Views:
A+
A-
দুই- যখন মসজিদে যাবে তখন দুর্গন্ধ হতে দূরে থাকবে।
জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
তিন- মসজিদে সালাতের জামা‘আত কায়েম করা ওয়াজিব।
পুরুষের জন্য মসজিদ ছাড়া সালাত আদায় করা জায়েয নাই। এ বিষয়টির উপর প্রমাণ ঐ সব দলীল যেগুলো জামা‘আতের সাথে সালাত আদায় করা ওয়াজিব হওয়াকে প্রমাণ করে। মনে রাখবে, জামা‘আতে সালাত আদায় করা ফরযে আইন [12]তবে যদি মসজিদ পাওয়া না যায় অথবা মসজিদ অনেক দূরে; আযান শোনা যায় না অথবা সফরে অবস্থান করছে, তখন জামা‘আতে সালাত আদায় করা ফরয নয়। জামা‘আত শুধু সক্ষম ব্যক্তির উপর ওয়াজিব, অক্ষমের উপর নয়। যারা অক্ষম তারা যে কোন পবিত্র স্থানে সালাত আদায় করে নেবে। কারণ, যাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
পাঁচ: জরুরতের সময় কাফেরের মসজিদে প্রবেশ করা কোন প্রকার ক্ষতি করা ও কষ্ট দেয়া ছাড়া।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
ছয়- মসজিদে ভালো অর্থবোধক উপকারী কবিতা পড়া বৈধ।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন,
সাত- মসজিদে হারানো বস্তু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা না করা।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
আট- মসজিদে বেচা-কেনা করা হারাম।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
নয়- মসজিদের ভিতরে হদ কায়েম করা যাবে না এবং কাউকে বন্দী রাখা যাবে না।
হাকিম বিন হিযাম রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
দশ- মসজিদে ঘুমানো, খাওয়া, ঘর বানানো অসুস্থ লোককে জায়গা।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
এগার- মসজিদে বৈধ খেলা যেগুলির অনুমতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিয়েছেন।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
বার- মসজিদকে উঁচা-মজবুত করা, সজ্জিত করা এবং মসজিদ বানানোর ক্ষেত্রে অপচয় না করার বিধান।
তের: মসজিদে বৈধ কথা-বার্তা বলাতে কোন অসুবিধা নাই।
জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন,
চৌদ্দ- মসজিদে বড় আওয়াজে কথা বলা নিষিদ্ধ।
কারণ, আওয়াজ বড় করাতে মুসল্লীদের মনোযোগ নষ্ট হয়। সুতরাং, মসজিদে আওয়াজ বড় করবে না, যদিও কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে হয়। আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন,
পনের- মসজিদের খুঁটির মাঝখানে সালাত আদায় করা।
একা সালাত আদায়কারী ও ইমামের জন্য এতে কোন অসুবিধা নাই। আর মুক্তাদীদের জন্য মসজিদে জায়গা থাকা সত্বেও খুঁটির মাঝে সালাত আদায় করা মাকরূহ। কারণ, খুঁটি কাতারের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করে। তবে মসজিদে জায়গা না হলে তখন কোন অসুবিধা নাই। এ বিষয়ে আনাস বিন মালেক হতে হাদিস বর্ণিত, আব্দুল হুমাইদ বিন মাহমুদ রাহিমাহুল্লাহু বলেন,
ষোল- জুমু‘আর সালাতের পূর্বে মসজিদে হালকা করা।
আব্দুল্লাহ বিন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন,
সতের- ঘুম আসলে স্থান পরিবর্তন করা।
ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন,
আঠার- গির্জায় সালাত আদায় করা, গির্জাকে পরিষ্কার করা ও গির্জার স্থানে মসজিদ বানানো।
তল্ক বিন আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
উনিশ- মসজিদ ও বাজারে ধারালো অস্ত্র বহন হতে বিরত থাকার নির্দেশ।
আবু মুসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
বিশ- মহিলাদের মসজিদে সালাত আদায় করা:
একুশ- জুমু‘আর সালাতের পূর্বে ইমামের খুতবা দেয়ার সময় মসজিদে দুই হাঁটু উঠিয়ে দুই পা পেটের দিক গুটিয়ে কাপড় পেঁচিয়ে জমিনে নিতম্ব রেখে বসা।
মুয়ায বিন আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
বাইশ- মিম্বার:
খতীবের আরোহণ করার সিঁড়িকে উঁচা হওয়ার কারণে মিম্বার বলে।[121] হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের একটি মিম্বার গ্রহণ করেন। আবু হাযেম হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
তেইশ- মসজিদে গমনের সময় এখলাস থাকতে হবে, যাতে মহা ছাওয়াব লাভে ধন্য হয়।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, « من أتى المسجد لشيء فهو حظه ». “যে ব্যক্তি কোন কিছুর জন্য মসজিদে আসে, তাই তার অংশ”।[129]
চব্বিশ- বিনা ওজরে কাছের মসজিদ ছেড়ে অন্য মসজিদে যাওয়া হতে সতর্ক থাকবে।
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «ليصلِّ أحدكم في مسجده ولا يتتبع المساجد». “তোমরা তোমাদের নিজেদের মসজিদে সালাত আদায় করবে। মসজিদ খোঁজাখুঁজি করবে না”।[131]
পঁচিশ- মানুষের কাঁধের উপর মাড়িয়ে যাওয়া থেকে সতর্ক থাকবে।
আব্দুল্লাহ বিন বুসর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
২৬- দুই ব্যক্তিকে আলাদা করবে না।
সালমান ফারসী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
সাতাশ- মুসল্লীর সামনে এবং তার সুতরার মাঝে হাঁটবে না।
আবু জাহামের হাদিসে রয়েছে, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
আটাশ- মসজিদে সালাত আদায়ের জন্য কোন স্থানকে নির্ধারিত করবে না:
আব্দুর রহমান বিন শিবল বলেন,
ঊনত্রিশ- বসার জন্য কাউকে তার জায়গা থেকে উঠাবে না।
জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
ত্রিশ- জুমু‘আর দিন খুতবার শ্রবণ করার জন্য চুপ করে থাকবে।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
একত্রিশ- আযান ও ইকামতের মাঝে মানুষের সাথে কথা-বার্তা বলে, দুনিয়ার বিষয়ে অধিক প্রশ্ন করে, কুরআন তিলাওয়াত ও আল্লাহর যিকির হতে বিরত থেকে মূল্যবান সময়কে নষ্ট করবে না।
আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে মারফু‘ হাদিস বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
বত্রিশ- জুমু‘আর দিন বা অন্য দিন জায়নামায ইত্যাদি দিয়ে কোন জায়গাকে দখল করে রাখবে না।
কারণ, এটি হল মসজিদের কোন অংশকে বিছানা দিয়ে জবর দখল রাখার শামিল এবং অন্য মুসল্লী যারা আগে মসজিদে আসে তাদেরকে সে জায়গায় সালাত আদায় থেকে বাধা দেয়ার নামান্তর। মানুষকে মসজিদে আগে আগে আসার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি কোন ব্যক্তি বিছানা পাঠিয়ে দেয় এবং সে নিজে দেরিতে আসে, সে দুই দিক দিয়ে শরিয়তের বিরোধিতা করল; এক- তাকে আগে আসার নির্দেশ দেয়া হল, সে তা না করে দেরীতে মসজিদে আসল। দুই- সে মসজিদের কিছু অংশকে জবর দখল করে রাখল। ফলে যারা মসজিদে আগে আসবে, তাদের তাতে সালাত আদায় করতে বাধা দিল এবং প্রথম কাতার পুরো করা থেকে নিষেধ করল এবং যখন মানুষ উপস্থিত হবে, তখন তাদেরকে ফাঁক করে সামনে এগুতে হবে।[145] আল্লামা আব্দুর রহমান আস-সা‘দী রাহিমাহুল্লাহু এ কাজটিকে নাজায়েজ বলে ফতোয়া দেন। তিনি বলেন, এ ধরনের কর্ম হালাল নয়। কারণ, এটি শরিয়তের পরিপন্থী এবং সাহাবায়ে কেরাম ও কেয়ামত পর্যন্ত তাদের অনুসারীদের আদর্শের পরিপন্থী।[146]
তেত্রিশ- গোসল ফরয হয়েছে এমন ব্যক্তি এবং ঋতুবতী মহিলা মসজিদে বসবে না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
মসজিদের বিধানসমূহ
এক- মসজিদসমূহ পরিষ্কার করা, মসজিদ সুগন্ধময় রাখা এবং মসজিদ সংরক্ষণ করা।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন,
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন,
« أمر رسول الله صلى الله عليه و سلم ببناء المساجد في الدور وأن تنظف، وتطيب »
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বিভিন্ন বাড়ীতে বাড়ীতে (তথা এলাকায়) মসজিদ বানানো [1] এবং মসজিদকে পরিষ্কার করা ও সুগন্ধময় করারনির্দেশ দেন”।[2]
সামুরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি তার ছেলের নিকট এ বলে চিঠি লেখেন-
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
((أما بعد، فإن رسول الله صلى الله عليه و سلم كان يأمرنا بالمساجد أن نصنعها في دورنا، ونصلح صنعتها، ونطهرها)).
“অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আমাদের এলাকায় মসজিদ বানানো এবং মসজিদের সংস্কার করা ও পবিত্র করার নির্দেশ দিতেন”।[3] আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
أن رجلاً أسودَ أو امرأة سوداء كان يقمُّ المسجد فمات ولم يعلم النبي صلى الله عليه و سلم بموته، فذكره ذات يوم، فقال: « ما فعل ذلك الإنسان »؟ قالوا: مات يا رسول الله، قال: « أفلا آذنتموني » ؟فقالوا: إنه كان كذا وكذا قصته، قال: فحقروا شأنه، قال: « دلّوني على قبره » أو قال: « على قبرها »فأتى قبرها فصلى عليها، [ثم قال: « إن هذه القبور مملوءة ظلمة على أهلها، وإن الله تعالى ينوِّرها لهم بصلاتي عليهم ».
“একজন কালো ব্যক্তি বা মহিলা মসজিদ পরিষ্কার করত।[4] লোকটি মারা গেল কিন্তু তার মৃত্যু সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানানো হয়নি। একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার আলোচনা করে তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে বললেন, ঐ লোকটি কি করলেন? তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল লোকটি মারা গেল। তিনি বললেন, তোমরা আমাকে জানাওনি কেন? তারা বলল, সে ছিল এমন এবং তার ঘটনা এই। মোট কথা তারা তার বিষয়টিকে খাট করে দেখলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা আমাকে তার কবর দেখাও অথবা বললেন, তার [মহিলার] কবর দেখাও। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কবরের উপর এসে তার জন্য দু'আ করল। তারপর তিনি বললেন, কবরসমূহ কবর বাসীর জন্য অন্ধকারে পরিপূর্ণ। আর আল্লাহ তা‘আলা কবরসমূহের উপর আমার দু'আ করা দ্বারা আলোকিত করবেন।[5]
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
بينما نحن في المسجد مع رسول الله صلى الله عليه و سلم، إذ جاء أعرابي فقام يبول في المسجد، فقال أصحاب رسول الله صلى الله عليه و سلم: مه، مه ؟ قال: قال رسول الله صلى الله عليه و سلم: « لا تزرموه دعوه » فتركوه حتى بال، ثم إن رسول الله صلى الله عليه و سلم دعاه فقال له: « إن هذه المساجد لا تصلح لشيء من هذا البول والقذر، إنما هي لذكر الله تعالى والصلاة، وقراءة القرآن » أو كما قال رسول الله صلى الله عليه و سلم، قال: فأمر رجلاً من القوم فجاء بدلوٍ من ماءٍ فشنَّه عليه)).
“একদিন আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে মসজিদে বসা ছিলাম তখন একজন গ্রাম্য লোক এসে মসজিদে দাড়িয়ে পেশাব করা আরম্ভ করলে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ তাকে বলল, থাম থাম! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা তাকে বাধা দিও না। তাকে তোমরা আপন অবস্থায় ছেড়ে দাও। তারপর তাকে তারা বাধা দিলেন না। সে নিরাপদে পেশাব করার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে বললেন, নিশ্চয় মসজিদসমূহ আল্লাহ যিকর, কুরআন তিলাওয়াত ও সালাত আদায়ের জন্য। এখানে পেশাব-পায়খানা করা চলবে না। অথবা রাসূল যেভাবে বলেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর এক লোককে এক বালতি পানি এনে তার উপর ঢেলে দেয়ার নির্দেশ দেন এবং পানি ঢেলে দেন।[6]
আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,«البزاق في المسجد خطيئة، وكفَّارتها دفنه » “মসজিদে থু থু ফেলাঅন্যায় আর তার কাফ্ফারা হল, তা দাফন করে দেয়া”। মুসলিমের অপর শব্দে হাদিসটি এভাবে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «التفل في المسجد خطيئة وكفارتها دفنها» “মসজিদে থু থু ফেলা অন্যায়, আর তার কাফ্ফারা হল, তা দাফন করে দেয়া (অর্থাৎ পা মাড়িয়ে ঢেকে ফেলা)”।[7]
আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,«البزاق في المسجد خطيئة، وكفَّارتها دفنه » “মসজিদে থু থু ফেলাঅন্যায় আর তার কাফ্ফারা হল, তা দাফন করে দেয়া”। মুসলিমের অপর শব্দে হাদিসটি এভাবে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «التفل في المسجد خطيئة وكفارتها دفنها» “মসজিদে থু থু ফেলা অন্যায়, আর তার কাফ্ফারা হল, তা দাফন করে দেয়া (অর্থাৎ পা মাড়িয়ে ঢেকে ফেলা)”।[7]
আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«عُرضت عليّ أعمال أمتي: حسنها وسيئها، فوجدت في محاسن أعمالها، الأذى يُماط عن الطريق، ووجدت في مساوئ أعمالها النخاعة تكون في المسجد ولا تدفن »
“আমার উম্মতের নেক আমল এবং বদ-আমলসমূহ আমার নিকট পেশ করা হল। আমি তাদের নেক আমলসমূহের মধ্যে দেখতে পেলাম রাস্তা হতে কষ্টদায়ক বস্তু সরানো। আর তাদের খারাব আমলসমূহে দেখতে পেলাম মসজিদে থু থু ফেলা হয়েছে অথচ তা দাফন করা হয়নি”।[8] ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহু বলেন, এ কথা স্পষ্ট এখানে যে খারাবী ও দুর্নামের কথা বলা হয়েছে, তা শুধু যে ব্যক্তি থু থু ফেলে তার সাথে খাস নয়; বরং যে ব্যক্তি দেখা সত্ত্বেও তা ঢেকে দয়ে দাফন করেনি অথবা খোঁচা ইত্যাদি দিয়ে পরিষ্কার করেনি সবই তার অন্তর্ভুক্ত।[9]
দুই- যখন মসজিদে যাবে তখন দুর্গন্ধ হতে দূরে থাকবে।
জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«من أكل ثوماً أو بصلاً فليعتزلْنا، أو ليعتزلْ مسجدَنا، وليقعدْ في بيته »
“যে ব্যক্তি পেয়াজ বা রশুন খায়, সে যেন আমাদের থেকে অথবা আমাদের মসজিদ থেকে দূরে থাকে এবং সে যেন তার স্বীয় ঘরে বসে থাকে”।
মুসলিম শরীফের অপর এক বর্ণনায় বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «فإن الملائكة تتأذَّى مما يتأذَّى منه الإنس» “নিশ্চয় ফেরেশতারা ঐ সব বস্তু হতে কষ্ট পায়, যে বস্তু হতে মানুষ কষ্ট পায়”।[10] ওমর বিন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু তার জীবনের শেষ প্রান্তে এসে মানুষকে এ বলে ভাষণ দেন,
«إنكم أيها الناس تأكلون شجرتين لا أراهما إلا خبيثتين، هذا البصل والثوم، لقد رأيت رسول الله صلى الله عليه و سلم إذا وجد ريحهما من الرجل في المسجد أمر به فأُخرج، فمن أكلهما فليمتهما طبخاً»
“হে মানুষ তোমরা দুটি গাছ খাও এ দুটিকে খবীস বলেই মনে করি। গাছ দুটি হল, পেয়াজ ও রশুন। আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখেছি, তিনি মসজিদে কোন মানুষ থেকে এ দুটি গাছের দুর্গন্ধ পেলে তাকে মসজিদ থেকে বের করে দিতেন। যদি কেউ খায় সে যেন গাছ দুটিকে সম্পূর্ণ পাক করে নেয়”।[11]
তিন- মসজিদে সালাতের জামা‘আত কায়েম করা ওয়াজিব।
পুরুষের জন্য মসজিদ ছাড়া সালাত আদায় করা জায়েয নাই। এ বিষয়টির উপর প্রমাণ ঐ সব দলীল যেগুলো জামা‘আতের সাথে সালাত আদায় করা ওয়াজিব হওয়াকে প্রমাণ করে। মনে রাখবে, জামা‘আতে সালাত আদায় করা ফরযে আইন [12]তবে যদি মসজিদ পাওয়া না যায় অথবা মসজিদ অনেক দূরে; আযান শোনা যায় না অথবা সফরে অবস্থান করছে, তখন জামা‘আতে সালাত আদায় করা ফরয নয়। জামা‘আত শুধু সক্ষম ব্যক্তির উপর ওয়াজিব, অক্ষমের উপর নয়। যারা অক্ষম তারা যে কোন পবিত্র স্থানে সালাত আদায় করে নেবে। কারণ, যাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«أُعطيت خمساً لم يُعطهنّ أحد قبلي: نُصرت بالرعب مسيرة شهر، وجُعِلت لي الأرض مسجداً وطهوراً، فأيما رجل من أمتي أدركته الصلاة فليصلِّ، وأحلت لي الغنائم ولم تُحلّ لأحد قبلي، وأعطيت الشفاعة، وكان النبي يُبعث إلى قومه خاصة وبُعثتُ إلى الناس عامة»
“আমাকে পাঁচটি জিনিস দেয়া হয়েছে যা আমার পূর্বে আর কাউকে দেয়া হয়নি। আমাকে একমাসের দূরত্ব পর্যন্ত ভীতি দ্বারা সাহায্য করা হয়েছ। আমার জন্য যমিনকে মসজিদ ও পবিত্র করা হয়েছে। সুতরাং, আমার উম্মত হতে যে কোন লোককে সালাতের ওয়াক্ত পেয়ে বসে সে যেন সালাত আদায় করে নেয়। আমার জন্য গণিমতের সম্পদকে হালাল করা হয়েছে যা আমার পূর্বে আর কারো জন্য হালাল করা হয়নি। আমাকে সুপারিশ দেয়া হয়েছে। আর প্রত্যেক নবী তার সম্প্রদায়ের লোকদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে আর আমাকে সমগ্র মানুষের নবী বানিয়ে পাঠানো হয়েছে।[13] ইমাম ইবনুল কাইয়ুম রাহিমাহুল্লাহু বলেন, যে ব্যক্তি হাদিসসমূহে ভালোভাবে চিন্তা করে, তার নিকট এ কথা স্পষ্ট হবে, মসজিদে জামা‘আতের সাথে সালাত আদায় করা ফরযে আইন। তবে কোন কোন অপরাগতা এমন আছে যেগুলোর কারণে জামা‘আত ও জুমু‘আর সালাত ছেড়ে দেয়া বৈধ। কোন প্রকার অপারগতা ছাড়া মসজিদে উপস্থিত হওয়া ছেড়ে দেয়া, বিনা ওজরে জামা‘আত ছেড়ে দেয়ার নামান্তর। সুতরাং আমরা যে সিদ্ধান্ত দ্বারা আল্লাহর দ্বীনকে মানব, একমাত্র ওজর ছাড়া মসজিদে সালাত আদায় করা হতে বিরত থাকে জায়েয নাই। আল্লাহই ভালো জানেন কোনটি বিশুদ্ধ [14]।
চার: কবরকে মসজিদ বানানো হারাম হওয়া।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল বলেন, ((لعن الله اليهود والنصارى اتخذوا قبور أنبيائهم مساجد))؛ আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদের অভিশাপ করেন। তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়েছে।[15] আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাও আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস তারা উভয়ে ইরশাদ করেন,
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল বলেন, ((لعن الله اليهود والنصارى اتخذوا قبور أنبيائهم مساجد))؛ আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদের অভিশাপ করেন। তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়েছে।[15] আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাও আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস তারা উভয়ে ইরশাদ করেন,
((لَمّا نزل برسول الله صلى الله عليه و سلم طفق يطرح خميصة له على وجهه، فإذا اغتم بها كشفها عن وجهه، فقال وهو كذلك: «لعنة الله على اليهود والنصارى، اتخذوا قبور أنبيائهم مساجد يحذر ما صنعو »
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যখন মালাকুল মাওত উপস্থিত হল,[16] তখন তার চেহারার উপর একটি উড়না রাখা হল।[17] যখন তা দিয়ে তার চেহারা ডেকে দেয়া হত, তখন তিনি তা খুলে ফেলতেন।[18] তখন তিনি এ অবস্থায় বলেন, ইয়াহুদী ও খৃষ্টানের উপর আল্লাহ তা‘আলার অভিশাপ তারা তাদের নবীদের কবরসমূহকে মসজিদ বানিয়েছেন। এ বলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারা যা করত, তা থেকে উম্মতকে সতর্ক করেন।[19]
জুনদব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃত্যুর পাঁচ দিন পূর্বে আমি তাকে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন,
« إني أبرأ إلى الله أن يكون لي منكم خليل؛فإن الله تعالى قد اتخذني خليلاً كما اتخذ إبراهيم خليلاً، ولو كنت مُتخذاً من أمتي خليلاً لاتخذت أبا بكر خليلاً، ألا وإن من كان قبلكم كانوا يتخذون قبور أنبيائهم وصالحيهم مساجد، ألا فلا تتخذوا القبور مساجد، فإني أنهاكم عن ذلك»
“আমি আল্লাহর নিকট তোমাদের মধ্য হতে কেউ আমার বন্ধু হওয়া থেকে মুক্তি চাচ্ছি। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা আমাকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করেন যেমনটি তিনি ইব্রাহিমকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করেন। আমি যদি আমার উম্মত থেকে কাউকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করতাম তাহলে আমি আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু কে বন্ধু রূপে গ্রহণ করতাম। মনে রেখ! তোমাদের পূর্বেকার লোকেরা তাদের নবী ও নেক লোকদের কবরসমূহকে মসজিদ বানাত। মনে রেখ, তোমরা কবরসমূহকে মসজিদ বানিও না। কারণ, আমি তোমাদের এ থেকে নিষেধ করছি”। [20]
وعن عائشة أن أم حبيبة وأم سلمة رضي الله عنهن ذكرتا كنيسة رأينها بالحبشة فيها تصاوير، فَذَكرتا للنبي صلى الله عليه و سلم فقال: « إنَّ أولئك إذا كان فيهم الرجل الصالح فمات بنوا على قبره مسجداً، وصوَّروا فيه تلك الصور، أولئك شرار الخلق عند الله تعالى يوم القيامة »
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, উম্মে হাবীবাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা ও উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা তারা উভয়ে মুলকে হাবসাতে দেখা একটি উপাসনালয়ের কথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আলোচনা করেন, যার মধ্যে রয়েছে মূর্তি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাদের মধ্যে যখন কোন ভালো লোক মারা যেত, তারা তাদের কবরের উপর মসজিদ বানাত এবং এ সব মূর্তি গুলো তাদের আকৃতিতে তৈরি করত। এরা আল্লাহর কিয়ামতের দিব সর্বাধিক নিকৃষ্ট সৃষ্টি। [21]
পাঁচ: জরুরতের সময় কাফেরের মসজিদে প্রবেশ করা কোন প্রকার ক্ষতি করা ও কষ্ট দেয়া ছাড়া।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
بعث النبي صلى الله عليه و سلم خيلاً قِبَلَ نجدٍ فجاءت برجل من بني حنيفة يقال له: ثمامة بن أثال، فربطوه بسارية من سواري المسجد، فخرج إليه النبي صلى الله عليه و سلم فقال: « أطلقوه»فانطلق إلى نخل قريب من المسجد، فاغتسل، ثم دخل المسجد فقال: أشهد أن لا إله إلا الله وأن محمداً رسول الله.
‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি সৈন্য দলকে নজদের দিকে প্রেরণ করলে তারা হানিফা গোত্র থেকে সুমামা ইবনুল আসাল নামক একজন লোককে ধরে নিয়ে আসেন এবং তাকে মসজিদের খুঁটিসমূহ হতে একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিকট গিয়ে বললেন, তাকে তোমরা ছেড়ে দাও। তারপর সে মসজিদের নিকট একটি বাগানের দিকে গিয়ে গোসল করল তারপর মসজিদে প্রবেশ করল এবং বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল। [22] এ হাদিসটি প্রমাণ করে যে, মুশরিক প্রয়োজনের সময় মসজিদে প্রবেশ করতে পারবে। তবে মসজিদে হারামে প্রবেশ করতে পারবে না।[23] আমি আমার শাইখ আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহু কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত মসজিদে কাফেরকে বাঁধা যায়। এ হাদিস দ্বারা আরও প্রমাণিত হয়, কাফেরের জন্য মদিনায় প্রবেশ করা বৈধ। তবে মক্কায় প্রবেশ করা জায়েয নাই। আর হাদিসটি দ্বারা প্রমাণিত হয়, প্রয়োজনের সময় কাফের মসজিদের প্রবেশ করতে পারবে। মদিনার মসজিদে কাফের ব্যক্তি প্রবেশ করতে পারলে অন্য মসজিদগুলোতে প্রবেশ না করতে পারা গ্রহণযোগ্য নয়।[24]
ছয়- মসজিদে ভালো অর্থবোধক উপকারী কবিতা পড়া বৈধ।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন,
أن عمر رضى الله عنه مرّ بحسان رضى الله عنه وهو ينشد الشعر في المسجد، فلحظ إليه فقال: قد كنت أنشدُ وفيه من هو خير منك، ثم التفت إلى أبي هريرة فقال: أنشدك الله أسمعت رسول الله يقول: «أجب عني اللهم أيِّده بروح القدس » قال: اللهم نعم.
"ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হাসসান বিন সাবেতের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন হাসসান মসজিদে কবিতা আবৃতি করছিলেন। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তার দিকে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকালেন। তখন তিনি বললেন, আমি মসজিদে কবিতা আবৃতি করতাম যে অবস্থায় মসজিদে তোমার চেয়ে উত্তম ব্যক্তি ছিলেন। তারপর তিনি আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু এর দিকে তাকালেন এবং বললেন, আমি তোমাকে আল্লাহ শপথ দিয়ে বলছি, তুমি কি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলতে শুনোনি? আমার পক্ষ থেকে উত্তর দাও! (রাসূল বলছেন,) “হে আল্লাহ তুমি তাকে রুহুল কুদ্স দ্বারা সাহায্য কর”। উত্তরে আবু হুরাইরা বললেন, হ্যাঁ"। [25] এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, যে সব কবিতা মানুষকে কল্যাণের দিকে ধাবিত করে, তা মসজিদে আবৃত্তি করা জায়েয আছে। কারণ, কবিতা আবৃত্তি মানুষের অন্তরে বিশাল প্রভাব ফেলে এবং মানুষকে হকের প্রতি উৎসাহ প্রদান করে। আর যে সব হাদিসে মসজিদের ভিতর কবিতা আবৃত্তি করতে নিষেধ করা হয়েছে, তা জাহিলিয়্যতের যুগের কবিতা এবং বাতিলদের কবিতা। মোট কথা যেগুলোর অনুমতি দেয়া হয়েছে, সে গুলো জাহিলিয়্যাত হতে নিরাপদ। আবার কেউ কেউ বলেন, এমন কবিতা হতে হবে যা মসজিদে উপস্থিত লোকদের কোন প্রকার বিঘ্ন না ঘটায় ।
সাত- মসজিদে হারানো বস্তু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা না করা।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যে ব্যক্তি কোন মানুষকে মসজিদে হারানো বস্তু তালাশ করতে শুনবে, সে যেন বলে, আল্লাহ তা‘আলা যেন, তোমাকে ফেরত না দেয়। কারণ মসজিদসমূহ এ জন্য বানানো হয়নি”।[27] বুরাইদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
أن رجلاً نشد في المسجد فقال:من دعا إلى الجمل الأحمر؟ فقال النبي صلى الله عليه و سلم: «لا وجدتَ إنما بُنيت المساجد لِمَا بُنيت له »
“এক ব্যক্তি মসজিদের হারানো বস্তু সম্পর্কে ঘোষণা দিয়ে বলে, আমার লাল উট পেয়ে আমাকে কে খবর দেবে[28] ? তার কথা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি পাবে না, মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে মসজিদের উদ্দেশ্য সম্পাদন করার জন্য (হারানো বস্তুর ঘোষণা দেয়ার জন্য নয়)”।[29]
উল্লেখিত হাদিসদ্বয় দ্বারা প্রমাণিত হয়, মসজিদের ভিতরে হারানো বস্তুর ঘোষণা দেয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ ছাড়া যে সব কাজ উল্লেখিত বিষয়ের সমর্থক হবে, তার বিধানও এর সাথে সম্পৃক্ত করা হবে। যেমন- মসজিদে বেচা-কেনা করা, বন্ধক দেয়া ইত্যাদি যাবতীয় লেনদেন নিষিদ্ধ এবং মসজিদে উচ্চ আওয়াজে কথা বলা মাকরুহ। হাদিস দ্বারা আরও প্রমাণিত হয়, যে ব্যক্তি মসজিদে হারানো বস্তু তালাশ করে, সে আল্লাহর আদেশের বিরোধিতা ও নাফরমানি করার শাস্তিস্বরূপ তার উপর বদ দোয়া করা বৈধ। আর যে শোনে সে যেন এ কথা বলে, ‘তুমি পাবে না’, কারণ, মসজিদ এ জন্য বানানো হয় নাই। ‘তুমি পাবে না মসজিদকে মসজিদের উদ্দেশ্যেই বানানো হয়েছে’। আর الضالة শব্দের অর্থ হারানো বস্তু আর نشدها অর্থাৎ তালাশ করা ও জিজ্ঞাসা করা।[30]
আট- মসজিদে বেচা-কেনা করা হারাম।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
« إذا رأيتم من يبيع أو يبتاع في المسجد فقولوا: لا أربح الله تجارتك، وإذا رأيتم من ينشد فيه ضالة فقولوا: لا ردّ الله عليك »
“যখন কাউকে মসজিদে বিক্রি করতে বা খরিদ করতে দেখবে, তখন তাকে বল, আল্লাহ তোমার ব্যবসায় কোন লাভ না দিক। আর যখন দেখবে, কোন ব্যক্তি মসজিদে হারানো বস্তু তালাশ করছে, তখন তুমি বলবে, আল্লাহ যেন তোমার নিকট ফেরত না দেয়”।[31] হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, মসজিদের বেচা-কেনা করা হারাম। কাউকে মসজিদে বেচা-কেনা করতে দেখতে তাকে বলা উচিত আল্লাহ তা‘আলা যেন তোমার ব্যবসা বাণিজ্যে কোন বরকত না দেয়।[32] এ কথা দ্বারা তাদেরকে বদ-দু'আ করে সতর্ক করা হল। আর কারণ উপরেই বলা হয়েছে। « فإن المساجد لم تبن لذلك »“মসজিদসমূহ এ জন্য বানানো হয়নি”।
নয়- মসজিদের ভিতরে হদ কায়েম করা যাবে না এবং কাউকে বন্দী রাখা যাবে না।
হাকিম বিন হিযাম রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
« نهى رسول الله صلى الله عليه و سلم أن يستقاد في المسجد،وأن تنشد فيه الأشعار،وأن تقام فيه الحدود »
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে কাউকে আটকে রাখা, গান গাওয়া ও হদ কায়েম করা হতে নিষেধ করেছেন”।[33] হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, মসজিদে হদ কায়েম করা ও আটক করা হারাম। [34] আর যে সব কবিতা মসজিদে বলা জায়েয নাই সেগুলো হল, জাহিলিয়্যাত ও ফাসেকদের কবিতা। কিন্তু যে সব কবিতা মানুষকে কল্যাণের দিকে আহবান করে তাতে কোন অসুবিধা নাই। আমি আমার শাইখ ইমাম আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহুকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, হাদিসটি যদিও দুর্বল, কিন্তু সহীহ হাদিস থেকে তার অর্থের সমর্থন পাওয়া যায়। কারণ, মসজিদে হদ কায়েম করা দ্বারা যখন আসামিকে পেটানো বা হত্যা করা হয়, তখন মসজিদ রক্তাক্ত বা পেশাব, পায়খানা ইত্যাদি দ্বারা নাপাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।[35]
দশ- মসজিদে ঘুমানো, খাওয়া, ঘর বানানো অসুস্থ লোককে জায়গা।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«أصيب سعد يوم الخندق فضرب عليه رسول الله صلى الله عليه و سلم خيمة في المسجد ليعوده من قريب»
“খন্দকের যুদ্ধের দিন সায়াদ রাদিয়াল্লাহু আনহু আঘাত প্রাপ্ত হয়ে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য মসজিদের ভিতরে একটি তাঁবু নির্মাণ করেন[36] যাতে তাকে কাছের থেকে দেখা-শুনা করতের পারেন।[37] এ হাদিস দ্বার প্রমাণিত হয়, মসজিদে ঘুমানো, অসুস্থ ব্যক্তি থাকা ও মসজিদে তাঁবু বানানো বৈধ। আমি আমার শাইখ ইমাম আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহু বলতে শুনেছি তিনি বলেন, মসজিদে তাঁবু বানানো, ই‘তেকাফের জন্য অথবা কোন সম্মানী ব্যক্তির জন্য যাতে মানুষ তার সাথে দেখা করতে পারে অথবা যার থাকার যায়গা নাই তার জন্য থাকার যায়গা বানানোতে কোন অসুবিধা নাই। [38]
আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সম্পর্কে বর্ণিত, তিনি যখন অবিবাহিত যুবক ছিলেন, তখন মসজিদে ঘুমাতেন।[39] আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
أن وليدة سوداء كان لها خباء في المسجد، فكانت تأتيني فتحدث عندي، قالت: فلا تجلس عندي مجلساً إلا قالت:
একজন কালো বাঁদির জন্য মসজিদে একটি তাঁবু ছিল। সে আমার নিকট এসে আমার সাথে কথা বলত। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা আরও বলেন, সে আমার সাথে যখনই বসত তখন এ কথা গুলো বলত, “সে ঘটনার দিন, আমার প্রভূর একটি আশ্চর্য বিষয়সমূহের একটি আশ্চর্যের দিবস। তবে তিনি আমাকে কাফের শহর থেকে মুক্তি দিয়েছেন”।
এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, যখন কোন ফিতনার আশঙ্কা না থাকে তখন মুসলিম পুরুষ বা নারী উভয়ের জন্য রাতে বা দিনে মসজিদে ঘুমানো বৈধ,[42] যদি তার কোন ঘর-বাড়ি না থাকে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী সুফফার অধিবাসীরা মসজিদে ঘুমাত। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
« رأيت سبعين من أصحاب الصفة ما منهم رجل عليه رداءٌ، إما إزار وإما كساء قد ربطوا في أعناقهم، فمنها ما يبلغ نصف الساقين، ومنها ما يبلغ الكعبين، فيجمعه بيده كراهية أن تُرى عورته»
“আমি সত্তর জন সুফফার অধিবাসীদেরকে দেখেছি, তাদের কারো শরীরে কোন চাদর ছিল না। তারা হয়ত, লুঙ্গি অথবা একটি কাপড় পরিধান করত যা তারা তাদের গলার সাথে বেঁধে রাখত। তাদের কাপড় কারো পায়ে অর্ধ পেন্ডলী পর্যন্ত আবার কারো টাখনু পর্যন্ত হত। তারা তাদের হাত কাপড়ের উভয় আঁচলকে একত্র করে ধরে রাখত, যাতে মানুষ তাদের সতর দেখতে না পারে।[43] আব্দুল্লাহ বিন হারেস বিন জুয আয-যাবিদী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
« كنا نأكل على عهد رسول الله صلى الله عليه و سلم في المسجد الخبز واللحم »
এগার- মসজিদে বৈধ খেলা যেগুলির অনুমতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিয়েছেন।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
« لقد رأيت رسول الله صلى الله عليه و سلم يوماً على باب حجرتي والحبشة يلعبون في المسجد، ورسول الله صلى الله عليه و سلم يسترني بردائه، أنظر إلى لعبهم)). وفي لفظ: ((كان الحبشة يلعبون بحرابهم فيسترني رسول الله صلى الله عليه و سلم وأنا أنظر، فما زلت أنظر حتى كنت أنا أنصرف، فاقدروا قدر الجارية الحديثة السن تسمع اللهو»
“একদিন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কামরার দরজায় দেখলাম। তখন হাবশীরা মসজিদে খেলছিল। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তার চাদর দ্বারা ঢেকে রাখেন যাতে আমি তাদের খেলা দেখতে পাই। অপর এক শব্দে হাদিসটি বর্ণিত হাবশীরা তাদের ডাল-সুরকী নিয়ে খেলা-ধুলা করছে, আমি তাদের খেলা দেখতেছিলাম আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আড়াল করে রাখেন। এভাবে আমি সারাক্ষণ দেখতেছিলাম যতক্ষণ আমি না ফিরতাম। তোমরা অপ্রাপ্ত বয়স্ক রমণী যে খেলা-ধুলায় মনোযোগী তার সম্মান কত তা তোমরা অনুমান কর”।[45]
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
بينما الحبشة يلعبون عند النبي صلى الله عليه و سلم وفي رواية: في المسجد دخل عمر فأهوى إلى الحصباء فحصبهم بها، فقال: «دعهم يا عمر »
“একবার হাবশীরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট, অপর বর্ণনায়, মসজিদে খেলছিল। তখন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এসে তাদের নিকট প্রবেশ করলেন এবং তাদের জন্য পাথর নিলন এবং তাদেরকে পাথর দিয়ে আঘাত করলেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে ওমর তুমি তাদের ছেড়ে দাও”।[46] হাফেয ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহু বলেন, ডাল-সূরকী দিয়ে খেলা-ধুলা করা শুধু খেলা নয়, বরং তাতে রয়েছে, যুদ্ধের ময়দানে সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া এবং দুশমনের মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা।[47] শাইখ রাহিমাহুল্লাহু বলেন, এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, যুদ্ধ করার জন্য প্রশিক্ষণ স্বরূপ বা যুদ্ধ করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে অস্ত্র দ্বারা খেলা-ধুলা করা বৈধ। হাবশি যারা খেলা-ধুলা করছে, তাদের দিকে অপরিচিতা নারী আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা এর তাকানো দ্বারা প্রমাণিত হয়, মহিলার জন্য সমষ্টিগত পর্যায়ে ব্যক্তি পর্যায়ে না হলে, পুরুষের দিক তাকানো জায়েয আছে। যেমন, মহিলারা মসজিদে সালাত আদায়ের জন্য বের হলে এবং রাস্তায় হাঁটার সময় পুরুষদের সাথে সাক্ষাত হলে তাদের দিকে তাকায়।[48]আমি আমার শাইখ ইমাম বিন বায রাহিমাহুল্লাহুকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, নারীদের জন্য সমষ্টিগতভাবে পুরুষের দিকে তাকানোতে কোন অসুবিধা নাই। যেমন পুরুষরা সফরে ও মসজিদে তাদের দিকে তাকায়। মোট কথা চলাচলকারী মুসল্লি,খেলোয়াড়দের দিকে সাধারণ তাকানো ক্ষতিকর নয়। কারণ, এ ধরনের দৃষ্টি সাধারণত কামভাব নিয়ে হয় না। [49]
বার- মসজিদকে উঁচা-মজবুত করা, সজ্জিত করা এবং মসজিদ বানানোর ক্ষেত্রে অপচয় না করার বিধান।
মসজিদকে উঁচা করা, ও সাজানো ইত্যাদি নিষিদ্ধ হওয়া সম্পর্কে একাধিক হাদিস বর্ণিত। আর মসজিদ বানানোর ক্ষেত্রে অপচয় না করে পরিমিত খরচ করার বিষয়ে নির্দেশ সম্বলিত বিভিন্ন হাদিস বর্ণিত। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« لا تقوم الساعة حتى يتباهى الناس في المساجد »
“যতদিন পর্যন্ত মানুষ মসজিদ নিয়ে অহংকার না করবে [50] ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত কায়েম হবে না”। নাসায়ীতে হাদিসটি এভাবে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«من أشراط الساعة أن يتباهى الناس في المساجد »
“কিয়ামতের আলামত হল, লোকেরা মসজিদ নিয়ে অহংকার করবে”।[51] আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, «ما أمرت بتشييد المساجد ».“আমাদেরকে মসজিদ উঁচা করার বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়নি”।[52] আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, « لتزخْرِفُنَّها كما زخرفت اليهود والنصارى »
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
«كان سقف المسجد من جريد النخل»
আর ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু মসজিদ বানানোর নির্দেশ দেন এবং বলেন,
« أكِنَّ الناس من المطر، وإياك أن تُحَمِّر، أو تُصفِّر، فتفتن الناس »
“মসজিদ বানিয়ে মানুষকে বৃষ্টি থেকে রক্ষা কর। তুমি লাল রং করা ও হলুদ রং করা হতে সতর্ক থাক, অন্যথায় মানুষকে ফিতনায় ফেলবে।[55] মনে রাখবে, ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বিষয়টি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক আবু জাহামকে নকশা বিশিষ্ট জুব্বাটি ফেরত দেয়া হতে বুঝে নিয়েছেন। কারণ, জুব্বাটির বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, [إنها ألهتني عن صلاتي] “নিশ্চয় এটি আমাকে আমার সালাত থেকে অমনোযোগী করে দেয়”।[56] হাফেয ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহু বলেন, হতে পারে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞান ছিল।[57] আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, [يتباهون بها ثم لا يعمرونها إلا قليلاً] তারা মসজিদ নিয়ে বড়াই করে কিন্তু কম সংখ্যক লোক ছাড়া বাকীরা মসজিদকে আবাদ করে না।[58]
আমি আমার শাইখ ইমাম বিন বায রাহিমাহুল্লাহুকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, মসজিদকে সুন্দর করা এবং মসজিদে সালাত আদায় না করা মুসিবত বলে গণ্য।[59]আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
أن المسجد كان على عهد رسول الله مبنيّاً باللبن، وسقفه الجريد، وعمده خشب النخل، فلم يزد فيه أبو بكر شيئاً، وزاد فيه عمر وبناه على بنياه في عهد رسول الله صلى الله عليه و سلم: باللَّبِن والجريد، وأعاد عمده خشباً، ثم غيره عثمان، فزاد فيه زيادة كثيرة، وبنى جداره بالحجار المنقوشة والقصة، وجعل عمده من حجارة منقوشة، وسقفه بالساج.
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে মসজিদ ছিল, ইটের নির্মাণ এবং খেজুর পাতার ছাউনি। আর খুঁটি ছিল খেজুর গাছের। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তার খেলাফত আমলে এর কোন সংস্কার করেননি। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু মসজিদকে বাড়ান, তবে তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে যা দিয়ে নির্মাণ করেছে- ইট, খেজুরের ডাল ও খেজুর গাছের খুঁটি- তা দিয়েই নির্মাণ করেন। তারপর ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু এসে মসজিদের নির্মাণকে পরিবর্তন করেন। তিনি মসজিদকে অনেক দূর পর্যন্ত বাড়ান। তিনি নকশী পাথর[60] ও চুন দিয়ে মসজিদ নির্মাণ করেন। তিনি যে মসজিদ নির্মাণ করেন, তার খুঁটি ছিল নকশী পাথর এবং ছাদ ছিল হিন্দুস্থানি কাট।[61]
আমি আমার শাইখ ইমাম আব্দুল আজীজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহুকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু এর কর্ম প্রমাণ করে, নকশী পাথর, ভালো কাট ও রঙ দিয়ে সাজানোতে কোন ক্ষতি নাই। যদিও সালফে সালেহীনদের মতে উত্তম হল মসজিদকে রঙ না করা। কিন্তু যেহেতু মানুষ বর্তমানে তাদের ঘরবাড়ীকে খুব সুন্দর করে সাজায়, তাই তারা পুরাতন আমলের ঘরবাড়ীর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এ অবস্থায় মসজিদগুলোকে আগের অবস্থায় রেখে দেয়া তাদেরকে মসজিদে সালাত আদায় ও মসজিদে একত্র হওয়া থেকে বিমুখ করে। এ কারণে ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু যা করেছে, তা করাতে কোন প্রকার অসুবিধা নাই। যাতে মানুষ মসজিদের দিকে উৎসাহিত হয় এবং মনোযোগী হয়। তবে অহংকার ও বড়াই করার জন্য হলে তা বৈধ নয়। তবে মসজিদে কোন কিছু লেখা মাকরূহ। উত্তম হল, মসজিদে কোন প্রকার না লেখা। [62]
তের: মসজিদে বৈধ কথা-বার্তা বলাতে কোন অসুবিধা নাই।
জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন,
أن النبي صلى الله عليه و سلم: « كان لا يقوم من مصلاّه الذي صلى فيه الصبح أو الغداة حتى تطلع الشمس،فإذا طلعت الشمس قام،وكانوا يتحدثون فيأخذون في أمر الجاهلية فيضحكون ويتبسّم»
“সূর্য উদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে স্থানে ফজরের সালাত বা সকালের সালাত আদায় করতেন, সে স্থান থেকে উঠতেন না। আর যখন সূর্য উদয় হত, তখন তা থেকে উঠে যেতেন। আর তারা জাহিলিয়্যাতের বিভিন্ন কাহিনী বলতেন এবং হাসা-হাসি করতেন”।[63] আহমদ রাহিমাহুল্লাহু এর বর্ণনায় বর্ণিত, তিনি বলেন,
« شهدت النبي صلى الله عليه و سلم أكثر من مائة مرة في المسجد، وأصحابه يتذاكرون الشعر وأشياء من أمر الجاهلية، فربما تبسم معهم »
“আমি একশ বারের বেশি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীদেরকে দেখেছি তারা মসজিদে কবিতা আবৃত্তি ও জাহিলিয়্যাতের বিষয়গুলো আলোচনা করেন। অনেক সময় তিনি তাদের সাথে হাসা-হাসি করতেন”।[64]
ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহু বলেন, “এতে প্রমাণিত হয়, মসজিদে হাসি দেয়া ও মুচকি হাসি দেয়া জায়েজ আছে”।[65] আল্লামা কুরতবী রাহিমাহুল্লাহু বলেন, বলা যায়, “তখন তারা মসজিদে কথা বলত। কারণ, মসজিদে কথা বলা বৈধ, নিষিদ্ধ নয়। কারণ, মসজিদে কথা বলা সম্পর্কে কোন নিষেধাজ্ঞা আসেনি। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ যা বলা যায় তা হল, মসজিদে আল্লাহর যিকর করা উত্তম ও ফযিলতপূর্ণ। আর এতে ঐ সময়ে মসজিদে কথা বলা ছেড়ে দেয়া অপরিহার্য বলে প্রমাণিত হয় না। আল্লাহ তা‘আলা ভালো জানেন”।[66]
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহু বলেন, যে কথা আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল ভালোবাসে সে কথা মসজিদে বলা উত্তম। আর যা নিষিদ্ধ, তা মসজিদে বলা আরো দৃঢ়ভাবে নিষিদ্ধ। অনুরূপভাবে যা মসজিদের বাহিরে বলা মাকরূহ বা মুবাহ তা মসজিদে বলাও মাকরূহ বা মুবাহ।[67]
চৌদ্দ- মসজিদে বড় আওয়াজে কথা বলা নিষিদ্ধ।
কারণ, আওয়াজ বড় করাতে মুসল্লীদের মনোযোগ নষ্ট হয়। সুতরাং, মসজিদে আওয়াজ বড় করবে না, যদিও কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে হয়। আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন,
اعتكف رسول الله صلى الله عليه و سلم في المسجد فسمعهم يجهرون بالقرآن، فكشف الستر وقال:« ألا إن كلكم مناج ربَّه، فلا يؤذينَّ بعضكم بعضاً، ولا يرفع بعضكم على بعضٍ في القراءة »أو قال: « في الصلاة »
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে ই‘তেকাফ করছিল, তিনি সাহাবীদের শুনতে পেলেন, তারা বড় আওয়াজে কুরআন তিলাওয়াত করছে। তাদের তিলাওয়াত শোনে তিনি পর্দা খুলে বলেন, তোমরা সবাই আল্লাহর সাথে কথা বলছ, তাই তোমরা একে অপরকে কষ্ট দেবে না। তোমাদের কেউ কুরআন তিলাওয়াতে, অথবা বলল, সালাতে আওয়াজকে বড় করবে না”।[68] সায়েব বিন ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি বলেন,
كنت قائماً في المسجد فحصبني رجل، فنظرت فإذا عمر بن الخطاب، فقال: اذهب فأتني بهذين، فجئته بهما، فقال: من أنتما؟ أو من أين أنتما؟ قالا: من أهل الطائف، قال: لو كنتما من أهل البلد لأوجعتكما، ترفعان أصواتكما في مسجد رسول الله صلى الله عليه و سلم.
“আমি মসজিদে দাঁড়ানো ছিলাম, একলোক আমাকে পাথর মারল, আমি তাকিয়ে দেখি লোকটি ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি আমাকে বললেন, যাও, তাদের দুই জনকে ধরে আমার নিকট নিয়ে আস। আমি তাদের দুইজনকে তার নিকট নিয়ে আসতে তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করে বলেন, তোমরা কারা? কোথায় থেকে আসছ? তারা বলল, আমরা তায়েফ থেকে আসছি। তারপর তিনি বললেন, যদি তোমরা শহরের হতে তাহলে আমি তোমাদের দুইজনকে শাস্তি দিতাম। তোমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মসজিদে তোমাদের আওয়াজকে উঁচা করছ”।[69]
وعن كعب بن مالك رضى الله عنه أنه تقاضى ابنَ أبي حدرد ديناً كان له عليه في المسجد، فارتفعت أصواتهما، حتى سمعهما رسول الله صلى الله عليه و سلم وهو في بيته، فخرج إليهما حتى كشف سِجفَ حجرته فنادى: « يا كعب »، قال: لبيك يا رسول الله، قال: « ضع من دينك هذا» وأومأ إليه: أي الشطر، قال كعب: قد فعلت يا رسول الله، قال رسول الله صلى الله عليه و سلم: « قم فاقضه »،قال الحافظ ابن حجر -رحمه الله-: ((وفي الحديث جواز رفع الصوت في المسجد، وهو كذلك ما لم يفحش... والمنقول عن مالك منعه في المسجد مطلقاً، وعنه التفرقة بين رفع الصوت بالعلم والخير، وما لا بد منه فيجوز، وبين
কা‘ব বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি উবাই বিন হাদরাদের নিকট তার পাওনা আদায় করার জন্য মসজিদেই তা চাচ্ছিলেন। তারা উভয়ে মসজিদে আওয়াজকে বড় করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় ঘর থেকে তাদের আওয়াজ শুনতে পেয়ে সাথে সাথে বের হলেন, তার কামরার পর্দা উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ার উপক্রম হল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে বললেন, হে কা‘ব! উত্তরে বলল, লাব্বাইক হে আল্লাহর রাসূল! তুমি তোমার পাওনা থেকে অর্ধেক ক্ষমা করে দাও। তখন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলল, হে আল্লাহর রাসূল, আমি তাই করলাম। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য জনকে বললেন, “দাঁড়াও তুমি বাকীটা আদায় করে দাও”।[70]
হাফেয ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহু বলেন, হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, যদি কোন অশ্লীল কথা-বার্তা না হয়, তাহলে মসজিদে আওয়াজ উঁচা করা জায়েজ আছে। আর ইমাম মালেক থেকে বর্ণিত, মসজিদে আওয়াজ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তার থেকে পার্থক্যও বর্ণিত- যদি ইলম ও কল্যাণ বিষয়ক বা জরুরি কোন আলোচনা হয়, তখন বৈধ। আর যদি অপ্রয়োজনীয় হয়, তাহলে অবৈধ।[71] হাফেয ইবনে হাজর রাহিমাহুল্লাহু মিহলাব থেকে তার কথা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যদি মসজিদে আওয়াজ বড় করা না জায়েজ হত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কোন কথা না বলে ছেড়ে দিতেন না এবং তাদের বিষয়টি জানিয়ে দিতেন। হাফেয ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহু আরও বলেন, আমি বলি, যারা নিষিদ্ধ বলছেন, হতে পারে তাদের নিকট নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি পূর্বেই জানা ছিল, তাই নতুন করে কিছু বলার প্রয়োজন মনে করেন নাই। তাই তিনি তাদের উভয়ের মাঝে ঝগড়া মীমাংসা করার উপর জোর দেন যাতে মসজিদে বড় আওয়াজ করাও বন্ধ হয়ে যাবে।[72] আমি আমার শাইখ ইমাম আব্দুল আজীজ বিন আব্দুল আজীজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহুকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, এতে প্রমাণিত হয়, মসজিদে পাওনাদারের জন্য তার পাওনা চাওয়া জায়েজ আছে। যেমন- সে বলবে, তুমি আমাকে আমার পাওনা দিয়ে দাও। এটি বেচা-বিক্রির মত নয়, অথবা সে বলবে, আমার পাওনা আদায় কর, আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দান করুক।[73] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কা‘ব ও ইবনে আবু হাদরাদকে যা বলেছেন, সে বিষয়ে তিনি বলেন, এটি হল, সংশোধন ও মীমাংসা। সঠিক হল, তারা উভয়ে ঋণ পরিশোধে তাড়াহুড়া করা ও ঋণকে কমিয়ে আনার উপর একমত হয়, এতে কোন অসুবিধা নাই।[74]
পনের- মসজিদের খুঁটির মাঝখানে সালাত আদায় করা।
একা সালাত আদায়কারী ও ইমামের জন্য এতে কোন অসুবিধা নাই। আর মুক্তাদীদের জন্য মসজিদে জায়গা থাকা সত্বেও খুঁটির মাঝে সালাত আদায় করা মাকরূহ। কারণ, খুঁটি কাতারের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করে। তবে মসজিদে জায়গা না হলে তখন কোন অসুবিধা নাই। এ বিষয়ে আনাস বিন মালেক হতে হাদিস বর্ণিত, আব্দুল হুমাইদ বিন মাহমুদ রাহিমাহুল্লাহু বলেন,
«كنت مع أنس بن مالك أصلي، قال: فألقونا بين السواري، قال: فتأخر أنس، فلما صلينا قال: إنَّا كُنَّا نتقي هذا على عهد رسول الله صلى الله عليه و سلم »
আমি আনাস বিন মালিকের সাথে সালাত আদায় করছিলাম, তিনি আমাদের খুঁটির মাঝে ঠেলে দেন। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু সালাত থেকে বিরত থাকলেন। আমরা সালাত শেষ করলে তিনি আমাদের বলেন, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে এ থেকে বেঁচে থাকতাম”।[75] মুয়াবিয়া বিন কুররাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু তার পিতা থেকে বর্ণনা করে বলেন, «كنا نُنْهى عن الصلاة بين السواري ونطرد عنها طرداً »“আমাদের খুঁটির মাঝে সালাত আদায় থেকে নিষেধ করা হত এবং আমাদের দূরে রাখা হত”।[76]
« أن النبي صلى الله عليه و سلم لما دخل الكعبة صلى بين الساريتين »
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কাবা শরীফে প্রবেশ করেন, তখন তিনি দুই খুঁটির মাঝে সালাত আদায় করেন”।[77]
ষোল- জুমু‘আর সালাতের পূর্বে মসজিদে হালকা করা।
আব্দুল্লাহ বিন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন,
«أن النبي صلى الله عليه و سلم نهى عن التحلق يوم الجمعة قبل الصلاة، وعن الشراء والبيع في المسجد»
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর দিন সালাতের পূর্বে মসজিদে হালকা করে বসা ও বেচা-কেনা করা হতে নিষেধ করেছেন।
ইমাম তিরমিযি হাদিসটি এভাবে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,
«نهى عن تناشد الأشعار في المسجد، وعن البيع والشراء فيه، وأن يتحلَّق الناس فيه يوم الجمعة قبل الصلاة »
“মসজিদে কবিতা আবৃতি, বেচা-কেনা এবং জুমু‘আর দিন সালাতের পূর্বে গোল হয়ে বসা হতে নিষেধ করেন”।[78] তাহাল্লুক ও হিলাক শব্দ বহুবচন, একবচন হল হালাকা। অর্থাৎ, একাধিক মানুষ গোলাকার হয়ে বসা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের হালাকা বন্দী হয়ে এক জায়গায় বা একাধিক জায়গায় বিভিন্ন হালাকা বানিয়ে বসা হতে নিষেধ করেন, যদিও কোন ইলমী আলোচনার জন্য হয়। কারণ, এতে কাতার বন্দী হতে অসুবিধা হতে পারে অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর দিন মানুষকে তাড়াতাড়ি মসজিদে আসা ও কাতার বন্দী হয়ে প্রথম কাতারে তারপর দ্বিতীয় কাতারে বসার নির্দেশ দিয়েছেন।
সালাতের পূর্বে হালকা করে বসা হলে তাদের যে বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তার প্রতি উদাসীনতা বুঝায়। জুমু‘আর সালাত থেকে ফারেগ হওয়ার পর হালাকা করে বসাতে কোন অসুবিধা নাই।[79] আমার শাইখ ইমাম আব্দুল আজীজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহু এর উপর আমল করতেন। তিনি জুমু‘আর দিন ফজরের সালাত থেকে নিয়ে জুমু‘আর সালাত আদায় করা পর্যন্ত সব ধরনের হালাকা বন্ধ করে দিতেন। তারপর জুমু‘আর সালাতের পর তার বাড়ীতে হালাকা হত।
সতের- ঘুম আসলে স্থান পরিবর্তন করা।
ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন,
«إذا نعس أحدكم وهو في المسجد فليتحول من مجلسه ذلك إلى غير ه »
“যখন মসজিদে তোমাদের কারো তন্দ্রা আসে, সে যেন স্বীয় মজলিস থেকে উঠে অন্যত্র গিয়ে বসে”।[80] তিরমিযির শব্দ- «إذا نعس أحدكم يوم الجمعة، فليتحول عن مجلسه ذلك » “যখন তোমাদের কারো জুমার দিন তন্দ্রা আসে, সে যেন ঐ মজলিস থেকে উঠে অন্যত্র চলে যায়”।
আহমদের শব্দ- « إذا نعس أحدكم في مجلسه يوم الجمعة فليتحول إلى غيره ». যখন জুমার দিন তোমাদের কারো তন্দ্রা আসে, সে যেন অন্যত্র চলে যায়। আহমদের অপর এক বর্ণনায় বর্ণিত- « إذا نعس أحدكم في المسجد يوم الجمعة فليتحول من مجلسه ذلك إلى غيره » যখন মসজিদে তোমাদের কারো তন্দ্রা আসে, সে যেন স্বীয় মজলিস থেকে উঠে অন্যত্র গিয়ে বসে। অপর এক বর্ণনায় বর্ণিত, « إذا نعس أحدكم في مجلسه يوم الجمعة فليتحول منه إلى غيره ». “যখন জুমার দিন মজলিসে বসে তোমাদের কারো তন্দ্রা আসে, সে যেন তা থেকে উঠে অন্যত্র চলে যায়”। আমি আমার শাইখ ইমাম আব্দুল আজীজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহুকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, আদেশে দ্বারা প্রমাণিত হয় বিষয়টি ওয়াজিব।[81] আর স্থান পরিবর্তন করার হিকমত হল, স্থান পরিবর্তন করাতে ঘুম চলে যায়। অথবা ঘুমের কারণে যে স্থানে গাফলত বা অলসতায় আক্রান্ত হল, সে স্থান ত্যাগ করা। যদিও ঘুমন্ত ব্যক্তির কোন গুনাহ নাই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাতের সময় ঘুমানোর ঘটনায় তার সাহাবীদের স্থান পরিবর্তন করার নির্দেশ দেন। অথবা যে ব্যক্তি সালাতের অপেক্ষায় মসজিদে বসে থাকে সে সালাতরত। আর সালাতে ঘুম আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। হতে পারে এ কারণেই শয়তানের দিকেসম্বোধিত কাজকে দূর করার জন্য তাকে স্থান পরিবর্তন করার নির্দেশ দেয়া হল, যাতে মসজিদে আল্লাহর যিকর, খুতবা ও উপকারী কোন কথা শ্রবণ থেকে বিরত থাকতে না হয়।[82]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী- «إذا نعس أحدكم يوم الجمعة » “যখন তোমাদের কেউ জুমু‘আর দিন তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়”, এর দ্বারা সমগ্র দিন উদ্দেশ্য নয়, বরং উদ্দেশ্য হল, যখন মসজিদে বসে জুমু‘আর সালাতের অপেক্ষা করতে থাকে। চাই খুতবার সময় হোক বা তার পূর্বে হোক। তবে খুতবার সময়টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আর এখানে জুমু‘আর দিনের কথাটা বলার কারণ হল, এ দিনে জুমু‘আর সালাত আদায় বা জুমু‘আর খুতবা শ্রবণ করার জন্য মানুষ তাড়াতাড়ি মসজিদে আসার কারণ ল¤বা সময় মসজিদে অবস্থান করায় তাদের তন্দ্রা আসে। কিন্তু সালাতের অপেক্ষা করা জুমু‘আর দিন বা অন্য দিনের বিধান এক। যেমন আবু দাউদের হাদিসে বর্ণিত, «إذا نعس أحدكم وهو في المسجد فليتحول من مجلسه ذلك إلى غيره »، “যখন তোমাদের কারো মসজিদে থাকা অবস্থায় তন্দ্রা আসে, সে যেন স্থান পরিবর্তন করে”। সুতরাং জুমু‘আর দিনের আলোচনার উদ্দেশ্য হল সকল মানুষের মধ্য থেকে কাউকে স্পষ্ট করে পৃথক করা। আর এও হতে পারে এ দ্বারা উদ্দেশ্য শুধু জুমু‘আর দিন, যাতে জুমার খুতবা শোনার প্রতি অধিক যতœবান হয়।[83]
আঠার- গির্জায় সালাত আদায় করা, গির্জাকে পরিষ্কার করা ও গির্জার স্থানে মসজিদ বানানো।
তল্ক বিন আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
خرجنا وفداً إلى النبي صلى الله عليه و سلم فبايعناه، وصلينا معه، وأخبرناه أن بأرضنا بيعة([84]) لنا فاستوهبناه من فضل طهوره، فدعا فتوضأ، وتمضمض، ثم صبه في إداوة وأمرنا فقال: « اخرجوا فإذا أتيتم أرضكم فاكسروا بيعتكم، وانضحوا مكانها بهذا الماء، واتخذوها مسجداً » قلنا: إن البلد بعيدٌ والحر شديد، والماء ينشف، فقال: « مدوه من الماء؛ فإنه لا يزيده إلا طيباً »، فخرجنا حتى قدمنا فكسرنا بيعتنا، ثم نضحنا مكانها، واتخذناها مسجداً فنادينا فيه بالأذان، قال: والراهب رجل من طيئ، فلما سمع الأذان قال: دعوة حقٍّ، ثم استقبل تلعةً من تلاعنا فلم نره بعد)).
“আমরা একটি জামা‘আত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলে, তিনি আমাদের বাইয়াত করেন এবং আমরা তার সাথে সালাত আদায় করি। আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানাই যে, আমাদের দেশে আমাদের একটি গির্জা আছে, আপনি আমাদেরকে আপনার ওজুর পানির বাকী পানিগুলো দেন। এ কথা শোনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওজুর পানি আনার জন্য একজনকে ডাকলেন, ওজু করলেন, কুলি করলেন, তারপর একটি পাত্রে পানিগুলো ঢেলে রাখেন। তারপর তিনি আমাদের এ বলে, নির্দেশ দেন- তোমরা তোমাদের দেশে গিয়ে, তোমাদের গির্জাকে ভাঙ্গবে এবং স্থানটিকে এ পানি দ্বারা পরিষ্কার করবে এবং স্থানটিকে মসজিদ বানাবে। আমরা বললাম, আমাদের দেশ অনেক দূর, শুষ্ক মওসুম, গরম অনেক বেশি, এ পানি শুকিয়ে যাবে। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা এর সাথে আরও পানি বাড়াও তা তার সুঘ্রাণকেই বৃদ্ধি করবে। আমরা বের হলাম এবং আমাদের দেশে এসে আমাদের গির্জাকে ভেঙ্গে দিলাম। তারপর তার স্থানে পানি ছিটিয়ে দিলাম এবং তাকে আমরা মসজিদ বানালাম। তারপর আমরা মসজিদে আযান দিলাম। আযান শোনে পাদ্রী লোকটি বলল, হকের দাওয়াত, তারপর সে আমাদের টিলাসমূহ হতে একটি টিলার দিকে গেল, আমরা তার পর থেকে তাকে আর কোন দিন দেখিনি”।[85]
ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বড় বড় পাদ্রীদের অনেককে বলেন, « إنا لا ندخل كنائسكم من أجل التماثيل التي فيها الصور » “আমরা তোমাদের গির্জা প্রবেশ করতে পারি না কারণ, তোমাদের গির্জায় মানুষের আকৃতির মূর্তি রয়েছে”।[86] « وكان ابن عباس رضي الله عنهما يصلي في البيعة إلا بيعة فيها تمثال » “আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু খৃষ্টানদের গির্জায় সালাত আদায় করত, তবে যে গির্জায় মূর্তি থাকত তাতে তিনি সালাত আদায় করত না”।[87]
এ হাদিস প্রমাণ করে, গির্জার স্থানগুলোকে মসজিদে রূপান্তরিত করা বৈধ। এবং আরও প্রমাণিত হয়, তাদের গির্জায় সালাত আদায় করা বৈধ। তবে মূর্তির দিক ফিরে সালাত আদায় করবে না এবং নাপাক স্থানে সালাত আদায় করবে না।[88] আমি আমার শাইখ ইমাম আব্দুল আজীজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহুকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, গির্জায় সালাত আদায় করাতে কোন অসুবিধা নাই। তবে মূর্তির দিকে মুখ করে সালাত আদায় করবে না। আর এ বিধান তখন যখন এ ছাড়া অন্য কোন স্থান পাওয়া যাবে না যে খানে সালাত আদায় করা যাবে।[89]
উনিশ- মসজিদ ও বাজারে ধারালো অস্ত্র বহন হতে বিরত থাকার নির্দেশ।
আবু মুসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« إذا مرّ أحدكم في مسجدنا، أو في سوقنا ومعه نبل([90]) فليمسك على نصالها([91])» “যখন তোমাদের কেউ আমাদের মসজিদ বা বাজারে অতিক্রম করে এবং তার সাথে রয়েছে তীর, সে যেন তার ধারালো লোহার দিকটিকে বিরত রাখে”। অথবা বলেন, «فليقبض بكفه أن يصيب أحداً من المسلمين منها شيء » “সে যেন তার হাত দিয়ে ধারালো অংশটুকু ধরে রাখে”। যাতে তার দ্বারা কোন মুসলিমের গায়ে আঘাত না লাগে। অপর এক বর্ণনায় বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «من مرّ في شيء من مساجدنا أو أسواقنا بنبل فليأخذ على نصالها، لا يعقر بكفّه مسلماً » ([92]). “যে ব্যক্তি আমাদের মসজিদসমূহ ও বাজারসমূহে চলাচল করে, সে যেন তীরের ধারালো অংশটুকুকে ধরে রাখে। যাতে সে তার হাত দিয়ে কোন মুসলিমকে রক্তাক্ত না করে”। জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিন বলেন,
أن رجلاً مرّ في المسجد بأسهم قد بدا نصولها، فأُمر أن يأخذ بنصولها لا يخدش مسلماً. وفي لفظ مسلم: فقال له رسول الله صلى الله عليه و سلم: « أمسك بنصالها »
“এক লোক কতক তীর নিয়ে মসজিদ অতিক্রম করছিল, তখন তীরসমূহের ধারালো দিকগুলো দেখা যাচ্ছিল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ধারালো দিকগুলোকে আড়াল করার নির্দেশ যাতে কোন মুসলিম আঘাত না পায়। মুসলিমের অপরশব্দে হাদিসটি এভাবে বর্ণিত, « أن رجلاً مرَّ بأسهم في المسجد قد أبدى نصولها، فأُمر أن يأخذ بنصولها كي لا يخدش مسلماً » এক লোক কতক তীর নিয়ে মসজিদ অতিক্রম করছিল, অথচ সে তীরসমূহের ধারালো দিকগুলো প্রকাশ করে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ধারালো দিকগুলোকে ধরে রাখার নির্দেশ দেন, যাতে কোন মুসলিম আঘাত না পায়”।[93] ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহু বলেন, এখানে নিয়ম হল, মানুষের সমাগম স্থল, মসজিদ বা বাজার ইত্যাদিতে হাঁটা চলা করার সময় ধারালো বস্তুকে হেফাযত করা।[94] এতে আরও বুঝা যায়, যে বস্তুর মধ্যে মানুষের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, তা হতে সতর্ক থাকা এবং যে সব বস্তু মানুষকে কষ্ট দেয়, তা থেকে বেঁচে থাকা জরুরি।[95] জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, «لا يحلّ لأحدكم أن يحمل بمكة السلاح» তোমাদের কারো জন্য মক্কায় অস্ত্র বহন করা হালাল নয়।[96] ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহু বলেন, এ নিষেধটি হল যদি তার কোন প্রয়োজন না থাকে। আর যদি প্রয়োজন থাকে তাহলে, জায়েয। এটি আমাদের মাযহাব এবং জমহুর আলেমদের মাযহাব। আর কাজী আয়ায রাহিমাহুল্লাহু বলেন, আহলে ইলমদের মতে এ নিষেধটি বিনা প্রয়োজনে অস্ত্র বহন করার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
হাদিসে কাউকে অস্ত্র দিয়ে ইশারা করার প্রতি কঠিন হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। ঠাট্টা করেও কারো দিকে অস্ত্র দিয়ে ইশারা করা যাবে না। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «لا يشير أحدكم على أخيه بالسلاح؛ فإنه لا يدري لعل الشيطان ينزغ في يده، فيقع في حفرة من حفر النار» . তোমাদের কেউ যেন তার ভাইয়ের প্রতি অস্ত্র দিয়ে ইশারা না করে। কারণ, সে জানে না, শয়তান কখন তার হাত থেকে ছিনিয়ে নেবে। ফলে সে জাহান্নামের গর্ত সমূহ হতে কোন গর্তে পতিত হবে।[97]মুসলিম শরিফের শব্দ-« لا يشير أحدكم إلى أخيه بالسلاح فإنه لا يدري أحدكم لعل الشيطان ينزع في يده فيقع في حفرة من النار » ([98])؛ বিষয়টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ হওয়াতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «من أشار إلى أخيه بحديدة؛ فإن الملائكة تلعنه حتى يدعه وإن كان أخاه لأبيه وأمه » . “যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের প্রতি অস্ত্র দিয়ে ইশারা করে। ফেরেশতারা তার উপর অভিশাপ করে, যতক্ষণ পর্যন্ত সে অস্ত্র পরিহার না করে। যদিও সে তার আপন ভাই হয়ে থাকে”।[99]
এর চেয়েও বড় অন্যায় হল, মুসলিমদের বিপক্ষে তাদের অস্ত্র বহন করা। আব্দুল্লাহ বিন ওমর ও আবু মুসা আশয়ারি রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তারা উভয় বলেন, « من حمل علينا السلاح فليس منا »
“যারা আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র বহন করে তারা আমাদের উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়” [100]।এটি সতর্কতা তার জন্য যে মুসলিমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নেয় এবং অন্যায়ভাবে তাদের হত্যা করার জন্য অস্ত্র হাতে নেয়। কারণ, হাদিসে তাদের ভয় দেখানো হয়েছে, তাদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করা হয়েছে[101]। যে সব বস্তু মানুষকে কষ্ট তা হতে মুমিনদের নিরাপদে রাখার বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিক গুরুত্ব দেন। এরই ধারাবাহিকতায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তলোয়ারকে ঝুলিয়ে বহন করা হতে নিষেধ করেন। জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, أن النبي صلى الله عليه و سلم نهى أن يُتعاطى السيف مسلولاً. “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তলোয়ার ঝুলিয়ে বহন করা হতে নিষেধ করেছেন”।[102]
বিশ- মহিলাদের মসজিদে সালাত আদায় করা:
বিশুদ্ধে হাদিসসমূহে বর্ণিত যে, মহিলাদের জন্য তাদের ঘরে সালাত আদায় করাই উত্তম। যদি তাদের ঘর থেকে বের হওয়াতে কোন প্রকার ফিতনার আশঙ্কা না থাকে এবং তারা এমন সাজ-সজ্জা গ্রহণ না করে, যা ফিতনার দিকে তাদের নিয়ে যায়- যেমন খুশবু ব্যবহার করা, বে-পর্দা হওয়া, সৌন্দর্য প্রকাশ করা ইত্যাদি, তাহলে, পুরুষদের ওপর ওয়াজিব হল, তাদের সালাতের জামা‘আতে মসজিদে যাওয়ার জন্য অনুমতি দেয়া এবং তাদের নিষেধ না করা। যদি এ ধরনের কোন খারাবী পাওয়া যায় বা আশঙ্কা থাকে, তাহলে তাদের ওপর অনুমতি দেয়া ওয়াজিব নয়। তাদের জন্য বের হওয়াও উচিত নয়। তাদের জন্য বের হওয়া হারাম। এ বিষয়ে হাদিসসমূহ নিম্নরূপ:
প্রথম হাদিস: আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« إذا استأذنت أحدكم امرأته إلى المسجد فلا يمنعها »
“যখন তোমাদের কোন নারী তোমাদের নিকট মসজিদে যাওয়ার অনুমতি চায়, তোমরা তাদের নিষেধ করো না”। মুসলিমে শরিফে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« لا تمنعوا إماء الله مساجد الله »
তোমরা আল্লাহর বান্দীদের মসজিদে গমনে নিষেধ করো না।[103] আর আবু দাউদে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« لا تمنعوا نساءكم مساجد الله وبيوتهن خيرٌ لهن »
“তোমরা তোমাদের নারীদের আল্লাহর মসজিদসমূহে যাওয়া হতে নিষেধ করো না। আর তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম”।[104]
দ্বিতীয় হাদিস: জয়নব আস-সাকাফী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
« إذا شَهِدَتْ إحداكُنَّ العشاء فلا تطيَّب تلك الليلة »
“যখন কোন মহিলা এশার সালাতে উপস্থিত হতে চায়, সে ঐ রাত্রিতে সু-গন্ধি লাগাবে না”। অপর শব্দে বর্ণিত, « إذا شهدت إحداكن المسجد فلا تمسّ طيباً » “যখন তোমাদের কেউ মসজিদে উপস্থিত হয়, সে যেন খোশবু স্পর্শ না করে”। [105]
তিন নং হাদিস: আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«أيما امرأة أصابت بخوراً فلا تشهد معنا العشاء الآخرة »
চতুর্থ হাদিস: আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لا تمنعوا إماء الله مساجد الله، ولكن ليخرجن وهن تَفِلات »
“তোমরা তোমাদের নারীদের আল্লাহর মসজিদসমূহে যাওয়া হতে বারণ করো না। তবে তারা যেন খোশবু ছাড়া বের হয়”[107]।
পঞ্চম হাদিস: আব্দুল্লাহ ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«صلاة المرأة في بيتها أفضل من صلاتها في حجرتها وصلاتها في مَخْدعها أفضل من صلاتها في بيتها »
“মহিলাদের ঘরে সালাত আদায় করা, বারান্দায় সালাত আদায় করা হতে উত্তম। আর মহিলাদের খাস কামরায় সালাত আদায় করা, ঘরে সালাত আদায় করা হতে উত্তম। [108]এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, একজন নারীর জন্য সে যে ঘরে বসবাস করে, সেখানে সালাত আদায় করার সাওয়াব বেশি ঘরের সম্মুখ কামরায় সালাত আদায় করা হতে। কারণ, সম্মুখ কামরা পর্দার দিক দিয়ে দুর্বল হয়ে থাকে ভিতরের কামরা হতে। আর ঘরের ভিতরে বড় কামরা অন্তর্গত বিশেষ কামরায় সালাত আদায় করা ভিতরের কামরায় সালাত আদায় করে হতে উত্তম। কারণ, মহিলাদের জন্য সালাত আদায়ের স্থানের ভিত্তি হল, পর্দা। সুতরাং, পর্দা যত বেশি হবে, সালাত তাতে উত্তম হবে [109]।
ষষ্ট হাদিস: আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« لو تركنا هذا الباب للنساء » قال نافع: فلم يدخل منه ابن عمر حتى مات.
“আমরা যদি এ দরজাটিকে মহিলাদের জন্য ছেড়ে দেই”, [তাহলে ভালো হত]। নাফে‘রাহিমাহুল্লাহু বলেন, “মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করেননি”।[110] অর্থাৎ, যদি আমরা এ দরজাকে মহিলাদের জন্য ছেড়ে দেই, তা উত্তম হত। যাতে মহিলারা সালাতের জামা‘আতে উপস্থিত হলে, মসজিদে প্রবেশ করা ও বের হওয়ার সময় পুরুষদের সাথে মিশতে না হয়। সুতরাং উচিত হল, মসজিদ সমূহে মহিলাদের জন্য মসজিদে প্রবেশ করা ও বাহির হওয়ার জন্য বিশেষ দরজার ব্যবস্থা রাখা। যাতে তারা মসজিদের প্রবেশ করতে পারে এবং তা হতে বের হতে পারে। তবে শর্ত হল, কোন ফিতনার আশঙ্কা না থাকতে হবে। অন্যথায় তাদের মসজিদে আসতে নিষেধ করাই শ্রেয়।[111]
ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহু বলেন, হাদিসগুলো এ বিষয়ে স্পষ্ট যে, মহিলাদের মসজিদে গমনে নিষেধ করা হবে না। তবে কতগুলো শর্ত আছে, যেগুলো আলেমগণ হাদিস থেকে বের করে উল্লেখ করেছেন। আর সে গুলো হল, যে সব মহিলা সালাতের জামা‘আতে উপস্থিত হবে তারা সুগন্ধি লাগাবে না, সাজ-সজ্জা অবলম্বন করবে না, আর আওয়াজ বিশিষ্ট কোন অলংকার পরিধান করবেনা, পুরুষদের সাথে মিশবে না, এমন যুবতী হবে না যার বের হওয়ার কারণে ফিতনার আশংকা থাকে এবং রাস্তায় কোন ফিতনার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। [112]
একুশ- জুমু‘আর সালাতের পূর্বে ইমামের খুতবা দেয়ার সময় মসজিদে দুই হাঁটু উঠিয়ে দুই পা পেটের দিক গুটিয়ে কাপড় পেঁচিয়ে জমিনে নিতম্ব রেখে বসা।
মুয়ায বিন আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
« نهى عن الحُبْوَةِ يوم الجمعة والإمام يخطب »
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর দিন ইমামের খুতবা দেয়ার সময় দুই হাঁটু উঠিয়ে দুই পা পেটের দিক ঘুটিয়ে কাপড় পেঁচিয়ে জমিনে নিতম্ব রেখে বসা[113]হতে নিষেধ করেছেন”।[114] আব্দুল্লাহ বিন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
]نهى رسول الله صلى الله عليه و سلم عن الاحتباء يوم الجمعة، يعني والإمام يخطب[.
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর দিন আমাদেরকে দুই হাঁটু উঠিয়ে দুই পা পেটের দিক ঘুটিয়ে কাপড় পেঁচিয়ে জমিনে নিতম্ব রেখে বসা থেকে নিষেধ করেছেন”।[115]
ইমাম তিরমিযি রাহিমাহুল্লাহু বলেন, আহলে ইলমের একটি জামা‘আত বলেন, জুমু‘আর দিন ইমামের খুতবার সময় ইহতেবা করে বসাকে মাকরূহ বলেন। আবার কতক আলেম এ ধরনের বসার অনুমতি দেন। যারা অনুমতি দেন তারা হলেন, আব্দুল্লাহ বিন ওমর ও অন্যান্যরা। তাদের সাথে সহমত প্রকাশ করেন, আহমদ ইসহাক। তারা উভয় ইমামের খুতবার সময় ইহতেবা করাতে কোন অসুবিধা মনে করেন না।[116]
ইমাম শওকানী রাহিমাহুল্লাহু বলেন, জুমু‘আর দিন ইহতেবা মাকরূহ হওয়া বিষয়ে আলেমদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। এক জামা‘আত আহলে ইলম বলেন, এটি মাকরূহ। তারা পরিচ্ছেদের হাদিস ও তার সমর্থক হাদিস দ্বারা দলিল পেশ করেন। আর অধিকাংশ আলেম যেমন- ইরাকী রাহিমাহুল্লাহু এর মত হল মাকরূহ না হওয়া। তারা উল্লেখিত হাদিসসূহের উত্তরে বলেন, এগুলো সবই দুর্বল হাদিস।[117]
মুবারকফুরি রাহিমাহুল্লাহু বলেন, এ বিষয়ে হাদিসগুলো দুর্বল হলেও একটি হাদিস আরেকটি হাদিসকে শক্তিশালী করে। আর নি:সন্দেহে বলা যায়, ইহতেবা ঘুমের কারণ হয়। এ কারণেই উত্তম হল, জুমু‘আর দিন খুতবার সময় ইহতেবা করা থেকে বিরত থাকা। এটিই আছে আমার নিকট আল্লাহ ভালো জানেন[118]। আমি আমার শাইখ ইমাম বিন বায রাহিমাহুল্লাহু কে বলতে শুনেছি, তিনি মুবারক পুরি রাহিমাহুল্লাহু এর কথার সাথে একটু বাড়িয়ে বলেন, এটি বিশুদ্ধ হওয়ার কাছাকাছি এহতেবা না করাই উত্তম।[119]
আমি তাকে মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহু এর হাদিস সম্পর্কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, এহতেবা সম্পর্কে সর্বাধিক হাসান হাদিস হল এ হাদিস। হাদিসটি বিষয়ে কথা আছে। তবে তার একাধিক দুর্বল সাক্ষী আছে। সুতরাং মুমিনদের জন্য উত্তম হল, ইহতেবা না করা। আর কতক সাহাবীদের এহতেবা করা সম্পর্কে তিনি বলেন, কারণ, তাদের নিকট এ হাদিসটি পৌঁছে নাই।[120]
বাইশ- মিম্বার:
খতীবের আরোহণ করার সিঁড়িকে উঁচা হওয়ার কারণে মিম্বার বলে।[121] হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের একটি মিম্বার গ্রহণ করেন। আবু হাযেম হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
سألوا سهل بن سعد رضى الله عنه من أي شيء المنبر؟ فقال: « ما بقي بالناس أعلم مني: هو من أثل الغابة عمله فلان مولى فلانة لرسول الله صلى الله عليه و سلم »
“তারা সাহাল বিন সাআদকে জিজ্ঞাসা করলেন, কি দিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিম্বার? তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমার চেয়ে অধিক জানার মত কোন লোক দুনিয়াতে বাকী ছিল না”। তার মিম্বার ছিল বনের বৃক্ষের তৈরী। তা অমুক গোলাম বানিয়েছে”। অপর শব্দে বর্ণিত,
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন মহিলার নিকট এ নির্দেশ দিয়ে পাঠান, তুমি তোমার মিস্ত্রি গোলামকে আদেশ দাও, সে যেন আমার জন্য একটি কাঠের মিম্বার বানায় যার উপর আমি বসব। অপর এক বর্ণনায় বর্ণিত তিনি বলেন,
]والله إني لأعرف مما هو، ولقد رأيته أول يوم وضع، وأول يوم جلس عليه رسول الله صلى الله عليه و سلم، أرسل رسول الله صلى الله عليه و سلم إلى فلانة امرأة من الأنصار: « مُري غلامك النجار أن يعمل لي أعواداً أجلس عليهنّ إذا كلمتُ الناس » فأمرته فعملها من طرفاءِ الغابة، ثم جاء بها فأرسلت إلى رسول الله صلى الله عليه و سلم، فأمر بها فوضعت هاهنا...[.
“আল্লাহর কসম আমি জানি কোন জিনিস দিয়ে তা বানিয়েছে। প্রথম যেদিন সেটিকে রাখে এবং যেদিন প্রথমবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উপর বসে, আমি তাকে দেখছি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন আনসারী মহিলার নিকট এ নির্দেশ দিয়ে পাঠান যে, তুমি তোমার মিস্ত্রি গোলামকে নির্দেশ দাও, সে যেন আমার জন্য একটি কাঠের মিম্বার বানায় যার উপর আমি মানুষের সাথে কথা বলার সময় বসব । তারপর সে একটি মিম্বার বানায়.... তারপর সে এটিকে নিয়ে আসলে মহিলাটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিকট পাঠান। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে রাখার নির্দেশ দিলে তাকে এ জায়গায় রাখা হয়।[122] জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
أن امرأة قالت: يا رسول الله، ألا أجعل لك شيئاً تقعد عليه؟ فإن لي غلاماً نجاراً، قال: « إن شئت». وفي لفظ: «كان جذع يقوم عليه النبي صلى الله عليه و سلم فلما وُضِع له المنبر سمعنا للجذع مثل أصوات العشار حتى نزل النبي صلى الله عليه و سلم فوضع يده عليه »
“এক মহিলা বলল, হে আল্লাহর রাসূল আমি কি তোমার জন্য এমন একটি জিনিস বানাবো যার উপর তুমি বসবে?। আমার একজন মিস্ত্রি গোলাম আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলল, যদি চাও তুমি বানাতে পার। অপর এক শব্দে বর্ণিত, একটি খেজুরের কাঠ ছিল যার উপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়ায়। যখন তার জন্য মিম্বার রাখা হল, আমরা খেজুরের কাঠ থেকে গরুর বাছুরের আওয়াজের মত আওয়াজ শুনতে পাই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থেকে নেমে গেলেন এবং হাতকে তার উপর রাখেন”। অপর এক শব্দে বর্ণিত,
«فصاحت النخلة التي كان يخطب عندها حتى كادت أن تنشق، فنزل النبي صلى الله عليه و سلم حتى أخذها فضمها إليه، فجعلت تئنّ أنين الصبي الذي يسكَّت حتى استقرت، قال: بكت على ما كانت تسمع من الذكر»
তারপর যে খেজুরের গাছের নিকট দাঁড়িয়ে খুতবা দিত, সে খেজুর গাছটি চিৎকার দেয়া আরম্ভ করল। এমনকি সে যেন ফেটে পড়ার উপক্রম হল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থেকে নামলেন এবং তার উপর হাত রেখে তাকে তার দিক মিলিয়ে নিলে খেজুরের ডাল এমন বাচ্চার মত কাঁদতে লাগল যার ক্রন্দন থামানো হচ্ছিল। তারপর গাছটি স্থির হল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার আলোচনা শুনে খেজুর গাছটি কাঁদছিল।[123] অপর একটি শব্দে বর্ণিত,
«كان المسجد مسقوفاً على جذوع من النخل، فكان النبي صلى الله عليه و سلم يقوم إلى جذع منها، فلما صنع له المنبر فكان عليه... »
মসজিদের ছাদ ছিল খেজুরের কাঠের উপর। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি ডানে সাথে দাঁড়াতেন। তারপর যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর জন্য মিম্বার বানানো হল, তখন সে তার উপর ...
আব্দুল্লাহ বিন ওমর হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
لَمّا بدَّن قال له تميم الداري: ألا أتخذ لك منبراً يجمع أو يحمل عظامك؟ قال: «بلى» فاتخذ له منبراً مرقاتين.
যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মোটা হয়ে গেলেন [124], তাকে তামীমে দারী রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি কি তোমার জন্য একটি মিম্বার বানাবো? যা তোমাকে একত্র করবে বা তোমাকে বহন করবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। তারপর তাকে দুই সিঁড়ি বিশিষ্ট একটি মিম্বার বানানো।[125] সাহাল বিন সাআদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
أرسل رسول الله صلى الله عليه و سلم إلى امرأة: « انظري غلامك النجار يعمل لي أعواداً أكلم الناس عليها » فعمل هذه الثلاث درجات، ثم أمر بها رسول الله صلى الله عليه و سلم فوضعت هذا الموضع.
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন মহিলার নিকট পাঠালেন-তুমি তোমার মিস্ত্রি গোলামটিকে বল সে যেন একটি মিম্বার বানায় যাতে আমি বসবো এবং মানুষের সাথে কথা বলি। তারপর সে তিন স্তর বিশিষ্ট একটি মিম্বার বানায় এবং সেটিকে এ স্থানে রাখা হয়।[126] সালমা বিন আকু‘ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
« وكان بين المنبر والقبلة قدر ممر الشاة »
« أنه كان بين جدار المسجد مما يلي القبلة وبين المنبر ممر الشاة »
“মসজিদের দেয়াল যা ক্বিবলার সাথে সম্পৃক্ত, তার মাঝে ও মিম্বারের মাঝে একটি বকরী অতিক্রম করার সমপরিমাণ ফাঁকা থাকত”।[128]
তেইশ- মসজিদে গমনের সময় এখলাস থাকতে হবে, যাতে মহা ছাওয়াব লাভে ধন্য হয়।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, « من أتى المسجد لشيء فهو حظه ». “যে ব্যক্তি কোন কিছুর জন্য মসজিদে আসে, তাই তার অংশ”।[129]
হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, যখন কোন ব্যক্তি মসজিদে এসে দুনিয়া বা পরকাল বিষয়ে কোন কিছু অর্জন করতে চায়, সে তাই পাবে। কারণ, প্রতিটি মানুষের জন্য তাই মিলবে যা সে নিয়ত করে। এখানে মসজিদে আসার সময় নিয়তকে সহীহ করা বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। যাতে নিয়তের মধ্যে গড়-মিল দেখা না দেয়। যেমন- হাঁটা-হাঁটি করা, সাথী-সঙ্গীদের সাথে দেখা সাক্ষাত করা ইত্যাদির নিয়তে মসজিদে গমন করবে না।বরং মসজিদের যাওয়ার সময় ই‘তেকাফ, একাগ্রতা অবলম্বন, ইবাদাত-বন্দেগী, আল্লাহর ঘরের যিয়ারত, জ্ঞান লাভ করা ইত্যাদি ভালো কাজের নিয়ত করবে।[130]
চব্বিশ- বিনা ওজরে কাছের মসজিদ ছেড়ে অন্য মসজিদে যাওয়া হতে সতর্ক থাকবে।
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «ليصلِّ أحدكم في مسجده ولا يتتبع المساجد». “তোমরা তোমাদের নিজেদের মসজিদে সালাত আদায় করবে। মসজিদ খোঁজাখুঁজি করবে না”।[131]
ইমাম ইবনুল কাইয়ুম রাহিমাহুল্লাহু বলেন, এটি নিকটবর্তী মসজিদ ত্যাগ করার একটি অসিলা মাত্র এবং ইমামের অন্তরে ভীতি ঢেলে দেয়া। আর যদি ইমাম এমন হয়, সে সালাত পরিপূর্ণ করে না, বিদ‘আত করে, প্রকাশ্যে কোন পাপে লিপ্ত থাকে, তখন অন্য কোন মসজিদে গিয়ে সালাত আদায় করাতে কোনো অসুবিধা নাই।[132] যখন কোন গ্রামে কাছের মসজিদ জামা‘আত ত্যাগকারীর সংখ্যা বেশি হয়, তখন মসজিদে জামা‘আত না হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং এর কারণে মানুষের মধ্যে ইমামের প্রতি খারাপ ধারণা সৃষ্টি হয়। কিন্তু যদি কোন ভালো উদ্দেশ্য থাকে, যেমন- দূরের মসজিদে কোন দ্বীনি আলোচনা, শিক্ষণীয় ক্লাস থাকে অথবা সে মসজিদে সালাত তাড়াতাড়ি হয় এবং মুক্তাদির তা জরুরি তখন দূরের মসজিদে গিয়ে সালাত আদায় করাতে কোন অসুবিধা নাই। [133]
আর যদি কোন মানুষ মক্কা অথবা মদিনাতে বাস করে, মক্কার মসজিদে হারামে সালাত আদায় করা অথবা মদিনায় মসজিদে নববীতে সালাত আদায় করার উদ্দেশ্য দূরে যাওয়াতে কোন অসুবিধা নাই। কারণ, এখানে দূরের মসজিদ দুটির আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। [134]
পঁচিশ- মানুষের কাঁধের উপর মাড়িয়ে যাওয়া থেকে সতর্ক থাকবে।
আব্দুল্লাহ বিন বুসর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
جاء رجل يتخطى رقاب الناس يوم الجمعة والنبي صلى الله عليه و سلم يخطب، فقال له النبي صلى الله عليه و سلم:« اجلس فقد آذيت »
“এক ব্যক্তি জুমু‘আর দিন মসজিদে এসে মানুষের ঘাড়ের উপর দিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল, আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দিচ্ছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি বস তুমি মানুষকে কষ্ট দিচ্ছ।[135] জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
أن رجلاً دخل المسجد يوم الجمعة ورسول الله صلى الله عليه و سلم يخطب فجعل يتخطى الناس فقال رسول الله صلى الله عليه و سلم: « اجلس فقد آذيت وآنيت »
“জুমু‘আর দিন একজন মানুষ মসজিদে প্রবেশ করল, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দিচ্ছিলেন, লোকটি মানুষকে সরাচ্ছিল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি বস, তুমি মানুষকে কষ্ট দিলে এবং দূরে সরালে”।[136]
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহু বলেন, যদি সামনে ফাঁকা না থাকে তখন জুমু‘আর দিন হোক বা অন্য দিন কাতারে প্রবেশ করার জন্য কোন মানুষের মাথা ফাঁকা করা বৈধ নয়। কারণ, এটি যুলম ও আল্লাহর আদেশের লঙ্ঘন।[137]
২৬- দুই ব্যক্তিকে আলাদা করবে না।
সালমান ফারসী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لا يغتسل رجل يوم الجمعة، ويتطهّر ما استطاع من الطّهر، ويدهن من دهنه، أو يمسّ من طيب بيته، ثم يخرج فلا يُفرّق بين اثنين، ثم يصلّي ما كُتب له، ثم يُنصت إذا تكلّم الإمام إلا غُفر له ما بينه وبين الجمعة الأخرى».
“যখন কোন ব্যক্তি জুমু‘আর দিন গোসল করে, যথাসম্ভব পবিত্রতা অর্জন করে, শরীরে তেল লাগায়, স্বীয় ঘর থেকে সু-গন্ধি লাগায়, তারপর মসজিদে গিয়ে দুই ব্যক্তিকে আলাদা করে না, মসজিদে গিয়ে তার উপর যে সালাত আদায় করা ফরয করা হয়, তা আদায় করে এবং যখন ইমাম খুতবা দেয়, মনোযোগ দিয়ে তা শ্রবণ করে, আল্লাহ তা‘আলা তার এ জুমু‘আ হতে অপর জুমু‘আর মাঝে যত গুনাহ হয় সবই ক্ষমা করে দেবেন”।[138]
সাতাশ- মুসল্লীর সামনে এবং তার সুতরার মাঝে হাঁটবে না।
আবু জাহামের হাদিসে রয়েছে, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لو يعلم المارُّ بين يدي المصلي ماذا عليه، لكان أن يقف أربعين خير له من أن يمرَّ بين يديه »
“যদি মুসল্লীর সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী তার গুনাহ সম্পর্কে জানত, তাহলে তার জন্য চল্লিশ পর্যন্ত অবস্থান করা উত্তম ছিল মুসল্লীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করা থেকে”। আবু নদর রাহিমাহুল্লাহু বলেন, আমি জানিনা তিনি কি চল্লিশ দিন বলেছেন নাকি চল্লিশ মাস নাকি চল্লিশ বছর[139]।
আটাশ- মসজিদে সালাত আদায়ের জন্য কোন স্থানকে নির্ধারিত করবে না:
আব্দুর রহমান বিন শিবল বলেন,
نهى رسول الله صلى الله عليه و سلم عن نقرة الغراب، وافتراش السبع، وأن يوطن الرجل المكان في المسجد كما يوطن البعير.
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাকের ঠোকরের মত ঠোকর দেয়া থেকে নিষেধ করেন। উঠ যেভাবে আসন নির্ধারণ করে সেভাবে কোন মানুষকে মসজিদে আসন নির্ধারণ করা থেকে নিষেধ করেছেন।[140]
ঊনত্রিশ- বসার জন্য কাউকে তার জায়গা থেকে উঠাবে না।
জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لا يقيمنَّ أحدُكم أخاه يوم الجمعة ثم ليخالف إلى مقعده، فيقعد فيه، ولكن يقول: افسحوا »
“তোমাদের কেউ যেন, তোমার ভাইকে তার স্থান থেকে না উঠায় এবং তাকে তার জায়গা থেকে সরিয়ে দিয়ে সে স্থানে না বসে। তবে তাকে বলবে, তুমি জায়গা খালি কর”।[141] আব্দুল্লাহ ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল বলেন,
«لا يقيمنّ أحدُكم الرجلَ من مجلسه ثم يجلس فيه، ولكن تفسّحوا وتوسّعوا » قال نافع: الجمعة؟ قال الجمعة وغيرها،
“তোমাদের কেউই যেন তার ভাইকে তার মজলিশ থেকে সরিয়ে তার স্থানে না বসে। তবে তোমরা মজলিশে জায়গা করে দাও এবং মজলিশকে প্রশস্থ কর”। নাফে রাহিমাহুল্লাহু বলেন, এটি কি শুধু জুমু‘আ বিষয়ে? তিনি বললেন, জুমু‘আ ও অন্য সব সময়; এটি সব মজলিশকে শামিল করে।[142]
ত্রিশ- জুমু‘আর দিন খুতবার শ্রবণ করার জন্য চুপ করে থাকবে।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« إذا قلت لصاحبك يوم الجمعة أنصت والإمام يخطب فقد لغوت »
একত্রিশ- আযান ও ইকামতের মাঝে মানুষের সাথে কথা-বার্তা বলে, দুনিয়ার বিষয়ে অধিক প্রশ্ন করে, কুরআন তিলাওয়াত ও আল্লাহর যিকির হতে বিরত থেকে মূল্যবান সময়কে নষ্ট করবে না।
আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে মারফু‘ হাদিস বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«سيكون في آخر الزمان قوم يجلسون في المساجد حلقاً حلقاً، إمامهم الدنيا، فلا تُجالسوهم؛ فإنه ليس لله فيهم حاجة »
“শেষ জামানায় এমন সম্প্রদায়ের লোকের আবির্ভাব হবে, যারা মসজিদে হালকাবন্দী হয়ে বসবে, তাদের লক্ষ্য হবে দুনিয়া। তোমরা তাদের সাথে বসবে না। কারণ, তাদের মধ্যে আল্লাহর জন্য কোন প্রয়োজন নাই।[144]
বত্রিশ- জুমু‘আর দিন বা অন্য দিন জায়নামায ইত্যাদি দিয়ে কোন জায়গাকে দখল করে রাখবে না।
কারণ, এটি হল মসজিদের কোন অংশকে বিছানা দিয়ে জবর দখল রাখার শামিল এবং অন্য মুসল্লী যারা আগে মসজিদে আসে তাদেরকে সে জায়গায় সালাত আদায় থেকে বাধা দেয়ার নামান্তর। মানুষকে মসজিদে আগে আগে আসার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি কোন ব্যক্তি বিছানা পাঠিয়ে দেয় এবং সে নিজে দেরিতে আসে, সে দুই দিক দিয়ে শরিয়তের বিরোধিতা করল; এক- তাকে আগে আসার নির্দেশ দেয়া হল, সে তা না করে দেরীতে মসজিদে আসল। দুই- সে মসজিদের কিছু অংশকে জবর দখল করে রাখল। ফলে যারা মসজিদে আগে আসবে, তাদের তাতে সালাত আদায় করতে বাধা দিল এবং প্রথম কাতার পুরো করা থেকে নিষেধ করল এবং যখন মানুষ উপস্থিত হবে, তখন তাদেরকে ফাঁক করে সামনে এগুতে হবে।[145] আল্লামা আব্দুর রহমান আস-সা‘দী রাহিমাহুল্লাহু এ কাজটিকে নাজায়েজ বলে ফতোয়া দেন। তিনি বলেন, এ ধরনের কর্ম হালাল নয়। কারণ, এটি শরিয়তের পরিপন্থী এবং সাহাবায়ে কেরাম ও কেয়ামত পর্যন্ত তাদের অনুসারীদের আদর্শের পরিপন্থী।[146]
তেত্রিশ- গোসল ফরয হয়েছে এমন ব্যক্তি এবং ঋতুবতী মহিলা মসজিদে বসবে না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَقۡرَبُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنتُمۡ سُكَٰرَىٰ حَتَّىٰ تَعۡلَمُواْ مَا تَقُولُونَ وَلَا جُنُبًا إِلَّا عَابِرِي سَبِيلٍ حَتَّىٰ تَغۡتَسِلُواْۚ ٤٣ ﴾ [النساء: ٤٣] ([147]).
আয়াতের ব্যাখ্যা: মুসল্লী যেন সালাত আদায়ের জন্য মাতাল অবস্থায় মসজিদের নিকটে না যায়। যতক্ষণ পর্যন্ত সে কি বলে তা বুঝতে পারে। আর নাপকী অবস্থায়ও কেবল অতিক্রম করা ছাড়া মসজিদে নিকট না যায়। অর্থাৎ মসজিদ থেকে বের হওয়ার জন্য যতটুকু হাঁটা প্রয়োজন হয়, তা ছাড়া যেন মসজিদে চলাচল না করে। আয়াতে সালাতকে মসজিদ ও সালাতের স্থানের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। এ ব্যাখ্যাটিকে ইমাম ইবনে জারির রাহিমাহুল্লাহু প্রাধান্য দেন।[148] হাফেয ইবনে কাসীর রাহিমাহুল্লাহুবলেন, অনেক ইমামগণ এ আয়াত দ্বারা এ কথার উপর প্রমাণ পেশ করেন, যে গোসল ফরয হওয়া ব্যক্তির জন্য মসজিদে অবস্থান করা হারাম। তবে তার জন্য মসজিদ ত্যাগ করার জন্য অতিক্রম করা বৈধ। অনুরূপভাবে ঋতুবতী ও নিফাস ধারিনী মহিলার বিধানও একই।[149]
তবে ঋতুবতী ও নিফাস ধারিনী মহিলার উপর জরুরী হল, সে মসজিদকে নাপাক করা হতে হেফাযত করবে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন,
« ناوليني الخمرة من المسجد » ، فقالت: إني حائض، فقال: « إن حيضتك ليست في يدك »
“তুমি আমার জন্য মসজিদ থেকে জায়নায নিয়ে আস। তখন সে বলল, আমি হায়েযা। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার হায়েয তোমার হাতে নয়”।[150] আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন,
قال: بينما رسول الله صلى الله عليه و سلم في المسجد قال: «يا عائشة ناوليني الثوب » فقالت: إني حائض، فقال: « حيضتك ليست في يدك »
“একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে উপস্থিত ছিল, তিনি বললেন, হে আয়েশা তুমি আমার জন্য কাপড়টি নিয়ে আস। তখন সে বলল, আমি হায়েযা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার হায়েয তোমার হাতে নয়”।[151]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত মারফু‘ হাদিসটি- «وجِّهوا هذه البيوت عن المسجد، فإني لا أُحلّ المسجد لحائض ولا جنب » “তোমরা তোমাদের ঘরসমূহকে মসজিদ থেকে সরিয়ে নাও কারণ, আমি হায়েযা ও নাপাক ব্যক্তির জন্য মসজিদকে হালাল মনে করি না [152]”- যারা মসজিদে অবস্থান করে তাদের জন্য। কোন কোন আহলে ইলম জুনুবী-নাপাক-ব্যক্তি যখন ওজু করে তখন তার জন্য মসজিদে অবস্থান করা বৈধ বলে মত দেন। যায়েদ বিন আসলামের হাদিস তিনি বলেন,
أن بعض أصحاب النبي صلى الله عليه و سلم كانوا إذا توضؤوا جلسوا في المسجد،
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কতক সাহাবী ওজু করার পর মসজিদে বসে থাকতেন”।[153] কিন্তু অন্যান্য আহলে ইলমগণ বলেন, কোনক্রমেই মসজিদে বসবে না। কারণ আল্লাহ তা‘আলার বাণী- ﴿ وَلَا جُنُبًا إِلَّا عَابِرِي سَبِيلٍ حَتَّىٰ تَغۡتَسِلُواْۚ ٤٣ ﴾ [النساء: ٤٣] - “Ges অপবিত্র অবস্থায়ও না, যতক্ষণ না তোমরা গোসল কর”।[154]ব্যাপক, তাতে সবাই শামিল। শুধু ওজু করা দ্বারা একজন মানুষ জুনুবী থেকে বের হয় না। একটু আগে উল্লিখিত হাদিসটির ব্যাপকতা তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
আমি আমার শাইখ ইমাম আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহুকে বলতে শুনেছি, এটিই সু-স্পষ্ট ও অধিক শক্তিশালী কথা, যে সব সাহাবীরা মসজিদে বসে থাকত, তাদের কর্মটি এ কথার উপর প্রয়োগ করা হবে যে, যে সব দলীল অপবিত্র ব্যক্তিকে মসজিদে বসা থেকে নিষেধ করছে, তাদের কাছে সে দলীলসমূহ গোপন ছিল। আর আসল হল, দলীলের উপর আমল করা। আর যায়েদ বিন আসলামের হাদিসটি যদিও ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেছেন, তবু যেহেতু তিনি হাদিসটি বর্ণনার ক্ষেত্রে একা, তাই তার বিষয়ে হাদীস বিশারদদের অন্তরে কিছু (সমস্যা) আছে[155]।
[1] বাড়ীতে বাড়ীতে মসজিদ বানানো বিষয়ে আলোচনা : সুফিয়ান রাহিমাহুল্লাহু বলেন, অর্থাৎ বিভিন্ন গোত্রে মসজিদ বানানো। দেখুন: আল্লামা ইবনুল আসীর রাহিমাহুল্লাহু এর জামেউল উসুল ২০৮/১১।
[2] আহমদ মুসনাদ ২৭৯/৬; আবু দাউদ, কিতাবুস সালাত, পরিচ্ছেদ: বাড়ীতে মসজিদ বানানো বিষয়ে আলোচনা, হাদীস নং ৪৫৫; তিরমিযি, কিতাবুল জুমুআ, মসজিদকে সু-গন্ধী লাগানো বিষয়ে আলোচনা, হাদিস নং ৫৯৪; ইবনে মাযা, কিতাবুল মাসাজেদ ওয়াল জামা‘আত, হাদিস নং ৭৫৮, ৭৫৯; আর আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে সহীহ সূনানে আবু দাউদে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন, হাদিস নং ৯২/১।
[3] আবু দাউদ, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: বাড়ি বাড়ি মসজিদ বানানো বিষয়ে আলোচনা, হাদিস নং ৪৫৬। আল্লামা আলবানী রাহিমাহুল্লাহু সহীহ সূনানে আবু দাউদে হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। ৯২/১।
[5] বুখারি ও মুসলিম : বুখারি, কিতাবুস সালাত, পরিচ্ছেদ: كنس المسجد والتقاط الخرق، والأذى، والعيدان، হাদিস নং ৪৫৮;কিতাবুল জানায়েয, পরিচ্ছেদ: দাফনের পর কবরের উপর সালাত আদায়, হাদিস নং ১৩৩৭; মুসলিম, কিতাবুল জানায়েয, পরিচ্ছেদ: দাফনের পর কবরের উপর সালাত আদায়, হাদিস নং ৯৫৬।
[6] বুখারি ও মুসলিম: কিতাবুল ওজু অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: মসজিদের ভিতরে পেশাবের উপর পানি ঢেলে দেয়ার আলোচনা, হাদিস নং, ২২১; মুসলিম, তাহারাত অধ্যায়, পেশাব ইত্যাদি নাপাক বস্তু যখন মসজিদে পাওয়া যায়, তা ধোয়া ওয়াজিব হওয়া প্রসঙ্গে, আর যমিন পানি দ্বারা পরিস্কার হয়ে যায়, কোন প্রকার খনন করা ছাড়াই, হাদিস নং ২৮৫।
[7] বুখারি ও মুসলিম: বুখারি, কিতাবুস সালাত, মসজিদে থু থু ফেলার কাফফরাহ, হাদিস নং ৪১৫; মুসলিম, কিতাবুল মাসাজিদ ও সালাতের স্থানসমূহ, সালাত ইত্যাদিতে মসজিদে থু থু ফেলা নিষিদ্ধ হওয়া এবং মুসল্লি তার সামনে বা ডানে থু থু ফেলা নিষিদ্ধ হওয়া বিষয়ে আলোচনা হাদিস নং ৫৫২।
[10] বুখারি ও মুসলিম: বুখারি, হাদিস: ৮৫৫; মুসলিম, হাদিস: ৫৬৪; মাকরুহাতে সালাতের আলোচনায় হাদিসটির তাখরীয উল্লেখ করা হয়েছে।
[13] বুখারি ও মুসলিম: বুখারি,তায়াম্মুম অধ্যায়, হাদিস, ৩৩৫। মুসলিম কিতাবুল মাসাজিদ ও সালাতের স্থানসমূহের আলোচনা, হাদিস: ৫২১।
[15] বুখারি ও মুসলিম: বুখারি, কিতাবুস সালাত, পরিচ্ছেদ: আমাকে হাদিস বর্ণনা করেন, আবুল ইয়ামান, হাদিস: ৪৩৬; মুসলিম, কিতাবুল মাসাজিদ ও সালাতের স্থানসমূহ, পরিচ্ছেদ: কবরের উপর মসজিদ বানানো নিষিদ্ধ হওয়া বিষয়ে আলোচনা, হাদিস: ৫৩০।
[19] বুখারি ও মুসলিম: বুখারি, কিতাবুস সালাত, পরিচ্ছেদ: আমাকে হাদিস বর্ণনা করেন, আবুল ইয়ামান, হাদিস: ৪৩৬; মুসলিম, কিতাবুল মাসাজিদ ও সালাতের স্থানসমূহ, পরিচ্ছেদ: কবরের উপর মসজিদ বানানো নিষিদ্ধ হওয়া বিষয়ে আলোচনা, হাদিস: ৫৩০।
[20] মুসলিম, কিতাবুল মাসাজিদ ও সালাতের স্থানসমূহ, পরিচ্ছেদ: কবরের উপর মসজিদ বানানো নিষিদ্ধ হওয়া, কবরের উপর মুর্তি স্থাপন করা নিষিদ্ধ হওয়া এবং কবরকে মসজিদ বানানো নিষিদ্ধ হওয়া বিষয়ে আলোচনা, হাদিস: ৫৩২।
[21] বুখারি ও মুসলিম, বুখারি, কিতাবুস সালাত, باب هل تنبش قبور مشركي الجاهلية ويتخذ مكانها مساجد، হাদীস নং ৪২৭; মুসলিম, মুসলিম কিতাবুল মাসাজিদ ও সালাতের স্থানসমূহ, পরিচ্ছেদ: কবরের উপর মসজিদ বানানো নিষিদ্ধ হওয়া, কবরের উপর মুর্তি স্থাপন করা নিষিদ্ধ হওয়া এবং কবরকে মসজিদ বানানো নিষিদ্ধ হওয়া বিষয়ে আলোচনা, হাদিস: ৫৩২।
[22] বুখারি ও মুসলিম: বুখারি, কিতাবুস, সালাত, যখন ইসলাম কবুল করবে, তখন গোসল করা ও মসজিদে বন্দীদের বেঁধে রাখা, হাদিস: ৪৬২; পরিচ্ছেদ: মুশরিকের জন্য মসজিদে প্রবেশ করা। মুসলিম, কিতাবুল জিহাদ, পরিচ্ছেদ: কয়েদীকে বন্দী করা ও বেঁধে রাখা এবং তার উপর ইহসান করা বৈধ হওয়া বিষয়ে আলোচনা। হাদিস: ১৭৬৪।
[23] দেখুন: আল্লামা সান‘আনীর সুবুলুস সালাম, ১৮৫/২
[25] বুখারি ও মুসলিম : বুখারি, মসজিদের কাব্য বলা বিষয়ে আলোচনা, হাদিস নং ৪৫৩; মুসলিম, সাহাবীদের ফযিলত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: হাসসান বিন সাবেতের রাদিয়াল্লাহু আনহু এর ফযিলত বিষয় আলোচনা, হাদিস নং২৪৮৫
[27] মুসলিম কিতাবুল মাসাজিদ, মসজিদে কোন হারানো বস্তু তালাশ করা বিষয়ে আলোচনা। কাউকে তালাশ করতে দেখলে কি বলবে।
[29] মুসলিম, কিতাবুল মাসাজিদ, মসজিদে কোন হারানো বস্তু তালাশ করা বিষয়ে আলোচনা। কাউকে তালাশ করতে দেখলে কি বলবে, হাদিস নং ৫৬৯।
[31] তিরমিযি, বেচা-কেনা অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: মসজিদে বিক্রি নিষিদ্ধ হওয়া হাদিস নং ১৩২১। নাসায়ী রাত ও দিনের আমল বিষয়ে আলোচনা অধ্যায়, হাদিস নং ১৭৬; আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে সহীহ সূনানে তিরমিযিতে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন ৩৪/২।
[32] দেখুন: আল্লামা সান‘আনীর সুবুলুস সালাম ১৮৯/২।
[33] আবু দাউদ, কিতাবুল হুদুদ, পরিচ্ছেদ : মসজিদে হদ কায়েম করা প্রসঙ্গে, হাদিস নং ৪৪৯০; আহমদ মুসনাদ ৩৪/৩; হাকিম, মুস্তাদরাক গ্রন্থে ৩৭৮/৪; ইমাম দারা কুতনী, সূনান গন্থে ৮৬/৩; বাইহাকী, আস-সূনান আল-কুবরা গ্রন্থে ৩২৮/৮, বুলুগুল মারামে হাফেয ইবনে হাজার হাদিসটিকে দূর্বল আখ্যায়িত করেন। আর আল্লামা আলবানী সহীহ সূনানে আবু দাউদে হাদিসটিকে হাসান বলেন, ৮৫০/৩।
[34] দেখুন: আল্লামা সান‘আনীর সুবুলুস সালাম ১৯১/২।
[37] বুখারি ও মুসলিম বুখারি, সালাত অধ্যায়ে, মসজিদে রোগীদের জন্য তাবু নির্মাণ বিষয়ে আলোচনা। হাদিস নং ৪৬৩। মুসলিম কিতাবুল জিহাদ, যারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে তাদের হত্যা করা বিষয়ে আলোচনা। হাদিস নং ১৭৬৯।
[38] বুলুগুল মারামের ২৭০ নং হাদিসের ব্যখ্যায় আমি তাকে বলতে শুনেছি।
[39] বুখারি, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: মসজিদের ঘুমানো প্রসঙ্গে, হাদিস নং ৪৪০; মুসলিম, সাহাবীদের ফযিলত বিষয়ে আলোচনা, পরিচ্ছেদ: আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর ফযিলত, হাদিস নং ২৪৭৯।
[41] বুখারি, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: নারীদের জন্য মসজিদের ঘুমানো প্রসঙ্গে, হাদিস নং ৪৩৯; তাতে একটি আশ্চর্য ঘটনা রয়েছে!। ।
[42] দেখুন: আল্লামা সান‘আনীর সুবুলুস সালাম ১৯৩/২।
[44] ইবনু মাযা, কিতাবুল আত‘ইমাহ, পরিচ্ছেদ: মসজিদে খাওয়া, হাদিস নং ৩৩০০। আল্লামা আলবানী সহীহ ইবনে মাযা ২৩০/২ তে হাদিসটিকে সহীহ বলেন।
[45] বুখারি ও মুসলিম: বুখারি, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: মসজিদে অস্ত্র বহনকারী, হাদিস নং ৪৫৪, বিবাহ অধ্যায়, পরিবারের সাথে ভালো ব্যবহার বিষয়ে আলোচনা, হাদিস নং ৫১৯০; কিতাবুল ঈদ, পরিচ্ছেদ: ঈদের দিন অস্ত্র দিয়ে খেলা করা, হাদিস নং ৫৯০; বিবাহ অধ্যায়ে নারীদের জন্য হাবশীদের দিক তাকানো, হাদিস নং ৫২৩৬; মুসলিম, দুই ঈদের সালাত অধ্যায়, যে সব খেলা-ধুলাতে আল্লাহর হুকুমের অবাধ্যতা নাই সে সব খেলা বৈধ হওয়া বিষয়ে আলোচনা, হাদিস নং ৮৯২
[46] বুখারি ও মুসলিম: বুখারি, কিতাবুল জিহাদ ওয়াস সীয়ার, অস্ত্র দিয়ে খেলা-ধুলা করা, হাদিস নং ২৯০১; মুসলিম, ঈদের সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: যে সব খেলা-ধুলাতে আল্লাহর হুকুমের অবাধ্যতা নাই সে সব খেলা বৈধ হওয়া বিষয়ে আলোচনা, হাদিস নং ৮৯৩।
[50] দেখুন, আল্লামা ইবনুল আসীরের জামে‘উল উসুল ২১০/১১। আরও দেখুন আল্লামা শাওকানীর নাইলুল আওতার ৬৯৫/১।
[51] আবু দাউদ, সালাত অধ্যায়, মসজিদ বানানো বিষয়ে আলোচনা, হাদিস নং ৪৪৯; ইবনু মাযা, কিতাবুল মাসাজেদ ওয়াল জামা‘আত, পরিচ্ছেদ: মসজিদকে শক্তিশালী করা।, হাদিস নং ৭৩৯; নাসায়ী, কিতাবুল মাসাজেদ, মসজিদ নিয়ে গর্ব করা অধ্যায়ে, হাদিস নং ৬৮৯; আহমদ ৪৫/৩। আল্লামা আলবানী রাহিমাহুল্লাহু হাদিসটি সহীহ সূনানে নাসায়ী ১৪৮/১ ও সহীহ সূনানে আবু দাউদে ৯১/১ হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন।
[52] আবু দাউদ, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: মসজিদ বানানো বিষয়ে আলোচনা, হাদীস ৪৪৮; আল্লামা আলবানী সহীহ সূনানে আবু দাউদে হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। ৯০/১।
[53] বুখারি, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ : মসজিদ বানানো, হাদিস ৪৪৬, আর আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৪৮।
[56] বুখারি, হাদিস নং ৩৭৩; মুসলিম, হাদীস নং ৫৫৬। সালাতের মাকরুহগুলো আলোচনায় তথ্যসূত্র অতিবাহিত হয়েছে।
[58] বুখারি, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: মসজিদ বানানো। ৪৪৬নং হাদিসের পূর্বে। হাফিয ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহু ফতহুল বারীতে উল্লেখ করে বলেন, এটি মুসনাদে আবি ইয়া‘লাতে মওসুল হিসেবে বর্ণিত। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, « يأتي على أمتي زمان يتباهون في المساجد،ثم لا يعمرونها إلا قليلاً »
[63] মুসলিম, কিতাবুল মাসাজেদ ও সালাতের স্থানসমূহের আলোচনা, পরিচ্ছেদ : ফজরের সালাতের সালাতের স্থানে বসা, হাদিস নং ৬৭০।
[64] আহমদ, ৯১/৫। তিরমিযি, কিতাবুল আদব, কবিতা আবৃত্তি করার আলোচনা, হাদীস ২৮৫০; তিনি বলেন, হাদিসটি হাসান সহীহ। আল্লামা আলবানী সহীহ সূনানে তিরমিযিতে হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন ১৩৭/৩।
[68] আবু দাউদ, নফল অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: রাতের সালাতে উচ্চস্বরে ক্বিরাত পড়া বিষয়ে আলোচনা। হাদিস নং ১৩৩২; সহীহ আবু দাউদে আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেন ১৪৭/১; ইমাম আহমদ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে মুসনাদে বর্ণনা করেন ৬৭/২; আহমদ শাকের রাহিমাহুল্লাহু মুসনাদের স্বীয় ব্যাখ্যায় একে সহীহ বলে উল্লেখ করেন হাদিস নং ৯২৮, ৫৩৪৯।
[75] আবু দাউদ, সালাত অধ্যায় সাওয়ারির সামনে কাতার করা, হাদিস নং ৬৭৩; তিরমিযি, হাদিস নং ২২৯; নাসায়ী ৯৪/২; আহমদ হাদিস নং ১৩১/৩; হাকিম ২১৮/১; সহীহ আবু দাউদে আল্লামা আলবানী হাদিসটি সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন ১৪৯/১।
[76] ইবনু মাযা, হাদিস: ১০০২; হাকেম, ২১৮/১, আল্লামা আলবানী বিশুদ্ধ ইবনে মাযাতে বলেন, হাদিসটি হাসান সহীহ।
[77] বুখারি ও মুসলিম, বুখারি, সালাত অধ্যায়, জামা‘আত ছাড়া সাওয়ারির সামনে সালাত আদায় করা, হাদিস নং ৫০৪, মুসলিম, কিতাবুল হজ, কাবা ঘরে প্রবেশ মুস্তাহাব হওয়া বিষয়ে আলোচনা, হাদিস নং ১৩২৯।
[78] নাসায়ী মসজিদে বেচা-কেনা করা ও জুমার সালাতের পূর্বে হালকা করে বসা। হাদিস নং ৭১৪। আবু দাউদ কিতাবুল জুমআ। জুমার সালাতের পূর্বে গোলাকার হয়ে বসা, হাদিস নং ১০৭৯। তিরমিযি সালাত অধ্যায়, মসজিদে বেচা-কেনা করা ও হারানো বস্তু তালাশ করা বিষয়ে আলোচনা। হাদিস নং ৩২২। ইবনু মাযা কিতাবুল মাসাজেদ ও জামা‘আত। ইমমা খুতবা দেয়া অবস্থায় সালাতের পূর্বে জুমার দিন মসজিদে হালকা করা এবং এহতেবা করা। হাদিস নং ১১৩৩। আল্লামা আলবানী রহ সূনানে নাসায়ী, সূনানে আবুদাউদ হাদিসটিকে হাসান বলেন।
[80] আবু দাউদ, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: ইমামের খুতবার সময় ঘুমানো, হাদিস নং ১১৯। তিরিমিযি, জুমু‘আ অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: যে ব্যক্তির জুমু‘আর দিন ঘুম আসে সে স্থান ত্যাগ করবে। হাদিস নং ৫২৬; আহমদ ২২, ৩২, ১৩৫/২; আর আল্লামা আলবানী সহীহ সূনানে আবু দাউদে ২০৮/১ হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন।
[81] বুলুগুল মারামের ৫২৬ নং হাদিসের ব্যখ্যায় আমি তাকে বলতে শুনেছি।
[82] দেখুন: আল্লামা শাওকানীর নাইলুল আওতার, ৫২৪/২; আল্লামা মুবারকপুরির তুহাফাতুল আহওয়াজি শরহে জামে তিরমিযি ৬৪/৩; আওনুল মা‘বুদ: ৪৬৯/৩।
[84] ‘আল-বিয়া’ শব্দের অর্থ পাদ্রী আশ্রম। আবার কেউ কেউ বলেন, খৃষ্টানদের উপাসানালয়। আর আল্লামা ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহু দ্বিতীয় মতকে প্রাধান্য দেন। ফাতহুল বারী ৫৩১/১।
[85] নাসায়ী, কিতাবুল মাসাজিদ, পরিচ্ছেদ : গীর্জাকে মসজিদ বানানো বিষয়ে আলোচনা। সহীহ নাসায়ীতে আল্লামা আলবানী সনদটিকে সহীহ বলেন ১৫১/১।
[86] বুখারি, কিতাবুস সালাত, পরিচ্ছেদ: গীর্জায় সালাত আদায় করা, হাদিস নং ৪৩৪; হাফেজ ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহু ফতহুল বারী- ৫৩১/১ তে উল্লেখ করেন, আব্দুর রাজ্জাক হাদিসটিকে মওসুল বর্ণনা করেন।
[87] বুখারি, কিতাবুস সালাত, পরিচ্ছেদ: গীর্জায় সালাত আদায় করা, হাদিস নং ৪৩৪; হাফেজ ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহু ফতহুল বারী- ৫৩১/১ তে উল্লেখ করেন, বগোবী রাহিমাহুল্লাহু জাদিয়াতে হাদিসটিকে মওসুল বর্ণনা করেন। তবে তাতে এ অংশটুকু বাড়ান-((فإن كان فيها تماثيل خرج فصلى في المطر)).
[91] সহীহ মুসলিমের উপর ইমাম নববীর ব্যাখ্যা। এবং দেখুন, আল্লামা হুমাইদী রাহিমাহুল্লাহু এর গরীব পৃ ৭৯, ১৩৫।
[92] বুখারি ও মুসলিম, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ, মসজিদে চলাচল করা। হাদিস নং ৪৫২। কিতাবুল ফিতান, এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী, যে ব্যক্তি আমাদের বিপক্ষে অস্ত্র বহন করে সে আমার উম্মতের অর্ন্তভূক্ত নয় আলোচনা প্রসঙ্গে। হাদিস নং ৭০৭৫। মুসলিম, কিতাবুল বির ওয়াস সেলা। পরিচ্ছেদ: যে ব্যক্তি মসজিদ বাজার ও যে সব স্থানে মানুষের জামায়েত থাকে তা অতিক্রম করার সময়, ধারালো বস্তুকে সংরক্ষণ রাখার আলোচনা। হাদিস নং ২৬১৫।
[93] বুখারি ও মুসলিম: বুখারি, সালাত অধ্যায়, মসজিদে প্রবেশের সময় তীরের ধারালো অংশ হেফাজত করা প্রসঙ্গে। হাদিস নং ৪৫১। সালাত অধ্যায়, যে ব্যক্তি মসজিদ বাজার ও যে সব স্থানে মানুষের জামায়েত থাকে তা অতিক্রম করার সময়, ধারালো বস্তুকে সংরক্ষণ রাখার আলোচনা। হাদিস নং ২৬১৪।
[97] বুখারি ও মুসলিম: বুখারি, কিতাবুল ফিতান, এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী, যে ব্যক্তি আমাদের বিপক্ষে অস্ত্র বহন করে সে আমার উম্মতের অর্ন্তভূক্ত নয় আলোচনা প্রসঙ্গে। হাদিস নং ৭০৭২। মুসলিম, কিতাবুল বির ওয়াস সেলা। পরিচ্ছেদ: অস্ত্র দ্বারা কোন মুসলিমের দিক ইশারা করা অবৈধ হওয়া প্রসঙ্গে আলোচনা। হাদিস নং ২৬১৭।
[98] মুসলিম, কিতাবুল বির ওয়াস সেলা। পরিচ্ছেদ: অস্ত্র দ্বারা কোন মুসলিমের দিক ইশারা করা অবৈধ হওয়া প্রসঙ্গে আলোচনা। হাদিস নং ২৬১৭।
[99] মুসলিম, কিতাবুল বির ওয়াস সেলা। পরিচ্ছেদ: অস্ত্র দ্বারা কোন মুসলিমের দিক ইশারা করা অবৈধ হওয়া প্রসঙ্গে আলোচনা। হাদিস নং ২৬১৬।
[100] বুখারি, কিতাবুল ফিতান, এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী, যে ব্যক্তি আমাদের বিপক্ষে অস্ত্র বহন করে সে আমার উম্মতের অর্ন্তভূক্ত নয় আলোচনা প্রসঙ্গে। হাদিস নং ৭০৭০।
[101] দেখুন: হাফেয ইবনে হাজারের ফতহুল বারী ২৪/১৩।
[102] আবু দাউদ, কিতাবুল জিহাদ, কোসমুক্ত করে তলোয়ার আদান প্রদান করা নিষিদ্ধ হওয়া বিষয়ে আলোচনা। আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে বিশুদ্ধ সূনানে আবু দাউদে হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। হাদিস নং ৪৯১/২।
[103] বুখারি ও মুসলিম: বুখারি নিকাহ অধ্যায়, স্ত্রী স্বামীর নিকট মসজিদে গমনের অনুমতি প্রসঙ্গে আলোচনা। হাদিস নং ৫২৩৮। মুসলিম, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: মহিলাদের মসজিদে গমনের বিধান, হাদিস নং ৪৪২।
[104] আবু দাউদ, কিতাবুস সালাত, মহিলাদের মসজিদে গমনের বিধান, হাদিস নং ৪৪২। আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে বিশুদ্ধ সূনানে আবু দাউদে হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। হাদিস নং ১১৩/১।
[107] আবু দাউদ, কিতাবুস সালাত, মহিলাদের মসজিদে গমনের বিধান, হাদিস নং ৫৬৫। আহমদ ৪৩৮/২, আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে সহীহ সূনানে আবু দাউদে হাসান সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। হাদিস নং ১১৩/১।
[108] আবু দাউদ, কিতাবুস সালাত, এ বিষয়ে কঠোরতা করা প্রসঙ্গে, হাদিস নং ৫৭০। আল্লামা আলবানী সহীহ সূনানে আবু দাউদে হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। হাদিস নং ১১৪/১।
[110] আবু দাউদ, কিতাবুস সালাত, মহিলাদের মসজিদে পুরুষদের থেকে দূরে রাখা হাদিস নং ৪৬২ এবং এ বিষয়ে কঠোরতা করা প্রসঙ্গে, হাদিস নং ৫৭১। আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে বিশুদ্ধ সূনানে আবু দাউদে হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। হাদিস নং ১১৪/১।
[111] আল্লামা সাবকী রাহিমাহুল্লাহু এর আল মিনহাল আল আযবুল মাওরুদ, শরহু সূনানে আবু দাউদ। ৭০/৪ এবং আওনুল মা’বুদ। ২৭৭/২।
[113] الحبوة: মসজিদে দুই হাটু উঠিয়ে দুই পা পেটের দিক ঘুটিয়ে কাপড় পেছিয়ে জমিনে নিতম্ব রেখে বসা। আবার কখনো সময় এহতেবা দুই হাত মাটিতে রাখার কারণেও হয়ে থাকে। দেখুন: আল্লামা শাওকানীর নাইলুল আওতার ৫২৫/২।
[114] আবু দাউদ, সালাত অধ্যায়, হাদিস নং ১১১০। তিরমিযি, জুমআ অধ্যায় অধ্যায়, হাদিস নং ৫১৪। আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে বিশুদ্ধ সূনানে আবু দাউদ ২০৬/১ এবং বিশুদ্ধ সূনানে তিরমিযিতে ১৫৯/১ হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন।
[115] ইবনে মাযা, কিতাবুল মাসাজিদ ও জামা‘আত। হাদিস নং ১১৩৪, আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে বিশুদ্ধ সূনানে ইবনু মাযাতে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। ১৮৭/১।
[122] বুখারি, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ সালাত আদায় করা ছাদ, মিম্বর ও লাকড়ীর উপর। হাদিস নং ৩৭৭, মসজিদের মিম্বর বানানোর সময় মিস্ত্রী ও কারিগরের সহযোগীতা গ্রহণ হাদিস নং ৪৪৮, জুমআ অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: মিম্বরের উপর খুতবা দেয়া বিষয়ে আলোচনা। হাদিস নং ৯১৭
[123] বুখারি, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: মসজিদের মিম্বর বানানোর সময় মিস্ত্রী ও কারিগরের সহযোগীতা গ্রহণ, হাদিস নং ৪৪৮, জুমআ অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: মিম্বরের উপর খুতবা দেয়া বিষয়ে আলোচনা। হাদিস নং ৯১৭, কিতাবুল বুয়ু, পরিচ্ছেদ: নাজ্জারের আলোচনা হাদিস নং ২০৯৫। কিতাবুল মানাকেব, ইসলামে নবুওয়তের আলামত হাদিস নং ৩৫৮৫।
[125] আবু দাউদ< সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ মিম্বর গ্রহণ করা, হাদিস নং ১০৮১। আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে সহীহ সূনানে আবু দাউদে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। ২০২/১।
[126] মুসলিম, কিতাবুল মাসাজেদ, পরিচ্ছেদ, সালাতে এক কদম বা দুই কদম চলাচল করা বৈধ হওয়া বিষয়ে আলোচনা। হাদিস নং ৫৪৪।
[129] আবু দাউদ, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: মসজিদে বসে থাকার ফযিলত, হাদিস নং 472; মিম্বর গ্রহণ করা, হাদিস নং ১০৮১; আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে সহীহ সূনানে আবু দাউদে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন ৯৪/১।
[131] তাবরানী মুজাম আল কবীর: ২৭১/২ হাদিস নং ১৩৩৭৩, আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে বিশুদ্ধ সূনানে আবু দাউদে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। ১০৫/৫, হাদিস নং ৫৩৩২। আল্লামা আলবানী বিশুদ্ধ হাদিস গ্রন্থ।
[135] আবু দাউদ, সালাত অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: জুমু‘আর দিন মানুষের গরদান ফাকা করা বিষয়ে আলোচনা, হাদিস নং ১১১৮, নাসায়ী জুমু’আ অধ্যায়, জুমু‘আর দিন মানুষের গরদান ফাকা করা নিষিদ্ধ হওয়া বিষয়ে আলোচনা, হাদিস নং ১৩৯৯। আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে সহীহ সূনানে আবু দাউদে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। ২০৮/১।
[136] ইবনু মাযা, সালাত কায়েম করা অধ্যায়, জুমু‘আর দিন মানুষের গরদান ফাকা করা নিষিদ্ধ হওয়া বিষয়ে আলোচনা, হাদিস নং ১১১৫; আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে সহীহ সূনানে আবু দাউদে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। ১৮৪/১।
[140] আবু দাউদ হাদিস নং ৮৬২। আহমদ: ২২৯/১ হাকেম: ৫২৪/১ আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে বিশুদ্ধ সূনানে আবু দাউদে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। ৯৪/১।
[141] মুসলিম, সালাম অধ্যায়, হাদিস নং ২১৭৮।
[142] বুখারি ও মুসলিম: বুখারি, জুমআ অধ্যায়, হাদিস নং ৯১১; মুসলিম, সালাম অধ্যায়, হাদিস নং ২১৭৮।
[143] বুখারি ও মুসলিম: বুখারি, জুমু‘আ অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: ইমামের খুতবা দেয়ার সময়, জুমু‘আর দিন চুপ থাকা বিষয়ে আলোচনা, হাদিস নং ৯৩৪; মুসলিম, কিতাবুল জুমু‘আ, ইমামের খুতবা দেয়ার সময়, জুমু‘আর দিন চুপ থাকা বিষয়ে আলোচনা, হাদিস নং ৮৫১।
[144] তাবরানী, আল-কবীরে ১৯৯/১০, হাদিস নং ১০৪৫২, হাদিসটিকে আল্লামা আলবানী রাহিমাহুল্লাহু সিলসিলাতুল আহাদিস গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, হাদিস নং ১১৬৩।
[146] দেখুন: ফতুয়া আস-সাদীয়াহ, পৃ: ১৮২। আমি আমার শাইখ ইমাম আব্দুল আজীজ বিন বায রাহিমাহুল্লাহুকে বিষয়টি না যায়েজ হওয়ার ফতুয়া দিতে শুনেছি। তবে যদি মানুষ মসজিদে থাকে এবং ওজুর জন্য বের হয় এবং আবার ফিরে আসে।
[152] আবু দাউদ, তাহারাত অধ্যায়, নাপাক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করা বিষয়ে আলোচনা। হাদিস নং ৩২২। তালখীসে আল হাবিরে হাফেয ইবনে হাজর রাহিমাহুল্লাহু ১৪০/১। ইমাম আহমদ বলেন, এতে কোন অসুবিধা দেখিনা। আল্লামা ইবনে খুজাইমা সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন। আর ইবনে কাত্তান হাসান বলেন। আমি আমার শাইখকে বুলুগুল মুরাম ১৩২ নং হাদিসের ব্যখ্যায় বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, হাদিসটির সনদে কোন অসুবিধা নাই।
[153] বর্ণনায় সাঈদ বিন মনসূর ও খলিল বিন ইসহাক যেমনটি ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহু এর মুন্তাকায় বর্ণিত। ১৪১-১৪২/১ এবং যেমনটি ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহু এর উমদার ব্যাখ্যা। ৩৯১/১
____________________________________________________________________________________________________________
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন