Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

See Our Articles In Different Styles... Grid View List View

আল্লাহ সম্পর্কে জেনে নিন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
আল্লাহ সম্পর্কে জেনে নিন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল : গুরুত্ব ও তাৎপর্য

Views:

A+ A-

 আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল : গুরুত্ব ও তাৎপর্য.




আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল : গুরুত্ব ও তাৎপর্য

তাওয়াক্কুল কি?
তাওয়াক্কুল আরবি শব্দ। এর অর্থ হল, ভরসা করা, নির্ভর করা। তাওয়াক্কুল আলাল্লাহ অর্থ হল: আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা করা। ইসলামে আল্লাহ তাআলার উপর তাওয়াক্কুল একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি একটি ইবাদত। তাই আল্লাহ তাআলা ব্যতীত অন্য কারো উপর তাওয়াক্কুল করা যায় না। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো জন্য তাওয়াক্কুল নিবেদন করা যাবে না। মৃত বা জীবিত কোনো ওলীআল্লাহ, নবী-রাসূল, পীর- বুজুর্গের উপর ভরসা করা বা তাওয়াক্কুল রাখা শিরক।

একজন ঈমানদার মানুষ ভাল ও কল্যাণকর বিষয় অর্জনের জন্য সকল ব্যাপারে নিজের সাধ্যমত চেষ্টা করবে, সার্বিক প্রচেষ্টা চালাবে আর ফলাফলের জন্য আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা করবে, তাঁর প্রতি আস্থা ও দৃঢ় একিন রাখবে। বিশ্বাস রাখবে যে, আল্লাহ যা লিখে রেখেছেন ফলাফল তা-ই হবে। আর তাতেই রয়েছে কল্যাণ চূড়ান্ত বিচার ও শেষ পরিণামে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে যদি আমরা তা অনুধাবন না-ও করতে পারি। এটাই তাওয়াক্কুলের মূল কথা।

তাওয়াক্কুলের নীতি অবলম্বনকারী ব্যক্তি কখনো হতাশ হয় না। আশা ভঙ্গ হলে মুষড়ে পড়ে না। বিপদ-মুসীবত, যুদ্ধ-সংকটে ঘাবড়ে যায় না। যে কোনো দুর্বিপাক,  দুর্যোগ, সঙ্কট, বিপদ-মুসীবতে আল্লাহ তাআলার উপর দৃঢ় আস্থা রাখে। ঘোর অন্ধকারে আশা করে উজ্জ্বল সুবহে সাদিকের। যত জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন-নিপীড়নের ঝড়-তুফান আসুক, কোনো অবস্থাতেই সে আল্লাহ ব্যতীত কাউকে ভয় করে না।
Read More---

শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

আল্লাহর উপর ভরসা

Views:

A+ A-

 আল্লাহর উপর ভরসা



আল্লাহর উপর ভরসা

আল্লাহ্ তাআলার উপর ভরসা ইসলামে একটি বিরাট বিষয়। এর গুরুত্ব ও মর্যাদা অপরিসীম। আল্লাহর প্রতি ভরসা ছাড়া কোন বান্দাই কোন মূহুর্ত অতিবাহিত করতে পারে না। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে। কেননা এর মাধ্যমে আল্লাহর তাওহীদের সাথে সম্পর্ক গাড় ও গভীর হয়। আল্লাহ্ বলেন:
وَتَوَكَّلْ عَلَى الْحَيِّ الَّذِي لَا يَمُوتُ
“আর ভরসা কর সেই জীবিত সত্বার (আল্লাহর) উপর, যিনি কখনো মৃত্যু বরণ করবেন না।” [সূরা ফুরক্বান-৫৮]

এই আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে তাঁর উপর ভরসা করার আদেশ করেছেন। তিনি ছাড়া অন্য কারো নিকট নিজেকে পেশ করবেন না। কেননা তিনি চিরঞ্জীব, তাঁর মৃত্যু নেই। তিনি পরাক্রমশালী, কোন কিছুই তাঁকে পরাজিত করতে পারে না। যে ব্যক্তিই তাঁর উপর নির্ভর করবে তার জন্য তিনিই যথেষ্ট হবেন- তাকে সাহায্য ও সমর্থন করবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো উপর ভরসা করবে, সে তো এমন কিছুর উপর ভরসা করল যে মৃত্যু বরণ করবে, বিলীন ও ক্ষয় হয়ে যাবে। দুর্বলতা ও অপারগতা তাকে চারদিক থেকে ঘিরে রয়েছে। এ কারণে তার প্রতি ভরসা কারীর আবেদন বিনষ্ট হয়ে যায়, সে হয়ে যায় দিশেহারা।

এ থেকেই বুঝা যায় আল্লাহর উপর ভরসা করার ফযীলত ও মর্যাদা কি?! তাঁর সাথে হৃদয়ের সম্পর্ককে গভীর করার গুরুত্ব কতটুকু?!

Read More---

আল্লাহর দর্শন

Views:

A+ A-

 আল্লাহর দর্শন



আল্লাহর দর্শন

আল্লাহ তা‘আলার দিদার প্রতিটি মু’মিনের চির আকাঙ্ক্ষা। মু’মিনের জন্য জান্নাতে সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার হলো আল্লাহর দর্শন; কিন্তু দুনিয়াতে কি স্বচক্ষে বা স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা সম্ভব? আহলে সুন্নত ওয়াল জামা‘আতের সর্বসম্মত মত হলো, দুনিয়াতে স্বচক্ষে সরাসরি আল্লাহকে দেখা সম্ভব নয়। এমনকি নবী রাসূলগণও দেখেন নি। স্বপ্নে দেখার ব্যাপারে তারা মতানৈক্য করেছেন। অধিকাংশ ‘আলেমের মতে স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা সম্ভব; তবে সে যে আকৃতিতে আল্লাহকে দেখেছে তা আল্লাহর হাকীকি বা আসল আকৃতি নয়।
এক ব্যক্তির দাবী যে, সে স্বপ্নে আল্লাহকে দেখেছে। কেউ কেউ বলে থাকেন, ইমাম আহমদ রহ. একশত বার স্বপ্নে আল্লাহকে দেখেছেন। একথাটা কি সঠিক?
আব্দুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বা‘য রহ. বলেছেন, “শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. ও অন্যান্য আলেমগণ বলেছেন, মানুষ স্বপ্নে আল্লাহকে দেখতে পারে; তবে সে যে আকৃতিতে আল্লাহকে দেখেছে তা আল্লাহর হাকীকি বা আসল আকৃতি নয়। কেননা আল্লাহ তাআলার সদৃশ কিছুই নেই। আল্লাহ বলেছেন,
﴿لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ ١١ ﴾ [الشورى: ١١] 
“তাঁর মত কিছু নেই আর তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা” [সূরা আশ-শূরাআয়াত: ১১]
অতএব, তিনি কোনো কিছুর অনুরূপ নন। কেউ স্বপ্নে আল্লাহর সাথে কথা বলতে পারেন। তবে সে মানুষ বা অন্য যে কোনো প্রাণীর আকৃতিতেই দেখুক না কেন তা আল্লাহর প্রকৃত আকৃতি নয়। তার কোনো সদৃশ নেই, কেউ তার সমকক্ষ বা অনুরূপ নয়”। [1]

শাইখুল ইসলাম তকীউদ্দিন রহ. বলেছেন, ‘বান্দার অবস্থা ভেদে আল্লাহকে দেখাও পার্থক্য হয়ে থাকে। অধিকতর নেককার মানুষের দেখা সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশী; তবে সে যে আকৃতিতে বা গুণাবলীতেই দেখুক তা আল্লাহর আকৃতি নয়। কেননা মূল হলো, আল্লাহর সদৃশ কিছুই নেই। সে হয়ত আওয়াজ শুনতে পারে, তাকে বলা হতে পারে যে, তুমি এ কাজটি কর। তবে সৃষ্টিজগতের কারো সাথেই তার মিল নেই। তাঁর কোনো সদৃশ বা উপমা নেই। তিনি এসব থেকে মুক্ত, মহাপবিত্র স্বত্তা’

Read More---

আল্লাহ্‌ কি সর্বস্থানে বিরাজমান?

Views:

A+ A-

 আল্লাহ্‌ কি সর্বস্থানে বিরাজমান?



আল্লাহ্‌ কি সর্বস্থানে বিরাজমান?

বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত পত্রিকা “মাসিক মদীনা”র প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রদত্ত একটি উত্তরের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। উত্তরটি আল্লাহ্‌ ও তাঁর গুণাবলী সংক্রান্ত এবং উহা কুরআন-হাদীস ও সালফে সালেহীনের আকীদাহ্ বিরোধী। সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য মুসলমান সমাজে তুলে ধরা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। তাই বিষয়টির বিস্তারিত আলোচনায় আমরা প্রবৃত্ত হলাম।

উত্তরটিতে বলা হয়েছে: “আল্লাহ্‌ পাক নিরাকার। তিনি সর্বত্র সবকিছুতে বিরাজমান। …. পবিত্র কুরআনের বহু আয়াতে এবং হাদীস শরীফেও আল্লাহ্‌ তা’আলার পরিচয় এভাবেই দেয়া হয়েছে ……।” (মাসিক মদীনা আগস্ট সংখ্যা ৯৯’ইং ৪৪নং প্রশ্নের উত্তর।)

উক্ত কথাটির প্রমাণে উত্তর দাতা মাওলানা সাহেব যদি কুরআন-হাদীস থেকে কিছু দলীল প্রমাণ উপস্থাপিত করতেন তবে পাঠক সমাজ উপকৃত হতেন। প্রকৃত পক্ষে এ কথার কোন দলীল নেই তার কাছে । কুরআন-হাদীসের কোন স্থানেই এ কথা পাওয়া যাবে না যে, আল্লাহ্‌ পাক নিরাকার, তাঁর কোন আকার আকৃতি নেই, বা তিনি পৃথিবীর সকল স্থানে সকল বস্তুর মধ্যে বিরাজ করছেন। কেননা এ কথার অর্থ দাঁড়ায়, ভাল-মন্দ সকল বস্তু এবং স্থানেই মহান আল্লাহর অস্তিত্ব বিদ্যমান । মানুষ-জিন, গরু€-ছাগল, কুকুর-শুকর, মসজিদ-মন্দির, উপাসনালয়-বেশ্যালয় ইত্যাদি শব্দগুলো ‘সবকিছুর’ই অন্তর্ভুক্ত। মলতঃ উক্ত কথাটি তিনি ইবনে আরাবী, মনসূর হাল্লাজ প্রমূখ বেদ্বীন সুফীদের নিকট থেকে নিয়েছেন। ঐ সকল সূফীদের কথা হল: 
(وما الكلب والخنزير إلا إلهنا : وما ربنا في الكنيسة إلا راهب) 
অর্থাৎ-কুকুর-শুকর এগুলো মলতঃ আমাদের উপাস্য, আর গির্জায় অবস্থানকারী পাদ্রী আমাদের প্রতিপালক ছাড়া আর কিছুই নয়। আর ইবনে আরাবীর কথা হল: 
(العبد رب والرب عبد : يا ليت شعري من المكلف؟) 
বান্দা হল রব আর রবই হল বান্দা, হায় আমি যদি জানতাম কে আদেশ প্রাপ্ত? তাই তো আজকাল কোন কোন সুফি দরবেশ বলে থাকে ‘যত কল্লা তত আল্লাহ্‌’। কারণ সব কল্লার মধ্যেই আল্লাহ্‌র অস্তিত্ব বিদ্যমান!! (নাঊযুবিল্লাহ্ )

Read More---

বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০২৩

আল্লাহর দয়ার আশা রাখা

Views:

A+ A-

আল্লাহর দয়ার আশা রাখা

 


আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿ ۞قُلۡ يَٰعِبَادِيَ ٱلَّذِينَ أَسۡرَفُواْ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُواْ مِن رَّحۡمَةِ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ يَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ جَمِيعًاۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلۡغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ ٥٣ ﴾ [الزمر: ٥٣] 
অর্থাৎঘোষণা করে দাও (আমার এ কথা), হে আমার দাসগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি যুলুম করেছ, তারা আল্লাহর করুণা হতে নিরাশ হয়ো না; নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত পাপ মাফ করে দেবেন। নিশ্চয় তিনিই চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(সূরা যুমার ৫৩ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿وَهَلۡ نُجَٰزِيٓ إِلَّا ٱلۡكَفُورَ﴾ [سبا: ١٧] 
অর্থাৎআমি অকৃতজ্ঞ (বা অস্বীকারকারী)কেই শাস্তি দিয়ে থাকি। (সূরা সাবা ১৭ আয়াত)
আরো অন্য জায়গায় তিনি বলেন,
﴿ إِنَّا قَدۡ أُوحِيَ إِلَيۡنَآ أَنَّ ٱلۡعَذَابَ عَلَىٰ مَن كَذَّبَ وَتَوَلَّىٰ ٤٨ ﴾ [طه: ٤٨]   
অর্থাৎ নিশ্চয় আমাদের প্রতি অহী (প্রত্যাদেশ) প্রেরণ করা হয়েছে যে, শাস্তি তার জন্য, যে মিথ্যা মনে করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।(সূরা ত্বাহা ৪৮ আয়াত)
আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿ وَرَحۡمَتِي وَسِعَتۡ كُلَّ شَيۡءٖۚ ﴾ [الاعراف: ١٥٦] 
অর্থাৎ আমার দয়া তা তো প্রত্যেক বস্তুতে পরিব্যাপ্ত।(সূরা আরাফ ১৫৬ আয়াত)
Read More---

বৃহস্পতিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

আল্লাহর উপর ভরসা

Views:

A+ A-





আল্লাহ্ তাআলার উপর ভরসা ইসলামে একটি বিরাট বিষয়। এর গুরুত্ব ও মর্যাদা অপরিসীম। আল্লাহর প্রতি ভরসা ছাড়া কোন বান্দাই কোন মূহুর্ত অতিবাহিত করতে পারে না। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে। কেননা এর মাধ্যমে আল্লাহর তাওহীদের সাথে সম্পর্ক গাড় ও গভীর হয়। আল্লাহ্ বলেন:

ﻭَﺗَﻮَﻛَّﻞْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺤَﻲِّ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻟَﺎ ﻳَﻤُﻮﺕُ

“আর ভরসা কর সেই জীবিত সত্বার (আল্লাহর) উপর, যিনি কখনো মৃত্যু বরণ করবেন না।” [সূরা ফুরক্বান-৫৮]

এই আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে তাঁর উপর ভরসা করার আদেশ করেছেন। তিনি ছাড়া অন্য কারো নিকট নিজেকে পেশ করবেন না। কেননা তিনি চিরঞ্জীব, তাঁর মৃত্যু নেই। তিনি পরাক্রমশালী, কোন কিছুই তাঁকে পরাজিত করতে পারে না। যে ব্যক্তিই তাঁর উপর নির্ভর করবে তার জন্য তিনিই যথেষ্ট হবেন- তাকে সাহায্য ও সমর্থন করবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো উপর ভরসা করবে, সে তো এমন কিছুর উপর ভরসা করল যে মৃত্যু বরণ করবে, বিলীন ও ক্ষয় হয়ে যাবে। দুর্বলতা ও অপারগতা তাকে চারদিক থেকে ঘিরে রয়েছে। এ কারণে তার প্রতি ভরসা কারীর আবেদন বিনষ্ট হয়ে যায়, সে হয়ে যায় দিশেহারা।

এ থেকেই বুঝা যায় আল্লাহর উপর ভরসা করার ফযীলত ও মর্যাদা কি?! তাঁর সাথে হৃদয়ের সম্পর্ককে গভীর করার গুরুত্ব কতটুকু?!


‘তাওয়াক্কুল আল্লাহ বা আল্লাহর উপর ভরসা করার অর্থ:

দুনিয়া-আখেরাতের যাবতীয় বিষয়ের কল্যাণ লাভ ও ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য সঠিক ভাবে অন্তর থেকে আল্লাহর উপর নির্ভর করা। বান্দা তার প্রতিটি বিষয় আল্লাহর উপর সোপর্দ করবে। ঈমানে এই দৃঢ়তা আনবে যে, দান করা না করা, উপকার-অপকার একমাত্র তিনি ছাড়া আর কারো অধিকারে নেই।

আল্লাহ্ তাআলা মুমিন বান্দাদেরকে তাওয়াক্কুলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে পবিত্র কুরআনে অনেক আয়াত উল্লেখ করেছেন। তার মর্যাদা ও ফলাফল উল্লেখ করেছন। তন্মধ্যে:
Read More---

রবিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৮

আল্লাহ কি নিরাকার ?

Views:

A+ A-
আল্লাহ কি নিরাকার ?


আল্লাহ কি নিরাকার ?

“যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে, অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান”। (জুমার ১৮)

“আল্লাহ যার বক্ষ ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন, অতঃপর সে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত আলোর মাঝে রয়েছে। (সে কি তার সমান, যে এরূপ নয়) যাদের অন্তর আল্লাহ স্মরণের ব্যাপারে কঠোর, তাদের জন্যে দূর্ভোগ। তারা সুস্পষ্ঠ গোমরাহীতে রয়েছে। আল্লাহ উত্তম বাণী তথা কিতাব নাযিল করেছেন, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ, পূনঃ পূনঃ পঠিত। এতে তাদের লোম কাঁটা দিয়ে উঠে চামড়ার উপর, যারা তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে, এরপর তাদের চামড়া ও অন্তর আল্লাহর স্মরণে বিনম্র হয়। এটাই আল্লাহর পথ নির্দেশ, এর মাধ্যমে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন। আর আল্লাহ যাকে গোমরাহ করেন, তার কোন পথপ্রদর্শক নেই”। (জুমার ২২-২৩)

• “যে ব্যক্তিকে তার পালনকর্তার আয়াতসমূহ দ্বারা উপদেশ দান করা হয়, অতঃপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার চেয়ে যালেম আর কে? আমি অপরাধীদেরকে শাস্তি দেব”। (সাজদা ৩২)

সৃষ্টির সেরা মানবজাতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার শর্ত হল ঈমান গ্রহন করা । আর ঈমান গ্রহনের পূর্বশর্ত হল আল্লাহ্‌ রব্বুল আলামীনের সঠিক পরিচয় জানা । তাই সৃষ্টির সেরা হিসেবে আমাদের সর্বপ্রথম স্রষ্টা সম্পর্কে জানতে হবে । এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্‌ রব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে বলছেনঃ 
"সুতরাং জান সেই আল্লাহ্‌কে যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই ।" [সূরা-মুহাম্মদ,আয়াত-১৯]

অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য যে অধিকাংশ মানুষ আল্লাহ্‌ সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখে না।
আল্লাহ্‌র সঠিক পরিচয় জানবেন কেন?

• (ক) আল্লাহ্‌ সম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদা বর্জনের জন্যে
• (খ) আল্লাহর প্রতি সঠিক আক্বীদা রাখার জন্যে।
• (গ) আল্লাহ্‌র সাথে কাউকে শরীক না করার জন্য।
• (ঘ) ভয়াবহ পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য।

আল্লাহ্‌ রব্বুল আলামীনের প্রতি ভ্রান্ত আক্বীদাহ বাদ না দিলে কঠিন শাস্তি পেতে হবে । আল্লাহ্‌ বলেনঃ
"এবং মুনাফিক পুরুষ মুনাফিক নারী ও মুশরিক পুরুষ মুশরিক নারী যারা আল্লাহ্‌ সম্বধে মন্দ ধারণা রাখে তাদেরকে আল্লাহ্‌ শাস্তি দিবেন।" [সুরা-ফাতহ, আয়াত-৬]

খুবই আশ্চর্য বিষয় অধিকাংশ মুসলিম এর আক্বীদাহ সঠিক না । তারা সঠিকভাবে আল্লাহ্‌কে চেনেন না ।
আল্লাহ সুবাহানাহুয়াতাআলা কোরআনে তাঁর সিফাতে যাত এবং গুনাবলী বর্ণনা করেছেন তাঁর নিজস্ব সত্তার বর্ণনায় হাত,পা, মুখ, দৃষ্টিশক্তি , শ্রবণ শক্তি, তাঁর সন্তুষ্টি ও ক্রোধ-ইত্যাদি উল্লেখ করছেন । রসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্‌র স্বত্তা গুনাবলীর বর্ণনা করেছেন । মুসলিমগণ যে আল্লাহ্‌র ইবাদত করে তাঁর কোন মূর্তি নেই । তাই যেসব মুসলিম সঠিক আক্বীদার খবর রাখে না তারা হিন্দুদের সাকার বা মূর্তিমান দেবতার বিপরীতে নিরাকার আল্লাহ্‌র ধারনা গ্রহন করেছে।

এজন্যই পাক-ভারত উপমহাদেশে প্রায়ই শুনা যায়,
আল্লাহ্‌ নিরাকার এবং সর্বত্র বিরাজমান-এ বিশ্বাস হিন্দু ধর্মের মূল বিশ্বাসঃ ব্রহ্ম একক, অদ্বিতীয় , নির্গুণ ।
তিনি নিরাকার ও সর্বত্র বা সর্বভূতে বিরাজমান ! [স্রীমদ্ভগবত গীতা যথাযথ; কৃষ্ণ কৃপাশ্রীমূর্তি শীল অভয়চরনাবিন্দু ভক্তি বেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ কতৃক সম্পাদিত,অনুবাদঃ শ্রীমদ ভক্তিচারু । ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্ট , মায়াপুর ।]

• অথচ কোরআন ও সহীহ হাদীস থেকে আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতালার আকার রয়েছে তা প্রমানিত।

কোরআন মাজিদের বিভিন্ন আয়াত ও রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর হাদিসে আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতালার চেহারা,হাত,পা,চক্ষু,যাত বা সত্তা, সুরাত বা আকারের উল্লেখ হয়েছে যার অর্থ স্পষ্ট । এর মাধ্যমে আল্লাহ্‌র নির্দিষ্ট আকার আকৃতি আছে বলে পাওয়া যায়। যারা বলে আল্লাহ্‌ নিরাকার তারা মূলত কোরআনের এসব আয়াতকে অস্বীকার করার মত স্পর্ধা প্রদর্শন করে থাকে। কারন যিনি নিরাকার তাঁর এসব কিছু থাকার কথা নয়। আল্লাহতাআলা বলেনঃ
"তারা আল্লাহ্‌র যথার্থ মর্যাদা নিরুপন করতে পারেনি। কিয়ামতের দিন সমগ্র পৃথিবী তাঁর হাতের মুঠোতে থাকবে।"[সূরা-যুমার,আয়াত-৬৭]

আল্লাহ্‌ রব্বুল আলামিন বলেনঃ
(কিয়ামতের দিন) ভূপৃষ্ঠের সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে । (হে রাসুল) আপনার মহিমাময় ও মহানুভব রবের চেহারা অর্থাৎ সত্ত্বাই একমাত্র বাকি থাকবে। [আর-রাহমান-২৬-২৭]

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ 
"হে ইবলিস , তোমাকে কোন জিনিসটি তাকে সেজদা করা থেকে বিরত রাখল যাকে আমি স্বয়ং নিজের হাত দিয়ে বানিয়েছি,তুমি কি এমনি ওদ্ধত্ত প্রকাশ করলে,না তুমি উচ্চমর্যাদা সম্পূর্ণ কেউ" [সূরা-সদ,আয়াত-৭৫]

আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতালা বলেনঃ
"বরং তাঁর দু হাতই প্রসারিত,যেভাবে ইচ্ছা তিনি দান করেন।" [সূরা-সদ-৬৪]

আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতালা আরও বলেনঃ 
"বল -অনুগ্রহ আল্লাহ্‌রই হাতে" [সূরা-আলে ইমরান-৭৩]

অথচ আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতাআলা কোরআনে
"সেদিন কোন কোন মুখ খুব উজ্জল হবে । তারাই হবে তাদের প্রতিপালকের দর্শনকারী" [সুরা-আল-কিয়ামাহ, আয়াত-২৩]

আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতাআলা বলেনঃ
"দৃষ্টি শক্তি তাকে প্রত্যক্ষ করতে পারে না বরং তিনিই দৃষ্টি শক্তিকে প্রত্যক্ষ করেন এবং তিনিই দৃষ্টি শক্তিকে প্রত্যক্ষ করেন এবং তিনি সুক্ষদরশি,সম্যকপরিজ্ঞাত ।" [সূরা-আনআম,আয়াত-১০৩]

আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতাআলা বলেনঃ
"আল্লাহ্‌ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, তাঁর মুখমণ্ডল ব্যতীত সব কিছুই ধ্বংসশীল ।" [সূরা-আল কাসাস, আয়াত-৮৮]

আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতাআলা নবী মূসা(আঃ)কে লক্ষ্য করে বলছেনঃ
"আমি আমার নিকট থেকে তোমার উপর ভালবাসা ঢেলে দিয়েছিলাম যাতে তুমি আমার চোখের সামনে প্রতিপালিত হও।" [সূরা-ত্বহা, আয়াত-৩৯]

এমনিভাবে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে স্বান্তনা দিতে গিয়ে বলেনঃ
"আপনি আপনার রবের নির্দেশের অপেক্ষায় ধৈর্যধারন করুন আপনি আমার চোখের সামনেই রয়েছেন।" [সূরা-আত-তূর, আয়াত-৪৮]

আল্লাহ্‌ বলেনঃ
"নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ শ্রবণ করেন ও দেখেন ।" [সূরা-মুজাদালাহ, আয়াত-১]
আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতালা বলেনঃ
আল্লাহ্‌র সাদৃশ্য কোন বস্তুই নেই এবং তিনি শুনেন ও দেখেন ।" [সূরা-আশ-শুরা, আয়াত-১১]

"কিয়ামতের দিনে আল্লাহর হাঁটুর নিম্নাংশ উন্মোচিত করা হবে এবং সাজদা করার জন্য সকলকে আহবান করা হবে, কিন্তু তারা তা করতে সমর্থ হবে না ।" [সুরা-কালাম,আয়াত-৪২]

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্‌র রসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর হাদীসে বর্ণিত হয়েছেঃ

উমর(রাঃ)হতে বর্ণিত, রসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বলেছেনঃ 
"কিয়ামতের দিন আল্লাহপাক সমস্ত আকাশমণ্ডলীকে ভাঁজ করবেন অতঃপর সেগুলোকে ডান হাতে নিয়ে বলবেন,আমি হচ্ছি শাহানশাহ(মহারাজা)অত্যাচারী আর যালিমরা কোথায় ?অহংকারীরা কোথায় ? [মুসলিম]

রসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বলেন,
"পাহাড়-পর্বত এবং বৃক্ষরাজি এক আঙ্গুলে থাকবে,তারপর এগুলোকে ঝাঁকুনি দিয়ে তিনি বললেন,আমিই রাজাধিরাজ আমিই আল্লাহ্‌।" [মুসলিম]

অপর এক বর্ণনায় রসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বলেন-
"আল্লাহ্‌ সমস্ত আকাশমণ্ডলীকে এক আঙ্গুলে রাখবেন,পানি এবং ভু-তলে যা কিছু তা এক আঙ্গুলে রাখবেন।"[বুখারী ও মুসলিম]

আবু সাইয়ীদ আল-খুদরী(রাঃ)বলেন,যে আমি রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে বলতে শুনেছিঃ
আমাদের প্রতিপালক (আল্লাহ্‌) কিয়ামতের দিনে তাঁর হাঁটুর নিম্নাংশ প্রকাশ করে দেবেন, প্রত্যেক মুমিন, মুমিনা তাতে সাজদা করবেন এবং যে ব্যক্তি দুনিয়াতে লোক-দেখান ও সম্মানের জন্য তা করত সে সাজদা করতে গেলে তাঁর পিঠ সমান হয়ে ফিরে আসবে(বা সিজদা করতে সমর্থ হবেনা)। [বুখারী,মুসলিম,তিরমিযী,আহমদ]

এ সকল কোরআনের আয়াত ও হাদীস আল্লাহ্‌ রব্বুল আলামীন যে নিরাকার নন
তার অকাট্য প্রমান করে বর্ণনা করে । আল্লাহর সিফাতকে তাঁর কোন মাখলুকের সাথে সাদৃশ্য না করে তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে । সর্বপরি নিরাকার কথাটি কোরআন ও সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত নয় । বরং হিন্দু সংস্কৃতি থেকে আমদানীকৃত বটে । কোন কল্পনার আশ্রয় না নিয়ে কিংবা প্রকৃত স্বরূপ জানতে না চেয়ে এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে ।

• এ প্রসঙ্গে ইবনে কাসীর(রহঃ) বলেছেনঃ
"আল্লাহ্‌ তা'আলা আরশের উপর সমাসীন,
কোন অবস্থা ও সাদৃশ্য স্থাপন ছাড়াই তার উপর বিশ্বাস রাখতে হবে । কোন জল্পনা কল্পনা করা চলবে না,
যার দ্বারা সাদৃশ্যের চিন্তা মস্তিস্কে এসে যায় ; কারন এটা আল্লাহ্‌র গুনাবলী হতে বহুদুরে। মোটকথা, যা কিছু আল্লাহতাআলা বলেছেন ওটাকে কোন খেয়াল ও সন্দেহ ছাড়াই মেনে নিতে হবে কোন চুল চেরা করা চলবে না । কেননা মহান আল্লাহ্‌ রব্বুল আলামীন কোন কিছুর সাথে সাদৃশ্য যুক্ত নন । [তাফসীর ইবনে কাসীর]

এ প্রসঙ্গে ইমাম আবু হানিফা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ
“ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্‌র যে সমস্ত সিফাত (গুন)বর্ণিত হয়েছে যেমন-আল্লাহ্‌র হাত,পা,চেহারা,নফস ইত্যাদি আমরা তা দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি। স্বীকার করি এগুলো হচ্ছে তাঁর সিফাত বা গুণাবলী।
আমরা যেমন কখনও আল্লাহ্‌র সিফাত সম্পর্কে এ প্রশ্ন করিনা বা করবোনা যে,এ সিফাতগুলো (হাত,পা,চেহারা,চোখ ইত্যাদি) কেমন,কিরুপ বা কিভাবে,কেমন অবস্থায় আছে,তেমনি আল্লাহ্‌র সিফাতের কোন নিজস্ব ব্যাখ্যা বা বর্ণনা দিতে যাইনা। কেননা তিনি তা বর্ণনা করেন নাই।
যেমন-আমরা একথা কখনো বলিনা যে,
আল্লাহ্‌র হাত হচ্ছে তাঁর কুদরতি হাত,শক্তিপ্রদ পা বা তাঁর নিয়ামত।
এ ধরনের কোন ব্যাখ্যা দেয়ার অর্থ হল আল্লাহ্‌র প্রকৃত সিফাতকে অকার্যকর করা বা বাতিল করে দেয়া বা অর্থহীন করা । আল্লাহ্‌র হাতকে আমরা হাতই জানবো এর কোন বিশেষণ ব্যবহার করবো না। কুদরতি হাত রূপে বর্ণনা করবোনা । কোন রকম প্রশ্ন করা ছাড়াই যেরূপ কোরআনে বর্ণিত হয়েছে হুবুহু সে রকমই দ্বিধাহীনে বিশ্বাস করি”। [আল ফিকহুল আকবার]

• আবু মুতি আল হাকাম ইবনে আব্দুল্লাহ আল বালাখি বলেনঃ
আমি ইমাম আবু হানিফা (রাহিমাহুল্লাহ)কে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে কেউ যদি বলে যে, আমি জানিনা আল্লাহ্‌ কোথায় -আসমানে না পৃথিবীতে, তাহলে তার সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? প্রত্যুত্তরে তিনি বলেছেন-সে কাফের,কেননা আল্লাহ্‌ বলেছেন,
"পরম করুণাময় (রাহমান)আরশের উপর সমাসীন। (সুরা-ত্ব হা-৫)

• আবু মুতি বলেছেন, অতঃপর আমি তাঁকে(ইমাম আবু হানিফাকে)জিজ্ঞেস করেছিলাম যে কেউ যদি বলে যে,আল্লাহ্‌ উপরে অধিষ্ঠিত,কিন্তু আমি জানিনা আরশ কোথায় অবস্থিত আকাশে না পৃথিবীতে তাহলে তার সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? প্রত্যুত্তরে তিনি বলেছেন- যদি সে ব্যক্তি "আল্লাহ্‌ আকাশের উপরে "এ কথা অস্বীকার করে তা হলে সে কাফের। (শারহুল আকিদাহ আত তাহাওইয়াহ লি ইবনে আবিল ইজ আল হানাফি পৃষ্ঠা নং-২২৮)

• ইমাম মালিক(রাহিমাহুল্লাহ)বলেনঃ
“ "আল্লাহ্‌র হাত"বলতে আল্লাহ্‌র হাতই বুঝতে হবে,এর কোন রুপক(মাজাযী)অর্থ করা যাবেনা,মাজাযী(রুপক)বর্ণনা দেয়া যাবে না। আল্লাহ কেমন,কিসের মত এরকম প্রশ্ন করা বিদআত এমনকি তাঁর হাত বিশেষণে ভূষিত করে,কুদরতি হাত বলাও যাবেনা কেননা কোরআনে ও সহীহ হাদীসে এভাবে বর্ণনা নাই ”। (আল আসমা ওয়াস সিফাত পৃষ্ঠা নং-৫২৬)

আল্লাহ্‌র আরশে অধিষ্ঠিত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেনঃ
"আল্লাহ্‌ আরশে অধিষ্ঠিত একথা জানি, কিভাবে অধিষ্ঠিত তা জানিনা।
এর উপর দৃঢ় ঈমান পোষণ করা ওয়াজিব
এবং এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা বিদআত।"

ইমাম মালিক(রাহিমাহুল্লাহ)আরও বলেনঃ
“আল্লাহ্‌ তাঁর আরশে অধিষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে যতটুকু বর্ণনা দিয়েছেন তার বাইরে কোন প্রশ্ন করা নিষিদ্ধ ।আল্লাহ্‌ আরশে কিভাবে,কেমন করে সমাসীন বা উপবিষ্ট আছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ্‌তাআলা আমাদেরকে অবহিত করেননি। তাই এ বিষয়টির কাইফিয়াত আমাদের কাছে সম্পূর্ণ অজ্ঞাত।"
-আল্লামা ইবনে হাজর(রাহিমাহুল্লাহ)ফাতহ গ্রন্থে(১৩তম খণ্ড পৃষ্ঠা নং ৪০৬) বলেছেন,উপরক্ত বর্ণনার সনদ বিশুদ্ধ-

ইমাম শাফীঈ(রাহিমাহুল্লাহ)জোরালো অভিমত ব্যক্ত করেন এ প্রসঙ্গেঃ
"আল্লাহ্‌তালার আরশে অধিষ্ঠিত হওয়া এবং আল্লাহ্‌র হাত,পা ইত্যাদি যা তাঁর সিফাত বলে বিবেচ্য আর তা কোরআন ও সহীহ সূত্রে সুন্নাহ দ্বারা প্রমানিত হওয়ার পরও যদি কোন ব্যক্তি বিরোধিতা করে,অস্বীকার করে ,নিষ্ক্রিয় করে তবে সে অবশ্যই কাফের বলে গন্য হবে।

তিনি আরও বলেনঃ
"আমরা আল্লাহ্‌র গুণাবলী স্বীকার করি ও বিশ্বাস করি তবে সৃষ্টির কোন কিছুর সাথে আল্লাহ্‌র গুনাবলীর কোন আকার সাব্যস্ত করিনা,সাদৃশ্য(তুলনা)করিনা। কেননা আল্লাহ্‌ নিজেই তাঁর সাদৃশ্যের বিষয়টি বাতিল করে দিয়েছেন এ বলে-
"(সৃষ্টি জগতের) কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়।" (সূরা-শুরা,আয়াত-১১)
-সিয়ারে আলামিন নুবালা-১০ম খণ্ড,পৃষ্ঠা নং,-৮০;আর দেখুন আইনুল মাবুদ-১৩তম খণ্ড পৃষ্ঠা নং-৪১;তাবাকতে হানাবিল ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা নং-২৮৩-

• ইমাম আহমদ বিন হাম্বল(রহঃ)বলেছেনঃ
“আল্লাহ্‌র আসমা ও সিফাতগুলো সম্পর্কে কোরআন ও সহীহ হাদীসগুলোতে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে এগুলোকে ঠিক সেভাবে সে পর্যায়েই রাখা উচিৎ । আমরা এগুলো স্বীকার করি ও বিশ্বাস করি এবং আল্লাহ্‌র সিফাতের কোন সাদৃশ্য করি না । আর এটাই হচ্ছে বিচক্ষন ও বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামের অনুসৃত নীতি ”। [-ইবনুল জাওযী প্রনীত মুনাক্বীবে ইমাম আহমদ , পৃষ্ঠা নং-১৫৫-১৫৬]

ইমাম আহমদ (রহঃ)আরও বলেনঃ
“কোরআন ও হাদীসে আল্লাহ্‌র সিফাতগুলোর বর্ণনা যেমনভাবে এসেছে তার বাহ্যিক ও আসল অর্থ স্বীকার করতে হবে,মেনে নিতে হবে, এর প্রকৃত তথা আসল অর্থকে বাদ দেয়া যাবে না। নিস্ক্রিয় করা যাবে না, খারিজ করা যাবে না ।

আল্লাহ্‌র সিফাতগুলো যথা আল্লাহ্‌র আরশের উপর অধিষ্ঠিত হওয়া আল্লাহ্‌র হাত, পা দেখা শোনা ইত্যাদি সম্পর্কে যেরুপ বর্ণিত আছে তার বাহ্যিক ও আসল অর্থ ছাড়া রূপক , অতিরঞ্জিত অথবা অন্তর্নিহিত কোন পৃথক অর্থ বা ব্যাখ্যা বা বর্ণনা রসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক দেওয়া হয়েছে এমন প্রমান নেই।
আমরা যদি এ সত্য উপলব্ধি করি যে, সালফে সালেহীন আল্লাহ্‌র গুনাবলী সঠিক অর্থ বুঝেছেন । তাহলে আমাদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় হলো তারা এগুলোর যে অর্থ বুঝেছেন,আমাদেরকে ঠিক সেই অর্থই বুঝতে হবে । [-মাজমুআতুররাসায়িলিল মুনীরিয়্যাহ পৃষ্ঠা নং(১৭৬-১৮৩]

অতএব, সার কথা হল,
আল্লাহ্‌র অবয়ব বিশিষ্ট অস্তিত্বকে, সত্ত্বাকে গুনাবলীকে অস্বীকার করে (অর্থাৎ নিরাকার করে) সন্যাসী,সুফী, পীর সাহেবেরা অলীক সাধনা বলে তাদের ক্বলবে বসিয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমান করার জন্যই আল্লাহ্‌কে নিরাকার বানিয়ে ধর্মীয় সমাজে প্রচার করেছেন। এটি ‘তাওহীদ আল আসমা ওয়াস সিফাত’ এর সুস্পষ্ট খেলাফ।
অবয়ব বিশিষ্ট তথা অস্তিত্বময় আল্লাহ্‌কে নিরাকার না করলে তো তাঁকে (আল্লাহ্‌কে) তাদের ক্বলবে বসানো যাবে না । নিরাকার আল্লাহ্‌কে অলীক সাধনায়,কল্পনায় ক্বলবে বসিয়ে এই মুসলিম রূপধারী পুরোহিতরা নিজেদেরকে দেবতার মর্যাদায় ভূষিত হয়ে সমাজে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে চলেছেন । আসলে এ সবই ভণ্ডামির বেসাতি, স্বার্থোদ্ধারের ধান্দা ।

আল্লাহ আমাদের তাওহীদ বুঝার ও মানার তাওফিক দান করুন, সকল প্রকার শিরক থেকে রক্ষা করুন, আমিন।

সৌজন্যেঃ জুমার খুতবা



Read More---