Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

See Our Articles In Different Styles... Grid View List View

রবিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৮

গুহাতে আশ্রয় গ্রহণকারী তিন ব্যক্তির গল্প

Views:

A+ A-


ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ - ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ - ﻗَﺎﻝَ : ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮْﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ - ﺻَﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَ ﺳَﻠَّﻢَ - ﻳَﻘُﻮْﻝُ : ﺍِﻧْﻄَﻠَﻖَ ﺛَﻠَﺎﺛَﺔُ ﺭَﻫْﻂٍ ﻣِﻤَّﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻗَﺒْﻠَﻜَﻢُ ْﺣَﺘّﻰ ﺃﻭَﻭﺍ ﺍﻟْﻤَﺒِﻴْﺖَ ﺇﻟﻰ ﻏَﺎﺭٍ ﻓَﺪَﺧَﻠُﻮْﻩُ، ﻓَﺎﻧْﺤَﺪَﺭَﺕْ ﺻَﺨْﺮَﺓٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺠَﺒَﻞِ، ﻓَﺴَﺪَّﺕْ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢُ ﺍﻟْﻐَﺎﺭَ، ﻓَﻘَﺎﻟُﻮْﺍ : ﺇﻧَّﻪ ﻟَﺎﻳُﻨْﺠِﻴْﻜُﻢْ ﻣِﻦْ ﻫﺬِﻩِ ﺍﻟﺼَّﺨْﺮَﺓَِ ﺇﻟَّﺎ ﺃﻥْ ﺗَﺪْﻋُﻮﺍ ﺍﻟﻠﻪَ ﺑِﺼَﺎﻟِﺢِ ﺃﻋْﻤَﺎﻟِﻜُﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻣِﻨْﻬُﻢْ : ﺍﻟﻠّﻬُﻢَّ ﻛَﺎﻥَ ﻟِﻲْ ﺃﺑْﻮَﺍﻥِ ﺷَﻴْﺨَﺎﻥِ ﻛَﺒِﻴْﺮَﺍﻥِ ﻭَﻛُﻨْﺖُ ﻟَﺎ ﺃﻏْﺒِﻖُ ﻗَﺒْﻠَﻬُﻤَﺎ ﺃﻫْﻠًﺎ ﻭﻟَﺎ ﻣَﺎﻟًﺎ، ﻓَﻨَﺄﻯ ﺑِﻲْ ﻓَﻲْ ﻃَﻠَﺐِ ﺷَﻴْﺊٍ ﻳَﻮْﻣًﺎ، ﻓَﻠَﻢْ ﺃﺭِﺡْ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻤَﺎ ﺣَﺘَّﻰ ﻧَﺎﻣَﺎ : ﻓَﺤَﻠَﺒْﺖُ ﻟَﻬُﻤَﺎ ﻏَﺒُﻮْﻗَﻬُﻤَﺎ، ﻓَﻮَﺟَﺪﺗُّﻬُﻤَﺎ ﻧَﺎﺋِﻤَﻴْﻦِ، ﻭَﻛَﺮِﻫْﺖُ ﺃﻥْ ﺃﻏْﺒِﻖَ ﻗَﺒْﻠَﻬُﻤَﺎ ﺃﻫْﻠًﺎ ﺃﻭْ ﻣَﺎﻟًﺎ، ﻓًﻠَﺒِﺜْﺖُ - ﻭَﺍﻟْﻘَﺪْﺡُ ﻋَﻠَﻰ ﻳَﺪِﻱْ - ﺃﻧْﺘَﻈِﺮُ ﺍِﺳْﺘِﻴْﻘَﺎﻇَﻬُﻤَﺎ ﺣَﺘّﻰ ﺑَﺮِﻕَ ﺍﻟْﻔَﺠْﺮُ، ﻓَﺎﺳْﺘَﻴْﻘَﻈَﺎ ﻓَﺸَﺮِﺑَﺎ ﻏَﺒُﻮْﻗَﻬُﻤَﺎ، ﺍﻟﻠّﻬُﻢَّ ﺇﻥْ ﻛُﻨْﺖُ ﻓَﻌَﻠْﺖُ ﺫﻟِﻚَ ﺍﺑْﺘِﻐَﺎﺀَ ﻭَﺟْﻬِﻚَ ﻓَﻔَﺮِّﺝْ ﻋَﻨَّﺎ ﻣَﺎ ﻧَﺤْﻦُ ﻓِﻴْﻪِ ﻣِﻦْ ﻫﺬِﻩِ ﺍﻟﺼَّﺨْﺮَﺓِ، ﻓَﺎﻧْﻔَﺠَﺮَﺕْ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻟَﺎ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻴْﻌُﻮْﻥَ ﺍﻟْﺨُﺮُﻭْﺝَ .




ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻَﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَ ﺳَﻠَّﻢَ : ﻭﻗﺎﻝ ﺍﻵﺧَﺮُ : ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻟِﻲْ ﺑِﻨْﺖُ ﻋَﻢٍّ، ﻛَﺎﻧَﺖْ ﺃﺣَﺐَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺇﻟَﻲَِّ، ﻓَﺄﺭَﺩﺗُّﻬَﺎ ﻋَﻦْ ﻧَﻔْﺴِﻬَﺎ، ﻓَﺎﻣْﺘَﻨَﻌَﺖْ ﻣِﻨِّﻲْ ﺣَﺘَّﻰ ﺃﻟَّﻤَﺖْ ﺑِﻬَﺎ ﺳَﻨَﺔٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺴِّﻨِﻴْﻦَ، ﻓَﺠَﺎﺋﺘْﻨِﻲْ ﻓَﺄﻋْﻄَﻴْﺘُﻬَﺎ ﻋِﺸْﺮِﻳْﻦَ ﻭَﻣِﺎﺋﺔَ ﺩِﻳْﻨَﺎﺭٍ ﻋَﻠَﻰ ﺇﻥ ﺗُﺨَﻠِّﻲَ ﺑَﻴْﻨِﻲْ ﻭَﺑَﻴْﻦَ ﻧَﻔْﺴِﻬَﺎ، ﻓَﻔَﻌَﻠَﺖْ، ﺣَﺘَّﻰ ﺇﺫَﺍ ﻗَﺪَﺭْﺕُ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ، ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﻟَﺎ ﺃﺣِﻞُّ ﻟَﻚَ ﺃﻥْ ﺗَﻔُﺾَّ ﺍﻟْﺨَﺎﺗَﻢَ ﺇﻟَّﺎ ﺑِﺤَﻘَّﻪِ، ﻓَﺘَﺤَﺮَّﺟْﺖُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻮُﻗُﻮْﻉِ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ، ﻓَﺎﻧْﺼَﺮَﻓْﺖُ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﻭَﻫِﻲَ ﺃﺣَﺐُّ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺇﻟَﻲَّ، ﻭَﺗَﺮَﻛْﺖُ ﺍﻟﺬَّﻫَﺐَ ﺍﻟَّﺬِﻱِ ﺃﻋْﻄَﻴْﺘُﻬَﺎ، ﺍﻟﻠّﻬُﻢَّ ﺇﻥْ ﻛُﻨْﺖُ ﻓَﻌَﻠْﺖُ ﺫﻟِﻚَ ﺍﺑْﺘِﻐَﺎﺀَ ﻭَﺟْﻬِﻚَ ﻓَﺎﻓْﺮُﺝْ ﻋَﻨَّﺎ ﻣَﺎ ﻧَﺤْﻦُ ﻓِﻴْﻪِ، ﻓَﺎﻧْﻔَﺮَﺟَﺖِ ﺍﻟﺼَّﺨْﺮَﺓُ، ﻏَﻴْﺮَ ﺃﻧَّﻬُﻢْ ﻟَﺎ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻴْﻌُﻮْﻥَ ﺍﻟْﺨُﺮُﻭْﺝَ ﻣِﻨْﻬَﺎ .

ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻَﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَ ﺳَﻠَّﻢَ : ﻭﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﺜَّﺎﻟِﺚُ : ﺍﻟﻠّﻬُﻢَّ ﺇﻧِّﻲْ ﺍﺳْﺘَﺄﺟَﺮْﺕُ ﺃﺟَﺮَﺍﺀَ، ﻓَﺄﻋْﻄَﻴْﺘُﻬُﻢْ ﺃﺟْﺮَﻫُﻢْ ﻏَﻴْﺮَ ﺭَﺟُﻞٍ ﻭَﺍﺣِﺪٍ ﺗَﺮَﻙَ ﺍﻟَّﺬِﻱْ ﻟَﻪُ ﻭَﺫَﻫَﺐَ، ﻓَﺜَﻤَّﺮْﺕُ ﺃﺟْﺮَﻩُ ﺣَﺘّﻰ ﻛَﺜُﺮَﺕْ ﻣِﻨْﻪُ ﺍﻟْﺄﻣْﻮَﺍﻝُ ﻓَﺠَﺎﺀَﻧِﻲْ ﺑَﻌْﺪَ ﺣِﻴْﻦٍ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﻋَﺒْﺪَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺃﺩِّ ﺇﻟَﻲَّ ﺃﺟْﺮِﻱْ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻪُ : ﻛُﻞُّ ﻣَﺎ ﺗَﺮَﻯ ﻣِﻦْ ﺃﺟْﺮِﻙَ، ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺈﺑِﻞِ، ﻭَﺍﻟْﺒَﻘَﺮِ، ﻭَﺍﻟْﻐَﻨَﻢِ، ﻭَﺍﻟﺮَّﻗِﻴْﻖِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﻋَﺒْﺪَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻟَﺎﺗَﺴْﺘَﻬْﺰِﺉْ ﺑِﻲْ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﺇﻧِّﻲْ ﻟَﺎ ﺃﺳْﺘَﻬْﺰِﺉُ ﺑِﻚَ ﻓَﺄﺧَﺬَﻩُ ﻛُﻠَّﻪُ ﻓَﺎﺳْﺘَﺎﻗَﻪْ ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺘْﺮُﻙْ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻴْﺌًﺎ، ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻓَﺈﻥْ ﻛُﻨْﺖُ ﻓَﻌَﻠْﺖُ ﺫﻟِﻚَ ﺍﺑْﺘِﻐَﺎﺀَ ﻭَﺟْﻬِﻚَ ﻓَﺎﻓْﺮُﺝْ ﻋَﻨَّﺎ ﻣَﺎ ﻧَﺤْﻦُ ﻓِﻴْﻪِ، ﻓَﺎﻧْﻔَﺮَﺟَﺖِ ﺍﻟﺼَّﺨْﺮَﺓُ، ﻓَﺨَﺮَﺟُﻮْﺍ ﻳَﻤْﺸُﻮْﻥَ . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ (২১১১)


আব্দুল্লাহ বিন উমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি, ‘তোমাদের পূর্বের যুগে তিন ব্যক্তির একটি দল কোথাও যাত্রা করেছিল, যাত্রাপথে রাত যাপনের জন্য একটি গুহাতে তারা আগমন করে এবং তাতে প্রবেশ করে। অকস্মাৎ পাহাড় থেকে একটি পাথর খসে পড়ে এবং বন্ধ করে দেয় তাদের উপর গুহামুখ। এমন অসহায় অবস্থায় তারা বলাবলি করছিল, তোমাদেরকে এ পাথর হতে মুক্ত করতে পারবে—এমন কিছুই হয়ত নেই। তবে যদি তোমরা নিজ নিজ নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া কর—নাজাত পেতে পার।


তাদের একজন বলল : হে আল্লাহ ! আমার বয়োবৃদ্ধ পিতা-মাতা ছিলেন, আমি তাদেরকে দেওয়ার পূর্বে আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্য—স্ত্রী-সন্তান ও গোলাম-পরিচারকদের কাউকে রাতের খাবার—দুগ্ধ—পেশ করতাম না। একদিনের ঘটনা : ঘাসাচ্ছাদিত চারণভূমির অনুসন্ধানে বের হয়ে বহু দূরে চলে গেলাম। আমার ফেরার পূর্বেই তারা ঘুমিয়ে পরেছিলেন। আমি তাদের জন্য—রাতের খাবার—দুগ্ধ দোহন করলাম। কিন্তু দেখতে পেলাম তারা ঘুমাচ্ছেন। তাদের আগে পরিবারের কাউকে- স্ত্রী-সন্তান বা মালিকানাধীন গোলাম-পরিচারকদের দুধ দেয়াকে অপছন্দ করলাম। আমি—পেয়ালা হাতে—তাদের জাগ্রত হওয়ার অপেক্ষা করছিলাম, এতেই সকাল হয়ে গেল। অতঃপর তারা জাগ্রত হলেন এবং তাদের—রাতের খাবার—দুধ পান করলেন। হে আল্লাহ ! আমি এ খেদমত যদি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করে থাকি, তাহলে এ পাথরের মুসিবত হতে আমাদের মুক্তি দিন। তার এই দোয়ার ফলে পাথর সামান্য সরে গেল, কিন্তু তাদের বের হওয়ার জন্য তা যথেষ্ট ছিল না।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন—অপর ব্যক্তি বলল : হে আল্লাহ ! আমার একজন চাচাতো বোন ছিল, সে ছিল আমার নিকট সমস্ত মানুষের চেয়ে প্রিয়। আমি তাকে পাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করলাম। সে আমাকে প্রত্যাখ্যান করল এবং আমার থেকে দূরে সরে থাকল। পরে কোন এক সময় দুর্ভিক্ষ তাড়িত, অভাবগ্রস্ত হয়ে আমার কাছে ঋণের জন্য আসে, আমি তাকে একশত বিশ দিরহাম দেই, এ শর্তে যে—আমার এবং তার মাঝখানের বাধা দূর করে দেবে। সে তাতেও রাজি হল। আমি যখন তার উপর সক্ষম হলাম, সে বলল : অবৈধ ভাবে সতীচ্ছেদ করার অনুমতি দিচ্ছি না—তবে বৈধভাবে হলে ভিন্ন কথা। আমি তার কাছ থেকে ফিরে আসলাম। অথচ তখনও সে আমার নিকট সবার চেয়ে প্রিয় ছিল। যে স্বর্ণ-মুদ্রা আমি তাকে দিয়েছিলাম, তা পরিত্যাগ করলাম। হে আল্লাহ ! আমি যদি এ কাজ তোমার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করে থাকি, তাহলে আমরা যে মুসিবতে আছি, তা হতে মুক্তি দাও। পাথর সরে গেল—তবে এখনও তাদের বের হওয়ার জন্য তা যথেষ্ট হল না।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন—তৃতীয় ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহ ! আমি কয়েকজন মজুর নিয়োগ করেছিলাম, অতঃপর তাদের পাওনা তাদের দিয়ে দেই। তবে এক ব্যক্তি ব্যতীত—সে নিজের মজুরি পরিত্যাগ করে চলে যায়। আমি তার মজুরি বার বার ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছি। যার ফলে সম্পদ অনেক বৃদ্ধি পায়। অনেক দিন পরে সে আমার কাছে এসে বলে, হে আব্দুল্লাহ, আমার মজুরি পরিশোধ কর। আমি তাকে বললাম, তুমি যা কিছু দেখছ—উট-গরু-বকরি-গোলাম—সব তোমার মজুরি। সে বলল : হে আব্দুল্লাহ ! তুমি আমার সাথে উপহাস করো না। আমি বললাম, উপহাস করছি না। অতঃপর সে সবগুলো গ্রহণ করল এবং তা হাঁকিয়ে নিয়ে গেল। কিছুই রেখে যায়নি। হে আল্লাহ ! আমি যদি এ কাজ তোমার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করে থাকি, তাহলে আমরা যে মুসিবতে আছি তা হতে মুক্তি দাও। পাথর সরে গেল। তারা সকলে নিরাপদে হেঁটে বের হয়ে আসল। ঘটনাটি ইমাম বোখারি ও মুসলিম বর্ণনা করেছেন।[১]

হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি—বিশিষ্ট সাহাবি আবু আব্দুর রহমান, আব্দুল্লাহ বিন উমর ইবনুল খাত্তাব বিন নোফাইল আল-কোরাইশী আল ‘আদাওয়ী আল-মাক্কী আল-মাদানী। তিনি ছিলেন বরণীয়, অনুসরণীয় একজন পথিকৃৎ ইমাম। শৈশবে ইসলাম গ্রহণ করেন। পিতার সাথে হিজরত করেন—তখনও তিনি সাবালক হননি। বয়স কম থাকার কারণে ওহুদের যুদ্ধে তাকে অংশ নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। তার প্রথম যুদ্ধ খন্দক। আল-কোরআনে বর্ণিত গাছের নীচে যারা বায়আত গ্রহণ করেছিলেন, তিনি তাদের একজন। রাসূল সা. এবং খোলাফায়ে রাশেদীন হতে অনেক হাদিস বর্ণনা করেন তিনি। ৭৩ হি. সনে ইন্তেকাল করেন।

হাদিসের তাৎপর্য ও শিক্ষা


অত্র হাদিসটি অনেক উপদেশ এবং বহু তাৎপর্যপূর্ণ। নিম্নে কতিপয় উল্লেখ করা হল :—

১. পূর্ববর্তী লোকদের ঘটনায় অনেক উপদেশ ও শিক্ষা রয়েছে। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত এ সমস্ত ঘটনা গভীরভাবে চিন্তা করা এবং দৈনন্দিন জীবনে এ থেকে উপকৃত হওয়া। আল্লাহ তাআলা আমাদের কাছে পূর্ববর্তী রাসূল সা. ও অন্যান্য লোকের অনেক ঘটনা বর্ণনা করেছেন। উদ্দেশ্যে একটাই যাতে পরবর্তীগণ পূর্ববর্তীদের থেকে উপকৃত হয়। উপদেশ গ্রহণ করে ও শিক্ষা অর্জন করে। আল্লাহ তাআলা বলেন :—

ﻟَﻘَﺪْ ﻛَﺎﻥَ ﻓِﻲ ﻗَﺼَﺼِﻬِﻢْ ﻋِﺒْﺮَﺓٌ ﻟِﺄُﻭﻟِﻲ ﺍﻟْﺄَﻟْﺒَﺎﺏِ ﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺣَﺪِﻳﺜًﺎ ﻳُﻔْﺘَﺮَﻯ ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺗَﺼْﺪِﻳﻖَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺑَﻴْﻦَ ﻳَﺪَﻳْﻪِ . ﴿ﻳﻮﺳﻒ : ১১১﴾

‘তাদের কাহিনীতে বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে শিক্ষণীয় বিষয়, এটা কোন মনগড়া কথা নয়, কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের জন্যে পূর্বেকার কালামের সমর্থন।’ [২]

২. ঘটনা মূলক বর্ণনা পদ্ধতি মূল বিষয় বস্তু আত্মস্থ করতে শ্রোতা ও পাঠকগণকে খুব দ্রুত আকৃষ্ট করে। ফলে সহজেই গ্রহণ করে এবং তার উপর আমল করে। এ জন্য রাসূল সা. অনেক সময় সাহাবায়ে কেরামদের জন্য ঘটনা মূলক উদাহরণ পেশ করতেন। খতিব বা বক্তাগণ যখন মানুষের সামনে খুতবা পেশ করেন, তাদের উচিত সুযোগ মত এ পদ্ধতি অবলম্বন করা। কারণ, মানুষের বিচার-বুদ্ধি, প্রকৃতি ও স্বভাবের উপর এর সফল প্রভাব পরে।

৩. খাঁটি বিশ্বাস ও খালেস তওহিদ সবচেয়ে বড় আমল যা মানুষকে ইহকালীন মুসিবত ও পরকালীন শাস্তি হতে নাজাত প্রদান করে। ঘটনায় বর্ণিত তিন জন লোক স্বীয় দৃষ্টিতে পূর্ণ আন্তরিকতা (এখলাছ) সহ সম্পাদনকৃত সর্বোত্তম আমল-এর ওসিলা দিয়ে দোয়া করার ব্যাপারে একমত হয়েছে। যার দ্রুত ফল তারা দুনিয়াতেই পেয়ে গেছে।

৪. আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে সম্পাদিত নেক আমলের বরাত দিয়ে দোয়া করার বৈধতা প্রমাণিত হয়। তাছাড়া অন্য কোন জিনিস যেমন—গাছ, কবর, মাজার ও পীর-আউলিয়াদের ওসিলা কিংবা বরাত দিয়ে দোয়া করা বা তাদের আহ্বান করা, শিরকে আকবর—যা দ্বীন থেকে বের করে দেয়। যার প্রমাণ আল্লাহ তাআলার বাণী—


ﺇِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺗَﺪْﻋُﻮﻥَ ﻣِﻦْ ﺩُﻭﻥِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋِﺒَﺎﺩٌ ﺃَﻣْﺜَﺎﻟُﻜُﻢْ . ﴿ﺍﻷﻋﺮﺍﻑ : ১৯৪﴾


‘আল্লাহ তাআলাকে বাদ দিয়ে তোমরা যাদেরকে ডাক, তারা সবাই তোমাদের মতই বান্দা।’ [৩]


আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন :—

ﻗُﻞِ ﺍﺩْﻋُﻮﺍ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺯَﻋَﻤْﺘُﻢْ ﻣِﻦْ ﺩُﻭﻥِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻟَﺎ ﻳَﻤْﻠِﻜُﻮﻥَ ﻣِﺜْﻘَﺎﻝَ ﺫَﺭَّﺓٍ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﻟَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﻭَﻣَﺎ ﻟَﻬُﻢْ ﻓِﻴﻬِﻤَﺎ ﻣِﻦْ ﺷِﺮْﻙٍ ﻭَﻣَﺎ ﻟَﻪُ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻣِﻦْ ﻇَﻬِﻴﺮٍ . ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻨْﻔَﻊُ ﺍﻟﺸَّﻔَﺎﻋَﺔُ ﻋِﻨْﺪَﻩُ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻤَﻦْ ﺃَﺫِﻥَ ﻟَﻪُ . ﴿ﺳﺒﺎ : ২২-২৩ ﴾

‘বলুন, তোমরা তাদেরকে আহ্বান কর, যাদের উপাস্য মনে করতে আল্লাহ তাআলা ব্যতীত। তারা নভোমণ্ডল ও ভূ-মণ্ডলের অণুপরিমাণ কোন কিছুর মালিক নয়, এতে তাদের কোন অংশও নেই এবং তাদের কেউ আল্লাহ তাআলার সহায়কও নয়। যার জন্য অনুমতি দেয়া হয়, তার জন্য ব্যতীত আল্লাহ তাআলার কাছে কারও সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না।’ [৪]


৫. দোয়া সর্বোত্তম এবাদত। মোমিন ব্যক্তির জন্য আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভের সর্বোত্তম মাধ্যম। কারণ দোয়াতে বান্দা আল্লাহ তালার প্রতি সর্বাঙ্গে ধাবিত হয়। এতে নিজের দারিদ্র্য, হীনতা, অপারগতা ও সামর্থহীনতাকে প্রকট ভাবে উপলব্ধি করে। উপরোক্ত তিন জন লোক—সব কিছু হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে—দোয়ার মাধ্যমে এবং নেক আমলের ওসিলা দিয়ে সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ তাআলার শরণাপন্ন হয়েছে—যাতে তিনি তাদেরকে আক্রান্ত মুসিবত হতে মুক্ত করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন :—


ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺭَﺑُّﻜُﻢُ ﺍﺩْﻋُﻮﻧِﻲ ﺃَﺳْﺘَﺠِﺐْ ﻟَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺴْﺘَﻜْﺒِﺮُﻭﻥَ ﻋَﻦْ ﻋِﺒَﺎﺩَﺗِﻲ ﺳَﻴَﺪْﺧُﻠُﻮﻥَ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ ﺩَﺍﺧِﺮِﻳﻦَ . ﴿ﺍﻟﻐﺎﻓﺮ / ﺍﻟﻤﺆﻣﻦ : ৬০ ﴾


‘তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব। যারা আমার এবাদতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে।’ [৫]


আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন :—


ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺳَﺄَﻟَﻚَ ﻋِﺒَﺎﺩِﻱ ﻋَﻨِّﻲ ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﻗَﺮِﻳﺐٌ ﺃُﺟِﻴﺐُ ﺩَﻋْﻮَﺓَ ﺍﻟﺪَّﺍﻉِ ﺇِﺫَﺍ ﺩَﻋَﺎﻥِ ﻓَﻠْﻴَﺴْﺘَﺠِﻴﺒُﻮﺍ ﻟِﻲ ﻭَﻟْﻴُﺆْﻣِﻨُﻮﺍ ﺑِﻲ ﻟَﻌَﻠَّﻬُﻢْ ﻳَﺮْﺷُﺪُﻭﻥَ . ﴿ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : ১৮৬﴾


‘আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুত আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নিই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি নিঃসংশয়ে বিশ্বাস রাখা তাদের কর্তব্য। যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে।’ [৬]


৬. অত্র হাদিস দ্বারা পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার, আনুগত্য, তাদের অধিকারের প্রতি যতœবান হওয়া, তাদের খেদমত আঞ্জাম দেয়া এবং তাদের জন্য পরিশ্রম ও কষ্ট করার ফজিলত প্রমাণিত হয়।
পিতা-মাতার কতিপয় উল্লেখযোগ্য অধিকার


ক. তাদের নির্দেশ পালন করা, যদি তাতে আল্লাহ তাআলার নাফরমানি না হয়। বৈষয়িক বিষয়গুলো পূর্ণ করা। শক্তি ও অর্থের মাধ্যমে সাহায্য করা। নরম ভাষায় সম্বোধন করা। বিরুদ্ধাচরণ না করা। তাদের জন্য দোয়া করা।


খ. তাদের জন্য বেশী করে দোয়া করা। তাদের পক্ষ হতে সদকা করা। তারা যে ওসিয়ত করেছেন, তা পূর্ণ করা। তাদের সাথে সম্পর্কিত আত্মীয় স্বজনদের সাথে সম্পর্ক অক্ষুণœ রাখা। বন্ধু-বান্ধবদের সম্মান করা। আল্লাহ তাআলা বলেন—


ﻭَﻗَﻀَﻰ ﺭَﺑُّﻚَ ﺃَﻟَّﺎ ﺗَﻌْﺒُﺪُﻭﺍ ﺇِﻟَّﺎ ﺇِﻳَّﺎﻩُ ﻭَﺑِﺎﻟْﻮَﺍﻟِﺪَﻳْﻦِ ﺇِﺣْﺴَﺎﻧًﺎ ﺇِﻣَّﺎ ﻳَﺒْﻠُﻐَﻦَّ ﻋِﻨْﺪَﻙَ ﺍﻟْﻜِﺒَﺮَ ﺃَﺣَﺪُﻫُﻤَﺎ ﺃَﻭْ ﻛِﻠَﺎﻫُﻤَﺎ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﻘُﻞْ ﻟَﻬُﻤَﺎ ﺃُﻑٍّ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻨْﻬَﺮْﻫُﻤَﺎ ﻭَﻗُﻞْ ﻟَﻬُﻤَﺎ ﻗَﻮْﻟًﺎ ﻛَﺮِﻳﻤًﺎ . ﻭَﺍﺧْﻔِﺾْ ﻟَﻬُﻤَﺎ ﺟَﻨَﺎﺡَ ﺍﻟﺬُّﻝِّ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﺔِ ﻭَﻗُﻞْ ﺭَﺏِّ ﺍﺭْﺣَﻤْﻬُﻤَﺎ ﻛَﻤَﺎ ﺭَﺑَّﻴَﺎﻧِﻲ ﺻَﻐِﻴﺮًﺍ . ﴿ﺍﻹﺳﺮﺍﺀ : ২৩-২৪ ﴾


‘তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উহু’ শব্দটিও বলো না, এবং তাদেরকে ধমক দিয়ো না এবং তাদের সাথে শিষ্টাচারপূর্ণ কথা বল। তাদের সামনে ভালোবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বল : হে পালনকর্তা ! তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’[৭]


৭. পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার দুনিয়ার সমস্যার সমাধান এবং আখেরাতের শাস্তি হতে নাজাতের ওসিলা। পিতা-মাতার আজ্ঞাবহ আলোচিত ব্যক্তির সদ্ব্যবহার তাদের সকলের উপর থেকে পাথর হটে যাওয়ার একটি কারণ ছিল। আবু দারদাহ রা. বর্ণনা করেন রাসূল সা. বলেছেন —

ﺍﻟﻮﺍﻟﺪ ﺃﻭﺳﻂ ﺃﺑﻮﺍﺏ ﺍﻟﺠﻨﺔ، ﻓﺈﻥ ﺷﺌﺖ ﻓﺤﺎﻓﻆ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺒﺎﺏ ﺃﻭ ﺿﻴﻊ.


‘পিতা জান্নাতের মধ্যবর্তী দরজা, তোমার ইচ্ছা—এ দরজাকে সংরক্ষণ কর অথবা নষ্ট কর।’ [৮]


পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার যেমন জান্নাত লাভের ওসিলা ; তদ্রুপ তাদের সাথে দুর্ব্যবহার ইহকাল ও পরকাল উভয় জগতের জন্য শাস্তি যোগ্য অপরাধ। রাসূল সা. বলেন—


ﺛﻼﺛﺔ ﻻﻳﺪﺧﻠﻮﻥ ﺍﻟﺠﻨﺔ : ﺍﻟﻌﺎﻕ ﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻪ، ﻭﺍﻟﺪﻳﻮﺙ ﻭ ﺭﺟﻠﺔ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ.


‘তিন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না—পিতা-মাতার বিরুদ্ধাচরণকারী; অসতী স্ত্রীর স্বামী; পুরুষের আকৃতি ধারণকারী নারী।’ [৯]
৮. ইসলাম বাহ্যিক পবিত্রতা, অভ্যন্তরীণ পরিচ্ছন্নতার প্রতি যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করেছে। এর উপর ভিত্তি করে দুনিয়া ও আখেরাতে অনেক উত্তম প্রতিদানের হিসাব কষেছে। আমরা লক্ষ্য করি মেয়েটি যখন আলোচ্য লোকটিকে আল্লাহ তাআলার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, লোকটি সাথে সাথে অশ্লীলতা হতে বিরত থাকে। যার কারণে তারা পাথর হতে মুক্তি পেয়েছে। এটা তাদের নগদ প্রতিদান। এছাড়া আল্লাহ তাআলার নিকট যা রক্ষিত আছে তা আরো উত্তম ও চিরস্থায়ী।
৯. প্রকৃত মোমিন অশ্লীলতা ও গর্হিত বিষয় হতে দূরে থাকে। গুনাহ ও পাপ-পঙ্কিলতার নিকটবর্তী হয় না। সে এ নিষ্পাপ অবস্থাতেই আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ করতে চেষ্টা করে।
১০. আমানত এক গুরুত্বপূর্ণ মহান দায়িত্ব। এর মর্যাদা আল্লাহ তাআলা এবং মানুষের কাছে অনেক বেশি। আল্লাহ তাআলা আসমান, জমিন ও পাহাড়ের উপর আমানত পেশ করে ছিলেন, তারা তা বহন করতে অপারগতা প্রকাশ করেছে, শঙ্কিত হয়েছে। কিন্তু দুর্বল মানুষ তা গ্রহণ করেছে। এখন সে এ আমানত যথাযথ আদায় করলে দুনিয়া-আখেরাতে এর প্রতিদান পাবে। অন্যথায় তার শাস্তির কারণ হবে।


বিশেষ কয়েকটি আমানত :


ক. আল্লাহ তাআলার তওহিদকে আঁকড়ে ধরা।
খ. সব ধরনের নেক কাজ সম্পাদন করা।
গ. ব্যাপকভাবে সকলের অধিকার বাস্তবায়ন করা। বিশেষ করে গচ্ছিত সম্পদ, জামানত ও অর্থনৈতিক লেনদেন পরিশোধ করা।
১১. সব ধরনের নেক আমল দ্বারা দুনিয়া ও আখেরাতের অনেক জটিল ও কঠিন সংকটের উত্তরণ সম্ভব। আল্লাহ তাআলা বলেন :—

ﻭَﻣَﻦْ ﻳَﺘَّﻖِ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻳَﺠْﻌَﻞْ ﻟَﻪُ ﻣَﺨْﺮَﺟًﺎ . ﻭَﻳَﺮْﺯُﻗْﻪُ ﻣِﻦْ ﺣَﻴْﺚُ ﻟَﺎ ﻳَﺤْﺘَﺴِﺐُ . ﴿ﺍﻟﻄﻼﻕ : ২-৩ ﴾

‘আর যে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করে, আল্লাহ তাআলা তার জন্যে নিষ্কৃতির পথ করে দেবেন এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিজিক দেবেন।’ [১০]


সমাপ্ত



[১] বোখারি : ২১১১
[২] ইউসুফ : ১১১
[৩] আল-আরাফ : ১৯৪
[৪] সাবা : ২২-২৩
[৫] আল-গাফের : ৬০
[৬] আল-বাক্বারা : ১৮৬
[৭] আল-ইসরা : ২৩-২৪
[৮] তিরমিজি : ১৯০০, আহমদ : ৬/৪৪৫
[৯] নাসায়ি : ২৫১৫
[১০] তালাক : ২-৩

অনুবাদ : সানাউল্লাহ নজির আহমদ
ﻣﺘﺮﺟﻢ : ﺛﻨﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ ﻧﺬﻳﺮ ﺃﺣﻤﺪ
সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
ﻣﺮﺍﺟﻌﺔ : ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﺷﻬﻴﺪ ﻋﺒﺪﺍﻟﺮﺣﻤﻦ
সূত্র : ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ, সৌদিআরব
ﺍﻟﻤﻜﺘﺐ ﺍﻟﺘﻌﺎﻭﻧﻲ ﻟﻠﺪﻋﻮﺓ ﻭﺗﻮﻋﻴﺔ ﺍﻟﺠﺎﻟﻴﺎﺕ ﺑﺎﻟﺮﺑﻮﺓ

আরো পড়ুনঃ ঐতিহাসিক আসহাবে কাহাফ এর ঘটনা ও তার শিক্ষা
আরো পড়ুনঃ সূরা কাহাফে লুকানো রহস্য ও দাজ্জাল
আরো পড়ুনঃ দজ্জালের ফিতনা


পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন