Views:
A+
A-
জান্নাতী রমণী (১ম পর্ব)
কুরআন-সুন্নাহর আলোকে জান্নাতী নারীর পরিচয়
ভূমিকাঃ
আল্ হামদু লিল্লাহ ওয়াছ্ ছালাতু ওয়াস্ সালামু আলা রাসূলিল্লাহ্।
পুরুষের জন্য নারী সহোদরের মত মূল্যবান। সে তার জীবন সঙ্গী। একজন অপরজনের পরিপুরক। উভয়ের প্রতি আল্লাহ তা’আলা নির্দিষ্ট বিধি-নিষেধ নাযিল করেছেন এবং তাদেরকে তাদের কর্মের উপর প্রতিফল প্রদানের অঙ্গিকার করেছেন। পূণ্যের ঠিকানা জান্নাতে পাপের ঠিকানা অন্যস্থানে। সেই জান্নাত লাভের আশায় ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার কামনায় নারী-পুরুষ সকলকেই সেই পথ Aej¤^b করতে হবে।
আলোচ্য পুস্তকে একজন মুসলিম রমণী কিভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিল করে জান্নাত লাভে ধন্য হতে পারবে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। পবিত্র কুরআন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সুন্নাত এবং পূর্বসূরী নেক মনিষীদের বচন থেকে জান্নাতী রমণীর পরিচয় ও গুণাবলী তুলে ধরা হয়েছে। প্রত্যেক মুমিন নারীর উচিত হচ্ছে উক্ত গুণাবলী সম্পর্কে জ্ঞান হাসিল করা এবং তদানুযায়ী নিজের জীবনকে গড়ে তোলা।
একজন নারীর জান্নাতী হওয়ার জন্য অবশ্যই ¯^vgxi সহযোগিতা আবশ্যক। তাই বিষয়টিকে পূর্ণতা দেয়ার জন্য ¯^vgx কিভাবে স্ত্রীর হক আদায় করবে? স্ত্রী জান্নাতের পথ পরিত্যাগ করে বক্রপথে চললে ¯^vgx কোন পদ্ধতি Aej¤^b করে তাকে সংশোধন করতে পারবে? ইত্যাদি বিষয়ে ¯^vgx‡KI নসীহত করা হয়েছে।
ইসলামের নির্দেশাবলীর জ্ঞান লাভ, তার প্রতি বিশ্বাস ও কর্ম জীবনের বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যেক নারী ও পুরুষের নিম্ন লিখিত মূলনীতিটি সর্বাবস্থায় স্মরণ রেখে চলতে হবে। আর তা হচ্ছে, আল্লাহর বিধানের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ এবং সর্বাবস্থায় রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর জীবনকে নিজের জন্য মডেল বা আদর্শরূপে গ্রহণ। এ উপলক্ষে মহান আল্লাহ বলেন,
]وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُونَ لَهُمْ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلالا مُبِينًا[
“আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল কোন আদেশ করলে কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করার কোন অধিকার নেই। যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য করবে, সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হবে।”[1]
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
“আমার উম্মতের প্রত্যেক ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে, কিন্তু ঐ ব্যক্তি নয় যে জান্নাতে যেতে A¯^xKvi করে। তাঁরা বললেন, কে এমন আছে জান্নাতে যেতে A¯^xKvi করে? তিনি বললেন, যে আমার আনুগত্য করবে সে জান্নাতে যাবে। আর যে আমার অবাধ্য হবে সেই জান্নাতে যেতে A¯^xKvi করবে।”[2]
উপরোক্ত আয়াত ও হাদীছটি যে ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত জীবনের চলমান পথে স্মরণ রাখবে তার জন্য ইসলামের যাবতীয় বিধি-বিধান মান্য করা সহজসাধ্য হবে।
সম্মানিত পাঠক-পাঠিকাদের প্রতি আমাদের নিবেদন, এই পুস্তকের মধ্যে যে কোন ধরনের ত্রুটি বা অভিযোগ পরিলক্ষিত হলে, আমাদেরকে জানাতে চেষ্টা করবেন। আমরা কৃতজ্ঞতার সাথে তা গ্রহণ করে পরবর্তী সংস্করণে তা সংশোধন করব। ইনশাআল্লাহ্॥
আল্লাহর কাছে আমাদের আকুল আবেদন তিনি যেন এই পুস্তিকাটি দ্বারা আমাদেরকে এবং সমস্ত মুসলমানকে উপকৃত করেন। একনিষ্ঠভাবে তাঁর জন্য কবূল করে নেন। মুসলিম রমণীদের তাঁর সন্তুষ্টি মূলক কাজ আঞ্জাম দিয়ে জান্নাত লাভে ধন্য করেন। আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন॥
নিবেদক,
মুহাঃ আবদুল্লাহ্ আল কাফী
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
দাঈ, জুবাইল দা‘ওয়া এন্ড গাইডেন্স সেন্টার
পো: বক্স নং ১৫৮০, ফোনঃ ০৩-৩৬২৫৫০০
সঊদী আরব।
mmohdkafi12@yahoo.com
ইসলামে নারীর মর্যাদাঃ
ইসলাম নারীকে সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদায় ভূষিত করেছে। এই ধর্ম নারীকে যে সম্মান দিয়েছে তা কোন যুগে কোন কালে কোন ধর্ম ও কোন জাতি দিতে পারেনি। ইসলাম নারীকে পুরুষের সাথী হিসেবে নির্ধারণ করেছে। তাদের একজন অপরজন ছাড়া অচল। দু‘জনই পরস্পরের মুখাপেক্ষী। নারীর দৃষ্টিতে যে পুরুষ শ্রেষ্ঠ মানুষের মধ্যে সেই সর্বোত্তম।
শিশুকালে নারী দুগ্ধ পানের সাথে সাথে বিশেষ তত্বাবধান ও উত্তম লালন-পালনের দাবীদার। সে সময় সে পিতা-মাতা ও ভাই-বোনের চক্ষু শীতলকারীনী ও হৃদয় ঠান্ডাকারীনী। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
“যে ব্যক্তিকে এই কন্যা সন্তান প্রদান করার মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে, সে যদি তাদের প্রতি সুন্দর আচরণ করে, তাদেরকে সঠিকভাবে লালন-পালন করে, তবে তারা জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য পর্দা ¯^iƒc হয়ে যাবে।”[3]
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
“কারো যদি তিনজন কন্যা সন্তান থাকে বা তিনজন বোন থাকে, অথবা দু’জন কন্যা বা দু’জন বোন থাকে এবং সে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ্কে ভয় করে তাদের প্রতি করুণা ও সদ্ব্যবহার করে, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”[4]
“যে ব্যক্তিকে এই কন্যা সন্তান প্রদান করার মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে, সে যদি তাদের প্রতি সুন্দর আচরণ করে, তাদেরকে সঠিকভাবে লালন-পালন করে, তবে তারা জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য পর্দা ¯^iƒc হয়ে যাবে।”[3]
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
“কারো যদি তিনজন কন্যা সন্তান থাকে বা তিনজন বোন থাকে, অথবা দু’জন কন্যা বা দু’জন বোন থাকে এবং সে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ্কে ভয় করে তাদের প্রতি করুণা ও সদ্ব্যবহার করে, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”[4]
এই নারী প্রাপ্তবয়স্কা হলে পরিবারে সর্বাধিক সম্মানিত। যার সম্মান ও ইজ্জত-আবরু রক্ষার জন্য পুরুষ তার সর্বাধিক প্রিয় বস্তু জানও বিসর্জন দিতে প্রস্তুত। পরপুরুষের কাল হাত অগ্রসর হলে, অপ্রিয় কন্ঠ তাকে ত্যাক্ত করলে ও লোভনীয় চোরা দৃষ্টি তার প্রতি নিক্ষিপ্ত হলেই সে তার প্রতিবাদে সোচ্চার হয় এবং তার ইজ্জতের সংরক্ষণ করতে নিজের জানকে বাজী রাখে। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
“যে ব্যক্তি নিজ পরিবারের ইজ্জত রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হবে, সে শহীদের মর্যাদা লাভ করবে।”[5]
“যে ব্যক্তি নিজ পরিবারের ইজ্জত রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হবে, সে শহীদের মর্যাদা লাভ করবে।”[5]
এই নারী বিবাহিতা হলে, আল্লাহর বাণীর দৃঢ় অঙ্গিকারের মাধ্যমে হয়। ¯^vgx গৃহে সে হয় সর্বাধিক নিকটতম সাথী, সম্মানিত প্রতিবেশী। ¯^vgxi উপর আবশ্যক হয় তাকে সম্মান করা, তার প্রতি করুণা করা ও তাকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকা। ভরণ-পোষণসহ তার যাবতীয় প্রয়োজন পূরণে সচেষ্ট থাকা এবং সে ক্ষেত্রে কোন ত্রুটি না করা।
এই নারী মাতা হলে, আল্লাহর হক আদায় করার সাথে সাথে তাঁর সাথে সদ্ব্যবহার করা ওয়াজিব হয়ে যায়। আল্লাহর সাথে শির্ক যেমন নিষিদ্ধ তেমনি মায়ের নাফরমানী ও তার সাথে অসদাচরণও নিষিদ্ধ।
জনৈক ব্যক্তি নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! মানুষের মধ্যে কে আমার সদ্ব্যবহার পাওয়ার সর্বাধিক অধিকার রাখে? তিনি বললেন, তোমার মাতা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মাতা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মাতা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার পিতা।”[6]
জনৈক ব্যক্তি নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! মানুষের মধ্যে কে আমার সদ্ব্যবহার পাওয়ার সর্বাধিক অধিকার রাখে? তিনি বললেন, তোমার মাতা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মাতা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মাতা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার পিতা।”[6]
এই নারী বোন হলে, ইসলাম তার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে, তাকে সম্মান ও তার সম্ভ্রম রক্ষা করতে আদেশ করেছে।
এই নারী খালা হলে, খেদমত ও সদ্ববহারের ক্ষেত্রে মায়ের স্থানে তাঁর মতই মর্যাদাবান।
এই নারী বৃদ্ধা হলে বা দাদী-নানী হলে পরিবারে তিনি হন অত্যধিক সম্মানিতা ও সর্বশ্রদ্ধেয়া। সন্তান-সন্তুতি, নাতী-নাতনী ও নিকটাত্মীয় সকলেই তার প্রয়োজন পূরণে সচেষ্ট থাকে। তার মতামতকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।
এই নারী যদি দূরবর্তী কোন সাধারণ নারী হয়, তবে ইসলামের অধিকার অনুযায়ী তাকে সকল প্রকার অনিষ্ট থেকে রক্ষা করা কর্তব্য, দৃষ্টি নত রাখা আবশ্যক।
ইসলাম নারীকে অধিকার দিয়েছে- সে শিক্ষা অর্জন করবে, সম্পদ উপার্জন করবে, সম্পদের মালিক হবে, বেচা-কেনা করবে, উত্তরাধীকার হবে, বিবাহের প্রস্তাব দানকারী পুরুষকে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে পারবে।
ইসলামী সমাজের সর্বত্রই নারী এভাবেই সম্মানিত হয়ে আসছে। ফলে নারী সেই সমাজে সর্বাধিক মূল্যবান, মর্যাদাবান ও শ্রদ্ধাভাজন হয়ে অবস্থান করে।
নারীর উপর পুরুষের কর্তৃত্বঃ
আল্লাহ্ বলেন,
]الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَبِمَا أَنفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ[
“পুরুষগণ নারীদের উপর কর্তৃত্বকারী। কেননা আল্লাহ তাদের একজনকে অপর জনের উপর মর্যাদাবান করেছেন। এবং পুরুষগণ তাদের সম্পদ খরচ করে থাকে।”[7]
হাফেয ইবনু কাছীর এই আয়াতের তাফসীরে বলেন, পুরুষ নারীর কতৃত্বকারী। অর্থাৎ সে তার প্রধান, তার চাইতে শ্রেষ্ঠ, তার শাসক এবং বাঁকা পথে চললে তাকে শিক্ষাদানকারী।
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নিম্ন লিখিত বাণীটি উক্ত অর্থকে সমর্থন করে। আবদুল্লাহ্ বিন আবু আউফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
]لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِغَيْرِ اللَّهِ لأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لا تُؤَدِّي الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّيَ حَقَّ زَوْجِهَا وَلَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِيَ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعْهُ[
“গাইরুল্লাকে সিজদা করার জন্য আমি যদি কাউকে আদেশ করতাম তবে নারীকে আদেশ করতাম তার ¯^vgx‡K সিজদা করতে। শপথ সেই সত্বার যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, কোন নারী তার পালনকর্তার হক আদায় করতে পারবে না যে পর্যন্ত সে তার ¯^vgxi যাবতীয় হক আদায় না করবে। এমনকি যদি উটের হাওদাজে বসে তাকে সহবাস করতে আহবান করে, তবুও বাধা দিবে না।”[8]
আল্লাহ্ বলেন,
]فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ[
ইমাম ইবনু তায়মিয়া ফতোয়া গ্রন্থে এই আয়াতের তাফসীরে বলেন, ‘নারী সর্বদা ¯^vgxi আনুগত্য করবে। তিনি বলেন, আল্লাহ ও রাসূলের পর নারীর আনুগত্য পাওয়ার জন্য ¯^vgxi চাইতে অন্য কেউ অধিক হকদার নয়।’[10]
অতএব বর্তমান যুগের মডার্ন ও প্রগতিবাদী নারীরা সাবধান। যারা ¯^vgxi অবাধ্য হয়ে চলতে চায়, পুরুষের mv`„kej¤^b করে পুরুষের উপর কর্তৃত্ব করতে চায়। লজ্জা ও আবরু পদদলিত করে বেপরওয়াভাবে যা ইচ্ছা তা করতে চায়, যেখানে খুশি যেতে চায়। ¯^vaxbZv ও নারী অধিকারের নামে আখেরাতের বিনিময়ে দুনিয়া ও তার চাকচিক্য ক্রয় কতে চায়। সাবধান হে মুসলিম বোন! তাদের চক্রান্তের জাল থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করুন। তাদের পথ ও চরিত্র থেকে সতর্ক হোন। কারণ সেদিন বেশী দূরে নয় যখন আপনার যৌবনের চমক ও অহংকার শেষ হবে, মৃত্যুর বিভিষীকা আপনাকে ঘিরে ফেলবে। আপনি উপস্থিত হবেন সেই দিনে যেদিন শিশু বার্ধক্যে উপনিত হবে। অর্থাৎ- ক্বিয়ামত দিবস।
সৎ রমণী পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদঃ
আবদুল্লাহ্ বিন আমর থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]الدُّنْيَا مَتَاعٌ وَخَيْرُ مَتَاعِ الدُّنْيَا الْمَرْأَةُ الصَّالِحَةُ[
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لأَرْبَعٍ لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ[
“চারটি গুণের কারণে কোন রমণীকে বিবাহ করা হয়, তার সম্পদ, বংশ মর্যাদা, সৌন্দর্য ও ধর্মভীরুতা। ধর্মভীরু নারী বিবাহ করে তুমি বিজয়ী হও। তোমার দু’হাত ধুলোলুন্ঠিত হোক।”[12]
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন,
“চারটি বস্তু সৌভাগ্যের। ১) নেক রমণী ২) প্রশস্ত আবাসস্থল ৩) সৎ প্রতিবেশী এবং ৪) আরাম দায়ক আরোহী। আর চারটি বস্তুতে রয়েছে দুর্ভাগ্য। ১) অসৎ নারী। ...।”[13]
“চারটি বস্তু সৌভাগ্যের। ১) নেক রমণী ২) প্রশস্ত আবাসস্থল ৩) সৎ প্রতিবেশী এবং ৪) আরাম দায়ক আরোহী। আর চারটি বস্তুতে রয়েছে দুর্ভাগ্য। ১) অসৎ নারী। ...।”[13]
এ সমস্ত উক্তি ও অনুরূপ আরো অনেক হাদীছ থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, একজন মুসলিম পুরুষের জীবন সঙ্গী নির্বাচন করার জন্য একজন নেক ও সৎ রমণী অনুসন্ধান করা কত গুরুত্বপূর্ণ। আর মুসলিম রমণীর উপর আবশ্যক হচ্ছে নেক স্ত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সর্বোত্তম গুণাবলী সমূহ অর্জন করার চেষ্টা করা। যাতে আল্লাহ তার উপর সন্তুষ্ট হন। ইহ-পরকালে তার জীবন হয় পূণ্য ও সফলতায় পরিপূর্ণ।
হে মুসলিম বোন! নিম্নে নেক রমণী হওয়ার জন্য কুরআন-সুন্নাহ ও পূর্বসূরী নেক মনিষীদের কতিপয় উক্তি সন্নিবেশ করা হল। এগুলোর শিখুন এবং নিজের জীবনে তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করুন। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “শিক্ষা অর্জন করার মাধ্যমে জ্ঞান লাভ করা যায়, ধৈর্যের অনুশীলনের মাধ্যমে সহিষ্ণু হওয়া যায়। যে ব্যক্তি কল্যাণ লাভের চেষ্টা করে, তাকে উহা প্রদান করা হয়।”[14]
সৎ স্ত্রীর গুণাবলীঃ
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
]فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ[
“পূণ্যবতী রমণীগণ আনুগত্য করে এবং আল্লাহর সংরক্ষিত প্রচ্ছন্ন বিষয়ের সংরক্ষন করে।” (সূরা নিসা- ৩৪)
হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) অত্র আয়াতের তাফসীরে বলেন, صالحات বলতে সৎ ও পূণ্যশীল নারীদেরকে বুঝানো হয়েছে। ইবনু আব্বাস প্রমুখ বলেন, قانتات অর্থ হচ্ছে, ¯^vgxi আনুগত্যকারীনী। حافظات للغيب অর্থ সম্পর্কে সুদ্দী প্রমুখ বলেন, ¯^vgxi অনুপস্থিতে স্ত্রী নিজের ইজ্জতের সংরক্ষণ করবে এবং ¯^vgxi সম্পদ হেফাযত করবে।[15]
হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) অত্র আয়াতের তাফসীরে বলেন, صالحات বলতে সৎ ও পূণ্যশীল নারীদেরকে বুঝানো হয়েছে। ইবনু আব্বাস প্রমুখ বলেন, قانتات অর্থ হচ্ছে, ¯^vgxi আনুগত্যকারীনী। حافظات للغيب অর্থ সম্পর্কে সুদ্দী প্রমুখ বলেন, ¯^vgxi অনুপস্থিতে স্ত্রী নিজের ইজ্জতের সংরক্ষণ করবে এবং ¯^vgxi সম্পদ হেফাযত করবে।[15]
আবদুর রহমান বিন আউফ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
]إِذَا صَلَّتِ الْمَرْأَةُ خَمْسَهَا وَصَامَتْ شَهْرَهَا وَحَفِظَتْ فَرْجَهَا وَأَطَاعَتْ زَوْجَهَا قِيلَ لَهَا ادْخُلِي الْجَنَّةَ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شِئْتِ[
“মুসলিম রমণী যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করে, রামাযানের ছিয়াম পালন করে, নিজের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে এবং ¯^vgxi আনুগত্য করে, তবে তাকে বলা হবে, জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছে তুমি ভিতরে প্রবেশ কর।”[16]
আনাস বিন মলেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন, “কোন ধরণের রমণী জান্নাতী আমি কি তোমাদেরকে বলে দিব না? তাঁরা বললেন, হ্যাঁ হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, তোমাদের জান্নাতী রমণীগণ হচ্ছে, ¯^vgxi প্রতি প্রেম নিবেদনকারীনী এবং অধিক সন্তান প্রসবকারীনী। তার আনুগত্যের প্রকাশ হচ্ছে, সে ivMw¤^Zv হলে বা তার সাথে খারাপ আচরণ করা হলে বা ¯^vgx তার প্রতি ivMw¤^Z হলে, ¯^vgxi কাছে গিয়ে বলে, এই আমার হাত আপনার হাতে সপে দিলাম, আপনি সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমি চোখের পলক ফেলব না। অর্থাৎ আমি কোন আরাম নিব না কোন আনন্দ বিনোদন করব না যতক্ষণ আপনি আমার প্রতি খুশি না হন।”[17]
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
]قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّ النِّسَاءِ خَيْرٌ قَالَ الَّتِي تَسُرُّهُ إِذَا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إِذَا أَمَرَ وَلا تُخَالِفُهُ فِي نَفْسِهَا وَمَالِهَا بِمَا يَكْرَهُ[
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে প্রশ্ন করা হল হে আল্লাহর রাসূল! কোন শ্রেণীর নারী সর্বোত্তম? তিনি বলেন, “তার পরিচয় হচ্ছে তুমি তার দিকে চাইলে সে তোমাকে আনন্দিত করবে, কোন নির্দেশ দিলে তা বাস্তবায়ন করবে। তার নিজের ব্যাপারে এবং ¯^vgxi সম্পদের ব্যাপারে ¯^vgx পসন্দ করেন না এমন কাজ করে তার বিরোধীতা করবে না।”[18]
অন্য বর্ণনায় এসেছে, একদা রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওমর (রাঃ)কে লক্ষ্য করে বললেন,
]أَلا أُخْبِرُكَ بِخَيْرِ مَا يَكْنِزُ الْمَرْءُ الْمَرْأَةُ الصَّالِحَةُ إِذَا نَظَرَ إِلَيْهَا سَرَّتْهُ وَإِذَا أَمَرَهَا أَطَاعَتْهُ وَإِذَا غَابَ عَنْهَا حَفِظَتْهُ[
“আমি কি তোমাকে মানুষের আকর্ষণীয় শ্রেষ্ঠ গুপ্তধন সম্পর্কে বলে দিব না? তা হচ্ছে, নেক রমণী। ¯^vgx তার দিকে তাকালে সে তাকে আনন্দিত করে দেয়, কোন আদেশ করলে তা পালন করে এবং বাড়িতে না থাকলে তার ইজ্জত-আবরু রক্ষা করে।”[19]
ওহে মুসলিম বোন নিজের প্রতি লক্ষ্য করুন, উক্ত গুণাবলী কি আপনার চরিত্রে সমাবেশ ঘটাতে পেরেছেন। আপনি কোথায়? আপনার কি উচিত নয় পালনকর্তার সন্তুষ্টির পথ অনুসন্ধান করা? দু’নিয়া-আখেরাতে সুখের জীবন গঠন করার জন্য ¯^vgx-mš—v‡bi খেদমত করা ও আনন্দময় সংসার গড়তে সচেষ্ট হওয়া?
¯^vgxi খেদমত জান্নাতে প্রবেশ করার মাধ্যমঃ
হুসাইন বিন মেহসান (রাঃ) বলেন, আমার ফুফু আমার কাছে বর্ণনা করেছেন। একদা তিনি নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে কোন প্রয়োজনে গিয়েছিলেন। প্রয়োজন শেষ হলে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন,
]أَذَاتُ زَوْجٍ أَنْتِ قَالَتْ نَعَمْ قَالَ كَيْفَ أَنْتِ لَهُ قَالَتْ مَا آلُوهُ إِلا مَا عَجَزْتُ عَنْهُ قَالَ فَانْظُرِي أَيْنَ أَنْتِ مِنْهُ فَإِنَّمَا هُوَ جَنَّتُكِ وَنَارُكِ[
“তোমার কি ¯^vgx আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তার জন্য তুমি কেমন স্ত্রী? আমি বললাম, একান্ত অপারগ না হলে তার খেদমত করতে কোন ত্রুটি করি না। তিনি বললেন, ভালভাবে খেয়াল রাখবে, তুমি কিরূপ তার খেদমত করে থাক। কেননা সেই তোমার জান্নাত অথবা জাহান্নাম।”[20]
অর্থাৎ- তার অনুগত্য ও খেদমত করলে জান্নাতে যাবে আর অবাধ্য হলে জাহান্নামে যাবে। শায়খ আলবানী বলেন, ‘এই হাদীছ থেকে সুস্পষ্টভাবে এ দলীল পাওয়া যায়, ¯^vgxi আনুগত্য করা স্ত্রীর উপর ওয়াজিব এবং সাধ্যের মধ্যে তার খেদমত করা তার উপর আবশ্যক। সন্দেহ নেই যে, খেদমতের প্রথম বিষয় হচ্ছে, ¯^vgxi গৃহের তদারকি করা তার সন্তান-সন্তুতিকে সুষ্ঠুভাবে লালন-পালন করা।’
উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
]أَيُّمَا امْرَأَةٍ مَاتَتْ وَزَوْجُهَا عَنْهَا رَاضٍ دَخَلَتِ الْجَنَّةَ[
জান্নাতী রমণীর কতিপয় আলামতঃ
উল্লেখিত হাদীছ সমূহ থেকে জান্নাতী রমণীর পরিচয়ে নিম্ন লিখিত বিষয়গুলো জানা যায়ঃ
1) জান্নাতী রমণী নেক ও পূণ্যের কাজে অংশ নেয় এবং আপন পালনকর্তার ইবাদত করে তাঁর হক আদায় করে।
2) জান্নাতী রমণী এমন ক্ষেত্রে ¯^vgxi আনুগত্য করবে যাতে আল্লাহর নাফরমানী নেই।
3) নিজের ইজ্জতের হেফাযত করবে- বিশেষ করে ¯^vgxi অনুপস্থিতিতে।
4) ¯^vgxi সম্পদের হেফাযত করবে ও তার সন্তানদেরকে সঠিকভাবে লালন-পালন করবে।
5) সর্বদা এমনভাবে ¯^vgxi সম্মুখবর্তী হবে যাতে তিনি খুশি হন এবং এজন্য নিজের অতিরিক্ত সৌন্দর্য ও হাসি মুখ তার সামনে প্রকাশ করতে সচেষ্ট হবে।
6) ¯^vgx ivMw¤^Z হলে যে কোন প্রকারে তাকে খুশি করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করবে। কেননা সেই তার জান্নাত অথবা জাহান্নাম। যেমনটি ইতোপূর্বে হাদীছে উল্লেখ হয়েছে।
7) ¯^vgx তার সঙ্গ চাইলে কোনভাবেই তাতে বাধা দেয়ার চেষ্টা করবে না। তার ডাকে সাড়া দিবে এবং পরিপূর্ণরূপে নিজেকে তার কাছে সমর্পন করবে।
জান্নাতের অঙ্গীকারঃ
উল্লেখিত কাজগুলো করলেই প্রিয় নবীজীর ভাষায় তার জন্য জান্নাতে প্রবেশ করার অঙ্গীকার রয়েছে। যেমনটি তিনি এরশাদ করেনঃ
স্ত্রী যদিঃ
1) পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করে।
2) রামাযানের ছিয়াম পালন করে।
3) নিজ লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। (ব্যভিচার প্রভৃতি থেকে বিরত থাকে।) এবং
4) ¯^vgxi আনুগত্য করে।
আনুগত্যশীল নেক রমণীর দৃষ্টান্তঃ
হায়ছাম বিন আদী আত্ ত্বাঈ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, শা’বীর বরাতে মুজালেদ আমার কাছে বর্ণনা করেছেন। শা’বী বলেন, শুরাইহ আমাকে একবার বললেন, শা’বী! তুমি বনু তামীম গোত্রের রমণী বিবাহ কর। কেননা আমি তাদেরকে সর্বাধিক জ্ঞানী ও বুদ্ধিমতি দেখেছি।
শা’বী প্রশ্ন করলেন, তাদের বুদ্ধিমত্তার তুমি কি দেখেছো? শুরাইহ বললেন, আমি এক দুপুরে জনৈক ব্যক্তির জানাযা শেষে ফেরার পথে তাদের এক বাড়ীর পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। বাড়ীর দরজায় দেখলাম এক বৃদ্ধা এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে একজন বালিকা। মেয়েটি ছিল অতিব সুন্দরী ও রুপসী। এটা দেখে আমি তাদের দিকে এগিয়ে গেলাম এবং পানি পান করতে চাইলাম। অথচ আমার কোন পিপাসাই ছিল না।
বৃদ্ধা বললেন, কোন ধরণের পানীয় চাও।
আমি বললাম, সহজলভ্য যে কোন পানীয়।
বৃদ্ধা বললেন, এই মেয়ে! একে দুধ পান করাও। মনে হচ্ছে লোকটি ভিনদেশী।
আমি বৃদ্ধাকে প্রশ্ন করলামঃ মেয়েটি কে?
সে বললঃ তার নাম যায়নাব বিনতে জারীর। হানযালা পরিবারের এক মেয়ে।
আমি বললামঃ বিবাহিতা না কুমারী?
সে বললঃ এখন পর্যন্ত অবিবাহিতা কুমারী।
আমি বললামঃ তার সাথে আমার বিবাহের ব্যবস্থা করে দিন।
সে বললঃ যদি তুমি তার যোগ্য হও তবে হতে পারে।
আমি একথা শুনে গৃহে ফিরে এলাম। কায়লুলা তথা দুপুর বেলার নিদ্রা যাওয়া ইচ্ছা করলাম। কিন্তু চোখে নিদ এল না। যোহরের নামায আদায় করে, আমার বন্ধুবর সম্মানিত ক্বারী সাহেবদেরকে সাথে নিলাম। তাদের মধ্যে আলকামা, আসওয়াদ, মুসআইয়্যেব এবং মূসা বিন আরফাতা ছিলেন। তাঁদেরকে সাথে নিয়ে মেয়েটির চাচার নিকট পৌঁছলাম। তিনি বললেন, আপনাদের কি খেদমত করতে পারি?
আমি বললামঃ আপনার ভাতিজী যায়নাবকে বিবাহ করার প্রস্তাব নিয়ে এসেছি।
তিনি জাবাবে বললেনঃ সেও আপনার ব্যাপারী অনাগ্রহী নয়।
তারপর তিনি তার সাথে আমার বিবাহ দিয়ে দিলেন। সে যখন আমার বন্ধনের জালে আটকা পড়ল আমি যেন লজ্জিত হলাম। মনে মনে বললাম, তামীম গোত্রের মেয়েদের সাথে আমি কি আচরণ করতে পারি? আবার তাদের অন্তরের রূঢ়তার কথাও আমার মনে ভাসল। মনে মনে বললাম, তাকে তালাক দিয়ে দিব নাকি? আবার বললাম, যা হওয়ার হয়েছে, তাকে রেখেই দিব। মর্জি মোতাবেক চললে তো ভাল অন্যথা পথ খোলাই আছে তালাক দিয়ে দিব।
শা’বী! তুমি যদি আমার পাশে হতে যখন কিনা বনু তামীমের মেয়েরা তাকে হাদিয়া-উপহার দিচ্ছিল! তারপর তাকে আমার রুমে প্রবেশ করিয়ে দিল!
আমি মনে মনে বললামঃ সুন্নাত তো হচ্ছে, স্ত্রীকে ¯^vgxi নিকট প্রবেশ করালে দু’রাকাত ছালাত আদায় করা। তারপর আল্লাহর কাছে স্ত্রীর কল্যাণ কামনা করা ও অকল্যাণ থেকে আশ্রয় কামনা করা। তাই আমি দু’রাকাত নামায আদায় করলাম। নামায শেষে সালাম ফিরিয়ে দেখি সেও পিছনে আমার অনুসরণে নামায আদায় করছে। নামায শেষ করলে তার দাসীরা এসে আমার পরনের কাপড় নিয়ে হলুদ রঙ্গের একটি চাদর পরিয়ে দিল।
ঘর থেকে লোকজন প্রস্থান করলে আমি স্ত্রীর নিকটবর্তী হতে চাইলাম এবং তার দিকে হাত বাড়ালাম।
কিন্তু সে বাধা দিয়ে বললঃ আবু উমাইয়্যা! একটু থামুন। প্রশান্তি ও ধৈর্যের সাথে নিজ স্থানে অবস্থান করুন। তারপর বললঃ
(الحمد لله، أحمده وأستعينه، وأصلي على محمد وآله، إني امرأة غريبة، لا علم لي بأخلاقك فبين لي ما تحب فآتيه ......)
‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার জন্য নিবেদিত। আমি তাঁর প্রশংসা গাইছি ও তাঁর কাছে সাহায্য কামনা করছি। দরূদ পেশ করছি মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও তাঁর পরিবারের উপর। নিঃসন্দেহে আমি আপনার কাছে একজন অপরিচিত নতুন নারী। আমি আপনার আচরণ, অভ্যাস ও রীতি-নীতি সম্পর্কে অবগত নই। দয়া করে বলুন আপনি আমার কাছে কি রকম আচরণ ভালবাসেন? যাতে করে আমি আপনার পসন্দমত চলতে পারি। আর আপনি যা অপসন্দ করেন তা থেকে বিরত থাকতে পারি!’
সে আরো বললঃ সন্দেহ নেই যে আপনার গোত্রে আপনার উপযুক্ত মেয়ে ছিল। আর আমার গোত্রেও আমার জন্য উপযুক্ত ¯^vgx ছিল। কিন্তু আল্লাহ্ যা ফায়সালা করে রেখেছেন তা অবশ্যই হবে। আল্লাহর যা নির্দেশ হয় মানুষ সেটাই করে। অতএব আপনি যার মালিক হয়েছেন তার সাথে আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক আচরণ করবেন। অর্থাৎ- সৎভাবে সাংসারিক জীবন পরিচালনা করা অন্যথা ভালভাবে পৃথক করে দেয়া। (أقول قولي هذا وأستغفر الله لي ولك) আমার কথা এটুকুই। আমি আল্লাহর কাছে আপনার জন্য এবং আমার জন্য মাগফিরাত কামনা করছি।
শুরাইহ বলেলেন, শা’বী! তার এই কথা শুনে আমিও একটি বক্তব্য দেয়ার প্রয়োজন অনুভব করলাম। আমি বললামঃ
(الحمد لله، أحمده وأستعينه، وأصلي على محمد وآله وأسلم، فإنك قلت كلاماً ......)
‘নিঃসন্দেহে তুমি এমন কিছু কথা বলেছো যদি তুমি তার উপর দৃঢ় পদ থাক তবে তোমার উপকার হবে। কিন্তু যদি তার বিপরীত হয় তবে উহা তোমার বিপক্ষে দলীল হিসেবে গণ্য হবে। আমি এরূপ এরূপ আচরণ পসন্দ করি এবং এরূপ এরূপ আচরণ অপসন্দ করি। আমরা দু’জন একই সূত্রে গাঁথা। তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে না। ভাল কিছু দেখলে তার প্রচার করবে। আর মন্দ কিছু দেখলে তা গোপন করবে।
মেয়েটি বললঃ আরো কিছু কথা ছিল যা বলা হয়নি। আমার পরিবারে লোকদের বেড়াতে আসা আপনি কি পসন্দ করেন?
আমি বললামঃ আমি চাই না যে আমার শশুর পরিবারের লোকেরা আমার পেরেশানী ও ক্লান্তির কারণ হবেন।
সে বললঃ আপনার কোন কোন প্রতিবেশীকে আপনি ভালবাসেন? তাদের কেউ এলে ভিতরে আসার অনুমতি দিব? আর কাকে কাকে অপসন্দ করেন, আমিও তাকে অপসন্দ করব?
আমি বললামঃ উমুক গোত্রের লোকেরা ভাল মানুষ। আর উমুক গোত্রের লোকেরা অসৎ।
শুরাইহ্ বলেনঃ শা’বী! আমি তার সাথে আনন্দময় একটি রাত কাটালাম। সে আমার সাথে পূর্ণ একবছর অবস্থান করল। এর মধ্যে অপসন্দনীয় কোন কিছু আমি তার নিকট থেকে দেখিনি। বছর পূর্ণ হলে আমি বিচারালয় থেকে এক দিন বাড়ি ফিরে দেখি এক বৃদ্ধ মহিলা গৃহের তদারকি করছে। এটা কর এটা করো না ইত্যাদি।
আমি প্রশ্ন করলামঃ ইনি কে? বাড়ির লোকেরা বললঃ আপনার শশুর পক্ষের উমুক নারী। একথা শুনে আমি যে ধারণা করছিলাম তা পাল্টে গেল এবং আমি আনন্দিত হলাম। আমি আসন গ্রহণ করলে বৃদ্ধা আমার নিকটে এলেন।
বললেনঃ আস্ সালামু আলাইকুম আবু উমাইয়া!
আমি বললামঃ ওয়া আলাইকাস্ সালাম। আপনাকে তো চিনলাম না?
তিনি বললেনঃ আমি আপনার শাশুড়ী।
বললামঃ আল্লাহ আপনাকে আমাদের আরো নিকটবর্তী করে দিন।
তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার স্ত্রীকে কেমন পেলে?
বললামঃ সর্বোত্তম স্ত্রী।
তিনি আমাকে বললেনঃ আবু উমাইয়া! কোন নারী শুধুমাত্র দু’টি অবস্থায় খারাপ বা বাঁকা হয়।
1- যখন সন্তান প্রসব করে।
2- অথবা যখন অতিরিক্ত ¯^vgx সোহাগ লাভ করে।
কোন বিষয়ে সন্দেহ হলেই তুমি লাঠি ব্যবহার করবে। আল্লাহর শপথ পুরুষেরা খারাপ নারীর চাইতে নিকৃষ্ট কোন জিনিস নিজ গৃহে রাখে না।
আমি বললামঃ আল্লাহর শপথ করে বলছি, আপনি তো তাকে শ্রেষ্ঠতম আচরণ ও সর্বোত্তম ভদ্রতা শিখিয়েছেন।
তিনি বললেনঃ তোমার শশুর পরিবারের কেউ তোমাদের কাছে বেড়াতে আসুক তুমি কি তা পসন্দ কর?
জবাব দিলামঃ তারা যখন চাইবেন।
শুরাইহ বলেন, এই রমণী প্রতি বছর একবার আমার গৃহে আসতেন এবং আমাকে পূর্বোল্লিখিত নসীহত ও উপদেশ করতেন।
মেয়েটিকে নিয়ে আমি বিশ বছর সংসার করেছি। এর মাঝে অপ্রীতিকর কোন কিছু তার কাছ থেকে পাইনি। তার দ্বারা এমন কিছু ঘটেনি যা আমার ক্রোধের কারণ হয়। আমি সর্বদাই তার উপর খুশি থেকেছি। কিন্তু শুধু একটি বার, তখন আমিই তার উপর যুলুম করেছিলাম। একদা গৃহে আমি ফজরের দু’রাকাত সুন্নাত নামায আদায় করলাম। এমন সময় মুআয্যিন নামাযের ইক্বামত দিতে লাগল। আমি ছিলাম মসজিদের ইমাম। হঠাৎ দেখি একটি বিষধর বিচ্ছু হেঁটে বেড়াচ্ছে। আমি ওটাকে একটি পাত্র দিয়ে ঢেঁকে দিলাম। তারপর স্ত্রীকে বললামঃ যয়নাব! আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত তুমি নড়াচড়া করবে না। নামায শেষে ফিরে এসে দেখি বিচ্ছুটি তাকে দংশন করে নিয়েছে। সাথে সাথে আমি সূরা ফাতিহা ও মুআব্বেযাতাইন (সূরা ফালাক ও সূরা নাস) পড়ে তাকে ঝাড়তে লাগলাম। যেহেতু তাকে বলেছিলাম আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত তুমি নড়াচড়া করবে না, তাই বিচ্ছুটি পাত্রের নীচ থেকে বের হয়ে তাকে দংশন করল কিন্তু সে আমার নির্দেশের লংঘন করল না এবং সেখান থেকে পালিয়ে গেল না। সে ¯^vgxi এতদূর আনুগত্যকারী ছিল। অথচ তাকে ঐ নির্দেশ দিয়ে আমি কত বড়ই না ভুল করেছিলাম, কত বড়ই না যুলুম তার উপর করেছিলাম।[23]
স্বামীর সংসারে মুসলিম নারী নিম্ন লিখিত বিষয়ে সতর্ক থাকবেঃ
নীচে এমন কিছু বিষয় উল্লেখ করা হল যা থেকে বেঁচে থাকা ও দূরে থাকা মসুলিম নারীর উপর অপরিহার্য। এ সমস্ত বিষয় মুসলিম রমণীর জান্নাতে প্রবেশের জন্য বাধা স্বরূপঃ
1) স্বামীর অবাধ্য হওয়াঃ
জাবের বিন আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ঈদের দিন আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সাথে নামায আদায় করলাম। তিনি খুতবা দেয়ার পূর্বে আযান ও ইকামত ছাড়াই নামায পড়ালেন। অতঃপর বেলাল (রাঃ)কে সাথে নিয়ে দন্ডায়মান হলেন। খুতবায় তিনি মানুষকে আল্লাহর ভয় দেখালেন, তাঁর আনুগত্যের নির্দেশ প্রদান করলেন, মানুষকে নসীহত করলেন, নেক কাজের উপদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করলেন। এরপর সেখান থেকে উঠে নারীদের নিকট আগমণ করলেন এবং তাদেরকেও নসীহত করলেন ও সৎ কাজের নির্দেশ দিলেন। তারপর বললেন,
]تَصَدَّقْنَ فَإِنَّ أَكْثَرَكُنَّ حَطَبُ جَهَنَّمَ فَقَامَتِ امْرَأَةٌ مِنْ سِطَةِ النِّسَاءِ سَفْعَاءُ الْخَدَّيْنِ فَقَالَتْ لِمَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ لأَنَّكُنَّ تُكْثِرْنَ الشَّكَاةَ وَتَكْفُرْنَ الْعَشِيرَ قَالَ فَجَعَلْنَ يَتَصَدَّقْنَ مِنْ حُلِيِّهِنَّ يُلْقِينَ فِي ثَوْبِ بِلالٍ مِنْ أَقْرِطَتِهِنَّ وَخَوَاتِمِهِنَّ[
“ওহে রমণীগণ! তোমরা বেশী বেশী দান-সাদকা কর। অধিকহারে তওবা ইস্তেগফার কর। কেননা নারীরাই অধিকহারে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। তখন মহিলাদের মধ্যে থেকে উত্তম হিসেবে বিবেচিত একজন নারী দাঁড়িয়ে পড়ল- কষ্ট-ক্লেশের কারণে যার উভয় গন্ডের রং বদলে গিয়েছিল। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এর কারণ কি? নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কারণ তোমরা স্বামীর নাফরমানী কর বেশী, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ কর বেশী। তখন নারীরা নিজেদের গহনা খুলে সাদকা দিতে লাগলেন। কানের দুল, হাতের আংটি প্রভৃতি খুলে খুলে বেলাল (রাঃ)এর কাপড়ে ফেলতে লাগলেন।[24]
2) স্বামীকে রাগম্বিত করাঃ
আবু উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]ثَلاثَةٌ لا تُجَاوِزُ صَلاتُهُمْ آذَانَهُمُ الْعَبْدُ الآبِقُ حَتَّى يَرْجِعَ وَامْرَأَةٌ بَاتَتْ وَزَوْجُهَا عَلَيْهَا سَاخِطٌ وَإِمَامُ قَوْمٍ وَهُمْ لَهُ كَارِهُونَ[
“তিন ব্যক্তির নামায তাদের কানের উপরে উঠে না (অর্থাৎ কবূল হয় না)ঃ
ক) পলাতক ক্রিতদাস যে নিজের মালিকের নিকট থেকে পলায়ন করেছে। যতক্ষণ সে ফিরে না আসবে তার নামায কবূল হবে না।
খ) সেই নারী যে স্বামীকে রাগম্বিত রেখে রাত কাটায়।
3) স্বামীকে কষ্ট দেয়াঃ
মুআ’য বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
]لا تُؤْذِي امْرَأَةٌ زَوْجَهَا فِي الدُّنْيَا إِلا قَالَتْ زَوْجَتُهُ مِنَ الْحُورِ الْعِينِ لا تُؤْذِيهِ قَاتَلَكِ اللَّهُ فَإِنَّمَا هُوَ عِنْدَكَ دَخِيلٌ يُوشِكُ أَنْ يُفَارِقَكِ إِلَيْنَا[
“কোন নারী যখন দুনিয়াতে তার স্বামীকে কষ্ট দেয়, তখন জান্নাতে তার হুরেঈন স্ত্রী বলতে থাকেন, আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুন! ওঁেক কষ্ট দিও না। উনি তো তোমার কাছে কয়েক দিনের মেহমান। অচিরেই তোমাকে ছেড়ে আমাদের কাছে (জান্নাতে) আগমণ করবেন।”[26]
এ হাদীছে স্বামীকে অসন্তুষ্ট করতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এজন্য যে, নেককার স্বামী দুনিয়ার স্ত্রীর কাছে কিছু দিনের জন্য অতিথি স্বরূপ| তার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহ অসন্তুষ্ট। তাছাড়া স্বামীকে দুঃখ দিলে জান্নাতে তার হুরেঈন স্ত্রীগণ উক্ত দুনিয়ার স্ত্রীর জন্য বদদু’আ করে।
4) ¯^vgxi অনুগ্রহের A¯^xKvi করাঃ
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেনঃ “কিয়ামত দিবসে আল্লাহ ঐ নারীর প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না যে নিজ ¯^vgxi কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না। অথচ ¯^vgx থেকে সে ¯^qs সম্পূর্ণ হতেই পারে না।”[27]
অন্য এক হাদীছে বর্ণিত হয়েছে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]وَرَأَيْتُ النَّارَ فَلَمْ أَرَ كَالْيَوْمِ مَنْظَرًا قَطُّ وَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا النِّسَاءَ قَالُوا بِمَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ بِكُفْرِهِنَّ قِيلَ أَيَكْفُرْنَ بِاللَّهِ قَالَ بِكُفْرِ الْعَشِيرِ وَبِكُفْرِ الإِحْسَانِ لَوْ أَحْسَنْتَ إِلَى إِحْدَاهُنَّ الدَّهْرَ ثُمَّ رَأَتْ مِنْكَ شَيْئًا قَالَتْ مَا رَأَيْتُ مِنْكَ خَيْرًا قَطُّ[
“আমি জাহান্নাম দেখেছি কিন্তু আজকের মত ভয়ানক অবস্থায় কখনো দেখিনি। জাহান্নামের মধ্যে আমি নারীদেরকেই অধিকহারে দেখেছি।
লোকেরা প্রশ্ন করলঃ নারীদের বেশীর ভাগ জাহান্নামে যাওয়ার কারণ কি?
তিনি বললেনঃ তাদের কুফরীর (নাফরমানীর) কারণে।
তারা আরয করলঃ নারীরা কি আল্লাহর সাথে কুফরী করে?
তিনি বললেনঃ তারা ¯^vgxi সাথে কুফরী করে। অর্থাৎ তার অনুগ্রহের কৃতজ্ঞতা না করে তা A¯^xKvi করার কারণে অধিকহারে জাহান্নামে যায়। তুমি দেখবে তাদের কারো সাথে সারা জীবন করুণা ও অনুগ্রহের আচরণ করার পর যদি সে তোমার নিকট সামান্য কোন ত্রুটি দেখতে পায়, তাহলে বলে ফেলবে, আপনার নিকট থেকে কখনো কোন উপকার পেলাম না।”[28]
(আপনার সংসারে আসার পর থেকে দুঃখেই আমার দিন যাচ্ছে।)
(আপনার সংসারে আসার পর থেকে দুঃখেই আমার দিন যাচ্ছে।)
5) বিনা কারণে ¯^vgxi নিকট তালাক চাওয়াঃ
ছওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
]أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا الطَّلاقَ فِي غَيْرِ مَا بَأْسٍ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْجَنَّةِ[
“যে নারী কোনরূপ অসুবিধা ছাড়াই বিনা কারণে ¯^vgxi নিকট তালাক চায়, তার জন্য জান্নাতের সুঘ্রাণ হারাম।”[29]
কিন্তু এই তালাক চাওয়া যদি কোন শরঈ কারণে হয়, যেমন ¯^vgx যথাযথভাবে স্ত্রীর হক আদায় করে না, তার ভরণ-পোষণে শীথিলতা করে অথবা ¯^vgx শরীয়ত বহির্ভূত চলাফেরা করে, তবে তালাক চাওয়াতে কোন দোষ নেই। কিন্তু আাফসোস বর্তমান সমাজ সম্পূর্ণ বিপরীত। এমন অনেক নারী এমন আছে, যারা ¯^vgxi কাছে অন্যায় আবদার করে। আর ¯^vgx তা পূরণ করতে A¯^xKvi করলে বা ব্যর্থ হলে বলে আমাকে তালাক দিয়ে দাও। যেমন দাবী করে বাড়িতে টেলিভিশনের ব্যবস্থা করতে হবে, গান-বাদ্যের জন্য ওডিও-ভিডিও রাখতে হবে। সিনেমা, পার্টি ও ক্লাবে নিয়ে যেতে হবে। বল্গাহীন বেপর্দা চলাফেরা করার ¯^vaxbZv দিতে হবে... ইত্যাদি।
6) ¯^vgxi উপস্থিতিতে তার বিনা অনুমতিতে নফল রোযা রাখাঃ
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]لا تَصُومُ الْمَرْأَةُ وَبَعْلُهَا شَاهِدٌ إِلا بِإِذْنِهِ[
সন্দেহ নেই যে ¯^vgx গৃহে থাকলে স্ত্রী যদি রোযা রাখে তবে তাকে তার হক থেকে বঞ্চিত করা হবে। যা তাকে ফিতনা বা অসৎ পথে হাঁটার রাস্তা সুগম করে দিবে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এখানে উদ্দেশ্য হচ্ছে নফল রোযা। কেননা ফরয রোযা আল্লাহর হক। আর ¯^vgxi হক পূর্ণ করার আগে আল্লাহর হক পূরা করা অতি আবশ্যক।
7) সহবাস থেকে ¯^vgx‡K বাধা দেয়াঃ
নারী জাতির সৃষ্টি পুরুষকে উপলক্ষ্য করে হয়েছে। পুরুষের প্রশান্তি ও আনন্দের মাধ্যম হচ্ছে নারী। বিবাহ নামক পবিত্র বন্ধনের মাধ্যমে পরস্পর পরস্পরের আপন হয়। একজন নারী স্ত্রী হিসেবে ¯^vgxi যাবতীয় আভ্যন্তরীন প্রয়োজন পূরণ করবে, তার গৃহের দেখাশোনা, সন্তানদের লালন-পালন ও সংসারের পরিপাটিতে নিজেকে ব্যস্ত রাখবে। সেই স্ত্রী ¯^vgxi হৃদয় বাগের ফুল হিসেবে তাকে খোশবু দিবে, ভালবাসার বন্ধনে তাঁকে সঁপে দিবে নিজের দেহ মন। ফলে ভরে উঠবে তাদের দাম্পত্য জীবন ¯^Mx©q সুখের অমৃত সুধায়।
দাম্পত্য জীবনের সুন্দর এই সম্পর্কের কথা মহান স্রষ্টা আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করে এরশাদ করেনঃ
]وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُمْ مِنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُمْ مَوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ[
“আর তাঁর নিদর্শন সমূহের মধ্যে একটি এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য হতে স্ত্রীগণকে সৃষ্টি করেছেন। যাতে করে তোমরা তাদের নিকটে শন্তি লাভ কর। আর তোমাদের উভয়ের মাঝে সৃষ্টি করেছেন ভালবাসা ও সহানুভুতি। এতে রয়েছে নিদর্শন সেই লোকদের জন্য যারা চিন্তা করে থাকে।”[31]
কিন্তু তারপরও কোন নারী যদি নিজের সৌন্দর্যের অহংকারে, বাপ-দাদা ও ধন-সম্পদের অহমিকায় ¯^vgxi সাথে অসদাচরণ করে, আঙ্গুলের দোলায় তাকে চালাতে চায়- এমনকি ¯^vgx‡K শরীরিক অধিকার থেকে বাধা দেয় ও বঞ্চিত রাখে। এ নারী সৃষ্টি কুলের মধ্যে নিকৃষ্ট ও অভিশপ্ত। যেমনটি হাদীছে সুস্পষ্ট ভাষায় বর্ণিত হয়েছে।
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ فَبَاتَ غَضْبَانَ عَلَيْهَا لَعَنَتْهَا الْمَلائِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ[
“কোন ব্যক্তি যদি স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে, কিন্তু স্ত্রী তার আহবান প্রত্যাখ্যান করে, অতঃপর ¯^vgx ivMw¤^Z অবস্থায় রাত কাটায় তবে, প্রভাত হওয়া পর্যন্ত ফেরেশতাগণ সে স্ত্রীকে অভিশাপ দেয়।”[32]
উক্ত হাদীছের সমর্থনে ত্বলক বিন আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]إِذَا الرَّجُلُ دَعَا زَوْجَتَهُ لِحَاجَتِهِ فَلْتَأْتِهِ وَإِنْ كَانَتْ عَلَى التَّنُّورِ[
Ò¯^vgx যদি প্রয়োজন পূরণের (সহবাসের) জন্য স্ত্রীকে আহবান করে, তবে সে যেন তাৎক্ষণিক তার ডাকে সাড়া দেয়; যদিও সে চুলার কাছে বসে থাকে না কেন।”[33]
অন্য এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
]وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا مِنْ رَجُلٍ يَدْعُو امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهَا فَتَأْبَى عَلَيْهِ إِلا كَانَ الَّذِي فِي السَّمَاءِ سَاخِطًا عَلَيْهَا حَتَّى يَرْضَى عَنْهَا[
“শপথ সেই সত্বার যার হাতে আমার প্রাণ, কোন ব্যক্তি যদি স্ত্রীকে বিছানায় (সহবাসের জন্য) আহবান করে আর সে উহা প্রত্যাখ্যান করে, তবে আকাশের অধিপতি আল্লাহ্ তা’আলা ততক্ষণ পর্যন্ত তার উপর অসন্তুষ্ট থাকবেন যে পর্যন্ত ¯^vgx তার উপর সন্তুষ্ট না হয়।”[34]
8) ¯^vgx-¯¿xi গোপন কথা অন্যের কাছে ফাঁস করাঃ
এটি সমাজের একটি ভয়ানক ব্যধি। জ্ঞানের ¯^íZv ও লজ্জহীনতার কারণে অনেক নারী, অনেক পুরুষ পরস্পর সহবাসের বিবরণ অন্যের কাছে বর্ণনা করে থাকে।
আসমা বিনতে ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]لَعَلَّ رَجُلا يَقُولُ مَا يَفْعَلُ بِأَهْلِهِ وَلَعَلَّ امْرَأَةً تُخْبِرُ بِمَا فَعَلَتْ مَعَ زَوْجِهَا فَأَرَمَّ الْقَوْمُ فَقُلْتُ إِي وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهُنَّ لَيَقُلْنَ وَإِنَّهُمْ لَيَفْعَلُونَ قَالَ فَلا تَفْعَلُوا فَإِنَّمَا ذَلِكَ مِثْلُ الشَّيْطَانِ لَقِيَ شَيْطَانَةً فِي طَرِيقٍ فَغَشِيَهَا وَالنَّاسُ يَنْظُرُونَ[
“সম্ভবতঃ ¯^vgx নিজের স্ত্রীর সাথে কিছু করে উহা অন্যের কাছে প্রকাশ করে দেয়। সম্ভবতঃ স্ত্রী নিজ ¯^vgxi সাথে যা কিছু করে তা অন্যের কাছে বর্ণনা করে দেয়!? একথা শুনে লোকেরা চুপ থাকল, কেউ জবাব দিল না। আমি বললাম, আল্লাহর শপথ হে আল্লাহর রাসূল! নারীরা এরূপ করে থাকে এবং পুরুষরাও এরূপ করে থাকে।
তিনি বললেন, তোমরা এরূপ করো না। কারণ এটা শয়তানী ব্যবহার। এদের উদাহরণ হচ্ছে সেই শয়তানের মত যে রাস্তার ধারে নিজ শয়তানী স্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে অতঃপর সেখানেই তার সথে সহবাসে লিপ্ত হয়। আর লোকেরা তাদেরকে দেখতে থাকে।”[35]
অন্য বর্ণনায় আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
]إِنَّ مِنْ أَعْظَمِ الأَمَانَةِ عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الرَّجُلَ يُفْضِي إِلَى امْرَأَتِهِ وَتُفْضِي إِلَيْهِ ثُمَّ يَنْشُرُ سِرَّهَا[
“নিশ্চয় ক্বিয়ামত দিবসে আল্লাহর নিকট অন্যতম বড় আমানত হচ্ছে, ¯^vgx-¯¿xi গোপন বিষয়। এক ব্যক্তি ¯^xq স্ত্রীর সাথে সহবাসে লিপ্ত হয় অতঃপর তার গোপন কর্মের বিবরণ প্রকাশ করে দেয়।”[36]
অপর বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ ক্বিয়ামত দিবসে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক নিকৃষ্ট হচ্ছে সেই লোক, যে নিজ স্ত্রীর সাথে সহবাসে লিপ্ত হয় অতঃপর তার গোপন কর্মের বিবরণ মানুষের কাছে প্রকাশ করে দেয়।”[37]
9) ¯^vgxi গৃহ ছাড়া অন্যের বাড়ীতে নিজের কাপড় খোলাঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]مَا مِنِ امْرَأَةٍ تَضَعُ ثِيَابَهَا فِي غَيْرِ بَيْتِ زَوْجِهَا إِلَّا هَتَكَتِ السِّتْرَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ رَبِّهَا[
“যে নারী নিজ ¯^vgxi বাড়ী ব্যতীত অন্য কারো বাড়ীতে গিয়ে নিজের কাপড় খোলে, তবে আল্লাহ তার লজ্জার পর্দাকে বিচ্ছিন্ন করে দেন।”[38]
অর্থাৎ- যে নারী অন্য গৃহে গিয়ে পরপুরুষের সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তার চাইতে অসভ্য, বেহায়া ও খরাপ কোন নারী নেই। অনেক এমন নারী আছে যারা হয়তো রাস্তায় চলাফেরাতে পর্দা বজায় রাখে কিন্তু উদ্দেশিত স্থানে পৌঁছে গেলে পর্দার ধারধারে না এসব নারীও এই হাদীছের আওতাভূক্ত হবে।
10) ¯^vgxi বিনা অনুমতিতে কাউকে তার বাড়ীতে প্রবেশ করানোঃ
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, Ò¯^vgxi উপস্থিতিতে তার অনুমতি ব্যতিরেকে কোন স্ত্রীর নফল রোযা রাখা বৈধ নয়। ¯^vgxi অনুমতি ব্যতীত কাউকে তার বাড়ীতে প্রবেশ করতে দিবে না। ¯^vgxi বিনা অনুমতিতে কিছু খরচ করলে তার অর্ধেক ছওয়াব ¯^vgx‡KI দেয়া হবে।”[39]
11) ¯^vgxi অনুমতি না নিয়ে তার গৃহ থেকে বাইরে যাওয়াঃ
নারীর প্রাসাদ ও তাজমহল হচ্ছে তার ¯^vgx গৃহ- যেখানে সে দাম্পত্য সংসার অতিবাহিত করবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া গৃহ থেকে বের হবে না। আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন,
]وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ[
এই আয়াতের তাফসীরে ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, নারী ¯^vgx গৃহেই অবস্থান করবে বিনা প্রয়োজনে গৃহ থেকে বের হবে না। যেহেতু ¯^vgxi আনুগত্য করা নারীর জন্য ওয়াজিব তাই তার গৃহ থেকে তার অনুমতি বেতিরেকে বাইরে যাওয়া জায়েয নয়।[41]
12) আল্লাহর অবাধ্য হয়ে ¯^vgxi আনুগত্য করাঃ
যদিও ¯^vgxi আনুগত্য করা নারীর উপর ওয়াজিব ও তার নাফরমানী করা হারাম। কিন্তু এই আনুগত্য হতে হবে সুমহান স্রষ্টা আল্লাহ ও তাঁর হাবীব সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্যের পরে, তাঁদের আদেশ-নিষেধ বাস্তবায়ন করার পরে। ¯^vgx যদি এমন বিষয়ে আদেশ করে যাতে রয়েছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী তবে তা শোনা যাবে না তা মানা যাবে না তার আনুগত্য করা যাবে না।
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
]لا طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ[
আল্লাহকে নাখোশ রেখে পৃথিবীর কোন মানুষকে খুশি করা যাবে না। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাদীছে এরশাদ করেছেনঃ
]مَنِ الْتَمَسَ رِضَا اللَّهِ بِسَخَطِ النَّاسِ كَفَاهُ اللَّهُ مُؤْنَةَ النَّاسِ وَمَنِ الْتَمَسَ رِضَا النَّاسِ بِسَخَطِ اللَّهِ وَكَلَهُ اللَّهُ إِلَى النَّاسِ[
“যে ব্যক্তি আল্লাহকে নাখোশ করে মানুষকে খুশি করবে আল্লাহ তার প্রতি নাখোশ হবেন এবং মানুষকেও তার উপর অসন্তুষ্ট করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি মানুষের অসন্তুষ্টি সত্বেও আল্লাহকে সন্তুষ্ট করবে আল্লাহ তার প্রতি খুশি হবেন এবং মানুষকেও তার উপর খুশি করে দিবেন।”[43]
সুতরাং ¯^vgx যদি স্ত্রীকে বেপর্দা, নামাযে অলসতা, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন প্রভৃতি আল্লাহকে নাখোশকারী কাজের আদেশ দেয়, তবে তার আদেশ শোনা যাবে না মানা যাবে না। অনুরূপভাবে স্ত্রীও যদি এধরণের অশ্লীলতা ও গর্হিত বিষয়ে ¯^vgx‡K পরামর্শ প্রদান করে তবে তার পরামর্শ গ্রহণ করা চলবে না।
¯^vgxi খেদমতঃ
সম্মানিত মুসলিম বোন! নিম্নে আল্লাহর নবীর মহিলা ছাহাবীদের অসংখ্য কাহিনী থেকে জনৈক নারীর ঘটনা বর্ণনা করছি। বুদ্ধিমানের জন্য ইঙ্গিতই যথেষ্ট। কিভাবে তাঁরা ¯^vgxi খেদমত করতেন তার এক দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করা হচ্ছে।
আবু বকর (রাঃ) সম্পর্কে কেই বা না জানে। তাঁর কলিজার টুকরা কন্যা আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যুবাইর (রাঃ) আমাকে যখন বিবাহ করেন, তখন তাঁর কোন জায়গা-যমিন ছিল না, কোন দাস-দাসী ছিল না কিছুই ছিল না। শুধুমাত্র একটি ঘোড়া ছিল।
আসমা বলেন, আমিই ঘোড়টিকে দানা-পানি খাওয়াতাম, ঘাস ও খড়ের যোগান দিতাম। ঘোড়ার জন্য খেজুরের আঁটি কুটে তার খাদ্যে মিশাতাম তথা সার্বক্ষণিক তাকে খাওয়াতাম ও পানি পান করাতাম। তাঁর জন্য আটা খামির করতাম। কিন্তু আমি তখন ভালভাবে রুটি বানাতে জানতাম না। আমার কিছু পড়শী আনছারী মহিলা ছিলেন তাঁরাই আমাকে রুটি বানিয়ে দিতেন। ওরা খুবই ভাল মহিলা ছিলেন।
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুবাইরকে যে যমীন দিয়েছিলেন সেখান থেকে আমি খেজুরের বিচির বোঝা নিজের মাথায় নিয়ে হেঁটে হেঁটে বাড়ী আসতাম। ঐ স্থানটি আমাদের বাড়ী থেকে দু’মাইল দূরে ছিল।[44]
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “নারী যদি জানতো ¯^vgxi কি হক, তবে ¯^vgxi দুপুরের খানা বা রাতের খানা উপস্থিত হলে খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সে বসতো না। দাঁড়িয়েই থাকতো।”[45]
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর আদরের দুলালী জান্নাতের সর্দারীনী ফাতেমা (রাঃ) তাঁর ¯^vgx আলী (আঃ)এর খেদমত করতেন। খাদেম বা দাসী ছাড়াই ¯^vgxi গৃহের যাবতীয় কাজ নিজ হাতে সম্পাদন করতেন। আটা পিষতে গিয়ে যাঁতা ঘুরাতে ঘুরাতে হাতে ফোসকা পড়ে গিয়েছিল। কলসি কাঁখে পানি আনতে আনতে কোমরে দাগ পড়ে গিয়েছিল। বাড়ি-ঘর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করতে করতে পরনের কাপড় ধুলামলিন হয়ে গিয়েছিল। রান্না-বান্না করতে করতে কাপড় কালো হয়ে গিয়েছিল। একবার যুদ্ধে বন্দী কিছু দাসী মদীনায় এলে তা থেকে একটি দাসী চাইতে ফাতেমা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর কাছে গেলেন। কিন্তু তাঁকে পেলেন না। আয়েশা (রাঃ) এর কাছে আগমণের উদ্দেশ্য বলে ফিরে গেলেন। আয়েশা (আঃ) এর মুখে নবীজী তাঁর আদরের দুলালীর আগমনের কথা শুনে নিজেই তার সাথে দেখা করতে বের হলেন। গিয়ে দেখেন তাঁরা শুয়ে পড়েছেন। নবীজীর আগমনে তারা উঠে বসতে চাইলেন। কিন্তু তিনি বাধা দিয়ে তাদের মধ্যখানে বসে পড়লেন এবং বললেন, তোমরা যা চেয়েছো আমি কি তার চাইতে উত্তম জিনিস তোমাদেরকে দান করব না? তোমরা যখন শয্যা গ্রহণ করবে, তখন ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ্’ পাঠ করবে, ৩৩ বার ‘আল হামদুলিল্লাহ’ বলবে এবং ৩৪ বার ‘আল্লাহু আকবার’ পাঠ করবে। ইহা তোমাদের জন্য একজন খাদেমের চাইতে উত্তম হবে।”[46]
মেয়ের বিবাহ দেয়ার পর জনৈক মায়ের নসীহতঃ
উমামা বিনতে হারেছ নিজ কন্যার বিবাহের সময় তাকে এমন কিছু নসীহত করেন যা শুধু মেয়ের জন্যই নয়; বরং পরবর্তী সমস্ত নারীর জন্য মাইল ফলক হিসেবে অবশিষ্ট থাকবে।
তিনি মেয়েকে লক্ষ্য করে বলেন, ওহে আমার কলিজার টুকরা মেয়ে! আজ তুমি নিজের পিতা-মাতা, ভাই-বোন, AvZ¥xq-¯^Rb, বান্ধবী ও প্রতিবেশী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এমন এক অপরিচিত পরিবেশে এমন এক অপরিচিত ব্যক্তির নিকট গমণ করছো যেখানেই রয়েছে তোমার আসল ঠিকানা সেই ব্যক্তিই তোমার প্রকৃত বন্ধু সাথী ও কল্যাণকামী। তুমি ওখানের আচার-আচরণ ও পরিবেশ সম্পর্কে মোটেও অবগত নও। তুমি যদি ¯^vgxi দাসী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পার, তবে দেখবে সেও তোমার দাসে পরিণত হয়েছে।
এই মূহুর্তে আমি তোমাকে কতিপয় নসীহত করছি। আল্লাহ চাহে তো এগুলো তোমার জীবনের সাফল্য ও সুখি দাম্পত্য জীবনের জন্য পাথেয় হবে।
1) ¯^vgxi প্রতি বিনীত থাকবে এবং অল্পতেই তার উপর সন্তুষ্ট হবে।
2) ভালভাবে তার কথা শুনবে ও মানবে।
3) -৪) তার চোখ ও নাকের পসন্দের প্রতি লক্ষ্য রাখবে। তোমাকে যেন কখনো খারাপ দৃশ্যে সে না দেখে এবং তোমার নিকট থেকে কখনো যেন সর্বোত্তম সুগন্ধি ছাড়া অন্য কিছু না পায়।
৫)-৬) তার খাওয়া দাওয়া ও নিদ্রার বিষয়ে বিশেষ খেয়াল রাখবে। কেননা ক্ষুধা ও অনিদ্রা মানুষকে বদমেজাজী ও †µvavw¤^Z করে তোলে।
৭) তার ধন-সম্পদের রক্ষণা-বেক্ষণ করবে। হিসাবের সাথে পরিমাণমত তার সম্পদ খরচ করবে।
৮) তার পরিবার-পরিজন ও দাস-দাসীর দেখাশোনা করবে। উত্তমভাবে মনযোগসহকারে তার সন্তান-সন্তুতিকে লালন-পালন করবে।
৯) তার কোন গোপন বিষয় ফাঁস করবে না ও তার নাফরমানী করবে না। কেননা তার গোপন তথ্য ফাঁস করে দিলে একদিন সে তোমাকে ধোঁকা দিবে। অবাধ্য হলে তার বুকে আগুন জ্বালাবে তাকে †µvavw¤^Z করবে।
১০) তুমি কাঙ্খিত লক্ষ্যে কখনই পৌঁছতে পারবে না যে পর্যন্ত তার সন্তুষ্টিকে নিজের সন্তুষ্টির উপর স্থান না দিবে, তার পছন্দ-অপছন্দকে নিজের পছন্দ-অপছন্দের উপর স্থান না দিবে।[47]
স্বামীর প্রতি ভালবাসা বৃদ্ধির জন্য স্ত্রীকে কতিপয় উপদেশঃ
শায়খ ইবনু জুবাইলান স্বামীর ভালবাসা ও প্রীতি অর্জন করার জন্য নারীদেরকে উদ্দেশ্যে করে কিছু নসীহত করেছেন। তা নিম্নরূপঃ
1) বিভিন্ন উপলক্ষে স্বামীর হাতে কপালে চুম্বন করা।
2) স্বামী বাইরে থেকে এলে সাথে সাথে স্বাগতম জানানোর জন্য দরজায় এগিয়ে আসা। তার হাতে কোন বস্তু থাকলে তা নিজের হাতে নেয়ার চেষ্টা করা।
3) সময় ও মেজাজ বুঝে স্বামীর সামনে প্রেম-ভালবাসা মিশ্রিত বাক্যালাপ করা। তার সামনে তার প্রশংসা করা। সম্মান ও শ্রদ্ধা মূলক আচরণ করা।
4) স্বামীর পোশাক-আশাকের পরিচ্ছন্নতার প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা। (পরিচ্ছন্ন পুরুষ মানেই তার স্ত্রী পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন)। রান্নার ক্ষেত্রে স্বামী যা পছন্দ করেন তা নিজ হাতে প্রস্তুত করতে সচেষ্ট থাকা।
5) সর্বদা স্বামীর সামনে হাসি মুখে থাকা।
6) স্বামীর জন্য নিজেকে সুসজ্জিত রাখা। শরীরে দুর্গন্ধ থাকলে বা রান্না ঘরের পোষাকে তার সম্মুখে না যাওয়া। মাসিক ঋতুর সময়ও সুসজ্জিত অবস্থায় থাকা।
7) স্বামীর সামনে কখনই নিজের কন্ঠকে উঁচু না করা। নারীর সৌন্দর্য তার নম্র কন্ঠে।
8) সন্তানদের সামনে স্বামীর প্রশংসা ও গুণগান করা।
9) নিজের এবং স্বামীর পিতা-মাতা, ভাই-বোন ও আত্মীয়-স্বজনের সামনে আল্লাহর কৃতজ্ঞতার সাথে সাথে স্বামীর প্রশংসা করা ও তার শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরা। কখনই তার বিরুদ্ধে তাদের নিকট অভিযোগ করবে না।[48]
10) সুযোগ বুঝে স্বামীকে নিজ হাতে লোকমা তুলে খাওয়ানো।
11) কখনো স্বামীর আভ্যন্তরীন গোপন বিষয় অনুসন্ধান না করা। কেননা কুরআনে আল্লাহ্ বলেন,
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
তোমরা কারো প্রতি কুধারণা থেকে বেঁচে থাক। কেননা ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা।”[49]
ولا تجسسوا
“তোমরা কারো গোপন বিষয় অনুসন্ধান কর না।” (সূরা হুজুরাত -১৩) নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
তোমরা কারো প্রতি কুধারণা থেকে বেঁচে থাক। কেননা ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা।”[49]
12) স্বামী কখনো রাগম্বিত হলে চুপ থাকার চেষ্টা করা। সম্ভব হলে তার রাগ থামানোর চেষ্টা করা। যদি সে নাহক রেগে থাকে তবে অন্য সময় তার মেজাজ বুঝে সমঝোতার ব্যবস্থা করা।
13) স্বামীর মাতাকে নিজের পক্ষ থেকে (সাধ্যানুযায়ী) কিছু হাদিয়া-উপহার প্রদান করা।
14) সম্পদশালী হয়ে থাকলে স্বামীর অভাব অনটনের সময় তাকে সহযোগিতা করা।
উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! (আমার স্বামী) আবু সালামার সন্তানদের জন্য যদি আমি অর্থ ব্যয় করি তবে কি তাতে আমি প্রতিদান পাব। ওদেরকে তো এভাবে ছেড়ে দিতে পারি না। ওরা তো আমারও সন্তান। তিনি বললেন, হ্যাঁ, তুমি যে পরিমাণ তাদের জন্য সম্পদ খরচ করবে, তোমাকে তার প্রতিদান দেয়া হবে।” (বুখারী ও মুসলিম)
উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! (আমার স্বামী) আবু সালামার সন্তানদের জন্য যদি আমি অর্থ ব্যয় করি তবে কি তাতে আমি প্রতিদান পাব। ওদেরকে তো এভাবে ছেড়ে দিতে পারি না। ওরা তো আমারও সন্তান। তিনি বললেন, হ্যাঁ, তুমি যে পরিমাণ তাদের জন্য সম্পদ খরচ করবে, তোমাকে তার প্রতিদান দেয়া হবে।” (বুখারী ও মুসলিম)
15) স্বামীর নির্দেশ পালন, তার এবং তার সংসারের খেদমত প্রভৃতির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে প্রতিদানের আশা করা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন