Views:
A+
A-
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ ۞ﻗُﻞۡ ﻳَٰﻌِﺒَﺎﺩِﻱَ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺃَﺱۡﺭَﻓُﻮﺍْ ﻋَﻠَﻰٰٓ ﺃَﻧﻔُﺴِﻬِﻢۡ ﻟَﺎ ﺗَﻖۡﻧَﻄُﻮﺍْ ﻣِﻦ ﺭَّﺡۡﻣَﺔِ ﭐﻟﻠَّﻪِۚ ﺇِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻳَﻎۡﻓِﺮُ ﭐﻟﺬُّﻧُﻮﺏَ ﺟَﻤِﻴﻌًﺎۚ ﺇِﻧَّﻪُۥ ﻫُﻮَ ﭐﻝۡﻏَﻔُﻮﺭُﻟﺮَّﺣِﻴﻢُ ٥٣ ﴾ [ ﺍﻟﺰﻣﺮ : ٥٣ ]
অর্থাৎ “ঘোষণা করে দাও (আমার এ কথা), হে আমার দাসগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি যুলুম করেছ, তারা আল্লাহর করুণা হতে নিরাশ হয়ো না; নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত পাপ মাফ করে দেবেন। নিশ্চয় তিনিই চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা যুমার ৫৩ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ﻭَﻫَﻞۡ ﻧُﺠَٰﺰِﻱٓ ﺇِﻟَّﺎ ﭐﻝۡﻛَﻔُﻮﺭَ﴾ [ ﺳﺒﺎ : ١٧ ]
অর্থাৎ “আমি অকৃতজ্ঞ (বা অস্বীকারকারী)কেই শাস্তি দিয়ে থাকি।
(সূরা সাবা ১৭ আয়াত)
আরো অন্য জায়গায় তিনি বলেন,
﴿ ﺇِﻧَّﺎ ﻗَﺪۡ ﺃُﻭﺣِﻲَ ﺇِﻟَﻲۡﻧَﺎٓ ﺃَﻥَّ ﭐﻝۡﻋَﺬَﺍﺏَ ﻋَﻠَﻰٰ ﻣَﻦ ﻛَﺬَّﺏَ ﻭَﺗَﻮَﻟَّﻰٰ ٤٨﴾ [ ﻃﻪ : ٤٨ ]
অর্থাৎ “নিশ্চয় আমাদের প্রতি অহী (প্রত্যাদেশ) প্রেরণ করা হয়েছে যে, শাস্তি তার জন্য, যে মিথ্যা মনে করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।” (সূরা ত্বাহা ৪৮ আয়াত)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ ﻭَﺭَﺡۡﻣَﺘِﻲ ﻭَﺳِﻌَﺖۡ ﻛُﻞَّ ﺷَﻲۡﺀٖۚ ﴾ [ ﺍﻻﻋﺮﺍﻑ : ١٥٦ ]
অর্থাৎ “আমার দয়া তা তো প্রত্যেক বস্তুতে পরিব্যাপ্ত।” (সূরা আ’রাফ ১৫৬ আয়াত)
1/417 ﻭَﻋَﻦ ﻋُﺒَﺎﺩَﺓَ ﺑﻦِ ﺍﻟﺼَّﺎﻣِﺖِ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﻣَﻦْ ﺷَﻬِﺪَ ﺃﻥَّ ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻻَ ﺷَﺮِﻳﻚَ ﻟَﻪُ، ﻭَﺃﻥَّ ﻣُﺤَﻤﺪﺍً ﻋَﺒْﺪﻩُ ﻭﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ، ﻭَﺃﻥَّ ﻋِﻴﺴَﻰ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ ﻭَﻛَﻠِﻤَﺘُﻪُ ﺃﻟْﻘَﺎﻫَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﻣَﺮْﻳَﻢَ ﻭﺭُﻭﺡٌ ﻣِﻨْﻪُ، ﻭَﺃﻥَّ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ ﺣَﻖٌّ، ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﺭَ ﺣَﻖٌّ، ﺃﺩْﺧَﻠَﻪُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻌَﻤَﻞِ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﻟﻤﺴﻠﻢ : « ﻣَﻦْ ﺷَﻬِﺪَ ﺃﻥْ ﻻ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺃﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪﺍً ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺣَﺮَّﻡَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴﻪِ ﺍﻟﻨَّﺎﺭَ » .
১/৪১৭। ‘উবাদাহ ইবনে সামেত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেবে যে,
একমাত্র আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোনো উপাস্য নেই, তাঁর কোন শরীক নেই, আর মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রসূল এবং ঈসা আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসূল, আর তাঁর বাণী যা তিনি মারয়্যামের মধ্যে নিক্ষেপ করেছেন এবং তাঁর (পক্ষ থেকে সৃষ্ট) রূহ। আর জান্নাত সত্য ও জাহান্নাম সত্য। তাকে আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন; তাতে সে যে কর্মই করে থাকুক না কেন।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]
মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর রসূল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেবেন।’’
2/418 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﺫَﺭٍّ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒﻲّ ﷺ : « ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪُ - ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ :- ﻣَﻦْ ﺟَﺎﺀَ ﺑِﺎﻟﺤَﺴَﻨَﺔِ ﻓَﻠَﻪُ ﻋَﺸْﺮُ ﺃﻣْﺜَﺎﻟِﻬَﺎ ﺃَﻭْ ﺃﺯْﻳَﺪ، ﻭَﻣَﻦْ ﺟَﺎﺀَ ﺑﺎﻟﺴَﻴِّﺌَﺔِ ﻓَﺠَﺰَﺍﺀُ ﺳَﻴِّﺌَﺔٍ ﺳَﻴِّﺌَﺔٌ ﻣِﺜْﻠُﻬَﺎ ﺃَﻭْ ﺃﻏْﻔِﺮُ . ﻭَﻣَﻦْ ﺗَﻘَﺮَّﺏَ ﻣِﻨِّﻲ ﺷِﺒْﺮﺍً ﺗَﻘَﺮَّﺑْﺖُ ﻣِﻨْﻪُ ﺫِﺭَﺍﻋﺎً، ﻭَﻣَﻦْ ﺗَﻘَﺮَّﺏَ ﻣِﻨِّﻲ ﺫِﺭَﺍﻋﺎً ﺗَﻘَﺮَّﺑْﺖُ ﻣِﻨْﻪُ ﺑَﺎﻋﺎً، ﻭَﻣَﻦْ ﺃﺗَﺎﻧِﻲ ﻳَﻤْﺸِﻲ ﺃﺗَﻴْﺘُﻪُ ﻫَﺮْﻭَﻟَﺔً، ﻭَﻣَﻦْ ﻟَﻘِﻴَﻨﻲ ﺑِﻘُﺮَﺍﺏِ ﺍﻷﺭْﺽِ ﺧَﻄِﻴﺌَﺔً ﻻَ ﻳُﺸْﺮِﻙُ ﺑِﻲ ﺷَﻴﺌﺎً، ﻟَﻘِﻴﺘُﻪُ ﺑِﻤِﺜْﻠِﻬَﺎ ﻣَﻐﻔِﺮَﺓً » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
২/৪১৮। আবূ যার্র বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ আয্যা অজাল্ল্ বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি একটি নেকী করবে, তার জন্য দশ গুণ নেকী রয়েছে অথবা ততোধিক বেশী। আর যে ব্যক্তি একটি পাপ করবে, তার বিনিময় (সে) ততটাই (পাবে; তার বেশী নয়) অথবা আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। আর যে ব্যক্তি আমার প্রতি এক বিঘত নিকটবর্তী হবে, আমি তার প্রতি এক হাত নিকটবর্তী হব। আর যে ব্যক্তি আমার প্রতি এক হাত নিকটবর্তী হবে, আমি তার প্রতি দু’হাত নিকটবর্তী হব। যে আমার দিকে হেঁটে আসবে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাব। আর যে ব্যক্তি প্রায় পৃথিবী সমান পাপ করে আমার স
ঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, অথচ সে আমার সাথে কাউকে শরীক করেনি,
তার সাথে আমি তত পরিমাণই ক্ষমা নিয়ে সাক্ষাৎ করব।’’ (মুসলিম) [2]
3/419 ﻭَﻋَﻦ ﺟَﺎﺑِﺮٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﺟَﺎﺀَ ﺃَﻋﺮَﺍﺑِﻲ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻣَﺎ ﺍﻟﻤﻮﺟِﺒَﺘَﺎﻥِ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﻣَﻦْ ﻣَﺎﺕَ ﻻَ ﻳُﺸْﺮِﻙُ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﺷَﻴﺌﺎً ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ، ﻭَﻣَﻦْ ﻣَﺎﺕَ ﻳُﺸْﺮِﻙُ ﺑِﻪِ ﺷَﻴْﺌﺎً ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
৩/৪১৯। জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,
এক বেদুঈন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! (জান্নাত ও জাহান্নাম) ওয়াজেবকারী (অনিবার্যকারী) কর্মদু’টি কি?’ তিনি বললেন, ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার করবে না, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি তার সাথে কোনো জিনিসকে অংশীদার করবে (এবং তওবা না করে ঐ অবস্থাতেই সে মৃত্যুবরণ করবে) সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’’ (মুসলিম) [3]
4/420 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﻧَﺲٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ : ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒﻲَّ ﷺ ﻭَﻣُﻌَﺎﺫٌ ﺭَﺩِﻳﻔُﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺮَّﺣْﻞِ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻳَﺎ ﻣُﻌَﺎﺫُ » ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﺒِّﻴْﻚَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﺳَﻌْﺪَﻳْﻚَ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻳَﺎ ﻣُﻌَﺎﺫُ » ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﺒَّﻴْﻚَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﺳَﻌْﺪَﻳْﻚَ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻳَﺎ ﻣُﻌَﺎﺫُ » ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﺒِّﻴْﻚَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭﺳَﻌْﺪَﻳْﻚَ، ﺛَﻼﺛﺎً، ﻗَﺎﻝَ : « ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﻋَﺒْﺪٍ ﻳَﺸْﻬَﺪُ ﺃَﻥ ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭَﺃﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪﺍً ﻋَﺒْﺪُﻩُ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ ﺻِﺪْﻗﺎً ﻣِﻦْ ﻗَﻠْﺒِﻪِ ﺇﻻَّ ﺣَﺮَّﻣَﻪُ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺭ » . ﻗَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺃﻓَﻼَ ﺃُﺧْﺒِﺮُ ﺑِﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱ ﻓَﻴَﺴْﺘَﺒْﺸِﺮُﻭﺍ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﺫﺍً ﻳَﺘَّﻜِﻠُﻮﺍ
» . ﻓﺄﺧﺒﺮ ﺑِﻬَﺎ ﻣُﻌﺎﺫٌ ﻋِﻨْﺪَ ﻣﻮﺗِﻪ ﺗَﺄﺛُّﻤﺎً . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
৪/৪২০। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, মু‘আয যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে সওয়ারীর উপর বসেছিলেন, তখন তিনি তাঁকে বললেন, ‘‘হে মু‘আয!’’ মু‘আয বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি উপস্থিত আছি এবং আপনার খিদমতের জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’ তিনি (পুনরায়) বললেন, ‘‘হে মু‘আয!’’ মু‘আয বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি হাজির আছি এবং আপনার খিদমতের জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’ তিনি (আবার) বললেন, ‘‘হে মু‘আয!’’ (মুআযও) বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি উপস্থিত আছি এবং আপনার খিদমতের জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা তিনবার বললেন। (এরপর) তিনি বললেন, ‘‘যে কোন বান্দা খাঁটি মনে সাক্ষ্য দেবে যে,
আল্লাহ ব্যতীত কেউ (সত্য) উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও তাঁর রসূল, তাকে আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামের জন্য হারাম করে দেবেন।’’
মু‘আয বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি কি লোকদেরকে এই খবর বলে দেব না? যেন তারা (শুনে) আনন্দিত হয়।’ তিনি বললেন, ‘‘তাহলে তো তারা (এরই উপর) ভরসা করে নেবে (এবং আমল ত্যাগ করে বসবে)।’’
অতঃপর মু‘আয (ইলম গোপন রাখার) পাপ থেকে বাঁচার জন্য তাঁর মুত্যুর সময় (এ হাদীসটি) জানিয়ে দিয়েছিলেন। (বুখারী ও মুসলিম) [4]
5/421 . ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻫُﺮَﻳﺮَﺓَ ﺃَﻭْ ﺃَﺑﻲ ﺳَﻌِﻴﺪٍ ﺍﻟﺨُﺪﺭِﻱ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ - ﺷَﻚَّ ﺍﻟﺮَّﺍﻭِﻱ - ﻭﻻَ ﻳَﻀُﺮُّ ﺍﻟﺸَّﻚُّ ﻓﻲ ﻋَﻴﻦِ ﺍﻟﺼَّﺤَﺎﺑﻲّ ؛ ﻷﻧَّﻬُﻢْ ﻛُﻠُّﻬُﻢْ ﻋُﺪُﻭﻝٌ - ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﻤَّﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻏَﺰﻭَﺓُ ﺗَﺒُﻮﻙَ، ﺃﺻَﺎﺏَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﻣَﺠَﺎﻋَﺔٌ، ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻟَﻮْ ﺃﺫِﻧْﺖَ ﻟَﻨَﺎ ﻓَﻨَﺤَﺮْﻧَﺎ ﻧَﻮﺍﺿِﺤَﻨَﺎ ﻓَﺄﻛَﻠْﻨَﺎ ﻭَﺍﺩَّﻫَﻨَّﺎ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺍﻓْﻌَﻠُﻮﺍ » ﻓَﺠﺎﺀ ﻋُﻤَﺮُ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺇﻥْ ﻓَﻌَﻠْﺖَ ﻗَﻞَّ ﺍﻟﻈَّﻬْﺮُ، ﻭَﻟَﻜِﻦ ﺍﺩﻋُﻬُﻢْ ﺑﻔَﻀﻞِ ﺃﺯْﻭَﺍﺩِﻫِﻢْ، ﺛُﻢَّ ﺍﺩﻉُ ﺍﻟﻠﻪ ﻟَﻬُﻢْ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺑِﺎﻟﺒَﺮَﻛَﺔِ، ﻟَﻌَﻞَّ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻥْ ﻳَﺠْﻌَﻞَ ﻓﻲ ﺫﻟِﻚَ ﺍﻟﺒَﺮَﻛَﺔَ . ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﻧَﻌَﻢْ » ﻓَﺪَﻋَﺎ ﺑِﻨَﻄْﻊ ﻓَﺒَﺴَﻄَﻪُ، ﺛُﻢَّ ﺩَﻋَﺎ ﺑِﻔﻀﻞِ ﺃﺯْﻭَﺍﺩِﻫِﻢْ، ﻓَﺠَﻌَﻞَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻳَﺠِﻲﺀُ ﺑﻜَﻒّ ﺫُﺭَﺓٍ ﻭَﻳَﺠِﻲﺀُ ﺑِﻜَﻒّ ﺗَﻤﺮٍ ﻭَﻳَﺠِﻲﺀُ ﺍﻵﺧﺮُ ﺑِﻜِﺴﺮَﺓٍ ﺣَﺘَّﻰ ﺍﺟْﺘَﻤَﻊَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﻄﻊِ ﻣِﻦْ ﺫﻟِﻚَ ﺷَﻲﺀٌ ﻳَﺴﻴﺮٌ، ﻓَﺪَﻋَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﺑِﺎﻟﺒَﺮَﻛَﺔِ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ : « ﺧُﺬُﻭﺍ ﻓﻲ ﺃﻭﻋِﻴَﺘِﻜُﻢْ » ﻓَﺄَﺧَﺬُﻭﺍ ﻓﻲ ﺃﻭْﻋِﻴَﺘِﻬِﻢ ﺣَﺘَّﻰ ﻣَﺎ ﺗَﺮَﻛُﻮﺍ ﻓﻲ ﺍﻟﻌَﺴْﻜَﺮِ ﻭِﻋَﺎﺀً ﺇﻻَّ ﻣَﻸُﻭﻩُ ﻭَﺃَﻛَﻠُﻮﺍ ﺣَﺘَّﻰ ﺷَﺒﻌُﻮﺍ ﻭَﻓَﻀَﻞَ ﻓَﻀْﻠَﺔٌ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺃﺷْﻬَﺪُ ﺃﻥْ ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪُ، ﻭَﺃﻧّﻲ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻻ ﻳَﻠْﻘَﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺑِﻬِﻤَﺎ ﻋَﺒْﺪٌ ﻏَﻴْﺮَ ﺷَﺎﻙٍّ ﻓَﻴُﺤْﺠَﺐَ ﻋَﻦِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
৫/৪২১।
আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু অথবা আবূ সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, (বর্ণনাকারী সন্দেহে পড়েছেন। অবশ্য সাহাবীর ব্যক্তিত্ব নির্ণয়ে সন্দেহ ক্ষতিকর কিছু নয়। কেননা সকল সাহাবাই নির্ভরযোগ্য।) সাহাবী বলেন, তাবুকের যুদ্ধের সময় সাহাবীগণ অতিশয় খাদ্য-সংকটে পড়লেন। সুতরাং তাঁরা বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! যদি আপনি অনুমতি দেন, তাহলে আমরা আমাদের সেচক উট জবাই করে তার গোশ্ত ভক্ষণ এবং চর্বি ব্যবহার করি?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (ঠিক আছে) তোমরা কর। (এ সংবাদ শুনে) উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! যদি আপনি (এমন) করেন,
তাহলে সওয়ারী কমে যাবে। বরং আপনি (এই করুন যে,) তাদেরকে নিজেদের অবশিষ্ট খাদ্যদ্রব্য আনতে বলুন এবং তাদের জন্য তাতে আল্লাহর কাছে বরকতের দো‘আ করুন। সম্ভবতঃ আল্লাহ তাতে বরকত দেবেন।’
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘হ্যাঁ, (তাই-ই করি।)’’
সুতরাং তিনি চামড়ার একখানি দস্তরখান আনিয়ে নিয়ে তা বিছালেন। অতঃপর তিনি তাঁদের অবশিষ্ট খাদ্যদ্রব্য জমা করার নির্দেশ দিলেন। ফলে কেউ তো এক খাবল ভুট্টা আনলেন, কেউ তো এক খাবল খুরমা এবং কেউ তো রুটির একটি টুকরাও আনলেন। পরিশেষে কিছু পরিমাণ খাদ্য জমা হয়ে গেল। তারপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বরকতের দো‘আ করলেন। অতঃপর বললেন, ‘‘তোমরা আপন আপন পাত্রে নিয়ে নাও।’’ সুতরাং তাঁরা সব সব পাত্রে নিতে আরম্ভ করলেন। এমনকি সৈন্যের মধ্যে কোন পাত্র শূন্য রইল না। তাঁরা সকলেই খেয়ে তৃপ্ত হলেন এবং কিছু বেঁচেও গেল। অবশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল। যে কোন বান্দা সন্দেহমুক্ত হয়ে এ দু’টি (সাক্ষ্য) নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে,
তাকে যে জান্নাতে যেতে বাধা দেওয়া হবে -তা হতেই পারে না (বরং সে বিনা বাধায় জান্নাতে প্রবেশ করবে)।’’ (মুসলিম) [5]
6/422 ﻭَﻋَﻦ ﻋِﺘْﺒَﺎﻥَ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻭَﻫُﻮَ ﻣِﻤَّﻦ ﺷَﻬِﺪَ ﺑَﺪﺭﺍً، ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨﺖُ ﺃُﺻَﻠِّﻲ ﻟِﻘَﻮْﻣِﻲ ﺑَﻨﻲ ﺳَﺎﻟِﻢ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳَﺤُﻮﻝُ ﺑَﻴْﻨِﻲ ﻭﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ ﻭَﺍﺩٍ ﺇِﺫَﺍ ﺟَﺎﺀَﺕِ ﺍﻷَﻣْﻄَﺎﺭ، ﻓَﻴَﺸُﻖُّ ﻋَﻠَﻲَّ ﺍﺟْﺘِﻴَﺎﺯُﻩُ ﻗِﺒَﻞَ ﻣَﺴْﺠِﺪِﻫﻢ، ﻓَﺠِﺌﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﻓَﻘُﻠﺖُ ﻟَﻪُ : ﺇﻧّﻲ ﺃﻧْﻜَﺮْﺕُ ﺑَﺼَﺮِﻱ ﻭَﺇﻥَّ ﺍﻟﻮَﺍﺩِﻱ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺑَﻴْﻨِﻲ ﻭﺑَﻴْﻦَ ﻗَﻮﻣِﻲ ﻳَﺴِﻴﻞُ ﺇِﺫَﺍ ﺟَﺎﺀَﺕِ ﺍﻷﻣْﻄَﺎﺭُ ﻓَﻴَﺸُﻖُّ ﻋَﻠَﻲَّ ﺍﺟْﺘِﻴَﺎﺯُﻩُ ﻓَﻮَﺩِﺩْﺕُ ﺃﻧَّﻚَ ﺗَﺄﺗِﻲ ﻓَﺘُﺼَﻠِّﻲ ﻓﻲ ﺑَﻴْﺘِﻲ ﻣَﻜَﺎﻧﺎً ﺃﺗَّﺨِﺬُﻩُ ﻣُﺼَﻠّﻰ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺳَﺄﻓْﻌَﻞُ » ﻓَﻐَﺪَﺍ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﻭَﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜﺮٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺑَﻌْﺪَ ﻣَﺎ ﺍﺷْﺘَﺪَّ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭُ، ﻭَﺍﺳْﺘَﺄﺫَﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﻓَﺄﺫِﻧْﺖُ ﻟَﻪُ، ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺠْﻠِﺲْ ﺣَﺘَّﻰ ﻗَﺎﻝَ : « ﺃﻳْﻦَ ﺗُﺤِﺐُّ ﺃﻥْ ﺃُﺻَﻠِّﻲَ ﻣِﻦْ ﺑَﻴْﺘِﻚَ ؟ » ﻓَﺄﺷَﺮْﺕُ ﻟَﻪُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻤَﻜَﺎﻥِ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺃُﺣِﺐُّ ﺃَﻥْ ﻳُﺼَﻠِّﻲَ ﻓِﻴﻪِ، ﻓَﻘَﺎﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ ﻓَﻜَﺒَّﺮَ ﻭَﺻَﻔَﻔْﻨَﺎ ﻭَﺭَﺍﺀَﻩُ ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﺭَﻛﻌَﺘَﻴﻦِ ﺛُﻢَّ ﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﺳَﻠَّﻤْﻨَﺎ ﺣِﻴﻦَ ﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﺤَﺒَﺴْﺘُﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﺧَﺰﻳﺮَﺓٍ ﺗُﺼْﻨَﻊُ ﻟَﻪُ، ﻓَﺴَﻤِﻊَ ﺃﻫﻞُ ﺍﻟﺪَّﺍﺭِ ﺃﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ ﻓﻲ ﺑَﻴْﺘِﻲ ﻓَﺜَﺎﺏَ ﺭِﺟﺎﻝٌ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﺣَﺘَّﻰ ﻛَﺜُﺮَ ﺍﻟﺮِّﺟَﺎﻝُ ﻓﻲ ﺍﻟﺒَﻴْﺖِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺟُﻞٌ : ﻣَﺎ ﻓَﻌَﻞَ ﻣَﺎﻟِﻚٌ ﻻ ﺃﺭَﺍﻩُ ! ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺟُﻞٌ : ﺫﻟِﻚَ ﻣُﻨَﺎﻓِﻖٌ ﻻ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻮﻟَﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ : « ﻻَ ﺗَﻘُﻞْ ﺫﻟِﻚَ، ﺃﻻَ ﺗَﺮَﺍﻩُ ﻗَﺎﻝَ : ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪ ﻳَﺒْﺘَﻐﻲ ﺑِﺬَﻟِﻚَ ﻭَﺟﻪَ ﺍﻟﻠﻪ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ » ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺍﻟﻠﻪُ ﻭﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ ﺃﻋْﻠَﻢُ ﺃﻣَّﺎ ﻧَﺤْﻦُ ﻓَﻮَﺍﻟﻠﻪِ ﻣَﺎ ﻧَﺮَﻯ ﻭُﺩَّﻩُ ﻭَﻻَ ﺣَﺪِﻳﺜَﻪُ ﺇﻻَّ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻤُﻨَﺎﻓِﻘﻴﻦَ ! ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ : « ﻓﺈﻥَّ ﺍﻟﻠﻪ ﻗَﺪْ ﺣَﺮَّﻡَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻣَﻦْ ﻗَﺎﻝَ : ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪ ﻳَﺒْﺘَﻐِﻲ ﺑﺬَﻟِﻚَ ﻭَﺟْﻪَ ﺍﻟﻠﻪ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
৬/৪২২।
ইতবান ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, যিনি বদর যুদ্ধে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে উপস্থিত ছিলেন,
তিনি বলেন, আমি আমার গোত্র বানু সালেমের নামাযে ইমামতি করতাম। আমার ও তাদের (মসজিদের) মধ্যে একটি উপত্যকা ছিল। বৃষ্টি হলে ঐ উপত্যকা পেরিয়ে তাদের মসজিদে যাওয়া আমার জন্য কষ্টকর হত। তাই আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাযির হয়ে বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি আমার দৃষ্টিশক্তিতে কমতি অনুভব করছি। (এ ছাড়া) আমার ও আমার গোত্রের মধ্যকার উপত্যকাটি বৃষ্টি হলে প্লাবিত হয়ে যায়। তখন তা পার হওয়া আমার জন্য কষ্টকর হয়। তাই আমার একান্ত আশা যে, আপনি এসে আমার ঘরের এক স্থানে নামায আদায় করবেন। আমি সে স্থানটি নামাযের স্থান রূপে নির্ধারিত করে নেব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘আচ্ছা তাই করব।’’ সুতরাং পরের দিন সূর্যের তাপ যখন বেড়ে উঠল, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বাকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আমার বাড়ীতে এলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাইলে আমি তাঁকে অনুমতি দিলাম। তিনি না বসেই আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘তোমার ঘরের কোন্ স্থানে আমার নামায পড়া তুমি পছন্দ কর?’’ আমি যে স্থানে তাঁর নামায পড়া পছন্দ করেছিলাম, তাঁকে সেই স্থানের দিকে ইশারা করে (দেখিয়ে) দিলাম। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (নামাযে) দাঁড়িয়ে তকবীর বললেন। আমরা সারিবদ্ধভাবে তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে গেলাম। তিনি দু’রাকআত নামায পড়ে সালাম ফিরালেন। তাঁর সালাম ফিরার সময় আমরাও সালাম ফিরালাম। তারপর তাঁর জন্য যে ‘খাযীর’ (চর্বি দিয়ে পাকানো আটা) প্রস্তুত করা হচ্ছিল, তা খাওয়ার জন্য তাঁকে আটকে দিলাম। ইতোমধ্যে মহল্লার লোকেরা শুনল যে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার বাড়িতে। সুতরাং তাদের কিছু লোক এসে জমায়েত হল। এমনকি বাড়িতে অনেক লোকের সমাগম হল। তাদের মধ্যে একজন বলল, ‘মালেক (ইবনে দুখাইশিন) করল কী? তাকে দেখছি না যে?’
একজন জবাব দিল, ‘সে মুনাফিক! আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালবাসে না।’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘এমন কথা বলো না। তুমি কি মনে কর না যে,
সে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের কামনায় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলেছে?’’ সে ব্যক্তি বলল, ‘আল্লাহ ও তাঁর রসূলই অধিক জানেন। তবে আল্লাহর কসম! আমরা মুনাফিকদের সাথেই তার ভালবাসা ও আলাপ-আলোচনায় তাকে দেখতে পাই।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘ নিশ্চয় আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দিয়েছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের কামনায় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
বলে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [6]
7/423 ﻭَﻋَﻦ ﻋُﻤَﺮَ ﺑﻦِ ﺍﻟﺨَﻄَّﺎﺏِ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﺪِﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﺑﺴَﺒْﻲٍ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺍﻣْﺮَﺃﺓٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺴَّﺒْﻲِ ﺗَﺴْﻌَﻰ، ﺇِﺫْ ﻭَﺟَﺪَﺕْ ﺻَﺒﻴﺎً ﻓﻲ ﺍﻟﺴَّﺒْﻲِ ﺃﺧَﺬَﺗْﻪُ ﻓَﺄﻟْﺰَﻗَﺘﻪُ ﺑِﺒَﻄْﻨِﻬَﺎ ﻓَﺄَﺭﺿَﻌَﺘْﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺃﺗَﺮَﻭْﻥَ ﻫﺬِﻩِ ﺍﻟﻤَﺮْﺃﺓَ ﻃَﺎﺭِﺣَﺔً ﻭَﻟَﺪَﻫﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ؟ » ﻗُﻠْﻨَﺎ : ﻻَ ﻭَﺍﻟﻠﻪِ . ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﻟﻠﻪُ ﺃﺭْﺣَﻢُ ﺑِﻌِﺒَﺎﺩِﻩِ ﻣِﻦْ ﻫﺬِﻩِ ﺑِﻮَﻟَﺪِﻫَﺎ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
৭/৪২৩। উমার ইবনে খাত্ত্বাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কিছু সংখ্যক বন্দী এল। তিনি দেখলেন যে, বন্দীদের মধ্যে একজন মহিলা (তার শিশুটি হারিয়ে গেলে এবং স্তনে দুধ জমে উঠলে বাচ্চার খোঁজে অস্থির হয়ে) দৌড়াদৌড়ি করছে। হঠাৎ সে বন্দীদের মধ্যে কোনো শিশু পেলে তাকে ধরে কোলে নিয়ে (দুধ পান করাতে লাগল। অতঃপর তার নিজের বাচ্চা পেয়ে গেলে তাকে বুকে-পেটে লাগিয়ে) দুধ পান করাতে লাগল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তোমরা কি মনে কর যে, এই মহিলা তার সন্তানকে আগুনে ফেলতে পারে?’’ আমরা বললাম, ‘না,
আল্লাহর কসম!’ তারপর তিনি বললেন, ‘‘এই মহিলাটি তার সন্তানের উপর যতটা দয়ালু,
আল্লাহ তার বান্দাদের উপর তার চেয়ে অধিক দয়ালু।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [7]
8/424 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻫُﺮَﻳﺮَﺓَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﻟَﻤَّﺎ ﺧَﻠَﻖَ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺨَﻠْﻖَ ﻛَﺘَﺐَ ﻓﻲ ﻛِﺘَﺎﺏٍ، ﻓَﻬُﻮَ ﻋِﻨْﺪَﻩُ ﻓَﻮﻕَ ﺍﻟﻌَﺮْﺵِ : ﺇﻥَّ ﺭَﺣْﻤَﺘِﻲ ﺗَﻐْﻠِﺐُ ﻏَﻀَﺒﻲ » . ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
৮/৪২৪। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন সৃষ্টিজগত তৈরী সম্পন্ন করলেন, তখন একটি কিতাবে লিখে রাখলেন, যা তাঁরই কাছে তাঁর আরশের উপর রয়েছে, ‘‘অবশ্যই আমার রহমত আমার গযব অপেক্ষা অগ্রগামী।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [8]
9/425 ﻭَﻋَﻨﻪُ، ﻗَﺎﻝَ : ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : « ﺟَﻌَﻞَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﺔَ ﻣِﺌَﺔَ ﺟُﺰْﺀٍ، ﻓَﺄﻣْﺴَﻚَ ﻋِﻨْﺪَﻩُ ﺗِﺴْﻌَﺔً ﻭَﺗِﺴْﻌِﻴﻦَ، ﻭَﺃﻧْﺰَﻝَ ﻓﻲ ﺍﻷﺭْﺽِ ﺟُﺰْﺀﺍً ﻭَﺍﺣِﺪﺍً، ﻓَﻤِﻦْ ﺫﻟِﻚَ ﺍﻟﺠُﺰﺀِ ﻳَﺘَﺮَﺍﺣَﻢُ ﺍﻟﺨَﻼﺋِﻖُ، ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﺮْﻓَﻊَ ﺍﻟﺪَّﺍﺑّﺔُ ﺣَﺎﻓِﺮَﻫَﺎ ﻋَﻦْ ﻭَﻟَﺪِﻫَﺎ ﺧَﺸْﻴَﺔَ ﺃﻥْ ﺗُﺼِﻴﺒَﻪُ » .
ﻭَﻓﻲ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔٍ : « ﺇﻥّ ﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻣﺌَﺔَ ﺭَﺣﻤَﺔٍ، ﺃﻧْﺰَﻝَ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﺭَﺣْﻤَﺔً ﻭَﺍﺣِﺪَﺓً ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺠِﻦِّ ﻭَﺍﻹﻧﺲِ ﻭَﺍﻟﺒﻬﺎﺋِﻢِ ﻭَﺍﻟﻬَﻮﺍﻡّ، ﻓَﺒِﻬَﺎ ﻳَﺘَﻌَﺎﻃَﻔُﻮﻥَ، ﻭﺑِﻬَﺎ ﻳَﺘَﺮَﺍﺣَﻤُﻮﻥَ، ﻭﺑِﻬَﺎ ﺗَﻌْﻄِﻒُ ﺍﻟﻮَﺣْﺶُ ﻋَﻠَﻰ ﻭَﻟَﺪِﻫَﺎ، ﻭَﺃﺧَّﺮَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﺗِﺴْﻌﺎً ﻭَﺗِﺴْﻌﻴﻦَ ﺭَﺣْﻤَﺔً ﻳﺮْﺣَﻢُ ﺑِﻬَﺎ ﻋِﺒَﺎﺩَﻩُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻘِﻴَﺎﻣَﺔ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ .
ﻭَﺭَﻭَﺍﻩُ ﻣُﺴﻠِﻢٌ ﺃَﻳﻀﺎً ﻣِﻦْ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔِ ﺳَﻠْﻤَﺎﻥَ ﺍﻟﻔَﺎﺭِﺳﻲِّ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺇﻥَّ ﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻣِﺌَﺔَ ﺭَﺣْﻤَﺔٍ ﻓَﻤِﻨْﻬَﺎ ﺭَﺣْﻤَﺔٌ ﻳَﺘَﺮَﺍﺣﻢُ ﺑِﻬَﺎ ﺍﻟﺨَﻠْﻖُ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ، ﻭَﺗِﺴْﻊٌ ﻭَﺗِﺴﻌُﻮﻥَ ﻟِﻴَﻮﻡِ ﺍﻟﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ » .
ﻭَﻓﻲ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔٍ : « ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﺧَﻠَﻖَ ﻳَﻮْﻡَ ﺧَﻠَﻖَ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﺍﻷَﺭْﺽَ ﻣَﺌَﺔَ ﺭَﺣْﻤَﺔٍ ﻛُﻞُّ ﺭَﺣْﻤَﺔٍ ﻃِﺒَﺎﻕُ ﻣَﺎ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺴَّﻤﺎﺀِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻷﺭْﺽِ، ﻓَﺠَﻌَﻞَ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﻓﻲ ﺍﻷَﺭﺽِ ﺭَﺣْﻤَﺔً ﻓَﺒِﻬَﺎ ﺗَﻌْﻄﻒُ ﺍﻟﻮَﺍﻟِﺪَﺓُ ﻋَﻠَﻰ ﻭَﻟَﺪِﻫَﺎ، ﻭَﺍﻟﻮَﺣْﺶُ ﻭَﺍﻟﻄَّﻴْﺮُ ﺑَﻌْﻀُﻬَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺑَﻌْﺾ، ﻓَﺈﺫﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻮْﻡُ ﺍﻟﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﺃَﻛﻤَﻠَﻬَﺎ ﺑِﻬﺬِﻩِ ﺍﻟﺮَّﺣﻤَﺔِ » .
৯/৪২৫। উক্ত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘আল্লাহ রহমতকে একশ ভাগ করেছেন। তার মধ্যে নিরানববই ভাগ তিনি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। আর পৃথিবীতে একভাগ অবতীর্ণ করেছেন। ঐ এক ভাগের কারণেই সৃষ্টজগৎ একে অন্যের উপর দয়া করে। এমনকি জন্তু তার বাচ্চার উপর থেকে পা তুলে নেয় এই ভয়ে যে, সে ব্যথা পাবে।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহর একশটি রহমত আছে, যার মধ্য হতে একটি মাত্র রহমত তিনি মানব-দানব, পশু ও কীটপতঙ্গের মধ্যে অবতীর্ণ করেছেন। ঐ এক ভাগের কারণেই (সৃষ্টজীব) একে অপরকে মায়া করে, তার কারণেই একে অন্যকে দয়া করে এবং তার কারণেই হিংস্র জন্তুরা তাদের সন্তানকে মায়া করে থাকে। বাকী নিরানববইটি আল্লাহ আখেরাতের জন্য রেখে দিয়েছেন, যার দ্বারা তিনি কিয়ামতের দিন আপন বান্দাদের উপর রহম করবেন।’’ (বুখারী ও মুসলিম)
এ হাদীসটিকে ইমাম মুসলিমও সালমান ফারেসী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলার একশটি রহমত আছে, যার মধ্য হতে মাত্র একটির কারণে সৃষ্টিজগৎ একে অন্যের প্রতি দয়া প্রদর্শন করে। আর নিরানব্বইটি (রহমত) কিয়ামতের দিনের জন্য রয়েছে।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা আসমান যমীন সৃষ্টি করার দিন একশটি রহমত সৃষ্টি করলেন। প্রতিটি রহমত আসমান ও যমীনের মধ্যস্থল পরিপূর্ণ (বিশাল)। অতঃপর তিনি তার মধ্য হতে একটি রহমত পৃথিবীতে অবতীর্ণ করলেন। ঐ একটির কারণেই মা তার সন্তানকে মায়া করে এবং হিংস্র প্রাণী ও পাখীরা একে অন্যের উপর দয়া করে থাকে। অতঃপর যখন কিয়ামতের দিন হবে, তখন আল্লাহ এই রহমত দ্বারা সংখ্যা পূর্ণ করবেন।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [9]
10/426 ﻭَﻋَﻨﻪُ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ ﻓِﻴﻤَﺎ ﻳَﺤﻜِﻲ ﻋَﻦ ﺭَﺑَّﻪِ ﺗَﺒَﺎﺭَﻙَ ﻭَﺗَﻌَﺎﻟَﻰ، ﻗَﺎﻝ : « ﺃﺫْﻧَﺐَ ﻋَﺒْﺪٌ ﺫَﻧْﺒﺎً، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺍَﻟﻠﻬﻢ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻲ ﺫَﻧْﺒِﻲ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻠﻪ ﺗَﺒَﺎﺭﻙَ ﻭَﺗَﻌَﺎﻟَﻰ : ﺃﺫﻧَﺐَ ﻋَﺒﺪِﻱ ﺫَﻧﺒﺎً، ﻓَﻌَﻠِﻢَ ﺃﻥَّ ﻟَﻪُ ﺭَﺑّﺎً ﻳَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﺬَّﻧْﺐَ، ﻭَﻳَﺄْﺧُﺬُ ﺑِﺎﻟﺬَّﻧْﺐِ، ﺛُﻢَّ ﻋَﺎﺩَ ﻓَﺄﺫْﻧَﺐَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃﻱْ ﺭَﺏِّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻲ ﺫَﻧْﺒﻲ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺗَﺒَﺎﺭَﻙَ ﻭَﺗَﻌَﺎﻟَﻰ : ﺃﺫﻧَﺐَ ﻋﺒﺪِﻱ ﺫَﻧﺒﺎً، ﻓَﻌَﻠِﻢَ ﺃﻥَّ ﻟَﻪُ ﺭَﺑّﺎً، ﻳَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﺬَّﻧْﺐَ، ﻭَﻳَﺄْﺧُﺬُ ﺑﺎﻟﺬَّﻧْﺐِ، ﻗَﺪْ ﻏَﻔَﺮْﺕُ ﻟِﻌَﺒْﺪِﻱ ﻓَﻠْﻴَﻔْﻌَﻞْ ﻣَﺎ ﺷَﺎﺀَ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
১০/৪২৬। উক্ত রাবী থেকেই বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করেন, কোন বান্দা একটি পাপ করে বলল, ‘হে প্রভু! তুমি আমার পাপ ক্ষমা কর।’ তখন আল্লাহ তাবারাকা অতা‘আলা বলেন, ‘আমার বান্দা একটি পাপ করেছে, অতঃপর সে জেনেছে যে, তার একজন প্রভু আছেন, যিনি পাপ ক্ষমা করেন অথবা তা দিয়ে পাকড়াও করেন।’ অতঃপর সে আবার পাপ করল এবং বলল, ‘হে প্রভু! তুমি আমার পাপ ক্ষমা কর।’
তখন আল্লাহ তাবারাকা অতা‘আলা বলেন, ‘আমার বান্দা একটি পাপ করেছে, অতঃপর সে জেনেছে যে, তার একজন প্রভু আছেন,
যিনি পাপ ক্ষমা করেন অথবা তা দিয়ে পাকড়াও করেন। আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করলাম। সুতরাং সে যা ইচ্ছা করুক।’
(বুখারী ও মুসলিম) [10]
*‘সে যা ইচ্ছা করুক’ কথার অর্থ হল, সে যখন এইরূপ করে; অর্থাৎ পাপ করে সাথে সাথে তওবা করে এবং আমি তাকে মাফ করে দেই, তখন সে যা ইচ্ছা করুক, তার কোন চিন্তা নেই। যেহেতু তওবা পূর্বকৃত পাপ মোচন করে দেয়।
11/427 ﻭَﻋَﻨﻪُ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﻭﺍﻟَّﺬِﻱ ﻧَﻔْﺴِﻲ ﺑِﻴَﺪِﻩِ، ﻟَﻮْ ﻟَﻢْ ﺗُﺬْﻧِﺒُﻮﺍ، ﻟَﺬَﻫَﺐَ ﺍﻟﻠﻪ ﺑِﻜُﻢْ، ﻭَﺟَﺎﺀَ ﺑِﻘَﻮﻡٍ ﻳُﺬْﻧِﺒُﻮﻥَ، ﻓَﻴَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻭﻥَ ﺍﻟﻠﻪَ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ، ﻓَﻴَﻐْﻔِﺮُ ﻟَﻬُﻢْ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১১/৪২৭। উক্ত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু‘আনহু থেকেই বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘সেই মহান সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ আছে! যদি তোমরা পাপ না কর,
তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে অপসারিত করবেন এবং এমন জাতির আবির্ভাব ঘটাবেন যারা পাপ করবে, অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইবে। আর তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।’’ (মুসলিম) [11]
12/428 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﺃَﻳُّﻮﺏَ ﺧَﺎﻟِﺪِ ﺑﻦِ ﺯَﻳﺪٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : « ﻟَﻮْﻻَ ﺃﻧَّﻜُﻢْ ﺗُﺬْﻧِﺒُﻮﻥَ، ﻟَﺨَﻠَﻖَ ﺍﻟﻠﻪ ﺧَﻠْﻘﺎً ﻳُﺬْﻧِﺒُﻮﻥَ، ﻓَﻴَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮﻭﻥَ، ﻓَﻴَﻐْﻔِﺮُ ﻟَﻬُﻢْ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১২/৪২৮। আবূ আইয়ূব খালেদ ইবনে যায়দ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘তোমরা যদি গুনাহ না কর, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা এমন জাতি সৃষ্টি করবেন, যারা গুনাহ করবে তারপর তারা (আল্লাহর কাছে) ক্ষমা চাইবে। আর তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।’’ (মুসলিম) [12]
13/429 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻫُﺮَﻳﺮَﺓَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨَّﺎ ﻗُﻌُﻮﺩﺍً ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻣَﻌَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ ﻭَﻋُﻤَﺮُ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ، ﻓﻲ ﻧَﻔَﺮٍ ﻓَﻘَﺎﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﻣِﻦْ ﺑَﻴْﻦِ ﺃﻇْﻬُﺮِﻧَﺎ، ﻓَﺄﺑْﻄَﺄَ ﻋَﻠَﻴْﻨَﺎ ﻓَﺨَﺸِﻴﻨَﺎ ﺃﻥْ ﻳُﻘﺘَﻄَﻊَ ﺩُﻭﻧَﻨَﺎ، ﻓَﻔَﺰِﻋْﻨَﺎ ﻓَﻘُﻤْﻨَﺎ ﻓَﻜُﻨْﺖُ ﺃﻭَّﻝَ ﻣَﻦْ ﻓَﺰِﻉَ ﻓَﺨَﺮَﺟْﺖُ ﺃﺑْﺘَﻐِﻲ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﺣَﺘَّﻰ ﺃﺗَﻴْﺖُ ﺣَﺎﺋِﻄﺎً ﻟﻸﻧْﺼَﺎﺭِ ... ﻭَﺫَﻛَﺮَ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚَ ﺑِﻄُﻮﻟِﻪِ ﺇِﻟَﻰ ﻗﻮﻟﻪ : ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺍﺫﻫَﺐْ ﻓَﻤَﻦ ﻟَﻘِﻴﺖَ ﻭَﺭَﺍﺀَ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺤَﺎﺋِﻂِ ﻳَﺸْﻬَﺪُ ﺃﻥْ ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪ، ﻣُﺴْﺘَﻴﻘِﻨﺎً ﺑِﻬَﺎ ﻗَﻠﺒُﻪُ ﻓَﺒَﺸِّﺮْﻩُ ﺑِﺎﻟﺠَﻨَّﺔِ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১৩/৪২৯। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বসেছিলাম। আমাদের সঙ্গে আবূ বাকর ও উমার (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা)ও লোকদের একটি দলে উপস্থিত ছিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্য থেকে উঠে (কোথাও) গেলেন। তারপর তিনি আমাদের নিকট ফিরে আসতে বিলম্ব করলেন। সুতরাং আমরা ভয় করলাম যে, আমাদের অবর্তমানে তিনি (শত্রু) কবলিত না হন। অতঃপর আমরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে (সভা থেকে) উঠে গেলাম। সর্বপ্রথম আমিই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। সুতরাং আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খোঁজে বের হলাম। এমনকি শেষ পর্যন্ত এক আনসারীর বাগানে এলাম। (অতঃপর) তিনি দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করলেন, যাতে তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তুমি যাও! অতঃপর (এ বাগানের বাইরে) যার সাথেই তোমার সাক্ষাৎ ঘটবে, যে হৃদয়ের দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর সাক্ষ্য দেবে, তাকে তুমি জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে দাও।’’ (মুসলিম) [13]
14/430 ﻭَﻋَﻦ ﻋَﺒﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑﻦِ ﻋَﻤﺮِﻭ ﺑﻦِ ﺍﻟﻌَﺎﺹِ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ : ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒﻲَّ ﷺ ﺗَﻼَ ﻗَﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ - ﻋﺰ ﻭﺟﻞ - ﻓﻲ ﺇِﺑﺮَﺍﻫِﻴﻢَ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ : ﴿ ﺭَﺏِّ ﺇِﻧَّﻬُﻦَّ ﺃَﺿۡﻠَﻠۡﻦَ ﻛَﺜِﻴﺮٗﺍ ﻣِّﻦَ ﭐﻟﻨَّﺎﺱِۖ ﻓَﻤَﻦ ﺗَﺒِﻌَﻨِﻲ ﻓَﺈِﻧَّﻪُۥ ﻣِﻨِّﻲۖ ﻭَﻣَﻦۡ ﻋَﺼَﺎﻧِﻲ ﻓَﺈِﻧَّﻚَ ﻏَﻔُﻮﺭٞ ﺭَّﺣِﻴﻢٞ ٣٦ ﴾ [ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ : ٣٦ ] ﺍﻵﻳﺔ، ﻭﻗَﻮﻝَ ﻋِﻴﺴَﻰ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ : ﴿ ﺇِﻥ ﺗُﻌَﺬِّﺑۡﻬُﻢۡ ﻓَﺈِﻧَّﻬُﻢۡ ﻋِﺒَﺎﺩُﻙَۖ ﻭَﺇِﻥ ﺗَﻐۡﻔِﺮۡ ﻟَﻬُﻢۡ ﻓَﺈِﻧَّﻚَ ﺃَﻧﺖَ ﭐﻟۡﻌَﺰِﻳﺰُ ﭐﻟۡﺤَﻜِﻴﻢُ ١١٨ ﴾ [ ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ : ١١٨ ] ﻓَﺮَﻓَﻊَ ﻳَﺪَﻳﻪِ ﻭَﻗﺎﻝَ : « ﺍَﻟﻠﻬﻢ ﺃُﻣّﺘﻲ ﺃُﻣّﺘﻲ » ﻭﺑَﻜَﻰ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻠﻪ - ﻋﺰ ﻭﺟﻞ :- « ﻳَﺎ ﺟِﺒْﺮﻳﻞُ، ﺍﺫْﻫَﺐْ ﺇِﻟَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ - ﻭَﺭَﺑُّﻚَ ﺃﻋْﻠَﻢُ - ﻓَﺴَﻠْﻪُ ﻣَﺎ ﻳُﺒْﻜِﻴﻪِ ؟ » ﻓَﺄﺗَﺎﻩُ ﺟﺒﺮﻳﻞُ، ﻓَﺄﺧْﺒَﺮَﻩُ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ، ﺑِﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ - ﻭَﻫُﻮَ ﺃﻋْﻠَﻢُ - ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ : « ﻳَﺎ ﺟِﺒﺮﻳﻞُ، ﺍﺫْﻫَﺐْ ﺇِﻟَﻰ ﻣُﺤَﻤّﺪٍ، ﻓَﻘُﻞْ : ﺇﻧَّﺎ ﺳَﻨُﺮْﺿِﻴﻚَ ﻓﻲ ﺃُﻣّﺘِﻚَ ﻭَﻻَ ﻧَﺴُﻮﺀﻙَ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১৪/৪৩০। আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আমর ইবনুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইব্রাহীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ব্যাপারে আল্লাহর এ বাণী পাঠ করলেন, ‘‘হে আমার প্রতিপালক! এসব প্রতিমা বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে;
সুতরাং যে আমার অনুসরণ করবে সে আমার দলভুক্ত, কিন্তু কেউ আমার অবাধ্য হলে তুমি তো চরম ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’’ (সূরা ইব্রাহীম ৩৬) এবং ঈসা আলাইহিস সালাম-এর উক্তি (এ আয়াতটি পাঠ করলেন), ‘‘যদি তুমি তাদেরকে শাস্তি প্রদান কর, তবে তারা তোমার বান্দা। আর যদি তুমি তাদেরকে ক্ষমা কর, তবে তুমি অবশ্যই প্রবল পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।’’ (সূরা মায়েদাহ ১১৮ আয়াত) অতঃপর তিনি তাঁর হাত দু’খানি উঠিয়ে বললেন, ‘‘হে আল্লাহ! আমার উম্মত,
আমার উম্মত।’’ অতঃপর তিনি কাঁদতে লাগলেন। আল্লাহ আয্যা অজাল্ল বললেন, ‘হে জিব্রীল! তুমি মুহাম্মাদের নিকট যাও---আর তোমার রব বেশী জানেন---তারপর তাকে কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা কর?’
সুতরাং জিব্রীল তাঁর নিকট এলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে সে কথা জানালেন, যা তিনি (তাঁর উম্মত সম্পর্কে) বলেছিলেন---আর আল্লাহ তা অধিক জানেন। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বললেন, ‘হে জিব্রীল! তুমি (পুনরায়) মুহাম্মাদের কাছে যাও এবং বল,
আমি তোমার উম্মতের ব্যাপারে তোমাকে সন্তুষ্ট করে দেব এবং অসন্তুষ্ট করব না।’
(মুসলিম) [14]
15/431 ﻭَﻋَﻦ ﻣُﻌَﺎﺫِ ﺑﻦِ ﺟَﺒَﻞٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨْﺖُ ﺭِﺩْﻑَ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ ﻋَﻠَﻰ ﺣِﻤَﺎﺭٍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﻳَﺎ ﻣُﻌَﺎﺫُ، ﻫَﻞْ ﺗَﺪْﺭِﻱ ﻣَﺎ ﺣَﻖُّ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻰ ﻋِﺒَﺎﺩِﻩِ ؟ ﻭَﻣَﺎ ﺣَﻖُّ ﺍﻟﻌِﺒَﺎﺩِ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠﻪ ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ ﺃﻋْﻠَﻢُ . ﻗَﺎﻝَ : « ﻓﺈﻥَّ ﺣَﻖَّ ﺍﻟﻠﻪِ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻌِﺒَﺎﺩِ ﺃﻥْ ﻳَﻌْﺒُﺪُﻭﻩُ، ﻭَﻻَ ﻳُﺸْﺮِﻛُﻮﺍ ﺑِﻪِ ﺷَﻴﺌﺎً، ﻭَﺣَﻖَّ ﺍﻟﻌِﺒَﺎﺩِ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠﻪِ ﺃﻥْ ﻻَ ﻳُﻌَﺬِّﺏَ ﻣَﻦْ ﻻ ﻳُﺸْﺮِﻙُ ﺑِﻪِ ﺷَﻴﺌﺎً » . ﻓﻘﻠﺖُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪ، ﺃﻓَﻼ ﺃُﺑَﺸِّﺮُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﻻَ ﺗُﺒَﺸِّﺮْﻫُﻢْ ﻓَﻴَﺘَّﻜِﻠُﻮﺍ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
১৫/৪৩১। মু‘আয ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি গাধার উপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে সওয়ার ছিলাম। তিনি বললেন, ‘‘হে মু‘আয! তুমি কি জানো, বান্দার উপর আল্লাহর হক কী এবং আল্লাহর উপর বান্দার হক কী?’’ আমি বললাম, ‘আল্লাহ ও তাঁর রসূলই অধিক জানেন।’ তিনি বললেন, ‘‘বান্দার উপর আল্লাহর হক এই যে, সে তাঁরই ইবাদত করবে,
এতে তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না। আর আল্লাহর উপর বান্দার হক এই যে,
যে ব্যক্তি তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না তিনি তাকে আযাব দেবেন না।’’
অতঃপর আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি কি লোকদেরকে (এ) সুসংবাদ দেব না?’
তিনি বললেন, ‘‘তাদেরকে সুসংবাদ দিও না। কেননা, তারা (এরই উপর) ভরসা করে বসবে।
(বুখারী ও মুসলিম) [15]
16/432 ﻭَﻋَﻦِ ﺍﻟﺒَﺮَﺍﺀِ ﺑﻦِ ﻋَﺎﺯِﺏٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ
ﷺ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺍﻟﻤُﺴْﻠِﻢُ ﺇِﺫَﺍ ﺳُﺌِﻞَ ﻓﻲ ﺍﻟﻘَﺒْﺮِ ﻳَﺸْﻬَﺪُ ﺃﻥْ ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭَﺃﻥّ ﻣُﺤَﻤّﺪﺍً ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪ، ﻓَﺬَﻟِﻚَ ﻗَﻮﻟُﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ : ﴿ ﻳُﺜَﺒِّﺖُ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﺑِﭑﻟۡﻘَﻮۡﻝِ ﭐﻟﺜَّﺎﺑِﺖِ ﻓِﻲ ﭐﻟۡﺤَﻴَﻮٰﺓِ ﭐﻟﺪُّﻧۡﻴَﺎ ﻭَﻓِﻲ ﭐﻟۡﺄٓﺧِﺮَﺓِۖ ﴾ [ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ : ٢٧ ] » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
১৬/৪৩২। বারা ইবনে আযিব রাদিয়াল্লাহু‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মুসলিমকে যখন কবরে প্রশ্ন করা হয়, তখন সে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল। এই অর্থ রয়েছে আল্লাহ তা‘আলার এই বাণীতে, ‘যারা মু’মিন তাদেরকে আল্লাহ সুপ্রতিষ্ঠিত বাণী দ্বারা দুনিয়া ও আখেরাতের জীবনে প্রতিষ্ঠা দান করেন।’’
(সূরা ইব্রাহীম ১৭ আয়াত) (বুখারী ও মুসলিম) [16]
17/433 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﻧَﺲٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻋَﻦ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺇﻥّ ﺍﻟﻜَﺎﻓِﺮَ ﺇِﺫَﺍ ﻋَﻤِﻞَ ﺣَﺴَﻨَﺔً، ﺃُﻃﻌِﻢَ ﺑِﻬَﺎ ﻃُﻌْﻤَﺔً ﻣِﻦَ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ، ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﺍﻟﻤُﺆْﻣِﻦُ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻳَﺪَّﺧِﺮُ ﻟَﻪُ ﺣَﺴَﻨَﺎﺗِﻪِ ﻓﻲ ﺍﻵﺧِﺮَﺓِ، ﻭَﻳُﻌْﻘِﺒُﻪُ ﺭِﺯْﻗﺎً ﻓﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻃَﺎﻋَﺘِﻪِ » .
ﻭَﻓﻲ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔٍ : « ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠﻪ ﻻَ ﻳَﻈْﻠِﻢُ ﻣُﺆْﻣِﻨﺎً ﺣَﺴَﻨَﺔً ﻳُﻌْﻄَﻰ ﺑِﻬَﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ، ﻭَﻳُﺠْﺰَﻯ ﺑِﻬَﺎ ﻓﻲ ﺍﻵﺧِﺮَﺓِ . ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﺍﻟﻜَﺎﻓِﺮُ ﻓَﻴُﻄْﻌَﻢُ ﺑِﺤَﺴَﻨَﺎﺕِ ﻣَﺎ ﻋَﻤِﻞَ ﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ، ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﺃﻓْﻀَﻰ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻵﺧﺮَﺓِ، ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦْ ﻟَﻪُ ﺣَﺴَﻨَﺔٌ ﻳُﺠْﺰَﻯ ﺑِﻬَﺎ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১৭/৪৩৩। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কাফের যখন দুনিয়াতে কোনো পুণ্য কাজ করে, তখন বিনিময়ে তাকে দুনিয়ার (কিছু আনন্দ/খাবার জাতীয়) উপভোগ করতে দেওয়া হয়। (আর আখেরাতে সে এর কিছুই প্রতিদান পাবে না)। কিন্তু মু’মিনের জন্য আল্লাহ তা’আলা আখেরাতে তার প্রতিদানকে সঞ্চিত করে রাখেন এবং দুনিয়াতে তিনি তাকে জীবিকা দেন তাঁর আনুগত্যের বিনিময়ে।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘মহান আল্লাহ কোন মু’মিনের উপর তার নেকীর ব্যাপারে যুলুম করেন না। তাকে তার প্রতিদান দুনিয়াতেও দেওয়া হয় এবং আখেরাতেও দেওয়া হবে। কিন্তু কাফেরকে ভাল কাজের বিনিময়--যা সে আল্লাহর জন্য করে--দুনিয়াতেই দিয়ে দেওয়া হয়। এমন কি যখন সে আখেরাতে পাড়ি দেবে, তখন তার এমন কোনো পুণ্য থাকবে না যে, তার বিনিময়ে তাকে কিছু (পুরস্কার) দেওয়া যাবে।’’
(মুসলিম) [17]
18/434 ﻭَﻋَﻦ ﺟَﺎﺑِﺮٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ
ﷺ : « ﻣَﺜَﻞُ ﺍﻟﺼَّﻠَﻮَﺍﺕِ ﺍﻟﺨَﻤْﺲِ ﻛَﻤَﺜَﻞِ ﻧَﻬْﺮٍ ﺟَﺎﺭٍ ﻏَﻤْﺮٍ ﻋَﻠَﻰ ﺑَﺎﺏِ ﺃﺣَﺪِﻛُﻢْ ﻳَﻐْﺘَﺴِﻞُ ﻣِﻨْﻪُ ﻛُﻞَّ ﻳَﻮْﻡ ﺧَﻤْﺲَ ﻣَﺮَّﺍﺕ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১৮/৪৩৪। জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘পাঁচ ওয়াক্তের নামাযের উদাহরণ প্রচুর পানিতে পরিপূর্ণ ঐ নদীর মত, যা তোমাদের কারো দুয়ারের (সামনে বয়ে) প্রবাহিত হয়, যাতে সে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে।’’ (মুসলিম)
[18]
19/435 ﻭَﻋَﻦِ ﺍﺑﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ، ﻗَﺎﻝَ : ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : « ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﺭَﺟُﻞٍ ﻣُﺴْﻠِﻢٍ ﻳَﻤُﻮﺕُ، ﻓَﻴﻘُﻮﻡُ ﻋَﻠَﻰ ﺟَﻨَﺎﺯَﺗﻪِ ﺃﺭْﺑَﻌُﻮﻥَ ﺭَﺟُﻼً ﻻَ ﻳُﺸْﺮِﻛُﻮﻥَ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﺷَﻴﺌﺎً، ﺇﻻَّ ﺷَﻔَّﻌَﻬُﻢُ ﺍﻟﻠﻪُ ﻓِﻴﻪِ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১৯/৪৩৫। ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু
‘আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘যে কোনো মুসলিম মারা যায় আর তার জানাযায় এমন চল্লিশজন লোক শরীক হয়,
যারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে না। নিশ্চয় আল্লাহ তার ব্যাপারে তাদের সুপারিশ কবূল করেন।’’ (মুসলিম) [19]
20/436 ﻭَﻋَﻦِ ﺍﺑﻦِ ﻣَﺴﻌُﻮﺩٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨَّﺎ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﻓﻲ ﻗُﺒَّﺔ ﻧَﺤْﻮﺍً ﻣِﻦْ ﺃﺭﺑَﻌِﻴﻦَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺃﺗَﺮْﺿَﻮﻥَ ﺃﻥْ ﺗَﻜُﻮﻧُﻮﺍ ﺭُﺑُﻊَ ﺃﻫْﻞِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ؟ » ﻗُﻠْﻨَﺎ : ﻧَﻌَﻢْ . ﻗَﺎﻝَ : « ﺃﺗَﺮْﺿَﻮْﻥَ ﺃﻥْ ﺗَﻜُﻮﻧُﻮﺍ ﺛُﻠُﺚَ ﺃﻫﻞِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ؟ » ﻗُﻠْﻨَﺎ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻭَﺍﻟَّﺬِﻱ ﻧَﻔْﺲُ ﻣُﺤَﻤّﺪٍ ﺑﻴَﺪِﻩِ، ﺇﻧِّﻲ ﻷَﺭْﺟُﻮ ﺃﻥْ ﺗَﻜُﻮﻧُﻮﺍ ﻧِﺼْﻒَ ﺃﻫْﻞِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﺃﻥَّ ﺍﻟﺠﻨَّﺔَ ﻻَ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻬَﺎ ﺇﻻَّ ﻧَﻔْﺲٌ ﻣُﺴْﻠِﻤَﺔٌ، ﻭﻣَﺎ ﺃﻧْﺘُﻢ ﻓﻲ ﺃﻫْﻞِ ﺍﻟﺸِّﺮﻙِ ﺇﻻَّ ﻛَﺎﻟﺸَّﻌْﺮَﺓِ ﺍﻟﺒَﻴْﻀَﺎﺀِ ﻓِﻲ ﺟِﻠﺪِ ﺍﻟﺜَّﻮﺭِ ﺍﻷَﺳْﻮَﺩِ، ﺃَﻭْ ﻛَﺎﻟﺸَّﻌْﺮَﺓِ ﺍﻟﺴَّﻮﺩَﺍﺀِ ﻓﻲ ﺟِﻠﺪِ ﺍﻟﺜَّﻮﺭِ ﺍﻷﺣْﻤَﺮ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
২০/৪৩৬। ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমরা প্রায় চল্লিশ জন মানুষ রাসূলুললাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে একটি তাঁবুতে ছিলাম। একসময় তিনি বললেন, ‘‘তোমরা কি পছন্দ কর যে, তোমরা জান্নাতবাসীদের এক চতুর্থাংশ হবে?’’ আমরা বললাম, ‘জী হ্যাঁ।’
তিনি বললেন, ‘‘তোমরা কি জান্নাতবাসীদের এক তৃতীয়াংশ হতে পছন্দ কর?’’ আমরা বললাম, ‘জী হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘‘তাঁর শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ আছে, আমি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশী যে,
জান্নাতবাসীদের অর্ধেক তোমরাই হবে। এটা এ জন্য যে, শুধুমাত্র মুসলিম প্রাণ ছাড়া অন্য কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আর মুশরিকদের তুলনায় তোমরা এরূপ, যেরূপ কালো বলদের গায়ে (একটি) সাদা লোম অথবা লাল বলদের গায়ে (একটি) কালো লোম।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [20]
21/437 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺍﻷَﺷﻌَﺮِﻱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻮْﻡُ ﺍﻟﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﺩَﻓَﻊَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺇِﻟَﻰ ﻛُﻞِّ ﻣُﺴْﻠِﻢ ﻳَﻬُﻮﺩِﻳﺎً ﺃَﻭْ ﻧَﺼْﺮَﺍﻧِﻴﺎً، ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ : ﻫَﺬَﺍ ﻓِﻜَﺎﻛُﻚَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ » .
ﻭَﻓِﻲ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔٍ ﻋَﻨْﻪُ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻳَﺠِﻲﺀُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻧَﺎﺱٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻤُﺴْﻠِﻤﻴﻦَ ﺑِﺬُﻧُﻮﺏٍ ﺃَﻣْﺜَﺎﻝ ﺍﻟﺠِﺒَﺎﻝِ ﻳَﻐْﻔِﺮُﻫَﺎ ﺍﻟﻠﻪ ﻟَﻬُﻢْ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
২১/৪৩৭। আবূ মূসা আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ প্রত্যেক মুসলিমকে একজন ইয়াহুদী অথবা খ্রিষ্টানকে দিয়ে বলবেন, ‘এই তোমার জাহান্নাম থেকে বাঁচার মুক্তিপণ।’’
উক্ত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই অন্য এক বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কিয়ামতের দিন কিছু সংখ্যক মুসলিম পাহাড় সম পাপ নিয়ে উপস্থিত হবে, আল্লাহ তা (সবই) তাদের জন্য ক্ষমা করে দেবেন।’’
(মুসলিম) [21]
* ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ প্রত্যেক মুসলিমকে একজন ইয়াহুদী অথবা খৃষ্টানকে দিয়ে বলবেন, এই তোমার জাহান্নাম থেকে বাঁচার মুক্তিপণ।’ এ কথার অর্থ আবূ হুরাইরার হাদীসে বর্ণিত হয়েছে; ‘প্রত্যেকের জন্য বেহেশ্তে একটি নির্দিষ্ট স্থান আছে এবং জাহান্নামেও আছে। সুতরাং মু’মিন যখন বেহেশ্তে প্রবেশ করবে, তখন জাহান্নামে তার স্থলাভিষিক্ত হবে কাফের। যেহেতু সে তার কুফরীর কারণে তার উপযুক্ত। আর
‘মুক্তিপণ’ অর্থ এই যে, তুমি জাহান্নামের সম্মুখীন ছিলে; কিন্তু এটি হল তোমার মুক্তির বিনিময়। যেহেতু মহান আল্লাহ জাহান্নাম ভরতি করার জন্য একটি সংখ্যা নির্ধারিত রেখেছেন। সুতরাং তারা যখন তাদের কুফরী ও পাপের কারণে সেখানে প্রবেশ করবে, তখন তারা হবে মু’মিনদের
‘মুক্তিপণ।’ আর আল্লাহই অধিক জানেন।
22/438 ﻭَﻋَﻦِ ﺍﺑﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ، ﻗَﺎﻝَ : ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : « ﻳُﺪْﻧَﻰ ﺍﻟﻤُﺆْﻣِﻦُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻘِﻴَﺎﻣَﺔ ﻣِﻦْ ﺭَﺑِّﻪِ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻀَﻊَ ﻛَﻨَﻔَﻪُ ﻋَﻠَﻴﻪِ، ﻓَﻴُﻘَﺮِّﺭُﻩُ ﺑﺬُﻧُﻮﺑِﻪِ، ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ : ﺃَﺗَﻌﺮِﻑُ ﺫَﻧْﺐَ ﻛَﺬَﺍ ؟ ﺃﺗَﻌﺮِﻑُ ﺫَﻧْﺐَ ﻛَﺬَﺍ ؟ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ : ﺭَﺏِّ ﺃﻋْﺮِﻑُ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺈﻧِّﻲ ﻗَﺪْ ﺳَﺘَﺮْﺗُﻬَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴﺎ، ﻭَﺃﻧَﺎ ﺃﻏْﻔِﺮُﻫَﺎ ﻟَﻚَ ﺍﻟﻴَﻮﻡَ، ﻓَﻴُﻌْﻄَﻰ ﺻَﺤِﻴﻔَﺔَ ﺣَﺴَﻨَﺎﺗِﻪِ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
২২/৪৩৮। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘কিয়ামতের দিন ঈমানদারকে রাববুল আলামীনের এত নিকটে নিয়ে আনা হবে যে,
আল্লাহ তা‘আলা তার উপর নিজ পর্দা রেখে তার পাপসমূহের সবীকারোক্তি আদায় করে নেবেন। তাকে জিজ্ঞেস করবেন, ‘এই পাপ তুমি জান কি? এই পাপ চিন কি?’ মু’মিন বলবে, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি জানি।’
তিনি বলবেন, ‘আমি পৃথিবীতে তোমার পাপকে গোপন রেখেছি, আর আজ তা তোমার জন্য ক্ষমা করে দিচ্ছি।’ অতঃপর তাকে তার নেক আমলের আমলনামা দেওয়া হবে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [22]
23/439 ﻭَﻋَﻦِ ﺍﺑﻦِ ﻣَﺴﻌُﻮﺩٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ : ﺃﻥَّ ﺭَﺟُﻼً ﺃﺻَﺎﺏَ ﻣِﻦ ﺍﻣْﺮَﺃﺓ ﻗُﺒْﻠَﺔً، ﻓَﺄﺗَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒﻲَّ ﷺ ﻓَﺄﺧْﺒَﺮَﻩُ، ﻓَﺄﻧْﺰَﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ : ﴿ ﻭَﺃَﻗِﻢِ ﭐﻟﺼَّﻠَﻮٰﺓَ ﻃَﺮَﻓَﻲِ ﭐﻟﻨَّﻬَﺎﺭِ ﻭَﺯُﻟَﻔٗﺎ ﻣِّﻦَ ﭐﻟَّﻴۡﻞِۚ ﺇِﻥَّ ﭐﻟۡﺤَﺴَﻨَٰﺖِ ﻳُﺬۡﻫِﺒۡﻦَ ﭐﻟﺴَّﻴَِّٔﺎﺕِۚ ﴾ [ ﻫﻮﺩ : ١١٤ ] ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﺮﺟﻞ : ﺃَﻟِﻲ ﻫَﺬَﺍ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﻟِﺠَﻤِﻴﻊِ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻛُﻠِّﻬِﻢْ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
২৩/৪৩৯। ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি এক মহিলাকে চুমা দিয়ে ফেলে। পরে সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বিষয়টি জানায়। তখন আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেন, ‘‘দিনের দু’প্রান্তে সকাল ও সন্ধ্যায় এবং রাতের প্রথম ভাগে নামায কায়েম কর। নিশ্চয়ই পুণ্যরাশি পাপরাশিকে মিটিয়ে দেয়।’’ (সূরা হূদ ১১৪) লোকটি জিজ্ঞেস করল, ‘হে আল্লাহর রসূল! এ কি শুধু আমার জন্য?’ তিনি বললেন, ‘‘না, এ আমার সকল উম্মতের জন্য।’’
(বুখারী ও মুসলিম) [23]
24/440 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﻧَﺲٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﺟَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺃَﺻَﺒْﺖُ ﺣَﺪّﺍً، ﻓَﺄَﻗِﻤْﻪُ ﻋَﻠَﻲَّ، ﻭَﺣَﻀَﺮَﺕِ ﺍﻟﺼَّﻼﺓُ، ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻗَﻀَﻰ ﺍﻟﺼَّﻼﺓَ، ﻗَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺇﻧِّﻲ ﺃﺻَﺒْﺖُ ﺣَﺪّﺍً ﻓَﺄﻗِﻢْ ﻓﻲَّ ﻛِﺘَﺎﺏَ ﺍﻟﻠﻪِ . ﻗَﺎﻝَ : « ﻫَﻞْ ﺣَﻀَﺮْﺕَ ﻣَﻌَﻨَﺎ ﺍﻟﺼَّﻼﺓَ » ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻧَﻌَﻢْ . ﻗَﺎﻝَ : « ﻗَﺪْ ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻚَ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
২৪/৪৪০। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি দণ্ডনীয় অপরাধ করে ফেলেছি; তাই আমার উপর দণ্ড প্রয়োগ করুন।’
ইতোমধ্যে নামাযের সময় হল। সেও আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে নামায পড়ল। নামায শেষ করে পুনরায় সে বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! নিশ্চয় আমি
দণ্ডনীয় অপরাধ করে ফেলেছি; তাই আমার উপর আল্লাহর কিতাবে ঘোষিত দণ্ড প্রয়োগ করুন।’ তিনি বললেন, ‘‘তুমি কি আমাদের সাথে নামায আদায় করেছ?’’ সে বলল, ‘জী হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘‘নিশ্চই তোমার অপরাধ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [24]
* উক্ত হাদীসে ‘দণ্ডনীয় অপরাধ’ বলতে সেই অপরাধ উদ্দেশ্য নয়, যাতে শরীয়তে নির্ধারিত দণ্ড আছে; যেমন মদপান,
ব্যভিচার প্রভৃতি। কেননা এমন দণ্ডনীয় অপরাধ নামায পড়লেই ক্ষমা হয়ে যাবে না। যেমন সে দণ্ড প্রয়োগ না করাও শাসকের জন্য বৈধ নয়।
25/441 ﻭَﻋَﻨﻪُ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠﻪ ﻟَﻴﺮْﺿَﻰ ﻋَﻦِ ﺍﻟﻌَﺒْﺪِ ﺃﻥْ ﻳَﺄﻛُﻞَ ﺍﻷَﻛْﻠَﺔَ، ﻓَﻴَﺤْﻤَﺪُﻩُ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ، ﺃَﻭْ ﻳَﺸْﺮَﺏَ ﺍﻟﺸَّﺮْﺑَﺔَ، ﻓَﻴَﺤْﻤَﺪُﻩُ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
২৫/৪৪১। উক্ত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু‘আনহু থেকেই বর্ণিত, রসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা বান্দার (এ কাজে) সন্তুষ্ট হন যে, (কিছু) খেলে সে তার উপর আল্লাহর প্রশংসা করে অথবা কিছু পান করলে সে তার উপর তাঁর প্রশংসা করে।’’ (মুসলিম) [25]
26/442 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻳَﺒْﺴُﻂُ ﻳَﺪَﻩُ ﺑﺎﻟﻠَّﻴﻞِ ﻟﻴَﺘُﻮﺏَ ﻣُﺴِﻲﺀُ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭِ، ﻭَﻳَﺒْﺴُﻂُ ﻳَﺪَﻩُ ﺑﺎﻟﻨَّﻬَﺎﺭِ ﻟِﻴَﺘُﻮﺏَ ﻣُﺴِﻲﺀُ ﺍﻟﻠَّﻴﻞِ، ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻄﻠُﻊَ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ ﻣِﻦْ ﻣَﻐْﺮِﺑِﻬَﺎ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
২৬/৪৪২। আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা রাতে নিজ হাত প্রসারিত করেন, যেন দিবাভাগের অপরাধী তাওবাহ করে নেয়। আর তিনি দিনেও নিজ হাত প্রসারিত করেন, যেন রাতের অপরাধী তাওবাহ করে নেয়। যতক্ষণ না পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয় হবে (এ নিয়ম অব্যাহত থাকবে)।’’ (মুসলিম)
[26]
27/443 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻧَﺠِﻴﺢٍ ﻋَﻤﺮِﻭ ﺑﻦِ ﻋَﺒَﺴَﺔَ ﺍﻟﺴُّﻠَﻤِﻲِّ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨْﺖُ ﻭﺃﻧَﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺠﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﺃﻇُﻦُّ ﺃﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﻋَﻠَﻰ ﺿَﻼَﻟَﺔٍ، ﻭَﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﻟَﻴْﺴُﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺷَﻲْﺀٍ، ﻭَﻫُﻢْ ﻳَﻌْﺒُﺪُﻭﻥَ ﺍﻷَﻭْﺛَﺎﻥَ، ﻓَﺴَﻤِﻌْﺖُ ﺑِﺮَﺟُﻞٍ ﺑِﻤَﻜَّﺔَ ﻳُﺨْﺒِﺮُ ﺃﺧْﺒَﺎﺭﺍً، ﻓَﻘَﻌَﺪْﺕُ ﻋَﻠَﻰ ﺭَﺍﺣِﻠَﺘِﻲ، ﻓَﻘَﺪِﻣْﺖُ ﻋَﻠَﻴﻪِ، ﻓﺈِﺫَﺍ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﻣُﺴْﺘَﺨْﻔِﻴﺎً، ﺟُﺮَﺀَﺍﺀُ ﻋَﻠَﻴﻪِ ﻗَﻮﻣُﻪُ، ﻓَﺘَﻠَﻄَّﻔَﺖُ ﺣَﺘَّﻰ ﺩَﺧَﻠْﺖُ ﻋَﻠَﻴﻪِ ﺑِﻤَﻜَّﺔَ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻪُ : ﻣَﺎ ﺃﻧْﺖَ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﺃَﻧَﺎ ﻧَﺒﻲٌّ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻭَﻣَﺎ ﻧَﺒِﻲٌّ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﺃﺭْﺳَﻠَﻨِﻲ ﺍﻟﻠﻪ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻭَﺑِﺄَﻱِّ ﺷَﻲْﺀ ﺃﺭْﺳَﻠَﻚَ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﺃَﺭْﺳَﻠَﻨِﻲ ﺑِﺼِﻠَﺔِ ﺍﻷﺭْﺣَﺎﻡِ، ﻭَﻛَﺴْﺮِ ﺍﻷَﻭْﺛَﺎﻥِ، ﻭَﺃﻥْ ﻳُﻮَﺣَّﺪَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻻَ ﻳُﺸْﺮَﻙُ ﺑِﻪِ ﺷَﻲْﺀ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻓَﻤَﻦْ ﻣَﻌَﻚَ ﻋَﻠَﻰ ﻫَﺬَﺍ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﺣُﺮٌّ ﻭَﻋَﺒْﺪٌ » ﻭَﻣَﻌَﻪُ ﻳَﻮْﻣَﺌﺬٍ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜﺮٍ ﻭَﺑِﻼَﻝٌ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ، ﻗُﻠْﺖُ : ﺇﻧّﻲ ﻣُﺘَّﺒِﻌُﻚَ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺇﻧَّﻚَ ﻟَﻦْ ﺗَﺴْﺘَﻄﻴﻊَ ﺫﻟِﻚَ ﻳَﻮﻣَﻚَ ﻫَﺬَﺍ، ﺃﻻ ﺗَﺮَﻯ ﺣَﺎﻟﻲ ﻭﺣﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ؟ ﻭَﻟَﻜِﻦِ ﺍﺭْﺟﻊْ ﺇِﻟَﻰ ﺃﻫْﻠِﻚَ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺳَﻤِﻌْﺖَ ﺑِﻲ ﻗَﺪْ ﻇَﻬﺮْﺕُ ﻓَﺄﺗِﻨِﻲ » ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺬَﻫَﺒْﺖُ ﺇِﻟَﻰ ﺃﻫْﻠِﻲ ﻭﻗَﺪِﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﺍﻟﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ ﺣَﺘَّﻰ ﻗَﺪِﻡَ ﻧَﻔَﺮٌ ﻣِﻦْ ﺃﻫْﻠِﻲ ﺍﻟﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ، ﻓَﻘُﻠﺖُ : ﻣَﺎ ﻓَﻌَﻞَ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻗَﺪِﻡَ ﺍﻟﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ ؟ ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ : ﺍﻟﻨَّﺎﺱ ﺇﻟَﻴﻪِ ﺳِﺮَﺍﻉٌ، ﻭَﻗَﺪْ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﻗَﻮﻣُﻪُ ﻗَﺘْﻠَﻪُ، ﻓﻠَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻴﻌُﻮﺍ ﺫﻟِﻚَ، ﻓﻘَﺪِﻣْﺖُ ﺍﻟﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ، ﻓَﺪَﺧَﻠْﺖُ ﻋَﻠَﻴﻪِ، ﻓَﻘُﻠﺖُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺃَﺗَﻌْﺮِﻓُﻨﻲ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﻧَﻌَﻢْ، ﺃﻧْﺖَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻟَﻘَﻴْﺘَﻨِﻲ ﺑﻤﻜّﺔَ » ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﻘُﻠﺖُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺃﺧْﺒِﺮﻧِﻲ ﻋَﻤَّﺎ ﻋَﻠَّﻤَﻚَ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺃَﺟْﻬَﻠُﻪُ، ﺃﺧْﺒِﺮْﻧِﻲ ﻋَﻦِ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﺻَﻞِّ ﺻَﻼَﺓَ ﺍﻟﺼُّﺒْﺢِ، ﺛُﻢَّ ﺍﻗْﺼُﺮْ ﻋَﻦِ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﺮْﺗَﻔِﻊَ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ ﻗِﻴﺪَ ﺭُﻣْﺢٍ، ﻓَﺈﻧَّﻬَﺎ ﺗَﻄْﻠُﻊُ ﺣِﻴﻦَ ﺗَﻄﻠُﻊُ ﺑَﻴْﻦَ ﻗَﺮْﻧَﻲْ ﺷَﻴﻄَﺎﻥ، ﻭَﺣﻴﻨَﺌﺬٍ ﻳَﺴﺠُﺪُ ﻟَﻬَﺎ ﺍﻟﻜُﻔَّﺎﺭُ، ﺛُﻢَّ ﺻَﻞِّ ﻓَﺈﻥَّ ﺍﻟﺼَﻼَﺓَ ﻣَﺸْﻬُﻮﺩَﺓٌ ﻣَﺤْﻀُﻮﺭﺓٌ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺴْﺘَﻘِﻞَّ ﺍﻟﻈِّﻞُّ ﺑﺎﻟﺮُّﻣْﺢِ، ﺛُﻢَّ ﺍﻗْﺼُﺮْ ﻋَﻦِ ﺍﻟﺼَّﻼﺓِ، ﻓَﺈﻧَّﻪُ ﺣﻴﻨﺌﺬ ﺗُﺴْﺠَﺮُ ﺟَﻬَﻨَّﻢُ، ﻓﺈﺫَﺍ ﺃﻗْﺒَﻞَ ﺍﻟﻔَﻲْﺀُ ﻓَﺼَﻞِّ، ﻓَﺈﻥَّ ﺍﻟﺼَّﻼﺓَ ﻣَﺸْﻬُﻮﺩَﺓٌ ﻣَﺤﻀُﻮﺭَﺓٌ ﺣَﺘَّﻰ ﺗُﺼَﻠِّﻲ ﺍﻟﻌَﺼﺮَ، ﺛُﻢَّ ﺍﻗْﺼﺮْ ﻋَﻦِ ﺍﻟﺼَّﻼﺓِ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻐْﺮُﺏَ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ، ﻓﺈﻧَّﻬَﺎ ﺗَﻐْﺮُﺏُ ﺑﻴﻦَ ﻗَﺮْﻧَﻲْ ﺷَﻴﻄَﺎﻥٍ، ﻭَﺣِﻴﻨَﺌﺬٍ ﻳَﺴْﺠُﺪُ ﻟَﻬَﺎ ﺍﻟﻜُﻔّﺎﺭُ » ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﻘُﻠﺖُ : ﻳَﺎ ﻧَﺒﻲَّ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻓَﺎﻟﻮُﺿُﻮﺀُ ﺣَﺪِّﺛﻨِﻲ ﻋَﻨْﻪُ ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﻣَﺎ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﺭَﺟُﻞٌ ﻳُﻘَﺮِّﺏُ ﻭَﺿُﻮﺀَﻩُ، ﻓَﻴَﺘَﻤَﻀْﻤَﺾُ ﻭَﻳﺴْﺘَﻨْﺸِﻖُ ﻓَﻴَﺴْﺘَﻨْﺜِﺮُ، ﺇﻻَّ ﺧَﺮَّﺕْ ﺧَﻄَﺎﻳَﺎ ﻭَﺟْﻬِﻪِ ﻣِﻦْ ﺃﻃْﺮَﺍﻑِ ﻟِﺤْﻴَﺘِﻪِ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻤَﺎﺀِ، ﺛُﻢَّ ﻳَﻐْﺴِﻞُ ﻳَﺪَﻳﻪِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻤِﺮﻓﻘَﻴْﻦ، ﺇﻻَّ ﺧَﺮَّﺕْ ﺧَﻄَﺎﻳَﺎ ﻳَﺪَﻳْﻪِ ﻣِﻦْ ﺃﻧَﺎﻣِﻠِﻪِ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻤﺎﺀِ، ﺛُﻢَّ ﻳَﻤْﺴَﺢُ ﺭَﺃﺳَﻪُ، ﺇﻻَّ ﺧَﺮَّﺕْ ﺧَﻄَﺎﻳَﺎ ﺭَﺃﺳِﻪِ ﻣِﻦ ﺃﻃْﺮَﺍﻑِ ﺷَﻌْﺮِﻩِ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻤﺎَﺀِ، ﺛُﻢَّ ﻳَﻐﺴِﻞُ ﻗَﺪَﻣَﻴﻪِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻜَﻌْﺒَﻴْﻦِ، ﺇﻻَّ ﺧَﺮَّﺕْ ﺧَﻄَﺎﻳَﺎ ﺭِﺟﻠَﻴْﻪِ ﻣِﻦْ ﺃﻧَﺎﻣﻠِﻪِ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻤﺎَﺀِ، ﻓَﺈﻥْ ﻫُﻮَ ﻗَﺎﻡَ ﻓَﺼَﻠَّﻰ، ﻓَﺤَﻤِﺪَ ﺍﻟﻠﻪ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ، ﻭَﺃَﺛﻨَﻰ ﻋَﻠَﻴﻪِ ﻭﻣَﺠَّﺪَﻩُ ﺑﺎﻟَّﺬِﻱ ﻫُﻮَ ﻟَﻪُ ﺃﻫْﻞٌ، ﻭَﻓَﺮَّﻍَ ﻗَﻠﺒَﻪُ ﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ، ﺇﻻَّ ﺍﻧْﺼَﺮﻑَ ﻣِﻦْ ﺧَﻄِﻴﺌَﺘِﻪِ ﻛَﻬَﻴﺌَﺘِﻪ ﻳَﻮﻡَ ﻭَﻟَﺪَﺗﻪُ ﺃُﻣُّﻪُ » . ﻓَﺤَﺪَّﺙَ ﻋَﻤﺮُﻭ ﺑﻦُ ﻋَﺒَﺴَﺔَ ﺑِﻬَﺬَﺍ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚِ ﺃَﺑَﺎ ﺃُﻣَﺎﻣَﺔَ ﺻَﺎﺣِﺐَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﺃَﺑُﻮ ﺃُﻣَﺎﻣَﺔ : ﻳَﺎ ﻋَﻤْﺮَﻭ ﺑﻦَ ﻋَﺒَﺴَﺔَ، ﺍﻧْﻈُﺮ ﻣَﺎ ﺗﻘﻮﻝُ ! ﻓِﻲ ﻣَﻘَﺎﻡٍ ﻭَﺍﺣِﺪٍ ﻳُﻌْﻄَﻰ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻋَﻤْﺮٌﻭ : ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﺃُﻣَﺎﻣَﺔَ، ﻟَﻘَﺪ ﻛَﺒُﺮَﺕْ ﺳِﻨّﻲ، ﻭَﺭَﻕَّ ﻋَﻈﻤِﻲ، ﻭَﺍﻗْﺘَﺮَﺏَ ﺃﺟَﻠِﻲ، ﻭَﻣَﺎ ﺑِﻲ ﺣَﺎﺟَﺔٌ ﺃﻥْ ﺃﻛْﺬِﺏَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ، ﻭَﻻَ ﻋَﻠَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻟَﻮْ ﻟَﻢْ ﺃﺳﻤﻌﻪ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ
ﷺ، ﺇﻻَّ ﻣَﺮَّﺓً ﺃَﻭْ ﻣَﺮَّﺗَﻴﻦِ ﺃَﻭْ ﺛَﻼﺛﺎً، ﺣَﺘَّﻰ ﻋَﺪَّ ﺳَﺒْﻊَ ﻣَﺮَّﺍﺕ، ﻣَﺎ ﺣَﺪَّﺛْﺖُ ﺃﺑَﺪﺍً ﺑِﻪِ، ﻭَﻟﻜﻨِّﻲ ﺳَﻤِﻌﺘُﻪُ ﺃﻛﺜَﺮَ ﻣِﻦ ﺫَﻟِﻚَ . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
২৭/৪৪৩। আবূ নাজীহ ‘আমর ইবনে ‘আবাসাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, জাহেলিয়াতের (প্রাগৈসলামিক) যুগ থেকেই আমি ধারণা করতাম যে, লোকেরা পথভ্রষ্টতার উপর রয়েছে এবং এরা কোন ধর্মেই নেই, আর ওরা প্রতিমা পূজা করছে। অতঃপর আমি এক ব্যক্তির ব্যাপারে শুনলাম যে, তিনি মক্কায় অনেক আজব আজব খবর বলছেন। সুতরাং আমি আমার সওয়ারীর উপর বসে তাঁর কাছে এসে দেখলাম যে, তিনি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তিনি গুপ্তভাবে (ইসলাম প্রচার করছেন), আর তাঁর সম্প্রদায় (মুশরিকরা) তাঁর প্রতি (দুর্ব্যবহার করে) দুঃসাহসিকতা প্রদর্শন করছে। সুতরাং আমি বিচক্ষণতার সাথে কাজ নিলাম। পরিশেষে আমি মক্কায় তাঁর কাছে প্রবেশ করলাম। অতঃপর আমি তাঁকে বললাম, ‘আপনি কী?’ তিনি বললেন, ‘‘আমি নবী।’’ আমি বললাম, ‘নবী কী?’ তিনি বললেন, ‘‘আমাকে মহান আল্লাহ প্রেরণ করেছেন।’’ আমি বললাম, ‘কী নির্দেশ দিয়ে প্রেরণ করেছেন?’ তিনি বললেন, ‘‘জ্ঞাতিবন্ধন অক্ষুণ্ণ রাখা, মূর্তি ভেঙ্গে ফেলা,
আল্লাহকে একক উপাস্য মানা এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করার নির্দেশ দিয়ে।’’ আমি বললাম, ‘এ কাজে আপনার সঙ্গে কে আছে?’ তিনি বললেন, ‘‘একজন স্বাধীন মানুষ এবং একজন কৃতদাস।’’ তখন তাঁর সঙ্গে আবূ বকর ও বিলাল (রাদিয়াল্লাহু
‘আনহুমা) ছিলেন। আমি বললাম, ‘আমিও আপনার অনুগত।’ তিনি বললেন, ‘‘তুমি এখন এ কাজ কোনো অবস্থাতেই করতে পারবে না। তুমি কি আমার অবস্থা ও লোকদের অবস্থা দেখতে পাও না? অতএব তুমি (এখন) বাড়ি ফিরে যাও। অতঃপর যখন তুমি আমার জয়ী ও শক্তিশালী হওয়ার সংবাদ পাবে, তখন আমার কাছে এসো।’’
সুতরাং আমি আমার পরিবার পরিজনের নিকট চলে গেলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
(পরিশেষে) মদীনা চলে এলেন, আর আমি স্বপরিবারেই ছিলাম। অতঃপর আমি খবরাখবর নিতে আরম্ভ করলাম এবং যখন তিনি মদীনায় আগমন করলেন, তখন আমি (তাঁর ব্যাপারে) লোকদেরকে জিজ্ঞাসা করতে লাগলাম। অবশেষে আমার পরিবারের কিছু লোক মদীনায় এল। আমি বললাম, ‘ঐ লোকটার অবস্থা কি, যিনি (মক্কা ত্যাগ করে) মদীনা এসেছেন?’ তারা বলল, ‘লোকেরা তার দিকে ধাবমান। তাঁর সম্প্রদায় তাঁকে হত্যা করার ইচ্ছা করেছিল;
কিন্তু তারা তা করতে সক্ষম হয়নি।’
অতঃপর আমি মদীনা এসে তাঁর খিদমতে হাযির হলাম। তারপর আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাকে চিনতে পারছেন?’ তিনি বললেন, ‘‘হ্যাঁ, তুমি তো ঐ ব্যক্তি, যে মক্কায় আমার সাথে সাক্ষাৎ করেছিল।’’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে যা শিক্ষা দিয়েছেন এবং যা আমার অজানা---তা আমাকে বলুন? আমাকে নামায সম্পর্কে বলুন?’ তিনি বললেন, ‘‘তুমি ফজরের নামায পড়। তারপর সূর্য এক বল্লম বরাবর উঁচু হওয়া পর্যন্ত বিরত থাকো। কারণ তা শয়তানের দু’
শিং-এর মধ্যভাগে উদিত হয় (অর্থাৎ এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে) এবং সে সময় কাফেররা তাকে সিজদা করে। পুনরায় তুমি নামায পড়। কেননা, নামাযে ফিরিশ্তা সাক্ষী ও উপস্থিত হন, যতক্ষণ না ছায়া বল্লমের সমান হয়ে যায়। অতঃপর নামায থেকে বিরত হও। কেননা, তখন জাহান্নামের আগুন উস্কানো হয়। অতঃপর যখন ছায়া বাড়তে আরম্ভ করে, তখন নামায পড়। কেননা,
এ নামাযে ফিরিশ্তা সাক্ষী ও উপস্থিত হন। পরিশেষে তুমি আসরের নামায পড়। অতঃপর সূর্য ডোবা পর্যন্ত নামায পড়া থেকে বিরত থাকো। কেননা, সূর্য শয়তানের দু’ শিঙ্গের মধ্যে অস্ত যায় (অর্থাৎ এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে) এবং তখন কাফেররা তাকে সিজদাহ করে।’’
পুনরায় আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর নবী! আপনি আমাকে ওযূ সম্পর্কে বলুন?’ তিনি বললেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে যে কেউ পানি নিকটে করে (হাত ধোওয়ার পর) কুল্লি করে এবং নাকে পানি নিয়ে ঝেড়ে পরিষ্কার করে, তার চেহারা, তার মুখ এবং নাকের গুনাহসমূহ ঝরে যায়। অতঃপর সে যখন আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী তার চেহারা ধোয়, তখন তার চেহারার পাপরাশি তার দাড়ির শেষ প্রান্তের পানির সাথে ঝরে যায়। অতঃপর সে যখন তার হাত দু’খানি কনুই পর্যন্ত ধোয়, তখন তার হাতের পাপরাশি তার আঙ্গুলের পানির সাথে ঝরে যায়। অতঃপর সে যখন তার মাথা মাসাহ করে,
তখন তার মাথার পাপরাশি চুলের ডগার পানির সাথে ঝরে যায়। অতঃপর সে যখন তার পা দু’খানি গাঁট পর্যন্ত ধোয়, তখন তার পায়ের পাপরাশি তার আঙ্গুলের পানির সাথে ঝরে যায়। অতঃপর সে যদি দাঁড়িয়ে গিয়ে নামায পড়ে, আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর মাহাত্ম্য বর্ণনা করে--যার তিনি যোগ্য এবং অন্তরকে আল্লাহ তা‘আলার জন্য খালি করে, তাহলে সে ঐ দিনকার মত নিষ্পাপ হয়ে বেরিয়ে আসে, যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল।’’
তারপর ‘আমর ইবনে আবাসাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এ হাদীসটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট বর্ণনা করলেন। আবূ উমামাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাঁকে বললেন, ‘হে ‘আমর ইবনে ‘আবাসাহ! তুমি যা বলছ তা চিন্তা করে বল! একবার ওযূ করলেই কি এই ব্যক্তিকে এতটা মর্যাদা দেওয়া হবে?’ ‘আমর বললেন, ‘হে আবূ উমামাহ! আমার বয়স ঢের হয়েছে, আমার হাড় দুর্বল হয়ে গেছে এবং আমার মৃত্যুও নিকটবর্তী। (ফলে এ অবস্থায়) আল্লাহ তা‘আলা অথবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি মিথ্যা আরোপ করার আমার কী প্রয়োজন আছে? যদি আমি এটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থেকে একবার, দু’বার,
তিনবার এমনকি সাতবার পর্যন্ত না শুনতাম,
তাহলে কখনই তা বর্ণনা করতাম না। কিন্তু আমি তাঁর নিকট এর চেয়েও অধিকবার শুনেছি।’ (মুসলিম) [27]
28/444 . ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺍﻷﺷﻌَﺮِﻱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﺫَﺍ ﺃﺭَﺍﺩَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﺭَﺣﻤَﺔَ ﺃُﻣَّﺔٍ، ﻗَﺒَﺾَ ﻧَﺒﻴَّﻬَﺎ ﻗَﺒْﻠَﻬﺎ، ﻓَﺠَﻌَﻠَﻪُ ﻟَﻬَﺎ ﻓَﺮﻃﺎً ﻭَﺳَﻠَﻔﺎً ﺑَﻴْﻦَ ﻳَﺪَﻳْﻬَﺎ، ﻭﺇﺫَﺍ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﻫَﻠَﻜَﺔَ ﺃُﻣَّﺔٍ، ﻋَﺬَّﺑَﻬَﺎ ﻭَﻧَﺒِﻴُّﻬَﺎ ﺣَﻲٌّ، ﻓَﺄَﻫﻠَﻜَﻬَﺎ ﻭَﻫُﻮَ ﺣَﻲٌّ ﻳَﻨﻈُﺮُ، ﻓَﺄَﻗَﺮَّ ﻋَﻴﻨَﻪُ ﺑِﻬَﻼَﻛِﻬَﺎ ﺣِﻴﻦَ ﻛَﺬَّﺑُﻮﻩُ ﻭَﻋَﺼَﻮﺍ ﺃﻣْﺮَﻩُ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
২৮/৪৪৪। আবূ মূসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু
‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যখন আল্লাহ তা‘আলা কোন উম্মতের প্রতি অনুগ্রহ করার ইচ্ছা করেন, তখন তাদের নবীকে তাদের পূর্বেই তুলে নেন। অতঃপর তিনি তাঁকে সেই উম্মতের জন্য অগ্রগামী ও ব্যবস্থাপক বানিয়ে দেন। আর যখন তিনি কোন উম্মতকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করেন, তখন তাদেরকে তাদের নবীর উপস্থিতিতে শাস্তি দেন। তিনি নিজ জীবদ্দশায় তাদের ধ্বংস স্বচক্ষে দেখেন। সুতরাং আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে নবীর চক্ষুশীতল করেন, যখন তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী মনে করে এবং তাঁর আদেশ অমান্য করে।’’ (মুসলিম) [28]
[1] সহীহুল বুখারী ৩৪৩৫, মুসলিম ২৮, তিরমিযী ২৬৩৮, আহমাদ ২২১৬৭, ২২২১৬৩, ২২২৬২
[2] মুসলিম ২৬৮৭, ইবনু মাজাহ ৩৮২১, আবূ দাউদ ২০৮০৮, ২০৮৫৩, ২০৮৬৬, ২০৯৬১, ২০৯৭৭, ২০৯৯৪, ২১০৫৫, দারেমী ২৭৮৮
[3] মুসলিম ৯৩, আবূ দাউদ ১৪০৭৯, ১৪৩০১, ১৪৫৯৮, ১৪৭৭৮
[4] সহীহুল বুখারী ১২৮, ১২৯, মুসলিম ৩২, আবূ দাউদ ১১৯২৩, ১২১৯৫, ১৩১৪, ১৩৩৩১, ২১৪৮৬
[5] মুসলিম ২৭, আবূ দাউদ ৯১৭০
[6] সহীহুল বুখারী ৭৭, ১৮৯, ৪২৫, ৪২৪, ৬৬৭, ৬৮৬, ৮৩৮, ৮৪০, ১১৮৬, ৪০১০, ৫৪০১, ৬৩৫৪, ৬৪২২, ৬৯৩৮, মুসলিম ৩৩, আবূ দাউদ ১৪১১, ইবনু মাজাহ ৬৬০, ৭৫৪, আহমাদ ২৩১০৯, ২৩১২৬
[7] সহীহুল বুখারী ৫৯৯৯, মুসলিম ২৭৫৪
[8] সহীহুল বুখারী ৩১৯৪,৭৪০৪, ৭৪২২, ৭৪৫৩, ৭৫৫৩, ৭৫৫৪, মুসলিম ২৭৫১, তিরমিযী ৩৫৪৩, ইবনু মাজাহ ১৮৯, ৪২৯৫, আহমাদ ৭২৫৭, ৭৪৪৮, ৭৪৭৬, ২৭৩৪৩, ৮৪৮৫, ৮৭৩৫, ৯৩১৪
[9] সহীহুল বুখারী ৬০০০, ৬৪৬৯, মুসলিম ২৭৫২, তিরমিযী ৩৫৪১, ইবনু মাজাহ ৪২৯৩, আহমাদ ৮২১০, ৯৩২৬, ৯৯১০, ১০২৯২, ১০৪২৯, দারেমী ২৭৮৫
[10] সহীহুল বুখারী ৭৫০৭, মুসলিম ২৭৫৮, আহমাদ ৭৮৮৮, ৯০০৩, ১০০০৬
[11] মুসলিম ২৭৪৯, তিরমিযী ২৫২৬, আহমাদ ৭৯৮৩, ৮০২১
[12] মুসলিম ২৭৪৮, তিরমিযী ৩৫৩৯, আবূ দাউদ ২৩০০৪
[13] মুসলিম ৩১
[14] মুসলিম ২০২
[15] সহীহুল বুখারী ২৮৫৬, ৫৯৬৭, ৬২৬৭, ৬৫০০, ৭৩৭৩, মুসলিম ৩০, তিরমিযী ২৬৪৩, আবূ দাউদ ২৫৫৯, ইবনু মাজাহ ৪২৯৬, আহমাদ ১৩৩৩১, ২১৪৮৬, ২১৪৯৯, ২১৫০১, ২১৫৩৪, ম২১৫৫৩, ২১৫৬৮, ২১৫৯১
[16] সহীহুল বুখারী ১৩৬৯, ৪৬৯৯, মুসলিম ২৮৭১, তিরমিযী ৩১২০, নাসায়ী ২০৫৬, ২০৫৭, আবূ দাউদ ৪৭৫০, ইবনু মাজাহ ৪২৬৯, আহমাদ ১৮০১৩, ১৮০৬৩, ১৮১০৩, ১৮১৪০
[17] মুসলিম ২৮০৮, আহমাদ ১১৮২৮, ১১৮৫৫, ১৩৬০৪
[18] মুসলিম ৬৬৮, আহমাদ ১৩৮৬৩, ১৩৯৯৯, ১৪৪৩৯, দারেমী ১১৮২
[19] মুসলিম ৯৪১, আহমাদ ২৫০৫
[20] সহীহুল বুখারী ৬৫২৮, ৬৬৪২, মুসলিম ২০২১, তিরমিযী ২৫৪৭, ইবনু মাজাহ ৪২৮৩, আহমাদ ৩৬৪৩, ৪১৫৫, ৪২৩৯, ৪৩১৬
[21] মুসলিম ২৭৬৭, আহমাদ ১৮৯৯১, ১৯০৬৬, ১৯১০৩, ১৯১৫৩, ১৯১৬১, ১৯১৭৬, মুওয়াত্তা মালিক ৮
[22] সহীহুল বুখারী ২৪৪১, ৪৬৮৫, ৬০৭০, ৭৫১৪, মুসলিম ২৭৬৮, ইবনু মাজাহ ১৮৩, আহমাদ ৫৪১৩, ৫৭৯১
[23] সহীহুল বুখারী ৫২৬, ৪৬৮৭, মুসলিম ২৭৬৩, তিরমিযী ৩১১২, ৩১১৪, আবূ দাউদ ৪৪৬৮, ইবনু মাজাহ ১৩৯৮, ৪২৫৪, আবূ দাউদ ৩৬৪৫, ৩৮৪৪, ৪০৮৩, ৪২৩৮, ৪৩১৩
[24] সহীহুল বুখারী ৬৮২৩, মুসলিম ২৭৬৪
[25] মুসলিম ২৭৩৪, তিরমিযী ১৮১৬, আহমাদ ১১৫৬২, ১১৭৫৮
[26] মুসলিম ২৭৫৯, আহমাদ ১৯০৩৫, ১৯১২২
[27] মুসলিম ৮৩২, নাসায়ী ১৪৭, ৫৭২, ৫৮৪, ইবনু মাজাহ ২৮৩, ১২৫১, ১৩৫৪, আহমাদ ১৬৫৬৬, ১৬৫৭১, ১৬৫৭৮, ১৬৫৮০, ১৮৯৪০
[28] মুসলিম ২২৮৮
____________________________________________________________________________________________________________
সংকলন : ইমাম মুহিউদ্দীন আবু যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবন শরফ আন-নাওয়াবী রহ.
হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ণয় : শাইখ মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহ.
অনুবাদক : বিশিষ্ট আলেমবর্গ
অনুবাদ সম্পাদনা : আব্দুল হামীদ ফাইযী
সূত্র : ইসলামহাউজ
আরও পড়ুনঃ ক্ষমাপ্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য
আরও পড়ুনঃ সাইয়েদুল ইসতিগফার দু’আটি জানা আছে কি? এতে রয়েছে জান্নাতের ঘোষণা! (ভিডিও সহ)
আরও পড়ুনঃ কুরআনে কারীম ও সহীহ সুন্নাহর আলোকে গুনাহ্ মাফের আমল
আরও পড়ুনঃ কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাওবা ও পাপ মোচনকারী কিছু আমল
আরও পড়ুনঃ আল্লাহর নৈকট্য লাভের অনন্য উপায়: তাওবা
আরও পড়ুনঃ আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু !
আরও পড়ুনঃ তাওবার ফজিলত
আরও পড়ুনঃ তওবার বিবরণ
আরও পড়ুনঃ তওবা : কেন ও কিভাবে
আরও পড়ুনঃ যিনা-ব্যভিচারকারী পুরুষ অথবা নারী কি তাওবার পর বিবাহ করতে পারে?
আরও পড়ুনঃ যে ব্যক্তি কোন মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছেন তার জন্য কি তওবা আছে?
পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ ۞ﻗُﻞۡ ﻳَٰﻌِﺒَﺎﺩِﻱَ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺃَﺱۡﺭَﻓُﻮﺍْ ﻋَﻠَﻰٰٓ ﺃَﻧﻔُﺴِﻬِﻢۡ ﻟَﺎ ﺗَﻖۡﻧَﻄُﻮﺍْ ﻣِﻦ ﺭَّﺡۡﻣَﺔِ ﭐﻟﻠَّﻪِۚ ﺇِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻳَﻎۡﻓِﺮُ ﭐﻟﺬُّﻧُﻮﺏَ ﺟَﻤِﻴﻌًﺎۚ ﺇِﻧَّﻪُۥ ﻫُﻮَ ﭐﻝۡﻏَﻔُﻮﺭُﻟﺮَّﺣِﻴﻢُ ٥٣ ﴾ [ ﺍﻟﺰﻣﺮ : ٥٣ ]
অর্থাৎ “ঘোষণা করে দাও (আমার এ কথা), হে আমার দাসগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি যুলুম করেছ, তারা আল্লাহর করুণা হতে নিরাশ হয়ো না; নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত পাপ মাফ করে দেবেন। নিশ্চয় তিনিই চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা যুমার ৫৩ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ﻭَﻫَﻞۡ ﻧُﺠَٰﺰِﻱٓ ﺇِﻟَّﺎ ﭐﻝۡﻛَﻔُﻮﺭَ﴾ [ ﺳﺒﺎ : ١٧ ]
অর্থাৎ “আমি অকৃতজ্ঞ (বা অস্বীকারকারী)কেই শাস্তি দিয়ে থাকি।
(সূরা সাবা ১৭ আয়াত)
আরো অন্য জায়গায় তিনি বলেন,
﴿ ﺇِﻧَّﺎ ﻗَﺪۡ ﺃُﻭﺣِﻲَ ﺇِﻟَﻲۡﻧَﺎٓ ﺃَﻥَّ ﭐﻝۡﻋَﺬَﺍﺏَ ﻋَﻠَﻰٰ ﻣَﻦ ﻛَﺬَّﺏَ ﻭَﺗَﻮَﻟَّﻰٰ ٤٨﴾ [ ﻃﻪ : ٤٨ ]
অর্থাৎ “নিশ্চয় আমাদের প্রতি অহী (প্রত্যাদেশ) প্রেরণ করা হয়েছে যে, শাস্তি তার জন্য, যে মিথ্যা মনে করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।” (সূরা ত্বাহা ৪৮ আয়াত)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ ﻭَﺭَﺡۡﻣَﺘِﻲ ﻭَﺳِﻌَﺖۡ ﻛُﻞَّ ﺷَﻲۡﺀٖۚ ﴾ [ ﺍﻻﻋﺮﺍﻑ : ١٥٦ ]
অর্থাৎ “আমার দয়া তা তো প্রত্যেক বস্তুতে পরিব্যাপ্ত।” (সূরা আ’রাফ ১৫৬ আয়াত)
1/417 ﻭَﻋَﻦ ﻋُﺒَﺎﺩَﺓَ ﺑﻦِ ﺍﻟﺼَّﺎﻣِﺖِ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﻣَﻦْ ﺷَﻬِﺪَ ﺃﻥَّ ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻻَ ﺷَﺮِﻳﻚَ ﻟَﻪُ، ﻭَﺃﻥَّ ﻣُﺤَﻤﺪﺍً ﻋَﺒْﺪﻩُ ﻭﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ، ﻭَﺃﻥَّ ﻋِﻴﺴَﻰ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ ﻭَﻛَﻠِﻤَﺘُﻪُ ﺃﻟْﻘَﺎﻫَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﻣَﺮْﻳَﻢَ ﻭﺭُﻭﺡٌ ﻣِﻨْﻪُ، ﻭَﺃﻥَّ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ ﺣَﻖٌّ، ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﺭَ ﺣَﻖٌّ، ﺃﺩْﺧَﻠَﻪُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻌَﻤَﻞِ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﻟﻤﺴﻠﻢ : « ﻣَﻦْ ﺷَﻬِﺪَ ﺃﻥْ ﻻ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺃﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪﺍً ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺣَﺮَّﻡَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴﻪِ ﺍﻟﻨَّﺎﺭَ » .
১/৪১৭। ‘উবাদাহ ইবনে সামেত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেবে যে,
একমাত্র আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোনো উপাস্য নেই, তাঁর কোন শরীক নেই, আর মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রসূল এবং ঈসা আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসূল, আর তাঁর বাণী যা তিনি মারয়্যামের মধ্যে নিক্ষেপ করেছেন এবং তাঁর (পক্ষ থেকে সৃষ্ট) রূহ। আর জান্নাত সত্য ও জাহান্নাম সত্য। তাকে আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন; তাতে সে যে কর্মই করে থাকুক না কেন।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]
মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর রসূল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেবেন।’’
2/418 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﺫَﺭٍّ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒﻲّ ﷺ : « ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪُ - ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ :- ﻣَﻦْ ﺟَﺎﺀَ ﺑِﺎﻟﺤَﺴَﻨَﺔِ ﻓَﻠَﻪُ ﻋَﺸْﺮُ ﺃﻣْﺜَﺎﻟِﻬَﺎ ﺃَﻭْ ﺃﺯْﻳَﺪ، ﻭَﻣَﻦْ ﺟَﺎﺀَ ﺑﺎﻟﺴَﻴِّﺌَﺔِ ﻓَﺠَﺰَﺍﺀُ ﺳَﻴِّﺌَﺔٍ ﺳَﻴِّﺌَﺔٌ ﻣِﺜْﻠُﻬَﺎ ﺃَﻭْ ﺃﻏْﻔِﺮُ . ﻭَﻣَﻦْ ﺗَﻘَﺮَّﺏَ ﻣِﻨِّﻲ ﺷِﺒْﺮﺍً ﺗَﻘَﺮَّﺑْﺖُ ﻣِﻨْﻪُ ﺫِﺭَﺍﻋﺎً، ﻭَﻣَﻦْ ﺗَﻘَﺮَّﺏَ ﻣِﻨِّﻲ ﺫِﺭَﺍﻋﺎً ﺗَﻘَﺮَّﺑْﺖُ ﻣِﻨْﻪُ ﺑَﺎﻋﺎً، ﻭَﻣَﻦْ ﺃﺗَﺎﻧِﻲ ﻳَﻤْﺸِﻲ ﺃﺗَﻴْﺘُﻪُ ﻫَﺮْﻭَﻟَﺔً، ﻭَﻣَﻦْ ﻟَﻘِﻴَﻨﻲ ﺑِﻘُﺮَﺍﺏِ ﺍﻷﺭْﺽِ ﺧَﻄِﻴﺌَﺔً ﻻَ ﻳُﺸْﺮِﻙُ ﺑِﻲ ﺷَﻴﺌﺎً، ﻟَﻘِﻴﺘُﻪُ ﺑِﻤِﺜْﻠِﻬَﺎ ﻣَﻐﻔِﺮَﺓً » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
২/৪১৮। আবূ যার্র বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ আয্যা অজাল্ল্ বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি একটি নেকী করবে, তার জন্য দশ গুণ নেকী রয়েছে অথবা ততোধিক বেশী। আর যে ব্যক্তি একটি পাপ করবে, তার বিনিময় (সে) ততটাই (পাবে; তার বেশী নয়) অথবা আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। আর যে ব্যক্তি আমার প্রতি এক বিঘত নিকটবর্তী হবে, আমি তার প্রতি এক হাত নিকটবর্তী হব। আর যে ব্যক্তি আমার প্রতি এক হাত নিকটবর্তী হবে, আমি তার প্রতি দু’হাত নিকটবর্তী হব। যে আমার দিকে হেঁটে আসবে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাব। আর যে ব্যক্তি প্রায় পৃথিবী সমান পাপ করে আমার স
ঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, অথচ সে আমার সাথে কাউকে শরীক করেনি,
তার সাথে আমি তত পরিমাণই ক্ষমা নিয়ে সাক্ষাৎ করব।’’ (মুসলিম) [2]
3/419 ﻭَﻋَﻦ ﺟَﺎﺑِﺮٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﺟَﺎﺀَ ﺃَﻋﺮَﺍﺑِﻲ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻣَﺎ ﺍﻟﻤﻮﺟِﺒَﺘَﺎﻥِ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﻣَﻦْ ﻣَﺎﺕَ ﻻَ ﻳُﺸْﺮِﻙُ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﺷَﻴﺌﺎً ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ، ﻭَﻣَﻦْ ﻣَﺎﺕَ ﻳُﺸْﺮِﻙُ ﺑِﻪِ ﺷَﻴْﺌﺎً ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
৩/৪১৯। জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,
এক বেদুঈন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! (জান্নাত ও জাহান্নাম) ওয়াজেবকারী (অনিবার্যকারী) কর্মদু’টি কি?’ তিনি বললেন, ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার করবে না, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি তার সাথে কোনো জিনিসকে অংশীদার করবে (এবং তওবা না করে ঐ অবস্থাতেই সে মৃত্যুবরণ করবে) সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’’ (মুসলিম) [3]
4/420 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﻧَﺲٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ : ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒﻲَّ ﷺ ﻭَﻣُﻌَﺎﺫٌ ﺭَﺩِﻳﻔُﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺮَّﺣْﻞِ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻳَﺎ ﻣُﻌَﺎﺫُ » ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﺒِّﻴْﻚَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﺳَﻌْﺪَﻳْﻚَ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻳَﺎ ﻣُﻌَﺎﺫُ » ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﺒَّﻴْﻚَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﺳَﻌْﺪَﻳْﻚَ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻳَﺎ ﻣُﻌَﺎﺫُ » ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﺒِّﻴْﻚَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭﺳَﻌْﺪَﻳْﻚَ، ﺛَﻼﺛﺎً، ﻗَﺎﻝَ : « ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﻋَﺒْﺪٍ ﻳَﺸْﻬَﺪُ ﺃَﻥ ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭَﺃﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪﺍً ﻋَﺒْﺪُﻩُ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ ﺻِﺪْﻗﺎً ﻣِﻦْ ﻗَﻠْﺒِﻪِ ﺇﻻَّ ﺣَﺮَّﻣَﻪُ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺭ » . ﻗَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺃﻓَﻼَ ﺃُﺧْﺒِﺮُ ﺑِﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱ ﻓَﻴَﺴْﺘَﺒْﺸِﺮُﻭﺍ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﺫﺍً ﻳَﺘَّﻜِﻠُﻮﺍ
» . ﻓﺄﺧﺒﺮ ﺑِﻬَﺎ ﻣُﻌﺎﺫٌ ﻋِﻨْﺪَ ﻣﻮﺗِﻪ ﺗَﺄﺛُّﻤﺎً . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
৪/৪২০। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, মু‘আয যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে সওয়ারীর উপর বসেছিলেন, তখন তিনি তাঁকে বললেন, ‘‘হে মু‘আয!’’ মু‘আয বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি উপস্থিত আছি এবং আপনার খিদমতের জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’ তিনি (পুনরায়) বললেন, ‘‘হে মু‘আয!’’ মু‘আয বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি হাজির আছি এবং আপনার খিদমতের জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’ তিনি (আবার) বললেন, ‘‘হে মু‘আয!’’ (মুআযও) বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি উপস্থিত আছি এবং আপনার খিদমতের জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা তিনবার বললেন। (এরপর) তিনি বললেন, ‘‘যে কোন বান্দা খাঁটি মনে সাক্ষ্য দেবে যে,
আল্লাহ ব্যতীত কেউ (সত্য) উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও তাঁর রসূল, তাকে আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামের জন্য হারাম করে দেবেন।’’
মু‘আয বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি কি লোকদেরকে এই খবর বলে দেব না? যেন তারা (শুনে) আনন্দিত হয়।’ তিনি বললেন, ‘‘তাহলে তো তারা (এরই উপর) ভরসা করে নেবে (এবং আমল ত্যাগ করে বসবে)।’’
অতঃপর মু‘আয (ইলম গোপন রাখার) পাপ থেকে বাঁচার জন্য তাঁর মুত্যুর সময় (এ হাদীসটি) জানিয়ে দিয়েছিলেন। (বুখারী ও মুসলিম) [4]
5/421 . ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻫُﺮَﻳﺮَﺓَ ﺃَﻭْ ﺃَﺑﻲ ﺳَﻌِﻴﺪٍ ﺍﻟﺨُﺪﺭِﻱ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ - ﺷَﻚَّ ﺍﻟﺮَّﺍﻭِﻱ - ﻭﻻَ ﻳَﻀُﺮُّ ﺍﻟﺸَّﻚُّ ﻓﻲ ﻋَﻴﻦِ ﺍﻟﺼَّﺤَﺎﺑﻲّ ؛ ﻷﻧَّﻬُﻢْ ﻛُﻠُّﻬُﻢْ ﻋُﺪُﻭﻝٌ - ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﻤَّﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻏَﺰﻭَﺓُ ﺗَﺒُﻮﻙَ، ﺃﺻَﺎﺏَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﻣَﺠَﺎﻋَﺔٌ، ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻟَﻮْ ﺃﺫِﻧْﺖَ ﻟَﻨَﺎ ﻓَﻨَﺤَﺮْﻧَﺎ ﻧَﻮﺍﺿِﺤَﻨَﺎ ﻓَﺄﻛَﻠْﻨَﺎ ﻭَﺍﺩَّﻫَﻨَّﺎ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺍﻓْﻌَﻠُﻮﺍ » ﻓَﺠﺎﺀ ﻋُﻤَﺮُ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺇﻥْ ﻓَﻌَﻠْﺖَ ﻗَﻞَّ ﺍﻟﻈَّﻬْﺮُ، ﻭَﻟَﻜِﻦ ﺍﺩﻋُﻬُﻢْ ﺑﻔَﻀﻞِ ﺃﺯْﻭَﺍﺩِﻫِﻢْ، ﺛُﻢَّ ﺍﺩﻉُ ﺍﻟﻠﻪ ﻟَﻬُﻢْ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺑِﺎﻟﺒَﺮَﻛَﺔِ، ﻟَﻌَﻞَّ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻥْ ﻳَﺠْﻌَﻞَ ﻓﻲ ﺫﻟِﻚَ ﺍﻟﺒَﺮَﻛَﺔَ . ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﻧَﻌَﻢْ » ﻓَﺪَﻋَﺎ ﺑِﻨَﻄْﻊ ﻓَﺒَﺴَﻄَﻪُ، ﺛُﻢَّ ﺩَﻋَﺎ ﺑِﻔﻀﻞِ ﺃﺯْﻭَﺍﺩِﻫِﻢْ، ﻓَﺠَﻌَﻞَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻳَﺠِﻲﺀُ ﺑﻜَﻒّ ﺫُﺭَﺓٍ ﻭَﻳَﺠِﻲﺀُ ﺑِﻜَﻒّ ﺗَﻤﺮٍ ﻭَﻳَﺠِﻲﺀُ ﺍﻵﺧﺮُ ﺑِﻜِﺴﺮَﺓٍ ﺣَﺘَّﻰ ﺍﺟْﺘَﻤَﻊَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﻄﻊِ ﻣِﻦْ ﺫﻟِﻚَ ﺷَﻲﺀٌ ﻳَﺴﻴﺮٌ، ﻓَﺪَﻋَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﺑِﺎﻟﺒَﺮَﻛَﺔِ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ : « ﺧُﺬُﻭﺍ ﻓﻲ ﺃﻭﻋِﻴَﺘِﻜُﻢْ » ﻓَﺄَﺧَﺬُﻭﺍ ﻓﻲ ﺃﻭْﻋِﻴَﺘِﻬِﻢ ﺣَﺘَّﻰ ﻣَﺎ ﺗَﺮَﻛُﻮﺍ ﻓﻲ ﺍﻟﻌَﺴْﻜَﺮِ ﻭِﻋَﺎﺀً ﺇﻻَّ ﻣَﻸُﻭﻩُ ﻭَﺃَﻛَﻠُﻮﺍ ﺣَﺘَّﻰ ﺷَﺒﻌُﻮﺍ ﻭَﻓَﻀَﻞَ ﻓَﻀْﻠَﺔٌ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺃﺷْﻬَﺪُ ﺃﻥْ ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪُ، ﻭَﺃﻧّﻲ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻻ ﻳَﻠْﻘَﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺑِﻬِﻤَﺎ ﻋَﺒْﺪٌ ﻏَﻴْﺮَ ﺷَﺎﻙٍّ ﻓَﻴُﺤْﺠَﺐَ ﻋَﻦِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
৫/৪২১।
আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু অথবা আবূ সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, (বর্ণনাকারী সন্দেহে পড়েছেন। অবশ্য সাহাবীর ব্যক্তিত্ব নির্ণয়ে সন্দেহ ক্ষতিকর কিছু নয়। কেননা সকল সাহাবাই নির্ভরযোগ্য।) সাহাবী বলেন, তাবুকের যুদ্ধের সময় সাহাবীগণ অতিশয় খাদ্য-সংকটে পড়লেন। সুতরাং তাঁরা বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! যদি আপনি অনুমতি দেন, তাহলে আমরা আমাদের সেচক উট জবাই করে তার গোশ্ত ভক্ষণ এবং চর্বি ব্যবহার করি?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (ঠিক আছে) তোমরা কর। (এ সংবাদ শুনে) উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! যদি আপনি (এমন) করেন,
তাহলে সওয়ারী কমে যাবে। বরং আপনি (এই করুন যে,) তাদেরকে নিজেদের অবশিষ্ট খাদ্যদ্রব্য আনতে বলুন এবং তাদের জন্য তাতে আল্লাহর কাছে বরকতের দো‘আ করুন। সম্ভবতঃ আল্লাহ তাতে বরকত দেবেন।’
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘হ্যাঁ, (তাই-ই করি।)’’
সুতরাং তিনি চামড়ার একখানি দস্তরখান আনিয়ে নিয়ে তা বিছালেন। অতঃপর তিনি তাঁদের অবশিষ্ট খাদ্যদ্রব্য জমা করার নির্দেশ দিলেন। ফলে কেউ তো এক খাবল ভুট্টা আনলেন, কেউ তো এক খাবল খুরমা এবং কেউ তো রুটির একটি টুকরাও আনলেন। পরিশেষে কিছু পরিমাণ খাদ্য জমা হয়ে গেল। তারপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বরকতের দো‘আ করলেন। অতঃপর বললেন, ‘‘তোমরা আপন আপন পাত্রে নিয়ে নাও।’’ সুতরাং তাঁরা সব সব পাত্রে নিতে আরম্ভ করলেন। এমনকি সৈন্যের মধ্যে কোন পাত্র শূন্য রইল না। তাঁরা সকলেই খেয়ে তৃপ্ত হলেন এবং কিছু বেঁচেও গেল। অবশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল। যে কোন বান্দা সন্দেহমুক্ত হয়ে এ দু’টি (সাক্ষ্য) নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে,
তাকে যে জান্নাতে যেতে বাধা দেওয়া হবে -তা হতেই পারে না (বরং সে বিনা বাধায় জান্নাতে প্রবেশ করবে)।’’ (মুসলিম) [5]
6/422 ﻭَﻋَﻦ ﻋِﺘْﺒَﺎﻥَ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻭَﻫُﻮَ ﻣِﻤَّﻦ ﺷَﻬِﺪَ ﺑَﺪﺭﺍً، ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨﺖُ ﺃُﺻَﻠِّﻲ ﻟِﻘَﻮْﻣِﻲ ﺑَﻨﻲ ﺳَﺎﻟِﻢ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳَﺤُﻮﻝُ ﺑَﻴْﻨِﻲ ﻭﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ ﻭَﺍﺩٍ ﺇِﺫَﺍ ﺟَﺎﺀَﺕِ ﺍﻷَﻣْﻄَﺎﺭ، ﻓَﻴَﺸُﻖُّ ﻋَﻠَﻲَّ ﺍﺟْﺘِﻴَﺎﺯُﻩُ ﻗِﺒَﻞَ ﻣَﺴْﺠِﺪِﻫﻢ، ﻓَﺠِﺌﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﻓَﻘُﻠﺖُ ﻟَﻪُ : ﺇﻧّﻲ ﺃﻧْﻜَﺮْﺕُ ﺑَﺼَﺮِﻱ ﻭَﺇﻥَّ ﺍﻟﻮَﺍﺩِﻱ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺑَﻴْﻨِﻲ ﻭﺑَﻴْﻦَ ﻗَﻮﻣِﻲ ﻳَﺴِﻴﻞُ ﺇِﺫَﺍ ﺟَﺎﺀَﺕِ ﺍﻷﻣْﻄَﺎﺭُ ﻓَﻴَﺸُﻖُّ ﻋَﻠَﻲَّ ﺍﺟْﺘِﻴَﺎﺯُﻩُ ﻓَﻮَﺩِﺩْﺕُ ﺃﻧَّﻚَ ﺗَﺄﺗِﻲ ﻓَﺘُﺼَﻠِّﻲ ﻓﻲ ﺑَﻴْﺘِﻲ ﻣَﻜَﺎﻧﺎً ﺃﺗَّﺨِﺬُﻩُ ﻣُﺼَﻠّﻰ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺳَﺄﻓْﻌَﻞُ » ﻓَﻐَﺪَﺍ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﻭَﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜﺮٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺑَﻌْﺪَ ﻣَﺎ ﺍﺷْﺘَﺪَّ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭُ، ﻭَﺍﺳْﺘَﺄﺫَﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﻓَﺄﺫِﻧْﺖُ ﻟَﻪُ، ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺠْﻠِﺲْ ﺣَﺘَّﻰ ﻗَﺎﻝَ : « ﺃﻳْﻦَ ﺗُﺤِﺐُّ ﺃﻥْ ﺃُﺻَﻠِّﻲَ ﻣِﻦْ ﺑَﻴْﺘِﻚَ ؟ » ﻓَﺄﺷَﺮْﺕُ ﻟَﻪُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻤَﻜَﺎﻥِ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺃُﺣِﺐُّ ﺃَﻥْ ﻳُﺼَﻠِّﻲَ ﻓِﻴﻪِ، ﻓَﻘَﺎﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ ﻓَﻜَﺒَّﺮَ ﻭَﺻَﻔَﻔْﻨَﺎ ﻭَﺭَﺍﺀَﻩُ ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﺭَﻛﻌَﺘَﻴﻦِ ﺛُﻢَّ ﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﺳَﻠَّﻤْﻨَﺎ ﺣِﻴﻦَ ﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﺤَﺒَﺴْﺘُﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﺧَﺰﻳﺮَﺓٍ ﺗُﺼْﻨَﻊُ ﻟَﻪُ، ﻓَﺴَﻤِﻊَ ﺃﻫﻞُ ﺍﻟﺪَّﺍﺭِ ﺃﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ ﻓﻲ ﺑَﻴْﺘِﻲ ﻓَﺜَﺎﺏَ ﺭِﺟﺎﻝٌ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﺣَﺘَّﻰ ﻛَﺜُﺮَ ﺍﻟﺮِّﺟَﺎﻝُ ﻓﻲ ﺍﻟﺒَﻴْﺖِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺟُﻞٌ : ﻣَﺎ ﻓَﻌَﻞَ ﻣَﺎﻟِﻚٌ ﻻ ﺃﺭَﺍﻩُ ! ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺟُﻞٌ : ﺫﻟِﻚَ ﻣُﻨَﺎﻓِﻖٌ ﻻ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻮﻟَﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ : « ﻻَ ﺗَﻘُﻞْ ﺫﻟِﻚَ، ﺃﻻَ ﺗَﺮَﺍﻩُ ﻗَﺎﻝَ : ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪ ﻳَﺒْﺘَﻐﻲ ﺑِﺬَﻟِﻚَ ﻭَﺟﻪَ ﺍﻟﻠﻪ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ » ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺍﻟﻠﻪُ ﻭﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ ﺃﻋْﻠَﻢُ ﺃﻣَّﺎ ﻧَﺤْﻦُ ﻓَﻮَﺍﻟﻠﻪِ ﻣَﺎ ﻧَﺮَﻯ ﻭُﺩَّﻩُ ﻭَﻻَ ﺣَﺪِﻳﺜَﻪُ ﺇﻻَّ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻤُﻨَﺎﻓِﻘﻴﻦَ ! ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ : « ﻓﺈﻥَّ ﺍﻟﻠﻪ ﻗَﺪْ ﺣَﺮَّﻡَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻣَﻦْ ﻗَﺎﻝَ : ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪ ﻳَﺒْﺘَﻐِﻲ ﺑﺬَﻟِﻚَ ﻭَﺟْﻪَ ﺍﻟﻠﻪ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
৬/৪২২।
ইতবান ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, যিনি বদর যুদ্ধে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে উপস্থিত ছিলেন,
তিনি বলেন, আমি আমার গোত্র বানু সালেমের নামাযে ইমামতি করতাম। আমার ও তাদের (মসজিদের) মধ্যে একটি উপত্যকা ছিল। বৃষ্টি হলে ঐ উপত্যকা পেরিয়ে তাদের মসজিদে যাওয়া আমার জন্য কষ্টকর হত। তাই আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাযির হয়ে বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি আমার দৃষ্টিশক্তিতে কমতি অনুভব করছি। (এ ছাড়া) আমার ও আমার গোত্রের মধ্যকার উপত্যকাটি বৃষ্টি হলে প্লাবিত হয়ে যায়। তখন তা পার হওয়া আমার জন্য কষ্টকর হয়। তাই আমার একান্ত আশা যে, আপনি এসে আমার ঘরের এক স্থানে নামায আদায় করবেন। আমি সে স্থানটি নামাযের স্থান রূপে নির্ধারিত করে নেব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘আচ্ছা তাই করব।’’ সুতরাং পরের দিন সূর্যের তাপ যখন বেড়ে উঠল, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বাকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আমার বাড়ীতে এলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাইলে আমি তাঁকে অনুমতি দিলাম। তিনি না বসেই আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘তোমার ঘরের কোন্ স্থানে আমার নামায পড়া তুমি পছন্দ কর?’’ আমি যে স্থানে তাঁর নামায পড়া পছন্দ করেছিলাম, তাঁকে সেই স্থানের দিকে ইশারা করে (দেখিয়ে) দিলাম। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (নামাযে) দাঁড়িয়ে তকবীর বললেন। আমরা সারিবদ্ধভাবে তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে গেলাম। তিনি দু’রাকআত নামায পড়ে সালাম ফিরালেন। তাঁর সালাম ফিরার সময় আমরাও সালাম ফিরালাম। তারপর তাঁর জন্য যে ‘খাযীর’ (চর্বি দিয়ে পাকানো আটা) প্রস্তুত করা হচ্ছিল, তা খাওয়ার জন্য তাঁকে আটকে দিলাম। ইতোমধ্যে মহল্লার লোকেরা শুনল যে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার বাড়িতে। সুতরাং তাদের কিছু লোক এসে জমায়েত হল। এমনকি বাড়িতে অনেক লোকের সমাগম হল। তাদের মধ্যে একজন বলল, ‘মালেক (ইবনে দুখাইশিন) করল কী? তাকে দেখছি না যে?’
একজন জবাব দিল, ‘সে মুনাফিক! আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালবাসে না।’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘এমন কথা বলো না। তুমি কি মনে কর না যে,
সে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের কামনায় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলেছে?’’ সে ব্যক্তি বলল, ‘আল্লাহ ও তাঁর রসূলই অধিক জানেন। তবে আল্লাহর কসম! আমরা মুনাফিকদের সাথেই তার ভালবাসা ও আলাপ-আলোচনায় তাকে দেখতে পাই।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘ নিশ্চয় আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দিয়েছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের কামনায় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
বলে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [6]
7/423 ﻭَﻋَﻦ ﻋُﻤَﺮَ ﺑﻦِ ﺍﻟﺨَﻄَّﺎﺏِ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﺪِﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﺑﺴَﺒْﻲٍ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺍﻣْﺮَﺃﺓٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺴَّﺒْﻲِ ﺗَﺴْﻌَﻰ، ﺇِﺫْ ﻭَﺟَﺪَﺕْ ﺻَﺒﻴﺎً ﻓﻲ ﺍﻟﺴَّﺒْﻲِ ﺃﺧَﺬَﺗْﻪُ ﻓَﺄﻟْﺰَﻗَﺘﻪُ ﺑِﺒَﻄْﻨِﻬَﺎ ﻓَﺄَﺭﺿَﻌَﺘْﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺃﺗَﺮَﻭْﻥَ ﻫﺬِﻩِ ﺍﻟﻤَﺮْﺃﺓَ ﻃَﺎﺭِﺣَﺔً ﻭَﻟَﺪَﻫﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ؟ » ﻗُﻠْﻨَﺎ : ﻻَ ﻭَﺍﻟﻠﻪِ . ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﻟﻠﻪُ ﺃﺭْﺣَﻢُ ﺑِﻌِﺒَﺎﺩِﻩِ ﻣِﻦْ ﻫﺬِﻩِ ﺑِﻮَﻟَﺪِﻫَﺎ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
৭/৪২৩। উমার ইবনে খাত্ত্বাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কিছু সংখ্যক বন্দী এল। তিনি দেখলেন যে, বন্দীদের মধ্যে একজন মহিলা (তার শিশুটি হারিয়ে গেলে এবং স্তনে দুধ জমে উঠলে বাচ্চার খোঁজে অস্থির হয়ে) দৌড়াদৌড়ি করছে। হঠাৎ সে বন্দীদের মধ্যে কোনো শিশু পেলে তাকে ধরে কোলে নিয়ে (দুধ পান করাতে লাগল। অতঃপর তার নিজের বাচ্চা পেয়ে গেলে তাকে বুকে-পেটে লাগিয়ে) দুধ পান করাতে লাগল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তোমরা কি মনে কর যে, এই মহিলা তার সন্তানকে আগুনে ফেলতে পারে?’’ আমরা বললাম, ‘না,
আল্লাহর কসম!’ তারপর তিনি বললেন, ‘‘এই মহিলাটি তার সন্তানের উপর যতটা দয়ালু,
আল্লাহ তার বান্দাদের উপর তার চেয়ে অধিক দয়ালু।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [7]
8/424 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻫُﺮَﻳﺮَﺓَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﻟَﻤَّﺎ ﺧَﻠَﻖَ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺨَﻠْﻖَ ﻛَﺘَﺐَ ﻓﻲ ﻛِﺘَﺎﺏٍ، ﻓَﻬُﻮَ ﻋِﻨْﺪَﻩُ ﻓَﻮﻕَ ﺍﻟﻌَﺮْﺵِ : ﺇﻥَّ ﺭَﺣْﻤَﺘِﻲ ﺗَﻐْﻠِﺐُ ﻏَﻀَﺒﻲ » . ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
৮/৪২৪। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন সৃষ্টিজগত তৈরী সম্পন্ন করলেন, তখন একটি কিতাবে লিখে রাখলেন, যা তাঁরই কাছে তাঁর আরশের উপর রয়েছে, ‘‘অবশ্যই আমার রহমত আমার গযব অপেক্ষা অগ্রগামী।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [8]
9/425 ﻭَﻋَﻨﻪُ، ﻗَﺎﻝَ : ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : « ﺟَﻌَﻞَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﺔَ ﻣِﺌَﺔَ ﺟُﺰْﺀٍ، ﻓَﺄﻣْﺴَﻚَ ﻋِﻨْﺪَﻩُ ﺗِﺴْﻌَﺔً ﻭَﺗِﺴْﻌِﻴﻦَ، ﻭَﺃﻧْﺰَﻝَ ﻓﻲ ﺍﻷﺭْﺽِ ﺟُﺰْﺀﺍً ﻭَﺍﺣِﺪﺍً، ﻓَﻤِﻦْ ﺫﻟِﻚَ ﺍﻟﺠُﺰﺀِ ﻳَﺘَﺮَﺍﺣَﻢُ ﺍﻟﺨَﻼﺋِﻖُ، ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﺮْﻓَﻊَ ﺍﻟﺪَّﺍﺑّﺔُ ﺣَﺎﻓِﺮَﻫَﺎ ﻋَﻦْ ﻭَﻟَﺪِﻫَﺎ ﺧَﺸْﻴَﺔَ ﺃﻥْ ﺗُﺼِﻴﺒَﻪُ » .
ﻭَﻓﻲ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔٍ : « ﺇﻥّ ﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻣﺌَﺔَ ﺭَﺣﻤَﺔٍ، ﺃﻧْﺰَﻝَ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﺭَﺣْﻤَﺔً ﻭَﺍﺣِﺪَﺓً ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺠِﻦِّ ﻭَﺍﻹﻧﺲِ ﻭَﺍﻟﺒﻬﺎﺋِﻢِ ﻭَﺍﻟﻬَﻮﺍﻡّ، ﻓَﺒِﻬَﺎ ﻳَﺘَﻌَﺎﻃَﻔُﻮﻥَ، ﻭﺑِﻬَﺎ ﻳَﺘَﺮَﺍﺣَﻤُﻮﻥَ، ﻭﺑِﻬَﺎ ﺗَﻌْﻄِﻒُ ﺍﻟﻮَﺣْﺶُ ﻋَﻠَﻰ ﻭَﻟَﺪِﻫَﺎ، ﻭَﺃﺧَّﺮَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﺗِﺴْﻌﺎً ﻭَﺗِﺴْﻌﻴﻦَ ﺭَﺣْﻤَﺔً ﻳﺮْﺣَﻢُ ﺑِﻬَﺎ ﻋِﺒَﺎﺩَﻩُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻘِﻴَﺎﻣَﺔ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ .
ﻭَﺭَﻭَﺍﻩُ ﻣُﺴﻠِﻢٌ ﺃَﻳﻀﺎً ﻣِﻦْ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔِ ﺳَﻠْﻤَﺎﻥَ ﺍﻟﻔَﺎﺭِﺳﻲِّ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺇﻥَّ ﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻣِﺌَﺔَ ﺭَﺣْﻤَﺔٍ ﻓَﻤِﻨْﻬَﺎ ﺭَﺣْﻤَﺔٌ ﻳَﺘَﺮَﺍﺣﻢُ ﺑِﻬَﺎ ﺍﻟﺨَﻠْﻖُ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ، ﻭَﺗِﺴْﻊٌ ﻭَﺗِﺴﻌُﻮﻥَ ﻟِﻴَﻮﻡِ ﺍﻟﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ » .
ﻭَﻓﻲ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔٍ : « ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﺧَﻠَﻖَ ﻳَﻮْﻡَ ﺧَﻠَﻖَ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﺍﻷَﺭْﺽَ ﻣَﺌَﺔَ ﺭَﺣْﻤَﺔٍ ﻛُﻞُّ ﺭَﺣْﻤَﺔٍ ﻃِﺒَﺎﻕُ ﻣَﺎ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺴَّﻤﺎﺀِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻷﺭْﺽِ، ﻓَﺠَﻌَﻞَ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﻓﻲ ﺍﻷَﺭﺽِ ﺭَﺣْﻤَﺔً ﻓَﺒِﻬَﺎ ﺗَﻌْﻄﻒُ ﺍﻟﻮَﺍﻟِﺪَﺓُ ﻋَﻠَﻰ ﻭَﻟَﺪِﻫَﺎ، ﻭَﺍﻟﻮَﺣْﺶُ ﻭَﺍﻟﻄَّﻴْﺮُ ﺑَﻌْﻀُﻬَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺑَﻌْﺾ، ﻓَﺈﺫﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻮْﻡُ ﺍﻟﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﺃَﻛﻤَﻠَﻬَﺎ ﺑِﻬﺬِﻩِ ﺍﻟﺮَّﺣﻤَﺔِ » .
৯/৪২৫। উক্ত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘আল্লাহ রহমতকে একশ ভাগ করেছেন। তার মধ্যে নিরানববই ভাগ তিনি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। আর পৃথিবীতে একভাগ অবতীর্ণ করেছেন। ঐ এক ভাগের কারণেই সৃষ্টজগৎ একে অন্যের উপর দয়া করে। এমনকি জন্তু তার বাচ্চার উপর থেকে পা তুলে নেয় এই ভয়ে যে, সে ব্যথা পাবে।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহর একশটি রহমত আছে, যার মধ্য হতে একটি মাত্র রহমত তিনি মানব-দানব, পশু ও কীটপতঙ্গের মধ্যে অবতীর্ণ করেছেন। ঐ এক ভাগের কারণেই (সৃষ্টজীব) একে অপরকে মায়া করে, তার কারণেই একে অন্যকে দয়া করে এবং তার কারণেই হিংস্র জন্তুরা তাদের সন্তানকে মায়া করে থাকে। বাকী নিরানববইটি আল্লাহ আখেরাতের জন্য রেখে দিয়েছেন, যার দ্বারা তিনি কিয়ামতের দিন আপন বান্দাদের উপর রহম করবেন।’’ (বুখারী ও মুসলিম)
এ হাদীসটিকে ইমাম মুসলিমও সালমান ফারেসী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলার একশটি রহমত আছে, যার মধ্য হতে মাত্র একটির কারণে সৃষ্টিজগৎ একে অন্যের প্রতি দয়া প্রদর্শন করে। আর নিরানব্বইটি (রহমত) কিয়ামতের দিনের জন্য রয়েছে।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা আসমান যমীন সৃষ্টি করার দিন একশটি রহমত সৃষ্টি করলেন। প্রতিটি রহমত আসমান ও যমীনের মধ্যস্থল পরিপূর্ণ (বিশাল)। অতঃপর তিনি তার মধ্য হতে একটি রহমত পৃথিবীতে অবতীর্ণ করলেন। ঐ একটির কারণেই মা তার সন্তানকে মায়া করে এবং হিংস্র প্রাণী ও পাখীরা একে অন্যের উপর দয়া করে থাকে। অতঃপর যখন কিয়ামতের দিন হবে, তখন আল্লাহ এই রহমত দ্বারা সংখ্যা পূর্ণ করবেন।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [9]
10/426 ﻭَﻋَﻨﻪُ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ ﻓِﻴﻤَﺎ ﻳَﺤﻜِﻲ ﻋَﻦ ﺭَﺑَّﻪِ ﺗَﺒَﺎﺭَﻙَ ﻭَﺗَﻌَﺎﻟَﻰ، ﻗَﺎﻝ : « ﺃﺫْﻧَﺐَ ﻋَﺒْﺪٌ ﺫَﻧْﺒﺎً، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺍَﻟﻠﻬﻢ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻲ ﺫَﻧْﺒِﻲ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻠﻪ ﺗَﺒَﺎﺭﻙَ ﻭَﺗَﻌَﺎﻟَﻰ : ﺃﺫﻧَﺐَ ﻋَﺒﺪِﻱ ﺫَﻧﺒﺎً، ﻓَﻌَﻠِﻢَ ﺃﻥَّ ﻟَﻪُ ﺭَﺑّﺎً ﻳَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﺬَّﻧْﺐَ، ﻭَﻳَﺄْﺧُﺬُ ﺑِﺎﻟﺬَّﻧْﺐِ، ﺛُﻢَّ ﻋَﺎﺩَ ﻓَﺄﺫْﻧَﺐَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃﻱْ ﺭَﺏِّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻲ ﺫَﻧْﺒﻲ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺗَﺒَﺎﺭَﻙَ ﻭَﺗَﻌَﺎﻟَﻰ : ﺃﺫﻧَﺐَ ﻋﺒﺪِﻱ ﺫَﻧﺒﺎً، ﻓَﻌَﻠِﻢَ ﺃﻥَّ ﻟَﻪُ ﺭَﺑّﺎً، ﻳَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﺬَّﻧْﺐَ، ﻭَﻳَﺄْﺧُﺬُ ﺑﺎﻟﺬَّﻧْﺐِ، ﻗَﺪْ ﻏَﻔَﺮْﺕُ ﻟِﻌَﺒْﺪِﻱ ﻓَﻠْﻴَﻔْﻌَﻞْ ﻣَﺎ ﺷَﺎﺀَ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
১০/৪২৬। উক্ত রাবী থেকেই বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করেন, কোন বান্দা একটি পাপ করে বলল, ‘হে প্রভু! তুমি আমার পাপ ক্ষমা কর।’ তখন আল্লাহ তাবারাকা অতা‘আলা বলেন, ‘আমার বান্দা একটি পাপ করেছে, অতঃপর সে জেনেছে যে, তার একজন প্রভু আছেন, যিনি পাপ ক্ষমা করেন অথবা তা দিয়ে পাকড়াও করেন।’ অতঃপর সে আবার পাপ করল এবং বলল, ‘হে প্রভু! তুমি আমার পাপ ক্ষমা কর।’
তখন আল্লাহ তাবারাকা অতা‘আলা বলেন, ‘আমার বান্দা একটি পাপ করেছে, অতঃপর সে জেনেছে যে, তার একজন প্রভু আছেন,
যিনি পাপ ক্ষমা করেন অথবা তা দিয়ে পাকড়াও করেন। আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করলাম। সুতরাং সে যা ইচ্ছা করুক।’
(বুখারী ও মুসলিম) [10]
*‘সে যা ইচ্ছা করুক’ কথার অর্থ হল, সে যখন এইরূপ করে; অর্থাৎ পাপ করে সাথে সাথে তওবা করে এবং আমি তাকে মাফ করে দেই, তখন সে যা ইচ্ছা করুক, তার কোন চিন্তা নেই। যেহেতু তওবা পূর্বকৃত পাপ মোচন করে দেয়।
11/427 ﻭَﻋَﻨﻪُ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﻭﺍﻟَّﺬِﻱ ﻧَﻔْﺴِﻲ ﺑِﻴَﺪِﻩِ، ﻟَﻮْ ﻟَﻢْ ﺗُﺬْﻧِﺒُﻮﺍ، ﻟَﺬَﻫَﺐَ ﺍﻟﻠﻪ ﺑِﻜُﻢْ، ﻭَﺟَﺎﺀَ ﺑِﻘَﻮﻡٍ ﻳُﺬْﻧِﺒُﻮﻥَ، ﻓَﻴَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻭﻥَ ﺍﻟﻠﻪَ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ، ﻓَﻴَﻐْﻔِﺮُ ﻟَﻬُﻢْ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১১/৪২৭। উক্ত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু‘আনহু থেকেই বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘সেই মহান সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ আছে! যদি তোমরা পাপ না কর,
তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে অপসারিত করবেন এবং এমন জাতির আবির্ভাব ঘটাবেন যারা পাপ করবে, অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইবে। আর তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।’’ (মুসলিম) [11]
12/428 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﺃَﻳُّﻮﺏَ ﺧَﺎﻟِﺪِ ﺑﻦِ ﺯَﻳﺪٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : « ﻟَﻮْﻻَ ﺃﻧَّﻜُﻢْ ﺗُﺬْﻧِﺒُﻮﻥَ، ﻟَﺨَﻠَﻖَ ﺍﻟﻠﻪ ﺧَﻠْﻘﺎً ﻳُﺬْﻧِﺒُﻮﻥَ، ﻓَﻴَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮﻭﻥَ، ﻓَﻴَﻐْﻔِﺮُ ﻟَﻬُﻢْ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১২/৪২৮। আবূ আইয়ূব খালেদ ইবনে যায়দ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘তোমরা যদি গুনাহ না কর, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা এমন জাতি সৃষ্টি করবেন, যারা গুনাহ করবে তারপর তারা (আল্লাহর কাছে) ক্ষমা চাইবে। আর তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।’’ (মুসলিম) [12]
13/429 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻫُﺮَﻳﺮَﺓَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨَّﺎ ﻗُﻌُﻮﺩﺍً ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻣَﻌَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ ﻭَﻋُﻤَﺮُ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ، ﻓﻲ ﻧَﻔَﺮٍ ﻓَﻘَﺎﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﻣِﻦْ ﺑَﻴْﻦِ ﺃﻇْﻬُﺮِﻧَﺎ، ﻓَﺄﺑْﻄَﺄَ ﻋَﻠَﻴْﻨَﺎ ﻓَﺨَﺸِﻴﻨَﺎ ﺃﻥْ ﻳُﻘﺘَﻄَﻊَ ﺩُﻭﻧَﻨَﺎ، ﻓَﻔَﺰِﻋْﻨَﺎ ﻓَﻘُﻤْﻨَﺎ ﻓَﻜُﻨْﺖُ ﺃﻭَّﻝَ ﻣَﻦْ ﻓَﺰِﻉَ ﻓَﺨَﺮَﺟْﺖُ ﺃﺑْﺘَﻐِﻲ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﺣَﺘَّﻰ ﺃﺗَﻴْﺖُ ﺣَﺎﺋِﻄﺎً ﻟﻸﻧْﺼَﺎﺭِ ... ﻭَﺫَﻛَﺮَ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚَ ﺑِﻄُﻮﻟِﻪِ ﺇِﻟَﻰ ﻗﻮﻟﻪ : ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺍﺫﻫَﺐْ ﻓَﻤَﻦ ﻟَﻘِﻴﺖَ ﻭَﺭَﺍﺀَ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺤَﺎﺋِﻂِ ﻳَﺸْﻬَﺪُ ﺃﻥْ ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪ، ﻣُﺴْﺘَﻴﻘِﻨﺎً ﺑِﻬَﺎ ﻗَﻠﺒُﻪُ ﻓَﺒَﺸِّﺮْﻩُ ﺑِﺎﻟﺠَﻨَّﺔِ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১৩/৪২৯। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বসেছিলাম। আমাদের সঙ্গে আবূ বাকর ও উমার (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা)ও লোকদের একটি দলে উপস্থিত ছিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্য থেকে উঠে (কোথাও) গেলেন। তারপর তিনি আমাদের নিকট ফিরে আসতে বিলম্ব করলেন। সুতরাং আমরা ভয় করলাম যে, আমাদের অবর্তমানে তিনি (শত্রু) কবলিত না হন। অতঃপর আমরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে (সভা থেকে) উঠে গেলাম। সর্বপ্রথম আমিই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। সুতরাং আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খোঁজে বের হলাম। এমনকি শেষ পর্যন্ত এক আনসারীর বাগানে এলাম। (অতঃপর) তিনি দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করলেন, যাতে তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তুমি যাও! অতঃপর (এ বাগানের বাইরে) যার সাথেই তোমার সাক্ষাৎ ঘটবে, যে হৃদয়ের দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর সাক্ষ্য দেবে, তাকে তুমি জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে দাও।’’ (মুসলিম) [13]
14/430 ﻭَﻋَﻦ ﻋَﺒﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑﻦِ ﻋَﻤﺮِﻭ ﺑﻦِ ﺍﻟﻌَﺎﺹِ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ : ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒﻲَّ ﷺ ﺗَﻼَ ﻗَﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ - ﻋﺰ ﻭﺟﻞ - ﻓﻲ ﺇِﺑﺮَﺍﻫِﻴﻢَ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ : ﴿ ﺭَﺏِّ ﺇِﻧَّﻬُﻦَّ ﺃَﺿۡﻠَﻠۡﻦَ ﻛَﺜِﻴﺮٗﺍ ﻣِّﻦَ ﭐﻟﻨَّﺎﺱِۖ ﻓَﻤَﻦ ﺗَﺒِﻌَﻨِﻲ ﻓَﺈِﻧَّﻪُۥ ﻣِﻨِّﻲۖ ﻭَﻣَﻦۡ ﻋَﺼَﺎﻧِﻲ ﻓَﺈِﻧَّﻚَ ﻏَﻔُﻮﺭٞ ﺭَّﺣِﻴﻢٞ ٣٦ ﴾ [ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ : ٣٦ ] ﺍﻵﻳﺔ، ﻭﻗَﻮﻝَ ﻋِﻴﺴَﻰ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ : ﴿ ﺇِﻥ ﺗُﻌَﺬِّﺑۡﻬُﻢۡ ﻓَﺈِﻧَّﻬُﻢۡ ﻋِﺒَﺎﺩُﻙَۖ ﻭَﺇِﻥ ﺗَﻐۡﻔِﺮۡ ﻟَﻬُﻢۡ ﻓَﺈِﻧَّﻚَ ﺃَﻧﺖَ ﭐﻟۡﻌَﺰِﻳﺰُ ﭐﻟۡﺤَﻜِﻴﻢُ ١١٨ ﴾ [ ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ : ١١٨ ] ﻓَﺮَﻓَﻊَ ﻳَﺪَﻳﻪِ ﻭَﻗﺎﻝَ : « ﺍَﻟﻠﻬﻢ ﺃُﻣّﺘﻲ ﺃُﻣّﺘﻲ » ﻭﺑَﻜَﻰ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻠﻪ - ﻋﺰ ﻭﺟﻞ :- « ﻳَﺎ ﺟِﺒْﺮﻳﻞُ، ﺍﺫْﻫَﺐْ ﺇِﻟَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ - ﻭَﺭَﺑُّﻚَ ﺃﻋْﻠَﻢُ - ﻓَﺴَﻠْﻪُ ﻣَﺎ ﻳُﺒْﻜِﻴﻪِ ؟ » ﻓَﺄﺗَﺎﻩُ ﺟﺒﺮﻳﻞُ، ﻓَﺄﺧْﺒَﺮَﻩُ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ، ﺑِﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ - ﻭَﻫُﻮَ ﺃﻋْﻠَﻢُ - ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ : « ﻳَﺎ ﺟِﺒﺮﻳﻞُ، ﺍﺫْﻫَﺐْ ﺇِﻟَﻰ ﻣُﺤَﻤّﺪٍ، ﻓَﻘُﻞْ : ﺇﻧَّﺎ ﺳَﻨُﺮْﺿِﻴﻚَ ﻓﻲ ﺃُﻣّﺘِﻚَ ﻭَﻻَ ﻧَﺴُﻮﺀﻙَ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১৪/৪৩০। আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আমর ইবনুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইব্রাহীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ব্যাপারে আল্লাহর এ বাণী পাঠ করলেন, ‘‘হে আমার প্রতিপালক! এসব প্রতিমা বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে;
সুতরাং যে আমার অনুসরণ করবে সে আমার দলভুক্ত, কিন্তু কেউ আমার অবাধ্য হলে তুমি তো চরম ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’’ (সূরা ইব্রাহীম ৩৬) এবং ঈসা আলাইহিস সালাম-এর উক্তি (এ আয়াতটি পাঠ করলেন), ‘‘যদি তুমি তাদেরকে শাস্তি প্রদান কর, তবে তারা তোমার বান্দা। আর যদি তুমি তাদেরকে ক্ষমা কর, তবে তুমি অবশ্যই প্রবল পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।’’ (সূরা মায়েদাহ ১১৮ আয়াত) অতঃপর তিনি তাঁর হাত দু’খানি উঠিয়ে বললেন, ‘‘হে আল্লাহ! আমার উম্মত,
আমার উম্মত।’’ অতঃপর তিনি কাঁদতে লাগলেন। আল্লাহ আয্যা অজাল্ল বললেন, ‘হে জিব্রীল! তুমি মুহাম্মাদের নিকট যাও---আর তোমার রব বেশী জানেন---তারপর তাকে কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা কর?’
সুতরাং জিব্রীল তাঁর নিকট এলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে সে কথা জানালেন, যা তিনি (তাঁর উম্মত সম্পর্কে) বলেছিলেন---আর আল্লাহ তা অধিক জানেন। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বললেন, ‘হে জিব্রীল! তুমি (পুনরায়) মুহাম্মাদের কাছে যাও এবং বল,
আমি তোমার উম্মতের ব্যাপারে তোমাকে সন্তুষ্ট করে দেব এবং অসন্তুষ্ট করব না।’
(মুসলিম) [14]
15/431 ﻭَﻋَﻦ ﻣُﻌَﺎﺫِ ﺑﻦِ ﺟَﺒَﻞٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨْﺖُ ﺭِﺩْﻑَ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ ﻋَﻠَﻰ ﺣِﻤَﺎﺭٍ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﻳَﺎ ﻣُﻌَﺎﺫُ، ﻫَﻞْ ﺗَﺪْﺭِﻱ ﻣَﺎ ﺣَﻖُّ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻰ ﻋِﺒَﺎﺩِﻩِ ؟ ﻭَﻣَﺎ ﺣَﻖُّ ﺍﻟﻌِﺒَﺎﺩِ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠﻪ ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ ﺃﻋْﻠَﻢُ . ﻗَﺎﻝَ : « ﻓﺈﻥَّ ﺣَﻖَّ ﺍﻟﻠﻪِ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻌِﺒَﺎﺩِ ﺃﻥْ ﻳَﻌْﺒُﺪُﻭﻩُ، ﻭَﻻَ ﻳُﺸْﺮِﻛُﻮﺍ ﺑِﻪِ ﺷَﻴﺌﺎً، ﻭَﺣَﻖَّ ﺍﻟﻌِﺒَﺎﺩِ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠﻪِ ﺃﻥْ ﻻَ ﻳُﻌَﺬِّﺏَ ﻣَﻦْ ﻻ ﻳُﺸْﺮِﻙُ ﺑِﻪِ ﺷَﻴﺌﺎً » . ﻓﻘﻠﺖُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪ، ﺃﻓَﻼ ﺃُﺑَﺸِّﺮُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﻻَ ﺗُﺒَﺸِّﺮْﻫُﻢْ ﻓَﻴَﺘَّﻜِﻠُﻮﺍ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
১৫/৪৩১। মু‘আয ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি গাধার উপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে সওয়ার ছিলাম। তিনি বললেন, ‘‘হে মু‘আয! তুমি কি জানো, বান্দার উপর আল্লাহর হক কী এবং আল্লাহর উপর বান্দার হক কী?’’ আমি বললাম, ‘আল্লাহ ও তাঁর রসূলই অধিক জানেন।’ তিনি বললেন, ‘‘বান্দার উপর আল্লাহর হক এই যে, সে তাঁরই ইবাদত করবে,
এতে তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না। আর আল্লাহর উপর বান্দার হক এই যে,
যে ব্যক্তি তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না তিনি তাকে আযাব দেবেন না।’’
অতঃপর আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি কি লোকদেরকে (এ) সুসংবাদ দেব না?’
তিনি বললেন, ‘‘তাদেরকে সুসংবাদ দিও না। কেননা, তারা (এরই উপর) ভরসা করে বসবে।
(বুখারী ও মুসলিম) [15]
16/432 ﻭَﻋَﻦِ ﺍﻟﺒَﺮَﺍﺀِ ﺑﻦِ ﻋَﺎﺯِﺏٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ
ﷺ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺍﻟﻤُﺴْﻠِﻢُ ﺇِﺫَﺍ ﺳُﺌِﻞَ ﻓﻲ ﺍﻟﻘَﺒْﺮِ ﻳَﺸْﻬَﺪُ ﺃﻥْ ﻻَ ﺇِﻟٰﻪَ ﺇﻻَّ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭَﺃﻥّ ﻣُﺤَﻤّﺪﺍً ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪ، ﻓَﺬَﻟِﻚَ ﻗَﻮﻟُﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ : ﴿ ﻳُﺜَﺒِّﺖُ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﺑِﭑﻟۡﻘَﻮۡﻝِ ﭐﻟﺜَّﺎﺑِﺖِ ﻓِﻲ ﭐﻟۡﺤَﻴَﻮٰﺓِ ﭐﻟﺪُّﻧۡﻴَﺎ ﻭَﻓِﻲ ﭐﻟۡﺄٓﺧِﺮَﺓِۖ ﴾ [ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ : ٢٧ ] » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
১৬/৪৩২। বারা ইবনে আযিব রাদিয়াল্লাহু‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মুসলিমকে যখন কবরে প্রশ্ন করা হয়, তখন সে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া (সত্য) কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল। এই অর্থ রয়েছে আল্লাহ তা‘আলার এই বাণীতে, ‘যারা মু’মিন তাদেরকে আল্লাহ সুপ্রতিষ্ঠিত বাণী দ্বারা দুনিয়া ও আখেরাতের জীবনে প্রতিষ্ঠা দান করেন।’’
(সূরা ইব্রাহীম ১৭ আয়াত) (বুখারী ও মুসলিম) [16]
17/433 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﻧَﺲٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻋَﻦ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺇﻥّ ﺍﻟﻜَﺎﻓِﺮَ ﺇِﺫَﺍ ﻋَﻤِﻞَ ﺣَﺴَﻨَﺔً، ﺃُﻃﻌِﻢَ ﺑِﻬَﺎ ﻃُﻌْﻤَﺔً ﻣِﻦَ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ، ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﺍﻟﻤُﺆْﻣِﻦُ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻳَﺪَّﺧِﺮُ ﻟَﻪُ ﺣَﺴَﻨَﺎﺗِﻪِ ﻓﻲ ﺍﻵﺧِﺮَﺓِ، ﻭَﻳُﻌْﻘِﺒُﻪُ ﺭِﺯْﻗﺎً ﻓﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻃَﺎﻋَﺘِﻪِ » .
ﻭَﻓﻲ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔٍ : « ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠﻪ ﻻَ ﻳَﻈْﻠِﻢُ ﻣُﺆْﻣِﻨﺎً ﺣَﺴَﻨَﺔً ﻳُﻌْﻄَﻰ ﺑِﻬَﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ، ﻭَﻳُﺠْﺰَﻯ ﺑِﻬَﺎ ﻓﻲ ﺍﻵﺧِﺮَﺓِ . ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﺍﻟﻜَﺎﻓِﺮُ ﻓَﻴُﻄْﻌَﻢُ ﺑِﺤَﺴَﻨَﺎﺕِ ﻣَﺎ ﻋَﻤِﻞَ ﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ، ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﺃﻓْﻀَﻰ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻵﺧﺮَﺓِ، ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦْ ﻟَﻪُ ﺣَﺴَﻨَﺔٌ ﻳُﺠْﺰَﻯ ﺑِﻬَﺎ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১৭/৪৩৩। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কাফের যখন দুনিয়াতে কোনো পুণ্য কাজ করে, তখন বিনিময়ে তাকে দুনিয়ার (কিছু আনন্দ/খাবার জাতীয়) উপভোগ করতে দেওয়া হয়। (আর আখেরাতে সে এর কিছুই প্রতিদান পাবে না)। কিন্তু মু’মিনের জন্য আল্লাহ তা’আলা আখেরাতে তার প্রতিদানকে সঞ্চিত করে রাখেন এবং দুনিয়াতে তিনি তাকে জীবিকা দেন তাঁর আনুগত্যের বিনিময়ে।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘মহান আল্লাহ কোন মু’মিনের উপর তার নেকীর ব্যাপারে যুলুম করেন না। তাকে তার প্রতিদান দুনিয়াতেও দেওয়া হয় এবং আখেরাতেও দেওয়া হবে। কিন্তু কাফেরকে ভাল কাজের বিনিময়--যা সে আল্লাহর জন্য করে--দুনিয়াতেই দিয়ে দেওয়া হয়। এমন কি যখন সে আখেরাতে পাড়ি দেবে, তখন তার এমন কোনো পুণ্য থাকবে না যে, তার বিনিময়ে তাকে কিছু (পুরস্কার) দেওয়া যাবে।’’
(মুসলিম) [17]
18/434 ﻭَﻋَﻦ ﺟَﺎﺑِﺮٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ
ﷺ : « ﻣَﺜَﻞُ ﺍﻟﺼَّﻠَﻮَﺍﺕِ ﺍﻟﺨَﻤْﺲِ ﻛَﻤَﺜَﻞِ ﻧَﻬْﺮٍ ﺟَﺎﺭٍ ﻏَﻤْﺮٍ ﻋَﻠَﻰ ﺑَﺎﺏِ ﺃﺣَﺪِﻛُﻢْ ﻳَﻐْﺘَﺴِﻞُ ﻣِﻨْﻪُ ﻛُﻞَّ ﻳَﻮْﻡ ﺧَﻤْﺲَ ﻣَﺮَّﺍﺕ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১৮/৪৩৪। জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘পাঁচ ওয়াক্তের নামাযের উদাহরণ প্রচুর পানিতে পরিপূর্ণ ঐ নদীর মত, যা তোমাদের কারো দুয়ারের (সামনে বয়ে) প্রবাহিত হয়, যাতে সে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে।’’ (মুসলিম)
[18]
19/435 ﻭَﻋَﻦِ ﺍﺑﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ، ﻗَﺎﻝَ : ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : « ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﺭَﺟُﻞٍ ﻣُﺴْﻠِﻢٍ ﻳَﻤُﻮﺕُ، ﻓَﻴﻘُﻮﻡُ ﻋَﻠَﻰ ﺟَﻨَﺎﺯَﺗﻪِ ﺃﺭْﺑَﻌُﻮﻥَ ﺭَﺟُﻼً ﻻَ ﻳُﺸْﺮِﻛُﻮﻥَ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﺷَﻴﺌﺎً، ﺇﻻَّ ﺷَﻔَّﻌَﻬُﻢُ ﺍﻟﻠﻪُ ﻓِﻴﻪِ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১৯/৪৩৫। ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু
‘আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘যে কোনো মুসলিম মারা যায় আর তার জানাযায় এমন চল্লিশজন লোক শরীক হয়,
যারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে না। নিশ্চয় আল্লাহ তার ব্যাপারে তাদের সুপারিশ কবূল করেন।’’ (মুসলিম) [19]
20/436 ﻭَﻋَﻦِ ﺍﺑﻦِ ﻣَﺴﻌُﻮﺩٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨَّﺎ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﻓﻲ ﻗُﺒَّﺔ ﻧَﺤْﻮﺍً ﻣِﻦْ ﺃﺭﺑَﻌِﻴﻦَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺃﺗَﺮْﺿَﻮﻥَ ﺃﻥْ ﺗَﻜُﻮﻧُﻮﺍ ﺭُﺑُﻊَ ﺃﻫْﻞِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ؟ » ﻗُﻠْﻨَﺎ : ﻧَﻌَﻢْ . ﻗَﺎﻝَ : « ﺃﺗَﺮْﺿَﻮْﻥَ ﺃﻥْ ﺗَﻜُﻮﻧُﻮﺍ ﺛُﻠُﺚَ ﺃﻫﻞِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ؟ » ﻗُﻠْﻨَﺎ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻭَﺍﻟَّﺬِﻱ ﻧَﻔْﺲُ ﻣُﺤَﻤّﺪٍ ﺑﻴَﺪِﻩِ، ﺇﻧِّﻲ ﻷَﺭْﺟُﻮ ﺃﻥْ ﺗَﻜُﻮﻧُﻮﺍ ﻧِﺼْﻒَ ﺃﻫْﻞِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﺃﻥَّ ﺍﻟﺠﻨَّﺔَ ﻻَ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻬَﺎ ﺇﻻَّ ﻧَﻔْﺲٌ ﻣُﺴْﻠِﻤَﺔٌ، ﻭﻣَﺎ ﺃﻧْﺘُﻢ ﻓﻲ ﺃﻫْﻞِ ﺍﻟﺸِّﺮﻙِ ﺇﻻَّ ﻛَﺎﻟﺸَّﻌْﺮَﺓِ ﺍﻟﺒَﻴْﻀَﺎﺀِ ﻓِﻲ ﺟِﻠﺪِ ﺍﻟﺜَّﻮﺭِ ﺍﻷَﺳْﻮَﺩِ، ﺃَﻭْ ﻛَﺎﻟﺸَّﻌْﺮَﺓِ ﺍﻟﺴَّﻮﺩَﺍﺀِ ﻓﻲ ﺟِﻠﺪِ ﺍﻟﺜَّﻮﺭِ ﺍﻷﺣْﻤَﺮ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
২০/৪৩৬। ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমরা প্রায় চল্লিশ জন মানুষ রাসূলুললাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে একটি তাঁবুতে ছিলাম। একসময় তিনি বললেন, ‘‘তোমরা কি পছন্দ কর যে, তোমরা জান্নাতবাসীদের এক চতুর্থাংশ হবে?’’ আমরা বললাম, ‘জী হ্যাঁ।’
তিনি বললেন, ‘‘তোমরা কি জান্নাতবাসীদের এক তৃতীয়াংশ হতে পছন্দ কর?’’ আমরা বললাম, ‘জী হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘‘তাঁর শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ আছে, আমি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশী যে,
জান্নাতবাসীদের অর্ধেক তোমরাই হবে। এটা এ জন্য যে, শুধুমাত্র মুসলিম প্রাণ ছাড়া অন্য কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আর মুশরিকদের তুলনায় তোমরা এরূপ, যেরূপ কালো বলদের গায়ে (একটি) সাদা লোম অথবা লাল বলদের গায়ে (একটি) কালো লোম।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [20]
21/437 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺍﻷَﺷﻌَﺮِﻱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻮْﻡُ ﺍﻟﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﺩَﻓَﻊَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺇِﻟَﻰ ﻛُﻞِّ ﻣُﺴْﻠِﻢ ﻳَﻬُﻮﺩِﻳﺎً ﺃَﻭْ ﻧَﺼْﺮَﺍﻧِﻴﺎً، ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ : ﻫَﺬَﺍ ﻓِﻜَﺎﻛُﻚَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ » .
ﻭَﻓِﻲ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔٍ ﻋَﻨْﻪُ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻳَﺠِﻲﺀُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻧَﺎﺱٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻤُﺴْﻠِﻤﻴﻦَ ﺑِﺬُﻧُﻮﺏٍ ﺃَﻣْﺜَﺎﻝ ﺍﻟﺠِﺒَﺎﻝِ ﻳَﻐْﻔِﺮُﻫَﺎ ﺍﻟﻠﻪ ﻟَﻬُﻢْ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
২১/৪৩৭। আবূ মূসা আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ প্রত্যেক মুসলিমকে একজন ইয়াহুদী অথবা খ্রিষ্টানকে দিয়ে বলবেন, ‘এই তোমার জাহান্নাম থেকে বাঁচার মুক্তিপণ।’’
উক্ত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই অন্য এক বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কিয়ামতের দিন কিছু সংখ্যক মুসলিম পাহাড় সম পাপ নিয়ে উপস্থিত হবে, আল্লাহ তা (সবই) তাদের জন্য ক্ষমা করে দেবেন।’’
(মুসলিম) [21]
* ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ প্রত্যেক মুসলিমকে একজন ইয়াহুদী অথবা খৃষ্টানকে দিয়ে বলবেন, এই তোমার জাহান্নাম থেকে বাঁচার মুক্তিপণ।’ এ কথার অর্থ আবূ হুরাইরার হাদীসে বর্ণিত হয়েছে; ‘প্রত্যেকের জন্য বেহেশ্তে একটি নির্দিষ্ট স্থান আছে এবং জাহান্নামেও আছে। সুতরাং মু’মিন যখন বেহেশ্তে প্রবেশ করবে, তখন জাহান্নামে তার স্থলাভিষিক্ত হবে কাফের। যেহেতু সে তার কুফরীর কারণে তার উপযুক্ত। আর
‘মুক্তিপণ’ অর্থ এই যে, তুমি জাহান্নামের সম্মুখীন ছিলে; কিন্তু এটি হল তোমার মুক্তির বিনিময়। যেহেতু মহান আল্লাহ জাহান্নাম ভরতি করার জন্য একটি সংখ্যা নির্ধারিত রেখেছেন। সুতরাং তারা যখন তাদের কুফরী ও পাপের কারণে সেখানে প্রবেশ করবে, তখন তারা হবে মু’মিনদের
‘মুক্তিপণ।’ আর আল্লাহই অধিক জানেন।
22/438 ﻭَﻋَﻦِ ﺍﺑﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ، ﻗَﺎﻝَ : ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : « ﻳُﺪْﻧَﻰ ﺍﻟﻤُﺆْﻣِﻦُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻘِﻴَﺎﻣَﺔ ﻣِﻦْ ﺭَﺑِّﻪِ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻀَﻊَ ﻛَﻨَﻔَﻪُ ﻋَﻠَﻴﻪِ، ﻓَﻴُﻘَﺮِّﺭُﻩُ ﺑﺬُﻧُﻮﺑِﻪِ، ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ : ﺃَﺗَﻌﺮِﻑُ ﺫَﻧْﺐَ ﻛَﺬَﺍ ؟ ﺃﺗَﻌﺮِﻑُ ﺫَﻧْﺐَ ﻛَﺬَﺍ ؟ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ : ﺭَﺏِّ ﺃﻋْﺮِﻑُ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺈﻧِّﻲ ﻗَﺪْ ﺳَﺘَﺮْﺗُﻬَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴﺎ، ﻭَﺃﻧَﺎ ﺃﻏْﻔِﺮُﻫَﺎ ﻟَﻚَ ﺍﻟﻴَﻮﻡَ، ﻓَﻴُﻌْﻄَﻰ ﺻَﺤِﻴﻔَﺔَ ﺣَﺴَﻨَﺎﺗِﻪِ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
২২/৪৩৮। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘কিয়ামতের দিন ঈমানদারকে রাববুল আলামীনের এত নিকটে নিয়ে আনা হবে যে,
আল্লাহ তা‘আলা তার উপর নিজ পর্দা রেখে তার পাপসমূহের সবীকারোক্তি আদায় করে নেবেন। তাকে জিজ্ঞেস করবেন, ‘এই পাপ তুমি জান কি? এই পাপ চিন কি?’ মু’মিন বলবে, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি জানি।’
তিনি বলবেন, ‘আমি পৃথিবীতে তোমার পাপকে গোপন রেখেছি, আর আজ তা তোমার জন্য ক্ষমা করে দিচ্ছি।’ অতঃপর তাকে তার নেক আমলের আমলনামা দেওয়া হবে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [22]
23/439 ﻭَﻋَﻦِ ﺍﺑﻦِ ﻣَﺴﻌُﻮﺩٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ : ﺃﻥَّ ﺭَﺟُﻼً ﺃﺻَﺎﺏَ ﻣِﻦ ﺍﻣْﺮَﺃﺓ ﻗُﺒْﻠَﺔً، ﻓَﺄﺗَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒﻲَّ ﷺ ﻓَﺄﺧْﺒَﺮَﻩُ، ﻓَﺄﻧْﺰَﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ : ﴿ ﻭَﺃَﻗِﻢِ ﭐﻟﺼَّﻠَﻮٰﺓَ ﻃَﺮَﻓَﻲِ ﭐﻟﻨَّﻬَﺎﺭِ ﻭَﺯُﻟَﻔٗﺎ ﻣِّﻦَ ﭐﻟَّﻴۡﻞِۚ ﺇِﻥَّ ﭐﻟۡﺤَﺴَﻨَٰﺖِ ﻳُﺬۡﻫِﺒۡﻦَ ﭐﻟﺴَّﻴَِّٔﺎﺕِۚ ﴾ [ ﻫﻮﺩ : ١١٤ ] ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟﺮﺟﻞ : ﺃَﻟِﻲ ﻫَﺬَﺍ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﻟِﺠَﻤِﻴﻊِ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻛُﻠِّﻬِﻢْ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
২৩/৪৩৯। ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি এক মহিলাকে চুমা দিয়ে ফেলে। পরে সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বিষয়টি জানায়। তখন আল্লাহ তা‘আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেন, ‘‘দিনের দু’প্রান্তে সকাল ও সন্ধ্যায় এবং রাতের প্রথম ভাগে নামায কায়েম কর। নিশ্চয়ই পুণ্যরাশি পাপরাশিকে মিটিয়ে দেয়।’’ (সূরা হূদ ১১৪) লোকটি জিজ্ঞেস করল, ‘হে আল্লাহর রসূল! এ কি শুধু আমার জন্য?’ তিনি বললেন, ‘‘না, এ আমার সকল উম্মতের জন্য।’’
(বুখারী ও মুসলিম) [23]
24/440 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﻧَﺲٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﺟَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺃَﺻَﺒْﺖُ ﺣَﺪّﺍً، ﻓَﺄَﻗِﻤْﻪُ ﻋَﻠَﻲَّ، ﻭَﺣَﻀَﺮَﺕِ ﺍﻟﺼَّﻼﺓُ، ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻗَﻀَﻰ ﺍﻟﺼَّﻼﺓَ، ﻗَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺇﻧِّﻲ ﺃﺻَﺒْﺖُ ﺣَﺪّﺍً ﻓَﺄﻗِﻢْ ﻓﻲَّ ﻛِﺘَﺎﺏَ ﺍﻟﻠﻪِ . ﻗَﺎﻝَ : « ﻫَﻞْ ﺣَﻀَﺮْﺕَ ﻣَﻌَﻨَﺎ ﺍﻟﺼَّﻼﺓَ » ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻧَﻌَﻢْ . ﻗَﺎﻝَ : « ﻗَﺪْ ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻚَ » . ﻣُﺘَّﻔَﻖٌ ﻋَﻠَﻴﻪِ
২৪/৪৪০। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি দণ্ডনীয় অপরাধ করে ফেলেছি; তাই আমার উপর দণ্ড প্রয়োগ করুন।’
ইতোমধ্যে নামাযের সময় হল। সেও আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে নামায পড়ল। নামায শেষ করে পুনরায় সে বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! নিশ্চয় আমি
দণ্ডনীয় অপরাধ করে ফেলেছি; তাই আমার উপর আল্লাহর কিতাবে ঘোষিত দণ্ড প্রয়োগ করুন।’ তিনি বললেন, ‘‘তুমি কি আমাদের সাথে নামায আদায় করেছ?’’ সে বলল, ‘জী হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘‘নিশ্চই তোমার অপরাধ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [24]
* উক্ত হাদীসে ‘দণ্ডনীয় অপরাধ’ বলতে সেই অপরাধ উদ্দেশ্য নয়, যাতে শরীয়তে নির্ধারিত দণ্ড আছে; যেমন মদপান,
ব্যভিচার প্রভৃতি। কেননা এমন দণ্ডনীয় অপরাধ নামায পড়লেই ক্ষমা হয়ে যাবে না। যেমন সে দণ্ড প্রয়োগ না করাও শাসকের জন্য বৈধ নয়।
25/441 ﻭَﻋَﻨﻪُ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ : « ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠﻪ ﻟَﻴﺮْﺿَﻰ ﻋَﻦِ ﺍﻟﻌَﺒْﺪِ ﺃﻥْ ﻳَﺄﻛُﻞَ ﺍﻷَﻛْﻠَﺔَ، ﻓَﻴَﺤْﻤَﺪُﻩُ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ، ﺃَﻭْ ﻳَﺸْﺮَﺏَ ﺍﻟﺸَّﺮْﺑَﺔَ، ﻓَﻴَﺤْﻤَﺪُﻩُ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
২৫/৪৪১। উক্ত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু‘আনহু থেকেই বর্ণিত, রসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা বান্দার (এ কাজে) সন্তুষ্ট হন যে, (কিছু) খেলে সে তার উপর আল্লাহর প্রশংসা করে অথবা কিছু পান করলে সে তার উপর তাঁর প্রশংসা করে।’’ (মুসলিম) [25]
26/442 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻳَﺒْﺴُﻂُ ﻳَﺪَﻩُ ﺑﺎﻟﻠَّﻴﻞِ ﻟﻴَﺘُﻮﺏَ ﻣُﺴِﻲﺀُ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭِ، ﻭَﻳَﺒْﺴُﻂُ ﻳَﺪَﻩُ ﺑﺎﻟﻨَّﻬَﺎﺭِ ﻟِﻴَﺘُﻮﺏَ ﻣُﺴِﻲﺀُ ﺍﻟﻠَّﻴﻞِ، ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻄﻠُﻊَ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ ﻣِﻦْ ﻣَﻐْﺮِﺑِﻬَﺎ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
২৬/৪৪২। আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা রাতে নিজ হাত প্রসারিত করেন, যেন দিবাভাগের অপরাধী তাওবাহ করে নেয়। আর তিনি দিনেও নিজ হাত প্রসারিত করেন, যেন রাতের অপরাধী তাওবাহ করে নেয়। যতক্ষণ না পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয় হবে (এ নিয়ম অব্যাহত থাকবে)।’’ (মুসলিম)
[26]
27/443 ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻧَﺠِﻴﺢٍ ﻋَﻤﺮِﻭ ﺑﻦِ ﻋَﺒَﺴَﺔَ ﺍﻟﺴُّﻠَﻤِﻲِّ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨْﺖُ ﻭﺃﻧَﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺠﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﺃﻇُﻦُّ ﺃﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﻋَﻠَﻰ ﺿَﻼَﻟَﺔٍ، ﻭَﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﻟَﻴْﺴُﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺷَﻲْﺀٍ، ﻭَﻫُﻢْ ﻳَﻌْﺒُﺪُﻭﻥَ ﺍﻷَﻭْﺛَﺎﻥَ، ﻓَﺴَﻤِﻌْﺖُ ﺑِﺮَﺟُﻞٍ ﺑِﻤَﻜَّﺔَ ﻳُﺨْﺒِﺮُ ﺃﺧْﺒَﺎﺭﺍً، ﻓَﻘَﻌَﺪْﺕُ ﻋَﻠَﻰ ﺭَﺍﺣِﻠَﺘِﻲ، ﻓَﻘَﺪِﻣْﺖُ ﻋَﻠَﻴﻪِ، ﻓﺈِﺫَﺍ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﻣُﺴْﺘَﺨْﻔِﻴﺎً، ﺟُﺮَﺀَﺍﺀُ ﻋَﻠَﻴﻪِ ﻗَﻮﻣُﻪُ، ﻓَﺘَﻠَﻄَّﻔَﺖُ ﺣَﺘَّﻰ ﺩَﺧَﻠْﺖُ ﻋَﻠَﻴﻪِ ﺑِﻤَﻜَّﺔَ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻪُ : ﻣَﺎ ﺃﻧْﺖَ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﺃَﻧَﺎ ﻧَﺒﻲٌّ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻭَﻣَﺎ ﻧَﺒِﻲٌّ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﺃﺭْﺳَﻠَﻨِﻲ ﺍﻟﻠﻪ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻭَﺑِﺄَﻱِّ ﺷَﻲْﺀ ﺃﺭْﺳَﻠَﻚَ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﺃَﺭْﺳَﻠَﻨِﻲ ﺑِﺼِﻠَﺔِ ﺍﻷﺭْﺣَﺎﻡِ، ﻭَﻛَﺴْﺮِ ﺍﻷَﻭْﺛَﺎﻥِ، ﻭَﺃﻥْ ﻳُﻮَﺣَّﺪَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻻَ ﻳُﺸْﺮَﻙُ ﺑِﻪِ ﺷَﻲْﺀ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻓَﻤَﻦْ ﻣَﻌَﻚَ ﻋَﻠَﻰ ﻫَﺬَﺍ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﺣُﺮٌّ ﻭَﻋَﺒْﺪٌ » ﻭَﻣَﻌَﻪُ ﻳَﻮْﻣَﺌﺬٍ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜﺮٍ ﻭَﺑِﻼَﻝٌ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨﻬُﻤَﺎ، ﻗُﻠْﺖُ : ﺇﻧّﻲ ﻣُﺘَّﺒِﻌُﻚَ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺇﻧَّﻚَ ﻟَﻦْ ﺗَﺴْﺘَﻄﻴﻊَ ﺫﻟِﻚَ ﻳَﻮﻣَﻚَ ﻫَﺬَﺍ، ﺃﻻ ﺗَﺮَﻯ ﺣَﺎﻟﻲ ﻭﺣﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ؟ ﻭَﻟَﻜِﻦِ ﺍﺭْﺟﻊْ ﺇِﻟَﻰ ﺃﻫْﻠِﻚَ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺳَﻤِﻌْﺖَ ﺑِﻲ ﻗَﺪْ ﻇَﻬﺮْﺕُ ﻓَﺄﺗِﻨِﻲ » ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺬَﻫَﺒْﺖُ ﺇِﻟَﻰ ﺃﻫْﻠِﻲ ﻭﻗَﺪِﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ ﺍﻟﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ ﺣَﺘَّﻰ ﻗَﺪِﻡَ ﻧَﻔَﺮٌ ﻣِﻦْ ﺃﻫْﻠِﻲ ﺍﻟﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ، ﻓَﻘُﻠﺖُ : ﻣَﺎ ﻓَﻌَﻞَ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻗَﺪِﻡَ ﺍﻟﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ ؟ ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ : ﺍﻟﻨَّﺎﺱ ﺇﻟَﻴﻪِ ﺳِﺮَﺍﻉٌ، ﻭَﻗَﺪْ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﻗَﻮﻣُﻪُ ﻗَﺘْﻠَﻪُ، ﻓﻠَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻴﻌُﻮﺍ ﺫﻟِﻚَ، ﻓﻘَﺪِﻣْﺖُ ﺍﻟﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ، ﻓَﺪَﺧَﻠْﺖُ ﻋَﻠَﻴﻪِ، ﻓَﻘُﻠﺖُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺃَﺗَﻌْﺮِﻓُﻨﻲ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﻧَﻌَﻢْ، ﺃﻧْﺖَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻟَﻘَﻴْﺘَﻨِﻲ ﺑﻤﻜّﺔَ » ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﻘُﻠﺖُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺃﺧْﺒِﺮﻧِﻲ ﻋَﻤَّﺎ ﻋَﻠَّﻤَﻚَ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺃَﺟْﻬَﻠُﻪُ، ﺃﺧْﺒِﺮْﻧِﻲ ﻋَﻦِ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ؟ ﻗَﺎﻝَ : « ﺻَﻞِّ ﺻَﻼَﺓَ ﺍﻟﺼُّﺒْﺢِ، ﺛُﻢَّ ﺍﻗْﺼُﺮْ ﻋَﻦِ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﺮْﺗَﻔِﻊَ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ ﻗِﻴﺪَ ﺭُﻣْﺢٍ، ﻓَﺈﻧَّﻬَﺎ ﺗَﻄْﻠُﻊُ ﺣِﻴﻦَ ﺗَﻄﻠُﻊُ ﺑَﻴْﻦَ ﻗَﺮْﻧَﻲْ ﺷَﻴﻄَﺎﻥ، ﻭَﺣﻴﻨَﺌﺬٍ ﻳَﺴﺠُﺪُ ﻟَﻬَﺎ ﺍﻟﻜُﻔَّﺎﺭُ، ﺛُﻢَّ ﺻَﻞِّ ﻓَﺈﻥَّ ﺍﻟﺼَﻼَﺓَ ﻣَﺸْﻬُﻮﺩَﺓٌ ﻣَﺤْﻀُﻮﺭﺓٌ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺴْﺘَﻘِﻞَّ ﺍﻟﻈِّﻞُّ ﺑﺎﻟﺮُّﻣْﺢِ، ﺛُﻢَّ ﺍﻗْﺼُﺮْ ﻋَﻦِ ﺍﻟﺼَّﻼﺓِ، ﻓَﺈﻧَّﻪُ ﺣﻴﻨﺌﺬ ﺗُﺴْﺠَﺮُ ﺟَﻬَﻨَّﻢُ، ﻓﺈﺫَﺍ ﺃﻗْﺒَﻞَ ﺍﻟﻔَﻲْﺀُ ﻓَﺼَﻞِّ، ﻓَﺈﻥَّ ﺍﻟﺼَّﻼﺓَ ﻣَﺸْﻬُﻮﺩَﺓٌ ﻣَﺤﻀُﻮﺭَﺓٌ ﺣَﺘَّﻰ ﺗُﺼَﻠِّﻲ ﺍﻟﻌَﺼﺮَ، ﺛُﻢَّ ﺍﻗْﺼﺮْ ﻋَﻦِ ﺍﻟﺼَّﻼﺓِ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻐْﺮُﺏَ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ، ﻓﺈﻧَّﻬَﺎ ﺗَﻐْﺮُﺏُ ﺑﻴﻦَ ﻗَﺮْﻧَﻲْ ﺷَﻴﻄَﺎﻥٍ، ﻭَﺣِﻴﻨَﺌﺬٍ ﻳَﺴْﺠُﺪُ ﻟَﻬَﺎ ﺍﻟﻜُﻔّﺎﺭُ » ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﻘُﻠﺖُ : ﻳَﺎ ﻧَﺒﻲَّ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻓَﺎﻟﻮُﺿُﻮﺀُ ﺣَﺪِّﺛﻨِﻲ ﻋَﻨْﻪُ ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﻣَﺎ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﺭَﺟُﻞٌ ﻳُﻘَﺮِّﺏُ ﻭَﺿُﻮﺀَﻩُ، ﻓَﻴَﺘَﻤَﻀْﻤَﺾُ ﻭَﻳﺴْﺘَﻨْﺸِﻖُ ﻓَﻴَﺴْﺘَﻨْﺜِﺮُ، ﺇﻻَّ ﺧَﺮَّﺕْ ﺧَﻄَﺎﻳَﺎ ﻭَﺟْﻬِﻪِ ﻣِﻦْ ﺃﻃْﺮَﺍﻑِ ﻟِﺤْﻴَﺘِﻪِ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻤَﺎﺀِ، ﺛُﻢَّ ﻳَﻐْﺴِﻞُ ﻳَﺪَﻳﻪِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻤِﺮﻓﻘَﻴْﻦ، ﺇﻻَّ ﺧَﺮَّﺕْ ﺧَﻄَﺎﻳَﺎ ﻳَﺪَﻳْﻪِ ﻣِﻦْ ﺃﻧَﺎﻣِﻠِﻪِ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻤﺎﺀِ، ﺛُﻢَّ ﻳَﻤْﺴَﺢُ ﺭَﺃﺳَﻪُ، ﺇﻻَّ ﺧَﺮَّﺕْ ﺧَﻄَﺎﻳَﺎ ﺭَﺃﺳِﻪِ ﻣِﻦ ﺃﻃْﺮَﺍﻑِ ﺷَﻌْﺮِﻩِ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻤﺎَﺀِ، ﺛُﻢَّ ﻳَﻐﺴِﻞُ ﻗَﺪَﻣَﻴﻪِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻜَﻌْﺒَﻴْﻦِ، ﺇﻻَّ ﺧَﺮَّﺕْ ﺧَﻄَﺎﻳَﺎ ﺭِﺟﻠَﻴْﻪِ ﻣِﻦْ ﺃﻧَﺎﻣﻠِﻪِ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻤﺎَﺀِ، ﻓَﺈﻥْ ﻫُﻮَ ﻗَﺎﻡَ ﻓَﺼَﻠَّﻰ، ﻓَﺤَﻤِﺪَ ﺍﻟﻠﻪ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ، ﻭَﺃَﺛﻨَﻰ ﻋَﻠَﻴﻪِ ﻭﻣَﺠَّﺪَﻩُ ﺑﺎﻟَّﺬِﻱ ﻫُﻮَ ﻟَﻪُ ﺃﻫْﻞٌ، ﻭَﻓَﺮَّﻍَ ﻗَﻠﺒَﻪُ ﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ، ﺇﻻَّ ﺍﻧْﺼَﺮﻑَ ﻣِﻦْ ﺧَﻄِﻴﺌَﺘِﻪِ ﻛَﻬَﻴﺌَﺘِﻪ ﻳَﻮﻡَ ﻭَﻟَﺪَﺗﻪُ ﺃُﻣُّﻪُ » . ﻓَﺤَﺪَّﺙَ ﻋَﻤﺮُﻭ ﺑﻦُ ﻋَﺒَﺴَﺔَ ﺑِﻬَﺬَﺍ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚِ ﺃَﺑَﺎ ﺃُﻣَﺎﻣَﺔَ ﺻَﺎﺣِﺐَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﺃَﺑُﻮ ﺃُﻣَﺎﻣَﺔ : ﻳَﺎ ﻋَﻤْﺮَﻭ ﺑﻦَ ﻋَﺒَﺴَﺔَ، ﺍﻧْﻈُﺮ ﻣَﺎ ﺗﻘﻮﻝُ ! ﻓِﻲ ﻣَﻘَﺎﻡٍ ﻭَﺍﺣِﺪٍ ﻳُﻌْﻄَﻰ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻋَﻤْﺮٌﻭ : ﻳَﺎ ﺃَﺑَﺎ ﺃُﻣَﺎﻣَﺔَ، ﻟَﻘَﺪ ﻛَﺒُﺮَﺕْ ﺳِﻨّﻲ، ﻭَﺭَﻕَّ ﻋَﻈﻤِﻲ، ﻭَﺍﻗْﺘَﺮَﺏَ ﺃﺟَﻠِﻲ، ﻭَﻣَﺎ ﺑِﻲ ﺣَﺎﺟَﺔٌ ﺃﻥْ ﺃﻛْﺬِﺏَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ، ﻭَﻻَ ﻋَﻠَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﷺ، ﻟَﻮْ ﻟَﻢْ ﺃﺳﻤﻌﻪ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ
ﷺ، ﺇﻻَّ ﻣَﺮَّﺓً ﺃَﻭْ ﻣَﺮَّﺗَﻴﻦِ ﺃَﻭْ ﺛَﻼﺛﺎً، ﺣَﺘَّﻰ ﻋَﺪَّ ﺳَﺒْﻊَ ﻣَﺮَّﺍﺕ، ﻣَﺎ ﺣَﺪَّﺛْﺖُ ﺃﺑَﺪﺍً ﺑِﻪِ، ﻭَﻟﻜﻨِّﻲ ﺳَﻤِﻌﺘُﻪُ ﺃﻛﺜَﺮَ ﻣِﻦ ﺫَﻟِﻚَ . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
২৭/৪৪৩। আবূ নাজীহ ‘আমর ইবনে ‘আবাসাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, জাহেলিয়াতের (প্রাগৈসলামিক) যুগ থেকেই আমি ধারণা করতাম যে, লোকেরা পথভ্রষ্টতার উপর রয়েছে এবং এরা কোন ধর্মেই নেই, আর ওরা প্রতিমা পূজা করছে। অতঃপর আমি এক ব্যক্তির ব্যাপারে শুনলাম যে, তিনি মক্কায় অনেক আজব আজব খবর বলছেন। সুতরাং আমি আমার সওয়ারীর উপর বসে তাঁর কাছে এসে দেখলাম যে, তিনি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তিনি গুপ্তভাবে (ইসলাম প্রচার করছেন), আর তাঁর সম্প্রদায় (মুশরিকরা) তাঁর প্রতি (দুর্ব্যবহার করে) দুঃসাহসিকতা প্রদর্শন করছে। সুতরাং আমি বিচক্ষণতার সাথে কাজ নিলাম। পরিশেষে আমি মক্কায় তাঁর কাছে প্রবেশ করলাম। অতঃপর আমি তাঁকে বললাম, ‘আপনি কী?’ তিনি বললেন, ‘‘আমি নবী।’’ আমি বললাম, ‘নবী কী?’ তিনি বললেন, ‘‘আমাকে মহান আল্লাহ প্রেরণ করেছেন।’’ আমি বললাম, ‘কী নির্দেশ দিয়ে প্রেরণ করেছেন?’ তিনি বললেন, ‘‘জ্ঞাতিবন্ধন অক্ষুণ্ণ রাখা, মূর্তি ভেঙ্গে ফেলা,
আল্লাহকে একক উপাস্য মানা এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করার নির্দেশ দিয়ে।’’ আমি বললাম, ‘এ কাজে আপনার সঙ্গে কে আছে?’ তিনি বললেন, ‘‘একজন স্বাধীন মানুষ এবং একজন কৃতদাস।’’ তখন তাঁর সঙ্গে আবূ বকর ও বিলাল (রাদিয়াল্লাহু
‘আনহুমা) ছিলেন। আমি বললাম, ‘আমিও আপনার অনুগত।’ তিনি বললেন, ‘‘তুমি এখন এ কাজ কোনো অবস্থাতেই করতে পারবে না। তুমি কি আমার অবস্থা ও লোকদের অবস্থা দেখতে পাও না? অতএব তুমি (এখন) বাড়ি ফিরে যাও। অতঃপর যখন তুমি আমার জয়ী ও শক্তিশালী হওয়ার সংবাদ পাবে, তখন আমার কাছে এসো।’’
সুতরাং আমি আমার পরিবার পরিজনের নিকট চলে গেলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
(পরিশেষে) মদীনা চলে এলেন, আর আমি স্বপরিবারেই ছিলাম। অতঃপর আমি খবরাখবর নিতে আরম্ভ করলাম এবং যখন তিনি মদীনায় আগমন করলেন, তখন আমি (তাঁর ব্যাপারে) লোকদেরকে জিজ্ঞাসা করতে লাগলাম। অবশেষে আমার পরিবারের কিছু লোক মদীনায় এল। আমি বললাম, ‘ঐ লোকটার অবস্থা কি, যিনি (মক্কা ত্যাগ করে) মদীনা এসেছেন?’ তারা বলল, ‘লোকেরা তার দিকে ধাবমান। তাঁর সম্প্রদায় তাঁকে হত্যা করার ইচ্ছা করেছিল;
কিন্তু তারা তা করতে সক্ষম হয়নি।’
অতঃপর আমি মদীনা এসে তাঁর খিদমতে হাযির হলাম। তারপর আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাকে চিনতে পারছেন?’ তিনি বললেন, ‘‘হ্যাঁ, তুমি তো ঐ ব্যক্তি, যে মক্কায় আমার সাথে সাক্ষাৎ করেছিল।’’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে যা শিক্ষা দিয়েছেন এবং যা আমার অজানা---তা আমাকে বলুন? আমাকে নামায সম্পর্কে বলুন?’ তিনি বললেন, ‘‘তুমি ফজরের নামায পড়। তারপর সূর্য এক বল্লম বরাবর উঁচু হওয়া পর্যন্ত বিরত থাকো। কারণ তা শয়তানের দু’
শিং-এর মধ্যভাগে উদিত হয় (অর্থাৎ এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে) এবং সে সময় কাফেররা তাকে সিজদা করে। পুনরায় তুমি নামায পড়। কেননা, নামাযে ফিরিশ্তা সাক্ষী ও উপস্থিত হন, যতক্ষণ না ছায়া বল্লমের সমান হয়ে যায়। অতঃপর নামায থেকে বিরত হও। কেননা, তখন জাহান্নামের আগুন উস্কানো হয়। অতঃপর যখন ছায়া বাড়তে আরম্ভ করে, তখন নামায পড়। কেননা,
এ নামাযে ফিরিশ্তা সাক্ষী ও উপস্থিত হন। পরিশেষে তুমি আসরের নামায পড়। অতঃপর সূর্য ডোবা পর্যন্ত নামায পড়া থেকে বিরত থাকো। কেননা, সূর্য শয়তানের দু’ শিঙ্গের মধ্যে অস্ত যায় (অর্থাৎ এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে) এবং তখন কাফেররা তাকে সিজদাহ করে।’’
পুনরায় আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর নবী! আপনি আমাকে ওযূ সম্পর্কে বলুন?’ তিনি বললেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে যে কেউ পানি নিকটে করে (হাত ধোওয়ার পর) কুল্লি করে এবং নাকে পানি নিয়ে ঝেড়ে পরিষ্কার করে, তার চেহারা, তার মুখ এবং নাকের গুনাহসমূহ ঝরে যায়। অতঃপর সে যখন আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী তার চেহারা ধোয়, তখন তার চেহারার পাপরাশি তার দাড়ির শেষ প্রান্তের পানির সাথে ঝরে যায়। অতঃপর সে যখন তার হাত দু’খানি কনুই পর্যন্ত ধোয়, তখন তার হাতের পাপরাশি তার আঙ্গুলের পানির সাথে ঝরে যায়। অতঃপর সে যখন তার মাথা মাসাহ করে,
তখন তার মাথার পাপরাশি চুলের ডগার পানির সাথে ঝরে যায়। অতঃপর সে যখন তার পা দু’খানি গাঁট পর্যন্ত ধোয়, তখন তার পায়ের পাপরাশি তার আঙ্গুলের পানির সাথে ঝরে যায়। অতঃপর সে যদি দাঁড়িয়ে গিয়ে নামায পড়ে, আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর মাহাত্ম্য বর্ণনা করে--যার তিনি যোগ্য এবং অন্তরকে আল্লাহ তা‘আলার জন্য খালি করে, তাহলে সে ঐ দিনকার মত নিষ্পাপ হয়ে বেরিয়ে আসে, যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল।’’
তারপর ‘আমর ইবনে আবাসাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এ হাদীসটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট বর্ণনা করলেন। আবূ উমামাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাঁকে বললেন, ‘হে ‘আমর ইবনে ‘আবাসাহ! তুমি যা বলছ তা চিন্তা করে বল! একবার ওযূ করলেই কি এই ব্যক্তিকে এতটা মর্যাদা দেওয়া হবে?’ ‘আমর বললেন, ‘হে আবূ উমামাহ! আমার বয়স ঢের হয়েছে, আমার হাড় দুর্বল হয়ে গেছে এবং আমার মৃত্যুও নিকটবর্তী। (ফলে এ অবস্থায়) আল্লাহ তা‘আলা অথবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি মিথ্যা আরোপ করার আমার কী প্রয়োজন আছে? যদি আমি এটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থেকে একবার, দু’বার,
তিনবার এমনকি সাতবার পর্যন্ত না শুনতাম,
তাহলে কখনই তা বর্ণনা করতাম না। কিন্তু আমি তাঁর নিকট এর চেয়েও অধিকবার শুনেছি।’ (মুসলিম) [27]
28/444 . ﻭَﻋَﻦ ﺃَﺑﻲ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺍﻷﺷﻌَﺮِﻱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒﻲِّ ﷺ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﺫَﺍ ﺃﺭَﺍﺩَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﺭَﺣﻤَﺔَ ﺃُﻣَّﺔٍ، ﻗَﺒَﺾَ ﻧَﺒﻴَّﻬَﺎ ﻗَﺒْﻠَﻬﺎ، ﻓَﺠَﻌَﻠَﻪُ ﻟَﻬَﺎ ﻓَﺮﻃﺎً ﻭَﺳَﻠَﻔﺎً ﺑَﻴْﻦَ ﻳَﺪَﻳْﻬَﺎ، ﻭﺇﺫَﺍ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﻫَﻠَﻜَﺔَ ﺃُﻣَّﺔٍ، ﻋَﺬَّﺑَﻬَﺎ ﻭَﻧَﺒِﻴُّﻬَﺎ ﺣَﻲٌّ، ﻓَﺄَﻫﻠَﻜَﻬَﺎ ﻭَﻫُﻮَ ﺣَﻲٌّ ﻳَﻨﻈُﺮُ، ﻓَﺄَﻗَﺮَّ ﻋَﻴﻨَﻪُ ﺑِﻬَﻼَﻛِﻬَﺎ ﺣِﻴﻦَ ﻛَﺬَّﺑُﻮﻩُ ﻭَﻋَﺼَﻮﺍ ﺃﻣْﺮَﻩُ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
২৮/৪৪৪। আবূ মূসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু
‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যখন আল্লাহ তা‘আলা কোন উম্মতের প্রতি অনুগ্রহ করার ইচ্ছা করেন, তখন তাদের নবীকে তাদের পূর্বেই তুলে নেন। অতঃপর তিনি তাঁকে সেই উম্মতের জন্য অগ্রগামী ও ব্যবস্থাপক বানিয়ে দেন। আর যখন তিনি কোন উম্মতকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করেন, তখন তাদেরকে তাদের নবীর উপস্থিতিতে শাস্তি দেন। তিনি নিজ জীবদ্দশায় তাদের ধ্বংস স্বচক্ষে দেখেন। সুতরাং আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে নবীর চক্ষুশীতল করেন, যখন তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী মনে করে এবং তাঁর আদেশ অমান্য করে।’’ (মুসলিম) [28]
[1] সহীহুল বুখারী ৩৪৩৫, মুসলিম ২৮, তিরমিযী ২৬৩৮, আহমাদ ২২১৬৭, ২২২১৬৩, ২২২৬২
[2] মুসলিম ২৬৮৭, ইবনু মাজাহ ৩৮২১, আবূ দাউদ ২০৮০৮, ২০৮৫৩, ২০৮৬৬, ২০৯৬১, ২০৯৭৭, ২০৯৯৪, ২১০৫৫, দারেমী ২৭৮৮
[3] মুসলিম ৯৩, আবূ দাউদ ১৪০৭৯, ১৪৩০১, ১৪৫৯৮, ১৪৭৭৮
[4] সহীহুল বুখারী ১২৮, ১২৯, মুসলিম ৩২, আবূ দাউদ ১১৯২৩, ১২১৯৫, ১৩১৪, ১৩৩৩১, ২১৪৮৬
[5] মুসলিম ২৭, আবূ দাউদ ৯১৭০
[6] সহীহুল বুখারী ৭৭, ১৮৯, ৪২৫, ৪২৪, ৬৬৭, ৬৮৬, ৮৩৮, ৮৪০, ১১৮৬, ৪০১০, ৫৪০১, ৬৩৫৪, ৬৪২২, ৬৯৩৮, মুসলিম ৩৩, আবূ দাউদ ১৪১১, ইবনু মাজাহ ৬৬০, ৭৫৪, আহমাদ ২৩১০৯, ২৩১২৬
[7] সহীহুল বুখারী ৫৯৯৯, মুসলিম ২৭৫৪
[8] সহীহুল বুখারী ৩১৯৪,৭৪০৪, ৭৪২২, ৭৪৫৩, ৭৫৫৩, ৭৫৫৪, মুসলিম ২৭৫১, তিরমিযী ৩৫৪৩, ইবনু মাজাহ ১৮৯, ৪২৯৫, আহমাদ ৭২৫৭, ৭৪৪৮, ৭৪৭৬, ২৭৩৪৩, ৮৪৮৫, ৮৭৩৫, ৯৩১৪
[9] সহীহুল বুখারী ৬০০০, ৬৪৬৯, মুসলিম ২৭৫২, তিরমিযী ৩৫৪১, ইবনু মাজাহ ৪২৯৩, আহমাদ ৮২১০, ৯৩২৬, ৯৯১০, ১০২৯২, ১০৪২৯, দারেমী ২৭৮৫
[10] সহীহুল বুখারী ৭৫০৭, মুসলিম ২৭৫৮, আহমাদ ৭৮৮৮, ৯০০৩, ১০০০৬
[11] মুসলিম ২৭৪৯, তিরমিযী ২৫২৬, আহমাদ ৭৯৮৩, ৮০২১
[12] মুসলিম ২৭৪৮, তিরমিযী ৩৫৩৯, আবূ দাউদ ২৩০০৪
[13] মুসলিম ৩১
[14] মুসলিম ২০২
[15] সহীহুল বুখারী ২৮৫৬, ৫৯৬৭, ৬২৬৭, ৬৫০০, ৭৩৭৩, মুসলিম ৩০, তিরমিযী ২৬৪৩, আবূ দাউদ ২৫৫৯, ইবনু মাজাহ ৪২৯৬, আহমাদ ১৩৩৩১, ২১৪৮৬, ২১৪৯৯, ২১৫০১, ২১৫৩৪, ম২১৫৫৩, ২১৫৬৮, ২১৫৯১
[16] সহীহুল বুখারী ১৩৬৯, ৪৬৯৯, মুসলিম ২৮৭১, তিরমিযী ৩১২০, নাসায়ী ২০৫৬, ২০৫৭, আবূ দাউদ ৪৭৫০, ইবনু মাজাহ ৪২৬৯, আহমাদ ১৮০১৩, ১৮০৬৩, ১৮১০৩, ১৮১৪০
[17] মুসলিম ২৮০৮, আহমাদ ১১৮২৮, ১১৮৫৫, ১৩৬০৪
[18] মুসলিম ৬৬৮, আহমাদ ১৩৮৬৩, ১৩৯৯৯, ১৪৪৩৯, দারেমী ১১৮২
[19] মুসলিম ৯৪১, আহমাদ ২৫০৫
[20] সহীহুল বুখারী ৬৫২৮, ৬৬৪২, মুসলিম ২০২১, তিরমিযী ২৫৪৭, ইবনু মাজাহ ৪২৮৩, আহমাদ ৩৬৪৩, ৪১৫৫, ৪২৩৯, ৪৩১৬
[21] মুসলিম ২৭৬৭, আহমাদ ১৮৯৯১, ১৯০৬৬, ১৯১০৩, ১৯১৫৩, ১৯১৬১, ১৯১৭৬, মুওয়াত্তা মালিক ৮
[22] সহীহুল বুখারী ২৪৪১, ৪৬৮৫, ৬০৭০, ৭৫১৪, মুসলিম ২৭৬৮, ইবনু মাজাহ ১৮৩, আহমাদ ৫৪১৩, ৫৭৯১
[23] সহীহুল বুখারী ৫২৬, ৪৬৮৭, মুসলিম ২৭৬৩, তিরমিযী ৩১১২, ৩১১৪, আবূ দাউদ ৪৪৬৮, ইবনু মাজাহ ১৩৯৮, ৪২৫৪, আবূ দাউদ ৩৬৪৫, ৩৮৪৪, ৪০৮৩, ৪২৩৮, ৪৩১৩
[24] সহীহুল বুখারী ৬৮২৩, মুসলিম ২৭৬৪
[25] মুসলিম ২৭৩৪, তিরমিযী ১৮১৬, আহমাদ ১১৫৬২, ১১৭৫৮
[26] মুসলিম ২৭৫৯, আহমাদ ১৯০৩৫, ১৯১২২
[27] মুসলিম ৮৩২, নাসায়ী ১৪৭, ৫৭২, ৫৮৪, ইবনু মাজাহ ২৮৩, ১২৫১, ১৩৫৪, আহমাদ ১৬৫৬৬, ১৬৫৭১, ১৬৫৭৮, ১৬৫৮০, ১৮৯৪০
[28] মুসলিম ২২৮৮
____________________________________________________________________________________________________________
সংকলন : ইমাম মুহিউদ্দীন আবু যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবন শরফ আন-নাওয়াবী রহ.
হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ণয় : শাইখ মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহ.
অনুবাদক : বিশিষ্ট আলেমবর্গ
অনুবাদ সম্পাদনা : আব্দুল হামীদ ফাইযী
সূত্র : ইসলামহাউজ
আরও পড়ুনঃ ক্ষমাপ্রার্থনা করার আদেশ ও তার মাহাত্ম্য
আরও পড়ুনঃ সাইয়েদুল ইসতিগফার দু’আটি জানা আছে কি? এতে রয়েছে জান্নাতের ঘোষণা! (ভিডিও সহ)
আরও পড়ুনঃ কুরআনে কারীম ও সহীহ সুন্নাহর আলোকে গুনাহ্ মাফের আমল
আরও পড়ুনঃ কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাওবা ও পাপ মোচনকারী কিছু আমল
আরও পড়ুনঃ আল্লাহর নৈকট্য লাভের অনন্য উপায়: তাওবা
আরও পড়ুনঃ আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু !
আরও পড়ুনঃ তাওবার ফজিলত
আরও পড়ুনঃ তওবার বিবরণ
আরও পড়ুনঃ তওবা : কেন ও কিভাবে
আরও পড়ুনঃ যিনা-ব্যভিচারকারী পুরুষ অথবা নারী কি তাওবার পর বিবাহ করতে পারে?
আরও পড়ুনঃ যে ব্যক্তি কোন মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছেন তার জন্য কি তওবা আছে?
পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন