Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

See Our Articles In Different Styles... Grid View List View

রবিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৩

বিপদে ধৈর্যধারণ : দশটি উপদেশ

Views:

A+ A-

 বিপদে ধৈর্যধারণ : দশটি উপদেশ


বিপদে ধৈর্যধারণ : দশটি উপদেশ


কে আছে এমন, যে পিতা-মাতা, ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব, প্রিয়জন কিংবা কোন নিকটাত্মীয়ের মৃত্যুতে শোকাহত হয়নি, চক্ষুদ্বয় অশ্রু বিসর্জন করেনি; ভর দুপুরেও গোটা পৃথিবী ঝাপসা হয়ে আসেনি; সুদীর্ঘ, সুপ্রশস্ত পথ সরু ও সংকীর্ণ হয়ে যায়নি; ভরা যৌবন সত্ত্বেও সুস্থ দেহ নিশ্চল হয়ে পড়েনি; অনিচ্ছা সত্ত্বেও অপ্রতিরোধ্য ক্রন্দন ধ্বনি তুলতে তুলতে গলা শুকিয়ে আসেনি; অবিশ্বাস সত্ত্বেও মর্মন্তুদ কঠিন বাস্তবতা মেনে নিতে বাধ্য হয়নি; এই বুঝি চলে গেল, চির দিনের জন্য; আর কোন দিন ফিরে আসবে না; কোন দিন তার সাথে দেখা হবে না; শত আফসোস ঠিকরে পড়ে, কেন তাকে কষ্ট দিয়েছি; কেন তার বাসনা পূর্ণ করিনি; কেন তার সাথে রাগ করেছি; কেন তার থেকে প্রতিশোধ নিয়েছি। আরো কত ভয়াবহ স্মৃতির তাড়না তাড়িয়ে বেড়ায়, শোকাতুর করে, কাঁদায়। কত ভর্ৎসনা থেমে থেমে হৃদয়ে অস্বস্তির জন্ম দেয়, কম্পনের সূচনা করে অন্তরাত্মায়। পুনঃপুন একই অভিব্যক্তি আন্দোলিত হয়- মুখের ভাষা যা ব্যক্ত করতে অক্ষম। হাতের কলম যা লিখতে অপারগ।

হ্যাঁ, এ কঠিনতম মুহূর্ত, হতাশাময় পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করে শক্তি, সাহস ও সুদৃঢ় মনোবল উপহার দেয়ার মানসে আমাদের এ প্রয়াস। আমরা মুসলমান। আমাদের মনোনীত রব আল্লাহ। আমাদের পছন্দনীয় ধর্ম ইসলাম। আমাদের একমাত্র আদর্শ মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তারাই আত্মতৃপ্তি লাভের যোগ্যপাত্র। পক্ষান্তরে কাফেরদের জীবন সংকীর্ণ, তারা হতাশাগ্রস্ত, তারা এ তৃপ্তি লাভের অনুপোযুক্ত। কারণ, আল্লাহ মোমিনদের অভিভাবক, কাফেরদের কোনো অভিভাবক নেই।

বিশ্ব নবি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পার্থিব জগতে মোমিনদের অবস্থার একটি উদাহরণ পেশ করেছেন। তিনি বলেন :

مثل المؤمن كمثل الزرع لا تزال الريح تميله، ولا يزال المؤمن يصيبه البلاء، ومثل المنافق كمثل شجرة الأرز لاتهتز حتى تستحصد. (صحيح مسلم:৫০২৪)

"একজন মোমিনের উদাহরণ একটি শস্যের মত, থেকে থেকে বাতাস তাকে দোলায়। তদ্রূপ একের পর এক মুসিবত অবিরাম অস্থির করে রাখে মোমিনকে। পক্ষান্তরে একজন মুনাফেকের উদাহরণ একটি দেবদারু বৃক্ষের ন্যায়, দুলে না, কাত হয়েও পড়ে না, যাবৎ-না শিকড় থেকে সমূলে উপড়ে ফেলা হয় তাকে।"[১]

Read More---

মানুষের পাপ গোপন রাখার গুরুত্ব

Views:

A+ A-

 মানুষের পাপ গোপন রাখার গুরুত্ব



মানুষের পাপ গোপন রাখার গুরুত্ব

"যারা পছন্দ করে যে,ঈমানদারদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার লাভ করুক,নিঃসন্দেহে ইহাকাল ও পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আল্লাহ্ জানেন,তোমরা জানো না”। [সূরা আন-নূর; ২৪:১৯]

প্রিয় নবী (সা) আমাদের প্রয়োজনীয় সবকিছুই শিক্ষা দিয়েছেন যার একটি হল অন্যের পাপ গোপন রাখা। আমাদের মাঝে কেউ যদি এমন কোন খারাপ কাজ করে বসে যা কিনা আল্লাহ্‌র আদেশ বিরুদ্ধ বা নৈতিক চরিত্র বিরুদ্ধ কিংবা অন্যের জন্য মর্যাদাহানিকর, সেক্ষেত্রে তার উচিৎ তা গোপন রাখা এবং কৃতকর্মের জন্য একান্ত নিভৃতে আল্লাহ্‌র কাছে বারবার ক্ষমা প্রার্থনা করা। প্রিয় নবী (সা) বলেছেন,
“আমার সমগ্র উম্মাহ্‌ নিরাপদ, কেবল তারা ব্যতীত যারা কিনা তাদের পাপ নিয়ে দম্ভ করে বেড়ায়। তাদের কেউ যখন কোন কুকর্ম করে রাতে ঘুমাতে যায় এবং আল্লাহ্ তার পাপ গোপন রাখেন, সকালে ঘুম থেকে উঠার পর সে বলতে থাকে, “এই শোন, আমি না কাল রাতে এই এই (কুকর্ম) করেছি”। সে যখন ঘুমাতে যাই, আল্লাহ্ তার পাপ গোপন রাখেন, আর সকালে ঘুম থেকে উঠেই আল্লাহ্ যা গোপন রেখেছিলেন তা সে লোকজনের কাছে প্রকাশ করে বেড়ায়”।[সহীহ আল বুখারী]


জায়িদ ইবনে আসলাম থেকে বর্ণিত,
“আল্লাহ্‌র রাসূল (সা) এর সময়ে এক লোক যখন স্বীকার করল যে, সে ব্যভিচার করেছে, তখন আল্লাহ্‌র রাসূল (সা) একটি চাবুক চাইলেন। যখন তাকে একটি ছেঁড়া/পুরানো চাবুক দেওয়া হল তিনি বললেন, “এটার চেয়ে ভাল নেই?” তখন একটি নতুন চাবুক আনা হলে তিনি বললেন, “এটার চাইতে একটু পুরাতন দেখে নিয়ে আস”। এরপর এমন একটা চাবুক আনা হল যেটা ছিল (ব্যবহারের ফলে) একটু পুরানো/নরম। তখন তিনি ওটা দিয়ে ওই ব্যক্তিকে একশো দোর্‌রা মারার নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি বললেন, “হে লোকেরা! তোমরা আল্লাহ্‌র সীমা অতিক্রম করোনা। কেউ এই ধরনের ঘৃণিত কোন অপরাধ (যেমন ব্যভিচার) করে বসলে, সে যেন তা গোপন রাখে, কারন কেউ যদি তা প্রকাশ করে বসে, তবে আমরা তার ব্যাপারে বর্ণিত শাস্তি প্রয়োগের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র কিতাবের বিধান কার্যকর করব”। [মুসনাদ আহমদ]
Read More---

শনিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৩

কুরআনের আলোকে জান্নাত ও জাহান্নাম

Views:

A+ A-

কুরআনের আলোকে জান্নাত ও জাহান্নাম





কুরআনের আলোকে জান্নাত ও জাহান্নাম
ক. জান্নাত
جنة এক বচনবহুবচনে  جناتঅর্থ ঘন সন্নিবেশিত বাগানবাগ-বাগিচা। আরবীতে বাগানকে روضة (রওদ্বাতুন) এবং حديقة (হাদীকাতুন) ও বলা হয়। কিন্তু جنات (জান্নাত) শব্দটি আল্লাহ রব্বুল ‘আলামীনের নিজস্ব একটি পরিভাষা। পারিভাষিক অর্থে জান্নাত বলতে এমন স্থানকে বোঝায়যা আল্লাহ রব্বুল আলামীন তাঁর অনুগত বান্দাদের জন্য নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। যা দিগন্ত বিস্তৃত নানা রকম ফুলে ফুলে সুশোভিত সুরম্য অট্টালিকা সম্বলিত মনোমুগ্ধকর বাগানযার পাশ দিয়ে প্রবাহমান বিভিন্ন ধরনের নদী-নালা ও ঝর্ণাধারা। যেখানে চির বসন্ত বিরাজমান।
আমরা জান্নাতকে জান্নাতও বলে থাকি। জান্নাত ফার্সী শব্দ। এখানে আমরা আরবী শব্দটিই ব্যবহার করবো।
জান্নাত চিরশান্তির জায়গা। সেখানে আরাম- আয়েশসুখ-শান্তিআমোদ-প্রমোদচিত্ত বিনোদন ও আনন্দ-আহলাদের চরম ও পরম ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে ভোগ-বিলাস ও পানাহারের আতিশয্য। জান্নাতীরা যা কামনা করবে কিংবা কোনো কিছু পাওয়ার আহবান জানাবেসকল কিছু পাবে। সেখানে সবাই যুবক হয়ে বাস করবে। শরীরে কোনো রোগ-শোকজরাজীর্ণতামন্দাবার্ধক্যদুর্বলতা ও অপারগতা থাকবে না। যত ধরনের ফল-ফলাদিখাদ্য-খাবারপানীয়দুধমধু সুস্বাদু খাবার সব খেতে পারবে। ভোগ-বিলাসের সকল উপায়-উপকরণ বিদ্যমান। সেগুলো স্বাদ ও গন্ধে অপূর্ব। আমোদ-প্রমোদভ্রমন-বিহারখেলা-ধুলাবেড়ানোবাজার করা ও শুভেচ্ছা-স্বাগত জানাতে পারবে। প্রাচুর্যের কোনো অভাব হবে না। দ্রুতগামী যানবাহনসহ মনের ইচ্ছা চোখের নিমির্ষে পূরণ করতে পারবে। 
নারীদের জন্য থাকবে নয়নাভিরাম স্বামী এবং স্বামীদের জন্য থাকবে নয়নাভিরাম স্ত্রী ও রূপবতী লাবণ্যময়ী হুর। তারা সেখানে সুখী-সুন্দর দাম্পত্য জীবন-যাপন করবে। মানুষ সেখানে পেশাব-পায়খানানাকের শ্লেষ্মা থেকে মুক্ত এবং নারীরা ঋতুমুক্ত হবে। 
এক কথায়পরম ও চরম শান্তি বলতে যা বুঝায়তা সবই জান্নাতে পাওয়া যাবে। দুনিয়ার সুখ-শান্তির যত ব্যবস্থা আছেজান্নাতের সুখ-শান্তির তুলনায় তা কিছুই না। বরং তা দুনিয়ার সকল আরাম-আয়েশকে হার মানাবে। মানুষ সুখ পেতে চায়। তাই পরম সুখ লাভের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়া উচিত।
জান্নাতের ব্যাপক পরিচিতি সম্পর্কে সংক্ষেপে এক বর্ণনায় মহান আল্লাহ বলেন: 
﴿فَلَا تَعۡلَمُ نَفۡسٞ مَّآ أُخۡفِيَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعۡيُنٖ جَزَآءَۢ بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٧ [السجدة١٧]   
কেউ জানে না তার জন্য কৃতকর্মের কি কি নয়নাভিরাম বিনিময় লুকায়িত আছে।’’ (সূরা সাজদাহ: ১৭)
আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: মহান আল্লাহ রাববুল আলামীন এরশাদ করেন,
«أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِينَ مَا لاَ عَيْنٌ رَأَتْ، وَلاَ أُذُنٌ سَمِعَتْ، وَلاَ خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ، فَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ فَلاَ تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ»
“আমি আমার নেক বান্দাদের জন্য এমন নেয়ামত তৈরি করে রেখেছিযা কোনো চক্ষু দেখে নিকোনো কান শোনে নি এবং এমনকি কোনো মানুষ তা কল্পনাও করতে পারে না। এরপর তিনি বলেনযদি তোমরা চাওতাহলে নিম্নোক্ত আয়াতটি পড়ো। যার অর্থ হলো: “কেউ জানে নাতার জন্য কি কি নয়নাভিরাম বিনিময় লুকায়িত আছে।” (বুখারী, ৩২৪৪; মুসলিম, ২৮২৪)
জান্নাত মোট আট প্রকারঃ
আট প্রকার জান্নাতের কথাই আল-কুরআন ও সহীহ হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকারগুলো হচ্ছে :
1)      জান্নাতুল ফিরদাউস।
2)      জান্নাতুন্ নায়ীম।
3)      জান্নাতুল মাওয়া।
4)      জান্নাতুল আদন।
5)      জান্নাতু দারুস সালাম।
6)      জান্নাতুদ দারুল খুলদ।
7)      জান্নাতু দারুল মাকাম।
8)      জান্নাতু দারুল কারার।
সম্পূর্ণ জান্নাত হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (Air condition)
জান্নাতে সর্বদা বসন্তকাল বিরাজ করবে। ফুল-ফলের সমাহার এবং সৌন্দর্য্য শ্যামলতা কখনো ম্লান হবে না। এমন কি গোটা জান্নাত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বা Air condition হবে। মহান আল্লাহ বলেন
﴿ لَا يَرَوۡنَ فِيهَا شَمۡسٗا وَلَا زَمۡهَرِيرٗا ١٣ ﴾ [الانسان: ١٣]  
অর্থ্যাৎ- তাদেরকে সেখানে (জান্নাতে) না সূর্যতাপ জ্বালাতন করবে না শৈত্য প্রবাহ।’ (সূরা দাহর: ১৩)
Read More---

ব্যভিচার

Views:

A+ A-

 ব্যভিচার


ব্যভিচার

আল্লাহ তায়ালা বলেন, 
“তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ”। (সূরা বনী ইসরাঈল -৩২)

“আর যারা আল্লাহ ব্যতীত অপর কোন ইলাহের ইবাদত করে না, আল্লাহর নিষিদ্ধকৃত প্রাণী যথার্থ কারণ ব্যতীত হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। আর যে ব্যক্তি এসব কাজ করে, সে শাস্তি ভোগ করবে। কিয়ামতের দিন তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে সে হীন অবস্থায় চিরস্থায়ী হবে। তবে তারা নয়- যারা তাওবা করে এবং সৎ কাজ করে, আল্লাহ তাদের মন্দ কাজগুলো ভাল কর্ম দিয়ে পরিবর্তন করে দেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াশীল”। (সূরা আল-ফুরকান ৬৮-৬৯)

“ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণী উভয়কে এক’শ ঘা করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকরী করবে এদের প্রতি দয়া যেন তোমাদের অভিভূত না করে। যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী হয়ে থাক। ঈমানদারদের একটি দল যেন এদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে”। (সূরা আন নূর ২)


আলেমগণ বলেছেন, এটাই হচ্ছে অবিবাহিত পুরুষ-মহিলার ব্যভিচারের ইহকালীন শাস্তি। যদি তারা বিবাহিত হয় বা জীবনে একবার হলেও বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল এমন হয়ে থাকে, তাহলে তাদেরকে পাথর নিক্ষেপে হত্যা করতে হবে। এটা হাদীসের নির্দেশনা । এ মৃত্যুদণ্ডেও যদি তাদের পাপের পূর্ণ প্রায়শ্চিত্ত না হয় এবং তারা উভয়েই তওবা না করে মারা যায় তাহলে তাদেরকে জাহান্নামের আগুনে পোড়ানো লৌহদণ্ড দিয়ে শাস্তি দেয়া হবে।

যবূর কিতাবে বর্ণিত আছে, “ব্যভিচারী নারী-পুরুষের লিংগ রশি দ্বারা বেঁধে জাহান্নামের আগুনে ঝুলানো হবে এবং লোহার ডান্ডা দিয়ে তাদের জননেন্দ্রিয়ে আঘাত করা হবে। আঘাতের যন্ত্রণায় যখন চিৎকার করবে, তখন জাহান্নামের ফেরেশতারা বলবে; পৃথিবীতে যখন তোমরা আনন্দ ফুর্তি করতে, হাসতে এবং আল্লাহর কথা স্মরণ করতে না এবং তাঁকে লজ্জা পেতে না, তখন এ চিৎকার কোথায় ছিল”?

হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন; 
“কোন ব্যভিচার ব্যভিচারের সময়ে মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না। কোন চোর চুরির সময় মুমিন অবস্থায় চুরি করে না। কোন মদখোর মদ খাওয়ার সময় মুমিন অবস্থায় মদ পান করে না, কোন লুন্ঠনকারী লুন্ঠন করার সময় মুমিন অবস্থায় লুন্ঠন করে না”। [বুখারি,মুসলিম ও আবু দাউদ]

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, 
“কোন ব্যক্তি যখন ব্যভিচার করে তখন তার ভেতর থেকে ঈমান বেরিয়ে যায়, এরপর তা তার মাথার উপর ছায়ার মত অবস্থান করতে থাকে। এরপর সে যখন তা থেকে তওবা করে তখন তার ঈমান পুনরায় তার কাছে ফিরে আসে”। [আবু দাউদ]

হযরত আবু হুরায়রা বর্ণিত অন্য এক হাদীসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, 
“যে ব্যক্তি ব্যভিচার করে অথবা মদ পান করে, আল্লাহ তার কাছ থেকে ঈমান ঠিক এমনভাবে কেড়ে নেন, যেমন কোন মানুষ তার মাথার উপর দিয়ে জামা খুলে থাকে”।
Read More---

সৎ মানুষের হৃদয়ে শয়তান প্রবেশের ধরণ ও প্রকৃতি

Views:

A+ A-

সৎ মানুষের হৃদয়ে শয়তান প্রবেশের ধরণ ও প্রকৃতি





সূচীপত্র


১- ভূমিকা
২- শয়তান কী ?
৩- শয়তানের কৌশল
৪- শয়তানের প্রবেশপথ
এক. মুসলিমদের পরস্পরকে পরস্পরের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়া এবং অন্যের সম্পর্কে কু-ধারণা সৃষ্টি করা
দুই. বেদ‘আতকে মানুষের জন্য সুসজ্জিত করা
তিন. এক দিককে অন্যদিকের তুলনায় অধিক প্রাধান্য দেয়া
চার. করব-করছি, এরকম কাল বিলম্ব করা
পাঁচ. কৃত্রিম পূর্ণতা
ছয়. নিজের সত্ত্বা ও তার সামর্থ্যের সঠিক মূল্যায়ন না করা
সাত. সন্দেহ সৃষ্টি
আট. ভীতি প্রদর্শন
৫- শয়তানের কর্তব্য পালনে সহায়ক স্বভাবসমূহ

ভূমিকা
সমস্ত প্রশংসা সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ তা‘আলার জন্য। শুভ পরিণতি মুত্তাকীদের জন্য। সালাত ও সালাম প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার বর্গ, সঙ্গী-সাথীদের ওপর এবং কেয়ামত পর্যন্ত যারা অনুসরণ করবেন তাঁর পথ,  তাদের ওপর।
হামদ ও সালাতের পরে...
সাম্প্রতিক সময়ে মুসলিম উম্মাহর বিপর্যয়ের কারণ মূলত: জাতির কতিপয় প্রগতিশীল ব্যক্তির চিন্তাগত দৃষ্টিভঙ্গি। ইলমে দ্বীনের সাথেও এদের কেউ কেউ সম্পৃক্ত।
জ্ঞান-বিজ্ঞান ও গবেষণা ক্ষেত্রের মতই এরা দর্শন ও চিন্তা- চেতনার ক্ষেত্রেও যুগোপযোগী ও আধুনিক পশ্চাত্য সভ্যতার উদগীরণ করা বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী ও ইসলামের মাঝে ‘সমন্বয়’ সাধনের প্রয়াস তারা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ উদ্যোগের সুস্পষ্টতম লক্ষ্য হল নিজেদের ‘বুঝ ও সমঝমত’ ইসলামী নির্দেশনাসমূহের ‘যৌক্তিকিকরণের’ প্রয়াস চালানো।
যে কারণে কুরআন-সুন্নাহ কর্তৃক প্রমাণিত ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বহু বিষয়ে তারা হস্তক্ষেপ করেছে। যাতে করে জোর-পূর্বক সেগুলোর অপব্যাখ্যা করতে পারে এবং ইসলামী নির্দেশনাসমূহের এমন যৌক্তিক ব্যাখ্যা জুড়ে দিতে পারে, যা আধুনিক সভ্যতা গ্রহণ করবে।
মতবাদটিতে যদিও আদর্শিক অর্থাৎ ‘শর‘য়ী বিকৃতি’ এবং ‘নছ’ তথা কুরআন ও সুন্নাহর ভাষ্য ব্যবহারে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত অনুসৃত পদ্ধতি পরিত্যাগ জনিত মৌলিক ভুল রয়েছে। তবুও এ আলোচনায় আমরা যে বিষয়টি উত্থাপন করব তা হল, এ নয়া মতবাদ ইসলামের ক্ষতি করেছে। যার ব্যপ্তি দাওয়াতী অঙ্গন জুড়ে। উপরন্তু মতবাদটি তাদের প্রত্যাশার নূন্যতম সাফল্যও বয়ে আনে নি। উল্টো ইসলামী মানসিকতা ও দ্বীনের বিশুদ্ধ জ্ঞানের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি করেছে। অথচ ইউরোপিয়ান মানসিকতাকে ইসলাম ও ঐশী প্রত্যাদেশের এক কদমও কাছে আনে নি।
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত শয়তান সম্পর্কিত আলোচনাকে বিকৃত ব্যাখ্যা পেশ করা এ মতবাদের একটা বিষয়। তাদের একপক্ষ বৈশিষ্টের ক্ষেত্রে পরোক্ষভাবে শয়তানের অস্তিত্ব অস্বীকার করে বলে, ‘শয়তান অশুভ শক্তির রূপক প্রতীক। অন্যপক্ষ বলে, ‘শয়তান আত্মমন্ত্রণার ব্যঙ্গময় প্রকাশ। এ ছাড়াও তারা ধর্ম বিশ্বাসের মূলনীতি ও আল্লাহর কিতাব বুঝা ও গবেষণার ক্ষেত্রে অনুপযুক্ত। তাদের কর্মকাণ্ড উদ্ভট ব্যাখ্যা আর অভিনব ধ্যান-ধারণার উদ্ভব ঘটিয়েছে।
এ বিকৃত ব্যাখ্যার ফলস্বরূপ অনেক মুসলিমের কাছে শয়তানের সম্পর্ক সচেতনতা হ্রাস পেয়েছে। অথচ আল্লাহ বলেন,
 ﴿ إِنَّ ٱلشَّيۡطَٰنَ لَكُمۡ عَدُوّٞ فَٱتَّخِذُوهُ عَدُوًّاۚ ﴾ [فاطر: ٦] 
‘‘নিশ্চয় শয়তান তোমাদের শত্রু, তোমরা তাকে শত্রুরূপেই গ্রহণ কর।’’
(বিকৃত ব্যাখ্যার ফলে) পবিত্র এ আয়াতখানির মর্ম গোলমেলে, দুর্বোধ্য ও অধিক সংশয়পূর্ণ হয়ে গেছে। কারণ, শয়তান যেসব স্খলন, ধ্বংসাত্মক ও মন্দকর্মের উদ্ভব ঘটাচ্ছে আর ঘটিয়েছে, মুসলিম চরিত্রে তার প্রভাব অপ্রতিহত। কারণ, মুসলিম অনুভূতি শয়তানের বাস্তব অস্তিত্ব নির্ভর। যা-তার সাথে ‘লড়াইয়ের’ মনোভাব তৈরী করে। আর এ মনোভাব ভ্রান্তপথ, রিপু ও ফেতনাসমূহের মুখে টিকে থাকার স্পৃহা যোগায়। কিন্তু শয়তানের বাস্তব অস্তিত্বের এ অনুভূতি যখন থাকবে না, লড়াইয়ের মনোভাবও থাকবে না, তখন এসব শয়তানী চক্রান্তের মুখে টিকে থাকার স্পৃহা হ্রাস পাবে বা বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
এ পুস্তিকাটি বিশেষ কিছু ইসলামপন্থীর উপলব্ধির এ বিকৃত প্রবণতা সংশোধনের অম্ল মধুর এক প্রয়াস। উপরন্তু এর মূল মিশন ও লেখকের (আল্লাহ তাঁর উপর রহম করুন এবং তাকে সীমাহীন নেকী দান করুন) উদ্দেশ্য হল, শয়তানের আত্মমুখী প্রবেশপথগুলো সম্পর্কে মুসলিমদেরকে সচেতন করা।
এ পথগুলো ব্যক্তির স্বভাব, ঈমানী শক্তি, আমলের পরিমাণ, ইবাদাতের সততা ও অন্যান্য অবস্থা, প্রকার অনুপাতে বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে।
সহজ-সরলভাষায় লেখক সেগুলোকে সফলতার সাথে উন্মোচিত করেছেন। সুক্ষ্ম বিষয়গুলো পর্যালোচনা করেছেন এবং প্রতিকারের কিছু পথও তুলে ধরেছেন।
গ্রন্থটির উপকারিতা ব্যাপক হোক, এবং এর সৌরভে বিশ্বাসী অন্তরগুলো সুরভিত হোক- এ প্রত্যাশায়...
আল্লাহ তা‘আলা তাওফীক ও হেদায়াত দানকারী। তিনিই আমদের জন্য যথেষ্ট এবং উত্তম কার্য সম্পাদনাকারী।

জামাল সুলতান

শয়তান কী ?
Read More---

কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাওবা ও পাপ মোচনকারী কিছু আমল

Views:

A+ A-

 কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাওবা ও পাপ মোচনকারী কিছু আমল



কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাওবা ও পাপ মোচনকারী কিছু আমল

তাওবা হলো অতীতের গুনাহের অনুশোচনা, দুনিয়ার কোন উপকারিতা অর্জন অথবা ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য নয় একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যই সার্বক্ষণিকভাবে সে গুনাহ ছেড়ে দেওয়ার উপর দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা। জবরদস্তির মাধ্যমে নয় বরং শরী‘আতের বিধি-নিষেধ তার উপর বহাল থাকবে ততক্ষণ স্বেচ্ছায় এ প্রতিজ্ঞা করবে। ইবাদতসমূহের মধ্যে তাওবা অতি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তাওবার আবশ্যকীয়তা, ব্যাপকতা ও তাতে নিয়মানুবর্তিতার পরিমণ্ডল থেকে পাপী-তাপী যেমন বহির্ভূত নয়, তেমনি আল্লাহর ওলীগণ ও নবীগণও তার পরিসীমা থেকে বাইরে নন। এটি সর্বাবস্থায় সর্বত্র সকলের জন্য প্রযোজ্য। তাওবা মানুষের জীবনের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য।


তাওবার পরিচয়

তাওবা (توبة) শব্দের তা (تا) বর্ণে যবর ওয়া (واو) বর্ণে সুকুন যোগে গঠিত হয়। আভিধানিক অর্থ পাপ থেকে ফিরে আসা, প্রত্যাবর্তন করা, প্রত্যাগমন করা ইত্যাদি। বিশেষ পদে অর্থ অনুতাপ, অনুশোচনা। ড. মুহাম্মদ ড. হামিদ সাদিক বলেন:
التوبة: مصدر تاب ، الرجوع عن الذنب الندم على فعل الذنب ، وعقد العزم على عدم العودة إليه والتوجه إلى الله طلبا للمغفرة.
(‘তাবা (تاب) ক্রিয়া হতে তাওবা (توبة) হলো মাসদার। অর্থ পাপ থেকে ফিরে আসা। কৃতপাপের অনুশোচনা করা। পুনরায় না করার দৃঢ়সংকল্প করা।’ শব্দটি মহান সৃষ্টিকর্তার সত্তা ও তাঁর সৃষ্টিকুল বান্দাগণ উভয়ের সম্পর্কে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলার জন্য এ মর্মে যে, তিনি স্বীয় মাগফিরাত (মার্জনা) ও রাহমাত (করুণা) সহকারে বান্দাহদের প্রতি করুণা দৃষ্টি প্রদান করেন অর্থাৎ তিনি বান্দাদের তাওবা কবুল করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ وَهُوَ ٱلَّذِي يَقۡبَلُ ٱلتَّوۡبَةَ عَنۡ عِبَادِهِۦ ١٠٤ ﴾ [التوبة: ١٠٤]
‘তিনি স্বীয় বান্দাদের তাওবা কবুল করেন।’[1] 
এতে এ অর্থের প্রকাশ ঘটায় মূলত আল্লাহ তা‘আলার সাথে এই ক্রিয়াটির সম্বন্ধ স্থাপন তাঁর ক্ষমা-মাগফিরাত ও দয়া-রাহমাতের বহিঃপ্রকাশ। তবে উভয়টির মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ের জন্য শব্দটি আল্লাহর সাথে সম্বন্ধিত হলে আল-কুরআনে তা على সংযোজক صلة সহকারে ব্যবহৃত হয়। যাতে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও সমুন্নত অবস্থান প্রকাশ পায়। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ ثُمَّ تَابَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِمۡ﴾ [المائ‍دة: ٧١]
 ‘অতঃপর আল্লাহ তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হলে তাদের তাওবা কবুল করলেন।’[2] 
Read More---

পাপ : আকার-প্রকৃতি, প্রভাব ও প্রতিকার

Views:

A+ A-

 পাপ : আকার-প্রকৃতি, প্রভাব ও প্রতিকার 

Islamerbd blog 


بسم الله الرحمن الرحيم

পাপের সংজ্ঞা

শরীয়তের পরিভাষায় মাসিয়াত বা পাপ হল, আল্লাহ তাআলা যা করা বান্দার জন্য আবশ্যক করেছেন, তা পালনে বিরত থাকা, এবং যা হারাম করেছেন, তা পালন করা। শরীয়তের পরিভাষা ব্যবহারে পাপকে বুঝানোর জন্য বিভিন্ন শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়, যেমন- যান্‌ব, খাতীআ', ইসম, সাইয়্যিআ'- ইত্যাদি।
এর চুড়ান্ত বিপজ্জনক দিক হল, তা মানুষকে দূরে নিক্ষেপ করে আল্লাহ ও তার রহমত হতে, টেনে নেয় আল্লাহর ক্রোধ ও জাহান্নামের ভয়ানক পরিণতির দিকে। পাপের ক্রম ও ধারাবাহিকতা মানুষকে মাওলার সান্নিধ্য হতে ক্রমে দূরে নিক্ষেপ করে।
এ কারণে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে পূণ: পূণ: এ সম্পর্কে সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছেন, পাপ থেকে দূরে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন ও পাপের কারণে অতীত জাতিগুলোর উপর যে-সকল আযাব-গজব ও নিরন্তর দুর্যোগ নেমে এসেছিল- তার বিবরণ তুলে ধরেছেন সবিস্তারে। সাবধান হতে বলেছেন এগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে।
ইরশাদ হয়েছে :
فإن تولوا فاعلم أنما يريد الله أن يصيبهم ببعض ذنوبهم. (المائدة : ৪৯)
'যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রাখ, তাদের কিছু পাপের কারণে আল্লাহ তাদের শাস্তি দিতে চান।' [সূরা মায়েদা : ৪৯]
أولم يهد للذين يرثون الأرض من بعد أهلها أن لو نشاء أصبناهم بذنوبهم. (الأعراف : ১০০)
কোন এলাকার অধিবাসী ধ্বংস হওয়ার পর সেই এলাকার যারা উত্তরাধিকারী হয়, তাদের কাছে এটা কি প্রতীয়মান হয় না যে, আমি ইচ্ছা করলে পাপের কারণে তাদের শাস্তি দিতে পারি ?' [সূরা আ'রাফ : ১০০]
অনুরূপভাবে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে পাপ থেকে দূরে থাকতে বলেছেন অসংখ্য হাদীসে। উদাহরণত: তিনি বলেছেন :
'اجتنبوا السبع الموبقات . . .(رواه البخاري -২৫৬০)
'তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক পাপ থেকে দূরে থাকবে ...' (বুখারী -২৫৬০)
রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত হাদীসে 'ইজতিনাব' শব্দটি ব্যবহার করেছেন। শব্দটি খুবই ইঙ্গিতবহ, কারণ, 'ইজতিনাব'-এর মর্মার্থ হল, পাপ ও পাপের প্রতি মানুষের মনকে লালায়িত র্কতেএমন যে কোন কিছুকে সযত্নে এড়িয়ে চলা, কেবল পাপ বর্জনের মাধ্যমে রাসূলের উক্ত বাণীর সার্থক প্রতিফলন হবে না।

পাপের প্রকারভেদ :

পাপ দু'ভাগে বিভক্ত-
(১) কবীর্তামারাত্মক পাপ।
(২) ছগীরা বা লঘুপাপ।
পাপ দু'ভাগে বিভক্ত হওয়ার ব্যাপারে কোরআন-হাদীসের দলীল ও প্রমাণাদি অসংখ্য, নিম্নে তার কয়েকটি উদ্ধৃত করা হল:
(ক) আল-কুরআনে এসেছে :
إن تجتنبوا كبائر ما تنهون عنه نكفر عنكم سيئاتكم. (النساء: ৩১)
'নিষিদ্ধ বিষয়গুলোর মাঝে যা গুরুতর, তা হতে যদি তোমরা বিরত থাক, তবে তোমাদের ছোট পাপগুলো ক্ষমা করে দিব।' [সূরা নিসা : ৩১]
(খ) ভিন্ন এক স্থানে কোরআনের বর্ণনা :
الذين يجتنبون كبائر الإثم والفواحش إلا اللمم. (النجم : ৩২)
'যারা বিরত থাকে গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কার্য হতে, ছোট পাপের সম্পৃক্ততা সত্ত্বেও।' [সূরা নাজম : ৩২]
(গ) হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :
الصلوات الخمس والجمعة إلى الجمعة كفارة لما بينهن ما لم تغش الكبائر
(رواه الترمذي : ১৯৮)
'পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ও এক জুমা' হতে অপর জুমা' হল এসবের মধ্যবর্তী সময়ে কৃত পাপের কাফফারা (প্রায়শ্চিত্ত) যদি কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা হয়।' (তিরমিযী : ১৯৮)
Read More---

শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০২২

অন্তরের আমল: ইখলাস

Views:

A+ A-

অন্তরের আমল: ইখলাস






ভূমিকা
الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على أشرف الأنبياء والمرسلين، نبينا محمد وعلى آله وصحبهأجمعين.
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সমগ্র সৃষ্টিকুলের রব আর সালাত ও সালাম নাযিল হোক সমস্ত নবী ও রাসূলদের সরদার আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর এবং তার পরিবার-পরিজন ও তার সমস্ত সাহাবীদের উপর। 
আল্লাহ তা‘আলা আমাকে অন্তরের আমলসমূহ বিষয় সম্বলিত একটি ইলমী প্রশিক্ষণ কোর্স প্রদানের সুযোগ দেন, যাতে মোট বারোটি ক্লাস ছিল। আর আমার সাথে ‘যাদ গ্রপের’ ইলমী বিভাগটি ছিল। তারা আলোচনাগুলোকে বর্তমানে বই আকারে প্রকাশ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্তরের আমলসমূহের প্রথম আমল হল ইখলাস, যা ইবাদতের মগজ ও রুহ এবং আমল কবুল হওয়া বা না হওয়ার মানদণ্ড। আর ইখলাস অন্তরের আমলসমূহের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও সর্বোচ্চ চূড়া ও আমলসমূহের প্রধান ভিত্তি। আর এটিই হল, সমস্ত নবী ও রাসূলদের দাওয়াতের চাবিকাঠি 

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, 
﴿وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَآءَ ﴾ [البينة: ٥]  
আর তাদেরকে কেবল এই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যেতারা যেন আল্লাহর ইবাদাত করে তারই জন্য দীনকে একনিষ্ঠ করে। [সূরা আল-বায়্যিনাহআয়াত: ৫]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন, 
﴿أَلَا لِلَّهِ ٱلدِّينُ ٱلۡخَالِصُ ٣﴾ [الزمر: ٣]  
“জেনে রাখ, খালেস দ্বীন তো আল্লাহরই”। [সূরা আয-যুমার: ৩]
আর আল্লাহ্‌র দরবারে আমাদের কামনা তিনি যেন আমাদের আমলগুলো কবুল করেন, আমাদের নিয়্যতসমূহে ইখলাস তথা নিষ্ঠা প্রদান করেন এবং আমাদের অন্তরসমূহ সংশোধন করে দেন। নিশ্চয় তিনি শ্রবণকারী  দো‘আ কবুলকারী। 

মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জেদ
Read More---

আল্লাহর নৈকট্য লাভের অনন্য উপায়: তাওবা

Views:

A+ A-

আল্লাহর নৈকট্য লাভের অনন্য উপায়: তাওবা





ভূমিকা
  إِنَّ الْحَمْدُ للهِ ، نَحْمَدُهُ وَنَسْتَعِيْنُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ ، وَنَعُـوْذُ بِاللهِ مِنْ شُرُوْرِ أَنْفُسِنَا ، وَمِنْ سَيِّئَاتِ أَعْمَالِنَا ، مَنْ يَّهْدِهِ اللهُ فَلاَ مُضِلَّ لَهُ ، وَمَنْ يُّضْلِلِ اللهُ فَلاَ هَادِيَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنْ لاَّ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ 
নিশ্চয় যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য আমরা তারই প্রশংসা করি, তার কাছে সাহায্য চাই, তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি। আল্লাহর নিকট আমরা আমাদের প্রবৃত্তির অনিষ্ট ও আমাদের কর্মসমূহের খারাবী থেকে আশ্রয় কামনা করি। আল্লাহ যাকে হেদায়েত দেন, তাকে গোমরাহ করার কেউ নাই। আর যাকে গোমরাহ করেন তাকে হেদায়েত দেয়ার কেউ নাই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্যিকার ইলাহ নেই, তিনি একক, তার কোন শরিক নাই। আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। সালাত ও সালাম নাযিল হোক তার উপর, তার পরিবার-পরিজন ও তার সাহাবীদের উপর এবং যারা কিয়ামত পর্যন্ত ‌ইহসানের সাথে তাদের অনুসরণ করেন তাদের উপর।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন স্বীয় বান্দাদের প্রতি অধিক দয়ালু ও ক্ষমাশীল। তিনি তার বান্দাদের যে কোন উপায়ে ক্ষমা করতে ও তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করতে পছন্দ করেন। আল্লাহ তা’আলা মানুষের ছোট গুনাহ কেবল নেক আমল করা দ্বারাই ক্ষমা করে দেন। কিন্তু কবীরা গুনাহ তাওবা ছাড়া ক্ষমা করা হয় না। তাই কবীরা গুনাহ হতে ক্ষমা পাওয়ার জন্য তাওবা করা জরুরি। আমরা মনে করি মুখে শুধু ‘আসতাগফিরুল্লাহ’ বলার নামই তাওবা। বাস্তবে তা কিন্তু তাওবা নয়। বাস্তবে তাওবা কাকে বলে, তাওবা কবুল হওয়ার শর্ত, তাওবার প্রতিবন্ধকতা, তাওবা করার প্রদ্ধতি, তাওবা কবুল হওয়ার আলামত ইত্যাদি বিষয়গুলো এ বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে। 
আল্লাহর নিকট কামনা তিনি যেন আমাদের আমলকে কবুল করেন এবং আল্লাহর নিকট খালেস তাওবা করার তাওফীক দেন। আমীন।

তাওবা
তাওবার গুরুত্ব
আল্লাহ তাআলার দরবারে বান্দার তাওবা অধিক পছন্দনীয়। কোন মানুষ অপরাধ করার পর যখন আল্লাহ তাআলার নিকট তাওবা করে এবং তার দ্বারা সংঘটিতগুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাকে অত্যধিক পছন্দ করেন, তার তাওবা কবুল করেন এবং তাওবার মাধ্যমে বান্দাকে পবিত্র করেন। আল্লাহ তাআলা নিজেই মুমিনদেরকে তাওবা করার নির্দেশ দিয়ে বলেন- 
Read More---