করবেতখন তুমি বলবেআমার বাড়ির লোক আমাকে (কোন কাজে) আটকে দিয়েছিল। আর যখন বাড়ির লোকে মারবে বলে আশঙ্কা হবেতখন তুমি বলবে যে, জাদুকর আমাকে (কোন কাজে) আটকে দিয়েছিল।
সুতরাং সে এভাবেই দিনপাত করতে থাকল। একদিন বালকটি তার চলার পথে একটি বিরাট (হিংস্র) জন্তু দেখতে পেল। ঐ (জন্তু)টি লোকের পথ অবরোধ করে রেখেছিল। বালকটি (মনে মনে) বলল, ‘আজ আমি জানতে পারব যে, জাদুকর শ্রেষ্ঠ না পাদ্রী?’ অতঃপর সে একটি পাথর নিয়ে বলল, ‘হে আল্লাহ! যদি পাদ্রীর বিষয়টি তোমার নিকটে জাদুকরের বিষয় থেকে পছন্দনীয় হয়তাহলে তুমি এই পাথর দ্বারা এই জন্তুটিকে মেরে ফেল। যাতে (রাস্তা নিরাপদ হয়) এবং লোকেরা চলাফিরা করতে পারে।’ (এই দোআ করে) সে জন্তুটাকে পাথর ছুঁড়ল এবং তাকে হত্যা করে দিল। এর পর লোকেরা চলাফিরা করতে লাগল। বালকটি পাদ্রীর নিকটে এসে ঘটনাটি বর্ণনা করল। পাদ্রী তাকে বলল, ‘বৎস! তুমি আজ আমার চেয়ে উত্তম। তোমার (ঈমান ও একীনের) ব্যাপার দেখে আমি অনুভব করছি যেশীঘ্রই তোমাকে পরীক্ষায় ফেলা হবে। সুতরাং যখন তুমি পরীক্ষার সম্মুখীন হবেতখন তুমি আমার রহস্য প্রকাশ করে দিও না।
আর বালকটি (আল্লাহর ইচ্ছায়) জন্মান্ধত্ব ও কুষ্ঠরোগ ভাল করত এবং অন্যান্য সমস্ত রোগের চিকিৎসা করত। (এমতাবস্থায়) বাদশাহর জনৈক দরবারী অন্ধ হয়ে গেল। যখন সে বালকটির কথা শুনলতখন প্রচুর উপঢৌকন নিয়ে তার কাছে এল এবং তাকে বলল যে, ‘তুমি যদি আমাকে ভাল করতে পারতাহলে এ সমস্ত উপঢৌকন তোমার।’ সে বলল, ‘আমি তো কাউকে আরোগ্য দিতে পারি নাআল্লাহ তাআলাই আরোগ্য দান করে থাকেন। যদি তুমি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন করতাহলে আমি আল্লাহর কাছে দোআ করবফলে তিনি তোমাকে অন্ধত্বমুক্ত করবেন।’ সুতরাং সে তার প্রতি ঈমান আনল। ফলে আল্লাহ তাআলা তাকে আরোগ্য দান করলেন। তারপর সে পূর্বেকার অভ্যাস অনুযায়ী বাদশাহর কাছে গিয়ে বসল। বাদশাহ তাকে বলল, ‘কে তোমাকে চোখ ফিরিয়ে দিল?’ সে বলল, ‘আমার প্রভু!’ সে বলল, ‘আমি ব্যতীত তোমার অন্য কেউ প্রভু আছে?’ সে বলল, ‘আমার প্রভু ও আপনার প্রভু হচ্ছেন আল্লাহ।’ বাদশাহ তাকে গ্রেপ্তার করল এবং তাকে ততক্ষণ পর্যন্ত শাস্তি দিতে থাকলযতক্ষণ পর্যন্ত না সে ঐ (চিকিৎসক) বালকের কথা বলে দিল। অতএব তাকে (বাদশার দরবারে) নিয়ে আসা হল। বাদশাহ তাকে বলল, ‘বৎস! তোমার কৃতিত্ব ঐ সীমা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে যেতুমি জন্মান্ধ ও কুষ্ঠরোগীকে আরোগ্য দান করছ এবং আরো অনেক কিছু করছ।’ বালকটি বলল, ‘আমি কাউকে আরোগ্য দান করি নাআরোগ্য দানকারী হচ্ছেন একমাত্র মহান আল্লাহ।’ বাদশাহ তাকেও গ্রেপ্তার করে ততক্ষণ পর্যন্ত শাস্তি দিতে থাকলযতক্ষণ পর্যন্ত না সে ঐ পাদ্রীর কথা বলে দিল।
অতঃপর পাদ্রীকেও (তার কাছে) নিয়ে আসা হল। পাদ্রীকে বলা হল যে, ‘তুমি নিজের ধর্ম থেকে ফিরে যাও।’ কিন্তু সে অস্বীকার করল। ফলে তার মাথার সিঁথিতে করাত রাখা হল। করাতটি তাকে (চিরে) দ্বিখন্ডিত করে দিলএমনকি তার দুই ধার (মাটিতে) পড়ে গেল। তারপর বাদশাহর দরবারীকে নিয়ে আসা হল এবং তাকে বলা হল যে, ‘তোমার ধর্ম পরিত্যাগ কর।’ কিন্তু সেও (বাদশার কথা) প্রত্যাখান করল। ফলে তার মাথার সিঁথিতে করাত রাখা হল। তা দিয়ে তাকে (চিরে) দ্বিখন্ডিত করে দিলএমনকি তার দুই ধার (মাটিতে) পড়ে গেল। তারপর বালকটিকে নিয়ে আসা হল। অতঃপর তাকে বলা হল যে, ‘তুমি ধর্ম থেকে ফিরে এস।’ কিন্তু সেও অসম্মতি জানাল। সুতরাং বাদশাহ তাকে তার কিছু বিশেষ লোকের হাতে সঁপে দিয়ে বলল যে, ‘একে অমুক পাহাড়ে নিয়ে যাওতার উপরে তাকে আরোহণ করাও। অতঃপর যখন তোমরা তার চূড়ায় পৌঁছবে (তখন তাকে ধর্ম-ত্যাগের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা কর) যদি সে নিজের ধর্ম থেকে ফিরে যায়তাহলে ভাল। নচেৎ তাকে ওখান থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দাও।’ সুতরাং তারা তাকে নিয়ে গিয়ে পাহাড়ের উপর আরোহণ করল। বালকটি আল্লাহর কাছে দোআ করল, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার জন্য তাদের মুকাবেলায় যে ভাবেই চাও যথেষ্ট হয়ে যাও।’ সুতরাং পাহাড় কেঁপে উঠল এবং তারা সকলেই নীচে পড়ে গেল।
বালকটি হেঁটে বাদশার কাছে উপস্থিত হল। বাদশাহ তাকে জিজ্ঞাসা করল, ‘তোমার সঙ্গীদের কি হল?’ বালকটি বলল, ‘আল্লাহ তাআলা তাদের মোকাবেলায় আমার জন্য যথেষ্ট হয়েছেন।
বাদশাহ আবার তাকে তার কিছু বিশেষ লোকের হাতে সঁপে দিয়ে বলল যে, ‘একে নিয়ে তোমরা নৌকায় চড় এবং সমুদ্রের মধ্যস্থলে গিয়ে তাকে ধর্মের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা কর! যদি সে স্বধর্ম থেকে ফিরে আসেতাহলে ঠিক আছে। নচেৎ তাকে সমুদ্রে নিক্ষেপ কর।’ সুতরাং তারা তাকে নিয়ে গেল। অতঃপর বালকটি (নৌকায় চড়ে) দোআ করল, ‘হে আল্লাহ! তুমি এদের মোকাবেলায় যেভাবে চাও আমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাও।’ সুতরাং নৌকা উল্টে গেল এবং তারা সকলেই পানিতে ডুবে গেল।
তারপর বালকটি হেঁটে বাদশাহর কাছে এল। বাদশাহ বলল, ‘তোমার সঙ্গীদের কী হল?’ বালকটি বলল, ‘আল্লাহ তাআলা তাদের মোকাবেলায় আমার জন্য যথেষ্ট হয়ে গেছেন।’ পুনরায় বালকটি বাদশাহকে বলল যে, ‘আপনি আমাকে সে পর্যন্ত হত্যা করতে পারবেন নাযে পর্যন্ত না আপনি আমার নির্দেশিত পদ্ধতি অবলম্বন করবেন।’ বাদশাহ বলল, ‘তা কী?’  সে বলল, ‘আপনি একটি মাঠে লোকজন একত্রিত করুন এবং গাছের গুড়িতে আমাকে ঝুলিয়ে দিন। অতঃপর আমার তূণ থেকে একটি তীর নিয়ে তা ধনুকের মাঝে রাখুনতারপর বলুন, ‘‘বিসমিল্লাহি রাব্বিল গুলাম!’’ (অর্থাৎ এই বালকের প্রতিপালক আল্লাহর নামে মারছি।) অতঃপর আমাকে তীর মারুন। এভাবে করলে আপনি আমাকে হত্যা করতে সফল হবেন।
সুতরাং (বালকটির নির্দেশানুযায়ী) বাদশাহ একটি মাঠে লোকজন একত্রিত করল এবং গাছের গুঁড়িতে তাকে ঝুলিয়ে দিল। অতঃপর তার তূণ থেকে একটি তীর নিয়ে তা ধনুকের মাঝে রেখে বলল, ‘বিসমিল্লাহি রাব্বিল গুলাম!’ (অর্থাৎ এই বালকের প্রতিপালক আল্লাহর নামে মারছি।) অতঃপর তাকে তীর মারল। তীরটি তার কান ও মাথার মধ্যবর্তী স্থানে (কানমুতোয়) লাগল। বালকটি তার কানমুতোয় হাত রেখে মারা গেল। অতঃপর লোকেরা (বালকটির অলৌকিকতা দেখে) বলল যে, ‘আমরা এ বালকটির প্রভুর উপর ঈমান আনলাম।’ বাদশার কাছে এসে বলা হল যে, ‘আপনি যার ভয় করছিলেন তাই ঘটে গেছেলোকেরা (আল্লাহর প্রতি) ঈমান এনেছে।’ সুতরাং সে পথের দুয়ারে গর্ত খুঁড়ার আদেশ দিল। ফলে তা খুঁড়া হল এবং তাতে আগুন জ্বালানো হল। বাদশাহ আদেশ করল যে, ‘যে দ্বীন থেকে না ফিরবে তাকে এই আগুনে নিক্ষেপ কর’ অথবা তাকে বলা হল যে, ‘তুমি আগুনে প্রবেশ কর।’ তারা তাই করল। শেষ পর্যন্ত একটি স্ত্রীলোক এল। তার সঙ্গে তার একটি শিশু ছিল। সে তাতে পতিত হতে কুণ্ঠিত হলে তার বালকটি বলল, ‘আম্মা! তুমি সবর কর। কেননাতুমি সত্যের উপরে আছ।’’[6]
7/32 وَعَن أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ : مَرَّ النَّبيُّ ﷺ بِامرَأةٍ تَبكِي عِنْدَ قَبْرٍ، فَقَالَ: «اتّقِي الله واصْبِري»فَقَالَتْ : إِليْكَ عَنِّي ؛ فإِنَّكَ لَمْ تُصَبْ بِمُصِيبَتي وَلَمْ تَعرِفْهُ، فَقيلَ لَهَا : إنَّه النَّبيُّ ﷺ فَأَتَتْ بَابَ النَّبيِّ ﷺ، فَلَمْ تَجِدْ عِنْدَهُ بَوَّابينَ، فقالتْ : لَمْ أعْرِفكَ، فَقَالَ: «إنَّمَا الصَّبْرُ عِنْدَ الصَّدْمَةِ الأُولى». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. وفي رواية لمسلم: «تَبكِي عَلَى صَبيٍّ لَهَا».
৭/৩২। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি মহিলার পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন। সে একটি কবরের পাশে বসে কাঁদছিল। তিনি বললেন, ‘‘তুমি আল্লাহকে ভয় কর এবং ধৈর্য ধারণ কর।’’ সে বলল, ‘আপনি আমার নিকট হতে দূরে সরে যান। কারণআমি যে বিপদে পড়েছি আপনি তাতে পড়েননি।’ সে তাঁকে চিনতে পারেনি (তাই সে চরম শোকে তাঁকে অসঙ্গত কথা বলে ফেলল)। অতঃপর তাকে বলা হল যে, ‘তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন।’ সুতরাং (এ কথা শুনে) সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দুয়ারের কাছে এল। সেখানে সে দারোয়ানদেরকে পেল না। অতঃপর সে (সরাসরি প্রবেশ করে) বলল, ‘আমি আপনাকে চিনতে পারিনি।’ তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘আঘাতের শুরুতে সবর করাটাই হল প্রকৃত সবর।’’[7]
মুসলিমের একটি বর্ণনায় আছেসে (মহিলাটি) তার মৃত শিশুর জন্য কাঁদছিল।
8/33 وعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنهأنَّ رسولَ الله ﷺ قَالَ: «يَقُولُ اللهُ تَعَالَى : مَا لعَبدِي المُؤْمِنِ عِنْدِي جَزَاءٌ إِذَا قَبَضْتُ صَفِيَّهُ مِنْ أهْلِ الدُّنْيَا ثُمَّ احْتَسَبَهُ إلاَّ الجَنَّةَ». رواه البخاري
৮/৩৩। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিতআল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার মুমিন বান্দার জন্য আমার নিকট জান্নাত ব্যতীত অন্য কোন পুরস্কার নেইযখন আমি তার দুনিয়ার প্রিয়তম কাউকে কেড়ে নিই এবং সে সওয়াবের নিয়তে সবর করে’’[8]
9/34 وعن عائشةَ رضيَ الله عنها: أَنَّهَا سَألَتْ رَسُولَ الله ﷺ عَنِ الطّاعُونِ، فَأَخْبَرَهَا أنَّهُ كَانَ عَذَاباً يَبْعَثُهُ اللهُ تَعَالَى عَلَى مَنْ يَشَاءُ، فَجَعَلَهُ اللهُ تعالى رَحْمَةً للْمُؤْمِنينَ، فَلَيْسَ مِنْ عَبْدٍ يَقَعُ في الطَّاعُونِ فَيَمكُثُ في بلدِهِ صَابراً مُحْتَسِباً يَعْلَمُ أنَّهُ لاَ يُصِيبُهُ إلاَّ مَا كَتَبَ اللهُ لَهُ إلاَّ كَانَ لَهُ مِثْلُ أجْرِ الشّهيدِ . رواه البخاري.
৯/৩৪। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিততিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্লেগ রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি তাঁকে বললেন যে, ‘‘এটা আযাবআল্লাহ তাআলা যার প্রতি ইচ্ছা করেন এটা প্রেরণ করেন। অতঃপর আল্লাহ তাআলা একে মুমিনদের জন্য রহমত বানিয়ে দিলেন। ফলে (এখন) যে ব্যক্তি প্লেগ রোগে আক্রান্ত হবে এবং সে নিজ দেশে ধৈর্য সহকারে নেকীর নিয়তে অবস্থান করবেসে জানবে যেতাকে তাইই পৌঁছবে যা আল্লাহ তাআলা তার জন্য লিখে দিয়েছেনতাহলে সে ব্যক্তির জন্য শহীদের মত পুরস্কার রয়েছে।[9] 
10/35 وعن أنس رضي الله عنه قَالَ : سمعتُ رسولَ الله ﷺ يقول: «إنَّ الله - عز وجل - قَالَ : إِذَا ابْتَلَيْتُ عبدي بحَبيبتَيه فَصَبرَ عَوَّضتُهُ مِنْهُمَا الجَنَّةَ»يريد عينيه. رواه البخاري
১০/৩৫। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যেআমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিতিনি বলেন, ‘‘আল্লাহ তাআলা বলেনযখন আমি আমার বান্দাকে তার প্রিয়তম দুটি জিনিস দ্বারা (অর্থাৎ চক্ষু থেকে বঞ্চিত করে) পরীক্ষা করি এবং সে সবর করে আমি তাকে এ দুটির বিনিময়ে জান্নাত প্রদান করব।’’[10]
11/36 وعن عطَاء بن أبي رَباحٍ، قَالَ : قَالَ لي ابنُ عَباسٍ رضي اللهُ عنهما : ألاَ أُريكَ امْرَأةً مِنْ أَهْلِ الجَنَّة؟ فَقُلْتُ: بَلَى، قَالَ : هذِهِ المَرْأةُ السَّودَاءُ أتَتِ النَّبيَّ ﷺ، فَقَالَتْ : إنّي أُصْرَعُ، وإِنِّي أتَكَشَّفُ، فادْعُ الله تَعَالَى لي . قَالَ: «إنْ شئْتِ صَبَرتِ وَلَكِ الجَنَّةُ، وَإنْ شئْتِ دَعَوتُ الله تَعَالَى أنْ يُعَافِيكِ». فَقَالَتْ : أَصْبِرُ، فَقَالَتْ : إنِّي أتَكَشَّفُ فَادعُ الله أنْ لا أَتَكَشَّف، فَدَعَا لَهَا . مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
১১/৩৬। আত্বা ইবনে আবী রাবাহ থেকে বর্ণিততিনি বলেনএকদা ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু আমাকে বললেন, ‘আমি কি তোমাকে একটি জান্নাতী মহিলা দেখাব না!’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ!’ তিনি বললেন, ‘এই কৃষ্ণকায় মহিলাটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে এসে বলল যেআমার মৃগী রোগ আছেআর সে কারণে আমার দেহ থেকে কাপড় সরে যায়। সুতরাং আপনি আমার জন্য দোআ করুন।’ তিনি বললেন‘‘তুমি যদি চাও তাহলে সবর করএর বিনিময়ে তোমার জন্য জান্নাত রয়েছে। আর যদি চাও তাহলে আমি তোমার রোগ নিরাময়ের জন্য আল্লাহ তাআলার নিকটে দোআ করব।’’ স্ত্রীলোকটি বলল, ‘আমি সবর করব।’ অতঃপর সে বলল, ‘(রোগ উঠার সময়) আমার দেহ থেকে কাপড় সরে যায়সুতরাং আপনি আল্লাহর কাছে দোআ করুনযেন আমার দেহ থেকে কাপড় সরে না যায়।’ ফলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য দোআ করলেন।[11]
12/37 وَعَنْ أَبِي عَبدِ الرَّحمَانِ عَبدِ اللهِ بنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ : كَأَنِّي أنْظُرُ إِلَى رَسُولِ الله ﷺ يَحْكِي نَبِيّاً مِنَ الأَنْبِياءِ، صَلَواتُ الله وَسَلامُهُ عَلَيْهمْ، ضَرَبه قَوْمُهُ فَأدْمَوهُ، وَهُوَ يَمْسَحُ الدَّمَ عَنْ وَجْهِهِ، يَقُولُ: «اَللهم اغْفِرْ لِقَومي، فَإِنَّهُمْ لا يَعْلَمونَ».مُتَّفَقٌ علَيهِ
১২/৩৭। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন, ‘আমি যেন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নবীদের মধ্যে কোন এক নবীর ঘটনা বর্ণনা করতে দেখছি; (আলাইহিমুস সালাতু অসসালাম) যাঁকে তাঁর স্বজাতি প্রহার করে রক্তাক্ত করে দিয়েছে। আর তিনি নিজ চেহারা থেকে রক্ত পরিষ্কার করছেন আর বলছেন, ‘‘হে আল্লাহ! তুমি আমার জাতিকে ক্ষমা করে দাও। কেননাতারা জ্ঞানহীন।”[12]
13/38 وعَنْ أَبِي سعيدٍ وأبي هريرةَ رضيَ الله عنهما، عن النَّبيِّ ﷺ، قَالَ: «مَا يُصيبُ المُسْلِمَ مِنْ نَصَبٍ، وَلاَ وَصَبٍ، وَلاَ هَمٍّ، وَلاَ حَزَنٍ، وَلاَ أذَىً، وَلاَ غَمٍّ، حَتَّى الشَّوكَةُ يُشَاكُهَا إلاَّ كَفَّرَ اللهُ بِهَا مِنْ خَطَاياهُ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
১৩/৩৮। আবূ সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু ও আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মুসলিমকে যে কোনো ক্লান্তিঅসুখচিন্তাশোক এমন কি (তার পায়ে) কাঁটাও লাগেআল্লাহ তাআলা এর মাধ্যমে তার গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন।’’[13]
14/39 وَعَنِ ابنِ مَسعودٍ رضي الله عنه، قَالَ : دخلتُ عَلَى النَّبيِّ ﷺ وَهُوَ يُوعَكُ، فقلت : يَا رَسُولَ الله، إنَّكَ تُوْعَكُ وَعْكاً شَدِيداً، قَالَ: «أجَلْ، إنِّي أُوعَكُ كَمَا يُوعَكُ رَجُلانِ مِنكُمْ» قلْتُ: ذلِكَ أن لَكَ أجْرينِ ؟ قَالَ: «أَجَلْ، ذلِكَ كَذلِكَ، مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُصيبُهُ أذىً، شَوْكَةٌ فَمَا فَوقَهَا إلاَّ كَفَّرَ اللهُ بهَا سَيِّئَاتِهِ، وَحُطَّتْ عَنْهُ ذُنُوبُهُ كَمَا تَحُطُّ الشَّجَرَةُ وَرَقَهَا». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
১৪/৩৯। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেনআমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে উপস্থিত হলাম। সে সময় তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনার যে প্রচণ্ড জ্বর!’ তিনি বললেন, ‘‘হ্যাঁ! তোমাদের দুজনের সমান আমার জ্বর আসে।’’ আমি বললাম, ‘তার জন্যই কি আপনার পুরস্কারও দ্বিগুণ?’ তিনি বললেন, ‘‘হ্যাঁ! ব্যাপার তা-ই। (অনুরূপ) যে কোন মুসলিমকে কোন কষ্ট পৌঁছেকাঁটা লাগে অথবা তার চেয়েও কঠিন কষ্ট হয়আল্লাহ তাআলা এর কারণে তার পাপসমূহকে মোচন করে দেন এবং তার পাপসমূহকে এভাবে ঝরিয়ে দেওয়া হয়যেভাবে গাছ তার পাতা ঝরিয়ে দেয়।’’[14]
15/40 وعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُولُ الله ﷺ: «مَنْ يُرِدِ اللهُ بِهِ خَيْراً يُصِبْ مِنْهُ». رواه البخاري
১৫/৪০। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতআল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আল্লাহ যার মঙ্গল চানতাকে দুঃখ-কষ্টে ফেলেন।’’[15]
16/41 وعن أنس رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رسولُ الله ﷺ: «لا يَتَمَنَّيَنَّ أَحَدُكُمُ المَوتَ لضُرٍّ أَصَابَهُ، فَإِنْ كَانَ لاَ بُدَّ فاعلاً، فَليَقُلْ :  اَللهم أحْيني مَا كَانَتِ الحَيَاةُ خَيراً لِي، وَتَوفّنِي إِذَا كَانَتِ الوَفَاةُ خَيراً لي». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
১৬/৪১। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতআল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে কেউ কোনো বিপদে পড়ার কারণে যেন মরার আকাঙ্ক্ষা না করে। আর যদি করতেই হয়তাহলে সে যেন বলে, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে জীবিত রাখযে পর্যন্ত জীবিত থাকাটা আমার জন্য মঙ্গলময় হয়। আর আমাকে মরণ দাওযদি মরণ আমার জন্য মঙ্গলময় হয়।’’[16]
17/42 وَعَنْ أَبِي عَبدِ اللهِ خَبَّابِ بنِ الأَرتِّ رضي الله عنه، قَالَ : شَكَوْنَا إِلَى رسولِ الله ﷺ وَهُوَ متَوَسِّدٌ بُرْدَةً لَهُ في ظلِّ الكَعْبَةِ، فقُلْنَا : أَلاَ تَسْتَنْصِرُ لَنَا ألاَ تَدْعُو لَنا ؟ فَقَالَ: «قَدْ كَانَ مَنْ قَبْلَكُمْ يُؤْخَذُ الرَّجُلُ فَيُحْفَرُ لَهُ في الأرضِ فَيُجْعَلُ فِيهَا، ثُمَّ يُؤْتَى بِالمِنْشَارِ فَيُوضَعُ عَلَى رَأسِهِ فَيُجْعَلُ نصفَينِ، وَيُمْشَطُ بأمْشَاطِ الحَديدِ مَا دُونَ لَحْمِه وَعَظْمِهِ، مَا يَصُدُّهُ ذلِكَ عَنْ دِينِهِ، وَاللهِ لَيُتِمَّنَّ الله هَذَا الأَمْر حَتَّى يَسيرَ الرَّاكبُ مِنْ صَنْعَاءَ إِلَى حَضْرَموتَ لاَ يَخَافُ إلاَّ اللهَ والذِّئْبَ عَلَى غَنَمِهِ، ولكنكم تَسْتَعجِلُونَ». رواه البخاري، وفي رواية: «وَهُوَ مُتَوَسِّدٌ بُرْدَةً وَقَدْ لَقِينا مِنَ المُشْرِكِينَ شدَّةً».
১৭/৪২। খাব্বাব ইবনে আরাত্ত্ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনআমরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করলাম (এমতাবস্থায়) যেতিনি কাবা ঘরের ছায়ায় একটি চাদরে ঠেস দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম যে, ‘আপনি কি আমাদের জন্য (আল্লাহর কাছে) সাহায্য চাইবেন নাআপনি কি আমাদের জন্য দোআ করবেন না?’ তিনি বললেন, ‘‘(তোমাদের জানা উচিত যে,) তোমাদের পূর্বেকার (মুমিন) লোকেদের এই অবস্থা ছিল যেএকটি মানুষকে ধরে আনা হততার জন্য গর্ত খুঁড়ে তাকে তার মধ্যে (পুঁতে) রাখা হত। অতঃপর তার মাথার উপর করাত চালিয়ে তাকে দুখণ্ড করে দেওয়া হত এবং দেহের মাংসের নিচে হাড় পর্যন্ত লোহার চিরুনী চালিয়ে শাস্তি দেওয়া হত। কিন্তু এই (কঠোর পরীক্ষা) তাকে তার দ্বীন থেকে ফেরাতে পারত না। আল্লাহর কসম! আল্লাহ নিশ্চয় এই ব্যাপারটিকে (দ্বীন ইসলামকে) এমন সুসম্পন্ন করবেন যেএকজন আরোহী সান‘আ’ থেকে হাযরামাউত একাই সফর করবেকিন্তু সে (রাস্তায়) আল্লাহ এবং নিজ ছাগলের উপর নেকড়ের আক্রমণ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করবে না। কিন্তু তোমরা তাড়াহুড়ো করছ।’’[17]
একটি বর্ণনায় আছে যেনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাদরকে বালিশ বানিয়ে বিশ্রাম করছিলেন এবং আমরা মুশরিকদের দিক থেকে নানা যাতনা পেয়েছিলাম।
18/43 وعن ابن مسعودٍ رضي الله عنه، قَالَ : لَمَّا كَانَ يَومُ حُنَينٍ آثَرَ رَسُولُ الله ﷺ نَاساً في القِسْمَةِ، فَأعْطَى الأقْرَعَ بْنَ حَابسٍ مئَةً مِنَ الإِبِلِ، وَأَعْطَى عُيَيْنَة بْنَ حصن مِثْلَ ذلِكَ، وَأَعطَى نَاساً مِنْ أشْرافِ العَرَبِ وآثَرَهُمْ يَوْمَئِذٍ في القِسْمَةِ . فَقَالَ رَجُلٌ : واللهِ إنَّ هذِهِ قِسْمَةٌ مَا عُدِلَ فِيهَا، وَمَا أُريدَ فيهَا وَجْهُ اللهِ، فَقُلْتُ : وَاللهِ لأُخْبِرَنَّ رسولَ الله ﷺ، فَأَتَيْتُهُ فَأخْبَرتُهُ بمَا قَالَ، فَتَغَيَّرَ وَجْهُهُ حَتَّى كَانَ كالصِّرْفِ . ثُمَّ قَالَ: «فَمَنْ يَعْدِلُ إِذَا لم يَعْدِلِ اللهُ وَرسولُهُ ؟» ثُمَّ قَالَ: «يَرْحَمُ اللهُ مُوسَى قَدْ أُوذِيَ بأكْثَرَ مِنْ هَذَا فَصَبر».فَقُلْتُ : لاَ جَرَمَ لاَ أرْفَعُ إِلَيْه بَعدَهَا حَدِيثاً. مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
১৮/৪৩। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতহুনাইন যুদ্ধের গনিমতের মাল বণ্টনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু লোককে (তাদেরকে আকৃষ্ট করার জন্য) প্রাধান্য দিলেন (অর্থাৎ অন্য লোকের তুলনায় তাদেরকে বেশী মাল দিলেন)। সুতরাং তিনি আক্বরা‘ ইবনে হাবেসকে একশত উঁট দিলেন এবং ‘উয়াইনা ইবনে হিসনকেও তারই মত দিলেন। অনুরূপ আরবের আরো কিছু সম্ভ্রান্ত মানুষকেও সেদিন (মাল) বণ্টনে প্রাধান্য দিলেন। (এ দেখে) একটি লোক বলল, ‘আল্লাহর কসম! এই বণ্টনে ইনসাফ করা হয়নি এবং এতে আল্লাহর সন্তোষ লাভের ইচ্ছা রাখা হয়নি!’ আমি (ইবনে মাসউদ) বললাম, ‘আল্লাহর কসম! নিশ্চয় আমি এই সংবাদ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেব।’ অতএব আমি তাঁর কাছে এসে সেই সংবাদ দিলাম যা সে বলল। ফলে তাঁর চেহারা পরিবর্তিত হয়ে এমনকি লালবর্ণ হয়ে গেল। অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ইনসাফ না করেনতাহলে আর কে ইনসাফ করবে?’’ অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘আল্লাহ মূসাকে রহম করুনতাঁকে এর চেয়ে বেশী কষ্ট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি ধৈর্য ধারণ করেছিলেন।’’ অবশেষে আমি (মনে মনে) বললাম যে, ‘আমি এর পরে কোন কথা তাঁর কাছে পৌঁছাব না।[18]
19/44 وعن أنسٍ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُول الله ﷺ: «إِذَا أَرَادَ الله بعبدِهِ الخَيرَ عَجَّلَ لَهُ العُقُوبَةَ في الدُّنْيا، وَإِذَا أَرَادَ اللهُ بِعَبدِهِ الشَّرَّ أمْسَكَ عَنْهُ بذَنْبِهِ حَتَّى يُوَافِيَ بِهِ يومَ القِيَامَةِ».وَقالَ النَّبيُّ ﷺ: «إنَّ عِظَمَ الجَزَاءِ مَعَ عِظَمِ البَلاَءِ، وَإنَّ اللهَ تَعَالَى إِذَا أَحَبَّ قَوْماً ابْتَلاَهُمْ، فَمَنْ رَضِيَ فَلَهُ الرِّضَا، وَمَنْ سَخِطَ فَلَهُ السُّخْطُ» رواه الترمذي، وَقالَ: «حديث حسن».
১৯/৪৪। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতআল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যখন আল্লাহ তাঁর বান্দার মঙ্গল চানতখন তিনি তাকে তাড়াতাড়ি দুনিয়াতে (পাপের) শাস্তি দিয়ে দেন। আর যখন আল্লাহ তাঁর বান্দার অমঙ্গল চানতখন তিনি তাকে (শাস্তিদানে) বিরত থাকেন। পরিশেষে কিয়ামতের দিন তাকে পুরোপুরি শাস্তি দেবেন।’’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, ‘‘বড় পরীক্ষার বড় প্রতিদান রয়েছে। আল্লাহ তাআলা যখন কোনো জাতিকে ভালবাসেনতখন তার পরীক্ষা নেন। ফলে তাতে যে সন্তুষ্ট (ধৈর্য) প্রকাশ করবেতার জন্য (আল্লাহর) সন্তুষ্টি রয়েছে। আর যে (আল্লাহর পরীক্ষায়) অসন্তুষ্ট হবেতার জন্য রয়েছে আল্লাহর অসন্তুষ্টি।’’[19]
20/45 وعن أنسٍ رضي الله عنه، قَالَ : كَانَ ابنٌ لأبي طَلْحَةَ رضي الله عنه يَشتَكِي، فَخَرَجَ أبُو طَلْحَةَ، فَقُبِضَ الصَّبيُّ، فَلَمَّا رَجَعَ أَبُو طَلْحَةَ، قَالَ : مَا فَعَلَ ابْنِي ؟ قَالَتْ أمُّ سُلَيم وَهِيَ أمُّ الصَّبيِّ : هُوَ أَسْكَنُ مَا كَانَ، فَقَرَّبَتْ إليه العَشَاءَ فَتَعَشَّى، ثُمَّ أَصَابَ منْهَا، فَلَمَّا فَرَغَ، قَالَتْ : وَارُوا الصَّبيَّ فَلَمَّا أَصْبحَ أَبُو طَلْحَةَ أَتَى رسولَ الله ﷺ فَأخْبَرَهُ، فَقَالَ: «أعَرَّسْتُمُ اللَّيلَةَ؟» قَالَ : نَعَمْ، قَالَ: «اَللهم بَارِكْ لَهُمَا»، فَوَلَدَتْ غُلاماً، فَقَالَ لي أَبُو طَلْحَةَ : احْمِلْهُ حَتَّى تَأْتِيَ بِهِ النَّبيَّ ﷺ، وَبَعَثَ مَعَهُ بِتَمَراتٍ، فَقَالَ: «أَمَعَهُ شَيءٌ ؟» قَالَ : نَعَمْ، تَمَراتٌ، فَأخَذَهَا النَّبيُّ ﷺ فَمَضَغَهَا، ثُمَّ أَخَذَهَا مِنْ فِيهِ فَجَعَلَهَا في فِيِّ الصَّبيِّ، ثُمَّ حَنَّكَهُ وَسَمَّاهُ عَبدَ الله . مُتَّفَقٌ عَلَيهِ.
وفي رواية للبُخَارِيِّ : قَالَ ابنُ عُيَيْنَةَ : فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصارِ : فَرَأيْتُ تِسعَةَ أوْلادٍ كُلُّهُمْ قَدْ قَرَؤُوا القُرْآنَ، يَعْنِي : مِنْ أوْلادِ عَبدِ الله المَولُودِ .
وَفي رواية لمسلمٍ : مَاتَ ابنٌ لأبي طَلْحَةَ مِنْ أمِّ سُلَيمٍ، فَقَالَتْ لأَهْلِهَا : لاَ تُحَدِّثُوا أَبَا طَلْحَةَ بابْنِهِ حَتَّى أَكُونَ أَنَا أُحَدِّثُهُ، فَجَاءَ فَقَرَّبَتْ إِلَيْه عَشَاءً فَأَكَلَ وَشَرِبَ، ثُمَّ تَصَنَّعَتْ لَهُ أَحْسَنَ مَا كَانَتْ تَصَنَّعُ قَبْلَ ذلِكَ، فَوَقَعَ بِهَا . فَلَمَّا أَنْ رَأَتْ أَنَّهُ قَدْ شَبِعَ وأَصَابَ مِنْهَا، قَالَتْ : يَا أَبَا طَلْحَةَ، أَرَأَيتَ لو أنَّ قَوماً أعارُوا عَارِيَتَهُمْ أَهْلَ بَيتٍ فَطَلَبُوا عَارِيَتَهُمْ، أَلَهُمْ أن يَمْنَعُوهُمْ ؟ قَالَ : لا، فَقَالَتْ : فَاحْتَسِبْ ابْنَكَ، قَالَ: فَغَضِبَ، ثُمَّ قَالَ : تَرَكْتِني حَتَّى إِذَا تَلطَّخْتُ، ثُمَّ أخْبَرتِني بِابْنِي؟! فانْطَلَقَ حَتَّى أَتَى رسولَ الله ﷺ فَأخْبَرَهُ بِمَا كَانَ فَقَالَ رسولُ الله ﷺ: «بَارَكَ اللهُ في لَيْلَتِكُمَا»، قَالَ : فَحَمَلَتْ . قَالَ : وَكانَ رسولُ الله ﷺ في سَفَرٍ وَهيَ مَعَهُ، وَكَانَ رسولُ الله ﷺ إِذَا أَتَى المَدِينَةَ مِنْ سَفَرٍ لاَ يَطْرُقُهَا طُرُوقاً فَدَنَوا مِنَ المَدِينَة، فَضَرَبَهَا المَخَاضُ، فَاحْتَبَسَ عَلَيْهَا أَبُو طَلْحَةَ، وانْطَلَقَ رسولُ الله ﷺ . قَالَ : يَقُولَ أَبُو طَلْحَةَ : إنَّكَ لَتَعْلَمُ يَا رَبِّ أَنَّهُ يُعْجِبُنِي أنْ أخْرُجَ مَعَ رسولِ الله ﷺ إِذَا خَرَجَ وَأَدْخُلَ مَعَهُ إِذَا دَخَلَ وَقَدِ احْتَبَسْتُ بِمَا تَرَى، تَقُولُ أُمُّ سُلَيْمٍ : يَا أَبَا طَلْحَةَ، مَا أَجِدُ الَّذِي كُنْتُ أجدُ انْطَلِقْ، فَانْطَلَقْنَا وَضَرَبَهَا المَخَاضُ حِينَ قَدِمَا فَوَلدَت غُلامَاً. فَقَالَتْ لِي أمِّي : يَا أنَسُ، لا يُرْضِعْهُ أحَدٌ حَتَّى تَغْدُو بِهِ عَلَى رسولِ الله ﷺ، فَلَمَّا أصْبَحَ احْتَمَلْتُهُ فَانْطَلَقْتُ بِهِ إِلَى رسولِ الله ﷺ ..وَذَكَرَ تَمَامَ الحَدِيثِ
২০/৪৫। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেনআবূ ত্বালহা রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর এক ছেলে অসুস্থ ছিল। আবূ ত্বালহা রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন কোন কাজে বাইরে চলে গেলেন তখন ছেলেটি মারা গেল। যখন তিনি বাড়ি ফিরে এলেন তখন জিজ্ঞাসা করলেন যে, ‘আমার ছেলে কেমন আছে?’ ছেলেটির মা উম্মে সুলাইম রাদিয়াল্লাহু আনহ বললেন, ‘সে পূর্বের চেয়ে আরামে আছে।’ অতঃপর তিনি তাঁর সামনে রাতের খাবার হাজির করলেন। তিনি তা খেলেন। অতঃপর তার সঙ্গে যৌন-মিলন করলেন। আবূ ত্বালহা যখন এসব থেকে অবকাশপ্রাপ্ত হলেনতখন স্ত্রী বললেন যে, ‘(আপনার বাইরে চলে যাওয়ার পর শিশুটি মারা গেছে।) সুতরাং শিশুটিকে এখন দাফন করুন।’ সকাল হলে আবূ ত্বালহা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে হাজির হয়ে সমস্ত ঘটনা খুলে বললেন। তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন যে, ‘‘তোমরা কি আজ রাতে মিলন করেছ?’’ তিনি বললেন, ‘জী হ্যাঁ।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘হে আল্লাহ! তুমি এ দুজনের জন্য বরকত দাও?’’ অতএব (তাঁর দোআর ফলে নির্দিষ্ট সময়ে উম্মে সুলাইম) একটি পুত্র সন্তান প্রসব করলেন। (আনাস বলেন,) আমাকে আবূ ত্বালহা বললেন, ‘তুমি একে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে নিয়ে যাও।’ আর তার সঙ্গে কিছু খেজুরও পাঠালেন। তিনি বললেন, ‘তার সঙ্গে কি কিছু আছে?’ আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘জী হ্যাঁ! কিছু খেজুর আছে।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেগুলো নিলেন এবং তা চিবালেন। অতঃপর তাঁর মুখ থেকে বের করে শিশুটির মুখে রেখে দিলেন। আর তার নাম আব্দুল্লাহ’ রাখলেন। (বুখারী-মুসলিম)
বুখারীর আর এক বর্ণনায় আছেইবনে উয়াইনাহ বলেন যেজনৈক আনসারী বলেছেন, ‘আমি এই আব্দুল্লাহর নয়টি ছেলে দেখেছিতারা সকলেই কুরআনের হাফেয ছিলেন।
মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে যেআবূ ত্বালহার একটি ছেলেযে উম্মে সুলাইমের গর্ভ থেকে হয়েছিলসে মারা গেল। সুতরাং তিনি (উম্মে সুলাইম) তাঁর বাড়ির লোককে বললেন, ‘তোমরা আবূ ত্বালহাকে তাঁর পুত্রের ব্যাপারে কিছু বলো না। আমি স্বয়ং তাঁকে এ কথা বলব।’ সুতরাং তিনি এলেন এবং (স্ত্রী) তাঁর সামনে রাতের খাবার রাখলেন। তিনি পানাহার করলেন। এ দিকে স্ত্রী আগের তুলনায় বেশী সাজসজ্জা করে তাঁর কাছে এলেন এবং তিনি তাঁর সঙ্গে মিলন করলেন। অতঃপর তিনি যখন দেখলেন যেতিনি (স্বামী) খুবই পরিতৃপ্ত হয়ে গেছেন এবং যৌন-সম্ভোগ করে নিয়েছেনতখন বললেন, ‘হে আবূ ত্বালহা! আচ্ছা আপনি বলুন! যদি কোন সম্প্রদায় কোন পরিবারকে কোন জিনিস (সাময়িকভাবে) ধার দেয়অতঃপর তারা তাদের ধার দেওয়া জিনিস ফিরিয়ে নিতে চায়তাহলে কি তাদের জন্য তা না দেওয়ার অধিকার আছে?’ তিনি জবাব দিলেন, ‘না।’ অতঃপর স্ত্রী বললেন, ‘আপনি নিজ পুত্রের ব্যাপারে আল্লাহর কাছে প্রতিদান পাওয়ার আশা রাখুন। (অর্থাৎ আপনার পুত্রও আল্লাহর দেওয়া আমানত ছিলতিনি তাঁর আমানত ফিরিয়ে নিয়েছেন।)’ আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, (এ কথা শুনে) তিনি রাগান্বিত হলেন। অতঃপর তিনি বললেন, ‘তুমি আমাকে কিছু না বলে এমনি ছেড়ে রাখলেঅবশেষে আমি সহবাস করে যখন অপবিত্র হয়ে গেলামতখন তুমি আমার ছেলের মৃত্যুর সংবাদ দিলে!’ এরপর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে হাজির হয়ে যা কিছু ঘটেছে তা বর্ণনা করলেন। তা শুনে তিনি দোআ করলেন, ‘হে আল্লাহ! তাদের দুজনের জন্য এই রাতে বরকত দাও।’ সুতরাং (এই দোআর ফলে) তিনি গর্ভবতী হলেন।
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সফরে ছিলেন। উম্মে সুলাইম ও (তাঁর স্বামী আবূ ত্বালহা) তাঁর সঙ্গে ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অভ্যাস ছিল যেযখন তিনি সফর থেকে মদীনায় আসতেন তখন তিনি রাতে আসতেন না। যখন এই কাফেলা মদীনার নিকটবর্তী হলতখন উম্মে সুলাইমের প্রসব-বেদনা উঠল। সুতরাং আবূ ত্বালহা তাঁর খিদমতের জন্য থেমে গেলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মদীনায়) চলে গেলেন।’ আনাস বলেন, ‘আবূ ত্বালহা বললেন, ‘‘হে প্রভু! তুমি জান যেযখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনা থেকে বাইরে যানতখন আমি তাঁর সঙ্গে যেতে ভালবাসি এবং তিনি মদীনায় প্রবেশ করেনতখন আমি তাঁর সঙ্গে প্রবেশ করতে ভালবাসি এবং তুমি দেখছ যে, (আমার স্ত্রীর) জন্য আমি থেমে গেলাম।’’ উম্মে সুলাইম বললেন, ‘হে আবূ ত্বালহা! আমি পূর্বে যে বেদনা অনুভব করছিলাম এখন তা অনুভব করছি নাতাই চলুন।’ সুতরাং আমরা সেখান থেকে চলতে আরম্ভ করলাম। যখন তাঁরা দুজনে মদীনা পৌঁছলেনতখন আবার প্রসব বেদনা শুরু হল। অবশেষে তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করলেন। আমার মা আমাকে বললেন, ‘যে পর্যন্ত তুমি একে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে না নিয়ে যাবেসে পর্যন্ত কেউ যেন একে দুধ পান না করায়।’ ফলে আমি সকাল হতেই তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমত নিয়ে গেলাম। অতঃপর আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বাকী হাদীস বর্ণনা করলেন।[20]
21/46 وعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه أنّ رَسولَ الله ﷺ، قَالَ: «لَيْسَ الشَّدِيدُ بالصُّرَعَةِ، إنَّمَا الشَدِيدُ الَّذِي يَملكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الغَضَبِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
২১/৪৬। আবূ হুরাইরাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘(প্রকৃত) বলবান সে নয়যে কুস্তিতে (অপরকে পরাজিত করে)। প্রকৃত বলবান (কুস্তিগীর) তো সেই ব্যক্তিযে ক্রোধের সময় নিজেকে কাবুতে রাখতে পারে।’’[21]
22/47 وعن سُلَيْمَانَ بنِ صُرَدٍ رضي الله عنه، قَالَ : كُنْتُ جالِساً مَعَ النَّبيّ ﷺ، وَرَجُلانِ يَسْتَبَّانِ، وَأَحَدُهُمَا قدِ احْمَرَّ وَجْهُهُ، وانْتَفَخَتْ أوْدَاجُهُ، فَقَالَ رَسُول اللهِ ﷺ: «إنِّي لأَعْلَمُ كَلِمَةً لَوْ قَالَهَا لَذَهَبَ عَنْهُ مَا يَجِدُ، لَوْ قَالَ : أعُوذ باللهِ منَ الشَّيطَانِ الرَّجِيمِ، ذَهَبَ منْهُ مَا يَجِدُ».فَقَالُوا لَهُ : إنَّ النَّبيَّ ﷺ، قَالَ: «تَعَوّذْ باللهِ مِنَ الشَّيطَانِ الرَّجِيمِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
২২/৪৭। সুলাইমান ইবনে সুরাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যেএকদা আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে বসে ছিলাম। এমতাবস্থায় দুজন লোক একে অপরকে গালি দিচ্ছিল। তার মধ্যে একজনের চেহারা (ক্রোধের চোটে) লালবর্ণ হয়ে গিয়েছিল এবং তার শিরাগুলো ফুলে উঠেছিল। (এ দেখে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘নিশ্চয় আমি এমন এক বাক্য জানিযদি সে তা পড়েতাহলে তার ক্রোধ দূরীভূত হবে। যদি সে বলে আউযু বিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বানির রাজীম’ (অর্থাৎ আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাইছি)তাহলে তার উত্তেজনা ও ক্রোধ সমাপ্ত হবে।’’ লোকেরা তাকে বলল, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনতুমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাও (অর্থাৎ উপরোক্ত বাক্যটি পড়)।[22]
23/48 وَعَن مُعَاذِ بنِ أَنَسٍ رضي الله عنه : أنَّ النَّبيَّ ﷺ قَالَ: «مَنْ كَظَمَ غَيظاً، وَهُوَ قَادِرٌ عَلَى أنْ يُنْفِذَهُ، دَعَاهُ اللهُ سُبحَانَهُ وَتَعَالى عَلَى رُؤُوسِ الخَلائِقِ يَومَ القِيامَةِ حَتَّى يُخَيِّرَهُ مِنَ الحُورِ العِينِ مَا شَاءَ». رواه أَبو داود والترمذي، وَقالَ : «حديث حسن»
২৩/৪৮। মুআয ইবনে আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি ক্রোধ সংবরণ করবে অথচ সে তা বাস্তবায়িত করার ক্ষমতা রাখে। আল্লাহ তাআলা তাকে কিয়ামতের দিন সমস্ত সৃষ্টির সামনে ডেকে এখতিয়ার দিবেন যেসে যে কোন হুর নিজের জন্য পছন্দ করে নিক।’’[23]
24/49 وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أنَّ رَجُلاً قَالَ لِلنَّبِي ﷺ : أَوصِني . قَالَ: «لا تَغْضَبْ» فَرَدَّدَ مِراراً، قَالَ: « لاَ تَغْضَبْ». رواه البخاري
২৪/৪৯। আবূ হুরাইরাহ থেকে বর্ণিতএকটি লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সমীপে আবেদন জানাল যেআপনি আমাকে অসিয়ত করুন। তিনি বললেন, ‘‘তুমি রাগান্বিত হয়ো না।’’ লোকটি বার বার এই আবেদন জানাল। তিনি (প্রত্যেক বারেই) তাকে এই অসিয়ত করলেন যে, ‘‘তুমি রাগান্বিত হয়ো না।’’[24]
25/50 وعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُول الله ﷺ: «مَا يَزَالُ البَلاَءُ بالمُؤمِنِ وَالمُؤْمِنَةِ في نفسِهِ ووَلَدِهِ وَمَالِهِ حَتَّى يَلْقَى الله تَعَالَى وَمَا عَلَيْهِ خَطِيئَةٌ». رواه الترمذي، وَقالَ: «حديث حسن صحيح»
২৫/৫০। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘মুমিন পুরুষ ও নারীর জানসন্তান-সন্ততি ও তার ধনে (বিপদ-আপদ দ্বারা) পরীক্ষা হতে থাকেপরিশেষে সে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে নিষ্পাপ হয়ে সাক্ষাৎ করবে।’’[25] 
26/51 وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ الله عَنهُمَا، قَالَ : قَدِمَ عُيَيْنَةُ بْنُ حِصْنٍ، فَنَزَلَ عَلَى ابْنِ أخِيهِ الحُرِّ بنِ قَيسٍ، وَكَانَ مِنَ النَّفَرِ الَّذِينَ يُدْنِيهِمْ عُمَرُ رضي الله عنه، وَكَانَ القُرَّاءُ أصْحَابَ مَجْلِس عُمَرَ رضي الله عنه وَمُشاوَرَتِهِ كُهُولاً كانُوا أَوْ شُبَّاناً، فَقَالَ عُيَيْنَةُ لابْنِ أخيهِ : يَا ابْنَ أخِي، لَكَ وَجْهٌ عِنْدَ هَذَا الأمِيرِ فَاسْتَأذِنْ لِي عَلَيهِ، فاسْتَأذَن فَأذِنَ لَهُ عُمَرُ. فَلَمَّا دَخَلَ قَالَ: هِي يَا ابنَ الخَطَّابِ، فَواللهِ مَا تُعْطِينَا الْجَزْلَ وَلا تَحْكُمُ فِينَا بالعَدْلِ. فَغَضِبَ عُمَرُ رضي الله عنه حَتَّى هَمَّ أنْ يُوقِعَ بِهِ. فَقَالَ لَهُ الحُرُّ : يَا أميرَ المُؤْمِنينَ، إنَّ الله تَعَالَى قَالَ لِنَبيِّهِ  ﷺ: ﴿ خُذِ ٱلۡعَفۡوَ وَأۡمُرۡ بِٱلۡعُرۡفِ وَأَعۡرِضۡ عَنِ ٱلۡجَٰهِلِينَ ١٩٩ ﴾ [الاعراف: ١٩٩]  وَإنَّ هَذَا مِنَ الجَاهِلِينَ، واللهِ مَا جَاوَزَهاَ عُمَرُ حِينَ تَلاَهَا، وكَانَ وَقَّافاً عِنْدَ كِتَابِ اللهِ تَعَالَى . رواه البخاري
২৬/৫১। ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন যেউয়াইনাহ ইবনে হিসন এলেন এবং তাঁর ভাতিজা হুর্র ইবনে কাইসের কাছে অবস্থান করলেন। এই (হুর্র) উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর খেলাফত কালে ঐ লোকগুলির মধ্যে একজন ছিলেন যাদেরকে তিনি তাঁর নিকটে রাখতেন। আর কুরআন বিশারদগণ বয়স্ক হন অথবা যুবক দল তাঁরা উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর সভাষদ ও পরামর্শদাতা ছিলেন। উয়াইনাহ তাঁর ভাতিজাকে বললেন, ‘হে আমার ভ্রাতুষ্পুত্র! এই খলীফার কাছে তোমার বিশেষ সম্মান রয়েছে। তাই তুমি আমার জন্যে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অনুমতি চাও।’ ফলে তিনি অনুমতি চাইলেন। সুতরাং উমার তাকে অনুমতি দিলেন। অতঃপর যখন উয়াইনাহ ভিতরে প্রবেশ করলেনতখন উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু)কে বললেন, ‘হে ইবনে খাত্ত্বাব! আল্লাহর কসম! আপনি আমাদেরকে পর্যাপ্ত দান দেন না এবং আমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করেন না!’ (এ কথা শুনে) উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু রাগান্বিত হলেন। এমনকি তাকে মারতে উদ্যত হলেন। তখন হুর্র তাঁকে বললেন, ‘হে আমীরুল মুমেনীন! আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীকে বলেন, ‘‘তুমি ক্ষমাশীলতার পথ অবলম্বন কর। ভাল কাজের আদেশ প্রদান কর এবং মূর্খদিগকে পরিহার করে চল।’’ (সূরা আল আরাফ ১৯৮ আয়াত)আর এ এক মূর্খ।’ আল্লাহর কসম! যখন তিনি (হুর্র) এই আয়াত পাঠ করলেনতখন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু একটুকুও আগে বাড়লেন না। আর তিনি আল্লাহর কিতাবের কাছে (অর্থাৎ তাঁর নির্দেশ শুনে) সত্বর থেমে যেতেন।[26]
27/52 وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه : أن رَسُولَ الله ﷺ، قَالَ: «إنَّهَا سَتَكونُ بَعْدِي أثَرَةٌ وأُمُورٌ تُنْكِرُونَها» قَالُوا : يَا رَسُول الله، فَمَّا تَأْمُرُنا ؟ قَالَ : «تُؤَدُّونَ الْحَقَّ الَّذِي عَلَيْكُمْ، وَتَسأَلُونَ الله الَّذِي لَكُمْ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
২৭/৫২। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আমার পরে (শাসকগোষ্ঠী দ্বারা অবৈধভাবে) প্রাধান্য দেওয়ার কাজ হবে এবং এমন অনেক কাজ হবে যেগুলোকে তোমরা মন্দ জানবে।’’ সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি (সেই অবস্থায়) আমাদেরকে কী আদেশ দিচ্ছেন?’ তিনি বললেন, ‘‘যে অধিকার আদায় করার দায়িত্ব তোমাদের আছেতা তোমরা আদায় করবে এবং তোমাদের যে অধিকার তা তোমরা আল্লাহর কাছে চেয়ে নেবে।’’[27]
28/53 وَعَنْ أَبِي يَحْيَى أُسَيْد بن حُضَير رضي الله عنه : أنَّ رَجُلاً مِنَ الأنْصارِ، قَالَ : يَا رَسُولَ الله، ألاَ تَسْتَعْمِلُني كَمَا اسْتَعْمَلْتَ فُلاناً، فَقَالَ: «إِنَّكُمْ سَتَلْقَونَ بَعْدِي أَثَرَةً فَاصْبِرُوا حَتَّى تَلْقَوني عَلَى الحَوْضِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
২৮/৫৩। আবূ ইয়াহইয়্যা উসাইদ ইবনে হুদাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতএকজন আনসারী বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আমাকে কোনো সরকারী পদ নিয়োগ দেবেনযেমন অমুককে দিয়েছেন?’ তিনি বললেন, ‘‘তোমরা আমার (মৃত্যুর) পর (অবৈধভাবে) অগ্রাধিকার দেওয়ার কাজ দেখবে! সুতরাং ধৈর্য ধারণ করবেযে অবধি তোমরা হাওযের কাছে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ না করবে।’’[28]
29/54 وَعَنْ أَبِي إبرَاهِيمَ عَبدِ اللهِ بنِ أبي أوفَى رَضِيَ الله عَنهُما : أنَّ رَسُولَ الله ﷺ في بعْضِ أيَّامِهِ الَّتِي لَقِيَ فِيهَا العَدُوَّ، انْتَظَرَ حَتَّى إِذَا مالَتِ الشَّمْسُ قَامَ فيهمْ، فَقَالَ: «يَا أيُّهَا النَّاسُ، لا تَتَمَنَّوا لِقَاءَ العَدُوِّ، وَاسْأَلُوا الله العَافِيَةَ، فَإِذَا لقيتُمُوهُمْ فَاصْبرُوا، وَاعْلَمُوا أنّ الجَنَّةَ تَحْتَ ظِلالِ السُّيوفِ».ثُمَّ قَالَ النَّبيُّ ﷺ: «اَللهم مُنْزِلَ الكِتَابِ، وَمُجْرِيَ السَّحَابِ، وَهَازِمَ الأحْزَابِ، اهْزِمْهُمْ وَانصُرْنَا عَلَيْهمْ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
২৯/৫৪। আবূ ইব্রাহীম আব্দুল্লাহ ইবনে আবী আওফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনশত্রুর সাথে মোকাবেলার কোন এক দিনেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপেক্ষা করলেন (অর্থাৎ যুদ্ধ করতে বিলম্ব করলেন)। অবশেষে যখন সূর্য ঢলে গেলতখন তিনি লোকদের মধ্যে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘হে লোকেরা! তোমরা শত্রুর সঙ্গে সাক্ষাৎ (যুদ্ধ) কামনা করো না এবং আল্লাহর কাছে নিরাপত্তা চাও। কিন্তু যখন শত্রুর সামনা-সামনি হয়ে যাবেতখন তোমরা দৃঢ়তার সাথে যুদ্ধ কর! আর জেনে রেখো যেজান্নাত আছে তরবারির ছায়ার নীচে।’’ অতঃপর তিনি দোআ করে বললেন, ‘‘হে কিতাব অবতীর্ণকারীমেঘ সঞ্চালনকারী এবং শত্রুসকলকে পরাজিতকারী! তুমি তাদেরকে পরাজিত কর এবং তাদের মুকাবিলায় আমাদেরকে সাহায্য কর।’’[29]




[1] সহীহুল বুখারী ২২৩মুসলিম ৩৫১৭ইবনু মাজাহ ২৮০আহমাদ ২২৩৯৫২২৪০১দারেমী ৬৫৩
[2] সহীহুল বুখারী ১৪৬৯৬৪৭০মুসলিম ১০৫৩তিরমিযী ২০২৪নাসায়ী ২৫৮৮১৬৪৪আহমাদ ১০৬০৬১০৬২২১০৬৬০মুওয়াত্তা মালিক ১৮৮০দারেমী ১৬৪৬
[3] মুসলিম ২৯৯৯আহমাদ ১৮৪৫৫১৮৪৬০২৩৪০৬২৩৪১২দারেমী ২৭৭৭
[4] সহীহুল বুখারী ৪৪৬২নাসায়ী ১৮৪৪ইবনু মাজাহ ১৬২৯১৬৩০আহমাদ ১২০২৬১২৬১৯১২৭০৪দারেমী ৮৭ 
[5] সহীহুল বুখারী ১২৮৪৫৬৫৫৬৬০২৬৬৫৫৭৩৭৭৭৪৪৮মুসলিম ৯২৩নাসায়ী ১৮৬৮আবূ দাউদ ৩১২৫আহমাদ ২১২৬৯২১২৮২২১২৯২
[6] মুসলিম ৩০০৫তিরমিযী ৩৩৪০আহমাদ ২৩৪১৩ 
[7] সহীহুল বুখারী ১২৫২১২৮৩১৩০২৭১৫৪মুসলিম ৯২৬তিরমিযী ৯৮৮নাসায়ী ১৮৬৯আবূ দাউদ ৩১২৪ইবনু মাজাহ ১৫৯৬আহমাদ ১১৯০৮১২০৪৯১২৮৬০
[8] সহীহুল বুখারী ১২৮৩১২৫২১৩০২৭১৫৪মুসলিম ৯২৬তিরমিযী ৯৮৮নাসায়ী ১৮৬৯আবূ দাউদ৩১২৪ইবনু মাজাহ ১৫৯৬আহমাদ ১১৯০৮১২০৪৯১২৮৬০
[9] সহীহুল বুখারী ৩৪৭৪৫৭৩৪৬৬১৯ আহমাদ ২৩৮৩৭২৪৬৮৬২৫৬০৮
[10] সহীহুল বুখারী ৫৬৫৩তিরমিযী ২৪০০আহমাদ ১২০৫৯১২১৮৫১৩৬০৭
[11] সহীহুল বুখারী ৫৬৫৩তিরমিযী ২৪০০আহমাদ ১২০৫৯১২১৮৫১৩৬০৭
[12] সহীহুল বুখারী ৩৪৭৭৬৯২৯মুসলিম ১৭৯২ইবনু মাজাহ ৪০২৫আহমাদ ৩৬০০৪০৪৭৪০৯৬৪১৯১৪৩১৯৪৩৫৩
[13] সহীহুল বুখারী ৫৬৪২মুসলিম ২৫৭৩তিরমিযী ৯৬৬আহমাদ ৭৯৬৯৮২১৯৮৯৬৬১০৬২৪
[14] সহীহুল বুখারী ৫৬৪৮৫৬৪৭৫৬৬০৫৬৬১৫৬৬৭ মুসলিম ২৫৭১আহমাদ ৩৬১১৪১৯৩৪৩৩৩দারেমী ২৭৭১
[15] সহীহুল বুখারী ৫৬৪৫আহমাদ ৭১৯৪মুওয়াত্তা মালেক ১৭৫২
[16] সহীহুল বুখারী ৫৬৭১৬৩৫১৭২৩৩মুসলিম ২৬৮০তিরমিযী ৯৭১নাসায়ী ১৮২০১৮২১১৮২২আবূ দাউদ১৩০৮ইবনু মাজাহ ৪২৬৫আহমাদ ১১৫৬৮১১৬০৪১২২৫৩১২৩৪৪১২৬০৮
[17] সহীহুল বুখারী ৩৬১৬৫৬৫৬৫৬৬২৭৪৭০
[18] সহীহুল বুখারী ৩১৫০৩৪০৫৪৩৩৫৪৩৩৬৬০৫৯৬১০০৬২৯১৬৩৩৬মুসলিম ১০৬২আহমাদ ৩৫৯৭৩৭৫০৩৮৯২৪১৩৭
[19] মুসলিম ২৩৯৬ইবনু মাজাহ ৪০৩১
[20] সহীহুল বুখারী ১৩০১১৫০২৫৪৭০৫৫৪২৫৮২৪মুসলিম ২১১৯২১৪৪আবূ দাউদ ২৫৬৩৪৯৫১আহমাদ ১১৬১৭১২৩৩৯১২৩৮৪১২৪৫৪১২৫৪৬
[21] সহীহুল বুখারী ৬১১৪মুসলিম ২৬০৯আহমাদ ৭১৭৮৭৫৮৪১০৩২৪মুওয়াত্তা মালেক ১৬৮১
[22] সহীহুল বুখারী ৩২৮২৬০৪৮৬১১৫মুসলিম ২৬১০আবূ দাউদ ৪৭৮১আহমাদ ২৬৬৬৪
[23] (ইমাম তিরমিযী বলেনএই হাদীসটি হাসান।) তিরমিযী ২০২১২৪৯৩আবূ দাউদ ৪৭৭৭ইবনু মাজাহ ৪১৮৬আহমাদ ১৫১৯২১৫২১০
[24] সহীহুল বুখারী ৬১১৬তিরমিযী ২০২০আহমাদ ৯৬৮২২৭৩১১
[25] (তিরমিযীহাসান সহীহ) তিরমিযী ২৩৯৯আহমাদ ৭৭৯৯২৭২১৯
[26] সহীহুল বুখারী ৪৬৪২৭২৮৬
[27] সহীহুল বুখারী ৩৬০৩৭০৫২মুসলিম ১৮৪৩তিরমিযী ২১৯০আহমাদ ৩৬৩৩৪০৫৬৪১১৬২৭২০৭
[28] সহীহুল বুখারী ৩৭৯২৭০৫৭মুসলিম ১৮৪৫তিরমিযী ২১৮৯নাসায়ী ৫৩৮৩আহমাদ ১৮৬১৩১৮৬১৫
[29] সহীহুল বুখারী ২৮১৯২৮৩৩২৯৩৩২৯৬৬৩০২৪৩০২৬৪১১৫৬৩৯২৭২৩৭৭৪৮৯মুসলিম ১৭৪১১৭৪২তিরমিযী ১৬৭৮আবূ দাউদ ২৬৩১ইবনু মাজাহ ২৭৯৬আহমাদ ১৮৬২৮১৮৬৫০১৮৬৬০১৮৯১৭
____________________________________________________________________________________________________________

সংকলন : ইমাম মুহিউদ্দীন আবু যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবন শরফ আন-নাওয়াবী রহ.
হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ণয় : শাইখ মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহ. 
অনুবাদক : বিশিষ্ট আলেমবর্গ 
অনুবাদ সম্পাদনা : আব্দুল হামীদ ফাইযী
সূত্র : ইসলামহাউজ





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন